অ্যালার্জি, মশার কামড়, বসন্ত, হাম, ঘামাচি, খোস–পাঁচড়া, খুশকি ইত্যাদি কারণে ত্বক চুলকাতে পারে। চুলকানি উপেক্ষা করা কঠিন। ত্বক চুলকালে আরাম লাগার অনুভূতি হয়।
ত্বক চুলকানো একটি সহজাত প্রবৃত্তি হলেও এর পেছনের বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যাটি কিছুটা জটিল। চুলকানিকে বৈজ্ঞানিক ভাষায় বলে প্রুরিটাস।
ত্বক চুলকানোর সময় এবং পরে আরাম লাগার পেছনে বিবর্তনীয় ও স্নায়বিক কারণ রয়েছে।
সাধারণভাবে চুলকানি হলো ত্বকে অস্বস্তিবোধ, যা আঁচড়ের আকাঙ্ক্ষাকে প্ররোচিত করে। জৈবিকভাবে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিরক্ষামূলক প্রক্রিয়া, যা ত্বকের সম্ভাব্য বিপদ যেমন: পোকামাকড়, পরজীবী বা বিরক্তিকর বিষয়ে সতর্ক করে। কোনো কিছু ত্বকে অস্বস্তি তৈরি করলে সেটি প্রুরিসেপ্টর নামক নির্দিষ্ট স্নায়ু প্রান্তগুলোকে উদ্দীপিত করে।
প্রিউরিসেপ্টরগুলো একবার সক্রিয় হয়ে গেলে প্রান্তীয় স্নায়ুগুলোর মাধ্যমে সুষুম্নাকাণ্ডে সংকেত পাঠায়, যা মস্তিষ্কে সেই সংকেত বহন করে। চুলকানির সংকেত মস্তিষ্কের সোমাটোসেন্সরি করটেক্স নামে একটি স্থানে পৌঁছায়, মস্তিষ্কের এ অংশ স্পর্শানুভূতি–সংক্রান্ত সংকেত প্রক্রিয়া করে। মজার বিষয় হলো, সংকেতটি স্মৃতি ও আবেগের জন্য দায়ী মস্তিষ্কের অন্যান্য স্থানেও পৌঁছায়। তাই চুলকানির অভিজ্ঞতা শারীরবৃত্তীয় থেকে অনেক বেশি মনস্তাত্ত্বিক হতে পারে।
যখন ত্বক চুলকানো হয়, তখন ক্রিয়াটি স্নায়ুতন্তুকে উদ্দীপিত করে। স্নায়ুতন্তু অন্যান্য সংবেদন যেমন: ব্যথা ও তাপমাত্রার সংকেত বহন করে। ত্বক চুলকালে একপর্যায়ে চুলকানির আকাঙ্ক্ষা সৃষ্টিকারী সংবেদই শুধু নির্মূল হয় না, এটি নতুন ধরনের সংবেদ তৈরি করে মস্তিষ্কে পাঠায় যা চুলকানির সংকেতকেও ছাপিয়ে যায়। চুলকালে হালকা সহনীয় ব্যথাও তৈরি হয়, এই অনুভূতি মস্তিষ্ককে চুলকানির অনুভূতি থেকে বিচ্যুত করে। এই বিভ্রান্তির কারণেই চুলকানোর পর এত ভালো লাগে! চুলকালেই আরাম বোধ হয় ব্যাপারটি এমন নয়, মূলত ব্যথার অনুভূতি থেকে চুলকানো বন্ধ করলে মস্তিষ্ক সাময়িক সময়ের জন্য চুলকানির তীব্র আকাঙ্ক্ষা থেকে বিরতি পায়— এটিই আরামের অনুভূতি দেয়।
