Ajker Patrika

বিদ্যুৎ-সংকটেও রুয়ান্ডার সবুজ উদ্যোগ

বিদ্যুৎশক্তিতে চলবে লাখো মোটরবাইক

ফিচার ডেস্ক
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

জলবায়ুর নেতিবাচক প্রভাবে উদ্বিগ্ন পুরো বিশ্ব। এই পরিবর্তনের আঙুল সব সময় ওঠে বিশ্বের প্রথম সারির দেশগুলোর দিকে। পরিবেশবিষয়ক আন্তর্জাতিক সব সম্মেলনে নেতৃত্বও দেয় তারা। এতে ফল খারাপের দিকেই যাচ্ছে। এ নিয়ে চিন্তিত বিজ্ঞানীরাও। তবে পূর্ব আফ্রিকার দেশ রুয়ান্ডা পরিবেশ বাঁচাতে অভিনব উদ্যোগ নিয়েছে নিজেদের অনেক সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও।

বিদ্যুতের দুর্বল ব্যবস্থা নিয়ে

১ লাখ পেট্রলচালিত মোটরবাইক বৈদ্যুতিক বাইকে রূপান্তরের পরিকল্পনা করেছে রুয়ান্ডা সরকার। এটিকে তারা সম্ভব করেছে সৌরশক্তি, ব্যাটারি সোয়াইপিং এবং মিনি-গ্রিডের মতো উদ্ভাবনী সমাধানের মাধ্যমে।

বৈদ্যুতিক বাইক রূপান্তরের কারণ

রুয়ান্ডায় মোটরবাইক যাত্রী এবং ডেলিভারি সার্ভিসের প্রধান বাহন। কিন্তু এগুলো থেকে নির্গত কার্বন ডাই-অক্সাইড দেশটির মোট যানবাহন দূষণের ৩২ শতাংশ। ২০২১ সালের তথ্য অনুযায়ী, শুধু ট্যাক্সিবাইক থেকে সে বছর ৪২৭ দশমিক ৪৫ গিগাগ্রাম কার্বন নির্গত হয়। বৈদ্যুতিক বাইক চালু করে এই দূষণ ৭৫ থেকে ১০০ শতাংশ কমানো সম্ভব বলে জানিয়েছে স্থানীয় স্টার্টআপগুলো।

সস্তায় চার্জ, বাঁচবে টাকা

রুয়ান্ডায় একটি সাধারণ পেট্রলবাইকের দাম প্রায় ১ হাজার ১৬৮ ডলার। সেখানে ব্যাটারি ছাড়া বৈদ্যুতিক বাইকের দামও প্রায় একই। তবে চার্জে খরচ পেট্রলের অর্ধেক। অনেক বাইকচালক পুরোনো বাইক বৈদ্যুতিক করে নিচ্ছেন। কিংবা ব্যাটারি ভাড়া নিচ্ছেন মাসে মাসে। আম্পারস্যান্ড নামের একটি প্রতিষ্ঠানের তথ্য অনুযায়ী, বাইকচালকেরা বছরে ৪০০ থেকে ৭৫০ ডলার সাশ্রয় করছেন।

বিদ্যুৎ-সংকটের সমাধান

রুয়ান্ডার ৫৩ শতাংশ ঘরে জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ পৌঁছেছে। তাই লোডশেডিং এখনো দেশটিতে বড় সমস্যা। এ জন্য স্টার্টআপগুলো সৌরশক্তির দিকে ঝুঁকছে। আম্পারস্যান্ড ইতিমধ্যে গ্রামাঞ্চলে সৌরচালিত ব্যাটারি স্টেশন বানিয়েছে, যেখানে বাইকচালকেরা ২ মিনিটে ডিসচার্জড ব্যাটারির বদলে সম্পূর্ণ চার্জড ব্যাটারি নিতে পারেন। ঘানার কোফা, রুয়ান্ডার স্পিরোর মতো প্রতিষ্ঠানগুলো সৌরশক্তি এবং গ্রিডের সমন্বয়ে চার্জিং স্টেশন তৈরি করছে। বৈদ্যুতিক বাইকের ব্যাটারি ৫ বছর পর দুর্বল হয়ে গেলে সেগুলো ফেলে না দিয়ে মিনি-গ্রিড হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। রুয়ান্ডার একটি প্রতিষ্ঠান ১২০ কিলোওয়াটের একটি মিনি-গ্রিড বানিয়েছে, যেটি ১০০ পরিবারের দুই দিনের বিদ্যুৎ জোগাতে সক্ষম।

রুয়ান্ডার এই উদ্যোগ সফল হলে তা কেনিয়া, নাইজেরিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকার মতো দেশগুলোর জন্য অনুপ্রেরণা হবে। সরকারি সহায়তা, স্টার্টআপদের উদ্ভাবনী চিন্তা এবং নবায়নযোগ্য শক্তির সমন্বয়ে রুয়ান্ডা প্রমাণ করছে, দুর্বল অবকাঠামোতেও সবুজ প্রযুক্তি সম্ভব। রুয়ান্ডার এই সাহসী পদক্ষেপ শুধু কার্বন কমাচ্ছে না, এর সঙ্গে তৈরি করছে নতুন কর্মসংস্থানও।

সূত্র: বিবিসি

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত