Ajker Patrika
সাক্ষাৎকার

‘এক বছরে ক্রীড়াঙ্গনে খুব বেশি পরিবর্তন চোখে পড়েনি’

বাংলাদেশ ফুটবল দলের সাবেক অধিনায়ক আমিনুল হক। ছবি: সংগৃহীত

আমিনুল হক সাবেক অধিনায়ক, দেশের ফুটবল ইতিহাসের অন্যতম সেরা গোলরক্ষক। খেলোয়াড়ি পরিচয় ছাপিয়ে আমিনুল হকের রাজনৈতিক পরিচয়টাই এখন বেশি সামনে আসছে। জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি এরই মধ্যে ঢাকা-১৬ আসনে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী। পরশু সকালে মিরপুরে তাঁর রাজনৈতিক কার্যালয়ে দেওয়া সাক্ষাৎকারে আমিনুল হক ফিরে দেখলেন ৫ আগস্ট-পরবর্তী ক্রীড়াঙ্গন, তুলে ধরলেন নিজের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন আজকের পত্রিকার হেড অব স্পোর্টস রানা আব্বাস

রানা আব্বাস, ঢাকা 
আপডেট : ০৫ নভেম্বর ২০২৫, ১০: ৩৭

প্রশ্ন: গত বছরের ৫ আগস্টের পর ক্রীড়াঙ্গনের সংস্কার নিয়ে আপনার মূল্যায়ন কী?

আমিনুল হক: ৫ আগস্টের পর আশা করেছিলাম, নতুন ধারার মাধ্যমে দেশের ক্রীড়াঙ্গনকে শতভাগ রাজনীতিকরণ, দলীয়করণ থেকে মুক্ত করে একটি সুন্দর পরিবেশের মাধ্যমে যাঁরা মাঠের ক্রীড়া সংগঠক, যাঁরা দীর্ঘদিন বঞ্চিত ছিলেন, সেই মানুষগুলো ক্রীড়াঙ্গনের দায়িত্ব নিয়ে নতুনভাবে ঢেলে সাজাবেন। স্বৈরাচার সরকার ক্রীড়াঙ্গনের প্রতিটি সেক্টরে দলীয়করণ করেছে, রাজনীতিকরণ করেছে। বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনকে ধ্বংসের পথে নিয়ে গেছে। ৫ আগস্ট-পরবর্তী সময়ে আমরা আশা করেছিলাম, ক্রীড়াঙ্গনটা নতুনভাবে ঢেলে সাজাব। আমার সঙ্গে ক্রীড়া উপদেষ্টার কথাও হয়েছিল। আপনারা জানেন, তিনি সার্চ কমিটি করেছেন। যে অ্যাডহক কমিটিগুলো করা হয়েছে, ক্রীড়া পরিষদে নিজস্ব একটা সেটআপ তৈরি করে সারা দেশের যে জেলা, বিভাগীয় অ্যাডহক কমিটিগুলো করা হয়েছে, সেখানে তিনি শতভাগ তাঁর নিজের মতো করার চেষ্টা করেছেন। তিনি যদি সবার জন্য উন্মুক্ত করে দিতেন, তাহলে মাঠের যাঁরা ক্রীড়া সংগঠক, যাঁরা যোগ্য ছিলেন, তাঁরা উঠে আসতেন। কিন্তু তিনি যখন পক্ষপাতের দিকে চলে গেছেন, তখন আসলে ক্রীড়াঙ্গনের সেই নিরপেক্ষতা হারিয়ে ফেলেছে। গত এক বছরের মূল্যায়ন যদি বলেন, খুব বেশি পরিবর্তন আমাদের চোখে পড়েনি; বরং ক্রিকেট বোর্ডের যে নির্বাচনটা আমরা দেখলাম, একেবারে নিজের মতো করে করার চেষ্টা করেছেন এবং তিনি এখানে কাউকে কোনো সুযোগ দেননি। তিনি একদম অগণতান্ত্রিকভাবে ক্রিকেট বোর্ডটা নিজের নিয়ন্ত্রণে রেখেছেন। এটা আসলে আমরা একজন ক্রীড়াবিদ হিসেবে বাংলাদেশের যাঁরা ক্রীড়া সংগঠক রয়েছেন, ক্রিকেট বোর্ডের সঙ্গে ক্রীড়া সংগঠক যাঁরা রয়েছেন, তাঁরা কখনোই এটাকে ভালোভাবে নেননি।

প্রশ্ন: বিএনপি ক্ষমতায় এলে তামিম ইকবালকে কীভাবে কাজে লাগাতে চান?

আমিনুল: বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনকে শতভাগ দলীয়করণমুক্ত, রাজনীতিকরণমুক্ত রাখতে চাই। এটা আজ বলছি। ভবিষ্যতেও বলব একই কথা। সে ক্ষেত্রে তামিম ইকবাল যে আমাদের বিএনপির প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করেছে, বিষয়টি এ রকম নয়। এখানে তামিম ইকবালসহ যাঁরা কাজ করেছেন বা ভবিষ্যতে ক্রিকেট বোর্ডে আসতে চান, আমরা চেয়েছি যাতে বিষয়টা অবাধ, সুষ্ঠু হয়। যাতে একেবারে নিরপেক্ষভাবে ক্রিকেট বোর্ডের নির্বাচনটা হয়। সেই চিন্তা থেকে একজন ক্রিকেটার হিসেবে যেহেতু তামিম ইকবাল একজন কিংবদন্তি ক্রিকেটার এবং তাঁর সঙ্গে আমাদের বুলবুল ভাই থেকে শুরু করে যাঁরাই ছিলেন, আমরা চেয়েছি একটি নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে ক্রিকেট বোর্ডটা গঠিত হোক। কিন্তু এটাকে একটি মহল রাজনৈতিক রূপ দেওয়ার চেষ্টা করেছে। যেটা আমরা আসলে কখনোই আশা করিনি। ভবিষ্যতে ক্রিকেট বোর্ড কীভাবে গঠিত হবে বা বর্তমানে যেহেতু ক্রিকেট বোর্ড গঠিত হয়েছে, সেটা আসলে আমরা ভবিষ্যতের ওপরই ছেড়ে দেব। ক্রিকেট বোর্ড যেহেতু চার বছরের জন্য। কিন্তু এখানে অনেক প্রশ্ন আছে। ক্রিকেট বোর্ডের এই নির্বাচন ঘিরে মামলাও রয়েছে কিছু। এগুলো চলবে আইন অনুযায়ী। আমরা সেটার ওপর আস্থা ও বিশ্বাস রাখতে চাই।

প্রশ্ন: বিএনপি যদি ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে জয়ী হয়ে সরকার গঠন করে, ক্রীড়াঙ্গনের কোথায় দ্রুত পরিবর্তন আনতে চাইবেন?

আমিনুল: প্রথম পরিবর্তনটা করতে চাই স্কুল পর্যায়ে। আমরা বাংলাদেশের প্রতিটি স্কুলে চতুর্থ শ্রেণি থেকে খেলাধুলাকে বাধ্যতামূলক করতে চাই। সেটা বাংলাদেশের জাতীয় শিক্ষাক্রমের অন্তর্ভুক্ত করব। খেলাধুলা একেবারে তৃণমূল পর্যায়ে ছড়িয়ে দিতে সারা দেশে আমরা মাঠগুলো সংরক্ষণ করতে চাই। আমাদের ‘নতুন কুঁড়ি’ নামের কর্মসূচি শুরু করব। সেই নতুন কুঁড়ির মাধ্যমে আমাদের প্রত্যেক প্রতিভাবান খেলোয়াড় যারা রয়েছে, তাদের ভবিষ্যতে সরকারিভাবে খেলাধুলা, পড়াশোনা—সব দায়দায়িত্ব নেব। খেলাকে কেউ কিন্তু এখন পর্যন্ত পেশা হিসেবে বেছে নেয়নি। আমরা সেই জায়গা নিয়েও কাজ করতে চাই; যাতে ভবিষ্যতে একজন ফুটবলার নিজেকে ফুটবলার হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে পারে। একেবারে তৃণমূল থেকে ভবিষ্যতে যেন খেলাকে পেশা হিসেবে নিতে পারে, সেই পেশার নিশ্চয়তা আমরা দিতে চাই।

প্রশ্ন: বিএনপি ক্ষমতায় এলে সাকিব আল হাসানকে নিয়ে আপনাদের অবস্থান কী হবে? তাঁকে কি দেশে খেলার সুযোগ দেওয়া হবে?

আমিনুল: একজন সাবেক জাতীয় ফুটবলার, সাবেক জাতীয় অধিনায়ক হিসেবে যেটা রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করেছি, আমাকে প্রতি মুহূর্তে মামলা-হামলায় জর্জরিত করেছে। শারীরিকভাবে নির্যাতিত হয়েছি। আমাকে গুলিবিদ্ধ করা হয়েছে। রক্তাক্ত হয়েছি। এই ধরনের পরিস্থিতি যেন কোনোভাবে খেলোয়াড়ের সঙ্গে না হয়, এটা আমি কখনোই চাই না এবং সমর্থনও করি না। একজন মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার হচ্ছে, ভিন্নমত থাকতে পারে। আমি আমার মতামত দিয়ে আমার কাজ যদি সফলভাবে শেষ করতে পারি, এটা আমার যোগ্যতা অনুযায়ী করব। কিন্তু ভিন্নমতের কারণে যে আমার ওপরে বা অন্য কারও ওপরে জুলুম-নির্যাতন হবে, সেটাকে কখনোই সমর্থন করি না এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের কোনো জুলুম নির্যাতন হবে না। আপনি যে বিষয়টি বলছেন, তা হচ্ছে, যেহেতু সাকিবের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয়ভাবে মামলা হয়েছে, সেটা কিন্তু অবৈধ সরকারের ৩০০ জনের একজন এমপি হওয়ায় সাকিবের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। বাংলাদেশের মানুষের বিরুদ্ধে গিয়ে যখন ওই স্বৈরাচার সরকার মানুষকে যেভাবে হত্যা করেছে, যেভাবে গুম করেছে, এটার দায়ভার ৩০০ জনের একজনকে নিতে হবে। এটা অস্বীকার করার কোনো সুযোগ নেই। তবে এটার সিদ্ধান্ত রাষ্ট্র নেবে।

প্রশ্ন: অনেক জটিল বিষয়ে কথা হলো, এবার ফুটবলে আসি। বাংলাদেশের ফুটবলে হামজা আসার পর যে আশা তৈরি হয়েছে, সেটা শুধুই জাতীয় দলকেন্দ্রিক। ক্লাব ফুটবল আঁধারেই আছে।

আমিনুল: হামজা চৌধুরী, শমিত শোম বা বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত যে খেলোয়াড়েরা রয়েছে, তাদের ওপর নির্ভর করে বাংলাদেশের ফুটবলে একটা জাগরণ তৈরি হয়েছে। সেই জাগরণকে অবশ্যই আমরা ইতিবাচকভাবে নিচ্ছি এবং এই হাইপটা ধরে রাখতে পারলে আমাদের বাংলাদেশ ফুটবল অনেক এগিয়ে যাবে। কিন্তু আমাদের মূল চালিকাশক্তি হচ্ছে তৃণমূল পর্যায়। তৃণমূল পর্যায় মানে আমাদের তেমন কোনো খেলা কিন্তু গত এক বছরে দৃশ্যমান দেখিনি। আমাদের ঘরোয়া ফুটবলের সেই জৌলুশ কিন্তু আমরা এখনো দেখিনি। শুধু দু-চারটি ক্লাবের ওপর বাংলাদেশের ফুটবল নির্ভর করে না। আমাদের উপজেলা বা জেলা পর্যায়ের যে ফুটবল খেলা দরকার কিংবা যে ধরনের লিগ দরকার, আমরা যখন খেলেছি শেরেবাংলা কাপ, সোহরাওয়ার্দী কাপের মাধ্যমে দেখা গেছে, বাংলাদেশের অনেক ভালো ভালো ফুটবলার বের হয়ে আসত। এই পাইপলাইনটা কিন্তু পুরোপুরি বন্ধ। এখন হামজা চৌধুরীকে কেন্দ্র করে বা বাংলাদেশের ফুটবল জাতীয় পর্যায়ে হয়তো এগিয়ে যাবে। কিন্তু আমাদের যে বিকল্প দরকার, তৃণমূল পর্যায় থেকে যে শুরু করা দরকার বা যে স্কুল ফুটবল শুরু করা দরকার, এই জায়গাগুলোতে আমরা অনেকাংশে পিছিয়ে আছি। এটা কখনোই রাতারাতি পরিবর্তন সম্ভব নয়। সময় দিতে হবে। পরিকল্পনা করতে হবে। পেশাদারি মনোভাব আনতে হবে সব পর্যায়ে। শুধু খেলোয়াড়েরা পেশাদারি আচরণ করবে আর কর্মকর্তারা করবেন না, তা হলে তো হবে না। মাঠের সংকট নিয়েও আমাদের কাজ করতে হবে। সেটা অবশ্যই সরকারি পর্যায় থেকে হওয়া উচিত এবং পাশাপাশি আমাদের ক্লাব পর্যায়গুলো ক্লাবের যে সুযোগ-সুবিধা দরকার, আসলে তা অপ্রতুল। সব মিলিয়ে আমার কাছে মনে হয়, হামজা চৌধুরীকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশের ফুটবলে নবজাগরণ তৈরি হয়েছে। এটা ধরে রেখে আমরা যদি তৃণমূল পর্যায়ে এগিয়ে আসতে পারি এবং একটি দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা করা যায়, তাহলে হয়তো ভালো কিছু করতে পারব।

প্রশ্ন: কদিন পর ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ, বাংলাদেশ কি পারবে হারাতে?

আমিনুল: ভারতের ফুটবল আর বাংলাদেশের ফুটবলে কিন্তু খুব বেশি পার্থক্য নেই। হামজা চৌধুরীর আসার কারণে বাংলাদেশের ফুটবলে এবং খেলোয়াড়দের ভেতরে একটি নতুন উন্মাদনা বা আত্মবিশ্বাস তৈরি হয়েছে। সেই আত্মবিশ্বাসের জায়গা থেকে বলি, যেহেতু আমাদের ঘরের মাঠে খেলা, আমরা যদি সেই সুযোগ কাজে লাগাতে পারি, তাহলে আমরা ভালো কিছু করতে পারব।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

‘কিছু বলছি না তার মানে এই না বলতে পারি না’

ক্রীড়া ডেস্ক    
সামাজিক মাধ্যমে বিস্ফোরক মন্তব্য করেছেন নিগার সুলতানা জ্যোতি। ছবি: ফেসবুক
সামাজিক মাধ্যমে বিস্ফোরক মন্তব্য করেছেন নিগার সুলতানা জ্যোতি। ছবি: ফেসবুক

একটি জাতীয় দৈনিকে জাহানারা আলম সাক্ষাৎকার দেওয়ার পরই উত্তপ্ত দেশের নারী ক্রিকেট। সেই সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশ দলের বর্তমান অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যোতির বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল তুলেছেন। সামাজিক মাধ্যমে জ্যোতি এর কড়া জবাব দিয়েছেন।

ব্যক্তিগত প্রতিহিংসা, ক্ষোভ এখানে চরিতার্থ করা হচ্ছে বলে দাবি জ্যোতির। নিজের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে বাংলাদেশ অধিনায়ক লিখেছেন, ‘কিছু বলছি তার মানে এই না বলতে পারিনা, কিছু বলার নাই এমন। দলটা আমাদের সবার। এই দলটা যখন সবচেয়ে ভালো সময় পার করছে, তখন এত নেতিবাচক কথাবার্তা, ব্যক্তিগত প্রতিহিংসা, ক্ষোভ, আক্রমণাত্মক ভাষা ব্যবহার হচ্ছে। আমার খুব অবাক লাগে যে বা যারা এসব করছেন তারা একসময় দল টাকে ভালোবেসে আগলে রেখেছেন, দলটাকে একটা পর্যায়ে দাঁড় করিয়েছেন, অনেক অর্জন, অনেক ব্যর্থতা দেখেছেন।’

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সবশেষ জাহানারা খেলেছেন গত বছরের ডিসেম্বরে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টিতে। বাজে ফর্মের কারণে দল থেকে এক রকম ব্রাত্য হয়ে পড়েছেন তিনি। জায়গা হয়নি কদিন আগে শেষ হওয়া নারী ওয়ানডে বিশ্বকাপের দলে। একটি জাতীয় দৈনিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সালমা অভিযোগ তুলেছেন বর্তমান অধিনায়ক জ্যোতিসহ অন্যান্য ক্রিকেটার, সাপোর্টিং স্টাফ ও টিম ম্যানেজমেন্টের বিরুদ্ধে। জ্যোতি আজ ফেসবুকে লিখেছেন,

‘যখন কেউ দল থেকে বাদ পরেন বা অফ ফর্মে থাকেন, অন্য একটা বিকল্প তার পরিবর্তে আসে। তখনি সেই দলটার প্রতিটা জিনিস খারাপ হয়ে পড়ে, সেখানকার মানুষ, পরিবেশ সব কিছু। যারা এই দলের সদস্যদের প্রতি আস্থা রেখেছেন, তাদের প্রতি শ্রদ্ধা। গুজব ছড়িয়ে সাময়িকভাবে আলোচনাতে এলেও সেটা কার্যকরী হবে না আশা করি।’

জাহানারার সাক্ষাৎকারের পর বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) নিজেদের অবস্থান পরিষ্কার করেছে। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে গত রাতে বিসিবি লিখেছে, ‘বিসিবি সম্প্রতি সাবেক নারী ক্রিকেটারের জাতীয় দৈনিকে প্রচারিত মন্তব্যের দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। বর্তমান জাতীয় দলের অধিনায়ক, খেলোয়াড়, স্টাফ এবং টিম ম্যানেজমেন্টের বিরুদ্ধে তিনি (জাহানারা) একাধিক অভিযোগ উত্থাপন করেছেন।এসব অভিযোগকে বিসিবি পুরোপুরি ভিত্তিহীন, মনগড়া ও অসত্য বলে দাবি করছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বিসিবিকে ‘ক্রিকেটের ভূত’ তাড়ানোর আহ্বান তাপস বৈশ্যের

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
বিপিএলের দল চূড়ান্ত হওয়ার পর বিসিবিকে নিয়ে বিস্ফোরক পোস্ট তাপস বৈশ্যের। ছবি: ফেসবুক
বিপিএলের দল চূড়ান্ত হওয়ার পর বিসিবিকে নিয়ে বিস্ফোরক পোস্ট তাপস বৈশ্যের। ছবি: ফেসবুক

২০২৬ বিপিএল সামনে রেখে গত রাতে পাঁচ দল চূড়ান্ত করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। বিপিএলের দল চূড়ান্ত হওয়ার পর সেটা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বাংলাদেশের সাবেক ক্রিকেটার তাপস বৈশ্য।

বিসিবি বিপিএলের পাঁচ দল চূড়ান্ত হওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই সামাজিক মাধ্যমে বিস্ফোরক মন্তব্য করেছেন নিউইয়র্ক প্রবাসী তাপস। নিজের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে ৪২ বছর বয়সী এই পেসার পোস্ট দিয়েছেন খোলা চিঠির আদলেই। যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী এই তারকা ক্রিকেটার লিখেছেন, ‘বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড। বিপিএলের নতুন আসরেও আপনারা ম্যাচ ফিক্সিং ঠেকাতে পারবেন না। শুনলাম আপনারা বাজে এক দলকে নির্বাচিত করেছেন। যে দলের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তাই খারাপ। যদি এটা সত্যিই হয়, তাহলে আপনারা ম্যাচ ফিক্সিং জীবনেও এড়াতে পারবেন না। আমার ঘরোয়া ক্রিকেট চিরনিদ্রায় শায়িত হবে। দয়া করে আমাদের ক্রিকেটকে এসব ভূতের হাত থেকে বাঁচান।’

বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিল গত রাতে টগি স্পোর্টস লিমিটেডের রংপুর রাইডার্স, চ্যাম্পিয়নস স্পোর্টস ঢাকা, নাবিল গ্রুপের রাজশাহী, ট্রায়াঙ্গেল সার্ভিসেসের চট্টগ্রাম ও ক্রিকেট উইথ সামিকে দেওয়া হয়েছে সিলেট দল। প্রতিটি ফ্র্যাঞ্চাইজি দল পেয়েছে ৫ বছরের চুক্তিতে। এবার কোন দলের কী নাম হবে, এখনো চূড়ান্ত হয়নি। তাপস কোন ফ্র্যাঞ্চাইজিকে ইঙ্গিত করে পোস্ট দিয়েছেন, সেটা তিনি পরিষ্কার করেননি।

২০২৬ বিপিএলে অংশ নিতে আগ্রহ দেখিয়েছিল ১১টি প্রতিষ্ঠান। প্রাথমিক যাচাই-বাছাইয়ে টেকে আটটি প্রতিষ্ঠান। এবার বিপিএলে থাকছে না বর্তমান চ্যাম্পিয়ন বরিশালের নামে কোনো দল। তামিম ইকবালের নেতৃত্বে এই বরিশাল সবশেষ দুই বিপিএলেই শিরোপা জিতেছিল। এমনকি নোয়াখালীর প্রথমবার বিপিএলে অংশ নেওয়ার কথা থাকলেও সেটা হচ্ছে না। আর্থিক শক্তি, ম্যানেজমেন্ট ও মোটিভেশন এবং অভিজ্ঞতা—এই তিনটি বিষয় যাচাইবাছাই করে বিপিএলের ফ্র্যাঞ্চাইজি দেওয়া হয়েছে বলে গতকাল সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন বিসিবির সহসভাপতি শাখাওয়াত হোসেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আশরাফুল ব্যাটিং কোচ হওয়ার পরই সালাহ উদ্দীনের পদত্যাগ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ০৫ নভেম্বর ২০২৫, ১৩: ১৬
পদত্যাগ করলেন মোহাম্মদ সালাহ উদ্দীন। ছবি: ফাইল ছবি
পদত্যাগ করলেন মোহাম্মদ সালাহ উদ্দীন। ছবি: ফাইল ছবি

বাংলাদেশ-আয়ারল্যান্ড টেস্ট সিরিজ শুরু হতে এক সপ্তাহও বাকি নেই। দুই দল এরই মধ্যে স্কোয়াড ঘোষণা করেছে। পরশু বিশেষজ্ঞ ব্যাটিং কোচ হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন মোহাম্মম আশরাফুল। এই সময়েই পদত্যাগ করলেন মোহাম্মদ সালাহ উদ্দীন।

২০২৪-এর নভেম্বর থেকে সালাহ উদ্দীন বাংলাদেশের সিনিয়র সহকারী কোচের দায়িত্বে ছিলেন। এক বছরের মাথায় বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক শেষ হলো। সালাহ উদ্দীনের পদত্যাগের খবর আজকের পত্রিকাকে নিশ্চিত করেছে বিসিবি সূত্র।

সিনিয়র সহকারী কোচ হলেও বাংলাদেশ দলের ব্যাটিং দেখভাল করতেন সালাহ উদ্দীন। তবে গত কয়েক মাসে বাংলাদেশের লাগাতার ব্যাটিং ব্যর্থতায় তাঁকে নিয়ে হচ্ছিল সমালোচনা। পরশু বিসিবির পরিচালকদের সভা শেষে মোহাম্মদ আশরাফুলকে বিশেষজ্ঞ ব্যাটিং কোচ হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। তিনি নিয়োগ পেয়েছেন আয়ারল্যান্ড সিরিজের জন্যই। এই সিরিজে বাংলাদেশের টিম ডিরেক্টর হিসেবে কাজ করবেন আবদুর রাজ্জাক।

আশরাফুল ব্যাটিং কোচ হওয়ায় সালাহ উদ্দীনের কী হবে, সেই ব্যাখ্যায় রাজ্জাক পরশু সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ‘সালাহ উদ্দীন ভাই সিনিয়র সহকারী কোচ। কারও ব্যর্থতার জন্য নয়। ওখানে কাউকে সরানো হয়নি। কোচিং স্টাফে নতুন একজন হিসেবে আশরাফুলকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।’ আশরাফুল ব্যাটিং কোচ হওয়ার পর বোর্ডে সালাহ উদ্দীনের কাজ অনেকটা কমে গেছে। এ কারণেই যে সালাহ উদ্দীন পদত্যাগ করেছেন, সেটা বোঝাই যাচ্ছে।

সিলেটে ১১ নভেম্বর শুরু হবে বাংলাদেশ-আয়ারল্যান্ড দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ। দ্বিতীয় টেস্ট মিরপুরে শুরু হবে ১৯ নভেম্বর। ২৭ ও ২৯ নভেম্বর প্রথম দুই টি-টোয়েন্টি হবে চট্টগ্রামের বীরশ্রেষ্ঠ ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মতিউর রহমান স্টেডিয়ামে। ২ ডিসেম্বর মিরপুরে হবে দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ব্রাজিল দলে তাহলে ব্রাত্য হয়ে পড়লেন নেইমার

ক্রীড়া ডেস্ক    
ব্রাজিলের জার্সিতে বছরের শেষ দুই ম্যাচও খেলতে পারবেন না নেইমার। ছবি: এএফপি
ব্রাজিলের জার্সিতে বছরের শেষ দুই ম্যাচও খেলতে পারবেন না নেইমার। ছবি: এএফপি

ব্রাজিলিয়ান লিগে ফোর্তালেজার বিপক্ষে গত শনিবার ম্যাচ খেললেন নেইমার। তারপরও ব্রাজিল জাতীয় দলের কোচ কার্লো আনচেলত্তির চোখে এখনো ফিট নন নেইমার। আর তাই তাঁকে ছাড়াই এ মাসেই হতে যাওয়া সেনেগাল ও তিউনিসিয়ার বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচের ব্রাজিল দলে জায়গা হলো না নেইমারের। ১৫ নভেম্বর লন্ডনের এমিরেটস স্টেডিয়ামে সেনেগাল ও ১৮ নভেম্বর ফ্রান্সের লিলে তিউনিসিয়ার বিপক্ষে খেলবে কার্লো আনচেলত্তির দল।

কেন নেইমারকে নেওয়া হলো না দলে? দল ঘোষণার সময় ব্রাজিল জাতীয় দলের ইতালিয়ান কোচ আনচেলত্তি বললেন, ‘আমি নেইমারের সঙ্গে আবার কথা বলেছি। দেখা যাক, চোট থেকে কবে ফিরতে পারে। পুরো বিশ্বকাপ খেলতে হলে খেলোয়াড়ের উচ্চমাত্রার শারীরিক প্রস্তুতি থাকা জরুরি। কেউ যদি পুরোপুরি ফিট না থাকে, আমি তাকে দলে নেব না।’

নেইমারের জন্য কোচের বার্তাটা পরিষ্কার। দু-এক ম্যাচ খেলে চোটে পড়া, চোট কাটিয়ে মাঠে ফিরে আবার চোটে মাঠের বাইরে চলে যাওয়া—এমন কাউকে তিনি বিশ্বকাপের দলে রাখবেন না। ব্রাজিল সবশেষ বিশ্বকাপ জিতেছে ২০০২ সালে। দীর্ঘ ২৩ বছরের শিরোপা বন্ধ্যত্ব ঘোচাতে এবার রিয়ালের সাবেক কোচ আনচেলত্তিকে নিয়োগ দিয়েছে তারা। বিদেশি কোনো কোচ নিয়ে কেউ কখনো বিশ্বকাপ জেতেনি—এই সত্যটা জানার পরও ইতালিয়ান আনচেলত্তিকে ব্রাজিলিয়ান ফুটবল কনফেডারেশন (সিবিএফ) এই বিশ্বাসে নিয়োগ দিয়েছে—ব্রাজিলকে তিনি বিশ্বকাপ জিতিয়ে দেবেন। ব্রাজিল বিশ্বকাপ জিতবে কি না, তা সময়ই বলবে। তবে সিবিএফের চাওয়াটাকে তিনিও এখন বুকে ধারণ করেন। তাই বিশ্বকাপের সেরা দল বাছাইয়ে বিন্দুমাত্র ছাড় দিতে রাজি নন আনচেলত্তি, ‘আমাদের দলে এমন খেলোয়াড় দরকার, যারা শারীরিকভাবে সর্বোচ্চ ফিট।’

নেইমারের জায়গা না হলেও দুটি প্রীতি ম্যাচের ব্রাজিল দলে নতুন মুখ হিসেবে ডাক পেয়েছেন লুচানো জোবা। তিন বছর পর ফিরেছেন ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার ফাবিনিও। ডাকা হয়েছে তরুণ ফরোয়ার্ড ভিতো রোকেকেও। তাঁদের নিয়ে আনচেলত্তি বললেন, ‘দলে ফাবিনিওর মতো খেলোয়াড় আছে। লুচানো জোবা, যাকে আমি মাঠে দেখতে চাই, ভালো একটি মৌসুম কাটানো ভিতো রোকে আছে। দলে আছে ব্রাজিলের ঘরোয়া ফুটবলে খেলা সাতজন খেলোয়াড়ও।’

নতুন খেলোয়াড়দের সুযোগ দেওয়া কিংবা পুরোনোদের ফিরিয়ে আনার পেছনে আনচেলত্তির যুক্তি, ‘আমি এই ম্যাচগুলোয় নতুন কিছু খেলোয়াড়কে পর্যবেক্ষণ করতে চাই। ফাবিনিও, লুচানো জোবা, ভিতো রোকে। ওরা সবাই দারুণ মৌসুম কাটাচ্ছে। এবার আমাদের দলে ব্রাসিলেইরাও থেকে সাতজন খেলোয়াড় আছে, যা লিগটির মানের প্রমাণ। এই দুই ম্যাচে আমরা জাতীয় দলের জন্য আরও স্থিতিশীল একটি ভিত্তি গড়ে তুলতে চাই।’

তবে মার্চের মধ্যেই বিশ্বকাপের দল চূড়ান্ত করে ফেলবেন বলে জানিয়েছেন আনচেলত্তি, ‘খেলোয়াড়দের সঙ্গে আমি যত বেশি সময় কাটাব, চূড়ান্ত দল তৈরির তত কাছাকাছি পৌঁছাব। জুনের দল গঠনের কাছাকাছি আছি আমরা। এরই মধ‍্যে ১৭ বা ১৮ জন খেলোয়াড় চূড়ান্ত হয়েছে। চোটের ওপরও এটা নির্ভর করবে। তবে দল প্রায় চূড়ান্তই। মার্চের দল হবে চূড়ান্ত দলের খুব কাছাকাছি।’

তাই বিশ্বকাপ খেলতে চাইলে মার্চের মধ্যেই নিজের ফিটনেসের চূড়ান্ত পরীক্ষা দিতে হবে নেইমারকে। আনচেলত্তির চাওয়া, বিশ্বকাপ দলের ২৬ খেলোয়াড়কে নিয়েই তিনি টুর্নামেন্টের প্রস্তুতি শুরু করবেন, ‘যেদিন আমরা বিশ্বকাপের প্রস্তুতি শুরু করব, সেদিন আমাদের ২৬ জন খেলোয়াড় থাকবে। এর বাইরে কাউকে আমি ডাকব না।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত