Ajker Patrika

চিন্তার বোঝা মাথায় নিয়ে পুনেতে সাকিবরা

রানা আব্বাস, পুনে থেকে
আপডেট : ১৫ অক্টোবর ২০২৩, ০৯: ৫৬
চিন্তার বোঝা মাথায় নিয়ে পুনেতে সাকিবরা

দুপুরের ফ্লাইট ধরতে চেন্নাই বিমানবন্দরে সাকিব আল হাসান ঢুকলেন হাসিমুখে। এক নিরাপত্তকর্মী তাঁকে যখন রুটিন কাজ হিসেবে ‘তল্লাশি’ করছেন, তখন আরেক নিরাপত্তাকর্মী এগিয়ে এসে করমর্দন করলেন, হয়তো দ্রুত ছেড়ে দেওয়ার তাগিদ দিলেন। যাওয়ার সময় সাকিব তাঁকে যেন কী বললেন, সেটা শুনে কঠিন চেহারার নিরাপত্তাকর্মী হেসেই বাঁচেন না।

বিমানবন্দরে এই হাসিখুশি সাকিবকে দেখে বোঝা গেল না তিনি আর তাঁর দল কতটা চিন্তা নিয়ে পুনেতে রওনা দিচ্ছেন। চেন্নাইয়ে আগের দিন নিউজিল্যান্ড ম্যাচে বাঁ ঊরুর সামনে চোট পেয়েছেন সাকিব। পুনেতে ভারতের বিপক্ষে ১৯ অক্টোবর তাঁর খেলা হবে কি না, তা নিয়ে আছে সংশয়। দলের টিম ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদ সুজন আশাবাদী, সাকিবকে ভারতের সঙ্গে ম্যাচে তাঁরা পাবেন। গতকাল বিমানবন্দরে সুজন সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, ‘ব্যথা কমে গেছে। ছোট টিয়ার (চিঁড়) আছে পায়ে। গ্রেড ওয়ান বা টু মনে হয়। আশা করছি ভারতের বিপক্ষে ওকে পাব ইনশা আল্লাহ।’ আর বিসিবির এক বিজ্ঞপ্তিতে দলের ফিজিও বায়েজিদুল ইসলাম বলেছেন, ‘স্ক্যান রিপোর্ট পেয়েছি। তার প্রতিদিনের অগ্রগতি পর্যবেক্ষণ করে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

সাকিবকে নিয়ে চিন্তা তো আছেই। চিন্তা আছে দলের ব্যাটিং নিয়ে, এমনকি ভরসার জায়গা ফাস্ট বোলিং নিয়েও। বোলিং নিয়ে ভাবছেন না সুজন। তাঁর যত চিন্তা ব্যাটিং নিয়ে, ‘নতুন বলে ফাস্ট বোলিং ভালো হচ্ছে। তবে টপ অর্ডারের ব্যাটিং ভালো হচ্ছে না। (চেন্নাইয়ের) এই উইকেটে ২৪০ করে ম্যাচ জিততে পারবেন না। আমাদের ২৮৫ বা ৩০০-এর কাছাকাছি যেতে হতো, তখন অন্যরকম খেলা হতে পারত। আমরা ব্যর্থ হয়েছি। টপ অর্ডার ব্যর্থ হয়েছে, এটা একটা বড় ব্যাপার। এখনো আমরা বিশ্বাস করি, এই জায়গা থেকে ঘুরে দাঁড়াতে পারব। টপ অর্ডারের ঘুরে দাঁড়ানো দরকার। আমাদের সামর্থ্য আছে, দেখা যাক।’

ছয় দিনের মধ্যে নিজেদের প্রথম তিন ম্যাচ খেলেছে বাংলাদেশ। পরের ছয়টি ম্যাচ খেলতে হবে আগামী ২৯ দিনে। ভারতের বিপক্ষে ম্যাচের আগে বাংলাদেশ সময় পাচ্ছে অন্তত পাঁচ দিন। স্বাগতিক দল গতকাল পাকিস্তানের বিপক্ষে আহমেদাবাদে খেলে আজ পুনেতে আসবে। সুজনের দাবি, বাংলাদেশের বিপক্ষে ভারতই বেশি চাপে থাকবে, ‘আমার মনে হয় আমাদের চেয়ে ভারতের ওপরই বেশি চাপ থাকবে। আমরা গোছানোর সময় পাব। গত সাত দিনে ৩ ম্যাচ খেলেছি। ২৯ দিনে খেলব ৬ ম্যাচ। পরের ম্যাচ ছয় দিন পর। নতুন করে চিন্তাভাবনার সময় পাব। আমাদের হারানোর কিছু নেই। নিজেদের সেরা ক্রিকেট খেলতে হবে। আমাদের সাহস নিয়ে খেলতে হবে। আগ্রাসী ক্রিকেট খেলতে হবে।’

সেই আক্রমণাত্মক ক্রিকেট খেলতে কী করতে হবে, সেটিও অজানা নয় বাংলাদেশের। সমস্যা শুধু বাস্তবায়নে। সুজন বলছেন, ‘পারফরম্যান্সের সমন্বয় হচ্ছে না, যেটা আমাদের দরকার। ব্যাটিংয়ে জ্বলে ওঠা দরকার, সঙ্গে বোলিং। বলব না বোলাররা খারাপ করছে। তবে লক্ষ্য কম হলে মানসিকতা বদলে যায়। এখন আমাদের দুর্বল জায়গা হচ্ছে ব্যাটিং।’

এই দুর্বল জায়গা নিয়ে কথা হচ্ছে অনেক আগে থেকেই। কিন্তু সমাধান এখনো মেলেনি। ব্যাটিং অর্ডার ওলটপালট, নিষ্প্রভ টপ অর্ডার, বড় মঞ্চে পথ হারিয়ে ফেলা পেস আক্রমণ, অধিনায়কের চোট—তিন ম্যাচেই বাংলাদেশ দলের যে অবস্থা দাঁড়িয়েছে, বাকি পথটা তারা কীভাবে পাড়ি দেয়, সেটিই দেখার।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত