Ajker Patrika

‘কেউ যদি বলেন আমার পা নেই, তাহলে পা না থাকাই ভালো’

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ৩০ জুন ২০২৫, ১১: ২৬
নেতিবাচক ব্যাপার নিয়ে এখন আর বেশি ভাবেন না নাঈম শেখ। ছবি: সৌজন্য ছবি
নেতিবাচক ব্যাপার নিয়ে এখন আর বেশি ভাবেন না নাঈম শেখ। ছবি: সৌজন্য ছবি

যে শ্রীলঙ্কা থেকে একটা যতিচিহ্ন পড়েছিল, সেই লঙ্কায় নতুন শুরুর অপেক্ষায় নাঈম শেখ। ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে এশিয়া কাপে বাজে পারফরম্যান্সে বিষাক্ত ট্রলের শিকার নাঈম এতটাই মানসিকভাবে বিধ্বস্ত হয়ে পড়েছিলেন, তরুণ ওপেনার প্রায় দুই বছর পর আবার জাতীয় দলে ফিরে নিজের মানসিক শক্তিই শুধু প্রমাণ করেননি, স্কিলেও বিশেষ পরিবর্তন এনেছেন বলেই জানালেন।

কলম্বোয় রওনা দেওয়ার দুই দিন আগে আজকের পত্রিকাকে নাঈম বলেন, ‘কখনোই অতীত নিয়ে ভাবি না। যা চলে গেছে, সেটা ফিরে আসে না। আমি বর্তমানেই বাঁচি।’

কয়েক মৌসুম ধরে ঘরোয়া ক্রিকেটে নিজেকে গড়ে তুলেছেন। ধারাবাহিক রান করেছেন, শিখেছেন, নিজেকে ঢেলে সাজিয়েছেন। শ্রীলঙ্কায় ওয়ানডে সিরিজ খেলতে যাওয়ার আগে নাঈম আত্মবিশ্বাসী কণ্ঠে বলেন, ‘যখন অফ-ফর্মে ছিলাম, তখন নিজের দুর্বলতা নিয়ে কাজ করেছি। ফুটওয়ার্ক, শট সিলেকশন—সবকিছুতে উন্নতির চেষ্টা করেছি।’ দুই বছরে একটা উপলব্ধি হয়েছে তাঁর। নাঈম বললেন, ‘আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে টিকে থাকতে গেলে এখন শুধু স্কিল নয়, মানসিক দিক থেকেও শক্ত হতে হয়। আমি এখন নিজেকে আগের চেয়ে অনেক বেশি পরিণত ও আত্মবিশ্বাসী মনে করি।’

একসময়ে নাঈমকে তাঁর ফুটওয়ার্কের ঘাটতি নিয়ে কম সমালোচনা হয়নি। ফুটওয়ার্ক নিয়ে সেই সমালোচকদের যেন একহাতই নিলেন নাঈম, ‘যারা সমালোচনা করে, তারা করবেই। আমি এসব নিয়ে ভাবি না। আমি শেষ কয়েকটা লিগে অনেক রান করেছি। যদি পায়ের সমস্যা থাকত, তাহলে এত রান করা সম্ভব হতো না। কেউ যদি বলেন আমার পা নেই, তাহলে বলতেই হয়, পা না থাকাই ভালো! পায়ের ওপর ভর করেই এত রান করা যায়। সে পা থাকলেই কি, না থাকলেই কি!’

প্রায় দুই বছর জাতীয় দলের বাইরে থাকার সময় নাঈম শুধু খেলেই যাননি, নিজেকে ভেঙে গড়েছেন বারবার। নিজের পরিবর্তন নিয়ে নাঈম আরও খুলেই বললেন, ‘সমালোচনা আমি ইতিবাচকভাবে নিয়েছি। বিশ্ব ক্রিকেটের বড় তারকারাও তো এমন সময়ের ভেতর দিয়ে গিয়েছেন। আমি সেখান থেকে শিক্ষা নিয়েছি। আমি এখন এমন একটা জায়গায় পৌঁছেছি, যেখানে নেতিবাচক কিছু আমাকে আর প্রভাবিত করে না।’

নতুন এই শুরুতে নাঈম খেলতে যাচ্ছেন মেহেদী হাসান মিরাজের নেতৃত্বে। এর আগেও ঘরোয়া ক্রিকেটে মিরাজের অধীনে খেলেছেন নাঈম। অধিনায়ক মিরাজকে নিয়ে বাঁহাতি ওপেনার বললেন, ‘ঘরোয়া ক্রিকেটে মিরাজ ভাইয়ের নেতৃত্বে টি-টোয়েন্টি খেলেছি। এখন যদি আন্তর্জাতিক ম্যাচেও তাঁর অধীনে খেলার সুযোগ পাই, সেটা হবে অসাধারণ ব্যাপার। তিনি আমার খুব চেনা মানুষ। একজন ইতিবাচক মানসিকতার অধিনায়ক। আমি নিজেও পজিটিভ ভাবনা নিয়ে চলি, তাই তাঁর নেতৃত্বে খেলতে পারলে নিঃসন্দেহে উপভোগ করব।’

ঘরোয়া ক্রিকেটের রানের বন্যা বইয়ে দিয়েছেন কিন্তু আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ব্যর্থ, এই উদাহরণ দিতে এনামুল হক বিজয়ের নাম এখন সবার আগে আসবে। নাঈমও জাতীয় দলে ফিরেছেন ঘরোয়া ক্রিকেটে ধারাবাহিক ভালো খেলে। বিজয় ব্যর্থ হওয়ার পর নাঈমের এখন দেশে ঘরোয়া ক্রিকেটের পারফরম্যান্সের প্রতি আস্থা ফেরানোর তাড়া।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত