আজকের পত্রিকা ডেস্ক
মহাকাশ গবেষণা মাঝেমধ্যে এমন তথ্য সামনে এনে দেয়, যা বিজ্ঞানীদেরও চমকে দেয়। অনেকে ভাবেন, আমাদের সৌরজগৎ মানে কয়েকটি গ্রহ আর অনেক শূন্য জায়গা। তবে নতুন গবেষণা বলছে, আমরা এক গরম ও কম ঘনত্বের অঞ্চলে বাস করছি, যা আশপাশের নক্ষত্রদের সঙ্গে টানেলের জাল বা ‘মহাজাগতিক সুড়ঙ্গের’ মাধ্যমে যুক্ত।
এ গবেষণা করেছেন জার্মানির ম্যাক্স প্ল্যাঙ্ক ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানীরা। তাঁদের নেতৃত্বে ছিলেন গবেষক ড. এল এল সালা। গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে অ্যাস্ট্রোনমি ও অ্যাস্ট্রোফিজিকস জার্নালে।
বিজ্ঞানীরা বহু আগে অনুমান করেছিলেন যে আমাদের সৌরজগৎ এক অদ্ভুত অঞ্চলে অবস্থিত, যার নাম লোকাল হট বাবল (স্থানীয় গরম বুদবুদ)। প্রায় ৩০০ আলোকবর্ষ বিস্তৃত এই অঞ্চল তৈরি হয়েছে বহু প্রাচীন সুপারনোভা বিস্ফোরণের ফলে।
এ বিস্ফোরণগুলো চারপাশের গ্যাসকে উত্তপ্ত করে তুলেছিল। ফলে তৈরি হয়েছে কম ঘনত্বের তবে উচ্চ তাপমাত্রার এক এলাকা। এখনো তার ছাপ রয়ে গেছে গরম প্লাজমার আবছা অস্তিত্ব হিসেবে।
গবেষক ড. সালা বলেন, ‘আমরা দেখতে পাচ্ছি, এই অঞ্চলের তাপমাত্রায় উত্তর-দক্ষিণে ভিন্নতা রয়েছে।’
এ গরম অঞ্চলের বিশদ চিত্র পেতে বিজ্ঞানীরা ব্যবহার করেছেন ‘ইরোসিটা’ নামের এক্স-রে পর্যবেক্ষক যন্ত্র। এটি স্পেকট্রাম–রন্টজেন–গামা মিশনের অংশ।
এর মূল উদ্দেশ্য ছিল—মহাকাশে থাকা গরম গ্যাস, সুপারনোভা অবশিষ্টাংশ ও আমাদের চারপাশের গঠন বিশ্লেষণ করা।
জার্মান নেতৃত্বাধীন মহাকাশযান মিশন রোসাট (ROSAT) মিশনের তথ্যের সঙ্গে ইরোসিটার ডেটা মিলিয়ে গবেষকেরা আকাশকে হাজার হাজার ভাগে ভাগ করে সূক্ষ্ম বিশ্লেষণ চালান। এতে উঠে আসে গরম গ্যাস, ধুলামুক্ত ফাঁকা অঞ্চল ও বহু অদৃশ্য গঠন।
গবেষণায় সবচেয়ে আকর্ষণীয় যে বিষয়টি উঠে এসেছে, তা হলো—একধরনের মহাজাগতিক ‘সুড়ঙ্গ’ বা চ্যানেলের অস্তিত্ব। এ সুড়ঙ্গ সোজা চলে গেছে সেনচুরিয়াস নক্ষত্রপুঞ্জের দিকে। এটি গরম প্লাজমা দিয়ে গঠিত একটি কম ঘনত্বের অঞ্চল, যা গরম বুদবুদের ভেতর দিয়ে পথ কেটে এগিয়ে গেছে।
আরও একটি চ্যানেল ক্যানিস মেজর (Canis Major) অঞ্চলের দিকে গিয়েছে। বিজ্ঞানীদের ধারণা, এসব চ্যানেল আসলে আরও বড় শাখা বিন্যাসযুক্ত এক আন্তনাক্ষত্রিক নেটওয়ার্কের অংশ।
এসব পথ হয়তো একধরনের ‘ইন্টারস্টেলার ব্যাকরোড’ বা গোপন মহাজাগতিক রাস্তা, যেগুলো সুপারনোভা বিস্ফোরণের চাপে তৈরি হয়ে এখনো টিকে রয়েছে।
এ ধরনের আন্তনাক্ষত্রিক সুড়ঙ্গ বা ফাঁকা গ্যাসের পথ নিয়ে বিজ্ঞানীদের ধারণা নতুন নয়।
বহু দশক আগে থেকে কিছু গবেষক বলেছিলেন, মহাকাশে অনেক সংযুক্ত গহ্বর থাকতে পারে। তবে তথ্যের ঘাটতিতে তা প্রমাণ করা যায়নি। ইরোসিটার তথ্য সে পুরোনো তত্ত্বের অন্তত একটি অংশকে বাস্তব প্রমাণ দিয়েছে।
গরম গ্যাসে ভরা ধুলামুক্ত ফাঁকা অঞ্চলগুলোর উপস্থিতি নিশ্চিত করছে যে, প্রাচীন সুপারনোভাগুলোর কারণে আন্তনাক্ষত্রিক পদার্থ এক বিশেষ বিন্যাসে গঠিত হয়েছে।
অনেকের মনে হতে পারে, মহাকাশ শুধু ফাঁকা জায়গা। তবে বাস্তবে তা নয়। তারাগুলোর মাঝের এই শূন্য জায়গাতেও থাকে গ্যাস, ধূলিকণা, প্লাজমা ও চৌম্বকক্ষেত্র। লোকাল হট বাবল তারই এক নিদর্শন, যেখানে সুপারনোভা বিস্ফোরণ গ্যাসকে উত্তপ্ত করে এক বিশেষ পরিবেশ তৈরি করেছে। গবেষকেরা এ গরম এলাকার মানচিত্র তৈরি করেছেন, তবে সব অংশ এখনো স্পষ্ট নয়। কোনো কোনো দিক খোলা, আবার কোনো কোনো দিকে বন্ধ বলে মনে হয়। এ জটিলতা বুঝতে আরও উন্নত যন্ত্র ও বিশ্লেষণের প্রয়োজন।
ভবিষ্যতে এ মহাজাগতিক মানচিত্রের আরও বিস্তারিত অংশ উন্মোচন করতে পারবেন বলে আশা করছেন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা। এ সুড়ঙ্গগুলো স্থানীয় মহাজাগতিক রশ্মি, ধূলিকণার প্রবাহপথ ও নাক্ষত্রিক বায়ুর গতিশীলতার ওপর কীভাবে প্রভাব ফেলছে, তা-ও ব্যাখ্যা করতে পারবেন তাঁরা।
আমাদের সৌরজগৎ কয়েক মিলিয়ন বছর আগে এ গরম বুদবুদের ভেতরে প্রবেশ করেছে। এর আগেও আশপাশে সুপারনোভা বিস্ফোরণ ঘটেছে।
আমাদের সূর্য বর্তমানে এ বুদবুদের কেন্দ্রে রয়েছে—এটা নিছকই কাকতালীয়। যেন বহু প্রাচীন এক মহাজাগতিক ঘটনার পরিণতি দেখার জন্য আমরা এখন এখানে উপস্থিত।
এ সুড়ঙ্গগুলোর রহস্য আরও ভালোভাবে বুঝতে হলে প্রয়োজন আরও সংবেদনশীল যন্ত্র, উন্নত এক্স-রে মিশন ও সূক্ষ্ম বিশ্লেষণ। ভবিষ্যতে এগুলোর মাধ্যমে আমরা জানতে পারব, কীভাবে এ গঠনগুলো তৈরি হয়েছে এবং তারা কীভাবে আজও প্রভাব ফেলছে মহাকাশের গ্যাসপ্রবাহ, কসমিক রশ্মি ও নাক্ষত্রিক বায়ুর গতিবিধিতে।
তথ্যসূত্র: আর্থ ডট কম
মহাকাশ গবেষণা মাঝেমধ্যে এমন তথ্য সামনে এনে দেয়, যা বিজ্ঞানীদেরও চমকে দেয়। অনেকে ভাবেন, আমাদের সৌরজগৎ মানে কয়েকটি গ্রহ আর অনেক শূন্য জায়গা। তবে নতুন গবেষণা বলছে, আমরা এক গরম ও কম ঘনত্বের অঞ্চলে বাস করছি, যা আশপাশের নক্ষত্রদের সঙ্গে টানেলের জাল বা ‘মহাজাগতিক সুড়ঙ্গের’ মাধ্যমে যুক্ত।
এ গবেষণা করেছেন জার্মানির ম্যাক্স প্ল্যাঙ্ক ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানীরা। তাঁদের নেতৃত্বে ছিলেন গবেষক ড. এল এল সালা। গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে অ্যাস্ট্রোনমি ও অ্যাস্ট্রোফিজিকস জার্নালে।
বিজ্ঞানীরা বহু আগে অনুমান করেছিলেন যে আমাদের সৌরজগৎ এক অদ্ভুত অঞ্চলে অবস্থিত, যার নাম লোকাল হট বাবল (স্থানীয় গরম বুদবুদ)। প্রায় ৩০০ আলোকবর্ষ বিস্তৃত এই অঞ্চল তৈরি হয়েছে বহু প্রাচীন সুপারনোভা বিস্ফোরণের ফলে।
এ বিস্ফোরণগুলো চারপাশের গ্যাসকে উত্তপ্ত করে তুলেছিল। ফলে তৈরি হয়েছে কম ঘনত্বের তবে উচ্চ তাপমাত্রার এক এলাকা। এখনো তার ছাপ রয়ে গেছে গরম প্লাজমার আবছা অস্তিত্ব হিসেবে।
গবেষক ড. সালা বলেন, ‘আমরা দেখতে পাচ্ছি, এই অঞ্চলের তাপমাত্রায় উত্তর-দক্ষিণে ভিন্নতা রয়েছে।’
এ গরম অঞ্চলের বিশদ চিত্র পেতে বিজ্ঞানীরা ব্যবহার করেছেন ‘ইরোসিটা’ নামের এক্স-রে পর্যবেক্ষক যন্ত্র। এটি স্পেকট্রাম–রন্টজেন–গামা মিশনের অংশ।
এর মূল উদ্দেশ্য ছিল—মহাকাশে থাকা গরম গ্যাস, সুপারনোভা অবশিষ্টাংশ ও আমাদের চারপাশের গঠন বিশ্লেষণ করা।
জার্মান নেতৃত্বাধীন মহাকাশযান মিশন রোসাট (ROSAT) মিশনের তথ্যের সঙ্গে ইরোসিটার ডেটা মিলিয়ে গবেষকেরা আকাশকে হাজার হাজার ভাগে ভাগ করে সূক্ষ্ম বিশ্লেষণ চালান। এতে উঠে আসে গরম গ্যাস, ধুলামুক্ত ফাঁকা অঞ্চল ও বহু অদৃশ্য গঠন।
গবেষণায় সবচেয়ে আকর্ষণীয় যে বিষয়টি উঠে এসেছে, তা হলো—একধরনের মহাজাগতিক ‘সুড়ঙ্গ’ বা চ্যানেলের অস্তিত্ব। এ সুড়ঙ্গ সোজা চলে গেছে সেনচুরিয়াস নক্ষত্রপুঞ্জের দিকে। এটি গরম প্লাজমা দিয়ে গঠিত একটি কম ঘনত্বের অঞ্চল, যা গরম বুদবুদের ভেতর দিয়ে পথ কেটে এগিয়ে গেছে।
আরও একটি চ্যানেল ক্যানিস মেজর (Canis Major) অঞ্চলের দিকে গিয়েছে। বিজ্ঞানীদের ধারণা, এসব চ্যানেল আসলে আরও বড় শাখা বিন্যাসযুক্ত এক আন্তনাক্ষত্রিক নেটওয়ার্কের অংশ।
এসব পথ হয়তো একধরনের ‘ইন্টারস্টেলার ব্যাকরোড’ বা গোপন মহাজাগতিক রাস্তা, যেগুলো সুপারনোভা বিস্ফোরণের চাপে তৈরি হয়ে এখনো টিকে রয়েছে।
এ ধরনের আন্তনাক্ষত্রিক সুড়ঙ্গ বা ফাঁকা গ্যাসের পথ নিয়ে বিজ্ঞানীদের ধারণা নতুন নয়।
বহু দশক আগে থেকে কিছু গবেষক বলেছিলেন, মহাকাশে অনেক সংযুক্ত গহ্বর থাকতে পারে। তবে তথ্যের ঘাটতিতে তা প্রমাণ করা যায়নি। ইরোসিটার তথ্য সে পুরোনো তত্ত্বের অন্তত একটি অংশকে বাস্তব প্রমাণ দিয়েছে।
গরম গ্যাসে ভরা ধুলামুক্ত ফাঁকা অঞ্চলগুলোর উপস্থিতি নিশ্চিত করছে যে, প্রাচীন সুপারনোভাগুলোর কারণে আন্তনাক্ষত্রিক পদার্থ এক বিশেষ বিন্যাসে গঠিত হয়েছে।
অনেকের মনে হতে পারে, মহাকাশ শুধু ফাঁকা জায়গা। তবে বাস্তবে তা নয়। তারাগুলোর মাঝের এই শূন্য জায়গাতেও থাকে গ্যাস, ধূলিকণা, প্লাজমা ও চৌম্বকক্ষেত্র। লোকাল হট বাবল তারই এক নিদর্শন, যেখানে সুপারনোভা বিস্ফোরণ গ্যাসকে উত্তপ্ত করে এক বিশেষ পরিবেশ তৈরি করেছে। গবেষকেরা এ গরম এলাকার মানচিত্র তৈরি করেছেন, তবে সব অংশ এখনো স্পষ্ট নয়। কোনো কোনো দিক খোলা, আবার কোনো কোনো দিকে বন্ধ বলে মনে হয়। এ জটিলতা বুঝতে আরও উন্নত যন্ত্র ও বিশ্লেষণের প্রয়োজন।
ভবিষ্যতে এ মহাজাগতিক মানচিত্রের আরও বিস্তারিত অংশ উন্মোচন করতে পারবেন বলে আশা করছেন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা। এ সুড়ঙ্গগুলো স্থানীয় মহাজাগতিক রশ্মি, ধূলিকণার প্রবাহপথ ও নাক্ষত্রিক বায়ুর গতিশীলতার ওপর কীভাবে প্রভাব ফেলছে, তা-ও ব্যাখ্যা করতে পারবেন তাঁরা।
আমাদের সৌরজগৎ কয়েক মিলিয়ন বছর আগে এ গরম বুদবুদের ভেতরে প্রবেশ করেছে। এর আগেও আশপাশে সুপারনোভা বিস্ফোরণ ঘটেছে।
আমাদের সূর্য বর্তমানে এ বুদবুদের কেন্দ্রে রয়েছে—এটা নিছকই কাকতালীয়। যেন বহু প্রাচীন এক মহাজাগতিক ঘটনার পরিণতি দেখার জন্য আমরা এখন এখানে উপস্থিত।
এ সুড়ঙ্গগুলোর রহস্য আরও ভালোভাবে বুঝতে হলে প্রয়োজন আরও সংবেদনশীল যন্ত্র, উন্নত এক্স-রে মিশন ও সূক্ষ্ম বিশ্লেষণ। ভবিষ্যতে এগুলোর মাধ্যমে আমরা জানতে পারব, কীভাবে এ গঠনগুলো তৈরি হয়েছে এবং তারা কীভাবে আজও প্রভাব ফেলছে মহাকাশের গ্যাসপ্রবাহ, কসমিক রশ্মি ও নাক্ষত্রিক বায়ুর গতিবিধিতে।
তথ্যসূত্র: আর্থ ডট কম
নক্ষত্রের অভ্যন্তরীণ গঠন আসলে কেমন হয় তা নিয়ে বিজ্ঞানীদের আগ্রহের কমতি নেয়। তাদের এই বিষয় নিয়ে বিভিন্ন মত রয়েছে। তবে এবার এক সুপারনোভার বিস্ফোরণ পর্যবেক্ষণ করে বিজ্ঞানীরা আসলেই জানতে পারলেন একটি বিশাল তারার অন্তর্গঠন।
৩ ঘণ্টা আগেসৌরজগতের সপ্তম গ্রহ ইউরেনাসের চারপাশে এক নতুন চাঁদ আবিষ্কৃত হয়েছে। তবে এটি এতটাই ছোট যে, এক ব্যক্তি দুই ঘণ্টার মধ্যে এর পুরো পরিধি হাঁটতে পারবেন।
১ দিন আগেইথিওপিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলে দীর্ঘদিনের প্রত্নতাত্ত্বিক অনুসন্ধানে পাওয়া কিছু দাঁতের জীবাশ্ম মানব বিবর্তন নিয়ে নতুন রহস্য উন্মোচন করেছে। গবেষকেরা জানিয়েছেন, প্রায় ২৬ থেকে ২৮ লাখ বছর আগে একই এলাকায় অন্তত দুই ধরনের হোমিনিন বা মানব পূর্বপুরুষ বসবাস করত।
৪ দিন আগেদৈনন্দিন জীবনযাত্রায় প্রযুক্তির নিখুঁত ও অভিনব সংমিশ্রণ দেখা যায় জাপানে। এখানে রেস্তোরাঁয় কলা ছেলা কিংবা আলু ভাজার মতো একঘেয়ে কাজ করছে রোবট, শহরের বুক চিরে ঘণ্টায় ২০০ মাইল গতিতে ছুটে চলেছে বুলেট ট্রেন। এমনকি টয়লেটেও বসেই মিলছে রক্তচাপ ও প্রস্রাবে প্রোটিনের পরিমাণ মাপার সুবিধা!
৪ দিন আগে