Ajker Patrika

কনটেন্ট নির্মাণে ধারাবাহিকতা ঠিক রাখা মূল চ্যালেঞ্জ

পর্দায় অনেকে গল্প বলেন; কিন্তু অন্তিকের মতো অন্তর বিনোদিত করা ক্রিয়েটরের সংখ্যা কম। যাঁরা নিয়মিত দেশের ইউটিউব কনটেন্ট দেখেন, তাঁদের কাছে অন্তিক বিশেষ একটি নাম। হাতে আঁকা কার্টুন থেকে অ্যানিমেশন তৈরির পর তার সঙ্গে গল্প জুড়ে কনটেন্ট তৈরি করেন অন্তিক মাহমুদ। কাজটি শুরু করেন ২০১৭ সালে। আজ তাঁর চ্যানেলের সাবস্ক্রাইবারের সংখ্যা ১২ লাখের বেশি। এই যাত্রা এবং কনটেন্ট নির্মাণের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন মো. আশিকুর রহমান

মো. আশিকুর রহমান
আপডেট : ০৫ আগস্ট ২০২৫, ০৮: ০৯
অন্তিক মাহমুদ। ছবি: সংগৃহীত
অন্তিক মাহমুদ। ছবি: সংগৃহীত

পেশাদার কার্টুনিস্ট থেকে আপনি এখন কনটেন্ট নির্মাতা। এই ভাবনা কেন এল?

গতানুগতিক চাকরি কখনো আমাকে টানেনি। ছোটবেলায় জাপানে থাকার সময় কমিকসের প্রতি আগ্রহ তৈরি হয়। এরপর যখন দেখলাম কার্টুন ও কমিকস থেকে ইনকাম করতে পারি, তখন মনে হলো, এটি আমার জায়গা। সিদ্ধান্ত নিলাম এ পথে এগিয়ে যাব। আর পেছনে তাকাতে হয়নি। শুরুটা ২০১৭ সালে। এরপর টেন মিনিট স্কুলে কাজের সুবাদে আয়মান সাদিক ভাইসহ একটি ভিডিও বানিয়েছিলাম, যেটি অন্তিক কার্টুন ভার্সনকে সবার মধ্যে ছড়িয়ে দিতে সাহায্য করে। আর ইউটিউব চ্যানেলটি বেশ এগিয়ে যায়।

বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে অ্যানিমেশন ও কার্টুন নিয়ে কাজ করার সময় কী কী প্রযুক্তিগত সীমাবদ্ধতার মুখোমুখি হন?

প্রযুক্তিগত তেমন সমস্যায় পড়ছি না। বাস্তবতা হলো, কয়েক বছর আগের চেয়ে এখন প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে আরও দারুণ কাজ করা যাচ্ছে। এআই আরও অনেক সুবিধা নিয়ে এসেছে।

বিদেশি অ্যানিমেশন স্টুডিও এবং ইউটিউব চ্যানেলগুলোর প্রভাব রয়েছে দেশে। সেখান থেকে কীভাবে নিজস্ব একটা ধারা তৈরির চেষ্টা করছেন?

দেশি বা বিদেশি এখন আর আলাদা করে দেখার সুযোগ নেই। অনেক ক্ষেত্রে ভাষাও গুরুত্বপূর্ণ নয়। অনেকে কনটেন্টের ভাষা না বুঝেও দেখে। আর প্রতিযোগিতার ব্যাপারটা আমি ইতিবাচকভাবে দেখি। যদি নতুন ও মানসম্মত কিছু দিতে পারি, সেটা সবাই দেখবে। নিজস্ব ধারা তৈরির জন্য বাংলাদেশের ঘটনা ও কালচার নিজের স্টাইলে কার্টুনে দেখাই। মজার ব্যাপার হলো, বিদেশিরাও এগুলো আগ্রহ নিয়ে দেখে।

আপনার কাজের মধ্যে কোন কোন সফটওয়্যার, প্রযুক্তি বা ডিজিটাল টুল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে?

বেশি ব্যবহার করি ক্লিপ স্টুডিও পেইন্ট, প্রিমিয়ার প্রো ও আফটার ইফেক্ট। প্রযুক্তি আমার জন্য শুধু টুল, গল্পটা আসল। সফটওয়্যারগুলো গল্পকে ভালোভাবে ফুটিয়ে তুলতে সাহায্য করে।

আপনি একজন লেখক, ইউটিউবার ও অ্যানিমেটর। এই তিন পরিচয়ের মধ্যে কেমন ভারসাম্য তৈরি করেন?

আমি প্রথমে একজন গল্পকার। গল্পটা যদি শক্ত হয়, সেটা ইউটিউব ভিডিওতে হোক, কমিকসে হোক বা অ্যানিমেশনে, যেকোনো মাধ্যমে সেটা বলতে ভালোবাসি। মিডিয়াটা হলো, গল্প পৌঁছে দেওয়ার ভিন্ন ভিন্ন রাস্তা। এটা সব কনটেন্ট ক্রিয়েটরের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। আমরা যে গল্প মানুষকে শোনাতে চাই, সেটি ঠিকভাবে পারছি কি না, তা জরুরি। বাকিটা প্রযুক্তির সহযোগিতা।

তরুণদের অনেকে এখন ডিজিটাল মাধ্যমে কনটেন্ট তৈরিতে আগ্রহী। তাঁদের জন্য কী পরামর্শ দেবেন?

শুরু করা সহজ, কিন্তু ধরে রাখা কঠিন। অনেকে ভাবেন, কনটেন্ট নির্মাতা হতে হলে বিভিন্ন ধরনের গ্যাজেট বা সফটওয়্যার প্রয়োজন। আবার অনেকে উচ্ছ্বাস নিয়ে শুরু করেন, কিন্তু কিছুদিন পর থেমে যান। বিষয়টি হলো, আপনি হাতের মোবাইল ফোনে কাজ শুরু করতে পারেন। কনটেন্ট নির্মাতাদের ধারাবাহিকতা ঠিক রাখা মূল চ্যালেঞ্জ। এটা পারলে অন্য বিষয়গুলো সময়ের সঙ্গে শিখে নেওয়া যায়।

ভবিষ্যতে কীভাবে বাংলাদেশের প্রযুক্তিনির্ভর সৃজনশীল শিল্পকে আরও এগিয়ে নিতে চান?

আমার ফোকাস শুধু নিজের কাজ করে যাওয়া। সত্যি বলতে, অনেকেই আমার কাজে অনুপ্রেরণা পেয়েছেন; কিন্তু আমি কখনো কাউকে অনুপ্রেরণা দিতে কাজ করিনি। নিজের শান্তি ও ইচ্ছার জন্য কাজ করি। আর সেই কাজ হয়তো অন্যদের পথ দেখায়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘কলিজা ছেঁড়ার’ হুমকি সারজিসের: ৮ মিনিট বিদ্যুৎ-বিভ্রাটের কারণ জানাল নেসকো

১৫ সেনা কর্মকর্তাকে রাখা হতে পারে সাবজেলে

যুক্তরাষ্ট্র ছাড়ছেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ দম্পতি অভিজিৎ ও দুফলো

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগ কর্মী ফারুক হত্যা মামলায় জামায়াত-শিবির নেতা-কর্মীসহ সব আসামি খালাস

ট্রাম্পে আস্থা: গাজায় যুদ্ধবিরতি নিয়ে হামাস কি জুয়া খেলছে

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত