
পদার্থবিজ্ঞানে ২০২৪ সালের নোবেল পুরস্কার ঘোষণা হবে আজ। যেকোনো ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ যেসব গবেষণা বা আবিষ্কার নোবেল পায়নি, সেগুলো মোটামুটি প্রতিবারই সম্ভাব্য বিজয়ী হিসেবে আলোচিত হয়। তাই পদার্থবিজ্ঞানের গত বছরের তালিকার প্রায় সবাই আছেন আলোচনায়।
পদার্থবিজ্ঞানের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ পুরস্কার, যেমন উলফ প্রাইজ, ব্রেকথ্রু প্রাইজ, ডিরাক মেডেল, নিউটন মেডেল ইত্যাদি পুরস্কারও ভবিষ্যৎ নোবেল বিজয়ী হওয়ার ভালো পূর্বাভাস দেয়। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, ১৯৭৮ থেকে ২০১০ সালের মধ্যে দেওয়া ২৬টি উলফ প্রাইজ বিজয়ীর ১৪ জনই পরে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন। আবার গবেষণাপত্রের সাইটেশন, এইচ-ইনডেক্স ইত্যাদিও কোন গবেষণাটি গুরুত্বপূর্ণ, তা বোঝার আরেকটি ভালো উপায়। তবে অনেক বছর দেখা যায়, আলোচনার বাইরে কোনো একটা পুরাতন গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কারকে নোবেল দেওয়া হয়েছে।
দুয়েক বছর বাদে একবার মহাবিশ্ব (জ্যোতির্বিজ্ঞান/কণা পদার্থবিজ্ঞান) তো অন্যবার আলো ও পদার্থ (লাইট-ম্যাটার)—এভাবে পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। এই প্রবণতার বাইরে গিয়ে বহু বছর পরে ২০২১ সালে স্ট্যাটিস্টিক্যাল ফিজিকস বা পরিসংখ্যানগত পদার্থবিজ্ঞান থেকে নোবেল দেওয়া হয়েছিল। ২০২২ ও ২০২৩ সালে আবার যথাক্রমে কোয়ান্টাম মেকানিকস ও আলোকতত্ত্বের ওপর নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয়েছে।
বার্তা সংস্থা এএফপি বলছে, এবার ‘ইনভিজিবিলিটি ক্লোক’, পরমাণু শক্তির মাইক্রোস্কোপ বা কোয়ান্টাম কম্পিউটিং—এ ধরনের কিছু বৈজ্ঞানিক সাফল্য থেকে এবার পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার বিজয়ী বেছে নেওয়া হতে পারে৷
ইসরায়েলি-ব্রিটিশ পদার্থবিদ ডেভিড ডয়েচ, অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এবং আমেরিকান গণিতবিদ পিটার শোর এ বছর সবচেয়ে বেশি আলোচিত।
নোবেল পুরস্কার পর্যবেক্ষক প্রতিষ্ঠান অ্যানালিটিক্স গ্রুপ ক্ল্যারিভেটের প্রধান ডেভিড পেন্ডলবেরি বলেন, ‘কোয়ান্টাম অ্যালগরিদম’ ও ‘কোয়ান্টাম কম্পিউটিং’য়ের ক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের জন্য এই দুজনকে এবার নোবেল দেওয়া হতে পারে। এ দুই গবেষকের গবেষণাগত্র সর্বাধিক সাইটেশন বা উদ্ধৃতি পেয়েছে বলে জানান পেন্ডলবেরি।
কোয়ান্টাম কম্পিউটিং
গত দশক ও সামনের কয়েক দশকের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রযুক্তিগত আবিষ্কার হতে যাচ্ছে কোয়ান্টাম কম্পিউটার। মার্কিন বিজ্ঞানী চার্লস বেনেট ও কানাডিয়ান বিজ্ঞানী জিলে ব্রাসা মিলে আবিষ্কার করেন কোয়ান্টাম ক্রিপ্টোগ্রাফির বিবিএইটিফোর (BB84) প্রোটোকল। দুজন মিলে ২০১৮ সালে পেয়েছেন উলফ প্রাইজ। ২০১৭ সালে বেনেট পান ডিরাক মেডেল, যাতে তাঁর সঙ্গী ছিলেন মার্কিন গণিতবিদ পিটার শর ও ব্রিটিশ পদার্থবিদ ডেভিড ডয়েচ। পিটার শর তাঁর শর অ্যালগোরিদমের জন্য বিখ্যাত, যা ব্যবহার করে কোয়ান্টাম কম্পিউটার সাধারণ কম্পিউটারের চেয়ে অনেক অনেক গুণ দ্রুত ক্রিপ্টোগ্রাফি ভাঙতে পারে। ডেভিড ডয়েচ কোয়ান্টাম ট্যুরিং মেশিন ও বেল ইনেকুয়ালিটি নিয়ে কাজ করেছেন। এই চারজন একসঙ্গে পেয়েছেন ২০২৩ সালের ফান্ডামেন্টাল ফিজিকস ব্রেকথ্রু প্রাইজ। এই চারজনের মধ্যে দুই বা তিনজনকে একসঙ্গে নোবেল পুরস্কার পেতে দেখা যেতে পারে (সর্বোচ্চ তিনজনকে নোবেল পুরস্কার ভাগ করে দেওয়া হয়)।
এদের বাইরে কোয়ান্টাম কম্পিউটিংয়ের প্র্যাক্টিক্যাল বা ব্যবহারিক দিক নিয়ে চিন্তা করলে স্প্যানিশ বিজ্ঞানী ইগ্নাসিও সিরাক ও অস্ট্রিয়ান তাত্ত্বিক পদার্থবিদ পিটার জোলারকে যুগ্মভাবে বিবেচনা করা হতে পারে। তাঁরা যৌথভাবে আয়ন, কোল্ড অ্যাটম সিস্টেম ব্যবহার করে কোয়ান্টাম কম্পিউটার ও সিমুলেটর তৈরির তত্ত্ব ও এক্সপেরিমেন্ট বা পরীক্ষণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। এঁরা দুজন যৌথভাবে ২০১৩ সালে উলফ প্রাইজ পেয়েছিলেন। পাশাপাশি জোলার ডিরাক মেডেলও পেয়েছেন।
কোয়ান্টাম মেকানিকস
কোয়ান্টাম মেকানিকসের মৌলিক দুটি বিষয় হলো আহারোনভ-বোহম ইফেক্ট এবং বেরি ফেইজ। ইলেকট্রিক ও ম্যাগনেটিক, অর্থাৎ তড়িৎ ও চৌম্বক—দুই ফিল্ড বা ক্ষেত্রই যদি শূন্য হয়, তবে ক্লাসিক্যাল ফিজিকস বা চিরায়ত বলবিদ্যা বলে যে চার্জিত কণার ওপর কোনো প্রভাব পড়বে না। কিন্তু কোয়ান্টাম মেকানিকস বলে, যদি ইলেকট্রোম্যাগনেটিক পটেনশিয়াল বা তড়িৎ-চৌম্বক বিভব শূন্য না হয়, তবে ওই পটেনশিয়ালের সঙ্গে চার্জিত কণার ওয়েভ ফাংশন কাপলিংয়ের মাধ্যমে কণার ওপর প্রভাব দেখা যাবে—আর পরীক্ষায় তা-ই প্রমাণিত হয়।
এই এক্সপেরিমেন্টের সঙ্গে যুক্ত আরও মৌলিক একটি বিষয় হলো জিওমেট্রিক ফেজ। পঞ্চাশের দশকেই এ বিষয়ে গবেষণাপত্র থাকলেও (পঞ্চরত্নম, লংগুয়ে-হিগিন্স) মাইকেল বেরি ১৯৮৪ সালে এই ধারণাকে সাধারণ গাণিতিক রূপ দেন এবং বেরি ফেইজ হিসেবেই বিষয়টি পরিচিত হয়। এ দুই আবিষ্কারের সঙ্গে যুক্ত বাকিরা মারা গেছেন। আহারোনভ ও বেরি ১৯৯৮ সালে একসঙ্গে উলফ প্রাইজও পেয়েছিলেন এবং অনেক বছর ধরেই নোবেল পুরস্কারের ফেভারিটের তালিকায় ছিলেন। এরকম অনেক বছর ধরে নোবেল না পাওয়া বেল ইনেকুয়ালিটির প্রমাণ অবশেষে ২০২২ সালে এসে স্বীকৃতি পায়। তাই এ বছর আহারোনভ ও বেরিকে নিয়ে আশাবাদী হওয়া যায়।
টুইস্টেড বাইলেয়ার গ্রাফিন
একুশ শতকের সবচেয়ে চমকপ্রদ আবিষ্কারগুলোর একটি গ্রাফিন। ২০০৪ সালে আন্দ্রে গাইম ও কন্সট্যানটিন নোভোসেলোভ মাত্র এক স্তরের গ্রাফিন খুব সহজে এবং প্রথমবারের মতো আলাদা করতে সক্ষম হন, যা তাঁদের এনে দেয় ২০১০ সালের নোবেল পুরস্কার। এর পর থেকে গ্রাফিন নিয়ে সারা বিশ্বে গবেষণার জোয়ার চলছে। ২০১১ সালে অ্যালান ম্যাকডোনাল্ড ও রাফি বিস্ট্রিজার তাত্ত্বিক মডেলের মাধ্যমে দেখান, দুই স্তর বিশিষ্ট গ্রাফিন ঠিকভাবে একটার ওপর একটা না রেখে বিশেষ একটি কোণে (মোটামুটি ১ ডিগ্রির মতো) রাখলে ইলেকট্রনের এই দুই স্তরের মাঝে টানেলিং করে চলার জন্য প্রয়োজনীয় শক্তি খুব দ্রুত পরিবর্তন হয়ে যায়।
২০১৮ সালে পাবলো জারিয়ো-হেরেরো এই ভবিষ্যদ্বাণীর পরীক্ষালব্ধ প্রমাণ দেন। তিনি দেখান, ১.১ ডিগ্রিতে ইলেকট্রন খুব সহজে দুই স্তরে চলাচল করতে পারে এবং সুপারকন্ডাক্টিভিটি প্রদর্শন করে। এই তিনজন মিলে ২০২০ সালে উলফ প্রাইজও পেয়েছেন। ২০২৪ সালে ক্লারিভেট ইনস্টিটিউট সাইটেশনের ভিত্তিতে তাঁদের নোবেল পুরস্কারের জন্য ফেভারিটের তালিকায় রেখেছে।

পদার্থবিজ্ঞানে ২০২৪ সালের নোবেল পুরস্কার ঘোষণা হবে আজ। যেকোনো ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ যেসব গবেষণা বা আবিষ্কার নোবেল পায়নি, সেগুলো মোটামুটি প্রতিবারই সম্ভাব্য বিজয়ী হিসেবে আলোচিত হয়। তাই পদার্থবিজ্ঞানের গত বছরের তালিকার প্রায় সবাই আছেন আলোচনায়।
পদার্থবিজ্ঞানের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ পুরস্কার, যেমন উলফ প্রাইজ, ব্রেকথ্রু প্রাইজ, ডিরাক মেডেল, নিউটন মেডেল ইত্যাদি পুরস্কারও ভবিষ্যৎ নোবেল বিজয়ী হওয়ার ভালো পূর্বাভাস দেয়। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, ১৯৭৮ থেকে ২০১০ সালের মধ্যে দেওয়া ২৬টি উলফ প্রাইজ বিজয়ীর ১৪ জনই পরে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন। আবার গবেষণাপত্রের সাইটেশন, এইচ-ইনডেক্স ইত্যাদিও কোন গবেষণাটি গুরুত্বপূর্ণ, তা বোঝার আরেকটি ভালো উপায়। তবে অনেক বছর দেখা যায়, আলোচনার বাইরে কোনো একটা পুরাতন গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কারকে নোবেল দেওয়া হয়েছে।
দুয়েক বছর বাদে একবার মহাবিশ্ব (জ্যোতির্বিজ্ঞান/কণা পদার্থবিজ্ঞান) তো অন্যবার আলো ও পদার্থ (লাইট-ম্যাটার)—এভাবে পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। এই প্রবণতার বাইরে গিয়ে বহু বছর পরে ২০২১ সালে স্ট্যাটিস্টিক্যাল ফিজিকস বা পরিসংখ্যানগত পদার্থবিজ্ঞান থেকে নোবেল দেওয়া হয়েছিল। ২০২২ ও ২০২৩ সালে আবার যথাক্রমে কোয়ান্টাম মেকানিকস ও আলোকতত্ত্বের ওপর নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয়েছে।
বার্তা সংস্থা এএফপি বলছে, এবার ‘ইনভিজিবিলিটি ক্লোক’, পরমাণু শক্তির মাইক্রোস্কোপ বা কোয়ান্টাম কম্পিউটিং—এ ধরনের কিছু বৈজ্ঞানিক সাফল্য থেকে এবার পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার বিজয়ী বেছে নেওয়া হতে পারে৷
ইসরায়েলি-ব্রিটিশ পদার্থবিদ ডেভিড ডয়েচ, অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এবং আমেরিকান গণিতবিদ পিটার শোর এ বছর সবচেয়ে বেশি আলোচিত।
নোবেল পুরস্কার পর্যবেক্ষক প্রতিষ্ঠান অ্যানালিটিক্স গ্রুপ ক্ল্যারিভেটের প্রধান ডেভিড পেন্ডলবেরি বলেন, ‘কোয়ান্টাম অ্যালগরিদম’ ও ‘কোয়ান্টাম কম্পিউটিং’য়ের ক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের জন্য এই দুজনকে এবার নোবেল দেওয়া হতে পারে। এ দুই গবেষকের গবেষণাগত্র সর্বাধিক সাইটেশন বা উদ্ধৃতি পেয়েছে বলে জানান পেন্ডলবেরি।
কোয়ান্টাম কম্পিউটিং
গত দশক ও সামনের কয়েক দশকের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রযুক্তিগত আবিষ্কার হতে যাচ্ছে কোয়ান্টাম কম্পিউটার। মার্কিন বিজ্ঞানী চার্লস বেনেট ও কানাডিয়ান বিজ্ঞানী জিলে ব্রাসা মিলে আবিষ্কার করেন কোয়ান্টাম ক্রিপ্টোগ্রাফির বিবিএইটিফোর (BB84) প্রোটোকল। দুজন মিলে ২০১৮ সালে পেয়েছেন উলফ প্রাইজ। ২০১৭ সালে বেনেট পান ডিরাক মেডেল, যাতে তাঁর সঙ্গী ছিলেন মার্কিন গণিতবিদ পিটার শর ও ব্রিটিশ পদার্থবিদ ডেভিড ডয়েচ। পিটার শর তাঁর শর অ্যালগোরিদমের জন্য বিখ্যাত, যা ব্যবহার করে কোয়ান্টাম কম্পিউটার সাধারণ কম্পিউটারের চেয়ে অনেক অনেক গুণ দ্রুত ক্রিপ্টোগ্রাফি ভাঙতে পারে। ডেভিড ডয়েচ কোয়ান্টাম ট্যুরিং মেশিন ও বেল ইনেকুয়ালিটি নিয়ে কাজ করেছেন। এই চারজন একসঙ্গে পেয়েছেন ২০২৩ সালের ফান্ডামেন্টাল ফিজিকস ব্রেকথ্রু প্রাইজ। এই চারজনের মধ্যে দুই বা তিনজনকে একসঙ্গে নোবেল পুরস্কার পেতে দেখা যেতে পারে (সর্বোচ্চ তিনজনকে নোবেল পুরস্কার ভাগ করে দেওয়া হয়)।
এদের বাইরে কোয়ান্টাম কম্পিউটিংয়ের প্র্যাক্টিক্যাল বা ব্যবহারিক দিক নিয়ে চিন্তা করলে স্প্যানিশ বিজ্ঞানী ইগ্নাসিও সিরাক ও অস্ট্রিয়ান তাত্ত্বিক পদার্থবিদ পিটার জোলারকে যুগ্মভাবে বিবেচনা করা হতে পারে। তাঁরা যৌথভাবে আয়ন, কোল্ড অ্যাটম সিস্টেম ব্যবহার করে কোয়ান্টাম কম্পিউটার ও সিমুলেটর তৈরির তত্ত্ব ও এক্সপেরিমেন্ট বা পরীক্ষণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। এঁরা দুজন যৌথভাবে ২০১৩ সালে উলফ প্রাইজ পেয়েছিলেন। পাশাপাশি জোলার ডিরাক মেডেলও পেয়েছেন।
কোয়ান্টাম মেকানিকস
কোয়ান্টাম মেকানিকসের মৌলিক দুটি বিষয় হলো আহারোনভ-বোহম ইফেক্ট এবং বেরি ফেইজ। ইলেকট্রিক ও ম্যাগনেটিক, অর্থাৎ তড়িৎ ও চৌম্বক—দুই ফিল্ড বা ক্ষেত্রই যদি শূন্য হয়, তবে ক্লাসিক্যাল ফিজিকস বা চিরায়ত বলবিদ্যা বলে যে চার্জিত কণার ওপর কোনো প্রভাব পড়বে না। কিন্তু কোয়ান্টাম মেকানিকস বলে, যদি ইলেকট্রোম্যাগনেটিক পটেনশিয়াল বা তড়িৎ-চৌম্বক বিভব শূন্য না হয়, তবে ওই পটেনশিয়ালের সঙ্গে চার্জিত কণার ওয়েভ ফাংশন কাপলিংয়ের মাধ্যমে কণার ওপর প্রভাব দেখা যাবে—আর পরীক্ষায় তা-ই প্রমাণিত হয়।
এই এক্সপেরিমেন্টের সঙ্গে যুক্ত আরও মৌলিক একটি বিষয় হলো জিওমেট্রিক ফেজ। পঞ্চাশের দশকেই এ বিষয়ে গবেষণাপত্র থাকলেও (পঞ্চরত্নম, লংগুয়ে-হিগিন্স) মাইকেল বেরি ১৯৮৪ সালে এই ধারণাকে সাধারণ গাণিতিক রূপ দেন এবং বেরি ফেইজ হিসেবেই বিষয়টি পরিচিত হয়। এ দুই আবিষ্কারের সঙ্গে যুক্ত বাকিরা মারা গেছেন। আহারোনভ ও বেরি ১৯৯৮ সালে একসঙ্গে উলফ প্রাইজও পেয়েছিলেন এবং অনেক বছর ধরেই নোবেল পুরস্কারের ফেভারিটের তালিকায় ছিলেন। এরকম অনেক বছর ধরে নোবেল না পাওয়া বেল ইনেকুয়ালিটির প্রমাণ অবশেষে ২০২২ সালে এসে স্বীকৃতি পায়। তাই এ বছর আহারোনভ ও বেরিকে নিয়ে আশাবাদী হওয়া যায়।
টুইস্টেড বাইলেয়ার গ্রাফিন
একুশ শতকের সবচেয়ে চমকপ্রদ আবিষ্কারগুলোর একটি গ্রাফিন। ২০০৪ সালে আন্দ্রে গাইম ও কন্সট্যানটিন নোভোসেলোভ মাত্র এক স্তরের গ্রাফিন খুব সহজে এবং প্রথমবারের মতো আলাদা করতে সক্ষম হন, যা তাঁদের এনে দেয় ২০১০ সালের নোবেল পুরস্কার। এর পর থেকে গ্রাফিন নিয়ে সারা বিশ্বে গবেষণার জোয়ার চলছে। ২০১১ সালে অ্যালান ম্যাকডোনাল্ড ও রাফি বিস্ট্রিজার তাত্ত্বিক মডেলের মাধ্যমে দেখান, দুই স্তর বিশিষ্ট গ্রাফিন ঠিকভাবে একটার ওপর একটা না রেখে বিশেষ একটি কোণে (মোটামুটি ১ ডিগ্রির মতো) রাখলে ইলেকট্রনের এই দুই স্তরের মাঝে টানেলিং করে চলার জন্য প্রয়োজনীয় শক্তি খুব দ্রুত পরিবর্তন হয়ে যায়।
২০১৮ সালে পাবলো জারিয়ো-হেরেরো এই ভবিষ্যদ্বাণীর পরীক্ষালব্ধ প্রমাণ দেন। তিনি দেখান, ১.১ ডিগ্রিতে ইলেকট্রন খুব সহজে দুই স্তরে চলাচল করতে পারে এবং সুপারকন্ডাক্টিভিটি প্রদর্শন করে। এই তিনজন মিলে ২০২০ সালে উলফ প্রাইজও পেয়েছেন। ২০২৪ সালে ক্লারিভেট ইনস্টিটিউট সাইটেশনের ভিত্তিতে তাঁদের নোবেল পুরস্কারের জন্য ফেভারিটের তালিকায় রেখেছে।

পদার্থবিজ্ঞানে ২০২৪ সালের নোবেল পুরস্কার ঘোষণা হবে আজ। যেকোনো ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ যেসব গবেষণা বা আবিষ্কার নোবেল পায়নি, সেগুলো মোটামুটি প্রতিবারই সম্ভাব্য বিজয়ী হিসেবে আলোচিত হয়। তাই পদার্থবিজ্ঞানের গত বছরের তালিকার প্রায় সবাই আছেন আলোচনায়।
পদার্থবিজ্ঞানের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ পুরস্কার, যেমন উলফ প্রাইজ, ব্রেকথ্রু প্রাইজ, ডিরাক মেডেল, নিউটন মেডেল ইত্যাদি পুরস্কারও ভবিষ্যৎ নোবেল বিজয়ী হওয়ার ভালো পূর্বাভাস দেয়। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, ১৯৭৮ থেকে ২০১০ সালের মধ্যে দেওয়া ২৬টি উলফ প্রাইজ বিজয়ীর ১৪ জনই পরে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন। আবার গবেষণাপত্রের সাইটেশন, এইচ-ইনডেক্স ইত্যাদিও কোন গবেষণাটি গুরুত্বপূর্ণ, তা বোঝার আরেকটি ভালো উপায়। তবে অনেক বছর দেখা যায়, আলোচনার বাইরে কোনো একটা পুরাতন গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কারকে নোবেল দেওয়া হয়েছে।
দুয়েক বছর বাদে একবার মহাবিশ্ব (জ্যোতির্বিজ্ঞান/কণা পদার্থবিজ্ঞান) তো অন্যবার আলো ও পদার্থ (লাইট-ম্যাটার)—এভাবে পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। এই প্রবণতার বাইরে গিয়ে বহু বছর পরে ২০২১ সালে স্ট্যাটিস্টিক্যাল ফিজিকস বা পরিসংখ্যানগত পদার্থবিজ্ঞান থেকে নোবেল দেওয়া হয়েছিল। ২০২২ ও ২০২৩ সালে আবার যথাক্রমে কোয়ান্টাম মেকানিকস ও আলোকতত্ত্বের ওপর নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয়েছে।
বার্তা সংস্থা এএফপি বলছে, এবার ‘ইনভিজিবিলিটি ক্লোক’, পরমাণু শক্তির মাইক্রোস্কোপ বা কোয়ান্টাম কম্পিউটিং—এ ধরনের কিছু বৈজ্ঞানিক সাফল্য থেকে এবার পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার বিজয়ী বেছে নেওয়া হতে পারে৷
ইসরায়েলি-ব্রিটিশ পদার্থবিদ ডেভিড ডয়েচ, অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এবং আমেরিকান গণিতবিদ পিটার শোর এ বছর সবচেয়ে বেশি আলোচিত।
নোবেল পুরস্কার পর্যবেক্ষক প্রতিষ্ঠান অ্যানালিটিক্স গ্রুপ ক্ল্যারিভেটের প্রধান ডেভিড পেন্ডলবেরি বলেন, ‘কোয়ান্টাম অ্যালগরিদম’ ও ‘কোয়ান্টাম কম্পিউটিং’য়ের ক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের জন্য এই দুজনকে এবার নোবেল দেওয়া হতে পারে। এ দুই গবেষকের গবেষণাগত্র সর্বাধিক সাইটেশন বা উদ্ধৃতি পেয়েছে বলে জানান পেন্ডলবেরি।
কোয়ান্টাম কম্পিউটিং
গত দশক ও সামনের কয়েক দশকের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রযুক্তিগত আবিষ্কার হতে যাচ্ছে কোয়ান্টাম কম্পিউটার। মার্কিন বিজ্ঞানী চার্লস বেনেট ও কানাডিয়ান বিজ্ঞানী জিলে ব্রাসা মিলে আবিষ্কার করেন কোয়ান্টাম ক্রিপ্টোগ্রাফির বিবিএইটিফোর (BB84) প্রোটোকল। দুজন মিলে ২০১৮ সালে পেয়েছেন উলফ প্রাইজ। ২০১৭ সালে বেনেট পান ডিরাক মেডেল, যাতে তাঁর সঙ্গী ছিলেন মার্কিন গণিতবিদ পিটার শর ও ব্রিটিশ পদার্থবিদ ডেভিড ডয়েচ। পিটার শর তাঁর শর অ্যালগোরিদমের জন্য বিখ্যাত, যা ব্যবহার করে কোয়ান্টাম কম্পিউটার সাধারণ কম্পিউটারের চেয়ে অনেক অনেক গুণ দ্রুত ক্রিপ্টোগ্রাফি ভাঙতে পারে। ডেভিড ডয়েচ কোয়ান্টাম ট্যুরিং মেশিন ও বেল ইনেকুয়ালিটি নিয়ে কাজ করেছেন। এই চারজন একসঙ্গে পেয়েছেন ২০২৩ সালের ফান্ডামেন্টাল ফিজিকস ব্রেকথ্রু প্রাইজ। এই চারজনের মধ্যে দুই বা তিনজনকে একসঙ্গে নোবেল পুরস্কার পেতে দেখা যেতে পারে (সর্বোচ্চ তিনজনকে নোবেল পুরস্কার ভাগ করে দেওয়া হয়)।
এদের বাইরে কোয়ান্টাম কম্পিউটিংয়ের প্র্যাক্টিক্যাল বা ব্যবহারিক দিক নিয়ে চিন্তা করলে স্প্যানিশ বিজ্ঞানী ইগ্নাসিও সিরাক ও অস্ট্রিয়ান তাত্ত্বিক পদার্থবিদ পিটার জোলারকে যুগ্মভাবে বিবেচনা করা হতে পারে। তাঁরা যৌথভাবে আয়ন, কোল্ড অ্যাটম সিস্টেম ব্যবহার করে কোয়ান্টাম কম্পিউটার ও সিমুলেটর তৈরির তত্ত্ব ও এক্সপেরিমেন্ট বা পরীক্ষণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। এঁরা দুজন যৌথভাবে ২০১৩ সালে উলফ প্রাইজ পেয়েছিলেন। পাশাপাশি জোলার ডিরাক মেডেলও পেয়েছেন।
কোয়ান্টাম মেকানিকস
কোয়ান্টাম মেকানিকসের মৌলিক দুটি বিষয় হলো আহারোনভ-বোহম ইফেক্ট এবং বেরি ফেইজ। ইলেকট্রিক ও ম্যাগনেটিক, অর্থাৎ তড়িৎ ও চৌম্বক—দুই ফিল্ড বা ক্ষেত্রই যদি শূন্য হয়, তবে ক্লাসিক্যাল ফিজিকস বা চিরায়ত বলবিদ্যা বলে যে চার্জিত কণার ওপর কোনো প্রভাব পড়বে না। কিন্তু কোয়ান্টাম মেকানিকস বলে, যদি ইলেকট্রোম্যাগনেটিক পটেনশিয়াল বা তড়িৎ-চৌম্বক বিভব শূন্য না হয়, তবে ওই পটেনশিয়ালের সঙ্গে চার্জিত কণার ওয়েভ ফাংশন কাপলিংয়ের মাধ্যমে কণার ওপর প্রভাব দেখা যাবে—আর পরীক্ষায় তা-ই প্রমাণিত হয়।
এই এক্সপেরিমেন্টের সঙ্গে যুক্ত আরও মৌলিক একটি বিষয় হলো জিওমেট্রিক ফেজ। পঞ্চাশের দশকেই এ বিষয়ে গবেষণাপত্র থাকলেও (পঞ্চরত্নম, লংগুয়ে-হিগিন্স) মাইকেল বেরি ১৯৮৪ সালে এই ধারণাকে সাধারণ গাণিতিক রূপ দেন এবং বেরি ফেইজ হিসেবেই বিষয়টি পরিচিত হয়। এ দুই আবিষ্কারের সঙ্গে যুক্ত বাকিরা মারা গেছেন। আহারোনভ ও বেরি ১৯৯৮ সালে একসঙ্গে উলফ প্রাইজও পেয়েছিলেন এবং অনেক বছর ধরেই নোবেল পুরস্কারের ফেভারিটের তালিকায় ছিলেন। এরকম অনেক বছর ধরে নোবেল না পাওয়া বেল ইনেকুয়ালিটির প্রমাণ অবশেষে ২০২২ সালে এসে স্বীকৃতি পায়। তাই এ বছর আহারোনভ ও বেরিকে নিয়ে আশাবাদী হওয়া যায়।
টুইস্টেড বাইলেয়ার গ্রাফিন
একুশ শতকের সবচেয়ে চমকপ্রদ আবিষ্কারগুলোর একটি গ্রাফিন। ২০০৪ সালে আন্দ্রে গাইম ও কন্সট্যানটিন নোভোসেলোভ মাত্র এক স্তরের গ্রাফিন খুব সহজে এবং প্রথমবারের মতো আলাদা করতে সক্ষম হন, যা তাঁদের এনে দেয় ২০১০ সালের নোবেল পুরস্কার। এর পর থেকে গ্রাফিন নিয়ে সারা বিশ্বে গবেষণার জোয়ার চলছে। ২০১১ সালে অ্যালান ম্যাকডোনাল্ড ও রাফি বিস্ট্রিজার তাত্ত্বিক মডেলের মাধ্যমে দেখান, দুই স্তর বিশিষ্ট গ্রাফিন ঠিকভাবে একটার ওপর একটা না রেখে বিশেষ একটি কোণে (মোটামুটি ১ ডিগ্রির মতো) রাখলে ইলেকট্রনের এই দুই স্তরের মাঝে টানেলিং করে চলার জন্য প্রয়োজনীয় শক্তি খুব দ্রুত পরিবর্তন হয়ে যায়।
২০১৮ সালে পাবলো জারিয়ো-হেরেরো এই ভবিষ্যদ্বাণীর পরীক্ষালব্ধ প্রমাণ দেন। তিনি দেখান, ১.১ ডিগ্রিতে ইলেকট্রন খুব সহজে দুই স্তরে চলাচল করতে পারে এবং সুপারকন্ডাক্টিভিটি প্রদর্শন করে। এই তিনজন মিলে ২০২০ সালে উলফ প্রাইজও পেয়েছেন। ২০২৪ সালে ক্লারিভেট ইনস্টিটিউট সাইটেশনের ভিত্তিতে তাঁদের নোবেল পুরস্কারের জন্য ফেভারিটের তালিকায় রেখেছে।

পদার্থবিজ্ঞানে ২০২৪ সালের নোবেল পুরস্কার ঘোষণা হবে আজ। যেকোনো ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ যেসব গবেষণা বা আবিষ্কার নোবেল পায়নি, সেগুলো মোটামুটি প্রতিবারই সম্ভাব্য বিজয়ী হিসেবে আলোচিত হয়। তাই পদার্থবিজ্ঞানের গত বছরের তালিকার প্রায় সবাই আছেন আলোচনায়।
পদার্থবিজ্ঞানের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ পুরস্কার, যেমন উলফ প্রাইজ, ব্রেকথ্রু প্রাইজ, ডিরাক মেডেল, নিউটন মেডেল ইত্যাদি পুরস্কারও ভবিষ্যৎ নোবেল বিজয়ী হওয়ার ভালো পূর্বাভাস দেয়। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, ১৯৭৮ থেকে ২০১০ সালের মধ্যে দেওয়া ২৬টি উলফ প্রাইজ বিজয়ীর ১৪ জনই পরে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন। আবার গবেষণাপত্রের সাইটেশন, এইচ-ইনডেক্স ইত্যাদিও কোন গবেষণাটি গুরুত্বপূর্ণ, তা বোঝার আরেকটি ভালো উপায়। তবে অনেক বছর দেখা যায়, আলোচনার বাইরে কোনো একটা পুরাতন গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কারকে নোবেল দেওয়া হয়েছে।
দুয়েক বছর বাদে একবার মহাবিশ্ব (জ্যোতির্বিজ্ঞান/কণা পদার্থবিজ্ঞান) তো অন্যবার আলো ও পদার্থ (লাইট-ম্যাটার)—এভাবে পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। এই প্রবণতার বাইরে গিয়ে বহু বছর পরে ২০২১ সালে স্ট্যাটিস্টিক্যাল ফিজিকস বা পরিসংখ্যানগত পদার্থবিজ্ঞান থেকে নোবেল দেওয়া হয়েছিল। ২০২২ ও ২০২৩ সালে আবার যথাক্রমে কোয়ান্টাম মেকানিকস ও আলোকতত্ত্বের ওপর নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয়েছে।
বার্তা সংস্থা এএফপি বলছে, এবার ‘ইনভিজিবিলিটি ক্লোক’, পরমাণু শক্তির মাইক্রোস্কোপ বা কোয়ান্টাম কম্পিউটিং—এ ধরনের কিছু বৈজ্ঞানিক সাফল্য থেকে এবার পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার বিজয়ী বেছে নেওয়া হতে পারে৷
ইসরায়েলি-ব্রিটিশ পদার্থবিদ ডেভিড ডয়েচ, অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এবং আমেরিকান গণিতবিদ পিটার শোর এ বছর সবচেয়ে বেশি আলোচিত।
নোবেল পুরস্কার পর্যবেক্ষক প্রতিষ্ঠান অ্যানালিটিক্স গ্রুপ ক্ল্যারিভেটের প্রধান ডেভিড পেন্ডলবেরি বলেন, ‘কোয়ান্টাম অ্যালগরিদম’ ও ‘কোয়ান্টাম কম্পিউটিং’য়ের ক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের জন্য এই দুজনকে এবার নোবেল দেওয়া হতে পারে। এ দুই গবেষকের গবেষণাগত্র সর্বাধিক সাইটেশন বা উদ্ধৃতি পেয়েছে বলে জানান পেন্ডলবেরি।
কোয়ান্টাম কম্পিউটিং
গত দশক ও সামনের কয়েক দশকের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রযুক্তিগত আবিষ্কার হতে যাচ্ছে কোয়ান্টাম কম্পিউটার। মার্কিন বিজ্ঞানী চার্লস বেনেট ও কানাডিয়ান বিজ্ঞানী জিলে ব্রাসা মিলে আবিষ্কার করেন কোয়ান্টাম ক্রিপ্টোগ্রাফির বিবিএইটিফোর (BB84) প্রোটোকল। দুজন মিলে ২০১৮ সালে পেয়েছেন উলফ প্রাইজ। ২০১৭ সালে বেনেট পান ডিরাক মেডেল, যাতে তাঁর সঙ্গী ছিলেন মার্কিন গণিতবিদ পিটার শর ও ব্রিটিশ পদার্থবিদ ডেভিড ডয়েচ। পিটার শর তাঁর শর অ্যালগোরিদমের জন্য বিখ্যাত, যা ব্যবহার করে কোয়ান্টাম কম্পিউটার সাধারণ কম্পিউটারের চেয়ে অনেক অনেক গুণ দ্রুত ক্রিপ্টোগ্রাফি ভাঙতে পারে। ডেভিড ডয়েচ কোয়ান্টাম ট্যুরিং মেশিন ও বেল ইনেকুয়ালিটি নিয়ে কাজ করেছেন। এই চারজন একসঙ্গে পেয়েছেন ২০২৩ সালের ফান্ডামেন্টাল ফিজিকস ব্রেকথ্রু প্রাইজ। এই চারজনের মধ্যে দুই বা তিনজনকে একসঙ্গে নোবেল পুরস্কার পেতে দেখা যেতে পারে (সর্বোচ্চ তিনজনকে নোবেল পুরস্কার ভাগ করে দেওয়া হয়)।
এদের বাইরে কোয়ান্টাম কম্পিউটিংয়ের প্র্যাক্টিক্যাল বা ব্যবহারিক দিক নিয়ে চিন্তা করলে স্প্যানিশ বিজ্ঞানী ইগ্নাসিও সিরাক ও অস্ট্রিয়ান তাত্ত্বিক পদার্থবিদ পিটার জোলারকে যুগ্মভাবে বিবেচনা করা হতে পারে। তাঁরা যৌথভাবে আয়ন, কোল্ড অ্যাটম সিস্টেম ব্যবহার করে কোয়ান্টাম কম্পিউটার ও সিমুলেটর তৈরির তত্ত্ব ও এক্সপেরিমেন্ট বা পরীক্ষণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। এঁরা দুজন যৌথভাবে ২০১৩ সালে উলফ প্রাইজ পেয়েছিলেন। পাশাপাশি জোলার ডিরাক মেডেলও পেয়েছেন।
কোয়ান্টাম মেকানিকস
কোয়ান্টাম মেকানিকসের মৌলিক দুটি বিষয় হলো আহারোনভ-বোহম ইফেক্ট এবং বেরি ফেইজ। ইলেকট্রিক ও ম্যাগনেটিক, অর্থাৎ তড়িৎ ও চৌম্বক—দুই ফিল্ড বা ক্ষেত্রই যদি শূন্য হয়, তবে ক্লাসিক্যাল ফিজিকস বা চিরায়ত বলবিদ্যা বলে যে চার্জিত কণার ওপর কোনো প্রভাব পড়বে না। কিন্তু কোয়ান্টাম মেকানিকস বলে, যদি ইলেকট্রোম্যাগনেটিক পটেনশিয়াল বা তড়িৎ-চৌম্বক বিভব শূন্য না হয়, তবে ওই পটেনশিয়ালের সঙ্গে চার্জিত কণার ওয়েভ ফাংশন কাপলিংয়ের মাধ্যমে কণার ওপর প্রভাব দেখা যাবে—আর পরীক্ষায় তা-ই প্রমাণিত হয়।
এই এক্সপেরিমেন্টের সঙ্গে যুক্ত আরও মৌলিক একটি বিষয় হলো জিওমেট্রিক ফেজ। পঞ্চাশের দশকেই এ বিষয়ে গবেষণাপত্র থাকলেও (পঞ্চরত্নম, লংগুয়ে-হিগিন্স) মাইকেল বেরি ১৯৮৪ সালে এই ধারণাকে সাধারণ গাণিতিক রূপ দেন এবং বেরি ফেইজ হিসেবেই বিষয়টি পরিচিত হয়। এ দুই আবিষ্কারের সঙ্গে যুক্ত বাকিরা মারা গেছেন। আহারোনভ ও বেরি ১৯৯৮ সালে একসঙ্গে উলফ প্রাইজও পেয়েছিলেন এবং অনেক বছর ধরেই নোবেল পুরস্কারের ফেভারিটের তালিকায় ছিলেন। এরকম অনেক বছর ধরে নোবেল না পাওয়া বেল ইনেকুয়ালিটির প্রমাণ অবশেষে ২০২২ সালে এসে স্বীকৃতি পায়। তাই এ বছর আহারোনভ ও বেরিকে নিয়ে আশাবাদী হওয়া যায়।
টুইস্টেড বাইলেয়ার গ্রাফিন
একুশ শতকের সবচেয়ে চমকপ্রদ আবিষ্কারগুলোর একটি গ্রাফিন। ২০০৪ সালে আন্দ্রে গাইম ও কন্সট্যানটিন নোভোসেলোভ মাত্র এক স্তরের গ্রাফিন খুব সহজে এবং প্রথমবারের মতো আলাদা করতে সক্ষম হন, যা তাঁদের এনে দেয় ২০১০ সালের নোবেল পুরস্কার। এর পর থেকে গ্রাফিন নিয়ে সারা বিশ্বে গবেষণার জোয়ার চলছে। ২০১১ সালে অ্যালান ম্যাকডোনাল্ড ও রাফি বিস্ট্রিজার তাত্ত্বিক মডেলের মাধ্যমে দেখান, দুই স্তর বিশিষ্ট গ্রাফিন ঠিকভাবে একটার ওপর একটা না রেখে বিশেষ একটি কোণে (মোটামুটি ১ ডিগ্রির মতো) রাখলে ইলেকট্রনের এই দুই স্তরের মাঝে টানেলিং করে চলার জন্য প্রয়োজনীয় শক্তি খুব দ্রুত পরিবর্তন হয়ে যায়।
২০১৮ সালে পাবলো জারিয়ো-হেরেরো এই ভবিষ্যদ্বাণীর পরীক্ষালব্ধ প্রমাণ দেন। তিনি দেখান, ১.১ ডিগ্রিতে ইলেকট্রন খুব সহজে দুই স্তরে চলাচল করতে পারে এবং সুপারকন্ডাক্টিভিটি প্রদর্শন করে। এই তিনজন মিলে ২০২০ সালে উলফ প্রাইজও পেয়েছেন। ২০২৪ সালে ক্লারিভেট ইনস্টিটিউট সাইটেশনের ভিত্তিতে তাঁদের নোবেল পুরস্কারের জন্য ফেভারিটের তালিকায় রেখেছে।

নোবেলজয়ী আমেরিকান বিজ্ঞানী জেমস ওয়াটসন মারা গেছেন। তাঁর বয়স হয়েছিল ৯৭ বছর। ডিএনএর (DNA) যুগান্তকারী ডাবল হেলিক্স কাঠামো আবিষ্কারকদের অন্যতম তিনি। তিনি কোল্ড স্প্রিং হারবার ল্যাবরেটরিতে দীর্ঘদিন গবেষণা করেছেন। ল্যাবরেটরি কর্তৃপক্ষ তাঁর মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে বলে বিবিসির প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
২ দিন আগে
বেলজিয়ামের জীবাশ্মবিজ্ঞানী মিৎসে গেরমোঁপ্রে দাবি করেছেন, তাঁর আবিষ্কার মানুষের সঙ্গে কুকুরের বন্ধুত্বের ইতিহাসকে নতুন করে লিখতে পারে। তাঁর মতে, কুকুরের গৃহপালিত হওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল আজ থেকে প্রায় ৩৫ হাজার বছর আগে, যা প্রচলিত ধারণার চেয়ে প্রায় ২০ হাজার বছর আগে!
২ দিন আগে
বারবিকিউ পার্টি চলছে এখন মহাকাশেও! তিয়ানগং স্পেস স্টেশনে চীনের ছয়জন নভোচারী এই আয়োজন করেছেন। চীনের অ্যাস্ট্রোনট সেন্টার (এসিসি) প্রকাশিত এক ভিডিওতে দেখা যায়, শেনঝো–২০ ও শেনঝো–২১ মিশনের নভোচারীরা একটি নতুন ধরনের ওভেন ব্যবহার করে রান্না করছেন, যা মহাকাশের মাইক্রোগ্র্যাভিটি পরিবেশে ব্যবহারের উপযোগী
৫ দিন আগে
টাইটানের মতো চরম, প্রতিকূল পরিবেশে প্রাণের উৎপত্তির আগে রসায়ন কীভাবে কাজ করতে পারত, এই গবেষণা সেই বিষয়েও নতুন অন্তর্দৃষ্টি যোগ করবে।
৫ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

নোবেলজয়ী আমেরিকান বিজ্ঞানী জেমস ওয়াটসন মারা গেছেন। তাঁর বয়স হয়েছিল ৯৭ বছর। ডিএনএর (DNA) যুগান্তকারী ডাবল হেলিক্স কাঠামো আবিষ্কারকদের অন্যতম তিনি। তিনি কোল্ড স্প্রিং হারবার ল্যাবরেটরিতে দীর্ঘদিন গবেষণা করেছেন। ল্যাবরেটরি কর্তৃপক্ষ তাঁর মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে বলে বিবিসির প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
ওয়াটসন ব্রিটিশ বিজ্ঞানী ফ্রান্সিস ক্রিকের সঙ্গে মিলে ১৯৫৩ সালে ডিএনএর কাঠামোগত রহস্য উন্মোচন করেন। এই আবিষ্কারকে ‘বিশ শতকের অন্যতম সেরা অগ্রগতি’ হিসেবে গণ্য করা হয়। এই আবিষ্কার আণবিক জীববিজ্ঞানের দ্রুত বিকাশের পথ প্রশস্ত করেছিল।
ডিএনএ ডাবল হেলিক্স হলো ডিএনএর দুটি সর্পিল বা প্যাঁচানো মইয়ের মতো কাঠামো, যা পরস্পরকে পেঁচিয়ে থাকে। এই কাঠামোতে দুটি শৃঙ্খল থাকে, সেটি আবার হাইড্রোজেন বন্ধনের মাধ্যমে সংযুক্ত। এই শৃঙ্খলগুলো অ্যাডেনিন (A) ও থাইমিন (T) এবং সাইটোসিন (C) ও গুয়ানিনের (G) মতো নাইট্রোজেনাস বেস জোড়া দিয়ে গঠিত।
জেমস ওয়াটসন, ফ্রান্সিস ক্রিক এবং মরিস উইলকিন্স—এই তিনজন বিজ্ঞানী ১৯৬২ সালে ডিএনএর ডাবল হেলিক্স কাঠামো আবিষ্কারের জন্য যৌথভাবে নোবেল পুরস্কার পান। এই আবিষ্কারের সময় তাঁরা বলেছিলেন, ‘আমরা জীবনের রহস্য আবিষ্কার করেছি।’
যদিও এই আবিষ্কারের পেছনে কিংস কলেজের গবেষক রোজালিন্ড ফ্রাঙ্কলিনের তোলা এক্স-রে চিত্র ব্যবহার করা হয়েছিল। সেটি তাঁর সম্মতি ছাড়াই ওয়াটসন ও ক্রিক ব্যবহার করেছিলেন। মরিস উইলকিন্স ফ্রাঙ্কলিনের সঙ্গে ডিএনএ অণুর কাঠামো নির্ণয়ের কাজ করেছিলেন।
এমন যুগান্তকারী বৈজ্ঞানিক সাফল্যের পরও পরবর্তীকালে বর্ণ ও বুদ্ধিমত্তা নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যের কারণে জেমস ওয়াটসনের খ্যাতি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ২০০৭ সালে তিনি এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, তিনি ‘আফ্রিকার সম্ভাবনা নিয়ে গভীরভাবে হতাশ’। কারণ, ‘আমাদের সব সামাজিক নীতি এই তথ্যের ওপর ভিত্তি করে তৈরি যে তাদের (আফ্রিকানদের) বুদ্ধিমত্তা আমাদের মতোই—যদিও সব পরীক্ষামূলক ফলাফলে তেমনটি দেখা যায় না।’ এই মন্তব্যের জেরে নিউইয়র্কের কোল্ড স্প্রিং হারবার ল্যাবরেটরির চ্যান্সেলরের পদ হারান তিনি।
২০১৯ সালে ওয়াটসন পুনরায় একই ধরনের মন্তব্য করেন, যেখানে তিনি আরও একবার বর্ণ ও বুদ্ধিমত্তার মধ্যে যোগসূত্র টেনেছিলেন। এর ফলস্বরূপ, ল্যাবরেটরি তাঁর চ্যান্সেলর ইমেরিটাসসহ সমস্ত সম্মানসূচক পদ কেড়ে নেয়। ল্যাবরেটরি সেই সময় এক বিবৃতিতে জানিয়েছিল, ‘ড. ওয়াটসনের বক্তব্য নিন্দনীয় এবং বিজ্ঞানের দ্বারা অসমর্থিত।’
২০১৪ সালে বৈজ্ঞানিক মহলে একঘরে হওয়ার অনুভূতির কথা বলে ওয়াটসন তাঁর নোবেল পদকটি ৪৮ লাখ ডলারে (প্রায় ৩৬ কোটি টাকা) নিলামে বিক্রি করে দেন। যদিও পদকটি ক্রয় করা এক রুশ বিলিয়নিয়ার সঙ্গে সঙ্গেই সেটি আবার তাঁকে ফিরিয়ে দিয়েছিলেন।
১৯২৮ সালের এপ্রিলে শিকাগোতে জন্মগ্রহণ করেন জেমস ওয়াটসন। মাত্র ১৫ বছর বয়সে তিনি শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার জন্য স্কলারশিপ পান। ডিএনএ নিয়ে গবেষণার জন্য তিনি কেমব্রিজে যান, যেখানে ফ্রান্সিস ক্রিকের সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়। ডিএনএর গঠন আবিষ্কারের পর তিনি হার্ভার্ডে জীববিজ্ঞানের অধ্যাপক হিসেবে যোগ দেন এবং ১৯৬৮ সালে কোল্ড স্প্রিং হারবার ল্যাবরেটরির দায়িত্ব নেন। এই প্রতিষ্ঠানকে বিশ্বের অন্যতম প্রধান বৈজ্ঞানিক গবেষণা কেন্দ্রে পরিণত করার কৃতিত্ব তাঁর।

নোবেলজয়ী আমেরিকান বিজ্ঞানী জেমস ওয়াটসন মারা গেছেন। তাঁর বয়স হয়েছিল ৯৭ বছর। ডিএনএর (DNA) যুগান্তকারী ডাবল হেলিক্স কাঠামো আবিষ্কারকদের অন্যতম তিনি। তিনি কোল্ড স্প্রিং হারবার ল্যাবরেটরিতে দীর্ঘদিন গবেষণা করেছেন। ল্যাবরেটরি কর্তৃপক্ষ তাঁর মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে বলে বিবিসির প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
ওয়াটসন ব্রিটিশ বিজ্ঞানী ফ্রান্সিস ক্রিকের সঙ্গে মিলে ১৯৫৩ সালে ডিএনএর কাঠামোগত রহস্য উন্মোচন করেন। এই আবিষ্কারকে ‘বিশ শতকের অন্যতম সেরা অগ্রগতি’ হিসেবে গণ্য করা হয়। এই আবিষ্কার আণবিক জীববিজ্ঞানের দ্রুত বিকাশের পথ প্রশস্ত করেছিল।
ডিএনএ ডাবল হেলিক্স হলো ডিএনএর দুটি সর্পিল বা প্যাঁচানো মইয়ের মতো কাঠামো, যা পরস্পরকে পেঁচিয়ে থাকে। এই কাঠামোতে দুটি শৃঙ্খল থাকে, সেটি আবার হাইড্রোজেন বন্ধনের মাধ্যমে সংযুক্ত। এই শৃঙ্খলগুলো অ্যাডেনিন (A) ও থাইমিন (T) এবং সাইটোসিন (C) ও গুয়ানিনের (G) মতো নাইট্রোজেনাস বেস জোড়া দিয়ে গঠিত।
জেমস ওয়াটসন, ফ্রান্সিস ক্রিক এবং মরিস উইলকিন্স—এই তিনজন বিজ্ঞানী ১৯৬২ সালে ডিএনএর ডাবল হেলিক্স কাঠামো আবিষ্কারের জন্য যৌথভাবে নোবেল পুরস্কার পান। এই আবিষ্কারের সময় তাঁরা বলেছিলেন, ‘আমরা জীবনের রহস্য আবিষ্কার করেছি।’
যদিও এই আবিষ্কারের পেছনে কিংস কলেজের গবেষক রোজালিন্ড ফ্রাঙ্কলিনের তোলা এক্স-রে চিত্র ব্যবহার করা হয়েছিল। সেটি তাঁর সম্মতি ছাড়াই ওয়াটসন ও ক্রিক ব্যবহার করেছিলেন। মরিস উইলকিন্স ফ্রাঙ্কলিনের সঙ্গে ডিএনএ অণুর কাঠামো নির্ণয়ের কাজ করেছিলেন।
এমন যুগান্তকারী বৈজ্ঞানিক সাফল্যের পরও পরবর্তীকালে বর্ণ ও বুদ্ধিমত্তা নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যের কারণে জেমস ওয়াটসনের খ্যাতি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ২০০৭ সালে তিনি এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, তিনি ‘আফ্রিকার সম্ভাবনা নিয়ে গভীরভাবে হতাশ’। কারণ, ‘আমাদের সব সামাজিক নীতি এই তথ্যের ওপর ভিত্তি করে তৈরি যে তাদের (আফ্রিকানদের) বুদ্ধিমত্তা আমাদের মতোই—যদিও সব পরীক্ষামূলক ফলাফলে তেমনটি দেখা যায় না।’ এই মন্তব্যের জেরে নিউইয়র্কের কোল্ড স্প্রিং হারবার ল্যাবরেটরির চ্যান্সেলরের পদ হারান তিনি।
২০১৯ সালে ওয়াটসন পুনরায় একই ধরনের মন্তব্য করেন, যেখানে তিনি আরও একবার বর্ণ ও বুদ্ধিমত্তার মধ্যে যোগসূত্র টেনেছিলেন। এর ফলস্বরূপ, ল্যাবরেটরি তাঁর চ্যান্সেলর ইমেরিটাসসহ সমস্ত সম্মানসূচক পদ কেড়ে নেয়। ল্যাবরেটরি সেই সময় এক বিবৃতিতে জানিয়েছিল, ‘ড. ওয়াটসনের বক্তব্য নিন্দনীয় এবং বিজ্ঞানের দ্বারা অসমর্থিত।’
২০১৪ সালে বৈজ্ঞানিক মহলে একঘরে হওয়ার অনুভূতির কথা বলে ওয়াটসন তাঁর নোবেল পদকটি ৪৮ লাখ ডলারে (প্রায় ৩৬ কোটি টাকা) নিলামে বিক্রি করে দেন। যদিও পদকটি ক্রয় করা এক রুশ বিলিয়নিয়ার সঙ্গে সঙ্গেই সেটি আবার তাঁকে ফিরিয়ে দিয়েছিলেন।
১৯২৮ সালের এপ্রিলে শিকাগোতে জন্মগ্রহণ করেন জেমস ওয়াটসন। মাত্র ১৫ বছর বয়সে তিনি শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার জন্য স্কলারশিপ পান। ডিএনএ নিয়ে গবেষণার জন্য তিনি কেমব্রিজে যান, যেখানে ফ্রান্সিস ক্রিকের সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়। ডিএনএর গঠন আবিষ্কারের পর তিনি হার্ভার্ডে জীববিজ্ঞানের অধ্যাপক হিসেবে যোগ দেন এবং ১৯৬৮ সালে কোল্ড স্প্রিং হারবার ল্যাবরেটরির দায়িত্ব নেন। এই প্রতিষ্ঠানকে বিশ্বের অন্যতম প্রধান বৈজ্ঞানিক গবেষণা কেন্দ্রে পরিণত করার কৃতিত্ব তাঁর।

পদার্থবিজ্ঞানে ২০২৪ সালের নোবেল পুরস্কার ঘোষণা হবে আজ। যে কোনো ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ যেসব গবেষণা বা আবিষ্কার নোবেল পায়নি, সেগুলো মোটামুটি প্রতিবারই সম্ভাব্য বিজয়ী হিসেবে আলোচিত হয়। তাই পদার্থবিজ্ঞানের গত বছরের তালিকার প্রায় সবাই-ই আছেন আলোচনায়।
০৮ অক্টোবর ২০২৪
বেলজিয়ামের জীবাশ্মবিজ্ঞানী মিৎসে গেরমোঁপ্রে দাবি করেছেন, তাঁর আবিষ্কার মানুষের সঙ্গে কুকুরের বন্ধুত্বের ইতিহাসকে নতুন করে লিখতে পারে। তাঁর মতে, কুকুরের গৃহপালিত হওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল আজ থেকে প্রায় ৩৫ হাজার বছর আগে, যা প্রচলিত ধারণার চেয়ে প্রায় ২০ হাজার বছর আগে!
২ দিন আগে
বারবিকিউ পার্টি চলছে এখন মহাকাশেও! তিয়ানগং স্পেস স্টেশনে চীনের ছয়জন নভোচারী এই আয়োজন করেছেন। চীনের অ্যাস্ট্রোনট সেন্টার (এসিসি) প্রকাশিত এক ভিডিওতে দেখা যায়, শেনঝো–২০ ও শেনঝো–২১ মিশনের নভোচারীরা একটি নতুন ধরনের ওভেন ব্যবহার করে রান্না করছেন, যা মহাকাশের মাইক্রোগ্র্যাভিটি পরিবেশে ব্যবহারের উপযোগী
৫ দিন আগে
টাইটানের মতো চরম, প্রতিকূল পরিবেশে প্রাণের উৎপত্তির আগে রসায়ন কীভাবে কাজ করতে পারত, এই গবেষণা সেই বিষয়েও নতুন অন্তর্দৃষ্টি যোগ করবে।
৫ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

বেলজিয়ামের জীবাশ্মবিজ্ঞানী মিৎসে গেরমোঁপ্রে দাবি করেছেন, তাঁর আবিষ্কার মানুষের সঙ্গে কুকুরের বন্ধুত্বের ইতিহাসকে নতুন করে লিখতে পারে। তাঁর মতে, কুকুরের গৃহপালিত হওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল আজ থেকে প্রায় ৩৫ হাজার বছর আগে, যা প্রচলিত ধারণার চেয়ে প্রায় ২০ হাজার বছর আগে!
শুক্রবার (৭ অক্টোবর) যুক্তরাজ্যভিত্তিক দ্য টাইমস জানিয়েছে, গেরমোঁপ্রে ছোটবেলা থেকেই বরফযুগের প্রাণীদের নিয়ে মুগ্ধ ছিলেন। ২০০৯ সালে তিনি বেলজিয়ান ইনস্টিটিউট অব ন্যাচারাল সায়েন্সেসে কাজ করার সময় গ্রামের একটি গুহা থেকে পাওয়া প্রাগৈতিহাসিক কিছু প্রাণীর হাড় পরীক্ষা করছিলেন।
এই কাজ করতে গিয়ে একটি মাথার খুলির দিকে মনোযোগী হন গেরমোঁপ্রে। দীর্ঘদিন ধরে খুলিটিকে বরফযুগের কোনো নেকড়ের বলে ধরে নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু গেরমোঁপ্রে বুঝতে পারেন—এটির নাক বা মুখের অংশটি ছোট ও চওড়া এবং এগুলো গৃহপালিত প্রাণীর বৈশিষ্ট্য।
পরে রেডিওকার্বন পরীক্ষায় দেখা যায়, ওই খুলির বয়স প্রায় ৩৫ হাজার বছর। আর বৈশিষ্টগুলোই বলে দিচ্ছে, এটি সেই সময়ের কোনো নেকড়ে নয়, বরং মানুষের সান্নিধ্যে থাকা প্রাচীন কোনো কুকুর হতে পারে।
গেরমোঁপ্রে বলেন, ‘আমি ভেবেছিলাম, কেউ বিশ্বাস করবে না।’ তবে তাঁর এই গবেষণা প্রকাশের পর থেকে বিজ্ঞানমহলে বিতর্ক শুরু হয়েছে। অনেকে মনে করেন, এটি আসলে অস্বাভাবিক আকৃতির একটি নেকড়ের মাথার খুলি। আবার কেউ কেউ মনে করছেন, এটি সত্যিই গৃহপালিত কুকুরের সবচেয়ে পুরোনো নিদর্শন।
গেরমোঁপ্রে মনে করেন, এটি এমন এক যুগের চিহ্ন, যখন মানুষ প্রথমবারের মতো প্রাণীদের সঙ্গে সহাবস্থান শুরু করেছিল। তিনি বিশ্বাস করেন, কুকুর গৃহপালিত হওয়ার প্রক্রিয়া মানুষের উদ্যোগেই ঘটেছিল। প্রাচীন মানুষেরা নেকড়ে শাবক লালন করত, আক্রমণাত্মকদের বেছে হত্যা করত আর শান্তগুলোকে নিজেদের সঙ্গী বানাত। এভাবেই ধীরে ধীরে জন্ম নেয় প্যালিওলিথিক কুকুর।
বরফযুগের বেলজিয়াম ছিল খোলা তৃণভূমি—চারপাশে ম্যামথ, ঘোড়া, রেইনডিয়ার আর বন্য সিংহ-ভালুকের ভিড়। এমন বিপজ্জনক পৃথিবীতে কুকুর ছিল মানুষের সহচর, রক্ষক ও পথপ্রদর্শক।
গেরমোঁপ্রের মতে, এই প্রাচীন খুলি শুধু একটি প্রাণীর নয়, মানবসভ্যতার প্রথম বন্ধুত্বের প্রতীকও বটে—যখন মানুষ আর কুকুর একে অন্যের ভরসা হয়ে উঠেছিল বরফে ঢাকা নীরব পৃথিবীর প্রান্তরে।

বেলজিয়ামের জীবাশ্মবিজ্ঞানী মিৎসে গেরমোঁপ্রে দাবি করেছেন, তাঁর আবিষ্কার মানুষের সঙ্গে কুকুরের বন্ধুত্বের ইতিহাসকে নতুন করে লিখতে পারে। তাঁর মতে, কুকুরের গৃহপালিত হওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল আজ থেকে প্রায় ৩৫ হাজার বছর আগে, যা প্রচলিত ধারণার চেয়ে প্রায় ২০ হাজার বছর আগে!
শুক্রবার (৭ অক্টোবর) যুক্তরাজ্যভিত্তিক দ্য টাইমস জানিয়েছে, গেরমোঁপ্রে ছোটবেলা থেকেই বরফযুগের প্রাণীদের নিয়ে মুগ্ধ ছিলেন। ২০০৯ সালে তিনি বেলজিয়ান ইনস্টিটিউট অব ন্যাচারাল সায়েন্সেসে কাজ করার সময় গ্রামের একটি গুহা থেকে পাওয়া প্রাগৈতিহাসিক কিছু প্রাণীর হাড় পরীক্ষা করছিলেন।
এই কাজ করতে গিয়ে একটি মাথার খুলির দিকে মনোযোগী হন গেরমোঁপ্রে। দীর্ঘদিন ধরে খুলিটিকে বরফযুগের কোনো নেকড়ের বলে ধরে নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু গেরমোঁপ্রে বুঝতে পারেন—এটির নাক বা মুখের অংশটি ছোট ও চওড়া এবং এগুলো গৃহপালিত প্রাণীর বৈশিষ্ট্য।
পরে রেডিওকার্বন পরীক্ষায় দেখা যায়, ওই খুলির বয়স প্রায় ৩৫ হাজার বছর। আর বৈশিষ্টগুলোই বলে দিচ্ছে, এটি সেই সময়ের কোনো নেকড়ে নয়, বরং মানুষের সান্নিধ্যে থাকা প্রাচীন কোনো কুকুর হতে পারে।
গেরমোঁপ্রে বলেন, ‘আমি ভেবেছিলাম, কেউ বিশ্বাস করবে না।’ তবে তাঁর এই গবেষণা প্রকাশের পর থেকে বিজ্ঞানমহলে বিতর্ক শুরু হয়েছে। অনেকে মনে করেন, এটি আসলে অস্বাভাবিক আকৃতির একটি নেকড়ের মাথার খুলি। আবার কেউ কেউ মনে করছেন, এটি সত্যিই গৃহপালিত কুকুরের সবচেয়ে পুরোনো নিদর্শন।
গেরমোঁপ্রে মনে করেন, এটি এমন এক যুগের চিহ্ন, যখন মানুষ প্রথমবারের মতো প্রাণীদের সঙ্গে সহাবস্থান শুরু করেছিল। তিনি বিশ্বাস করেন, কুকুর গৃহপালিত হওয়ার প্রক্রিয়া মানুষের উদ্যোগেই ঘটেছিল। প্রাচীন মানুষেরা নেকড়ে শাবক লালন করত, আক্রমণাত্মকদের বেছে হত্যা করত আর শান্তগুলোকে নিজেদের সঙ্গী বানাত। এভাবেই ধীরে ধীরে জন্ম নেয় প্যালিওলিথিক কুকুর।
বরফযুগের বেলজিয়াম ছিল খোলা তৃণভূমি—চারপাশে ম্যামথ, ঘোড়া, রেইনডিয়ার আর বন্য সিংহ-ভালুকের ভিড়। এমন বিপজ্জনক পৃথিবীতে কুকুর ছিল মানুষের সহচর, রক্ষক ও পথপ্রদর্শক।
গেরমোঁপ্রের মতে, এই প্রাচীন খুলি শুধু একটি প্রাণীর নয়, মানবসভ্যতার প্রথম বন্ধুত্বের প্রতীকও বটে—যখন মানুষ আর কুকুর একে অন্যের ভরসা হয়ে উঠেছিল বরফে ঢাকা নীরব পৃথিবীর প্রান্তরে।

পদার্থবিজ্ঞানে ২০২৪ সালের নোবেল পুরস্কার ঘোষণা হবে আজ। যে কোনো ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ যেসব গবেষণা বা আবিষ্কার নোবেল পায়নি, সেগুলো মোটামুটি প্রতিবারই সম্ভাব্য বিজয়ী হিসেবে আলোচিত হয়। তাই পদার্থবিজ্ঞানের গত বছরের তালিকার প্রায় সবাই-ই আছেন আলোচনায়।
০৮ অক্টোবর ২০২৪
নোবেলজয়ী আমেরিকান বিজ্ঞানী জেমস ওয়াটসন মারা গেছেন। তাঁর বয়স হয়েছিল ৯৭ বছর। ডিএনএর (DNA) যুগান্তকারী ডাবল হেলিক্স কাঠামো আবিষ্কারকদের অন্যতম তিনি। তিনি কোল্ড স্প্রিং হারবার ল্যাবরেটরিতে দীর্ঘদিন গবেষণা করেছেন। ল্যাবরেটরি কর্তৃপক্ষ তাঁর মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে বলে বিবিসির প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
২ দিন আগে
বারবিকিউ পার্টি চলছে এখন মহাকাশেও! তিয়ানগং স্পেস স্টেশনে চীনের ছয়জন নভোচারী এই আয়োজন করেছেন। চীনের অ্যাস্ট্রোনট সেন্টার (এসিসি) প্রকাশিত এক ভিডিওতে দেখা যায়, শেনঝো–২০ ও শেনঝো–২১ মিশনের নভোচারীরা একটি নতুন ধরনের ওভেন ব্যবহার করে রান্না করছেন, যা মহাকাশের মাইক্রোগ্র্যাভিটি পরিবেশে ব্যবহারের উপযোগী
৫ দিন আগে
টাইটানের মতো চরম, প্রতিকূল পরিবেশে প্রাণের উৎপত্তির আগে রসায়ন কীভাবে কাজ করতে পারত, এই গবেষণা সেই বিষয়েও নতুন অন্তর্দৃষ্টি যোগ করবে।
৫ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

বারবিকিউ পার্টি চলছে এখন মহাকাশেও! তিয়ানগং স্পেস স্টেশনে চীনের ছয়জন নভোচারী এই আয়োজন করেছেন। চীনের অ্যাস্ট্রোনট সেন্টার (এসিসি) প্রকাশিত এক ভিডিওতে দেখা যায়, শেনঝো–২০ ও শেনঝো–২১ মিশনের নভোচারীরা একটি নতুন ধরনের ওভেন ব্যবহার করে রান্না করছেন, যা মহাকাশের মাইক্রোগ্র্যাভিটি পরিবেশে ব্যবহারের উপযোগী প্রথম ওভেন হিসেবে ইতিহাস গড়েছে।
স্পেস ডট কম-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই ওভেন ব্যবহার করে নভোচারীরা ২৮ মিনিটে রোস্টেড চিকেন উইংস রান্না করতে সক্ষম হন। মাধ্যাকর্ষণ না থাকায় তাপ সমভাবে ছড়ায় না বলে মহাকাশে রান্না করা একটি বড় চ্যালেঞ্জ।
চীনা রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, ওভেনটি এমনভাবে নকশা করা হয়েছে যাতে এটি তিয়ানগং স্টেশনের বিদ্যুৎ সরবরাহে কোনো চাপ সৃষ্টি না করে এবং ধোঁয়াবিহীন ও স্থিতিশীল তাপমাত্রায় রান্না করা যায়।
ভিডিওতে দেখা যায়, নভোচারীরা বিশেষভাবে তৈরি একটি গ্রিল কেস-এ চিকেন উইংস নিয়ে স্পেস স্টেশনের দেয়ালের একটি ছোট কেবিন আকৃতির অংশে স্থাপন করছেন।
অ্যারোস্পেস নলেজ সাময়িকীর প্রধান সম্পাদক ওয়াং ইয়ানান চায়না ডেইলিকে বলেন, ‘পৃথিবীতে যেমন ওভেনের ভেতর বাতাস ঘুরে তাপ সঞ্চালন ঘটায়, মহাকাশে তা হয় না। কারণ সেখানে কনভেকশন নামের এই গুরুত্বপূর্ণ প্রক্রিয়া অনুপস্থিত। তাই প্রকৌশলীদের এমন একটি বিশেষ পদ্ধতি বের করতে হয়েছে যাতে খাবার সমভাবে গরম হয় এবং রান্নার ধোঁয়াও নিরাপদভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায়। নভোচারীদের সুরক্ষাও নিশ্চিত থাকে।’
ওভেনটির সর্বোচ্চ তাপমাত্রাও রাখা হয়েছে ১০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ১৯০ ডিগ্রিতে। এর ফলে নভোচারীরা প্রসেসড ফুড গরম করার পাশাপাশি খাবার রান্নাও করতে পারছেন।
এর আগে ২০২০ সালে ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশন (আইএসএস)-এ প্রথমবারের মতো মহাকাশে খাবার বেক করার একটি পরীক্ষা চালানো হয়েছিল। ন্যানোরেকস ও জিরো জি কিচেন যৌথভাবে তৈরি একটি প্রোটোটাইপ ওভেন ব্যবহার করে ওই পরীক্ষা চালায়। তখন পাঁচটি চকলেট চিপ কুকি বেক করা হয়। এটি ছিল মহাকাশে প্রথমবারের মতো কোনো খাবার বেক করার ঘটনা। পরবর্তীতে স্পেসএক্স ড্রাগন মহাকাশযানে করে এর মধ্যে তিনটি কুকি পৃথিবীতে ফেরত আনা হয়।
গত ৩১ অক্টোবর তিয়ানগং স্পেস স্টেশনে পৌঁছান শেনঝো-২১ মিশনের তিন নভোচারী। তাঁরা সেখানে প্রায় ছয় মাসের জন্য অবস্থান করবেন। শেনঝো-২০ দলের দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন তাঁরা। শেনঝো-২০ এর সদস্যরা গত এপ্রিল থেকে স্টেশনে অবস্থান করছেন এবং আগামী ৫ নভেম্বর পৃথিবীতে ফিরে আসবেন।

বারবিকিউ পার্টি চলছে এখন মহাকাশেও! তিয়ানগং স্পেস স্টেশনে চীনের ছয়জন নভোচারী এই আয়োজন করেছেন। চীনের অ্যাস্ট্রোনট সেন্টার (এসিসি) প্রকাশিত এক ভিডিওতে দেখা যায়, শেনঝো–২০ ও শেনঝো–২১ মিশনের নভোচারীরা একটি নতুন ধরনের ওভেন ব্যবহার করে রান্না করছেন, যা মহাকাশের মাইক্রোগ্র্যাভিটি পরিবেশে ব্যবহারের উপযোগী প্রথম ওভেন হিসেবে ইতিহাস গড়েছে।
স্পেস ডট কম-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই ওভেন ব্যবহার করে নভোচারীরা ২৮ মিনিটে রোস্টেড চিকেন উইংস রান্না করতে সক্ষম হন। মাধ্যাকর্ষণ না থাকায় তাপ সমভাবে ছড়ায় না বলে মহাকাশে রান্না করা একটি বড় চ্যালেঞ্জ।
চীনা রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, ওভেনটি এমনভাবে নকশা করা হয়েছে যাতে এটি তিয়ানগং স্টেশনের বিদ্যুৎ সরবরাহে কোনো চাপ সৃষ্টি না করে এবং ধোঁয়াবিহীন ও স্থিতিশীল তাপমাত্রায় রান্না করা যায়।
ভিডিওতে দেখা যায়, নভোচারীরা বিশেষভাবে তৈরি একটি গ্রিল কেস-এ চিকেন উইংস নিয়ে স্পেস স্টেশনের দেয়ালের একটি ছোট কেবিন আকৃতির অংশে স্থাপন করছেন।
অ্যারোস্পেস নলেজ সাময়িকীর প্রধান সম্পাদক ওয়াং ইয়ানান চায়না ডেইলিকে বলেন, ‘পৃথিবীতে যেমন ওভেনের ভেতর বাতাস ঘুরে তাপ সঞ্চালন ঘটায়, মহাকাশে তা হয় না। কারণ সেখানে কনভেকশন নামের এই গুরুত্বপূর্ণ প্রক্রিয়া অনুপস্থিত। তাই প্রকৌশলীদের এমন একটি বিশেষ পদ্ধতি বের করতে হয়েছে যাতে খাবার সমভাবে গরম হয় এবং রান্নার ধোঁয়াও নিরাপদভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায়। নভোচারীদের সুরক্ষাও নিশ্চিত থাকে।’
ওভেনটির সর্বোচ্চ তাপমাত্রাও রাখা হয়েছে ১০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ১৯০ ডিগ্রিতে। এর ফলে নভোচারীরা প্রসেসড ফুড গরম করার পাশাপাশি খাবার রান্নাও করতে পারছেন।
এর আগে ২০২০ সালে ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশন (আইএসএস)-এ প্রথমবারের মতো মহাকাশে খাবার বেক করার একটি পরীক্ষা চালানো হয়েছিল। ন্যানোরেকস ও জিরো জি কিচেন যৌথভাবে তৈরি একটি প্রোটোটাইপ ওভেন ব্যবহার করে ওই পরীক্ষা চালায়। তখন পাঁচটি চকলেট চিপ কুকি বেক করা হয়। এটি ছিল মহাকাশে প্রথমবারের মতো কোনো খাবার বেক করার ঘটনা। পরবর্তীতে স্পেসএক্স ড্রাগন মহাকাশযানে করে এর মধ্যে তিনটি কুকি পৃথিবীতে ফেরত আনা হয়।
গত ৩১ অক্টোবর তিয়ানগং স্পেস স্টেশনে পৌঁছান শেনঝো-২১ মিশনের তিন নভোচারী। তাঁরা সেখানে প্রায় ছয় মাসের জন্য অবস্থান করবেন। শেনঝো-২০ দলের দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন তাঁরা। শেনঝো-২০ এর সদস্যরা গত এপ্রিল থেকে স্টেশনে অবস্থান করছেন এবং আগামী ৫ নভেম্বর পৃথিবীতে ফিরে আসবেন।

পদার্থবিজ্ঞানে ২০২৪ সালের নোবেল পুরস্কার ঘোষণা হবে আজ। যে কোনো ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ যেসব গবেষণা বা আবিষ্কার নোবেল পায়নি, সেগুলো মোটামুটি প্রতিবারই সম্ভাব্য বিজয়ী হিসেবে আলোচিত হয়। তাই পদার্থবিজ্ঞানের গত বছরের তালিকার প্রায় সবাই-ই আছেন আলোচনায়।
০৮ অক্টোবর ২০২৪
নোবেলজয়ী আমেরিকান বিজ্ঞানী জেমস ওয়াটসন মারা গেছেন। তাঁর বয়স হয়েছিল ৯৭ বছর। ডিএনএর (DNA) যুগান্তকারী ডাবল হেলিক্স কাঠামো আবিষ্কারকদের অন্যতম তিনি। তিনি কোল্ড স্প্রিং হারবার ল্যাবরেটরিতে দীর্ঘদিন গবেষণা করেছেন। ল্যাবরেটরি কর্তৃপক্ষ তাঁর মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে বলে বিবিসির প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
২ দিন আগে
বেলজিয়ামের জীবাশ্মবিজ্ঞানী মিৎসে গেরমোঁপ্রে দাবি করেছেন, তাঁর আবিষ্কার মানুষের সঙ্গে কুকুরের বন্ধুত্বের ইতিহাসকে নতুন করে লিখতে পারে। তাঁর মতে, কুকুরের গৃহপালিত হওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল আজ থেকে প্রায় ৩৫ হাজার বছর আগে, যা প্রচলিত ধারণার চেয়ে প্রায় ২০ হাজার বছর আগে!
২ দিন আগে
টাইটানের মতো চরম, প্রতিকূল পরিবেশে প্রাণের উৎপত্তির আগে রসায়ন কীভাবে কাজ করতে পারত, এই গবেষণা সেই বিষয়েও নতুন অন্তর্দৃষ্টি যোগ করবে।
৫ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

শনি গ্রহের বৃহত্তম এবং রহস্যময় উপগ্রহ টাইটান। চরম শীতল পরিবেশের এই উপগ্রহ রসায়ন শাস্ত্রের এক অতি মৌলিক নিয়মকে বুড়ো আঙুল দেখিয়েছে। একটি নতুন গবেষণায় দেখা গেছে, যেসব বস্তু সাধারণত একে অপরের সঙ্গে মেশে না, যেমন পৃথিবীতে তেল ও পানি—টাইটানের তীব্র ঠান্ডায় (মাইনাস ১৮৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস) দুটো একসঙ্গে মিলেমিশে থাকতে পারে।
সুইডেনের চালমার্স ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি এবং নাসার বিজ্ঞানীদের এই আবিষ্কার মহাকাশ গবেষণায় নতুন দিগন্ত খুলে দিয়েছে। গবেষণাটির নেতৃত্ব দিয়েছেন চালমার্সের রসায়ন ও রাসায়নিক প্রকৌশল বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মার্টিন রাম।
সাধারণত পৃথিবীতে পোলার এবং নন-পোলার অণুগুলো একে অপরের সঙ্গে মেশে না। এটি ‘লাইক ডিসলভস লাইক’ নীতি নামে পরিচিত। পানির মতো পোলার অণুগুলোতে আধানের বণ্টন অসম থাকে, আর তেলের মতো নন-পোলার অণুগুলোতে আধান সুষম থাকে। এই ভিন্নতার কারণেই এরা একে অপরকে বিকর্ষণ করে এবং আলাদা স্তর তৈরি করে।
পিএনএএস জার্নালে প্রকাশিত গবেষণাপত্রটিতে দেখানো হয়েছে, টাইটানের চরম শীতল পরিস্থিতি এই নিয়মকে উল্টে দেয়। গবেষকেরা ল্যাবরেটরিতে টাইটানের পরিবেশ তৈরি করে পরীক্ষা করেন এবং দেখেন যে পোলার হাইড্রোজেন সায়ানাইড এবং নন-পোলার হাইড্রোকার্বন (যেমন মিথেন ও ইথেন) কঠিন রূপে একসঙ্গে ক্রিস্টালাইজড (স্ফটিক) হতে পারে।
অধ্যাপক রাম জানান, হাইড্রোজেন সায়ানাইড ক্রিস্টালগুলোর মধ্যে আন্তঃআণবিক শক্তি অস্বাভাবিকভাবে শক্তিশালী হয়ে ওঠে। এই শক্তির কারণেই নন-পোলার অণুগুলো ক্রিস্টাল কাঠামোর ভেতরে প্রবেশ করে একসঙ্গে থাকতে পারে। এই ঘটনা পৃথিবীতে প্রায় অসম্ভব।
অধ্যাপক রাম বলেন, ‘এই আবিষ্কার টাইটানের ভূতত্ত্ব এবং এর অদ্ভুত সব ল্যান্ডস্কেপ—যেমন হ্রদ, সমুদ্র এবং বালিয়াড়ি—বোঝার ক্ষেত্রে খুবই সহায়ক হবে।’
তিনি আরও মন্তব্য করেন, টাইটানের মতো চরম, প্রতিকূল পরিবেশে প্রাণের উৎপত্তির আগে রসায়ন কীভাবে কাজ করতে পারত, এই গবেষণা সেই বিষয়েও নতুন অন্তর্দৃষ্টি যোগ করবে। হাইড্রোজেন সায়ানাইডের এই ভূমিকা প্রাণ সৃষ্টির মৌলিক উপাদান, যেমন প্রোটিন তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় অ্যামিনো অ্যাসিড এবং জেনেটিক কোডের জন্য প্রয়োজনীয় নিউক্লিওবেস অজৈবিকভাবে তৈরি হওয়ার প্রক্রিয়া বুঝতে সাহায্য করতে পারে।

শনি গ্রহের বৃহত্তম এবং রহস্যময় উপগ্রহ টাইটান। চরম শীতল পরিবেশের এই উপগ্রহ রসায়ন শাস্ত্রের এক অতি মৌলিক নিয়মকে বুড়ো আঙুল দেখিয়েছে। একটি নতুন গবেষণায় দেখা গেছে, যেসব বস্তু সাধারণত একে অপরের সঙ্গে মেশে না, যেমন পৃথিবীতে তেল ও পানি—টাইটানের তীব্র ঠান্ডায় (মাইনাস ১৮৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস) দুটো একসঙ্গে মিলেমিশে থাকতে পারে।
সুইডেনের চালমার্স ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি এবং নাসার বিজ্ঞানীদের এই আবিষ্কার মহাকাশ গবেষণায় নতুন দিগন্ত খুলে দিয়েছে। গবেষণাটির নেতৃত্ব দিয়েছেন চালমার্সের রসায়ন ও রাসায়নিক প্রকৌশল বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মার্টিন রাম।
সাধারণত পৃথিবীতে পোলার এবং নন-পোলার অণুগুলো একে অপরের সঙ্গে মেশে না। এটি ‘লাইক ডিসলভস লাইক’ নীতি নামে পরিচিত। পানির মতো পোলার অণুগুলোতে আধানের বণ্টন অসম থাকে, আর তেলের মতো নন-পোলার অণুগুলোতে আধান সুষম থাকে। এই ভিন্নতার কারণেই এরা একে অপরকে বিকর্ষণ করে এবং আলাদা স্তর তৈরি করে।
পিএনএএস জার্নালে প্রকাশিত গবেষণাপত্রটিতে দেখানো হয়েছে, টাইটানের চরম শীতল পরিস্থিতি এই নিয়মকে উল্টে দেয়। গবেষকেরা ল্যাবরেটরিতে টাইটানের পরিবেশ তৈরি করে পরীক্ষা করেন এবং দেখেন যে পোলার হাইড্রোজেন সায়ানাইড এবং নন-পোলার হাইড্রোকার্বন (যেমন মিথেন ও ইথেন) কঠিন রূপে একসঙ্গে ক্রিস্টালাইজড (স্ফটিক) হতে পারে।
অধ্যাপক রাম জানান, হাইড্রোজেন সায়ানাইড ক্রিস্টালগুলোর মধ্যে আন্তঃআণবিক শক্তি অস্বাভাবিকভাবে শক্তিশালী হয়ে ওঠে। এই শক্তির কারণেই নন-পোলার অণুগুলো ক্রিস্টাল কাঠামোর ভেতরে প্রবেশ করে একসঙ্গে থাকতে পারে। এই ঘটনা পৃথিবীতে প্রায় অসম্ভব।
অধ্যাপক রাম বলেন, ‘এই আবিষ্কার টাইটানের ভূতত্ত্ব এবং এর অদ্ভুত সব ল্যান্ডস্কেপ—যেমন হ্রদ, সমুদ্র এবং বালিয়াড়ি—বোঝার ক্ষেত্রে খুবই সহায়ক হবে।’
তিনি আরও মন্তব্য করেন, টাইটানের মতো চরম, প্রতিকূল পরিবেশে প্রাণের উৎপত্তির আগে রসায়ন কীভাবে কাজ করতে পারত, এই গবেষণা সেই বিষয়েও নতুন অন্তর্দৃষ্টি যোগ করবে। হাইড্রোজেন সায়ানাইডের এই ভূমিকা প্রাণ সৃষ্টির মৌলিক উপাদান, যেমন প্রোটিন তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় অ্যামিনো অ্যাসিড এবং জেনেটিক কোডের জন্য প্রয়োজনীয় নিউক্লিওবেস অজৈবিকভাবে তৈরি হওয়ার প্রক্রিয়া বুঝতে সাহায্য করতে পারে।

পদার্থবিজ্ঞানে ২০২৪ সালের নোবেল পুরস্কার ঘোষণা হবে আজ। যে কোনো ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ যেসব গবেষণা বা আবিষ্কার নোবেল পায়নি, সেগুলো মোটামুটি প্রতিবারই সম্ভাব্য বিজয়ী হিসেবে আলোচিত হয়। তাই পদার্থবিজ্ঞানের গত বছরের তালিকার প্রায় সবাই-ই আছেন আলোচনায়।
০৮ অক্টোবর ২০২৪
নোবেলজয়ী আমেরিকান বিজ্ঞানী জেমস ওয়াটসন মারা গেছেন। তাঁর বয়স হয়েছিল ৯৭ বছর। ডিএনএর (DNA) যুগান্তকারী ডাবল হেলিক্স কাঠামো আবিষ্কারকদের অন্যতম তিনি। তিনি কোল্ড স্প্রিং হারবার ল্যাবরেটরিতে দীর্ঘদিন গবেষণা করেছেন। ল্যাবরেটরি কর্তৃপক্ষ তাঁর মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে বলে বিবিসির প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
২ দিন আগে
বেলজিয়ামের জীবাশ্মবিজ্ঞানী মিৎসে গেরমোঁপ্রে দাবি করেছেন, তাঁর আবিষ্কার মানুষের সঙ্গে কুকুরের বন্ধুত্বের ইতিহাসকে নতুন করে লিখতে পারে। তাঁর মতে, কুকুরের গৃহপালিত হওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল আজ থেকে প্রায় ৩৫ হাজার বছর আগে, যা প্রচলিত ধারণার চেয়ে প্রায় ২০ হাজার বছর আগে!
২ দিন আগে
বারবিকিউ পার্টি চলছে এখন মহাকাশেও! তিয়ানগং স্পেস স্টেশনে চীনের ছয়জন নভোচারী এই আয়োজন করেছেন। চীনের অ্যাস্ট্রোনট সেন্টার (এসিসি) প্রকাশিত এক ভিডিওতে দেখা যায়, শেনঝো–২০ ও শেনঝো–২১ মিশনের নভোচারীরা একটি নতুন ধরনের ওভেন ব্যবহার করে রান্না করছেন, যা মহাকাশের মাইক্রোগ্র্যাভিটি পরিবেশে ব্যবহারের উপযোগী
৫ দিন আগে