রজত কান্তি রায়
জামাই এসেছে শ্বশুরবাড়ি। আসার সময়বাজার থেকে কিনে এনেছে ইয়া বড় এক পাঙাশ মাছ। কিন্তু খেতে বসে জামাই সবিস্ময়ে আবিষ্কার করল, পাতে পাঙাশ নেই। এক লোকমা, দুই লোকমা করে খাওয়াই শেষ হলো। কিন্তু পাঙাশ আর আসে না। ভগ্নমনোরথে জামাই ঘুমাতে গেল। স্বপ্নে দেখা দিল পাঙাশ। জামাই স্বপ্নের ঘোরে চেঁচিয়ে উঠে বলল, ‘পাঙাশ’। পাশের ঘর থেকে শাশুড়িও চেঁচিয়ে বললেন, ‘কাইল খাইস।’ জামাই আবার চেঁচিয়ে উঠল, ‘পাঙাশ।’ শাশুড়ি আবার বলল, ‘কাইল খাইস।’
আমার বেলায় ঘটেছে উল্টো ঘটনা। শাশুড়ি এসেছেন। সঙ্গে গ্রাম থেকে এনেছেন টাটকা শাকসবজি আর পুকুরের মাছ। বাড়ির জমির চালও আছে। ঢাকা শহরে আমার কর্তব্য তাঁকে ভালোমন্দ খাওয়ানো। নইলে শাশুড়ির মেয়ের কাছে ইজ্জত থাকে না। যদিও সেটা আমার কোনোকালেই ছিল না। তারপরও একটা ব্যাপার আছে না। তো সে ইজ্জত রক্ষার্থে চললাম বাজার, দুরুদুরু বুকে। ইলিশের মৌসুম। কড়া হুকুম এসেছে, ইলিশ আনতে হবে। পৃথিবীর সবকিছু অস্বীকার করতে পারি। কিন্তু এ হুকুম? নৈব নৈব চ। তবে আমিও তো কম যাই না। বিয়ের আগ পর্যন্ত চৌদ্দ বছর মেসে থেকেছি। অভিজ্ঞতা কি আর ফেলনা যায় কখনো?
পরিচিত শাকের দোকানদারের সামনে দাঁড়াতেই তিনি একগাল হেসে জানালেন, আমার জন্য বিশেষ কিছু শাক আছে। আমিও ‘হে হে দেন দেন’, বলতে বলতে ব্যাগ এগিয়ে দিলাম। পুরো তিন শ টাকার শাক আর সবজি কেনা হলো। আমার প্রিয় সবজি কলার মোচা, কলার থোড়, মুখী কচু, চিচিঙ্গা, কাঁকরোল। কলার মোচা আর থোড়ে প্রচুর আয়রন আর মিনারেল আছে। নিয়মিত খেলে অন্তত আয়রন ট্যাবলেট কেনার হাত থেকে বাঁচা যায়। আর মুখী কচু? হে হে। মৌসুমের খাবার। তা ছাড়া আজ মাছের মাথা দিয়ে, কাল পুঁই শাক দিয়ে, পরশু মিষ্টি কুমড়ো দিয়ে এক কেজি অনায়াসে চার দিন চালিয়ে নেওয়া যায়, প্রতিদিন আড়াই শ গ্রাম করে। পাক্কা হিসাব। চিচিঙ্গা আর কাঁকরোল এমনিতেই আড়াই শ গ্রাম করে কেনা যায়। খরচ বাঁচে।
মাছের বাজারে গিয়েই ছন্দ হারিয়ে ফেললাম। ‘পাঙাশ, কাল খাস’–এর একটা ছন্দ আছে। কিন্তু পুঁটি, চিংড়ি, ট্যাংরার সঙ্গে ছন্দ মেলাব কীভাবে? মনে পড়ল, আমার ইলিশ কেনার কথা। ইলিশের মৌসুম বলে কথা। বাজারের ব্যাগের দিকে ট্যারা চোখে তাকিয়ে মাছের দোকানদার বললেন, ‘ভাইজান, এক্কেরে পদ্মার ইলিশ। ইমানে কইতাছি বড় ভাই। কাইলকা রাইতে আইছে। আর আইজ সক্কাল বেলা দোকানে বইছি। কছম।’ নাহ, লোকটার ছন্দ মিলছে না। ফার্মগেট বা গুলিস্তানের এক দাম এক শ, যাই নিবেন এক শর মতো এবার আমার কানে ঢুকতে লাগল, ‘ইলিশ ষোলো শ, এক কেজি ষোলো শ, পদ্মার ইলিশ ষোলো শ।’ হ্যাঁ। এবার ছন্দ কিছুটা মিলছে। আমিও গলা মেলালাম, ‘এক কেজি এক হাজার, দিলে দেন এক হাজার।’
গোঁফওয়ালা ইলিশের দোকানদার বলে উঠলেন, ‘কী কন মিয়াবাই! চৌদ্দ শতেও কিনবার পাই নাইক্কা।’ মুখ ঝামটা মেরে বললাম, ‘তাইলে দিবেন না।’
-আরে হোনেন ভাই হোনেন। আপনার জন্য সাড়ে পনেরো শ। পাক্কা।
-এগারো শ।
-আরে বাই, আপনি তো মিলাইবার পারতাছেন না।
-এক কেজি এগারো শ; দিলে দেন, না দিলে যাই।
মনে মনে ভাবলাম, ছন্দ মিলতেছে না তো ম্যান। গোঁফওয়ালা ইলিশের মালিক আমার দিকে বিহ্বল হয়ে তাকিয়ে আছেন। আমি বাহারের ব্যাগ নিয়ে অন্য দোকানে গেলাম। একই ঘটনা। কোনো দোকানেই ছন্দ মিলল না। এদিকে আমার মাথায় রোখ চেপে গেছে। ছন্দ মেলাতেই হবে। শাশুড়ি বলে কথা। সবচেয়ে বড় কথা, ইলিশ না নিলে বাসার সদস্যপদ বাতিল। হাঁপাতে হাঁপাতে এক দোকানের সামনে দাঁড়ালাম। ‘কত?’ ‘এক দাম পন্দরো শো।’ দীর্ঘশ্বাসকে স্বস্তির নিশ্বাসে রূপান্তরিত করে বললাম, ‘ভাই, ছন্দ মিলুক আর নাই মিলুক বারো শ দিব।’ কী মনে করে লোকটি আমার দিকে তাকিয়ে হাসলেন। বললেন, ‘আইচ্ছা। দেনগা।’
রিকশা ধীর গতিতে চলেছে। আমার মাথায় ঘুরছে, পাঙাশ, কাল খাসের ছন্দ। মেলাতে চেষ্টা করছি, ‘পদ্মার ইলিশ বারো শ, এক কেজি বারো শ।’ কিন্তু পাঙাশ কাল খাসের দুর্দান্ত ফিনিশিংটা আসছে না কোনোমতেই।
জামাই এসেছে শ্বশুরবাড়ি। আসার সময়বাজার থেকে কিনে এনেছে ইয়া বড় এক পাঙাশ মাছ। কিন্তু খেতে বসে জামাই সবিস্ময়ে আবিষ্কার করল, পাতে পাঙাশ নেই। এক লোকমা, দুই লোকমা করে খাওয়াই শেষ হলো। কিন্তু পাঙাশ আর আসে না। ভগ্নমনোরথে জামাই ঘুমাতে গেল। স্বপ্নে দেখা দিল পাঙাশ। জামাই স্বপ্নের ঘোরে চেঁচিয়ে উঠে বলল, ‘পাঙাশ’। পাশের ঘর থেকে শাশুড়িও চেঁচিয়ে বললেন, ‘কাইল খাইস।’ জামাই আবার চেঁচিয়ে উঠল, ‘পাঙাশ।’ শাশুড়ি আবার বলল, ‘কাইল খাইস।’
আমার বেলায় ঘটেছে উল্টো ঘটনা। শাশুড়ি এসেছেন। সঙ্গে গ্রাম থেকে এনেছেন টাটকা শাকসবজি আর পুকুরের মাছ। বাড়ির জমির চালও আছে। ঢাকা শহরে আমার কর্তব্য তাঁকে ভালোমন্দ খাওয়ানো। নইলে শাশুড়ির মেয়ের কাছে ইজ্জত থাকে না। যদিও সেটা আমার কোনোকালেই ছিল না। তারপরও একটা ব্যাপার আছে না। তো সে ইজ্জত রক্ষার্থে চললাম বাজার, দুরুদুরু বুকে। ইলিশের মৌসুম। কড়া হুকুম এসেছে, ইলিশ আনতে হবে। পৃথিবীর সবকিছু অস্বীকার করতে পারি। কিন্তু এ হুকুম? নৈব নৈব চ। তবে আমিও তো কম যাই না। বিয়ের আগ পর্যন্ত চৌদ্দ বছর মেসে থেকেছি। অভিজ্ঞতা কি আর ফেলনা যায় কখনো?
পরিচিত শাকের দোকানদারের সামনে দাঁড়াতেই তিনি একগাল হেসে জানালেন, আমার জন্য বিশেষ কিছু শাক আছে। আমিও ‘হে হে দেন দেন’, বলতে বলতে ব্যাগ এগিয়ে দিলাম। পুরো তিন শ টাকার শাক আর সবজি কেনা হলো। আমার প্রিয় সবজি কলার মোচা, কলার থোড়, মুখী কচু, চিচিঙ্গা, কাঁকরোল। কলার মোচা আর থোড়ে প্রচুর আয়রন আর মিনারেল আছে। নিয়মিত খেলে অন্তত আয়রন ট্যাবলেট কেনার হাত থেকে বাঁচা যায়। আর মুখী কচু? হে হে। মৌসুমের খাবার। তা ছাড়া আজ মাছের মাথা দিয়ে, কাল পুঁই শাক দিয়ে, পরশু মিষ্টি কুমড়ো দিয়ে এক কেজি অনায়াসে চার দিন চালিয়ে নেওয়া যায়, প্রতিদিন আড়াই শ গ্রাম করে। পাক্কা হিসাব। চিচিঙ্গা আর কাঁকরোল এমনিতেই আড়াই শ গ্রাম করে কেনা যায়। খরচ বাঁচে।
মাছের বাজারে গিয়েই ছন্দ হারিয়ে ফেললাম। ‘পাঙাশ, কাল খাস’–এর একটা ছন্দ আছে। কিন্তু পুঁটি, চিংড়ি, ট্যাংরার সঙ্গে ছন্দ মেলাব কীভাবে? মনে পড়ল, আমার ইলিশ কেনার কথা। ইলিশের মৌসুম বলে কথা। বাজারের ব্যাগের দিকে ট্যারা চোখে তাকিয়ে মাছের দোকানদার বললেন, ‘ভাইজান, এক্কেরে পদ্মার ইলিশ। ইমানে কইতাছি বড় ভাই। কাইলকা রাইতে আইছে। আর আইজ সক্কাল বেলা দোকানে বইছি। কছম।’ নাহ, লোকটার ছন্দ মিলছে না। ফার্মগেট বা গুলিস্তানের এক দাম এক শ, যাই নিবেন এক শর মতো এবার আমার কানে ঢুকতে লাগল, ‘ইলিশ ষোলো শ, এক কেজি ষোলো শ, পদ্মার ইলিশ ষোলো শ।’ হ্যাঁ। এবার ছন্দ কিছুটা মিলছে। আমিও গলা মেলালাম, ‘এক কেজি এক হাজার, দিলে দেন এক হাজার।’
গোঁফওয়ালা ইলিশের দোকানদার বলে উঠলেন, ‘কী কন মিয়াবাই! চৌদ্দ শতেও কিনবার পাই নাইক্কা।’ মুখ ঝামটা মেরে বললাম, ‘তাইলে দিবেন না।’
-আরে হোনেন ভাই হোনেন। আপনার জন্য সাড়ে পনেরো শ। পাক্কা।
-এগারো শ।
-আরে বাই, আপনি তো মিলাইবার পারতাছেন না।
-এক কেজি এগারো শ; দিলে দেন, না দিলে যাই।
মনে মনে ভাবলাম, ছন্দ মিলতেছে না তো ম্যান। গোঁফওয়ালা ইলিশের মালিক আমার দিকে বিহ্বল হয়ে তাকিয়ে আছেন। আমি বাহারের ব্যাগ নিয়ে অন্য দোকানে গেলাম। একই ঘটনা। কোনো দোকানেই ছন্দ মিলল না। এদিকে আমার মাথায় রোখ চেপে গেছে। ছন্দ মেলাতেই হবে। শাশুড়ি বলে কথা। সবচেয়ে বড় কথা, ইলিশ না নিলে বাসার সদস্যপদ বাতিল। হাঁপাতে হাঁপাতে এক দোকানের সামনে দাঁড়ালাম। ‘কত?’ ‘এক দাম পন্দরো শো।’ দীর্ঘশ্বাসকে স্বস্তির নিশ্বাসে রূপান্তরিত করে বললাম, ‘ভাই, ছন্দ মিলুক আর নাই মিলুক বারো শ দিব।’ কী মনে করে লোকটি আমার দিকে তাকিয়ে হাসলেন। বললেন, ‘আইচ্ছা। দেনগা।’
রিকশা ধীর গতিতে চলেছে। আমার মাথায় ঘুরছে, পাঙাশ, কাল খাসের ছন্দ। মেলাতে চেষ্টা করছি, ‘পদ্মার ইলিশ বারো শ, এক কেজি বারো শ।’ কিন্তু পাঙাশ কাল খাসের দুর্দান্ত ফিনিশিংটা আসছে না কোনোমতেই।
তবে এটি মোটেও শখ করে বাজানো হয় না। বরং, নতুন এই ফ্যাশন গরুকে আরামদায়ক রাখার চেষ্টার পাশাপাশি দুধের মান এবং উৎপাদন বাড়ানোর নতুন উপায় হিসেবেও দেখা হচ্ছে। এই প্রবণতা টিকটকসহ বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে এবং কোটি কোটি দর্শক এর ভিডিও দেখে মুগ্ধ হয়েছেন।
১৩ ঘণ্টা আগেগত ১৫ বছরে ব্রিটেনে রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে একমাত্র স্থিতিশীলতার প্রতীক ল্যারি—ডাউনিং স্ট্রিটের বিখ্যাত বিড়াল। এই ট্যাবি বিড়াল এরই মধ্যে পাঁচ প্রধানমন্ত্রীর ‘অধীনে’ ডাউনিং স্ট্রিটের ‘চিফ মাউজার’ বা প্রধান ইঁদুর শিকারি হিসেবে দায়িত্ব পালন করে ফেলেছে। বর্তমানে সে ষষ্ঠ প্রধানমন্ত্রীর অধীনে দায়িত্ব
১ দিন আগেডেনমার্কের একটি চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ সেখানকার মাংসাশী প্রাণীদের খাদ্য হিসেবে ছোট পোষা প্রাণী দান করার জন্য জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।
৩ দিন আগেচীনের ঐতিহ্যবাহী শাওলিন মঠে নতুন বিধিনিষেধ চালু হওয়ার পর ৩০ জনেরও বেশি সন্ন্যাসী ও কর্মচারী মঠ ছেড়ে চলে গেছেন। নতুন নিযুক্ত মঠাধ্যক্ষ শি ইয়েইনলে কঠোর নিয়ম চালু করায় এই পদত্যাগের ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গেছে। নতুন নিয়মে মোবাইল ব্যবহারের সময় কমানো, কঠোর খাদ্যাভ্যাস এবং দীর্ঘ কর্মঘণ্টা বাধ্যতামূলক করা...
৩ দিন আগে