মন্টি বৈষ্ণব, ঢাকা

এ দেশের সমাজ বাস্তবতায় ধর্ষণ শব্দটি বহুল প্রচারিত একটি শব্দ। এ দেশের বেশির ভাগ নারী প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে ধর্ষণের শিকার হচ্ছেন। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ধর্ষণ বা যৌন নিপীড়নের অনেক পর ঘটনাটি সম্পর্কে জানা যাচ্ছে। অপরাধের বিষয়ে থানায় মামলা করা বা অন্য যেকোনো প্রশাসনিক পদক্ষেপ তো অনেক পরের বিষয়। এ দিয়ে তো আর অপরাধ সংঘটন থামানো যাচ্ছে না। এ ক্ষেত্রে এ ধরনের অপরাধের হাত থেকে ভুক্তভোগীকে বাঁচাতে আশা দেখাচ্ছে ‘বাঁচাও’ অ্যাপস, যা গত মাসে যাত্রা করেছে।
জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯-এর কারণে অনেক সময় এ ধরনের অপরাধ রোধ হচ্ছে ঠিক। কিন্তু তার হার এখনো কম। বিশেষত, এই জাতীয় জরুরি সেবা নম্বরের মাধ্যমে নাগরিকদের নানা ধরনের সেবা দেওয়া হয়। রয়েছে সরকারি আরও নানা উদ্যোগ। কিন্তু এর প্রতিটিরই কর্মপরিসর এত বড় যে, তা শুধু ধর্ষণ বা যৌন নিপীড়নের মতো অপরাধ থেকে নারীদের রক্ষায় তেমন বড় ভূমিকা রাখতে পারছে না। এ অবস্থায় বেসরকারি উদ্যোগে তৈরি করা ‘বাঁচাও’ অ্যাপস আশা দেখাচ্ছে নারী অধিকারকর্মীদের।
বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, ২০২১ সালে অক্টোবর মাসে মোট ৩৫৪ জন নারী ও মেয়ে শিশু নির্যাতনের শিকার হয়েছে। এর মধ্যে ধর্ষণের শিকার ১০১ জন। তার মধ্যে রয়েছে ৪১ শিশু, যার মধ্যে তিনটি শিশু দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার এবং চার শিশুকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে। এ ছাড়া এই সময়ের মধ্যে ২ শিশুসহ ৭ জনকে ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়েছে। এ অবস্থায় কিছু একটা করার উদ্যোগ নেন জালাল মির্জা।
জালাল মির্জা একজন কম্পিউটার প্রকৌশলী। ২০০১ সালে নিজের পরিবারেই ঘটে যায় ভয়াবহ এক ঘটনা। তাঁর অতি আপনজন ধর্ষণের শিকার হন। তাও একদিন নয়। স্বামী তাঁর বন্ধুদের দিয়ে দিনের পর দিন এই ধর্ষণ চালিয়ে গিয়েছিল। তাঁর সেই আপনজন এখন মানসিকভাবে অসুস্থ। এই অপরাধে ধর্ষকেরা শাস্তি পেলেও পরে জেল থেকে ছাড়া পেয়ে যায়। আর সেই ভুক্তভোগী এখন জীবন্মৃত হয়ে বেঁচে আছেন। কথা বলতে পারেন না, তেমন কাউকে চিনতেও পারেন না। এই ঘটনা জালাল মির্জার পরিবারকে রীতিমতো নাড়িয়ে দিয়ে যায়। ২০১৮ সালে মৃত্যুর আগের রাতে মা জালাল মির্জাকে কাছে ডেকে বলেছিলেন, ‘তুমি বাবা এত বড় কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার, পারলে কিছু করো, পারলে একটা মেয়েকে বাঁচাও।’
মায়ের সেই কথা রাখার চেষ্টা করেছেন জালাল মির্জা। এ দেশের নারীদের জন্য কিছু করার প্রত্যয় নিয়ে কাজ শুরু করেন। নিজের সেই আপনজনের মতো আর কেউ যেন ধর্ষণের শিকার না হয়, সে জন্য একটি অ্যাপ তৈরি করেন; নাম দেন—‘বাঁচাও’। গড়ে তোলেন বাঁচাও ডট লাইফ ফাউন্ডেশন। ফাউন্ডেশনের মোটো হিসেবে ঠিক করেন—‘আর একটাও ধর্ষণ হতে দেব না।’ নিজের ব্যক্তিগত ক্ষতই তাঁকে এ উদ্যোগে অনুপ্রেরণা দিয়েছে।
বাঁচাও ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) জালাল মির্জা বলেন, ‘এ দেশের মানুষের সচেতনতার আর সামাজিক প্রতিরোধের মাধ্যমে ধর্ষণ বন্ধ করা সম্ভব। আমরা এই অ্যাপস তৈরি করতে গিয়ে এক গবেষণায় দেখেছি, এ দেশের ৮০ শতাংশ নারী ধর্ষণের শিকার হন তাঁর আশপাশের ও কাছের মানুষদের মাধ্যমে। বিষয়টি মাথায় রেখে আমি এমন অ্যাপস তৈরি করেছি, যার মাধ্যমে একজন নারী বিপদের আশঙ্কা করলে “বাঁচাও অ্যাপস”-এর মাধ্যমে সাহায্য চাইতে পারবেন, যা তাঁকে বিপদ থেকে রক্ষা করতে পারবে। এ ছাড়া আমাদের দেশে পোশাক, খাবারের, যাতায়াতের জন্য অ্যাপস থাকলেও ব্যক্তি নিরাপত্তার জন্য তেমন কোনো অ্যাপস নেই। নিজের ব্যক্তিগত ক্ষত এবং নারীদের এই সমাজে নিরাপদ রাখতে ২০১৮ সালেই শুরু করি আমার এই অ্যাপ তৈরির কাজ।’
এই ‘বাঁচাও’ অ্যাপ জিপিএস প্রযুক্তি ব্যবহার করে কাজ করে। এ বিষয়ে জালাল মির্জা বলেন, ‘জিপিএস প্রযুক্তির এ অ্যাপে পিপল টু পিপল (পিটুপি) মডেল ব্যবহার করা হয়েছে। এতে “রেপ অ্যালার্ট” বাটন রয়েছে, যেখানে কিক্ল করলে এটি জিপিএসের মাধ্যমে বিপদে পড়া নারীর অবস্থান নির্দেশ করবে। এতে পরিবার, বন্ধু, স্বেচ্ছাসেবক ও পুলিশের কাছে ওই নারীর বিপদগ্রস্ত হওয়ার বার্তা চলে যাবে। তবে এ ক্ষেত্রে আরেকটা বিষয় জানিয়ে রাখা ভালো। সেটা হলো বাঁচাও অ্যাপ এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে, যেখানে বিপদে সাহায্য চাওয়া নারী চাইলে নিজের ফোন নম্বর গোপন রেখে যোগাযোগ করতে পারবেন।’
তথ্যপ্রযুক্তির উন্নতির যুগে শহরের নারীদের হাতে অ্যান্ড্রয়েড ফোন থাকলেও এ দেশের নিম্নবিত্ত ও গ্রামের নারীদের হাতে এখনো এ প্রযুক্তির মোবাইল সেট পৌঁছায়নি। আবার পরিসংখ্যান বলছে, শহরের তুলনায় গ্রামের নারীরা বেশি ধর্ষণের শিকার হচ্ছেন। গ্রামের নারীরা এই অ্যাপে কীভাবে অন্তর্ভুক্ত হবেন—সে বিষয়টি জানতে চাইলে জালাল মির্জা বলেন, ‘আমাদের দেশে অনেকের হাতে অ্যান্ড্রয়েড ফোন নেই। বিষয়টি আমাদের মাথায় আছে। যাদের স্মার্টফোন নেই, তাদের কথা চিন্তা করে আমরা বিটিআরসির কাছে বিকাশ ও নগদের মতো শর্টকোডের আবেদন করছি।’
অক্টোবরে যাত্রা করা এই অ্যাপ এরই মধ্যে অনেকের কাছে পৌঁছেছে বলে দাবি করেন জালাল মির্জা। তিনি বলেন, ‘অক্টোবর থেকে শুরু হয়ে এ পর্যন্ত এই অ্যাপ ৬০ লাখ মানুষের কাছে পৌঁছেছে। আর ১ লাখ মানুষ এই অ্যাপ ডাউনলোড করেছে। দেড় মাসে এই সংখ্যা আমাকে আশাবাদী করে তুলেছে। বিভাগীয় শহরের মধ্যে ঢাকাতে ডাউনলোডের সংখ্যা বেশি। এ পর্যন্ত বিপদের পড়ে সহযোগিতা চেয়ে ধর্ষণ থেকে রক্ষা পাওয়ার ঘটনা ১৬৫ টি।’
তবে সাফল্যের গল্প যেমন আছে, তেমনি আছে ব্যর্থতার গল্পও, যা ব্যথিত করেছে জালাল মির্জাকেও। তিনি বলেন, ‘সহযোগিতা চাওয়ার পর পাঁচটি ঘটনায় আমরা তেমন কিছু করতে পারিনি। কারণ, সহযোগিতা পাওয়ার পর সেই ফোন নেটওয়ার্কের বাইরে চলে যায়। আমাদের ধারণা, বিপদগ্রস্ত নারীদের থেকে সে সময় ফোন কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’
জালাল মির্জা স্বপ্ন দেখেন এই অ্যাপ সারা দেশে ছড়িয়ে পড়বে। মানুষ এর সঙ্গে যুক্ত হবে এবং বিপদগ্রস্ত নারীদের সহায়তায় এগিয়ে আসবে। তিনি বলেন, “আমরা সারা দেশে এই অ্যাপ নিয়ে কাজ করছি। এরই মধ্যে আমরা পুলিশ প্রশাসনের কাছে সহযোগিতা চেয়েছি, যেন দেশের সাড়ে ৬ হাজার থানা আমাদের সঙ্গে কাজ করে। পুলিশ প্রশাসন আশ্বাস দিয়েছে। এটা ভালো সংবাদ। কারণ, কোনো নারী বিপদে পড়লে, পুলিশ প্রশাসনই সবচেয়ে কার্যকরী ভূমিকা পালন করতে পারবে। এ ছাড়া সরকারি, বেসরকারি, এনজিও মিলে মোট ২২টি প্রতিষ্ঠানকে আমাদের কাজের সঙ্গে যুক্ত করেছি।’
ধর্ষণের হাত থেকে নারীদের রক্ষার বিষয়ে জালাল মির্জা বলেন, ‘আমরা হয়তো ধর্ষণকে পুরোপুরি বন্ধ করতে পারব না; তবে সকলের ঐক্যবদ্ধ চেষ্টায় তো ধর্ষণের সংখ্যা কমাতে পারব।’
ভবিষ্যতে আরও বড় পরিসরে এই অ্যাপের কাজ চালিয়ে যেতে চান জালাল মির্জা। তিনি বলেন, ‘আইন ও সালিস কেন্দ্রের (আসক) এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, ধর্ষণের সঙ্গে জড়িতদের মাত্র দশমিক ৪ শতাংশ প্রকৃতপক্ষে সাজা ভোগ করে। সামাজিকতার ভয়ে অনেকে মুখ খুলতে চায় না। আসকের এক প্রতিবেদনে দেখা গেছে, এ দেশে প্রতিদিন ১৭ থেকে ১৮ জন নারী ধর্ষণের শিকার হন। এর মধ্যে তিনটি শিশুও থাকে। আমরা ধর্ষণের এই সংখ্যা অর্ধেকে নামিয়ে আনার চেষ্টা করব। এটা আমরা করবই।’
যেভাবে 'বাঁচাও অ্যাপস' কাজ করবে
গুগল প্লে স্টোর থেকে এই অ্যাপ ইনস্টল করতে হবে। এর পর জরুরি যোগাযোগের জন্য নিজের পরিবার, বন্ধুদের মধ্যে তিনজনের ফোন নম্বর নির্বাচন করতে হয়। এই অ্যাপ স্মার্টফোনে ইনস্টল করা নারী যদি বিপদের আশঙ্কা করেন, তাহলে এই অ্যাপের ‘রেপ অ্যালার্ট’ লেখা অপশন ক্লিক করলে কাছাকাছি থাকা পরিবারের সদস্য, বন্ধু ও স্বেচ্ছাসেবকেরা সেই সতর্কবার্তা পেয়ে যাবেন। এর পর তাঁরা সহযোগিতা করার জন্য যুক্ত হতে পারবেন। এ ছাড়া সেই নারী নিজেকে নিরাপদ মনে করলে ‘সেইফ নাও’ লেখা সবুজ অপশনে ক্লিক করে সংশ্লিষ্টদের জানাতেও পারবেন।

এ দেশের সমাজ বাস্তবতায় ধর্ষণ শব্দটি বহুল প্রচারিত একটি শব্দ। এ দেশের বেশির ভাগ নারী প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে ধর্ষণের শিকার হচ্ছেন। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ধর্ষণ বা যৌন নিপীড়নের অনেক পর ঘটনাটি সম্পর্কে জানা যাচ্ছে। অপরাধের বিষয়ে থানায় মামলা করা বা অন্য যেকোনো প্রশাসনিক পদক্ষেপ তো অনেক পরের বিষয়। এ দিয়ে তো আর অপরাধ সংঘটন থামানো যাচ্ছে না। এ ক্ষেত্রে এ ধরনের অপরাধের হাত থেকে ভুক্তভোগীকে বাঁচাতে আশা দেখাচ্ছে ‘বাঁচাও’ অ্যাপস, যা গত মাসে যাত্রা করেছে।
জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯-এর কারণে অনেক সময় এ ধরনের অপরাধ রোধ হচ্ছে ঠিক। কিন্তু তার হার এখনো কম। বিশেষত, এই জাতীয় জরুরি সেবা নম্বরের মাধ্যমে নাগরিকদের নানা ধরনের সেবা দেওয়া হয়। রয়েছে সরকারি আরও নানা উদ্যোগ। কিন্তু এর প্রতিটিরই কর্মপরিসর এত বড় যে, তা শুধু ধর্ষণ বা যৌন নিপীড়নের মতো অপরাধ থেকে নারীদের রক্ষায় তেমন বড় ভূমিকা রাখতে পারছে না। এ অবস্থায় বেসরকারি উদ্যোগে তৈরি করা ‘বাঁচাও’ অ্যাপস আশা দেখাচ্ছে নারী অধিকারকর্মীদের।
বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, ২০২১ সালে অক্টোবর মাসে মোট ৩৫৪ জন নারী ও মেয়ে শিশু নির্যাতনের শিকার হয়েছে। এর মধ্যে ধর্ষণের শিকার ১০১ জন। তার মধ্যে রয়েছে ৪১ শিশু, যার মধ্যে তিনটি শিশু দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার এবং চার শিশুকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে। এ ছাড়া এই সময়ের মধ্যে ২ শিশুসহ ৭ জনকে ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়েছে। এ অবস্থায় কিছু একটা করার উদ্যোগ নেন জালাল মির্জা।
জালাল মির্জা একজন কম্পিউটার প্রকৌশলী। ২০০১ সালে নিজের পরিবারেই ঘটে যায় ভয়াবহ এক ঘটনা। তাঁর অতি আপনজন ধর্ষণের শিকার হন। তাও একদিন নয়। স্বামী তাঁর বন্ধুদের দিয়ে দিনের পর দিন এই ধর্ষণ চালিয়ে গিয়েছিল। তাঁর সেই আপনজন এখন মানসিকভাবে অসুস্থ। এই অপরাধে ধর্ষকেরা শাস্তি পেলেও পরে জেল থেকে ছাড়া পেয়ে যায়। আর সেই ভুক্তভোগী এখন জীবন্মৃত হয়ে বেঁচে আছেন। কথা বলতে পারেন না, তেমন কাউকে চিনতেও পারেন না। এই ঘটনা জালাল মির্জার পরিবারকে রীতিমতো নাড়িয়ে দিয়ে যায়। ২০১৮ সালে মৃত্যুর আগের রাতে মা জালাল মির্জাকে কাছে ডেকে বলেছিলেন, ‘তুমি বাবা এত বড় কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার, পারলে কিছু করো, পারলে একটা মেয়েকে বাঁচাও।’
মায়ের সেই কথা রাখার চেষ্টা করেছেন জালাল মির্জা। এ দেশের নারীদের জন্য কিছু করার প্রত্যয় নিয়ে কাজ শুরু করেন। নিজের সেই আপনজনের মতো আর কেউ যেন ধর্ষণের শিকার না হয়, সে জন্য একটি অ্যাপ তৈরি করেন; নাম দেন—‘বাঁচাও’। গড়ে তোলেন বাঁচাও ডট লাইফ ফাউন্ডেশন। ফাউন্ডেশনের মোটো হিসেবে ঠিক করেন—‘আর একটাও ধর্ষণ হতে দেব না।’ নিজের ব্যক্তিগত ক্ষতই তাঁকে এ উদ্যোগে অনুপ্রেরণা দিয়েছে।
বাঁচাও ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) জালাল মির্জা বলেন, ‘এ দেশের মানুষের সচেতনতার আর সামাজিক প্রতিরোধের মাধ্যমে ধর্ষণ বন্ধ করা সম্ভব। আমরা এই অ্যাপস তৈরি করতে গিয়ে এক গবেষণায় দেখেছি, এ দেশের ৮০ শতাংশ নারী ধর্ষণের শিকার হন তাঁর আশপাশের ও কাছের মানুষদের মাধ্যমে। বিষয়টি মাথায় রেখে আমি এমন অ্যাপস তৈরি করেছি, যার মাধ্যমে একজন নারী বিপদের আশঙ্কা করলে “বাঁচাও অ্যাপস”-এর মাধ্যমে সাহায্য চাইতে পারবেন, যা তাঁকে বিপদ থেকে রক্ষা করতে পারবে। এ ছাড়া আমাদের দেশে পোশাক, খাবারের, যাতায়াতের জন্য অ্যাপস থাকলেও ব্যক্তি নিরাপত্তার জন্য তেমন কোনো অ্যাপস নেই। নিজের ব্যক্তিগত ক্ষত এবং নারীদের এই সমাজে নিরাপদ রাখতে ২০১৮ সালেই শুরু করি আমার এই অ্যাপ তৈরির কাজ।’
এই ‘বাঁচাও’ অ্যাপ জিপিএস প্রযুক্তি ব্যবহার করে কাজ করে। এ বিষয়ে জালাল মির্জা বলেন, ‘জিপিএস প্রযুক্তির এ অ্যাপে পিপল টু পিপল (পিটুপি) মডেল ব্যবহার করা হয়েছে। এতে “রেপ অ্যালার্ট” বাটন রয়েছে, যেখানে কিক্ল করলে এটি জিপিএসের মাধ্যমে বিপদে পড়া নারীর অবস্থান নির্দেশ করবে। এতে পরিবার, বন্ধু, স্বেচ্ছাসেবক ও পুলিশের কাছে ওই নারীর বিপদগ্রস্ত হওয়ার বার্তা চলে যাবে। তবে এ ক্ষেত্রে আরেকটা বিষয় জানিয়ে রাখা ভালো। সেটা হলো বাঁচাও অ্যাপ এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে, যেখানে বিপদে সাহায্য চাওয়া নারী চাইলে নিজের ফোন নম্বর গোপন রেখে যোগাযোগ করতে পারবেন।’
তথ্যপ্রযুক্তির উন্নতির যুগে শহরের নারীদের হাতে অ্যান্ড্রয়েড ফোন থাকলেও এ দেশের নিম্নবিত্ত ও গ্রামের নারীদের হাতে এখনো এ প্রযুক্তির মোবাইল সেট পৌঁছায়নি। আবার পরিসংখ্যান বলছে, শহরের তুলনায় গ্রামের নারীরা বেশি ধর্ষণের শিকার হচ্ছেন। গ্রামের নারীরা এই অ্যাপে কীভাবে অন্তর্ভুক্ত হবেন—সে বিষয়টি জানতে চাইলে জালাল মির্জা বলেন, ‘আমাদের দেশে অনেকের হাতে অ্যান্ড্রয়েড ফোন নেই। বিষয়টি আমাদের মাথায় আছে। যাদের স্মার্টফোন নেই, তাদের কথা চিন্তা করে আমরা বিটিআরসির কাছে বিকাশ ও নগদের মতো শর্টকোডের আবেদন করছি।’
অক্টোবরে যাত্রা করা এই অ্যাপ এরই মধ্যে অনেকের কাছে পৌঁছেছে বলে দাবি করেন জালাল মির্জা। তিনি বলেন, ‘অক্টোবর থেকে শুরু হয়ে এ পর্যন্ত এই অ্যাপ ৬০ লাখ মানুষের কাছে পৌঁছেছে। আর ১ লাখ মানুষ এই অ্যাপ ডাউনলোড করেছে। দেড় মাসে এই সংখ্যা আমাকে আশাবাদী করে তুলেছে। বিভাগীয় শহরের মধ্যে ঢাকাতে ডাউনলোডের সংখ্যা বেশি। এ পর্যন্ত বিপদের পড়ে সহযোগিতা চেয়ে ধর্ষণ থেকে রক্ষা পাওয়ার ঘটনা ১৬৫ টি।’
তবে সাফল্যের গল্প যেমন আছে, তেমনি আছে ব্যর্থতার গল্পও, যা ব্যথিত করেছে জালাল মির্জাকেও। তিনি বলেন, ‘সহযোগিতা চাওয়ার পর পাঁচটি ঘটনায় আমরা তেমন কিছু করতে পারিনি। কারণ, সহযোগিতা পাওয়ার পর সেই ফোন নেটওয়ার্কের বাইরে চলে যায়। আমাদের ধারণা, বিপদগ্রস্ত নারীদের থেকে সে সময় ফোন কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’
জালাল মির্জা স্বপ্ন দেখেন এই অ্যাপ সারা দেশে ছড়িয়ে পড়বে। মানুষ এর সঙ্গে যুক্ত হবে এবং বিপদগ্রস্ত নারীদের সহায়তায় এগিয়ে আসবে। তিনি বলেন, “আমরা সারা দেশে এই অ্যাপ নিয়ে কাজ করছি। এরই মধ্যে আমরা পুলিশ প্রশাসনের কাছে সহযোগিতা চেয়েছি, যেন দেশের সাড়ে ৬ হাজার থানা আমাদের সঙ্গে কাজ করে। পুলিশ প্রশাসন আশ্বাস দিয়েছে। এটা ভালো সংবাদ। কারণ, কোনো নারী বিপদে পড়লে, পুলিশ প্রশাসনই সবচেয়ে কার্যকরী ভূমিকা পালন করতে পারবে। এ ছাড়া সরকারি, বেসরকারি, এনজিও মিলে মোট ২২টি প্রতিষ্ঠানকে আমাদের কাজের সঙ্গে যুক্ত করেছি।’
ধর্ষণের হাত থেকে নারীদের রক্ষার বিষয়ে জালাল মির্জা বলেন, ‘আমরা হয়তো ধর্ষণকে পুরোপুরি বন্ধ করতে পারব না; তবে সকলের ঐক্যবদ্ধ চেষ্টায় তো ধর্ষণের সংখ্যা কমাতে পারব।’
ভবিষ্যতে আরও বড় পরিসরে এই অ্যাপের কাজ চালিয়ে যেতে চান জালাল মির্জা। তিনি বলেন, ‘আইন ও সালিস কেন্দ্রের (আসক) এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, ধর্ষণের সঙ্গে জড়িতদের মাত্র দশমিক ৪ শতাংশ প্রকৃতপক্ষে সাজা ভোগ করে। সামাজিকতার ভয়ে অনেকে মুখ খুলতে চায় না। আসকের এক প্রতিবেদনে দেখা গেছে, এ দেশে প্রতিদিন ১৭ থেকে ১৮ জন নারী ধর্ষণের শিকার হন। এর মধ্যে তিনটি শিশুও থাকে। আমরা ধর্ষণের এই সংখ্যা অর্ধেকে নামিয়ে আনার চেষ্টা করব। এটা আমরা করবই।’
যেভাবে 'বাঁচাও অ্যাপস' কাজ করবে
গুগল প্লে স্টোর থেকে এই অ্যাপ ইনস্টল করতে হবে। এর পর জরুরি যোগাযোগের জন্য নিজের পরিবার, বন্ধুদের মধ্যে তিনজনের ফোন নম্বর নির্বাচন করতে হয়। এই অ্যাপ স্মার্টফোনে ইনস্টল করা নারী যদি বিপদের আশঙ্কা করেন, তাহলে এই অ্যাপের ‘রেপ অ্যালার্ট’ লেখা অপশন ক্লিক করলে কাছাকাছি থাকা পরিবারের সদস্য, বন্ধু ও স্বেচ্ছাসেবকেরা সেই সতর্কবার্তা পেয়ে যাবেন। এর পর তাঁরা সহযোগিতা করার জন্য যুক্ত হতে পারবেন। এ ছাড়া সেই নারী নিজেকে নিরাপদ মনে করলে ‘সেইফ নাও’ লেখা সবুজ অপশনে ক্লিক করে সংশ্লিষ্টদের জানাতেও পারবেন।
মন্টি বৈষ্ণব, ঢাকা

এ দেশের সমাজ বাস্তবতায় ধর্ষণ শব্দটি বহুল প্রচারিত একটি শব্দ। এ দেশের বেশির ভাগ নারী প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে ধর্ষণের শিকার হচ্ছেন। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ধর্ষণ বা যৌন নিপীড়নের অনেক পর ঘটনাটি সম্পর্কে জানা যাচ্ছে। অপরাধের বিষয়ে থানায় মামলা করা বা অন্য যেকোনো প্রশাসনিক পদক্ষেপ তো অনেক পরের বিষয়। এ দিয়ে তো আর অপরাধ সংঘটন থামানো যাচ্ছে না। এ ক্ষেত্রে এ ধরনের অপরাধের হাত থেকে ভুক্তভোগীকে বাঁচাতে আশা দেখাচ্ছে ‘বাঁচাও’ অ্যাপস, যা গত মাসে যাত্রা করেছে।
জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯-এর কারণে অনেক সময় এ ধরনের অপরাধ রোধ হচ্ছে ঠিক। কিন্তু তার হার এখনো কম। বিশেষত, এই জাতীয় জরুরি সেবা নম্বরের মাধ্যমে নাগরিকদের নানা ধরনের সেবা দেওয়া হয়। রয়েছে সরকারি আরও নানা উদ্যোগ। কিন্তু এর প্রতিটিরই কর্মপরিসর এত বড় যে, তা শুধু ধর্ষণ বা যৌন নিপীড়নের মতো অপরাধ থেকে নারীদের রক্ষায় তেমন বড় ভূমিকা রাখতে পারছে না। এ অবস্থায় বেসরকারি উদ্যোগে তৈরি করা ‘বাঁচাও’ অ্যাপস আশা দেখাচ্ছে নারী অধিকারকর্মীদের।
বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, ২০২১ সালে অক্টোবর মাসে মোট ৩৫৪ জন নারী ও মেয়ে শিশু নির্যাতনের শিকার হয়েছে। এর মধ্যে ধর্ষণের শিকার ১০১ জন। তার মধ্যে রয়েছে ৪১ শিশু, যার মধ্যে তিনটি শিশু দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার এবং চার শিশুকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে। এ ছাড়া এই সময়ের মধ্যে ২ শিশুসহ ৭ জনকে ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়েছে। এ অবস্থায় কিছু একটা করার উদ্যোগ নেন জালাল মির্জা।
জালাল মির্জা একজন কম্পিউটার প্রকৌশলী। ২০০১ সালে নিজের পরিবারেই ঘটে যায় ভয়াবহ এক ঘটনা। তাঁর অতি আপনজন ধর্ষণের শিকার হন। তাও একদিন নয়। স্বামী তাঁর বন্ধুদের দিয়ে দিনের পর দিন এই ধর্ষণ চালিয়ে গিয়েছিল। তাঁর সেই আপনজন এখন মানসিকভাবে অসুস্থ। এই অপরাধে ধর্ষকেরা শাস্তি পেলেও পরে জেল থেকে ছাড়া পেয়ে যায়। আর সেই ভুক্তভোগী এখন জীবন্মৃত হয়ে বেঁচে আছেন। কথা বলতে পারেন না, তেমন কাউকে চিনতেও পারেন না। এই ঘটনা জালাল মির্জার পরিবারকে রীতিমতো নাড়িয়ে দিয়ে যায়। ২০১৮ সালে মৃত্যুর আগের রাতে মা জালাল মির্জাকে কাছে ডেকে বলেছিলেন, ‘তুমি বাবা এত বড় কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার, পারলে কিছু করো, পারলে একটা মেয়েকে বাঁচাও।’
মায়ের সেই কথা রাখার চেষ্টা করেছেন জালাল মির্জা। এ দেশের নারীদের জন্য কিছু করার প্রত্যয় নিয়ে কাজ শুরু করেন। নিজের সেই আপনজনের মতো আর কেউ যেন ধর্ষণের শিকার না হয়, সে জন্য একটি অ্যাপ তৈরি করেন; নাম দেন—‘বাঁচাও’। গড়ে তোলেন বাঁচাও ডট লাইফ ফাউন্ডেশন। ফাউন্ডেশনের মোটো হিসেবে ঠিক করেন—‘আর একটাও ধর্ষণ হতে দেব না।’ নিজের ব্যক্তিগত ক্ষতই তাঁকে এ উদ্যোগে অনুপ্রেরণা দিয়েছে।
বাঁচাও ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) জালাল মির্জা বলেন, ‘এ দেশের মানুষের সচেতনতার আর সামাজিক প্রতিরোধের মাধ্যমে ধর্ষণ বন্ধ করা সম্ভব। আমরা এই অ্যাপস তৈরি করতে গিয়ে এক গবেষণায় দেখেছি, এ দেশের ৮০ শতাংশ নারী ধর্ষণের শিকার হন তাঁর আশপাশের ও কাছের মানুষদের মাধ্যমে। বিষয়টি মাথায় রেখে আমি এমন অ্যাপস তৈরি করেছি, যার মাধ্যমে একজন নারী বিপদের আশঙ্কা করলে “বাঁচাও অ্যাপস”-এর মাধ্যমে সাহায্য চাইতে পারবেন, যা তাঁকে বিপদ থেকে রক্ষা করতে পারবে। এ ছাড়া আমাদের দেশে পোশাক, খাবারের, যাতায়াতের জন্য অ্যাপস থাকলেও ব্যক্তি নিরাপত্তার জন্য তেমন কোনো অ্যাপস নেই। নিজের ব্যক্তিগত ক্ষত এবং নারীদের এই সমাজে নিরাপদ রাখতে ২০১৮ সালেই শুরু করি আমার এই অ্যাপ তৈরির কাজ।’
এই ‘বাঁচাও’ অ্যাপ জিপিএস প্রযুক্তি ব্যবহার করে কাজ করে। এ বিষয়ে জালাল মির্জা বলেন, ‘জিপিএস প্রযুক্তির এ অ্যাপে পিপল টু পিপল (পিটুপি) মডেল ব্যবহার করা হয়েছে। এতে “রেপ অ্যালার্ট” বাটন রয়েছে, যেখানে কিক্ল করলে এটি জিপিএসের মাধ্যমে বিপদে পড়া নারীর অবস্থান নির্দেশ করবে। এতে পরিবার, বন্ধু, স্বেচ্ছাসেবক ও পুলিশের কাছে ওই নারীর বিপদগ্রস্ত হওয়ার বার্তা চলে যাবে। তবে এ ক্ষেত্রে আরেকটা বিষয় জানিয়ে রাখা ভালো। সেটা হলো বাঁচাও অ্যাপ এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে, যেখানে বিপদে সাহায্য চাওয়া নারী চাইলে নিজের ফোন নম্বর গোপন রেখে যোগাযোগ করতে পারবেন।’
তথ্যপ্রযুক্তির উন্নতির যুগে শহরের নারীদের হাতে অ্যান্ড্রয়েড ফোন থাকলেও এ দেশের নিম্নবিত্ত ও গ্রামের নারীদের হাতে এখনো এ প্রযুক্তির মোবাইল সেট পৌঁছায়নি। আবার পরিসংখ্যান বলছে, শহরের তুলনায় গ্রামের নারীরা বেশি ধর্ষণের শিকার হচ্ছেন। গ্রামের নারীরা এই অ্যাপে কীভাবে অন্তর্ভুক্ত হবেন—সে বিষয়টি জানতে চাইলে জালাল মির্জা বলেন, ‘আমাদের দেশে অনেকের হাতে অ্যান্ড্রয়েড ফোন নেই। বিষয়টি আমাদের মাথায় আছে। যাদের স্মার্টফোন নেই, তাদের কথা চিন্তা করে আমরা বিটিআরসির কাছে বিকাশ ও নগদের মতো শর্টকোডের আবেদন করছি।’
অক্টোবরে যাত্রা করা এই অ্যাপ এরই মধ্যে অনেকের কাছে পৌঁছেছে বলে দাবি করেন জালাল মির্জা। তিনি বলেন, ‘অক্টোবর থেকে শুরু হয়ে এ পর্যন্ত এই অ্যাপ ৬০ লাখ মানুষের কাছে পৌঁছেছে। আর ১ লাখ মানুষ এই অ্যাপ ডাউনলোড করেছে। দেড় মাসে এই সংখ্যা আমাকে আশাবাদী করে তুলেছে। বিভাগীয় শহরের মধ্যে ঢাকাতে ডাউনলোডের সংখ্যা বেশি। এ পর্যন্ত বিপদের পড়ে সহযোগিতা চেয়ে ধর্ষণ থেকে রক্ষা পাওয়ার ঘটনা ১৬৫ টি।’
তবে সাফল্যের গল্প যেমন আছে, তেমনি আছে ব্যর্থতার গল্পও, যা ব্যথিত করেছে জালাল মির্জাকেও। তিনি বলেন, ‘সহযোগিতা চাওয়ার পর পাঁচটি ঘটনায় আমরা তেমন কিছু করতে পারিনি। কারণ, সহযোগিতা পাওয়ার পর সেই ফোন নেটওয়ার্কের বাইরে চলে যায়। আমাদের ধারণা, বিপদগ্রস্ত নারীদের থেকে সে সময় ফোন কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’
জালাল মির্জা স্বপ্ন দেখেন এই অ্যাপ সারা দেশে ছড়িয়ে পড়বে। মানুষ এর সঙ্গে যুক্ত হবে এবং বিপদগ্রস্ত নারীদের সহায়তায় এগিয়ে আসবে। তিনি বলেন, “আমরা সারা দেশে এই অ্যাপ নিয়ে কাজ করছি। এরই মধ্যে আমরা পুলিশ প্রশাসনের কাছে সহযোগিতা চেয়েছি, যেন দেশের সাড়ে ৬ হাজার থানা আমাদের সঙ্গে কাজ করে। পুলিশ প্রশাসন আশ্বাস দিয়েছে। এটা ভালো সংবাদ। কারণ, কোনো নারী বিপদে পড়লে, পুলিশ প্রশাসনই সবচেয়ে কার্যকরী ভূমিকা পালন করতে পারবে। এ ছাড়া সরকারি, বেসরকারি, এনজিও মিলে মোট ২২টি প্রতিষ্ঠানকে আমাদের কাজের সঙ্গে যুক্ত করেছি।’
ধর্ষণের হাত থেকে নারীদের রক্ষার বিষয়ে জালাল মির্জা বলেন, ‘আমরা হয়তো ধর্ষণকে পুরোপুরি বন্ধ করতে পারব না; তবে সকলের ঐক্যবদ্ধ চেষ্টায় তো ধর্ষণের সংখ্যা কমাতে পারব।’
ভবিষ্যতে আরও বড় পরিসরে এই অ্যাপের কাজ চালিয়ে যেতে চান জালাল মির্জা। তিনি বলেন, ‘আইন ও সালিস কেন্দ্রের (আসক) এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, ধর্ষণের সঙ্গে জড়িতদের মাত্র দশমিক ৪ শতাংশ প্রকৃতপক্ষে সাজা ভোগ করে। সামাজিকতার ভয়ে অনেকে মুখ খুলতে চায় না। আসকের এক প্রতিবেদনে দেখা গেছে, এ দেশে প্রতিদিন ১৭ থেকে ১৮ জন নারী ধর্ষণের শিকার হন। এর মধ্যে তিনটি শিশুও থাকে। আমরা ধর্ষণের এই সংখ্যা অর্ধেকে নামিয়ে আনার চেষ্টা করব। এটা আমরা করবই।’
যেভাবে 'বাঁচাও অ্যাপস' কাজ করবে
গুগল প্লে স্টোর থেকে এই অ্যাপ ইনস্টল করতে হবে। এর পর জরুরি যোগাযোগের জন্য নিজের পরিবার, বন্ধুদের মধ্যে তিনজনের ফোন নম্বর নির্বাচন করতে হয়। এই অ্যাপ স্মার্টফোনে ইনস্টল করা নারী যদি বিপদের আশঙ্কা করেন, তাহলে এই অ্যাপের ‘রেপ অ্যালার্ট’ লেখা অপশন ক্লিক করলে কাছাকাছি থাকা পরিবারের সদস্য, বন্ধু ও স্বেচ্ছাসেবকেরা সেই সতর্কবার্তা পেয়ে যাবেন। এর পর তাঁরা সহযোগিতা করার জন্য যুক্ত হতে পারবেন। এ ছাড়া সেই নারী নিজেকে নিরাপদ মনে করলে ‘সেইফ নাও’ লেখা সবুজ অপশনে ক্লিক করে সংশ্লিষ্টদের জানাতেও পারবেন।

এ দেশের সমাজ বাস্তবতায় ধর্ষণ শব্দটি বহুল প্রচারিত একটি শব্দ। এ দেশের বেশির ভাগ নারী প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে ধর্ষণের শিকার হচ্ছেন। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ধর্ষণ বা যৌন নিপীড়নের অনেক পর ঘটনাটি সম্পর্কে জানা যাচ্ছে। অপরাধের বিষয়ে থানায় মামলা করা বা অন্য যেকোনো প্রশাসনিক পদক্ষেপ তো অনেক পরের বিষয়। এ দিয়ে তো আর অপরাধ সংঘটন থামানো যাচ্ছে না। এ ক্ষেত্রে এ ধরনের অপরাধের হাত থেকে ভুক্তভোগীকে বাঁচাতে আশা দেখাচ্ছে ‘বাঁচাও’ অ্যাপস, যা গত মাসে যাত্রা করেছে।
জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯-এর কারণে অনেক সময় এ ধরনের অপরাধ রোধ হচ্ছে ঠিক। কিন্তু তার হার এখনো কম। বিশেষত, এই জাতীয় জরুরি সেবা নম্বরের মাধ্যমে নাগরিকদের নানা ধরনের সেবা দেওয়া হয়। রয়েছে সরকারি আরও নানা উদ্যোগ। কিন্তু এর প্রতিটিরই কর্মপরিসর এত বড় যে, তা শুধু ধর্ষণ বা যৌন নিপীড়নের মতো অপরাধ থেকে নারীদের রক্ষায় তেমন বড় ভূমিকা রাখতে পারছে না। এ অবস্থায় বেসরকারি উদ্যোগে তৈরি করা ‘বাঁচাও’ অ্যাপস আশা দেখাচ্ছে নারী অধিকারকর্মীদের।
বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, ২০২১ সালে অক্টোবর মাসে মোট ৩৫৪ জন নারী ও মেয়ে শিশু নির্যাতনের শিকার হয়েছে। এর মধ্যে ধর্ষণের শিকার ১০১ জন। তার মধ্যে রয়েছে ৪১ শিশু, যার মধ্যে তিনটি শিশু দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার এবং চার শিশুকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে। এ ছাড়া এই সময়ের মধ্যে ২ শিশুসহ ৭ জনকে ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়েছে। এ অবস্থায় কিছু একটা করার উদ্যোগ নেন জালাল মির্জা।
জালাল মির্জা একজন কম্পিউটার প্রকৌশলী। ২০০১ সালে নিজের পরিবারেই ঘটে যায় ভয়াবহ এক ঘটনা। তাঁর অতি আপনজন ধর্ষণের শিকার হন। তাও একদিন নয়। স্বামী তাঁর বন্ধুদের দিয়ে দিনের পর দিন এই ধর্ষণ চালিয়ে গিয়েছিল। তাঁর সেই আপনজন এখন মানসিকভাবে অসুস্থ। এই অপরাধে ধর্ষকেরা শাস্তি পেলেও পরে জেল থেকে ছাড়া পেয়ে যায়। আর সেই ভুক্তভোগী এখন জীবন্মৃত হয়ে বেঁচে আছেন। কথা বলতে পারেন না, তেমন কাউকে চিনতেও পারেন না। এই ঘটনা জালাল মির্জার পরিবারকে রীতিমতো নাড়িয়ে দিয়ে যায়। ২০১৮ সালে মৃত্যুর আগের রাতে মা জালাল মির্জাকে কাছে ডেকে বলেছিলেন, ‘তুমি বাবা এত বড় কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার, পারলে কিছু করো, পারলে একটা মেয়েকে বাঁচাও।’
মায়ের সেই কথা রাখার চেষ্টা করেছেন জালাল মির্জা। এ দেশের নারীদের জন্য কিছু করার প্রত্যয় নিয়ে কাজ শুরু করেন। নিজের সেই আপনজনের মতো আর কেউ যেন ধর্ষণের শিকার না হয়, সে জন্য একটি অ্যাপ তৈরি করেন; নাম দেন—‘বাঁচাও’। গড়ে তোলেন বাঁচাও ডট লাইফ ফাউন্ডেশন। ফাউন্ডেশনের মোটো হিসেবে ঠিক করেন—‘আর একটাও ধর্ষণ হতে দেব না।’ নিজের ব্যক্তিগত ক্ষতই তাঁকে এ উদ্যোগে অনুপ্রেরণা দিয়েছে।
বাঁচাও ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) জালাল মির্জা বলেন, ‘এ দেশের মানুষের সচেতনতার আর সামাজিক প্রতিরোধের মাধ্যমে ধর্ষণ বন্ধ করা সম্ভব। আমরা এই অ্যাপস তৈরি করতে গিয়ে এক গবেষণায় দেখেছি, এ দেশের ৮০ শতাংশ নারী ধর্ষণের শিকার হন তাঁর আশপাশের ও কাছের মানুষদের মাধ্যমে। বিষয়টি মাথায় রেখে আমি এমন অ্যাপস তৈরি করেছি, যার মাধ্যমে একজন নারী বিপদের আশঙ্কা করলে “বাঁচাও অ্যাপস”-এর মাধ্যমে সাহায্য চাইতে পারবেন, যা তাঁকে বিপদ থেকে রক্ষা করতে পারবে। এ ছাড়া আমাদের দেশে পোশাক, খাবারের, যাতায়াতের জন্য অ্যাপস থাকলেও ব্যক্তি নিরাপত্তার জন্য তেমন কোনো অ্যাপস নেই। নিজের ব্যক্তিগত ক্ষত এবং নারীদের এই সমাজে নিরাপদ রাখতে ২০১৮ সালেই শুরু করি আমার এই অ্যাপ তৈরির কাজ।’
এই ‘বাঁচাও’ অ্যাপ জিপিএস প্রযুক্তি ব্যবহার করে কাজ করে। এ বিষয়ে জালাল মির্জা বলেন, ‘জিপিএস প্রযুক্তির এ অ্যাপে পিপল টু পিপল (পিটুপি) মডেল ব্যবহার করা হয়েছে। এতে “রেপ অ্যালার্ট” বাটন রয়েছে, যেখানে কিক্ল করলে এটি জিপিএসের মাধ্যমে বিপদে পড়া নারীর অবস্থান নির্দেশ করবে। এতে পরিবার, বন্ধু, স্বেচ্ছাসেবক ও পুলিশের কাছে ওই নারীর বিপদগ্রস্ত হওয়ার বার্তা চলে যাবে। তবে এ ক্ষেত্রে আরেকটা বিষয় জানিয়ে রাখা ভালো। সেটা হলো বাঁচাও অ্যাপ এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে, যেখানে বিপদে সাহায্য চাওয়া নারী চাইলে নিজের ফোন নম্বর গোপন রেখে যোগাযোগ করতে পারবেন।’
তথ্যপ্রযুক্তির উন্নতির যুগে শহরের নারীদের হাতে অ্যান্ড্রয়েড ফোন থাকলেও এ দেশের নিম্নবিত্ত ও গ্রামের নারীদের হাতে এখনো এ প্রযুক্তির মোবাইল সেট পৌঁছায়নি। আবার পরিসংখ্যান বলছে, শহরের তুলনায় গ্রামের নারীরা বেশি ধর্ষণের শিকার হচ্ছেন। গ্রামের নারীরা এই অ্যাপে কীভাবে অন্তর্ভুক্ত হবেন—সে বিষয়টি জানতে চাইলে জালাল মির্জা বলেন, ‘আমাদের দেশে অনেকের হাতে অ্যান্ড্রয়েড ফোন নেই। বিষয়টি আমাদের মাথায় আছে। যাদের স্মার্টফোন নেই, তাদের কথা চিন্তা করে আমরা বিটিআরসির কাছে বিকাশ ও নগদের মতো শর্টকোডের আবেদন করছি।’
অক্টোবরে যাত্রা করা এই অ্যাপ এরই মধ্যে অনেকের কাছে পৌঁছেছে বলে দাবি করেন জালাল মির্জা। তিনি বলেন, ‘অক্টোবর থেকে শুরু হয়ে এ পর্যন্ত এই অ্যাপ ৬০ লাখ মানুষের কাছে পৌঁছেছে। আর ১ লাখ মানুষ এই অ্যাপ ডাউনলোড করেছে। দেড় মাসে এই সংখ্যা আমাকে আশাবাদী করে তুলেছে। বিভাগীয় শহরের মধ্যে ঢাকাতে ডাউনলোডের সংখ্যা বেশি। এ পর্যন্ত বিপদের পড়ে সহযোগিতা চেয়ে ধর্ষণ থেকে রক্ষা পাওয়ার ঘটনা ১৬৫ টি।’
তবে সাফল্যের গল্প যেমন আছে, তেমনি আছে ব্যর্থতার গল্পও, যা ব্যথিত করেছে জালাল মির্জাকেও। তিনি বলেন, ‘সহযোগিতা চাওয়ার পর পাঁচটি ঘটনায় আমরা তেমন কিছু করতে পারিনি। কারণ, সহযোগিতা পাওয়ার পর সেই ফোন নেটওয়ার্কের বাইরে চলে যায়। আমাদের ধারণা, বিপদগ্রস্ত নারীদের থেকে সে সময় ফোন কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’
জালাল মির্জা স্বপ্ন দেখেন এই অ্যাপ সারা দেশে ছড়িয়ে পড়বে। মানুষ এর সঙ্গে যুক্ত হবে এবং বিপদগ্রস্ত নারীদের সহায়তায় এগিয়ে আসবে। তিনি বলেন, “আমরা সারা দেশে এই অ্যাপ নিয়ে কাজ করছি। এরই মধ্যে আমরা পুলিশ প্রশাসনের কাছে সহযোগিতা চেয়েছি, যেন দেশের সাড়ে ৬ হাজার থানা আমাদের সঙ্গে কাজ করে। পুলিশ প্রশাসন আশ্বাস দিয়েছে। এটা ভালো সংবাদ। কারণ, কোনো নারী বিপদে পড়লে, পুলিশ প্রশাসনই সবচেয়ে কার্যকরী ভূমিকা পালন করতে পারবে। এ ছাড়া সরকারি, বেসরকারি, এনজিও মিলে মোট ২২টি প্রতিষ্ঠানকে আমাদের কাজের সঙ্গে যুক্ত করেছি।’
ধর্ষণের হাত থেকে নারীদের রক্ষার বিষয়ে জালাল মির্জা বলেন, ‘আমরা হয়তো ধর্ষণকে পুরোপুরি বন্ধ করতে পারব না; তবে সকলের ঐক্যবদ্ধ চেষ্টায় তো ধর্ষণের সংখ্যা কমাতে পারব।’
ভবিষ্যতে আরও বড় পরিসরে এই অ্যাপের কাজ চালিয়ে যেতে চান জালাল মির্জা। তিনি বলেন, ‘আইন ও সালিস কেন্দ্রের (আসক) এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, ধর্ষণের সঙ্গে জড়িতদের মাত্র দশমিক ৪ শতাংশ প্রকৃতপক্ষে সাজা ভোগ করে। সামাজিকতার ভয়ে অনেকে মুখ খুলতে চায় না। আসকের এক প্রতিবেদনে দেখা গেছে, এ দেশে প্রতিদিন ১৭ থেকে ১৮ জন নারী ধর্ষণের শিকার হন। এর মধ্যে তিনটি শিশুও থাকে। আমরা ধর্ষণের এই সংখ্যা অর্ধেকে নামিয়ে আনার চেষ্টা করব। এটা আমরা করবই।’
যেভাবে 'বাঁচাও অ্যাপস' কাজ করবে
গুগল প্লে স্টোর থেকে এই অ্যাপ ইনস্টল করতে হবে। এর পর জরুরি যোগাযোগের জন্য নিজের পরিবার, বন্ধুদের মধ্যে তিনজনের ফোন নম্বর নির্বাচন করতে হয়। এই অ্যাপ স্মার্টফোনে ইনস্টল করা নারী যদি বিপদের আশঙ্কা করেন, তাহলে এই অ্যাপের ‘রেপ অ্যালার্ট’ লেখা অপশন ক্লিক করলে কাছাকাছি থাকা পরিবারের সদস্য, বন্ধু ও স্বেচ্ছাসেবকেরা সেই সতর্কবার্তা পেয়ে যাবেন। এর পর তাঁরা সহযোগিতা করার জন্য যুক্ত হতে পারবেন। এ ছাড়া সেই নারী নিজেকে নিরাপদ মনে করলে ‘সেইফ নাও’ লেখা সবুজ অপশনে ক্লিক করে সংশ্লিষ্টদের জানাতেও পারবেন।

প্রস্তাবিত টেলিযোগাযোগ অধ্যাদেশে ইন্টারনেট বন্ধের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপসহ বিদ্যমান আইন ও নীতিতে বেশ কিছু মৌলিক পরিবর্তন আনা হয়েছে। এর মাধ্যমে বাংলাদেশের টেলিযোগাযোগ খাতে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও নাগরিক অধিকারের সুরক্ষা আরও সুদৃঢ় হবে বলে মনে করছে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ।
২০ ঘণ্টা আগে
হুয়াওয়ে বলতে সাধারণ মানুষ একটি মোবাইল ফোন নির্মাতা প্রতিষ্ঠানকে জানে। প্রায় পাঁচ বছর ধরে বাংলাদেশের বাজারে তাদের নতুন কোনো মোবাইল ফোন যদিও আসেনি। তবু দেশে গ্রাহক সমাধান, টেলিকম নেটওয়ার্ক, নবায়নযোগ্য শক্তি, শিক্ষা ও সামাজিক উদ্যোগে হুয়াওয়ে বেশ বড় পরিসরে কাজ করে যাচ্ছে।
২ দিন আগে
সম্প্রতি অ্যান্ড্রয়েড ফোনসেট গুলোতে একধরনের সাইবার আক্রমণের হুমকি দেখা দিয়েছে। হ্যাকারদের এক বিশেষ ধরনের আক্রমণের শিকার হয়েছে কিছু মোবাইল ফোনসেট। ব্যক্তিগত তথ্যসহ টু ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন কোড পর্যন্ত চুরি করছে হ্যাকাররা।
২ দিন আগে
গ্রাফিক ডিজাইনে যাঁরা পারদর্শী নন, তাঁদের কাছে ক্যানভা নতুন এক দুয়ার খুলে দিয়েছে। যে কেউ এখন এটি ব্যবহার করে ব্যক্তিগত অথবা পেশাদার কাজ করতে পারেন। সময়ের সঙ্গে আরও উন্নত হয়েছে এই ডিজাইন প্ল্যাটফর্ম। এবার তাতে যোগ হলো তাদের নিজস্ব এআই-চালিত মডেল।
২ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ প্রস্তাবিত ‘বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ অধ্যাদেশ ২০২৫’-এর খসড়া প্রকাশ করেছে। বিভাগের ওয়েবসাইটে গিয়ে যে কেউ প্রস্তাবিত এই অধ্যাদেশের খসড়া দেখতে পারবে এবং ই-মেইলের মাধ্যমে মতামত জানাতে পারবে।
আজ বুধবার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
প্রস্তাবিত টেলিযোগাযোগ অধ্যাদেশে ইন্টারনেট বন্ধের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপসহ বিদ্যমান আইন ও নীতিতে বেশ কিছু মৌলিক পরিবর্তন আনা হয়েছে। এর মাধ্যমে বাংলাদেশের টেলিযোগাযোগ খাতে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও নাগরিক অধিকারের সুরক্ষা আরও সুদৃঢ় হবে বলে মনে করছে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ। তবে ইন্টারনেট সেবাদাতাসহ টেলিযোগাযোগ সংশ্লিষ্ট বেশ কয়েকটি পক্ষের এই অধ্যাদেশ নিয়ে ভিন্নমত করেছে।
অধ্যাদেশের ওপর মতামত পাঠানো যাবে:
ই-মেইল: [email protected] - এই ইমেইলের মাধ্যমে। এ ছাড়া চিঠি পাঠিয়েও মতামত জানানো যাবে। ঠিকানা: সচিব, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ, বাংলাদেশ সচিবালয়, ঢাকা।

ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ প্রস্তাবিত ‘বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ অধ্যাদেশ ২০২৫’-এর খসড়া প্রকাশ করেছে। বিভাগের ওয়েবসাইটে গিয়ে যে কেউ প্রস্তাবিত এই অধ্যাদেশের খসড়া দেখতে পারবে এবং ই-মেইলের মাধ্যমে মতামত জানাতে পারবে।
আজ বুধবার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
প্রস্তাবিত টেলিযোগাযোগ অধ্যাদেশে ইন্টারনেট বন্ধের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপসহ বিদ্যমান আইন ও নীতিতে বেশ কিছু মৌলিক পরিবর্তন আনা হয়েছে। এর মাধ্যমে বাংলাদেশের টেলিযোগাযোগ খাতে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও নাগরিক অধিকারের সুরক্ষা আরও সুদৃঢ় হবে বলে মনে করছে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ। তবে ইন্টারনেট সেবাদাতাসহ টেলিযোগাযোগ সংশ্লিষ্ট বেশ কয়েকটি পক্ষের এই অধ্যাদেশ নিয়ে ভিন্নমত করেছে।
অধ্যাদেশের ওপর মতামত পাঠানো যাবে:
ই-মেইল: [email protected] - এই ইমেইলের মাধ্যমে। এ ছাড়া চিঠি পাঠিয়েও মতামত জানানো যাবে। ঠিকানা: সচিব, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ, বাংলাদেশ সচিবালয়, ঢাকা।

এ দেশের সমাজ বাস্তবতায় ধর্ষণ শব্দটি বহুল প্রচারিত একটি শব্দ। এ দেশের বেশির ভাগ নারী প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে ধর্ষণের শিকার হচ্ছেন। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ধর্ষণ বা যৌন নিপীড়নের অনেক পর ঘটনাটি সম্পর্কে জানা যাচ্ছে। অপরাধের বিষয়ে থানায় মামলা করা বা অন্য যেকোনো প্রশাসনিক পদক্ষেপ তো অনেক পরের বিষয়। এ দিয়ে তো আ
২৫ নভেম্বর ২০২১
হুয়াওয়ে বলতে সাধারণ মানুষ একটি মোবাইল ফোন নির্মাতা প্রতিষ্ঠানকে জানে। প্রায় পাঁচ বছর ধরে বাংলাদেশের বাজারে তাদের নতুন কোনো মোবাইল ফোন যদিও আসেনি। তবু দেশে গ্রাহক সমাধান, টেলিকম নেটওয়ার্ক, নবায়নযোগ্য শক্তি, শিক্ষা ও সামাজিক উদ্যোগে হুয়াওয়ে বেশ বড় পরিসরে কাজ করে যাচ্ছে।
২ দিন আগে
সম্প্রতি অ্যান্ড্রয়েড ফোনসেট গুলোতে একধরনের সাইবার আক্রমণের হুমকি দেখা দিয়েছে। হ্যাকারদের এক বিশেষ ধরনের আক্রমণের শিকার হয়েছে কিছু মোবাইল ফোনসেট। ব্যক্তিগত তথ্যসহ টু ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন কোড পর্যন্ত চুরি করছে হ্যাকাররা।
২ দিন আগে
গ্রাফিক ডিজাইনে যাঁরা পারদর্শী নন, তাঁদের কাছে ক্যানভা নতুন এক দুয়ার খুলে দিয়েছে। যে কেউ এখন এটি ব্যবহার করে ব্যক্তিগত অথবা পেশাদার কাজ করতে পারেন। সময়ের সঙ্গে আরও উন্নত হয়েছে এই ডিজাইন প্ল্যাটফর্ম। এবার তাতে যোগ হলো তাদের নিজস্ব এআই-চালিত মডেল।
২ দিন আগে
হুয়াওয়ে বলতে সাধারণ মানুষ একটি মোবাইল ফোন নির্মাতা প্রতিষ্ঠানকে জানে। প্রায় পাঁচ বছর ধরে বাংলাদেশের বাজারে তাদের নতুন কোনো মোবাইল ফোন যদিও আসেনি। তবু দেশে গ্রাহক সমাধান, টেলিকম নেটওয়ার্ক, নবায়নযোগ্য শক্তি, শিক্ষা ও সামাজিক উদ্যোগে হুয়াওয়ে বেশ বড় পরিসরে কাজ করে যাচ্ছে। এসব বিষয়ে প্রতিষ্ঠানটির দক্ষিণ এশিয়ার হেড অব এক্সটার্নাল কমিউনিকেশনস অ্যান্ড মার্কেটিং তানভীর আহমেদের মুখোমুখি হয়েছে আজকের পত্রিকা। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন মোস্তাফিজ মিঠু।
মোস্তাফিজ মিঠু

বাংলাদেশের মোবাইল ফোন গ্রাহকেরা স্মার্টফোন দিয়ে হুয়াওয়েকে চেনে। যদিও এটি হুয়াওয়ের একটি অংশমাত্র। পুরো প্রতিষ্ঠান নিয়ে শুরুতে সংক্ষেপে জানতে চাইব।
বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের মধ্যে হুয়াওয়ের জনপ্রিয়তা আসে মোবাইল ফোন দিয়েই। আমাদের হ্যান্ডসেটগুলো বরাবরই জনপ্রিয়। ডিভাইসের ডিজাইন, টেক্সচার, ক্যামেরা কোয়ালিটি—সবকিছুই গ্রাহকের কাছে আকর্ষণীয় ছিল। আমি বহু মানুষকে এখনো হুয়াওয়ের মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে দেখছি। কিন্তু হুয়াওয়ের যাত্রাটা আসলে মোবাইল ফোন দিয়ে শুরু হয়নি। আমাদের প্রতিষ্ঠাতা রেন ঝেংফেই ১৯৮৭ সালে বাংলাদেশি মুদ্রায় মাত্র তিন লাখের মতো টাকা দিয়ে চীনে হুয়াওয়ের যাত্রা শুরু করেন। আমাদের মূল ব্যবসা টেলিকম নেটওয়ার্ক সল্যুশন। টেলিকম প্রযুক্তি আর প্রজন্ম নিয়ে আমরা কাজ করি। এই যে টু-জি, থ্রি-জি, ফোর-জি, ফাইভ-জি বা সিক্স-জি—এমন প্রতিটি টেলিকম জেনারেশন উদ্ভাবনে আমরা সক্রিয়ভাবে ভূমিকা রাখি এবং এই প্রযুক্তিগুলো সরবরাহ করি। শুধু বাংলাদেশ নয়, সারা বিশ্বে আমাদের সরঞ্জাম প্রয়োগ করার মধ্য দিয়ে মোবাইল টাওয়ারগুলোয় জিএসএম সল্যুশন ব্যবহার করা হয়।
এখন তো বাংলাদেশের বাজারে হুয়াওয়ের মোবাইল ফোন নেই। বর্তমানে আপনারা কোন সেবাগুলো নিয়ে কাজ করছেন?
নেটওয়ার্ক সল্যুশন থেকে প্রযুক্তি, বিভিন্ন খাতে হুয়াওয়ে কাজ করছে। বাংলাদেশ হাইওয়ে পুলিশকে আমরা ইন্টেলিজেন্ট ক্যামেরা সল্যুশন দিয়েছি; যার মাধ্যমে পুলিশ কন্ট্রোল রুম মনিটর করতে পারছে, কোনো নির্দিষ্ট রুটে কোথাও কোনো দুর্ঘটনা ঘটল কি না, কোনো আইন কেউ ভাঙল কি না ইত্যাদি বিষয়। আমরা শুধু হার্ডওয়্যারই দিই না। এর সঙ্গে সফটওয়্যার, নেটওয়ার্কিং সিস্টেম, ডেটা সেন্টার, ক্লাউড সল্যুশনসহ কাস্টমাইজড সমাধান দিয়ে থাকি। যেমন বিকাশকে আমরা হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যার সরবরাহ করছি। বিভিন্ন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে নেটওয়ার্কিং ল্যাব গড়ে তুলেছি। মেডিকেল সেক্টরে ডেটাবেইস ও ডেটা ম্যানেজমেন্ট দিয়ে থাকি; যাতে হাসপাতাল এবং সংশ্লিষ্ট সেবা আরও দক্ষভাবে পরিচালিত হয়।
আপনারা দেশের সৌরবিদ্যুৎ খাতেরও একটি সহযোগী। এ বিষয়ে বিস্তারিত বলবেন।
নবায়নযোগ্য শক্তি উৎপাদনে প্রযুক্তি সরবরাহ করাও আমাদের বড় একটি ব্যবসায়িক দিক। ২০২০ সালে ময়মনসিংহে বাংলাদেশের তৎকালীন সবচেয়ে বড় সোলার পাওয়ার প্ল্যান্ট স্থাপিত হয়। আমরা সেই প্রকল্পে পিভি ইনভার্টার প্রযুক্তি ও সমাধান দিয়েছি। সেখানে এখন প্রতিদিন প্রায় ৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদিত হচ্ছে। এ ছাড়া দেশের বিভিন্ন শিল্পকারখানা ও প্রতিষ্ঠানকে রুফটপ সোলার সল্যুশন, পিভি ইনভার্টার এবং এনার্জি স্টোরেজ সল্যুশন সরবরাহ করা হয়েছে। অন্যদিকে আমরা ইউআইইউ ও সিইআরের সঙ্গে ইউআইইউতে সম্মিলিতভাবে একটি সোলার পাওয়ার ল্যাব চালু করেছি। সেখানে শিক্ষানবিশ ও পেশাদারেরা সোলার এনার্জি উৎপাদন, প্রকল্পের বিভিন্ন খুঁটিনাটি বিষয়ে হাতেকলমে শিক্ষার সুযোগ পাচ্ছেন। অন্যদিকে টেলিকম অপারেটরদের যে টাওয়ারগুলো রয়েছে, সেগুলোকে সৌরবিদ্যুৎনির্ভর করে তুলতে আমরা অনেক বছর ধরে কাজ করে যাচ্ছি।
বিশ্ববিদ্যালয় ও তরুণদের জন্য আপনাদের কয়েকটি উদ্যোগ রয়েছে। সেগুলোর উদ্দেশ্য ও কার্যক্রম বিষয়ে জানতে চাই।
সব ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানেরই সমাজের প্রতি দায়বদ্ধতা আছে। আমরা এ ক্ষেত্রে তরুণদের উন্নয়নের বিষয়টিতে বেশি গুরুত্ব দিই। আমাদের মাধ্যমে যেন তারা একটি গাইডলাইন বা প্ল্যাটফর্ম পায়। এ রকম আমাদের বেশ কিছু আয়োজন আছে। সেগুলোর মধ্যে ‘সিডস ফর দ্য ফিউচার’ বেশ জনপ্রিয় একটি উদ্যোগ। প্রতিবছর বাংলাদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮ থেকে ১২ জনের একটি ব্যাচ বেছে নিয়ে তাদের প্রশিক্ষণের জন্য চীনে পাঠানো হয়। এখানে নারী-পুরুষের সমতা বজায় রাখার চেষ্টা করি। এই প্রোগ্রামের মাধ্যমে অংশগ্রহণকারীরা ডিজাইন থিংকিং, ডিপ-থিংকিং মেথডোলজি, টিমওয়ার্ক, সেলফ প্রেজেন্টেশনসহ বিভিন্ন বিষয়ে উৎকর্ষ অর্জন করেন। এগুলো ভবিষ্যতে তাদের ক্যারিয়ারে কাজে লাগে। সাবেক অংশগ্রহণকারীরা গ্লোবাল এবং রিজিওনাল রাউন্ডে অংশ নেয়। অন্যদিকে আমরা নিয়মিত ক্যাম্পাস রিক্রুটমেন্ট প্রোগ্রাম করি। ইঞ্জিনিয়ারিং ও টেক বিশ্ববিদ্যালয়ের ফ্রেশ গ্র্যাজুয়েটরা এতে অংশ নেন।

বাংলাদেশে এখন ফাইভ-জি চলে এসেছে। এর সঙ্গেও হুয়াওয়ের সরাসরি সম্পৃক্ততা রয়েছে। আপনাদের ভূমিকার বিষয়টি পাঠকদের জানাতে চাই।
সম্প্রতি বাংলাদেশে দুটি টেলিকম প্রতিষ্ঠান ফাইভ-জি ঘোষণার পর মূলত এ নিয়ে আলোচনা হচ্ছে; যাদের সল্যুশন দিচ্ছে হুয়াওয়ে। যদিও এই আলোচনার শুরু ২০১৮ সালে। বাংলাদেশে প্রথম ফাইভ-জি ট্রায়াল পরিচালনা করে হুয়াওয়ে। তখন আমাদের
সঙ্গে ছিল রবি। ২০২০ সালে আমরা এক প্রদর্শনীতে ফাইভ-জি নিয়ে জনসমক্ষে এর অভিজ্ঞতা উপস্থাপন করেছিলাম। সম্প্রতি দুই টেলিকম অপারেটর বাণিজ্যিকভাবে ফাইভ-জি বাজারে নিয়ে আসে। এখন যেকোনো অপারেটরকেই ফাইভ-জি প্রযুক্তির সাপোর্ট দিতে হুয়াওয়ে পুরোপুরি প্রস্তুত রয়েছে।
প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলো এআইকে বিভিন্নভাবে কাজে লাগাচ্ছে। আপনারা কোন ধরনের কাজে এ প্রযুক্তি ব্যবহার করছেন?
এখন আসলে এআইয়ের সময়। আমাদের বিভিন্ন সমাধানের উচ্চক্ষমতা নিশ্চিত করতে সেগুলোতে প্রয়োজন অনুযায়ী এআই রয়েছে। যেমন সোলার পাওয়ার সিস্টেমে পিভি
ইনভার্টার ও উৎপাদন ডিস্ট্রিবিউশন ম্যানেজমেন্টের অ্যালগরিদমগুলো এআইভিত্তিক। এতে উৎপাদন, ম্যানেজমেন্ট ও ডিস্ট্রিবিউশন আরও দক্ষভাবে পরিচালনা করা যায়। হুয়াওয়ে ক্লাউডেও অনেক রকম এআইয়ের ইন্টিগ্রেশন রয়েছে, যা এর ব্যবহারকারীদের বাড়তি সুবিধা ও নিরাপত্তা দেয়।
বাংলাদেশে আপনাদের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী? নতুন বছরে বিশেষ কিছু আসছে?
বাংলাদেশের প্রযুক্তি অবকাঠামো, বিশেষত ক্লাউড, নবায়নযোগ্য শক্তি, এআই ও শিক্ষা খাতে আরও অনেক সুযোগ রয়েছে কাজ করার। স্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয়, স্টার্টআপ ও শিল্প খাতের সঙ্গে অংশীদারত্ব বাড়িয়ে বিভিন্ন সল্যুশন নিয়ে কাজ করে যেতে চাই। লক্ষ্য হচ্ছে, প্রযুক্তির মাধ্যমে সামগ্রিক জীবনযাত্রার মান উন্নত করা এবং কর্মসংস্থান বাড়ানো। আমরা প্রথম থেকে বাংলাদেশের আইসিটির অগ্রযাত্রার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হতে চেয়েছি। আমাদের মূল ভিশন হলো ‘বিল্ডিং আ ফুললি কানেক্টেড, ইন্টেলিজেন্ট বাংলাদেশ’। এই উদ্দেশ্য নিয়েই আমরা বাংলাদেশের জন্য কাজ করে যাব।
বাংলাদেশের মোবাইল ফোন গ্রাহকেরা স্মার্টফোন দিয়ে হুয়াওয়েকে চেনে। যদিও এটি হুয়াওয়ের একটি অংশমাত্র। পুরো প্রতিষ্ঠান নিয়ে শুরুতে সংক্ষেপে জানতে চাইব।
বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের মধ্যে হুয়াওয়ের জনপ্রিয়তা আসে মোবাইল ফোন দিয়েই। আমাদের হ্যান্ডসেটগুলো বরাবরই জনপ্রিয়। ডিভাইসের ডিজাইন, টেক্সচার, ক্যামেরা কোয়ালিটি—সবকিছুই গ্রাহকের কাছে আকর্ষণীয় ছিল। আমি বহু মানুষকে এখনো হুয়াওয়ের মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে দেখছি। কিন্তু হুয়াওয়ের যাত্রাটা আসলে মোবাইল ফোন দিয়ে শুরু হয়নি। আমাদের প্রতিষ্ঠাতা রেন ঝেংফেই ১৯৮৭ সালে বাংলাদেশি মুদ্রায় মাত্র তিন লাখের মতো টাকা দিয়ে চীনে হুয়াওয়ের যাত্রা শুরু করেন। আমাদের মূল ব্যবসা টেলিকম নেটওয়ার্ক সল্যুশন। টেলিকম প্রযুক্তি আর প্রজন্ম নিয়ে আমরা কাজ করি। এই যে টু-জি, থ্রি-জি, ফোর-জি, ফাইভ-জি বা সিক্স-জি—এমন প্রতিটি টেলিকম জেনারেশন উদ্ভাবনে আমরা সক্রিয়ভাবে ভূমিকা রাখি এবং এই প্রযুক্তিগুলো সরবরাহ করি। শুধু বাংলাদেশ নয়, সারা বিশ্বে আমাদের সরঞ্জাম প্রয়োগ করার মধ্য দিয়ে মোবাইল টাওয়ারগুলোয় জিএসএম সল্যুশন ব্যবহার করা হয়।
এখন তো বাংলাদেশের বাজারে হুয়াওয়ের মোবাইল ফোন নেই। বর্তমানে আপনারা কোন সেবাগুলো নিয়ে কাজ করছেন?
নেটওয়ার্ক সল্যুশন থেকে প্রযুক্তি, বিভিন্ন খাতে হুয়াওয়ে কাজ করছে। বাংলাদেশ হাইওয়ে পুলিশকে আমরা ইন্টেলিজেন্ট ক্যামেরা সল্যুশন দিয়েছি; যার মাধ্যমে পুলিশ কন্ট্রোল রুম মনিটর করতে পারছে, কোনো নির্দিষ্ট রুটে কোথাও কোনো দুর্ঘটনা ঘটল কি না, কোনো আইন কেউ ভাঙল কি না ইত্যাদি বিষয়। আমরা শুধু হার্ডওয়্যারই দিই না। এর সঙ্গে সফটওয়্যার, নেটওয়ার্কিং সিস্টেম, ডেটা সেন্টার, ক্লাউড সল্যুশনসহ কাস্টমাইজড সমাধান দিয়ে থাকি। যেমন বিকাশকে আমরা হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যার সরবরাহ করছি। বিভিন্ন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে নেটওয়ার্কিং ল্যাব গড়ে তুলেছি। মেডিকেল সেক্টরে ডেটাবেইস ও ডেটা ম্যানেজমেন্ট দিয়ে থাকি; যাতে হাসপাতাল এবং সংশ্লিষ্ট সেবা আরও দক্ষভাবে পরিচালিত হয়।
আপনারা দেশের সৌরবিদ্যুৎ খাতেরও একটি সহযোগী। এ বিষয়ে বিস্তারিত বলবেন।
নবায়নযোগ্য শক্তি উৎপাদনে প্রযুক্তি সরবরাহ করাও আমাদের বড় একটি ব্যবসায়িক দিক। ২০২০ সালে ময়মনসিংহে বাংলাদেশের তৎকালীন সবচেয়ে বড় সোলার পাওয়ার প্ল্যান্ট স্থাপিত হয়। আমরা সেই প্রকল্পে পিভি ইনভার্টার প্রযুক্তি ও সমাধান দিয়েছি। সেখানে এখন প্রতিদিন প্রায় ৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদিত হচ্ছে। এ ছাড়া দেশের বিভিন্ন শিল্পকারখানা ও প্রতিষ্ঠানকে রুফটপ সোলার সল্যুশন, পিভি ইনভার্টার এবং এনার্জি স্টোরেজ সল্যুশন সরবরাহ করা হয়েছে। অন্যদিকে আমরা ইউআইইউ ও সিইআরের সঙ্গে ইউআইইউতে সম্মিলিতভাবে একটি সোলার পাওয়ার ল্যাব চালু করেছি। সেখানে শিক্ষানবিশ ও পেশাদারেরা সোলার এনার্জি উৎপাদন, প্রকল্পের বিভিন্ন খুঁটিনাটি বিষয়ে হাতেকলমে শিক্ষার সুযোগ পাচ্ছেন। অন্যদিকে টেলিকম অপারেটরদের যে টাওয়ারগুলো রয়েছে, সেগুলোকে সৌরবিদ্যুৎনির্ভর করে তুলতে আমরা অনেক বছর ধরে কাজ করে যাচ্ছি।
বিশ্ববিদ্যালয় ও তরুণদের জন্য আপনাদের কয়েকটি উদ্যোগ রয়েছে। সেগুলোর উদ্দেশ্য ও কার্যক্রম বিষয়ে জানতে চাই।
সব ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানেরই সমাজের প্রতি দায়বদ্ধতা আছে। আমরা এ ক্ষেত্রে তরুণদের উন্নয়নের বিষয়টিতে বেশি গুরুত্ব দিই। আমাদের মাধ্যমে যেন তারা একটি গাইডলাইন বা প্ল্যাটফর্ম পায়। এ রকম আমাদের বেশ কিছু আয়োজন আছে। সেগুলোর মধ্যে ‘সিডস ফর দ্য ফিউচার’ বেশ জনপ্রিয় একটি উদ্যোগ। প্রতিবছর বাংলাদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮ থেকে ১২ জনের একটি ব্যাচ বেছে নিয়ে তাদের প্রশিক্ষণের জন্য চীনে পাঠানো হয়। এখানে নারী-পুরুষের সমতা বজায় রাখার চেষ্টা করি। এই প্রোগ্রামের মাধ্যমে অংশগ্রহণকারীরা ডিজাইন থিংকিং, ডিপ-থিংকিং মেথডোলজি, টিমওয়ার্ক, সেলফ প্রেজেন্টেশনসহ বিভিন্ন বিষয়ে উৎকর্ষ অর্জন করেন। এগুলো ভবিষ্যতে তাদের ক্যারিয়ারে কাজে লাগে। সাবেক অংশগ্রহণকারীরা গ্লোবাল এবং রিজিওনাল রাউন্ডে অংশ নেয়। অন্যদিকে আমরা নিয়মিত ক্যাম্পাস রিক্রুটমেন্ট প্রোগ্রাম করি। ইঞ্জিনিয়ারিং ও টেক বিশ্ববিদ্যালয়ের ফ্রেশ গ্র্যাজুয়েটরা এতে অংশ নেন।

বাংলাদেশে এখন ফাইভ-জি চলে এসেছে। এর সঙ্গেও হুয়াওয়ের সরাসরি সম্পৃক্ততা রয়েছে। আপনাদের ভূমিকার বিষয়টি পাঠকদের জানাতে চাই।
সম্প্রতি বাংলাদেশে দুটি টেলিকম প্রতিষ্ঠান ফাইভ-জি ঘোষণার পর মূলত এ নিয়ে আলোচনা হচ্ছে; যাদের সল্যুশন দিচ্ছে হুয়াওয়ে। যদিও এই আলোচনার শুরু ২০১৮ সালে। বাংলাদেশে প্রথম ফাইভ-জি ট্রায়াল পরিচালনা করে হুয়াওয়ে। তখন আমাদের
সঙ্গে ছিল রবি। ২০২০ সালে আমরা এক প্রদর্শনীতে ফাইভ-জি নিয়ে জনসমক্ষে এর অভিজ্ঞতা উপস্থাপন করেছিলাম। সম্প্রতি দুই টেলিকম অপারেটর বাণিজ্যিকভাবে ফাইভ-জি বাজারে নিয়ে আসে। এখন যেকোনো অপারেটরকেই ফাইভ-জি প্রযুক্তির সাপোর্ট দিতে হুয়াওয়ে পুরোপুরি প্রস্তুত রয়েছে।
প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলো এআইকে বিভিন্নভাবে কাজে লাগাচ্ছে। আপনারা কোন ধরনের কাজে এ প্রযুক্তি ব্যবহার করছেন?
এখন আসলে এআইয়ের সময়। আমাদের বিভিন্ন সমাধানের উচ্চক্ষমতা নিশ্চিত করতে সেগুলোতে প্রয়োজন অনুযায়ী এআই রয়েছে। যেমন সোলার পাওয়ার সিস্টেমে পিভি
ইনভার্টার ও উৎপাদন ডিস্ট্রিবিউশন ম্যানেজমেন্টের অ্যালগরিদমগুলো এআইভিত্তিক। এতে উৎপাদন, ম্যানেজমেন্ট ও ডিস্ট্রিবিউশন আরও দক্ষভাবে পরিচালনা করা যায়। হুয়াওয়ে ক্লাউডেও অনেক রকম এআইয়ের ইন্টিগ্রেশন রয়েছে, যা এর ব্যবহারকারীদের বাড়তি সুবিধা ও নিরাপত্তা দেয়।
বাংলাদেশে আপনাদের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী? নতুন বছরে বিশেষ কিছু আসছে?
বাংলাদেশের প্রযুক্তি অবকাঠামো, বিশেষত ক্লাউড, নবায়নযোগ্য শক্তি, এআই ও শিক্ষা খাতে আরও অনেক সুযোগ রয়েছে কাজ করার। স্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয়, স্টার্টআপ ও শিল্প খাতের সঙ্গে অংশীদারত্ব বাড়িয়ে বিভিন্ন সল্যুশন নিয়ে কাজ করে যেতে চাই। লক্ষ্য হচ্ছে, প্রযুক্তির মাধ্যমে সামগ্রিক জীবনযাত্রার মান উন্নত করা এবং কর্মসংস্থান বাড়ানো। আমরা প্রথম থেকে বাংলাদেশের আইসিটির অগ্রযাত্রার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হতে চেয়েছি। আমাদের মূল ভিশন হলো ‘বিল্ডিং আ ফুললি কানেক্টেড, ইন্টেলিজেন্ট বাংলাদেশ’। এই উদ্দেশ্য নিয়েই আমরা বাংলাদেশের জন্য কাজ করে যাব।

এ দেশের সমাজ বাস্তবতায় ধর্ষণ শব্দটি বহুল প্রচারিত একটি শব্দ। এ দেশের বেশির ভাগ নারী প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে ধর্ষণের শিকার হচ্ছেন। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ধর্ষণ বা যৌন নিপীড়নের অনেক পর ঘটনাটি সম্পর্কে জানা যাচ্ছে। অপরাধের বিষয়ে থানায় মামলা করা বা অন্য যেকোনো প্রশাসনিক পদক্ষেপ তো অনেক পরের বিষয়। এ দিয়ে তো আ
২৫ নভেম্বর ২০২১
প্রস্তাবিত টেলিযোগাযোগ অধ্যাদেশে ইন্টারনেট বন্ধের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপসহ বিদ্যমান আইন ও নীতিতে বেশ কিছু মৌলিক পরিবর্তন আনা হয়েছে। এর মাধ্যমে বাংলাদেশের টেলিযোগাযোগ খাতে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও নাগরিক অধিকারের সুরক্ষা আরও সুদৃঢ় হবে বলে মনে করছে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ।
২০ ঘণ্টা আগে
সম্প্রতি অ্যান্ড্রয়েড ফোনসেট গুলোতে একধরনের সাইবার আক্রমণের হুমকি দেখা দিয়েছে। হ্যাকারদের এক বিশেষ ধরনের আক্রমণের শিকার হয়েছে কিছু মোবাইল ফোনসেট। ব্যক্তিগত তথ্যসহ টু ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন কোড পর্যন্ত চুরি করছে হ্যাকাররা।
২ দিন আগে
গ্রাফিক ডিজাইনে যাঁরা পারদর্শী নন, তাঁদের কাছে ক্যানভা নতুন এক দুয়ার খুলে দিয়েছে। যে কেউ এখন এটি ব্যবহার করে ব্যক্তিগত অথবা পেশাদার কাজ করতে পারেন। সময়ের সঙ্গে আরও উন্নত হয়েছে এই ডিজাইন প্ল্যাটফর্ম। এবার তাতে যোগ হলো তাদের নিজস্ব এআই-চালিত মডেল।
২ দিন আগেটি এইচ মাহির

সম্প্রতি অ্যান্ড্রয়েড ফোনসেটগুলোতে একধরনের সাইবার আক্রমণের হুমকি দেখা দিয়েছে। হ্যাকারদের এক বিশেষ ধরনের আক্রমণের শিকার হয়েছে কিছু মোবাইল ফোনসেট। ব্যক্তিগত তথ্যসহ টু ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন কোড পর্যন্ত চুরি করছে হ্যাকাররা। নতুন এই কৌশল ব্যবহার করে অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইসগুলো থেকে ৩০ সেকেন্ডের কম সময়ে তারা তথ্য চুরি করতে সক্ষম।
‘পিক্সন্যাপিং’ নামে নতুন ধরনের এই হ্যাকিং কীভাবে হচ্ছে, তা আবিষ্কার করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়, ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয় ও কার্নেগি মেলন বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক। তাইওয়ানের ৩২তম এসিএম কম্পিউটার ও যোগাযোগ সুরক্ষা সম্মেলনে এই গবেষণা প্রকাশ করেন তাঁরা।
অনুমতি ছাড়া তথ্য চুরি সম্ভব
পিক্সন্যাপিং নামে এই নতুন হ্যাকিং কৌশলে একধরনের অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ দিয়ে তথ্য চুরি করা হয়। অ্যাপটির জন্য মোবাইল ফোনসেটের কোনো সিস্টেমের অনুমতির প্রয়োজন হয় না। এই ক্ষতিকর অ্যাপ ডিভাইসে থাকা অন্যান্য অ্যাপ এবং ওয়েবসাইট ভিজিটের তথ্য পড়তে পারে। পাশাপাশি জিমেইল ও গুগল অথেনটিকেটরের মতো নন-ব্রাউজার অ্যাপ থেকেও তথ্য চুরি করতে পারে। গবেষকেরা পাঁচটি অ্যান্ড্রয়েড ফোনসেটকে গবেষণায় ব্যবহার করেছেন। গুগল পিক্সেল সিরিজের ৬, ৭, ৮, ৯ এবং স্যামসাং গ্যালাক্সি এস২৫, এই ডিভাইসগুলোতে ঝুঁকি খুঁজে পেয়েছেন গবেষকেরা। অন্যান্য ফোনসেট এখনো আক্রমণের শিকার হয়নি। কিন্তু হ্যাকিংয়ের আশঙ্কা একেবারে উড়িয়ে দেননি গবেষকেরা। গুগল ইতিমধ্যে ব্যবস্থা নিলেও গবেষকেরা বলছেন, হ্যাকাররা পরিবর্তিত কৌশল ব্যবহার করতে পারে।
লিংক পাঠানোর কৌশল
হ্যাকাররা এই আক্রমণ করার সময় প্রথমে একটি ক্ষতিকর অ্যাপ ব্যবহার করে। এই অ্যাপ বিভিন্ন রকমের হতে পারে। মেসেজ, হোয়াটসঅ্যাপ ও অন্যান্য মাধ্যমে লিংক পাঠিয়ে এই অ্যাপ ডাউনলোড করানো হতে পারে। ভুক্তভোগী এসব লিংকে ক্লিক করলে ফোনসেটে অ্যাপ ইনস্টল হয়ে যাবে। কখনো নকল অ্যাপ স্টোর, বিজ্ঞাপন, কিউআর কোডের মাধ্যমেও ফোনসেট ব্যবহারকারীদের প্রলুব্ধ করা হতে পারে। মোবাইল ফোনসেটে হ্যাকারদের অ্যাপ ইনস্টল হলে তার পিক্সেলের দুর্বলতা কাজে লাগিয়ে তথ্য চুরি করা হয়।
পিক্সন্যাপিং হলো একটি চতুর কৌশল, যেখানে একটি ক্ষতিকর অ্যাপ ফোনসেটের গ্রাফিকস সিস্টেম থেকে ক্ষুদ্র সংকেতগুলো পর্যবেক্ষণ করে এবং ধাপে ধাপে অন্য অ্যাপগুলো স্ক্রিনে কী করছে তা বের করে।
এটি টু ফ্যাক্টর কোড বা মেসেজ প্রিভিউর
মতো সংক্ষিপ্ত এবং সংবেদনশীল জিনিসগুলো দেখতে পারে। এটি সিস্টেমের কোনো রকম অনুমতি ছাড়াই কাজ করে। এই সাইবার আক্রমণ অনেকটা ২০২৩ সালের জিপিইউ ডট জিপ আক্রমণের মতো।
পিক্সন্যাপিং নামে নতুন এই সাইবার আক্রমণ থেকে সুরক্ষিত থাকার জন্য অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল ফোনসেট যাঁরা ব্যবহার করেন, তাঁদের বিশেষভাবে সতর্ক থাকা প্রয়োজন। অ্যান্ড্রয়েডের নতুন প্যাচ, আপডেট বা সিকিউরিটি আপডেট এলে তা ইনস্টল করা উচিত। বেনামি অ্যাপ স্টোর এবং ওয়েবসাইট থেকে অ্যাপ ইনস্টল করা থেকে যথাসম্ভব বিরত থাকতে হবে। ফোনসেট ডাউনলোড করা সব অ্যাপের সিস্টেম পারমিশন যাচাই করতে হবে। পাশাপাশি ব্যাংকিং অ্যাপগুলোতে একাধিক সিকিউরিটি ব্যবহার করতে হবে। যেমন পিন বা ফিঙ্গারপ্রিন্টের পাশাপাশি আলাদা একটি অ্যাপ লক ব্যবহার করা যায়। যদি সম্ভব হয়, তাহলে ফিজিক্যাল কি ব্যবহার করতে হবে।
সূত্র: দ্য হ্যাকার নিউজ, দ্য রেজিস্ট্রার

সম্প্রতি অ্যান্ড্রয়েড ফোনসেটগুলোতে একধরনের সাইবার আক্রমণের হুমকি দেখা দিয়েছে। হ্যাকারদের এক বিশেষ ধরনের আক্রমণের শিকার হয়েছে কিছু মোবাইল ফোনসেট। ব্যক্তিগত তথ্যসহ টু ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন কোড পর্যন্ত চুরি করছে হ্যাকাররা। নতুন এই কৌশল ব্যবহার করে অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইসগুলো থেকে ৩০ সেকেন্ডের কম সময়ে তারা তথ্য চুরি করতে সক্ষম।
‘পিক্সন্যাপিং’ নামে নতুন ধরনের এই হ্যাকিং কীভাবে হচ্ছে, তা আবিষ্কার করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়, ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয় ও কার্নেগি মেলন বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক। তাইওয়ানের ৩২তম এসিএম কম্পিউটার ও যোগাযোগ সুরক্ষা সম্মেলনে এই গবেষণা প্রকাশ করেন তাঁরা।
অনুমতি ছাড়া তথ্য চুরি সম্ভব
পিক্সন্যাপিং নামে এই নতুন হ্যাকিং কৌশলে একধরনের অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ দিয়ে তথ্য চুরি করা হয়। অ্যাপটির জন্য মোবাইল ফোনসেটের কোনো সিস্টেমের অনুমতির প্রয়োজন হয় না। এই ক্ষতিকর অ্যাপ ডিভাইসে থাকা অন্যান্য অ্যাপ এবং ওয়েবসাইট ভিজিটের তথ্য পড়তে পারে। পাশাপাশি জিমেইল ও গুগল অথেনটিকেটরের মতো নন-ব্রাউজার অ্যাপ থেকেও তথ্য চুরি করতে পারে। গবেষকেরা পাঁচটি অ্যান্ড্রয়েড ফোনসেটকে গবেষণায় ব্যবহার করেছেন। গুগল পিক্সেল সিরিজের ৬, ৭, ৮, ৯ এবং স্যামসাং গ্যালাক্সি এস২৫, এই ডিভাইসগুলোতে ঝুঁকি খুঁজে পেয়েছেন গবেষকেরা। অন্যান্য ফোনসেট এখনো আক্রমণের শিকার হয়নি। কিন্তু হ্যাকিংয়ের আশঙ্কা একেবারে উড়িয়ে দেননি গবেষকেরা। গুগল ইতিমধ্যে ব্যবস্থা নিলেও গবেষকেরা বলছেন, হ্যাকাররা পরিবর্তিত কৌশল ব্যবহার করতে পারে।
লিংক পাঠানোর কৌশল
হ্যাকাররা এই আক্রমণ করার সময় প্রথমে একটি ক্ষতিকর অ্যাপ ব্যবহার করে। এই অ্যাপ বিভিন্ন রকমের হতে পারে। মেসেজ, হোয়াটসঅ্যাপ ও অন্যান্য মাধ্যমে লিংক পাঠিয়ে এই অ্যাপ ডাউনলোড করানো হতে পারে। ভুক্তভোগী এসব লিংকে ক্লিক করলে ফোনসেটে অ্যাপ ইনস্টল হয়ে যাবে। কখনো নকল অ্যাপ স্টোর, বিজ্ঞাপন, কিউআর কোডের মাধ্যমেও ফোনসেট ব্যবহারকারীদের প্রলুব্ধ করা হতে পারে। মোবাইল ফোনসেটে হ্যাকারদের অ্যাপ ইনস্টল হলে তার পিক্সেলের দুর্বলতা কাজে লাগিয়ে তথ্য চুরি করা হয়।
পিক্সন্যাপিং হলো একটি চতুর কৌশল, যেখানে একটি ক্ষতিকর অ্যাপ ফোনসেটের গ্রাফিকস সিস্টেম থেকে ক্ষুদ্র সংকেতগুলো পর্যবেক্ষণ করে এবং ধাপে ধাপে অন্য অ্যাপগুলো স্ক্রিনে কী করছে তা বের করে।
এটি টু ফ্যাক্টর কোড বা মেসেজ প্রিভিউর
মতো সংক্ষিপ্ত এবং সংবেদনশীল জিনিসগুলো দেখতে পারে। এটি সিস্টেমের কোনো রকম অনুমতি ছাড়াই কাজ করে। এই সাইবার আক্রমণ অনেকটা ২০২৩ সালের জিপিইউ ডট জিপ আক্রমণের মতো।
পিক্সন্যাপিং নামে নতুন এই সাইবার আক্রমণ থেকে সুরক্ষিত থাকার জন্য অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল ফোনসেট যাঁরা ব্যবহার করেন, তাঁদের বিশেষভাবে সতর্ক থাকা প্রয়োজন। অ্যান্ড্রয়েডের নতুন প্যাচ, আপডেট বা সিকিউরিটি আপডেট এলে তা ইনস্টল করা উচিত। বেনামি অ্যাপ স্টোর এবং ওয়েবসাইট থেকে অ্যাপ ইনস্টল করা থেকে যথাসম্ভব বিরত থাকতে হবে। ফোনসেট ডাউনলোড করা সব অ্যাপের সিস্টেম পারমিশন যাচাই করতে হবে। পাশাপাশি ব্যাংকিং অ্যাপগুলোতে একাধিক সিকিউরিটি ব্যবহার করতে হবে। যেমন পিন বা ফিঙ্গারপ্রিন্টের পাশাপাশি আলাদা একটি অ্যাপ লক ব্যবহার করা যায়। যদি সম্ভব হয়, তাহলে ফিজিক্যাল কি ব্যবহার করতে হবে।
সূত্র: দ্য হ্যাকার নিউজ, দ্য রেজিস্ট্রার

এ দেশের সমাজ বাস্তবতায় ধর্ষণ শব্দটি বহুল প্রচারিত একটি শব্দ। এ দেশের বেশির ভাগ নারী প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে ধর্ষণের শিকার হচ্ছেন। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ধর্ষণ বা যৌন নিপীড়নের অনেক পর ঘটনাটি সম্পর্কে জানা যাচ্ছে। অপরাধের বিষয়ে থানায় মামলা করা বা অন্য যেকোনো প্রশাসনিক পদক্ষেপ তো অনেক পরের বিষয়। এ দিয়ে তো আ
২৫ নভেম্বর ২০২১
প্রস্তাবিত টেলিযোগাযোগ অধ্যাদেশে ইন্টারনেট বন্ধের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপসহ বিদ্যমান আইন ও নীতিতে বেশ কিছু মৌলিক পরিবর্তন আনা হয়েছে। এর মাধ্যমে বাংলাদেশের টেলিযোগাযোগ খাতে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও নাগরিক অধিকারের সুরক্ষা আরও সুদৃঢ় হবে বলে মনে করছে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ।
২০ ঘণ্টা আগে
হুয়াওয়ে বলতে সাধারণ মানুষ একটি মোবাইল ফোন নির্মাতা প্রতিষ্ঠানকে জানে। প্রায় পাঁচ বছর ধরে বাংলাদেশের বাজারে তাদের নতুন কোনো মোবাইল ফোন যদিও আসেনি। তবু দেশে গ্রাহক সমাধান, টেলিকম নেটওয়ার্ক, নবায়নযোগ্য শক্তি, শিক্ষা ও সামাজিক উদ্যোগে হুয়াওয়ে বেশ বড় পরিসরে কাজ করে যাচ্ছে।
২ দিন আগে
গ্রাফিক ডিজাইনে যাঁরা পারদর্শী নন, তাঁদের কাছে ক্যানভা নতুন এক দুয়ার খুলে দিয়েছে। যে কেউ এখন এটি ব্যবহার করে ব্যক্তিগত অথবা পেশাদার কাজ করতে পারেন। সময়ের সঙ্গে আরও উন্নত হয়েছে এই ডিজাইন প্ল্যাটফর্ম। এবার তাতে যোগ হলো তাদের নিজস্ব এআই-চালিত মডেল।
২ দিন আগেফিচার ডেস্ক

গ্রাফিক ডিজাইনে যাঁরা পারদর্শী নন, তাঁদের কাছে ক্যানভা নতুন এক দুয়ার খুলে দিয়েছে। যে কেউ এখন এটি ব্যবহার করে ব্যক্তিগত অথবা পেশাদার কাজ করতে পারেন। সময়ের সঙ্গে আরও উন্নত হয়েছে এই ডিজাইন প্ল্যাটফর্ম। এবার তাতে যোগ হলো তাদের নিজস্ব এআই-চালিত মডেল।
নতুন এই মডেল ডিজাইনের লেয়ার ও ফরম্যাট বুঝে আরও ভালোভাবে কাজ করতে সক্ষম। পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানটি এনেছে নতুন কিছু ফিচার, স্প্রেডশিট টুলস, মিনি অ্যাপ তৈরির সুবিধা।
ডিজাইন মডেলে বড় পরিবর্তন
ক্যানভা জানিয়েছে, তাদের নতুন ডিজাইন মডেলটি নিজেরাই তৈরি করেছে। এটি সাধারণ বা সমতল ছবি তৈরি করা ছাড়াও লেয়ার, অবজেক্টসহ ডিজাইন করতে পারে। এর ফলে যাঁরা অ্যাপটি ব্যবহার করবেন, তাঁরা চাইলে সহজে নিজের মতো সম্পাদনা করতে পারবেন। এটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের পোস্ট, প্রেজেন্টেশন, হোয়াইট বোর্ড বা ওয়েবসাইট—সব জায়গায় কাজ করবে। ক্যানভার প্রোডাক্টের প্রধান রবার্ট কাওয়ালস্কি বলেছেন, ‘আগে আমরা শুধু সাধারণ ছবি তৈরি করতাম। তবে এখন ব্যবহারকারীরা চান প্রম্পট দিয়ে ছবি বা ডিজাইন তৈরি করতে এবং সেটি তাঁদের নিজের মতো সম্পাদনা করতে; যাতে ডিজাইন আরও প্রয়োজন অনুযায়ী হয়।’
আরও উন্নত ক্যানভা এআই
ক্যানভায় এর আগেও এআই-সুবিধা চালু ছিল। যাকে বলা হতো ক্যানভা এআই অ্যাসিস্ট্যান্ট। এখানে শুধু লেখা প্রম্পট দিয়ে ছবি বা ডিজাইন তৈরি করা যেত। কিন্তু নতুন আপডেটে ব্যবহারকারীরা আরও উন্নত উপায়ে ছবি তৈরি করতে পারবেন।

স্প্রেডশিট ও অ্যাপ সংযুক্তির নতুন সুবিধা
ক্যানভা তাদের স্প্রেডশিট ও মিনি অ্যাপ ফিচার এনেছে একসঙ্গে। এর ফলে স্প্রেডশিটে রাখা তথ্য ব্যবহার করে সহজে চার্ট, গ্রাফ বা অন্যান্য ভিজ্যুয়াল উইজেট তৈরি করা যাবে। এটি ডিজাইন কিংবা প্রেজেন্টেশনে ব্যবহার করা যাবে। ফলে ডেটা উপস্থাপনা অনেক সহজ ও দ্রুত হবে।
ক্যানভা বলছে, এই নতুন উদ্ভাবনের মাধ্যমে তারা শুধু একটি সাধারণ ডিজাইন প্ল্যাটফর্ম নয়, এআই-চালিত সম্পূর্ণ ডিজাইন ইকোসিস্টেমে পরিণত হচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, অ্যাডোবির মতো পেশাদার টুলসের সঙ্গে সরাসরি প্রতিযোগিতায় নামার প্রস্তুতি নিচ্ছে ক্যানভা।
সূত্র: টেকক্রাঞ্চ

গ্রাফিক ডিজাইনে যাঁরা পারদর্শী নন, তাঁদের কাছে ক্যানভা নতুন এক দুয়ার খুলে দিয়েছে। যে কেউ এখন এটি ব্যবহার করে ব্যক্তিগত অথবা পেশাদার কাজ করতে পারেন। সময়ের সঙ্গে আরও উন্নত হয়েছে এই ডিজাইন প্ল্যাটফর্ম। এবার তাতে যোগ হলো তাদের নিজস্ব এআই-চালিত মডেল।
নতুন এই মডেল ডিজাইনের লেয়ার ও ফরম্যাট বুঝে আরও ভালোভাবে কাজ করতে সক্ষম। পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানটি এনেছে নতুন কিছু ফিচার, স্প্রেডশিট টুলস, মিনি অ্যাপ তৈরির সুবিধা।
ডিজাইন মডেলে বড় পরিবর্তন
ক্যানভা জানিয়েছে, তাদের নতুন ডিজাইন মডেলটি নিজেরাই তৈরি করেছে। এটি সাধারণ বা সমতল ছবি তৈরি করা ছাড়াও লেয়ার, অবজেক্টসহ ডিজাইন করতে পারে। এর ফলে যাঁরা অ্যাপটি ব্যবহার করবেন, তাঁরা চাইলে সহজে নিজের মতো সম্পাদনা করতে পারবেন। এটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের পোস্ট, প্রেজেন্টেশন, হোয়াইট বোর্ড বা ওয়েবসাইট—সব জায়গায় কাজ করবে। ক্যানভার প্রোডাক্টের প্রধান রবার্ট কাওয়ালস্কি বলেছেন, ‘আগে আমরা শুধু সাধারণ ছবি তৈরি করতাম। তবে এখন ব্যবহারকারীরা চান প্রম্পট দিয়ে ছবি বা ডিজাইন তৈরি করতে এবং সেটি তাঁদের নিজের মতো সম্পাদনা করতে; যাতে ডিজাইন আরও প্রয়োজন অনুযায়ী হয়।’
আরও উন্নত ক্যানভা এআই
ক্যানভায় এর আগেও এআই-সুবিধা চালু ছিল। যাকে বলা হতো ক্যানভা এআই অ্যাসিস্ট্যান্ট। এখানে শুধু লেখা প্রম্পট দিয়ে ছবি বা ডিজাইন তৈরি করা যেত। কিন্তু নতুন আপডেটে ব্যবহারকারীরা আরও উন্নত উপায়ে ছবি তৈরি করতে পারবেন।

স্প্রেডশিট ও অ্যাপ সংযুক্তির নতুন সুবিধা
ক্যানভা তাদের স্প্রেডশিট ও মিনি অ্যাপ ফিচার এনেছে একসঙ্গে। এর ফলে স্প্রেডশিটে রাখা তথ্য ব্যবহার করে সহজে চার্ট, গ্রাফ বা অন্যান্য ভিজ্যুয়াল উইজেট তৈরি করা যাবে। এটি ডিজাইন কিংবা প্রেজেন্টেশনে ব্যবহার করা যাবে। ফলে ডেটা উপস্থাপনা অনেক সহজ ও দ্রুত হবে।
ক্যানভা বলছে, এই নতুন উদ্ভাবনের মাধ্যমে তারা শুধু একটি সাধারণ ডিজাইন প্ল্যাটফর্ম নয়, এআই-চালিত সম্পূর্ণ ডিজাইন ইকোসিস্টেমে পরিণত হচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, অ্যাডোবির মতো পেশাদার টুলসের সঙ্গে সরাসরি প্রতিযোগিতায় নামার প্রস্তুতি নিচ্ছে ক্যানভা।
সূত্র: টেকক্রাঞ্চ

এ দেশের সমাজ বাস্তবতায় ধর্ষণ শব্দটি বহুল প্রচারিত একটি শব্দ। এ দেশের বেশির ভাগ নারী প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে ধর্ষণের শিকার হচ্ছেন। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ধর্ষণ বা যৌন নিপীড়নের অনেক পর ঘটনাটি সম্পর্কে জানা যাচ্ছে। অপরাধের বিষয়ে থানায় মামলা করা বা অন্য যেকোনো প্রশাসনিক পদক্ষেপ তো অনেক পরের বিষয়। এ দিয়ে তো আ
২৫ নভেম্বর ২০২১
প্রস্তাবিত টেলিযোগাযোগ অধ্যাদেশে ইন্টারনেট বন্ধের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপসহ বিদ্যমান আইন ও নীতিতে বেশ কিছু মৌলিক পরিবর্তন আনা হয়েছে। এর মাধ্যমে বাংলাদেশের টেলিযোগাযোগ খাতে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও নাগরিক অধিকারের সুরক্ষা আরও সুদৃঢ় হবে বলে মনে করছে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ।
২০ ঘণ্টা আগে
হুয়াওয়ে বলতে সাধারণ মানুষ একটি মোবাইল ফোন নির্মাতা প্রতিষ্ঠানকে জানে। প্রায় পাঁচ বছর ধরে বাংলাদেশের বাজারে তাদের নতুন কোনো মোবাইল ফোন যদিও আসেনি। তবু দেশে গ্রাহক সমাধান, টেলিকম নেটওয়ার্ক, নবায়নযোগ্য শক্তি, শিক্ষা ও সামাজিক উদ্যোগে হুয়াওয়ে বেশ বড় পরিসরে কাজ করে যাচ্ছে।
২ দিন আগে
সম্প্রতি অ্যান্ড্রয়েড ফোনসেট গুলোতে একধরনের সাইবার আক্রমণের হুমকি দেখা দিয়েছে। হ্যাকারদের এক বিশেষ ধরনের আক্রমণের শিকার হয়েছে কিছু মোবাইল ফোনসেট। ব্যক্তিগত তথ্যসহ টু ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন কোড পর্যন্ত চুরি করছে হ্যাকাররা।
২ দিন আগে