বোরহান জাবেদ, ঢাকা
প্রশ্ন: সম্ভাবনা জাগিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে আপনার যাত্রা শুরু হয়েছিল। অথচ থেমে গেলেন আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের পূর্ণতা পাওয়ার আগেই।
কলিন ইনগ্রাম: হ্যাঁ, সম্ভাবনার দুয়ার আমার সামনে খোলা ছিল। ক্রিকেটের সর্বোচ্চ চূড়া আন্তর্জাতিক ক্রিকেট। আমি অবশ্যই সে চ্যালেঞ্জ আর পাদপ্রদীপের আলোয় থাকার ব্যাপারগুলো মিস করি। কিন্তু এসব নিয়ে আমার কোনো আফসোস নেই। এটাও সত্যি, আমি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে অনেক মিস করি।
প্রশ্ন: আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার লম্বা না হওয়ার পেছন নিজের কোন ঘাটতি বেশি সামনে আসে?
ইনগ্রাম: আমার আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার মনে হয় একটু তাড়াতাড়িই শুরু হয়ে গিয়েছিল। বয়সভিত্তিক ক্রিকেটে আরও তিন-চার বছর কাটিয়ে নিজের খেলাটা আরও গুছিয়ে আসতে পারলে খুশি হতাম। আর তখনকার দক্ষিণ আফ্রিকা দলটাও সুসংগঠিত ছিল। কখনোই নির্দিষ্ট কোনো পজিশন পাইনি। আরও তিন-চার বছর পর আন্তর্জাতিক অঙ্গনে এলে এ ব্যাপারগুলো থাকত না।
প্রশ্ন: দেশের হয়ে ক্যারিয়ার লম্বা হওয়ার সুযোগ থাকলে নিজেকে এখন কোথায় দেখতে চাইতেন?
ইনগ্রাম: এই মুহূর্তে নিজেকে নিয়ে দারুণ খুশি। আমি যেকোনো পর্যায়ে নিজের খেলাটা উপভোগের চেষ্টা করেছি। বিশেষ করে গত কয়েক বছরে বিশ্বব্যাপী ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটের সঙ্গে নিজের জীবনকে জড়িয়ে ফেলার ব্যাপারটা দারুণ। পেছন ফিরে তাকালে কী হতে পারত, এটা কেবল আপনি আশা করতে পারেন। সামনে যেটা আছে সেটার সর্বোচ্চ ব্যবহার, এটাও জীবনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। আমার মনে হয়, আমি সেটা করতে পেরেছি। এই যেমন বিপিএলে দল না পেলে হয়তো বসে সময় কাটাতে হতো। এটাই জীবন।
প্রশ্ন: শৈশবের হিরো, যাঁকে দেখে ক্রিকেটার হওয়ার স্বপ্ন বোনা...
ইনগ্রাম: আমার বাবা। তিনি ক্রিকেট খেলতেন, আমি দূর থেকে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখতাম। ক্রিকেটের প্রতি ভালোবাসার শুরুটা তখন থেকে। তবে প্রথম কাউকে অনুসরণ করার কথা বললে, গ্যারি কারস্টেন। তিনি আমার আইডল। আমি সব সময় তাঁর ব্যাটিং উপভোগ করতাম, দেখতে চাইতাম। তাঁর চ্যালেঞ্জ গ্রহণ ক্ষমতা আমাকে অনুপ্রাণিত করত। বাঁহাতি ব্যাটার সেটাও একটা কারণ।
প্রশ্ন: কখনো টেস্ট খেলা হয়নি। কতটা আক্ষেপ কাজ করে?
ইনগ্রাম: আমি পেছন ফিরে তাকিয়ে আফসোস করার মতো মানুষ না। যখন শুরু করেছিলাম, প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে প্রথম দুই বছর দারুণ ছিল। তবে এটা সম্ভবত একমাত্র জিনিস, পেছন ফিরে তাকালে মনে হয় নিজেকে আরেকটু সময় দেওয়াই যেতো। তখন সেভাবে ভাবিনি, হয়তো কিছু সময় কাউন্টি ক্রিকেট খেলে নিজের ব্যাটিংয়ের উন্নতি আনা যেতো।
প্রশ্ন: বিশ্বের প্রায় সব ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগেই খেলে ফেলেছেন। প্রথমবার বিপিএলে এসে কেমন লেগেছে?
ইনগ্রাম: বিদেশি খেলোয়াড়দের জন্য এখানে খেলা সবসময় একটা চ্যালেঞ্জ। বিশেষ করে স্পিন খেলাটা। এখানে খেলার অভিজ্ঞতা আশা করি, আমার খেলাকে আরেক ধাপ এগিয়ে নেবে। নিজেকে চেনানোর এটা বড় মঞ্চ। এখানে যতগুলো মাঠে খেলা হয়েছে একটা আরেকটার চেয়ে একেবারে আলাদা। এ জন্য ভিন্ন ভিন্ন টেকনিকে খেলতে হয়। আমি পুরোপুরি উপভোগ করেছি, দারুণ অভিজ্ঞতা। আবার খেলতে এলে দারুণ হবে (হাসি)।
প্রশ্ন: দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে ২০১১ বিশ্বকাপ খেলতে সর্বশেষ বাংলাদেশে এসেছিলেন। এক যুগের বেশি সময় পর এসে পার্থক্য কোথায় দেখছেন?
ইনগ্রাম: ২০১১ স্মৃতিটা ছিল ভুলে যাওয়ার মতো। এখানে বিশ্বকাপে কোয়ার্টার ফাইনালে হেরে কেঁদে বিদায় নিয়েছিলাম। তবে বাংলাদেশে আমার ভালো স্মৃতি ২০০৯ সালে ছিল। তখন তিন জাতির টুর্নামেন্ট খেলতে এসেছিলাম। বাংলাদেশ সে সময় ক্রিকেটের উঠতি শক্তি হয়ে উঠছিল। এখনকার পার্থক্যটা হচ্ছে, ক্রিকেটের মান বেড়েছে, সেই সময়ের সঙ্গে তুলনা করলে তখন নেটে অনুশীলনের সময় খেলোয়াড় কম ছিল। এখন সংখ্যাটা অনেক বেশি। নেট বোলারদের মান বেড়েছে, ঘরোয়া ক্রিকেটার যাদের সঙ্গে আমি অনুশীলন করেছি, মানের কথা বললে দুর্দান্ত। এটা বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য দারুণ ব্যাপার।
প্রশ্ন: একটি মাত্র জয় নিয়ে টুর্নামেন্ট শেষ করেছে আপনার দল সিলেট। দলের কী কী সমস্যা আপনার চোখে পড়েছে?
ইনগ্রাম: ব্যক্তিগত কিছু ভালো পারফরম্যান্স হয়েছে। কিন্তু এটা দলীয় খেলা। দল হিসেবে আমরা ভালো খেলতে পারিনি। যেদিন ব্যাটিং বিভাগ ভালো করেছে, সেদিন বোলিং বিভাগ ভালো করতে পারেনি। যেদিন বোলিং ভালো হয়েছে, সেদিন ব্যাটিং ভালো হয়নি। এ ধরনের টুর্নামেন্টে দল হিসেবে ভালো খেলা গুরুত্বপূর্ণ। প্রথম পাঁচ ম্যাচে আমরা বিভিন্ন ধরনের সমন্বয়ের চেষ্টা করেছি, হয়নি। আমরা কখনোই দল হিসেবে গুছিয়ে উঠতে পারিনি।
প্রশ্ন: বিপিএলের সঙ্গে অন্য ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্টগুলোর কেমন পার্থক্য দেখেন?
ইনগ্রাম: সব জায়গায় মোটামুটি একই অনুভূতি। প্রতিটি দেশেই নতুন নতুন অভিজ্ঞতা হয়, ভিন্ন ভিন্ন পরিবেশ-চ্যালেঞ্জ। ব্যক্তিগতভাবে মনে হয়, অন্য দেশের তুলনায় উইকেট এখানে একটু ভিন্ন। বিশেষ করে স্পিন খেলাটা। এটা আমাকে কাজে দিয়েছে। আপনাকে এখানে স্পিন ভালো খেলতে হবে, যেমন এখন আমি স্পিন অন্য যেকোনো সময়ের চেয়ে ভালো খেলব। এটা আমার জন্য দারুণ শিক্ষণীয় ব্যাপার ছিল।
প্রশ্ন: ক্রিস গেইল-ডোয়াইন ব্রাভোদের মতো আপনিও অনেকটা ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটের ফেরিওয়ালা। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ক্রিকেটারদের সঙ্গে মেশা, তাঁদের সঙ্গে খেলা—এই ব্যাপারগুলো কেমন লাগে?
ইনগ্রাম: খুবই ভাগ্যবান যে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে খেলার সুযোগ পেয়েছি। এটা ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটের জন্যই সম্ভব হয়েছে। অনেক রকম ক্রিকেটারদের সঙ্গে খেলা, হোটেল শেয়ার করা—এই ব্যাপারগুলো দারুণ। একজন তরুণ ক্রিকেটারের কাছে ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেট দারুণ মঞ্চ। ক্রিকেটীয় জাতি হিসেবে এটা বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে পারে। তরুণ ক্রিকেটাররা আন্তর্জাতিক ক্রিকেটারদের সঙ্গে মেশার সুযোগ পাচ্ছে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পা দেওয়ার আগে নিজেদের অবস্থান বোঝার এর চেয়ে ভালো কিছু হতে পারে না।
প্রশ্ন: প্রথাগত এক ব্যাটার থেকে বিশ্বব্যাপী টি-টোয়েন্টির চাহিদায় পরিণত হয়েছেন। নিজেকে ভাঙা-গড়ার এই পথটা কেমন ছিল?
ইনগ্রাম: মজার প্রশ্ন। আমি প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেট খেলেছি, সাদা বলের ক্রিকেট খেলেছি, দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে বিশ্বকাপও। সে সময় টি-টোয়েন্টি নিয়ে ভাবার সময় ছিল না। তবে ২০১৩-২০১৪ কিংবা তারও আগে ২০১২ সালের দিকে মনে হয়েছিল যে টেস্ট খেলতে পারব না। তখনই নিজেকে নিয়ে নতুন কিছু করার চেষ্টা করেছি। সেই চেষ্টার ফল এখনকার অবস্থান। যখনই সুযোগ এসেছে সর্বোচ্চ ব্যবহার করতে চেয়েছি।
প্রশ্ন: পাওয়ার হিটার না হয়েও টি-টোয়েন্টিতে ভালোভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন। বাংলাদেশের ব্যাটাররা এ জায়গায় এখনো পিছিয়ে। তাঁদের প্রতি আপনার পরামর্শ কী থাকবে?
ইনগ্রাম: খুবই ভালো প্রশ্ন। কয়েক বছর আগে ভাবছিলাম ক্রিস গেইল কিংবা আন্দ্রে রাসেলের মতো নই আমি। কিন্তু আমার স্কিলের ওপর আস্থা ছিল। প্রথাগত শট খেলে রান করতে পারি। টেকনিকের দিকে খেয়াল রেখে হিটিং স্কিল বাড়ানো যায়। পাওয়ারই সবকিছু না, খেলাটা নিয়ে স্বচ্ছ ধারণা থাকা জরুরি। তারপর রান করার সুযোগ বাড়ানোর চেষ্টা করা, দ্রুত রান করার মানে এই না যে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে মেরে যাওয়া। এই ধরনের উইকেটে বেশির ভাগ বাংলাদেশি ব্যাটারের স্কিল দারুণ। এখানে আমার পরামর্শ হবে, এটার সঙ্গে নতুন কিছু যোগ করা।
আরও পড়ুন:
প্রশ্ন: সম্ভাবনা জাগিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে আপনার যাত্রা শুরু হয়েছিল। অথচ থেমে গেলেন আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের পূর্ণতা পাওয়ার আগেই।
কলিন ইনগ্রাম: হ্যাঁ, সম্ভাবনার দুয়ার আমার সামনে খোলা ছিল। ক্রিকেটের সর্বোচ্চ চূড়া আন্তর্জাতিক ক্রিকেট। আমি অবশ্যই সে চ্যালেঞ্জ আর পাদপ্রদীপের আলোয় থাকার ব্যাপারগুলো মিস করি। কিন্তু এসব নিয়ে আমার কোনো আফসোস নেই। এটাও সত্যি, আমি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে অনেক মিস করি।
প্রশ্ন: আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার লম্বা না হওয়ার পেছন নিজের কোন ঘাটতি বেশি সামনে আসে?
ইনগ্রাম: আমার আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার মনে হয় একটু তাড়াতাড়িই শুরু হয়ে গিয়েছিল। বয়সভিত্তিক ক্রিকেটে আরও তিন-চার বছর কাটিয়ে নিজের খেলাটা আরও গুছিয়ে আসতে পারলে খুশি হতাম। আর তখনকার দক্ষিণ আফ্রিকা দলটাও সুসংগঠিত ছিল। কখনোই নির্দিষ্ট কোনো পজিশন পাইনি। আরও তিন-চার বছর পর আন্তর্জাতিক অঙ্গনে এলে এ ব্যাপারগুলো থাকত না।
প্রশ্ন: দেশের হয়ে ক্যারিয়ার লম্বা হওয়ার সুযোগ থাকলে নিজেকে এখন কোথায় দেখতে চাইতেন?
ইনগ্রাম: এই মুহূর্তে নিজেকে নিয়ে দারুণ খুশি। আমি যেকোনো পর্যায়ে নিজের খেলাটা উপভোগের চেষ্টা করেছি। বিশেষ করে গত কয়েক বছরে বিশ্বব্যাপী ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটের সঙ্গে নিজের জীবনকে জড়িয়ে ফেলার ব্যাপারটা দারুণ। পেছন ফিরে তাকালে কী হতে পারত, এটা কেবল আপনি আশা করতে পারেন। সামনে যেটা আছে সেটার সর্বোচ্চ ব্যবহার, এটাও জীবনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। আমার মনে হয়, আমি সেটা করতে পেরেছি। এই যেমন বিপিএলে দল না পেলে হয়তো বসে সময় কাটাতে হতো। এটাই জীবন।
প্রশ্ন: শৈশবের হিরো, যাঁকে দেখে ক্রিকেটার হওয়ার স্বপ্ন বোনা...
ইনগ্রাম: আমার বাবা। তিনি ক্রিকেট খেলতেন, আমি দূর থেকে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখতাম। ক্রিকেটের প্রতি ভালোবাসার শুরুটা তখন থেকে। তবে প্রথম কাউকে অনুসরণ করার কথা বললে, গ্যারি কারস্টেন। তিনি আমার আইডল। আমি সব সময় তাঁর ব্যাটিং উপভোগ করতাম, দেখতে চাইতাম। তাঁর চ্যালেঞ্জ গ্রহণ ক্ষমতা আমাকে অনুপ্রাণিত করত। বাঁহাতি ব্যাটার সেটাও একটা কারণ।
প্রশ্ন: কখনো টেস্ট খেলা হয়নি। কতটা আক্ষেপ কাজ করে?
ইনগ্রাম: আমি পেছন ফিরে তাকিয়ে আফসোস করার মতো মানুষ না। যখন শুরু করেছিলাম, প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে প্রথম দুই বছর দারুণ ছিল। তবে এটা সম্ভবত একমাত্র জিনিস, পেছন ফিরে তাকালে মনে হয় নিজেকে আরেকটু সময় দেওয়াই যেতো। তখন সেভাবে ভাবিনি, হয়তো কিছু সময় কাউন্টি ক্রিকেট খেলে নিজের ব্যাটিংয়ের উন্নতি আনা যেতো।
প্রশ্ন: বিশ্বের প্রায় সব ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগেই খেলে ফেলেছেন। প্রথমবার বিপিএলে এসে কেমন লেগেছে?
ইনগ্রাম: বিদেশি খেলোয়াড়দের জন্য এখানে খেলা সবসময় একটা চ্যালেঞ্জ। বিশেষ করে স্পিন খেলাটা। এখানে খেলার অভিজ্ঞতা আশা করি, আমার খেলাকে আরেক ধাপ এগিয়ে নেবে। নিজেকে চেনানোর এটা বড় মঞ্চ। এখানে যতগুলো মাঠে খেলা হয়েছে একটা আরেকটার চেয়ে একেবারে আলাদা। এ জন্য ভিন্ন ভিন্ন টেকনিকে খেলতে হয়। আমি পুরোপুরি উপভোগ করেছি, দারুণ অভিজ্ঞতা। আবার খেলতে এলে দারুণ হবে (হাসি)।
প্রশ্ন: দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে ২০১১ বিশ্বকাপ খেলতে সর্বশেষ বাংলাদেশে এসেছিলেন। এক যুগের বেশি সময় পর এসে পার্থক্য কোথায় দেখছেন?
ইনগ্রাম: ২০১১ স্মৃতিটা ছিল ভুলে যাওয়ার মতো। এখানে বিশ্বকাপে কোয়ার্টার ফাইনালে হেরে কেঁদে বিদায় নিয়েছিলাম। তবে বাংলাদেশে আমার ভালো স্মৃতি ২০০৯ সালে ছিল। তখন তিন জাতির টুর্নামেন্ট খেলতে এসেছিলাম। বাংলাদেশ সে সময় ক্রিকেটের উঠতি শক্তি হয়ে উঠছিল। এখনকার পার্থক্যটা হচ্ছে, ক্রিকেটের মান বেড়েছে, সেই সময়ের সঙ্গে তুলনা করলে তখন নেটে অনুশীলনের সময় খেলোয়াড় কম ছিল। এখন সংখ্যাটা অনেক বেশি। নেট বোলারদের মান বেড়েছে, ঘরোয়া ক্রিকেটার যাদের সঙ্গে আমি অনুশীলন করেছি, মানের কথা বললে দুর্দান্ত। এটা বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য দারুণ ব্যাপার।
প্রশ্ন: একটি মাত্র জয় নিয়ে টুর্নামেন্ট শেষ করেছে আপনার দল সিলেট। দলের কী কী সমস্যা আপনার চোখে পড়েছে?
ইনগ্রাম: ব্যক্তিগত কিছু ভালো পারফরম্যান্স হয়েছে। কিন্তু এটা দলীয় খেলা। দল হিসেবে আমরা ভালো খেলতে পারিনি। যেদিন ব্যাটিং বিভাগ ভালো করেছে, সেদিন বোলিং বিভাগ ভালো করতে পারেনি। যেদিন বোলিং ভালো হয়েছে, সেদিন ব্যাটিং ভালো হয়নি। এ ধরনের টুর্নামেন্টে দল হিসেবে ভালো খেলা গুরুত্বপূর্ণ। প্রথম পাঁচ ম্যাচে আমরা বিভিন্ন ধরনের সমন্বয়ের চেষ্টা করেছি, হয়নি। আমরা কখনোই দল হিসেবে গুছিয়ে উঠতে পারিনি।
প্রশ্ন: বিপিএলের সঙ্গে অন্য ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্টগুলোর কেমন পার্থক্য দেখেন?
ইনগ্রাম: সব জায়গায় মোটামুটি একই অনুভূতি। প্রতিটি দেশেই নতুন নতুন অভিজ্ঞতা হয়, ভিন্ন ভিন্ন পরিবেশ-চ্যালেঞ্জ। ব্যক্তিগতভাবে মনে হয়, অন্য দেশের তুলনায় উইকেট এখানে একটু ভিন্ন। বিশেষ করে স্পিন খেলাটা। এটা আমাকে কাজে দিয়েছে। আপনাকে এখানে স্পিন ভালো খেলতে হবে, যেমন এখন আমি স্পিন অন্য যেকোনো সময়ের চেয়ে ভালো খেলব। এটা আমার জন্য দারুণ শিক্ষণীয় ব্যাপার ছিল।
প্রশ্ন: ক্রিস গেইল-ডোয়াইন ব্রাভোদের মতো আপনিও অনেকটা ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটের ফেরিওয়ালা। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ক্রিকেটারদের সঙ্গে মেশা, তাঁদের সঙ্গে খেলা—এই ব্যাপারগুলো কেমন লাগে?
ইনগ্রাম: খুবই ভাগ্যবান যে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে খেলার সুযোগ পেয়েছি। এটা ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটের জন্যই সম্ভব হয়েছে। অনেক রকম ক্রিকেটারদের সঙ্গে খেলা, হোটেল শেয়ার করা—এই ব্যাপারগুলো দারুণ। একজন তরুণ ক্রিকেটারের কাছে ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেট দারুণ মঞ্চ। ক্রিকেটীয় জাতি হিসেবে এটা বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে পারে। তরুণ ক্রিকেটাররা আন্তর্জাতিক ক্রিকেটারদের সঙ্গে মেশার সুযোগ পাচ্ছে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পা দেওয়ার আগে নিজেদের অবস্থান বোঝার এর চেয়ে ভালো কিছু হতে পারে না।
প্রশ্ন: প্রথাগত এক ব্যাটার থেকে বিশ্বব্যাপী টি-টোয়েন্টির চাহিদায় পরিণত হয়েছেন। নিজেকে ভাঙা-গড়ার এই পথটা কেমন ছিল?
ইনগ্রাম: মজার প্রশ্ন। আমি প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেট খেলেছি, সাদা বলের ক্রিকেট খেলেছি, দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে বিশ্বকাপও। সে সময় টি-টোয়েন্টি নিয়ে ভাবার সময় ছিল না। তবে ২০১৩-২০১৪ কিংবা তারও আগে ২০১২ সালের দিকে মনে হয়েছিল যে টেস্ট খেলতে পারব না। তখনই নিজেকে নিয়ে নতুন কিছু করার চেষ্টা করেছি। সেই চেষ্টার ফল এখনকার অবস্থান। যখনই সুযোগ এসেছে সর্বোচ্চ ব্যবহার করতে চেয়েছি।
প্রশ্ন: পাওয়ার হিটার না হয়েও টি-টোয়েন্টিতে ভালোভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন। বাংলাদেশের ব্যাটাররা এ জায়গায় এখনো পিছিয়ে। তাঁদের প্রতি আপনার পরামর্শ কী থাকবে?
ইনগ্রাম: খুবই ভালো প্রশ্ন। কয়েক বছর আগে ভাবছিলাম ক্রিস গেইল কিংবা আন্দ্রে রাসেলের মতো নই আমি। কিন্তু আমার স্কিলের ওপর আস্থা ছিল। প্রথাগত শট খেলে রান করতে পারি। টেকনিকের দিকে খেয়াল রেখে হিটিং স্কিল বাড়ানো যায়। পাওয়ারই সবকিছু না, খেলাটা নিয়ে স্বচ্ছ ধারণা থাকা জরুরি। তারপর রান করার সুযোগ বাড়ানোর চেষ্টা করা, দ্রুত রান করার মানে এই না যে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে মেরে যাওয়া। এই ধরনের উইকেটে বেশির ভাগ বাংলাদেশি ব্যাটারের স্কিল দারুণ। এখানে আমার পরামর্শ হবে, এটার সঙ্গে নতুন কিছু যোগ করা।
আরও পড়ুন:
অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে শেষ হচ্ছে বিসিবির বর্তমান পরিচালনা পর্ষদের মেয়াদ। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী দ্বিতীয় সপ্তাহে হওয়ার কথা নির্বাচন। সে হিসাবে ৫০ দিনও বাকি নেই। সময় যত গড়াচ্ছে, বিসিবির নির্বাচন নিয়ে ততই বাড়ছে ধোঁয়াশা। ধোঁয়াশা আরও বেড়েছে বিসিবির সহসভাপতি ও প্রভাবশালী পরিচালক মাহবুবুল আনামের নির্বাচন থেকে
৯ মিনিট আগেরাজনৈতিক টানাপোড়েনে ভারত-পাকিস্তানের দ্বিপক্ষীয় সিরিজ এখন আর দেখা যায় না। দুই দলের ম্যাচ নিয়ে সংশয়, অনিশ্চয়তা তৈরি হয় বহুজাতীয় টুর্নামেন্টেও। ২০২৫ এশিয়া কাপ আয়োজন নিয়ে তো আর কম জলঘোলা হয়নি। জটিলতা কাটিয়ে এশিয়া কাপ ঠিক সময়েই হতে যাচ্ছে।
১৪ ঘণ্টা আগেবড় লক্ষ্য বাংলাদেশ ‘এ’ দল দিতে পারেনি মেলবোর্ন স্টারস একাডেমিকে। টপ এন্ড টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্টে জয়ের জন্য স্বাগতিক দলের লক্ষ্য ছিল ১৫৭। ৩ উইকেট ও ৪ বল হাতে রেখেই সেই লক্ষ্যে পৌঁছে ৩ উইকেটে জিতেছে মেলবোর্ন স্টারস একাডেমি।
১৫ ঘণ্টা আগেসিলেটে নেদারল্যান্ডস সিরিজ ও এশিয়া কাপের প্রস্তুতিতে ব্যস্ত বাংলাদেশ দল। এর মধ্যে দুপুর থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে খবর—বাংলাদেশ দলের ওপেনার তানজিদ তামিম বাগদান সেরেছেন। তাঁর নামে খোলা একটি অ্যাকাউন্ট থেকে এমন পোস্ট আসায় বেশ কিছু গণমাধ্যমও উদ্ধৃতি দিয়ে সংবাদ প্রকাশ করে।
১৬ ঘণ্টা আগে