সংবেদকে অগ্রাধিকার দেওয়ার মস্তিষ্কের একটি চতুর কৌশল হলো এই স্নায়বিক প্রক্রিয়া। মানবদেহ প্রায় সব সময় অগণিত উদ্দীপনায় সাড়া দেয়। তবে একটি সংবেদ আরেক সংবেদের চেয়ে বেশি গুরুত্ব পেতে পারে। গুরুত্বের দিক থেকে ব্যথা অবশ্যই চুলকানির চেয়ে অগ্রাধিকার পায়। তাই ত্বক চুলকানোর ফলে যে হালকা ব্যথা অনুভূত হয়, মস্তিষ্ক সেই সংবেদকেই অগ্রাধিকার দিয়ে চুলকানির অনুভবকে কিছুক্ষণের জন্য উপেক্ষা করে।
এ ছাড়া চুলকালে মস্তিষ্ক থেকে সেরোটোনিন হরমোন ক্ষরিত হয়। এই হরমোন একটি নিউরোট্রান্সমিটার (একপ্রকার রাসায়নিক বার্তাবাহক যা সিন্যাপস বা স্নায়ুসন্ধি দিয়ে এক নিউরন থেকে পরবর্তী নিউরনে বার্তা পাঠায়), এই হরমোন ক্ষরিত হলে ভালো থাকা ও সুখের অনুভূতি হয়। চুলকানোর ফলে সেরোটোনিন ক্ষরণে আরামের অনুভূতি বাড়ে এবং আরও বেশি চুলকানোর জন্য উদ্বুদ্ধ করে।
গবেষকেরা এই চক্র ভাঙার জন্য গবেষণা করছেন। কারণ যারা দীর্ঘস্থায়ী চুলকানি রোগে আক্রান্ত তাদের জন্য এই গবেষণা গুরুত্বপূর্ণ।
বিবর্তনীয় দৃষ্টিভঙ্গি থেকে চুলকানির চক্রটি বোঝা যায়। ত্বক থেকে ক্ষতিকারক পোকামাকড় তাড়ানো বা লতাপাতার সংস্পর্শ এড়ানোর জন্য চুলকানির অনুভূতি মানুষের পূর্বপুরুষদের সাহায্য করেছে। তবে আধুনিক মানুষের জন্য এই বিবর্তনীয় সুবিধাটি সমস্যার কারণ হতে পারে।
অতিরিক্ত চুলকানোর ফলে ত্বকের ক্ষতি হতে পারে। এটি কিছুক্ষণের জন্য আরাম দিলেও সংক্রমণের কারণ হতে পারে বা ত্বকের চুলকানি আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে। চুলকানির প্রশান্তিদায়ক ফাঁদে না পড়ে এর অন্তর্নিহিত কারণ শনাক্ত এবং চিকিৎসা করা গুরুত্বপূর্ণ।
তথ্যসূত্র: মিরেজ নিউজ
অ্যালার্জি, মশার কামড়, বসন্ত, হাম, ঘামাচি, খোস–পাঁচড়া, খুশকি ইত্যাদি কারণে ত্বক চুলকাতে পারে। চুলকানি উপেক্ষা করা কঠিন। ত্বক চুলকালে আরাম লাগার অনুভূতি হয়।
ত্বক চুলকানো একটি সহজাত প্রবৃত্তি হলেও এর পেছনের বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যাটি কিছুটা জটিল। চুলকানিকে বৈজ্ঞানিক ভাষায় বলে প্রুরিটাস।
ত্বক চুলকানোর সময় এবং পরে আরাম লাগার পেছনে বিবর্তনীয় ও স্নায়বিক কারণ রয়েছে।
সাধারণভাবে চুলকানি হলো ত্বকে অস্বস্তিবোধ, যা আঁচড়ের আকাঙ্ক্ষাকে প্ররোচিত করে। জৈবিকভাবে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিরক্ষামূলক প্রক্রিয়া, যা ত্বকের সম্ভাব্য বিপদ যেমন: পোকামাকড়, পরজীবী বা বিরক্তিকর বিষয়ে সতর্ক করে। কোনো কিছু ত্বকে অস্বস্তি তৈরি করলে সেটি প্রুরিসেপ্টর নামক নির্দিষ্ট স্নায়ু প্রান্তগুলোকে উদ্দীপিত করে।
প্রিউরিসেপ্টরগুলো একবার সক্রিয় হয়ে গেলে প্রান্তীয় স্নায়ুগুলোর মাধ্যমে সুষুম্নাকাণ্ডে সংকেত পাঠায়, যা মস্তিষ্কে সেই সংকেত বহন করে। চুলকানির সংকেত মস্তিষ্কের সোমাটোসেন্সরি করটেক্স নামে একটি স্থানে পৌঁছায়, মস্তিষ্কের এ অংশ স্পর্শানুভূতি–সংক্রান্ত সংকেত প্রক্রিয়া করে। মজার বিষয় হলো, সংকেতটি স্মৃতি ও আবেগের জন্য দায়ী মস্তিষ্কের অন্যান্য স্থানেও পৌঁছায়। তাই চুলকানির অভিজ্ঞতা শারীরবৃত্তীয় থেকে অনেক বেশি মনস্তাত্ত্বিক হতে পারে।
যখন ত্বক চুলকানো হয়, তখন ক্রিয়াটি স্নায়ুতন্তুকে উদ্দীপিত করে। স্নায়ুতন্তু অন্যান্য সংবেদন যেমন: ব্যথা ও তাপমাত্রার সংকেত বহন করে। ত্বক চুলকালে একপর্যায়ে চুলকানির আকাঙ্ক্ষা সৃষ্টিকারী সংবেদই শুধু নির্মূল হয় না, এটি নতুন ধরনের সংবেদ তৈরি করে মস্তিষ্কে পাঠায় যা চুলকানির সংকেতকেও ছাপিয়ে যায়। চুলকালে হালকা সহনীয় ব্যথাও তৈরি হয়, এই অনুভূতি মস্তিষ্ককে চুলকানির অনুভূতি থেকে বিচ্যুত করে। এই বিভ্রান্তির কারণেই চুলকানোর পর এত ভালো লাগে! চুলকালেই আরাম বোধ হয় ব্যাপারটি এমন নয়, মূলত ব্যথার অনুভূতি থেকে চুলকানো বন্ধ করলে মস্তিষ্ক সাময়িক সময়ের জন্য চুলকানির তীব্র আকাঙ্ক্ষা থেকে বিরতি পায়— এটিই আরামের অনুভূতি দেয়।
সংবেদকে অগ্রাধিকার দেওয়ার মস্তিষ্কের একটি চতুর কৌশল হলো এই স্নায়বিক প্রক্রিয়া। মানবদেহ প্রায় সব সময় অগণিত উদ্দীপনায় সাড়া দেয়। তবে একটি সংবেদ আরেক সংবেদের চেয়ে বেশি গুরুত্ব পেতে পারে। গুরুত্বের দিক থেকে ব্যথা অবশ্যই চুলকানির চেয়ে অগ্রাধিকার পায়। তাই ত্বক চুলকানোর ফলে যে হালকা ব্যথা অনুভূত হয়, মস্তিষ্ক সেই সংবেদকেই অগ্রাধিকার দিয়ে চুলকানির অনুভবকে কিছুক্ষণের জন্য উপেক্ষা করে।
এ ছাড়া চুলকালে মস্তিষ্ক থেকে সেরোটোনিন হরমোন ক্ষরিত হয়। এই হরমোন একটি নিউরোট্রান্সমিটার (একপ্রকার রাসায়নিক বার্তাবাহক যা সিন্যাপস বা স্নায়ুসন্ধি দিয়ে এক নিউরন থেকে পরবর্তী নিউরনে বার্তা পাঠায়), এই হরমোন ক্ষরিত হলে ভালো থাকা ও সুখের অনুভূতি হয়। চুলকানোর ফলে সেরোটোনিন ক্ষরণে আরামের অনুভূতি বাড়ে এবং আরও বেশি চুলকানোর জন্য উদ্বুদ্ধ করে।
গবেষকেরা এই চক্র ভাঙার জন্য গবেষণা করছেন। কারণ যারা দীর্ঘস্থায়ী চুলকানি রোগে আক্রান্ত তাদের জন্য এই গবেষণা গুরুত্বপূর্ণ।
বিবর্তনীয় দৃষ্টিভঙ্গি থেকে চুলকানির চক্রটি বোঝা যায়। ত্বক থেকে ক্ষতিকারক পোকামাকড় তাড়ানো বা লতাপাতার সংস্পর্শ এড়ানোর জন্য চুলকানির অনুভূতি মানুষের পূর্বপুরুষদের সাহায্য করেছে। তবে আধুনিক মানুষের জন্য এই বিবর্তনীয় সুবিধাটি সমস্যার কারণ হতে পারে।
অতিরিক্ত চুলকানোর ফলে ত্বকের ক্ষতি হতে পারে। এটি কিছুক্ষণের জন্য আরাম দিলেও সংক্রমণের কারণ হতে পারে বা ত্বকের চুলকানি আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে। চুলকানির প্রশান্তিদায়ক ফাঁদে না পড়ে এর অন্তর্নিহিত কারণ শনাক্ত এবং চিকিৎসা করা গুরুত্বপূর্ণ।
তথ্যসূত্র: মিরেজ নিউজ
গণিত, প্রকৌশল, জ্যোতির্বিদ্যা ও চিকিৎসাবিদ্যার মতো বিষয়ে উচ্চতর বৈজ্ঞানিক জ্ঞান ছিল প্রাচীন মিসরীয়দের। তাঁরা তাত্ত্বিক জ্ঞানের চেয়ে ব্যবহারিক জ্ঞানকে বেশি প্রাধান্য দিতেন। অনেকের ধারণা, বিজ্ঞান আধুনিককালের আবিষ্কার, যার শিকড় প্রাচীন গ্রিক সভ্যতায়।
১৪ ঘণ্টা আগেপ্রস্তর যুগে চীনের পূর্বাঞ্চলে সমাজের নেতৃত্বে ছিল নারী। সম্প্রতি প্রাপ্ত ডিএনএ বিশ্লেষণে উঠে এসেছে এমনই অভূতপূর্ব তথ্য। প্রায় সাড়ে ৪ হাজার আগের কঙ্কালের জিনগত উপাদান বিশ্লেষণ করে বিজ্ঞানীরা জানতে পেরেছেন, সেই সময়কার সমাজ ছিল মাতৃতান্ত্রিক এবং সমাজের সদস্যরা অন্তত ১০ প্রজন্ম ধরে মায়ের বংশ অনুসারে...
১ দিন আগেপ্রতি বছর নদী, সমুদ্র ও অন্য বিভিন্ন জলাশয় থেকে প্রায় ১ ট্রিলিয়ন মাছ ধরা হয়। এদের বেশির ভাগই খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়। তবে এই বিপুল-সংখ্যক মাছ ধরার পরে তাদের যে পদ্ধতিতে মারা হয়, তা অত্যন্ত যন্ত্রণাদায়ক। সম্প্রতি প্রকাশিত এক গবেষণায় দেখা গেছে, মাছকে পানি থেকে তোলার পর তারা গড়ে প্রায় ২২ মিনিট পর্যন্ত
৪ দিন আগেপৃথিবীর সবচেয়ে শুষ্ক মরুভূমিগুলোর কেন্দ্রে অবস্থিত আরব অঞ্চল একসময় সবুজে মোড়ানো স্বর্গোদ্যান ছিল। মরুপ্রধান অঞ্চল হলেও পৃথিবীর দীর্ঘ ইতিহাসে এই ভূমি নানা সময়ে আর্দ্র আবহাওয়ার দেখা পেয়েছে, আর তখনই সেখানে জন্ম নিয়েছে লেক-নদী, বনভূমি এবং জীববৈচিত্র্যের স্বর্গ। সম্প্রতি প্রকাশিত এক গবেষণাপত্রে এমনটাই
৫ দিন আগে