Ajker Patrika

চাঁদে পানি খুঁজছেন ইথিওপিয়ার বিজ্ঞানী 

আপডেট : ২৬ নভেম্বর ২০২২, ১৪: ৫৩
চাঁদে পানি খুঁজছেন ইথিওপিয়ার বিজ্ঞানী 

মার্কিন মহাকাশ গবেষণা প্রতিষ্ঠান নাসার ইথিওপিয়ান-মার্কিন গবেষণা প্রকৌশলী বেরহানু বুলচা চাঁদে পানি শনাক্তের প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করছেন। মানুষের চাঁদে বসতি গড়ার পরিকল্পনা সফল করার উদ্দেশ্যেই এই গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

গত সপ্তাহে নাসার রকেট আর্টেমিস-১ চাঁদের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করে। এই যাত্রা পুরোপুরি সফল হলে পরবর্তীতে মানুষসহ যাত্রা করবে নাসার রকেট। তবে পৃথিবীর বাইরে পানি কীভাবে পাওয়া যাবে তা নিয়ে আছে দুশ্চিন্তা। চাঁদে মানুষের ঘাঁটি গড়ার যে পরিকল্পনা নাসা নিয়েছে, তা পানি ছাড়া বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। 

পৃথিবী থেকে পানি বহন করে চাঁদে নিয়ে যাওয়া একটি সম্ভাব্য ব্যাপার। তবে এই পদ্ধতি অনেক ব্যয়বহুল ও বাস্তবতা বিবেচনায় অকার্যকর হবে। চাঁদে পানির ব্যবস্থা করা গেলে তা জ্বালানিতে রূপান্তর করে মহাকাশের গভীরে যাত্রা করা যাবে। এতে করে রকেটগুলোকে পৃথিবীর মহাকর্ষীয় টান উপেক্ষা করে পৃথিবী পার হতে যে পরিমাণ জ্বালানির প্রয়োজন হয়, সেটিও এড়ানো সম্ভব হবে।

বিবিসি জানিয়েছে, ড. বেরহানু ও তার গবেষণা দল হালকা ওজনের একটি বর্ণালি মাপকের প্রোটোটাইপ উন্নীত করছে। বর্ণালি মাপকটি চাঁদে পানি শনাক্তের কাজে ব্যবহার করা হবে। যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি শুরু করার পর থেকেই মহাকাশে ব্যবহারযোগ্য বিভিন্ন যন্ত্র উন্নীতকরণে কাজ করে যাচ্ছিলেন বেরহানু। চাঁদে পানি খোঁজাসহ নাসার বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যেই কাজ করে যাচ্ছেন তিনি।

চাঁদে পানির অস্তিত্ব সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া গেছে এর মধ্যেই। তবে আপাতত সমস্যা রয়েছে শনাক্তকরণ পদ্ধতিতে। প্রচলিত যেসব শনাক্তকরণ পদ্ধতি রয়েছে, তার বেশির ভাগ দিয়েই পানি এবং হাইড্রোক্সিলের মধ্যে পার্থক্য ধরা যায় না।

নাসা জানিয়েছে, বর্ণালি মাপক ডিভাইসটিকে কাজ করতে সাহায্য করবে একটি লেজার। লেজারটি নিয়েই বর্তমানে কাজ করছেন ড. বেরহানু। লেজারটি পানির দিকে একটি নির্দিষ্ট কম্পাঙ্কে আলোর কণা নির্গত করে, যার মাধ্যমে পানির অস্তিত্ব সম্বন্ধে নিশ্চিত হওয়া সম্ভব। ড. বেরহানুর গবেষক দলটি ‘কোয়ান্টাম ক্যাসকেড লেজার’ উন্নীতকরণের মাধ্যমে নির্দিষ্ট সেই কম্পাঙ্কে পৌঁছানোর চেষ্টা করছেন।

ড. বেরহানু এটিকে একটি অভূতপূর্ব প্রযুক্তিগত সাফল্য হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন। এই প্রযুক্তির মাধ্যমে হাতে ধরা যাবে এমন একটি ডিভাইস ব্যবহার করেই নভোচারীরা সহজেই পানির অবস্থান ও আয়তন উভয়ই খুঁজে পাবেন। ক্ষুদ্র যন্ত্রটি দূরবর্তী স্থান থেকে চালিত রোভারেও স্থাপন করা যাবে। আকারে ও ওজনে ক্ষুদ্র হওয়ায় যন্ত্রটি চন্দ্রাভিযানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

৩৮ বছর বয়সী এই বিজ্ঞানীর বেড়ে ওঠা ইথিওপিয়ার রাজধানী আদ্দিস আবাবা শহরে। উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা শেষ করে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়া কমনওয়েলথ বিশ্ববিদ্যালয়ে পদার্থবিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিষয়ে পড়তে যান। ড. বেরহানু বলেন, ‘আমি যখন যুক্তরাষ্ট্রে আসি, তখন আমার সবকিছু নিজেকেই করতে হতো। সহযোগিতার জন্য কাউকেই পাইনি তখন। পরিচিত এক সংস্কৃতি থেকে বের হয়ে সম্পূর্ণ নতুন এক সংস্কৃতির মধ্যে পড়েছিলাম। তবে প্রথম থেকেই আমার মাথায় ছিল পরিশ্রম করতে হবে এবং পড়াশোনায় সাফল্য আনতে হবে।’

নিজের দেশ ইথিওপিয়া ছেড়ে আসার সিদ্ধান্ত ঝুঁকিপূর্ণ ছিল বলে মানেন ড. বেরহানু। তবে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি নিয়ে কাজ এবং গবেষণার সুযোগকে ‘না’ করাও কঠিন বলে জানান এই বিজ্ঞানী। তিনি বলেন, ‘আমি সব সময় সবকিছু সৃষ্টির কারণ নিয়ে ভাবতাম। মহাবিশ্ব নিয়ে জানার আগ্রহ আমাকে তাড়িত করেছে। প্রবল আগ্রহ এবং প্রশ্নের উত্তর খোঁজার তাড়নার ফলেই আমি এত দূর আসতে পেরেছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘আমরা মরে গেলাম ঋণের দায়ে আর খাওয়ার অভাবে’, চিরকুটে লেখা

বাংলাদেশ শুল্কমুক্ত আমদানির ঘোষণা দিতেই ভারতে হু হু করে বাড়ছে চালের দাম

ফেসবুকে ছাত্রলীগ নেতার ‘হুমকি’, রাবিতে ১৫ আগস্টের কনসার্টে যাচ্ছে না আর্টসেল

জ্যেষ্ঠ সেনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্তে উচ্চপদস্থ বোর্ড গঠন: আইএসপিআর

পাবনায় প্রবাসীর স্ত্রীকে নিয়ে এএসআই উধাও, থানায় শ্বশুরের জিডি

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত