আজকের পত্রিকা ডেস্ক
প্রাগৈতিহাসিক যুগের এক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জেনেছেন গবেষকেরা। নিয়ায়াঙ্গা (Nyayanga) নামের এক পুরাতাত্ত্বিক স্থান থেকে উদ্ধার হওয়া ৪০১টি প্রাচীন পাথরের হাতিয়ার বিশ্লেষণ করে গবেষকেরা জানিয়েছেন, ৩০ লাখ থেকে ২৬ লাখ বছর আগেই পরিকল্পনা করে পাথর বহন করত প্রাচীন মানব আত্মীয়রা বা প্রাইমেটরা। কারণ, এসব হাতিয়ারের বেশির ভাগই এসেছে প্রায় ১০ কিলোমিটার (৬ মাইল) দূরের স্থান থেকে।
উল্লেখ্য, প্রাইমেট হলো একটি স্তন্যপায়ী প্রাণীর শ্রেণি বা বর্গ যার মধ্যে মানুষসহ বানর, লেজবিহীন বানর, লেমুর ইত্যাদি অন্তর্ভুক্ত।
এত দীর্ঘ দূরত্বে পাথর বহনের এ ঘটনা এতটাই তাৎপর্যপূর্ণ যে এটি আধুনিক মানব প্রজাতির উদ্ভবের প্রায় ৬ লাখ বছর আগেই পরিকল্পিত আচরণের প্রমাণ দেয় বলে মনে করছেন গবেষকেরা। গবেষণাটি গতকাল শুক্রবার (১৫ আগস্ট) প্রকাশিত হয়েছে ‘সায়েন্স অ্যাডভান্সেস’ জার্নালে।
গবেষক দলটি জানিয়েছে, এসব পাথর ব্যবহৃত হয়েছিল ‘ওল্ডোওয়ান’ (Oldowan) নামে পরিচিত আদিম হাতিয়ার তৈরির প্রাচীনতম এক কৌশলে। এই কৌশলে একটি পাথরের সাহায্যে আরেকটি পাথর দিয়ে অল্প অল্প করে ভেঙে হাতিয়ার তৈরি করা হতো।
তবে গবেষকদের কাছে সবচেয়ে বিস্ময়কর বিষয়টি হলো—ব্যবহৃত পাথরের উৎস। এগুলোর বেশির ভাগই পাওয়া গেছে এমন এলাকা থেকে, যা নিয়ায়াঙ্গা থেকে অন্তত ৯ দশমিক ৭ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। অর্থাৎ, এই পাথর বহনে ছিল স্পষ্ট পরিকল্পনা ও দূরদর্শিতা।
আমেরিকার ন্যাশনাল মিউজিয়াম অব ন্যাচারাল হিস্টোরির প্যালিওঅ্যানথ্রোপলজিস্ট এবং গবেষণার সহলেখক রিক পটস বলেন, ‘গবেষকেরা প্রায়ই হাতিয়ারের দিকে নজর দেয়। তবে ওল্ডোওয়ানের সংস্কৃতির আসল উদ্ভাবনটি সম্ভবত এক স্থান থেকে অন্য স্থানে সম্পদ বহনের বিষয়টি ছিল। খাবারের উর্বরতা শক্তির উৎসে পাথর নিয়ে যাওয়ার জ্ঞান ও উদ্দেশ্য সম্ভবত সেই সময়কার হাতিয়ার তৈরির আচরণের গুরুত্বপূর্ণ অংশ ছিল।’
শিম্পাঞ্জিরাও (Pan roglodytes) কিছুটা দূরত্বে, সর্বোচ্চ ২ কিলোমিটার পর্যন্ত, পাথর বহন করতে পারে। এরা বাদাম ভাঙতে পাথর ব্যবহার করার নজির আছে। তবে তা মোটেও একটানা নয়; বরং ছোট ছোট দূরত্বে ধাপে ধাপে এগিয়ে যাওয়ার মাধ্যমে।
প্রাচীনতম পাথরের হাতিয়ারের বয়স প্রায় ৩৩ লাখ বছর, যা আমাদের মানবগোষ্ঠী (গণহোমো) শুরু হওয়ার সময় থেকে প্রায় ১০ লাখ বছর আগে তৈরি হয়েছিল। গবেষকদের মতে, এসব হাতিয়ার সম্ভবত তৈরি করেছিলেন অস্ট্রালোপিথেকাস লুসির মতো মানুষের আদি পূর্বপুরুষেরা। তবে ওই সময়ের টুলগুলোতে ব্যবহৃত পাথর পাওয়া যেত স্থানীয়ভাবে বা খুব বেশি হলে প্রায় ৩ কিলোমিটার (১ দশমিক ৭ মাইল) দূরের এলাকা থেকে।
প্রায় ২০ লাখ বছর আগে, হোমো ইরেকটাসসহ মানব পূর্বপুরুষেরা বড় ধরনের পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে গিয়েছিল। তাদের মস্তিষ্কের আকার ও শরীরের গঠন বৃদ্ধি পায়, কেউ কেউ আফ্রিকার বাইরে অভিবাসন শুরু করে এবং রান্না করে মাংস খাওয়ার প্রথাও চালু হয়। এ ছাড়া এই সময়ে তারা আগাম পরিকল্পনা করার দক্ষতাও বিকাশ করেছিল। তাদের টুল বানানোর জন্য প্রয়োজনীয় পাথর বেছে নেওয়া শুরু করেছিল এবং সেগুলো অনেক দূর থেকে সংগ্রহ করত।
কিন্তু নিয়ায়াঙ্গার এই হাতিয়ারগুলো ওই সময়কাল থেকেও হোমো ইরেকটাস যুগেরও ৬ লাখ বছর আগের। অর্থাৎ সেই সময়ের প্রাচীন মানব আত্মীয়রাও দূর থেকে পাথর বাছাই করে নিয়ে আসত। এমনকি এই আবিষ্কার সম্ভবত মানবগোষ্ঠী (Genus Homo) উদ্ভবেরও আগের সময়ের।
গবেষক পটস বলছেন, ‘এটা বোঝায়, খাবার প্রক্রিয়াজাত করতে কী দরকার এবং সেই জিনিসগুলো কোথায় পাওয়া যাবে—এই ধারণা ও মানসিক মানচিত্র বানানোর ক্ষমতা তখনকার মানুষের আদি আত্মীয়দের ছিল।’
তবে নিয়ায়াঙ্গায় পাওয়া হাতিয়ারগুলো কে বা কোন প্রজাতি তৈরি করেছে, তা নিশ্চিতভাবে বলা যাচ্ছে না।
ক্লিভল্যান্ড মিউজিয়াম অব ন্যাচারাল হিস্টোরির জৈব-নৃবিজ্ঞানী এবং গবেষণার আরেক সহলেখক এমা ফিনস্টোন বলেন, ‘আপনি যদি কোনো হোমিনিন (মানুষের আগের প্রজাতি) ফসিলকে হাতিয়ার হাতে না পান, তাহলে নিশ্চিতভাবে বলা যাবে না যে কোন প্রজাতি কোন হাতিয়ার তৈরি করেছে।’
এই ক্ষেত্রে, ওল্ডোওয়ান হাতিয়ারের পাশে কিছু জীবাশ্ম মেলেছে যেগুলো প্যারানথ্রোপাসগণের বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এত দূর থেকে পাথর এনে ব্যবহার করা প্রমাণ করে এই হাতিয়ারগুলো নির্মাতারা অনেক বেশি বুদ্ধিমান ছিলেন।
ফিনস্টোন বলেন, ‘মানুষ শুরু থেকেই টুল বা যন্ত্রের ওপর নির্ভর করেছে অভিযোজনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায়। এই সম্পর্কের শুরুটা বুঝতে পারলে, আমরা দেখতে পাব—আজকের প্রযুক্তিনির্ভর জগতেও তার সঙ্গে আমাদের কত গভীর সংযোগ।’
তথ্যসূত্র: লাইভ সায়েন্স
প্রাগৈতিহাসিক যুগের এক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জেনেছেন গবেষকেরা। নিয়ায়াঙ্গা (Nyayanga) নামের এক পুরাতাত্ত্বিক স্থান থেকে উদ্ধার হওয়া ৪০১টি প্রাচীন পাথরের হাতিয়ার বিশ্লেষণ করে গবেষকেরা জানিয়েছেন, ৩০ লাখ থেকে ২৬ লাখ বছর আগেই পরিকল্পনা করে পাথর বহন করত প্রাচীন মানব আত্মীয়রা বা প্রাইমেটরা। কারণ, এসব হাতিয়ারের বেশির ভাগই এসেছে প্রায় ১০ কিলোমিটার (৬ মাইল) দূরের স্থান থেকে।
উল্লেখ্য, প্রাইমেট হলো একটি স্তন্যপায়ী প্রাণীর শ্রেণি বা বর্গ যার মধ্যে মানুষসহ বানর, লেজবিহীন বানর, লেমুর ইত্যাদি অন্তর্ভুক্ত।
এত দীর্ঘ দূরত্বে পাথর বহনের এ ঘটনা এতটাই তাৎপর্যপূর্ণ যে এটি আধুনিক মানব প্রজাতির উদ্ভবের প্রায় ৬ লাখ বছর আগেই পরিকল্পিত আচরণের প্রমাণ দেয় বলে মনে করছেন গবেষকেরা। গবেষণাটি গতকাল শুক্রবার (১৫ আগস্ট) প্রকাশিত হয়েছে ‘সায়েন্স অ্যাডভান্সেস’ জার্নালে।
গবেষক দলটি জানিয়েছে, এসব পাথর ব্যবহৃত হয়েছিল ‘ওল্ডোওয়ান’ (Oldowan) নামে পরিচিত আদিম হাতিয়ার তৈরির প্রাচীনতম এক কৌশলে। এই কৌশলে একটি পাথরের সাহায্যে আরেকটি পাথর দিয়ে অল্প অল্প করে ভেঙে হাতিয়ার তৈরি করা হতো।
তবে গবেষকদের কাছে সবচেয়ে বিস্ময়কর বিষয়টি হলো—ব্যবহৃত পাথরের উৎস। এগুলোর বেশির ভাগই পাওয়া গেছে এমন এলাকা থেকে, যা নিয়ায়াঙ্গা থেকে অন্তত ৯ দশমিক ৭ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। অর্থাৎ, এই পাথর বহনে ছিল স্পষ্ট পরিকল্পনা ও দূরদর্শিতা।
আমেরিকার ন্যাশনাল মিউজিয়াম অব ন্যাচারাল হিস্টোরির প্যালিওঅ্যানথ্রোপলজিস্ট এবং গবেষণার সহলেখক রিক পটস বলেন, ‘গবেষকেরা প্রায়ই হাতিয়ারের দিকে নজর দেয়। তবে ওল্ডোওয়ানের সংস্কৃতির আসল উদ্ভাবনটি সম্ভবত এক স্থান থেকে অন্য স্থানে সম্পদ বহনের বিষয়টি ছিল। খাবারের উর্বরতা শক্তির উৎসে পাথর নিয়ে যাওয়ার জ্ঞান ও উদ্দেশ্য সম্ভবত সেই সময়কার হাতিয়ার তৈরির আচরণের গুরুত্বপূর্ণ অংশ ছিল।’
শিম্পাঞ্জিরাও (Pan roglodytes) কিছুটা দূরত্বে, সর্বোচ্চ ২ কিলোমিটার পর্যন্ত, পাথর বহন করতে পারে। এরা বাদাম ভাঙতে পাথর ব্যবহার করার নজির আছে। তবে তা মোটেও একটানা নয়; বরং ছোট ছোট দূরত্বে ধাপে ধাপে এগিয়ে যাওয়ার মাধ্যমে।
প্রাচীনতম পাথরের হাতিয়ারের বয়স প্রায় ৩৩ লাখ বছর, যা আমাদের মানবগোষ্ঠী (গণহোমো) শুরু হওয়ার সময় থেকে প্রায় ১০ লাখ বছর আগে তৈরি হয়েছিল। গবেষকদের মতে, এসব হাতিয়ার সম্ভবত তৈরি করেছিলেন অস্ট্রালোপিথেকাস লুসির মতো মানুষের আদি পূর্বপুরুষেরা। তবে ওই সময়ের টুলগুলোতে ব্যবহৃত পাথর পাওয়া যেত স্থানীয়ভাবে বা খুব বেশি হলে প্রায় ৩ কিলোমিটার (১ দশমিক ৭ মাইল) দূরের এলাকা থেকে।
প্রায় ২০ লাখ বছর আগে, হোমো ইরেকটাসসহ মানব পূর্বপুরুষেরা বড় ধরনের পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে গিয়েছিল। তাদের মস্তিষ্কের আকার ও শরীরের গঠন বৃদ্ধি পায়, কেউ কেউ আফ্রিকার বাইরে অভিবাসন শুরু করে এবং রান্না করে মাংস খাওয়ার প্রথাও চালু হয়। এ ছাড়া এই সময়ে তারা আগাম পরিকল্পনা করার দক্ষতাও বিকাশ করেছিল। তাদের টুল বানানোর জন্য প্রয়োজনীয় পাথর বেছে নেওয়া শুরু করেছিল এবং সেগুলো অনেক দূর থেকে সংগ্রহ করত।
কিন্তু নিয়ায়াঙ্গার এই হাতিয়ারগুলো ওই সময়কাল থেকেও হোমো ইরেকটাস যুগেরও ৬ লাখ বছর আগের। অর্থাৎ সেই সময়ের প্রাচীন মানব আত্মীয়রাও দূর থেকে পাথর বাছাই করে নিয়ে আসত। এমনকি এই আবিষ্কার সম্ভবত মানবগোষ্ঠী (Genus Homo) উদ্ভবেরও আগের সময়ের।
গবেষক পটস বলছেন, ‘এটা বোঝায়, খাবার প্রক্রিয়াজাত করতে কী দরকার এবং সেই জিনিসগুলো কোথায় পাওয়া যাবে—এই ধারণা ও মানসিক মানচিত্র বানানোর ক্ষমতা তখনকার মানুষের আদি আত্মীয়দের ছিল।’
তবে নিয়ায়াঙ্গায় পাওয়া হাতিয়ারগুলো কে বা কোন প্রজাতি তৈরি করেছে, তা নিশ্চিতভাবে বলা যাচ্ছে না।
ক্লিভল্যান্ড মিউজিয়াম অব ন্যাচারাল হিস্টোরির জৈব-নৃবিজ্ঞানী এবং গবেষণার আরেক সহলেখক এমা ফিনস্টোন বলেন, ‘আপনি যদি কোনো হোমিনিন (মানুষের আগের প্রজাতি) ফসিলকে হাতিয়ার হাতে না পান, তাহলে নিশ্চিতভাবে বলা যাবে না যে কোন প্রজাতি কোন হাতিয়ার তৈরি করেছে।’
এই ক্ষেত্রে, ওল্ডোওয়ান হাতিয়ারের পাশে কিছু জীবাশ্ম মেলেছে যেগুলো প্যারানথ্রোপাসগণের বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এত দূর থেকে পাথর এনে ব্যবহার করা প্রমাণ করে এই হাতিয়ারগুলো নির্মাতারা অনেক বেশি বুদ্ধিমান ছিলেন।
ফিনস্টোন বলেন, ‘মানুষ শুরু থেকেই টুল বা যন্ত্রের ওপর নির্ভর করেছে অভিযোজনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায়। এই সম্পর্কের শুরুটা বুঝতে পারলে, আমরা দেখতে পাব—আজকের প্রযুক্তিনির্ভর জগতেও তার সঙ্গে আমাদের কত গভীর সংযোগ।’
তথ্যসূত্র: লাইভ সায়েন্স
মানুষের মস্তিষ্কের ভেতর নীরব চিন্তাভাবনা বা ‘ইনার স্পিচ’ (মনের কথা) শনাক্ত করার কৌশল উদ্ভাবন করেছেন বিজ্ঞানীরা। মস্তিষ্কের কম্পিউটার ইন্টারফেস (বিসিআই) প্রযুক্তির ক্ষেত্রে এটিকে একটি বড় অগ্রগতি বলে বিবেচনা করা হচ্ছে।
১ দিন আগেযুক্তরাষ্ট্রের জর্জিয়া অঙ্গরাজ্যের একটি বাড়ির ওপর আছড়ে পড়া এক উল্কাপিণ্ডকে পৃথিবীর থেকেও প্রাচীন বলে শনাক্ত করেছেন বিজ্ঞানীরা। ইউনিভার্সিটি অব জর্জিয়ার এক গবেষণায় উঠে এসেছে, এই উল্কাপিণ্ডের বয়স ৪৫৬ কোটি বছর—যা পৃথিবীর বর্তমান আনুমানিক বয়স ৪৫৪ কোটি বছরের তুলনায় প্রায় ২ কোটি বছর বেশি।
৩ দিন আগেআন্তর্জাতিক মহাকাশ গবেষণায় আবারও চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছেন হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যোতির্বিদ অধ্যাপক আভি লোয়েব। তিনি দাবি করেছেন, সৌরজগতের দিকে ধেয়ে আসা ‘৩১ /অ্যাটলাস’ (31 /ATLAS) নামের একটি মহাজাগতিক বস্তু সম্ভবত প্রাকৃতিক নয়, বরং এটি কোনো বুদ্ধিমান সভ্যতার তৈরি করা প্রযুক্তিগত বস্তু হতে পারে।
৩ দিন আগেমানববর্জ্যকে প্রক্রিয়াজাত করে তৈরি করা বায়োচার বা একধরনের শুষ্ক চারকোল সার সংকট মোকাবিলা, পরিবেশদূষণ হ্রাস ও জ্বালানি সাশ্রয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। সম্প্রতি প্রকাশিত এক গবেষণায় এমন তথ্য উঠে এসেছে। গবেষকেরা বলছেন, এটি কেবল কৃষি নয়, বরং বৈশ্বিক খাদ্যনিরাপত্তা, অর্থনীতি ও ভূরাজনীতির
৪ দিন আগে