Ajker Patrika

ট্রায়াল শেষে এখন বাংলাদেশের হয়ে খেলার অপেক্ষায় প্রবাসী ফুটবলাররা

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
প্রবাসী ফুটবলারদের তিন দিন ব্যাপী ট্রায়াল শেষ হয়েছে গতকাল। ছবি: বাফুফে
প্রবাসী ফুটবলারদের তিন দিন ব্যাপী ট্রায়াল শেষ হয়েছে গতকাল। ছবি: বাফুফে

ম্যাচ শুরু হতে কাল তখনো ঘণ্টাখানেক বাকি। বিকেল ৪টা বাজার আগেই জাতীয় স্টেডিয়ামে ক্লাব হাউসের প্রবেশ ফটকে দর্শকের ভিড়। গেটের তালা খোলার পরই স্লোগান দিয়ে গ্যালারিতে ঢুকে পড়েন তাঁরা। ঢাকায় প্রবাসী ফুটবলারদের ঘিরে দর্শকদের উন্মাদনা দেখার মতো। ‘নেক্সট গ্লোবাল স্টারের’ খোঁজে ১৪ দেশের ৪৯ ফুটবলার নিয়ে তিন দিনের ট্রায়ালের আয়োজন করে বাফুফে। প্রথম দুই দিন রুদ্ধদ্বার পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে ফুটবলারদের। তৃতীয় দিনে দুটি ম্যাচ রাখা হয়।

প্রথম ম্যাচে বিকেল ৪টায় সবুজ ও নীল দলে ভাগ হয়ে মাঠে নামেন অনূর্ধ্ব-১৯ দলের ফুটবলাররা। সেভাবে পরিণত ফুটবলের ছাপ মেলেনি এই ম্যাচে। শুরুর দিকে বলের সামনে জটলা তৈরি হয়েছে বেশ কয়েকবার। তবে আলো কেড়েছেন বিতশোক চাকমা। যুক্তরাষ্ট্র থেকে আসা ৫ ফুট ৮ ইঞ্চি উচ্চতার এই অ্যাটাকিং ফুটবলারের খেলা মুগ্ধ করেছে দর্শকদের। তাঁর পায়ে বল এলেই গর্জে উঠছিল গ্যালারি।

সাদা চুলের বিতশোক পেয়েছেন গোলের দেখাও। বক্সের ভেতর থেকে তাঁর শট ঠেকাতে পারেননি সবুজ দলের গোলরক্ষক। বিতশোক তাই স্বপ্ন দেখছেন জাতীয় দলে ঢোকার। ব্রুকলিন এফসিতে খেলা এই মিডফিল্ডার বলেন, ‘ট্রায়াল ভালো হয়েছে। সবকিছু ভালো লেগেছে—এই মাঠ, গ্যালারিতে আসা সমর্থক। আমি চাই, বাংলাদেশের হয়ে খেলতে। ট্রায়াল ভালো হয়েছে বলে আশাবাদী।’

ম্যাচ শেষে বিতশোককে মেটাতে হয় দর্শকের ছবি তোলার আবদার। সেই আবদার বেড়ে যায় অনূর্ধ্ব-২৩ দলের ফুটবলাররা মাঠে নামলে। তাঁরাও খেলেন সবুজ ও নীল দলে ভাগ হয়ে। অনুমিতভাবে সেখানে দেখা মিলেছে গোছানো ফুটবলের। তবে গোল পায়নি কেউই। সবুজ দলের রক্ষণে একরামুল কাসপার ও তোফায়েল তানিমের খেলা দেখে মনে হচ্ছিল একসঙ্গে অনেক দিনের পরিচয় তাঁদের। কিন্তু ট্রায়ালের আগে কেউ কাউকে চিনতেন না। এখন তাঁরা ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে আবদ্ধ।

তানিমকে ভাই সম্বোধন করে একরামুল বলেন, ‘ট্রায়ালের আগে আমাদের কখনো দেখা হয়নি। এখন আমরা ভাই। ট্রায়ালের মাধ্যমে বন্ধুত্বের নতুন যাত্রা শুরু হলো।’ ট্রায়ালে কাটানো তিনটি দিন কখনোই ভুলবেন না তানিম, ‘সবাই বলেছে আবহাওয়া খুব গরম, কিন্তু আমার খেলে ভালোই লেগেছে। অতটা গরম লাগেনি। আজ (কাল) ঠিকভাবে খেলতে পেরেছি। আশা করি, সমর্থকসহ যারা ছিল সবাইকে মুগ্ধ করছি। সর্বোপরি জীবনের সেরা তিনটি দিন কাটিয়েছি। কোচরা তেমন কিছু বলেননি বিবেচনায় রেখেছেন কি না।’

নীল দলে আশিকুর রহমান, আমির খান, নাবিল নাসির ও আয়াজ ঝলক দেখিয়েছেন। প্রত্যেকে স্বপ্ন দেখছেন জাতীয় দলে খেলার। আথলেতিকো বাফোর্ড এফসির হয়ে খেলা, ‘আমার বাড়ি নারায়ণগঞ্জ। আমি নানার জন্য বাংলাদেশের হয়ে খেলতে চাই। গোল করার খুব ইচ্ছা ছিল কিন্তু পারিনি।’

ম্যাচ শেষে সবার হাতে সনদ তুলে দেয় বাফুফে। এরপর মাঠে ঢুকে পড়েন দর্শকেরা। ছিল না নিরাপত্তার কোনো ব্যবস্থা। ভিড়ের মধ্যে ছবিশিকারিদের হাত থেকে বাঁচাতে ফুটবলারদের দৌড়ে স্টেডিয়ামের বাইরে নিয়ে যান আত্মীয়স্বজনেরা। ৪৯ ফুটবলার আর কখনো একত্র হবেন কি না তা বোঝা কঠিন। কেউ কেউ আজই ফ্লাইট ধরবেন নিজ নিজ গন্তব্যের। কিন্তু ট্রায়াল শেষে কারা টিকেছেন, সেটি জানায়নি পারফরম্যান্স মূল্যায়ন প্যানেল। আজ সংবাদ সম্মেলন করার কথা রয়েছে তাদের। ফুটবলারদের জন্য দিনটি দারুণ হলেও প্যানেলের সদস্যদের জন্য সুখকর ছিল না। ম্যাচ শেষে গ্যালারি থেকে ‘ভুয়া, ভুয়া’ স্লোগান শোনেন পর্যবেক্ষকের ভূমিকায় থাকা জাতীয় দলের হাভিয়ের কাবরেরা। এমন তিক্ত অভিজ্ঞতা অবশ্য প্রবাসী ফুটবলারদের হয়নি; বরং তাঁরা পেয়েছেন দর্শকদের কাছ থেকে নিখাদ ভালোবাসা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

শাকিব খানের নামের সঙ্গে ‘মেগাস্টার’ শব্দ নিয়ে জাহিদ হাসানের আপত্তি

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনাপত্তির পরই অস্ত্রের লাইসেন্স পান উপদেষ্টা আসিফ

স্ত্রী-সন্তানসহ প্রবাসীর মৃত্যু ‘বিষক্রিয়ায়’, কেয়ারটেকার চাচাকে সন্দেহ

দুদকের আতশ কাচের নিচে ছয় সাবেক মুখ্য সচিব

ইস্টার্ন ব্যাংকের চেয়ারম্যানের ব্যাংক হিসাব স্থগিত

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত