Ajker Patrika

ভিশন প্রো না মেটা কোয়েস্ট ৩, কোন ভার্চুয়াল হেডসেটে সুবিধা বেশি

ভিশন প্রো না মেটা কোয়েস্ট ৩, কোন ভার্চুয়াল হেডসেটে সুবিধা বেশি

বিশ্বে জনপ্রিয় টেক জায়ান্ট কোম্পানিগুলোর মধ্যে রয়েছে মেটা ও অ্যাপল। দুই কোম্পানিই ভার্চুয়াল রিয়্যালিটি প্রযুক্তির দিকে নজর দিয়েছে। মেটাভার্স তৈরির পাশাপাশি কোয়েস্ট হেডসেট বাজারে ছেড়েছে মেটা। পিছিয়ে নেই অ্যাপলও, গত ৫ জুনে ভার্চুয়াল রিয়্যালিটির হেডসেট ভিশন প্রো বাজারে ছেড়েছে।

যদিও দুটি হেডসেটই ভার্চুয়াল রিয়্যালিটি প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে, তবে কোম্পানিগুলো ভিন্ন চাহিদাসম্পন্ন গ্রাহকদের জন্য এগুলো তৈরি করেছে। হিন্দুস্তান টাইমসের প্রতিবেদন থেকে দুটি হেডসেটের সুবিধা ও সমস্যাগুলো তুলে ধরা হল। 

অ্যাপল ভিশন প্রো

মাইক রকওয়েল নেতৃত্বে ভিশন প্রোডাক্ট গ্রুপ (ভিপিজি) এর আওতায় অ্যাপল ভিশন প্রো তৈরি করা হয়। এটি একটি স্পেশিয়াল কম্পিউটার যা আরগুমেন্টেড রিয়্যালিটি (এআর) ও ভার্চুয়াল রিয়্যালিটি (ভিআর)–তে ব্যবহারকারীকে বিভিন্ন অ্যাপ ও ফিচার ব্যবহার করতে দেয়। হেডসেটজুড়ে ৫টি সেন্সর ও ১২ ক্যামেরাসহ ২৩০ লাখ পিক্সেল মাইক্রো–ওলেড ডিসপ্লে ব্যবহার করা হয়েছে। এদের চালনা করতে এম ২ ও নতুন আর ১ চিপ ব্যবহার করা হয়েছে। ভিশনওএস অপারেটিং সিস্টেম হেডসেটটিতে ব্যবহার করা হয়েছে। এর এক্সটারনাল (বাইরের) ব্যাটারি দুই ঘণ্টা পর্যন্ত চলতে পারে। 

এই প্রযুক্তি যুগান্তকারী মনে হলেও হেডসেটটির কিছু সমস্যা রয়েছে। অ্যাপল হেডসেটটির দাম রেখেছে ৩ হাজার ৪৯৯ ডলার। এটি বিশ্ব বাজারে সবচেয়ে দামি মিক্সড রিয়্যালিটি হেডফোন। তবে হেডফোনটি কিছু ডেভেলপারদের কাছে রয়েছে। সর্বসাধারণের ব্যবহারের জন্য হেডফোনটি ২০২৪ সালে বাজারে ছাড়া হবে।

হেডসেটটির দ্বিতীয় সমস্যা হল, ডেভেলপাররা বলছেন এটি দীর্ঘক্ষণ পড়ে থাকলে ঘাড় ব্যথা করে। হেডসেটটির এক্সটারনাল ব্যাটারি সসবময় হেডসেটের সঙ্গে নিয়ে চলতে হয় যার ফলে হেডসেটটি তার বহনযোগ্যতা হারায়। 

ব্লুমবার্গের প্রতিবেদক মার্ক গুরম্যান বলছেন, সমস্যাটি সমাধানে অ্যাপল হেডসেটটিতে অতিরিক্ত সমর্থন যুক্ত করার চিন্তা করছে। অ্যাপল হেডসেটটির পুরুত্ব কমাতে চেয়েছিল। তাই  সমস্যাটি অ্যাপলের জন্য দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। 

চশমাসহ এই হেডসেট ব্যবহারেও সমস্যা দেখা দিয়েছে। গুরম্যান বলছে, এই হেডসেটের মধ্যে চশমা ঢুকে না। এ বিষয়ে অ্যাপল বলছে, চশমা প্রস্তুতকারক কোম্পানি জেইসকে যুক্ত করে ডাক্তারের নির্দেশনা অনুযায়ী কাস্টম লেন্স তৈরি করা হবে যা হেডসেটের ভেতরে এঁটে যাবে। তবে অ্যাপলের সমালোচকেরা বলছে এটি কোনো বাস্তবসম্মত সমাধান নয়। কারণ বিপুলসংখ্যক গ্রাহকের চশমার পাওয়ার অনুযায়ী কাস্টম লেন্স তৈরি করতে হবে। আবার এ জন্য গ্রাহককে আলাদা অর্থ খরচ করতে হবে। 

মেটা কোয়েস্ট ৩ 
আপাতদৃষ্টিতে হেডসেটের প্রতিযোগিতায় মেটা কোয়েস্ট ৩ এগিয়ে আছে বলে মনে হয়। কারণ হেডসেটটি বর্তমানে বাজারে পাওয়া যাচ্ছে এবং মেটাভার্সের জন্য এই মিশ্র রিয়্যালিটির প্রযুক্তির বিকাশে মেটা আগে থেকেই কাজ করছে। তবে বিষয়টি এতটা সহজ নয়। 

গুরম্যান বলছে, মেটা হেডসেটির দাম কমাতে চাচ্ছে। মেটা কোয়েস্ট ৩ এর দাম ভিশন প্রো থেকে ৫০০ ডলার কম হলেও তা ‘কোয়েস্ট ২’ থেকে ২০০ ডলার বেশি। তাই দাম কমিয়ে মেটা বেশিসংখ্যক গ্রাহক পাওয়ার আশা করছে। সামনের বছরে মেটা হেডসেটটিকে মিড রেঞ্জ ডিভাইস হিসেবে বাজারে ছাড়বে। এ ছাড়া ব্যবসায়িক ব্যর্থ ১৫০০ ডলার দামের কোয়েস্ট প্রো এর উত্তরসূরি সামনের বছরে বাজার আনা হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। 

মেটার ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মটি ব্যবহারের জন্য তৈরি। এ ছাড়া বিপুলসংখ্যক অ্যাপ ও গেম এই প্ল্যাটফর্মের জন্য তৈরি রয়েছে যা গ্রাহকেরা হেডসেটটি কেনার সঙ্গে সঙ্গে ব্যবহার করতে পারবে। 

মেটা কোম্পানির এক কর্মী গুরম্যানকে বলেন, এরপরও মেটা অ্যাপলের হেডসেটের নিয়ে উদ্বিগ্ন। 

ভবিষ্যতে ভার্চুয়াল রিয়্যালিটির হেডসেট নিয়ে অ্যাপল ও মেটার প্রতিযোগিতা আরও বাড়বে বলে প্রযুক্তি বিশ্লেষকেরা মনে করছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত