প্রমিতি কিবরিয়া ইসলাম

আমাদের সৌরজগতের সীমানা ছাড়িয়ে পৃথিবী থেকে ১৫ বিলিয়নের (দেড় হাজার কোটি) মাইলেরও বেশি দূরে আন্তনাক্ষত্রিক মহাশূন্যে পাড়ি জমিয়েছে বাংলা ভাষা! এটি সম্ভব হয়েছে নাসার দুই মহাকাশযান ভয়েজার–১ এবং ভয়েজার–২–এর কল্যাণে। কারণ, এদের সঙ্গী হয়েছে মানবসভ্যতার এক অমূল্য রত্ন—‘গোল্ডেন রেকর্ড’, যেটিতে গ্রথিত আছে পৃথিবীর সংস্কৃতি, ভাষা, সংগীত এবং সভ্যতার বাছাইকৃত নমুনা। এই অমূল্য দলিল মহাকাশে অনন্তের পথে যাত্রা করেছে। এসব নমুনার মধ্যে বাংলা ভাষাও রয়েছে।
মহাকাশযান দুটির যাত্রা শুরু হয় ৪৭ বছর আগে, ১৯৭৭ সালে। এগুলোতে রয়েছে গোল্ডেন রেকর্ড নামের গ্রামোফোন রেকর্ড। তামার ওপরে সোনার প্রলেপ দিয়ে এই রেকর্ডটি বানানো হয়েছে। আর এর মোড়ক বানানো হয়েছে অ্যালুমিনিয়াম ও ইউরেনিয়াম–২৩৮ আইসোটোপ দিয়ে। নাসার বিজ্ঞানীরা বলছেন, এই ধাতব চাকতি কোটি কোটি বছর অক্ষত থাকবে।
গোল্ডেন রেকর্ড শুধু একটি সংগীতের রেকর্ড নয়, এটি পৃথিবীর মানবসভ্যতার নিদর্শন। পৃথিবী গ্রহের সাংস্কৃতিক ও প্রাকৃতিক বৈচিত্র্যের একটি অমূল্য দলিল এটি। এতে নানা প্রান্তের সংগীত, ছবি, প্রাণীর ডাক এবং প্রাকৃতিক শব্দের রেকর্ড রয়েছে। এর মধ্যে যেমন রয়েছে বিখ্যাত সংগীত, যেমন—বিটলসের ‘হ্যালো, গুডবাই’, তেমনি দক্ষিণ আফ্রিকার ঐতিহ্যবাহী ড্রামের বিট, পৃথিবীর নানা প্রাণীর ডাক—এমনকি সমুদ্রের গর্জনও।
তবে এর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নিদর্শনটি হলো মানুষের ভাষার বৈচিত্র্য। গোল্ডেন রেকর্ডে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে পৃথিবীর ৫৫টি ভাষার সম্ভাষণ, যার মধ্যে রয়েছে—ইংরেজি, ফরাসি, স্প্যানিশ, আরবি, চীনা মান্দারিন, হিন্দি, উর্দুসহ আরও অনেক ভাষা। এমনকি দক্ষিণ আমেরিকার আদিবাসী ভাষারও রয়েছে এটিতে।
এর মধ্যে বাংলা ভাষার উপস্থিতি একটি গৌরবের বিষয়। আমাদের মাতৃভাষায় একটি ছোট্ট বার্তা রয়েছে, যা ভিনগ্রহের বুদ্ধিমান প্রাণীর কাছে আমাদের অস্তিত্ব জানান দিতে পারে এটি।
গোল্ডেন রেকর্ডে সম্ভাষণটি শুরুর এক মিনিট আট সেকেন্ডের মাথায় বাংলা ভাষায় সম্ভাষণ শোনা যাবে। সেখানে বলা হয়, ‘নমস্কার, বিশ্বে শান্তি হোক।’ এটি ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের রাজনীতিবিদ সুব্রত মুখার্জির কণ্ঠ।
২০১৫ সালের জুলাই মাসে এই রেকর্ডের অডিও অংশটি মিউজিক স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্ম সাউন্ড ক্লাউডে প্রকাশ করেছে নাসা।
গোল্ডেন রেকর্ডে অন্তর্ভুক্ত এমন আরও কয়েকটি ভাষার সম্ভাষণ হলো—
হিন্দি: পৃথিবীবাসীর পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা।
নেপালি: পৃথিবীবাসীর পক্ষ থেকে আপনাদের শান্তিপূর্ণ ভবিষ্যৎ কামনা করছি।
ইংরেজি: পৃথিবীর শিশুদের পক্ষ থেকে হ্যালো।
আরবি: নক্ষত্ররাজির মধ্যে থাকা আমাদের বন্ধুদের প্রতি শুভেচ্ছা। একদিন আপনাদের সঙ্গে দেখা করতে পারব, আমরা এই আশা করি।
ক্যানটোনিজ (চীনা ভাষার একটি ধরন) : হাই, কেমন আছেন? আপনাদের শান্তি, সুস্থতা ও সুখ কামনা করি।
প্রাচীন ভাষাগোষ্ঠীর মধ্যে রয়েছে—
আক্কাদিয়ান: সবাই খুব ভালো থাকুক।
আরামাইক: সালাম বা শান্তি।
হিব্রু: সালম বা শান্তি।
ভয়েজার রেকর্ডের বিষয়বস্তু নির্বাচন করেছিল নাসার একটি কমিটি, যেটির প্রধান ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও বিখ্যাত জ্যোতির্বিদ ড. কার্ল সাগান। ড. সাগান এবং তাঁর সহকর্মীরা ১১৫টি ছবি এবং প্রকৃতির বিভিন্ন শব্দ সংগ্রহ করেছিলেন, যেমন—সমুদ্রের ঢেউ, বাতাস, বজ্রপাত, পাখি, তিমি এবং অন্যান্য প্রাণীর ডাক। এরপর তাঁরা বিভিন্ন সংস্কৃতি ও যুগ অনুযায়ী সংগীতও যুক্ত করেন। সেই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টার এবং জাতিসংঘের মহাসচিব কার্ট ওয়াল্ডহেইমের মুদ্রিত বার্তাও যোগ করেছিলেন।
বিজ্ঞানী কার্ল সাগান এবং তাঁর সহকর্মীরা বিশ্বাস করেছিলেন যে যদি কখনো মহাবিশ্বের কোনো বুদ্ধিমান প্রাণী এই রেকর্ডটি পায়, তাহলে তারা এই রেকর্ডের মাধ্যমে পৃথিবী এবং মানব প্রজাতি সম্পর্কে জানতে পারবে।
গোল্ডেন রেকর্ডে কিছু সাদা-কালো, কিছু রঙিন ছবি রাখা হয়েছে। যেমন—সুপারমার্কেটে বাজার করতে যাওয়া নারীর ছবি, মানুষ কত রকম ভঙ্গিতে খাওয়াদাওয়া করে তার ছবি। মানুষের ছবিসহ বিভিন্ন প্রাণী, কীটপতঙ্গ, গাছপালা, প্রাকৃতিক দৃশ্য ইত্যাদি। আবার কিছু বৈজ্ঞানিক ধারণার ছবিও সঙ্গে দেওয়া হয়েছে।
প্রতিটি রেকর্ড অ্যালুমিনিয়াম জ্যাকেটের রক্ষাকবচে সংরক্ষিত। এর সঙ্গে রয়েছে একটি কার্টিজ এবং একটি সুঁই। রেকর্ডটি কীভাবে বাজাতে হবে সেটির নির্দেশনা সংবলিত একটি চিত্রও দেওয়া হয়েছে।
ভয়েজার–১ ও ভয়েজার–২–এর প্রাথমিক মিশন ছিল—বৃহস্পতি ও শনি গ্রহের প্রকৃতি অনুসন্ধান করা, যা এরা যথেষ্ট সফলভাবে সম্পন্ন করেছিল। মহাকাশযান দুটি শনি গ্রহের বলয় এবং বৃহস্পতির চাঁদ আইওয়ের চিত্র ও তথ্য পৃথিবীতে পাঠায়। ভয়েজার–১ বৃহস্পতির চারপাশে একটি সরু বলয় এবং বৃহস্পতির দুটি নতুন চাঁদ থিবি ও মেটিস আবিষ্কার করেছে। এটি শনির পাঁচটি নতুন চাঁদ এবং একটি নতুন বলয়ও পেয়েছে, যা ‘জি–রিং’ নামে পরিচিত।
১৯৭৭ সালের ২০ আগস্ট ভয়েজার–২ এবং ৫ সেপ্টেম্বর ভয়েজার–১ উৎক্ষেপণ করা হয়। ১৯৭৭ সালের ১৫ ডিসেম্বর ভয়েজার–১ ভয়েজার ২–কে অতিক্রম করে যায়। মহাকাশযানটি মানুষের তৈরি প্রথম বস্তু, যা আমাদের সৌরজগৎ এবং সৌরবলয় ছাড়িয়ে আন্তঃনাক্ষত্রিক মহাকাশে প্রবেশ করেছে।
বর্তমানে, ভয়েজার–১ পৃথিবী থেকে ১৫ বিলিয়ন (দেড় হাজার কোটি) মাইলেরও বেশি দূরে অবস্থান করছে। আর এর সঙ্গী ভয়েজার–২ পৃথিবী থেকে ১২ বিলিয়ন (১ হাজার ২০০ কোটি) মাইলেরও দূরে রয়েছে। এদের যাত্রা থেমে নেই। নিয়মিত তারা পৃথিবীতে তথ্য–উপাত্ত পাঠাচ্ছে। তবে আরও দূরে চলে গেলে একসময় আর পৃথিবীতে তাদের পাঠানো কোনো তথ্য এসে পৌঁছাবে না। নাসার বিজ্ঞানীরা বলছেন, ভয়েজারের সঙ্গে পৃথিবীর যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হলেও কোনো একসময় বুদ্ধিমান ভিনগ্রহের প্রাণীরা এর সন্ধান পেলে গোল্ডেন রেকর্ডে রক্ষিত নিদর্শনগুলো দেখে জানতে পারবে নীল গ্রহে মানবসভ্যতার অস্তিত্বের কথা।
তথ্যসূত্র: নাসা ডট কম, স্ল্যাশগিয়ার, নিউজউইক

আমাদের সৌরজগতের সীমানা ছাড়িয়ে পৃথিবী থেকে ১৫ বিলিয়নের (দেড় হাজার কোটি) মাইলেরও বেশি দূরে আন্তনাক্ষত্রিক মহাশূন্যে পাড়ি জমিয়েছে বাংলা ভাষা! এটি সম্ভব হয়েছে নাসার দুই মহাকাশযান ভয়েজার–১ এবং ভয়েজার–২–এর কল্যাণে। কারণ, এদের সঙ্গী হয়েছে মানবসভ্যতার এক অমূল্য রত্ন—‘গোল্ডেন রেকর্ড’, যেটিতে গ্রথিত আছে পৃথিবীর সংস্কৃতি, ভাষা, সংগীত এবং সভ্যতার বাছাইকৃত নমুনা। এই অমূল্য দলিল মহাকাশে অনন্তের পথে যাত্রা করেছে। এসব নমুনার মধ্যে বাংলা ভাষাও রয়েছে।
মহাকাশযান দুটির যাত্রা শুরু হয় ৪৭ বছর আগে, ১৯৭৭ সালে। এগুলোতে রয়েছে গোল্ডেন রেকর্ড নামের গ্রামোফোন রেকর্ড। তামার ওপরে সোনার প্রলেপ দিয়ে এই রেকর্ডটি বানানো হয়েছে। আর এর মোড়ক বানানো হয়েছে অ্যালুমিনিয়াম ও ইউরেনিয়াম–২৩৮ আইসোটোপ দিয়ে। নাসার বিজ্ঞানীরা বলছেন, এই ধাতব চাকতি কোটি কোটি বছর অক্ষত থাকবে।
গোল্ডেন রেকর্ড শুধু একটি সংগীতের রেকর্ড নয়, এটি পৃথিবীর মানবসভ্যতার নিদর্শন। পৃথিবী গ্রহের সাংস্কৃতিক ও প্রাকৃতিক বৈচিত্র্যের একটি অমূল্য দলিল এটি। এতে নানা প্রান্তের সংগীত, ছবি, প্রাণীর ডাক এবং প্রাকৃতিক শব্দের রেকর্ড রয়েছে। এর মধ্যে যেমন রয়েছে বিখ্যাত সংগীত, যেমন—বিটলসের ‘হ্যালো, গুডবাই’, তেমনি দক্ষিণ আফ্রিকার ঐতিহ্যবাহী ড্রামের বিট, পৃথিবীর নানা প্রাণীর ডাক—এমনকি সমুদ্রের গর্জনও।
তবে এর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নিদর্শনটি হলো মানুষের ভাষার বৈচিত্র্য। গোল্ডেন রেকর্ডে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে পৃথিবীর ৫৫টি ভাষার সম্ভাষণ, যার মধ্যে রয়েছে—ইংরেজি, ফরাসি, স্প্যানিশ, আরবি, চীনা মান্দারিন, হিন্দি, উর্দুসহ আরও অনেক ভাষা। এমনকি দক্ষিণ আমেরিকার আদিবাসী ভাষারও রয়েছে এটিতে।
এর মধ্যে বাংলা ভাষার উপস্থিতি একটি গৌরবের বিষয়। আমাদের মাতৃভাষায় একটি ছোট্ট বার্তা রয়েছে, যা ভিনগ্রহের বুদ্ধিমান প্রাণীর কাছে আমাদের অস্তিত্ব জানান দিতে পারে এটি।
গোল্ডেন রেকর্ডে সম্ভাষণটি শুরুর এক মিনিট আট সেকেন্ডের মাথায় বাংলা ভাষায় সম্ভাষণ শোনা যাবে। সেখানে বলা হয়, ‘নমস্কার, বিশ্বে শান্তি হোক।’ এটি ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের রাজনীতিবিদ সুব্রত মুখার্জির কণ্ঠ।
২০১৫ সালের জুলাই মাসে এই রেকর্ডের অডিও অংশটি মিউজিক স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্ম সাউন্ড ক্লাউডে প্রকাশ করেছে নাসা।
গোল্ডেন রেকর্ডে অন্তর্ভুক্ত এমন আরও কয়েকটি ভাষার সম্ভাষণ হলো—
হিন্দি: পৃথিবীবাসীর পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা।
নেপালি: পৃথিবীবাসীর পক্ষ থেকে আপনাদের শান্তিপূর্ণ ভবিষ্যৎ কামনা করছি।
ইংরেজি: পৃথিবীর শিশুদের পক্ষ থেকে হ্যালো।
আরবি: নক্ষত্ররাজির মধ্যে থাকা আমাদের বন্ধুদের প্রতি শুভেচ্ছা। একদিন আপনাদের সঙ্গে দেখা করতে পারব, আমরা এই আশা করি।
ক্যানটোনিজ (চীনা ভাষার একটি ধরন) : হাই, কেমন আছেন? আপনাদের শান্তি, সুস্থতা ও সুখ কামনা করি।
প্রাচীন ভাষাগোষ্ঠীর মধ্যে রয়েছে—
আক্কাদিয়ান: সবাই খুব ভালো থাকুক।
আরামাইক: সালাম বা শান্তি।
হিব্রু: সালম বা শান্তি।
ভয়েজার রেকর্ডের বিষয়বস্তু নির্বাচন করেছিল নাসার একটি কমিটি, যেটির প্রধান ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও বিখ্যাত জ্যোতির্বিদ ড. কার্ল সাগান। ড. সাগান এবং তাঁর সহকর্মীরা ১১৫টি ছবি এবং প্রকৃতির বিভিন্ন শব্দ সংগ্রহ করেছিলেন, যেমন—সমুদ্রের ঢেউ, বাতাস, বজ্রপাত, পাখি, তিমি এবং অন্যান্য প্রাণীর ডাক। এরপর তাঁরা বিভিন্ন সংস্কৃতি ও যুগ অনুযায়ী সংগীতও যুক্ত করেন। সেই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টার এবং জাতিসংঘের মহাসচিব কার্ট ওয়াল্ডহেইমের মুদ্রিত বার্তাও যোগ করেছিলেন।
বিজ্ঞানী কার্ল সাগান এবং তাঁর সহকর্মীরা বিশ্বাস করেছিলেন যে যদি কখনো মহাবিশ্বের কোনো বুদ্ধিমান প্রাণী এই রেকর্ডটি পায়, তাহলে তারা এই রেকর্ডের মাধ্যমে পৃথিবী এবং মানব প্রজাতি সম্পর্কে জানতে পারবে।
গোল্ডেন রেকর্ডে কিছু সাদা-কালো, কিছু রঙিন ছবি রাখা হয়েছে। যেমন—সুপারমার্কেটে বাজার করতে যাওয়া নারীর ছবি, মানুষ কত রকম ভঙ্গিতে খাওয়াদাওয়া করে তার ছবি। মানুষের ছবিসহ বিভিন্ন প্রাণী, কীটপতঙ্গ, গাছপালা, প্রাকৃতিক দৃশ্য ইত্যাদি। আবার কিছু বৈজ্ঞানিক ধারণার ছবিও সঙ্গে দেওয়া হয়েছে।
প্রতিটি রেকর্ড অ্যালুমিনিয়াম জ্যাকেটের রক্ষাকবচে সংরক্ষিত। এর সঙ্গে রয়েছে একটি কার্টিজ এবং একটি সুঁই। রেকর্ডটি কীভাবে বাজাতে হবে সেটির নির্দেশনা সংবলিত একটি চিত্রও দেওয়া হয়েছে।
ভয়েজার–১ ও ভয়েজার–২–এর প্রাথমিক মিশন ছিল—বৃহস্পতি ও শনি গ্রহের প্রকৃতি অনুসন্ধান করা, যা এরা যথেষ্ট সফলভাবে সম্পন্ন করেছিল। মহাকাশযান দুটি শনি গ্রহের বলয় এবং বৃহস্পতির চাঁদ আইওয়ের চিত্র ও তথ্য পৃথিবীতে পাঠায়। ভয়েজার–১ বৃহস্পতির চারপাশে একটি সরু বলয় এবং বৃহস্পতির দুটি নতুন চাঁদ থিবি ও মেটিস আবিষ্কার করেছে। এটি শনির পাঁচটি নতুন চাঁদ এবং একটি নতুন বলয়ও পেয়েছে, যা ‘জি–রিং’ নামে পরিচিত।
১৯৭৭ সালের ২০ আগস্ট ভয়েজার–২ এবং ৫ সেপ্টেম্বর ভয়েজার–১ উৎক্ষেপণ করা হয়। ১৯৭৭ সালের ১৫ ডিসেম্বর ভয়েজার–১ ভয়েজার ২–কে অতিক্রম করে যায়। মহাকাশযানটি মানুষের তৈরি প্রথম বস্তু, যা আমাদের সৌরজগৎ এবং সৌরবলয় ছাড়িয়ে আন্তঃনাক্ষত্রিক মহাকাশে প্রবেশ করেছে।
বর্তমানে, ভয়েজার–১ পৃথিবী থেকে ১৫ বিলিয়ন (দেড় হাজার কোটি) মাইলেরও বেশি দূরে অবস্থান করছে। আর এর সঙ্গী ভয়েজার–২ পৃথিবী থেকে ১২ বিলিয়ন (১ হাজার ২০০ কোটি) মাইলেরও দূরে রয়েছে। এদের যাত্রা থেমে নেই। নিয়মিত তারা পৃথিবীতে তথ্য–উপাত্ত পাঠাচ্ছে। তবে আরও দূরে চলে গেলে একসময় আর পৃথিবীতে তাদের পাঠানো কোনো তথ্য এসে পৌঁছাবে না। নাসার বিজ্ঞানীরা বলছেন, ভয়েজারের সঙ্গে পৃথিবীর যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হলেও কোনো একসময় বুদ্ধিমান ভিনগ্রহের প্রাণীরা এর সন্ধান পেলে গোল্ডেন রেকর্ডে রক্ষিত নিদর্শনগুলো দেখে জানতে পারবে নীল গ্রহে মানবসভ্যতার অস্তিত্বের কথা।
তথ্যসূত্র: নাসা ডট কম, স্ল্যাশগিয়ার, নিউজউইক
প্রমিতি কিবরিয়া ইসলাম

আমাদের সৌরজগতের সীমানা ছাড়িয়ে পৃথিবী থেকে ১৫ বিলিয়নের (দেড় হাজার কোটি) মাইলেরও বেশি দূরে আন্তনাক্ষত্রিক মহাশূন্যে পাড়ি জমিয়েছে বাংলা ভাষা! এটি সম্ভব হয়েছে নাসার দুই মহাকাশযান ভয়েজার–১ এবং ভয়েজার–২–এর কল্যাণে। কারণ, এদের সঙ্গী হয়েছে মানবসভ্যতার এক অমূল্য রত্ন—‘গোল্ডেন রেকর্ড’, যেটিতে গ্রথিত আছে পৃথিবীর সংস্কৃতি, ভাষা, সংগীত এবং সভ্যতার বাছাইকৃত নমুনা। এই অমূল্য দলিল মহাকাশে অনন্তের পথে যাত্রা করেছে। এসব নমুনার মধ্যে বাংলা ভাষাও রয়েছে।
মহাকাশযান দুটির যাত্রা শুরু হয় ৪৭ বছর আগে, ১৯৭৭ সালে। এগুলোতে রয়েছে গোল্ডেন রেকর্ড নামের গ্রামোফোন রেকর্ড। তামার ওপরে সোনার প্রলেপ দিয়ে এই রেকর্ডটি বানানো হয়েছে। আর এর মোড়ক বানানো হয়েছে অ্যালুমিনিয়াম ও ইউরেনিয়াম–২৩৮ আইসোটোপ দিয়ে। নাসার বিজ্ঞানীরা বলছেন, এই ধাতব চাকতি কোটি কোটি বছর অক্ষত থাকবে।
গোল্ডেন রেকর্ড শুধু একটি সংগীতের রেকর্ড নয়, এটি পৃথিবীর মানবসভ্যতার নিদর্শন। পৃথিবী গ্রহের সাংস্কৃতিক ও প্রাকৃতিক বৈচিত্র্যের একটি অমূল্য দলিল এটি। এতে নানা প্রান্তের সংগীত, ছবি, প্রাণীর ডাক এবং প্রাকৃতিক শব্দের রেকর্ড রয়েছে। এর মধ্যে যেমন রয়েছে বিখ্যাত সংগীত, যেমন—বিটলসের ‘হ্যালো, গুডবাই’, তেমনি দক্ষিণ আফ্রিকার ঐতিহ্যবাহী ড্রামের বিট, পৃথিবীর নানা প্রাণীর ডাক—এমনকি সমুদ্রের গর্জনও।
তবে এর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নিদর্শনটি হলো মানুষের ভাষার বৈচিত্র্য। গোল্ডেন রেকর্ডে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে পৃথিবীর ৫৫টি ভাষার সম্ভাষণ, যার মধ্যে রয়েছে—ইংরেজি, ফরাসি, স্প্যানিশ, আরবি, চীনা মান্দারিন, হিন্দি, উর্দুসহ আরও অনেক ভাষা। এমনকি দক্ষিণ আমেরিকার আদিবাসী ভাষারও রয়েছে এটিতে।
এর মধ্যে বাংলা ভাষার উপস্থিতি একটি গৌরবের বিষয়। আমাদের মাতৃভাষায় একটি ছোট্ট বার্তা রয়েছে, যা ভিনগ্রহের বুদ্ধিমান প্রাণীর কাছে আমাদের অস্তিত্ব জানান দিতে পারে এটি।
গোল্ডেন রেকর্ডে সম্ভাষণটি শুরুর এক মিনিট আট সেকেন্ডের মাথায় বাংলা ভাষায় সম্ভাষণ শোনা যাবে। সেখানে বলা হয়, ‘নমস্কার, বিশ্বে শান্তি হোক।’ এটি ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের রাজনীতিবিদ সুব্রত মুখার্জির কণ্ঠ।
২০১৫ সালের জুলাই মাসে এই রেকর্ডের অডিও অংশটি মিউজিক স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্ম সাউন্ড ক্লাউডে প্রকাশ করেছে নাসা।
গোল্ডেন রেকর্ডে অন্তর্ভুক্ত এমন আরও কয়েকটি ভাষার সম্ভাষণ হলো—
হিন্দি: পৃথিবীবাসীর পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা।
নেপালি: পৃথিবীবাসীর পক্ষ থেকে আপনাদের শান্তিপূর্ণ ভবিষ্যৎ কামনা করছি।
ইংরেজি: পৃথিবীর শিশুদের পক্ষ থেকে হ্যালো।
আরবি: নক্ষত্ররাজির মধ্যে থাকা আমাদের বন্ধুদের প্রতি শুভেচ্ছা। একদিন আপনাদের সঙ্গে দেখা করতে পারব, আমরা এই আশা করি।
ক্যানটোনিজ (চীনা ভাষার একটি ধরন) : হাই, কেমন আছেন? আপনাদের শান্তি, সুস্থতা ও সুখ কামনা করি।
প্রাচীন ভাষাগোষ্ঠীর মধ্যে রয়েছে—
আক্কাদিয়ান: সবাই খুব ভালো থাকুক।
আরামাইক: সালাম বা শান্তি।
হিব্রু: সালম বা শান্তি।
ভয়েজার রেকর্ডের বিষয়বস্তু নির্বাচন করেছিল নাসার একটি কমিটি, যেটির প্রধান ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও বিখ্যাত জ্যোতির্বিদ ড. কার্ল সাগান। ড. সাগান এবং তাঁর সহকর্মীরা ১১৫টি ছবি এবং প্রকৃতির বিভিন্ন শব্দ সংগ্রহ করেছিলেন, যেমন—সমুদ্রের ঢেউ, বাতাস, বজ্রপাত, পাখি, তিমি এবং অন্যান্য প্রাণীর ডাক। এরপর তাঁরা বিভিন্ন সংস্কৃতি ও যুগ অনুযায়ী সংগীতও যুক্ত করেন। সেই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টার এবং জাতিসংঘের মহাসচিব কার্ট ওয়াল্ডহেইমের মুদ্রিত বার্তাও যোগ করেছিলেন।
বিজ্ঞানী কার্ল সাগান এবং তাঁর সহকর্মীরা বিশ্বাস করেছিলেন যে যদি কখনো মহাবিশ্বের কোনো বুদ্ধিমান প্রাণী এই রেকর্ডটি পায়, তাহলে তারা এই রেকর্ডের মাধ্যমে পৃথিবী এবং মানব প্রজাতি সম্পর্কে জানতে পারবে।
গোল্ডেন রেকর্ডে কিছু সাদা-কালো, কিছু রঙিন ছবি রাখা হয়েছে। যেমন—সুপারমার্কেটে বাজার করতে যাওয়া নারীর ছবি, মানুষ কত রকম ভঙ্গিতে খাওয়াদাওয়া করে তার ছবি। মানুষের ছবিসহ বিভিন্ন প্রাণী, কীটপতঙ্গ, গাছপালা, প্রাকৃতিক দৃশ্য ইত্যাদি। আবার কিছু বৈজ্ঞানিক ধারণার ছবিও সঙ্গে দেওয়া হয়েছে।
প্রতিটি রেকর্ড অ্যালুমিনিয়াম জ্যাকেটের রক্ষাকবচে সংরক্ষিত। এর সঙ্গে রয়েছে একটি কার্টিজ এবং একটি সুঁই। রেকর্ডটি কীভাবে বাজাতে হবে সেটির নির্দেশনা সংবলিত একটি চিত্রও দেওয়া হয়েছে।
ভয়েজার–১ ও ভয়েজার–২–এর প্রাথমিক মিশন ছিল—বৃহস্পতি ও শনি গ্রহের প্রকৃতি অনুসন্ধান করা, যা এরা যথেষ্ট সফলভাবে সম্পন্ন করেছিল। মহাকাশযান দুটি শনি গ্রহের বলয় এবং বৃহস্পতির চাঁদ আইওয়ের চিত্র ও তথ্য পৃথিবীতে পাঠায়। ভয়েজার–১ বৃহস্পতির চারপাশে একটি সরু বলয় এবং বৃহস্পতির দুটি নতুন চাঁদ থিবি ও মেটিস আবিষ্কার করেছে। এটি শনির পাঁচটি নতুন চাঁদ এবং একটি নতুন বলয়ও পেয়েছে, যা ‘জি–রিং’ নামে পরিচিত।
১৯৭৭ সালের ২০ আগস্ট ভয়েজার–২ এবং ৫ সেপ্টেম্বর ভয়েজার–১ উৎক্ষেপণ করা হয়। ১৯৭৭ সালের ১৫ ডিসেম্বর ভয়েজার–১ ভয়েজার ২–কে অতিক্রম করে যায়। মহাকাশযানটি মানুষের তৈরি প্রথম বস্তু, যা আমাদের সৌরজগৎ এবং সৌরবলয় ছাড়িয়ে আন্তঃনাক্ষত্রিক মহাকাশে প্রবেশ করেছে।
বর্তমানে, ভয়েজার–১ পৃথিবী থেকে ১৫ বিলিয়ন (দেড় হাজার কোটি) মাইলেরও বেশি দূরে অবস্থান করছে। আর এর সঙ্গী ভয়েজার–২ পৃথিবী থেকে ১২ বিলিয়ন (১ হাজার ২০০ কোটি) মাইলেরও দূরে রয়েছে। এদের যাত্রা থেমে নেই। নিয়মিত তারা পৃথিবীতে তথ্য–উপাত্ত পাঠাচ্ছে। তবে আরও দূরে চলে গেলে একসময় আর পৃথিবীতে তাদের পাঠানো কোনো তথ্য এসে পৌঁছাবে না। নাসার বিজ্ঞানীরা বলছেন, ভয়েজারের সঙ্গে পৃথিবীর যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হলেও কোনো একসময় বুদ্ধিমান ভিনগ্রহের প্রাণীরা এর সন্ধান পেলে গোল্ডেন রেকর্ডে রক্ষিত নিদর্শনগুলো দেখে জানতে পারবে নীল গ্রহে মানবসভ্যতার অস্তিত্বের কথা।
তথ্যসূত্র: নাসা ডট কম, স্ল্যাশগিয়ার, নিউজউইক

আমাদের সৌরজগতের সীমানা ছাড়িয়ে পৃথিবী থেকে ১৫ বিলিয়নের (দেড় হাজার কোটি) মাইলেরও বেশি দূরে আন্তনাক্ষত্রিক মহাশূন্যে পাড়ি জমিয়েছে বাংলা ভাষা! এটি সম্ভব হয়েছে নাসার দুই মহাকাশযান ভয়েজার–১ এবং ভয়েজার–২–এর কল্যাণে। কারণ, এদের সঙ্গী হয়েছে মানবসভ্যতার এক অমূল্য রত্ন—‘গোল্ডেন রেকর্ড’, যেটিতে গ্রথিত আছে পৃথিবীর সংস্কৃতি, ভাষা, সংগীত এবং সভ্যতার বাছাইকৃত নমুনা। এই অমূল্য দলিল মহাকাশে অনন্তের পথে যাত্রা করেছে। এসব নমুনার মধ্যে বাংলা ভাষাও রয়েছে।
মহাকাশযান দুটির যাত্রা শুরু হয় ৪৭ বছর আগে, ১৯৭৭ সালে। এগুলোতে রয়েছে গোল্ডেন রেকর্ড নামের গ্রামোফোন রেকর্ড। তামার ওপরে সোনার প্রলেপ দিয়ে এই রেকর্ডটি বানানো হয়েছে। আর এর মোড়ক বানানো হয়েছে অ্যালুমিনিয়াম ও ইউরেনিয়াম–২৩৮ আইসোটোপ দিয়ে। নাসার বিজ্ঞানীরা বলছেন, এই ধাতব চাকতি কোটি কোটি বছর অক্ষত থাকবে।
গোল্ডেন রেকর্ড শুধু একটি সংগীতের রেকর্ড নয়, এটি পৃথিবীর মানবসভ্যতার নিদর্শন। পৃথিবী গ্রহের সাংস্কৃতিক ও প্রাকৃতিক বৈচিত্র্যের একটি অমূল্য দলিল এটি। এতে নানা প্রান্তের সংগীত, ছবি, প্রাণীর ডাক এবং প্রাকৃতিক শব্দের রেকর্ড রয়েছে। এর মধ্যে যেমন রয়েছে বিখ্যাত সংগীত, যেমন—বিটলসের ‘হ্যালো, গুডবাই’, তেমনি দক্ষিণ আফ্রিকার ঐতিহ্যবাহী ড্রামের বিট, পৃথিবীর নানা প্রাণীর ডাক—এমনকি সমুদ্রের গর্জনও।
তবে এর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নিদর্শনটি হলো মানুষের ভাষার বৈচিত্র্য। গোল্ডেন রেকর্ডে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে পৃথিবীর ৫৫টি ভাষার সম্ভাষণ, যার মধ্যে রয়েছে—ইংরেজি, ফরাসি, স্প্যানিশ, আরবি, চীনা মান্দারিন, হিন্দি, উর্দুসহ আরও অনেক ভাষা। এমনকি দক্ষিণ আমেরিকার আদিবাসী ভাষারও রয়েছে এটিতে।
এর মধ্যে বাংলা ভাষার উপস্থিতি একটি গৌরবের বিষয়। আমাদের মাতৃভাষায় একটি ছোট্ট বার্তা রয়েছে, যা ভিনগ্রহের বুদ্ধিমান প্রাণীর কাছে আমাদের অস্তিত্ব জানান দিতে পারে এটি।
গোল্ডেন রেকর্ডে সম্ভাষণটি শুরুর এক মিনিট আট সেকেন্ডের মাথায় বাংলা ভাষায় সম্ভাষণ শোনা যাবে। সেখানে বলা হয়, ‘নমস্কার, বিশ্বে শান্তি হোক।’ এটি ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের রাজনীতিবিদ সুব্রত মুখার্জির কণ্ঠ।
২০১৫ সালের জুলাই মাসে এই রেকর্ডের অডিও অংশটি মিউজিক স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্ম সাউন্ড ক্লাউডে প্রকাশ করেছে নাসা।
গোল্ডেন রেকর্ডে অন্তর্ভুক্ত এমন আরও কয়েকটি ভাষার সম্ভাষণ হলো—
হিন্দি: পৃথিবীবাসীর পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা।
নেপালি: পৃথিবীবাসীর পক্ষ থেকে আপনাদের শান্তিপূর্ণ ভবিষ্যৎ কামনা করছি।
ইংরেজি: পৃথিবীর শিশুদের পক্ষ থেকে হ্যালো।
আরবি: নক্ষত্ররাজির মধ্যে থাকা আমাদের বন্ধুদের প্রতি শুভেচ্ছা। একদিন আপনাদের সঙ্গে দেখা করতে পারব, আমরা এই আশা করি।
ক্যানটোনিজ (চীনা ভাষার একটি ধরন) : হাই, কেমন আছেন? আপনাদের শান্তি, সুস্থতা ও সুখ কামনা করি।
প্রাচীন ভাষাগোষ্ঠীর মধ্যে রয়েছে—
আক্কাদিয়ান: সবাই খুব ভালো থাকুক।
আরামাইক: সালাম বা শান্তি।
হিব্রু: সালম বা শান্তি।
ভয়েজার রেকর্ডের বিষয়বস্তু নির্বাচন করেছিল নাসার একটি কমিটি, যেটির প্রধান ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও বিখ্যাত জ্যোতির্বিদ ড. কার্ল সাগান। ড. সাগান এবং তাঁর সহকর্মীরা ১১৫টি ছবি এবং প্রকৃতির বিভিন্ন শব্দ সংগ্রহ করেছিলেন, যেমন—সমুদ্রের ঢেউ, বাতাস, বজ্রপাত, পাখি, তিমি এবং অন্যান্য প্রাণীর ডাক। এরপর তাঁরা বিভিন্ন সংস্কৃতি ও যুগ অনুযায়ী সংগীতও যুক্ত করেন। সেই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টার এবং জাতিসংঘের মহাসচিব কার্ট ওয়াল্ডহেইমের মুদ্রিত বার্তাও যোগ করেছিলেন।
বিজ্ঞানী কার্ল সাগান এবং তাঁর সহকর্মীরা বিশ্বাস করেছিলেন যে যদি কখনো মহাবিশ্বের কোনো বুদ্ধিমান প্রাণী এই রেকর্ডটি পায়, তাহলে তারা এই রেকর্ডের মাধ্যমে পৃথিবী এবং মানব প্রজাতি সম্পর্কে জানতে পারবে।
গোল্ডেন রেকর্ডে কিছু সাদা-কালো, কিছু রঙিন ছবি রাখা হয়েছে। যেমন—সুপারমার্কেটে বাজার করতে যাওয়া নারীর ছবি, মানুষ কত রকম ভঙ্গিতে খাওয়াদাওয়া করে তার ছবি। মানুষের ছবিসহ বিভিন্ন প্রাণী, কীটপতঙ্গ, গাছপালা, প্রাকৃতিক দৃশ্য ইত্যাদি। আবার কিছু বৈজ্ঞানিক ধারণার ছবিও সঙ্গে দেওয়া হয়েছে।
প্রতিটি রেকর্ড অ্যালুমিনিয়াম জ্যাকেটের রক্ষাকবচে সংরক্ষিত। এর সঙ্গে রয়েছে একটি কার্টিজ এবং একটি সুঁই। রেকর্ডটি কীভাবে বাজাতে হবে সেটির নির্দেশনা সংবলিত একটি চিত্রও দেওয়া হয়েছে।
ভয়েজার–১ ও ভয়েজার–২–এর প্রাথমিক মিশন ছিল—বৃহস্পতি ও শনি গ্রহের প্রকৃতি অনুসন্ধান করা, যা এরা যথেষ্ট সফলভাবে সম্পন্ন করেছিল। মহাকাশযান দুটি শনি গ্রহের বলয় এবং বৃহস্পতির চাঁদ আইওয়ের চিত্র ও তথ্য পৃথিবীতে পাঠায়। ভয়েজার–১ বৃহস্পতির চারপাশে একটি সরু বলয় এবং বৃহস্পতির দুটি নতুন চাঁদ থিবি ও মেটিস আবিষ্কার করেছে। এটি শনির পাঁচটি নতুন চাঁদ এবং একটি নতুন বলয়ও পেয়েছে, যা ‘জি–রিং’ নামে পরিচিত।
১৯৭৭ সালের ২০ আগস্ট ভয়েজার–২ এবং ৫ সেপ্টেম্বর ভয়েজার–১ উৎক্ষেপণ করা হয়। ১৯৭৭ সালের ১৫ ডিসেম্বর ভয়েজার–১ ভয়েজার ২–কে অতিক্রম করে যায়। মহাকাশযানটি মানুষের তৈরি প্রথম বস্তু, যা আমাদের সৌরজগৎ এবং সৌরবলয় ছাড়িয়ে আন্তঃনাক্ষত্রিক মহাকাশে প্রবেশ করেছে।
বর্তমানে, ভয়েজার–১ পৃথিবী থেকে ১৫ বিলিয়ন (দেড় হাজার কোটি) মাইলেরও বেশি দূরে অবস্থান করছে। আর এর সঙ্গী ভয়েজার–২ পৃথিবী থেকে ১২ বিলিয়ন (১ হাজার ২০০ কোটি) মাইলেরও দূরে রয়েছে। এদের যাত্রা থেমে নেই। নিয়মিত তারা পৃথিবীতে তথ্য–উপাত্ত পাঠাচ্ছে। তবে আরও দূরে চলে গেলে একসময় আর পৃথিবীতে তাদের পাঠানো কোনো তথ্য এসে পৌঁছাবে না। নাসার বিজ্ঞানীরা বলছেন, ভয়েজারের সঙ্গে পৃথিবীর যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হলেও কোনো একসময় বুদ্ধিমান ভিনগ্রহের প্রাণীরা এর সন্ধান পেলে গোল্ডেন রেকর্ডে রক্ষিত নিদর্শনগুলো দেখে জানতে পারবে নীল গ্রহে মানবসভ্যতার অস্তিত্বের কথা।
তথ্যসূত্র: নাসা ডট কম, স্ল্যাশগিয়ার, নিউজউইক

নোবেলজয়ী আমেরিকান বিজ্ঞানী জেমস ওয়াটসন মারা গেছেন। তাঁর বয়স হয়েছিল ৯৭ বছর। ডিএনএর (DNA) যুগান্তকারী ডাবল হেলিক্স কাঠামো আবিষ্কারকদের অন্যতম তিনি। তিনি কোল্ড স্প্রিং হারবার ল্যাবরেটরিতে দীর্ঘদিন গবেষণা করেছেন। ল্যাবরেটরি কর্তৃপক্ষ তাঁর মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে বলে বিবিসির প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
২ দিন আগে
বেলজিয়ামের জীবাশ্মবিজ্ঞানী মিৎসে গেরমোঁপ্রে দাবি করেছেন, তাঁর আবিষ্কার মানুষের সঙ্গে কুকুরের বন্ধুত্বের ইতিহাসকে নতুন করে লিখতে পারে। তাঁর মতে, কুকুরের গৃহপালিত হওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল আজ থেকে প্রায় ৩৫ হাজার বছর আগে, যা প্রচলিত ধারণার চেয়ে প্রায় ২০ হাজার বছর আগে!
৩ দিন আগে
বারবিকিউ পার্টি চলছে এখন মহাকাশেও! তিয়ানগং স্পেস স্টেশনে চীনের ছয়জন নভোচারী এই আয়োজন করেছেন। চীনের অ্যাস্ট্রোনট সেন্টার (এসিসি) প্রকাশিত এক ভিডিওতে দেখা যায়, শেনঝো–২০ ও শেনঝো–২১ মিশনের নভোচারীরা একটি নতুন ধরনের ওভেন ব্যবহার করে রান্না করছেন, যা মহাকাশের মাইক্রোগ্র্যাভিটি পরিবেশে ব্যবহারের উপযোগী
৫ দিন আগে
টাইটানের মতো চরম, প্রতিকূল পরিবেশে প্রাণের উৎপত্তির আগে রসায়ন কীভাবে কাজ করতে পারত, এই গবেষণা সেই বিষয়েও নতুন অন্তর্দৃষ্টি যোগ করবে।
৫ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

নোবেলজয়ী আমেরিকান বিজ্ঞানী জেমস ওয়াটসন মারা গেছেন। তাঁর বয়স হয়েছিল ৯৭ বছর। ডিএনএর (DNA) যুগান্তকারী ডাবল হেলিক্স কাঠামো আবিষ্কারকদের অন্যতম তিনি। তিনি কোল্ড স্প্রিং হারবার ল্যাবরেটরিতে দীর্ঘদিন গবেষণা করেছেন। ল্যাবরেটরি কর্তৃপক্ষ তাঁর মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে বলে বিবিসির প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
ওয়াটসন ব্রিটিশ বিজ্ঞানী ফ্রান্সিস ক্রিকের সঙ্গে মিলে ১৯৫৩ সালে ডিএনএর কাঠামোগত রহস্য উন্মোচন করেন। এই আবিষ্কারকে ‘বিশ শতকের অন্যতম সেরা অগ্রগতি’ হিসেবে গণ্য করা হয়। এই আবিষ্কার আণবিক জীববিজ্ঞানের দ্রুত বিকাশের পথ প্রশস্ত করেছিল।
ডিএনএ ডাবল হেলিক্স হলো ডিএনএর দুটি সর্পিল বা প্যাঁচানো মইয়ের মতো কাঠামো, যা পরস্পরকে পেঁচিয়ে থাকে। এই কাঠামোতে দুটি শৃঙ্খল থাকে, সেটি আবার হাইড্রোজেন বন্ধনের মাধ্যমে সংযুক্ত। এই শৃঙ্খলগুলো অ্যাডেনিন (A) ও থাইমিন (T) এবং সাইটোসিন (C) ও গুয়ানিনের (G) মতো নাইট্রোজেনাস বেস জোড়া দিয়ে গঠিত।
জেমস ওয়াটসন, ফ্রান্সিস ক্রিক এবং মরিস উইলকিন্স—এই তিনজন বিজ্ঞানী ১৯৬২ সালে ডিএনএর ডাবল হেলিক্স কাঠামো আবিষ্কারের জন্য যৌথভাবে নোবেল পুরস্কার পান। এই আবিষ্কারের সময় তাঁরা বলেছিলেন, ‘আমরা জীবনের রহস্য আবিষ্কার করেছি।’
যদিও এই আবিষ্কারের পেছনে কিংস কলেজের গবেষক রোজালিন্ড ফ্রাঙ্কলিনের তোলা এক্স-রে চিত্র ব্যবহার করা হয়েছিল। সেটি তাঁর সম্মতি ছাড়াই ওয়াটসন ও ক্রিক ব্যবহার করেছিলেন। মরিস উইলকিন্স ফ্রাঙ্কলিনের সঙ্গে ডিএনএ অণুর কাঠামো নির্ণয়ের কাজ করেছিলেন।
এমন যুগান্তকারী বৈজ্ঞানিক সাফল্যের পরও পরবর্তীকালে বর্ণ ও বুদ্ধিমত্তা নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যের কারণে জেমস ওয়াটসনের খ্যাতি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ২০০৭ সালে তিনি এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, তিনি ‘আফ্রিকার সম্ভাবনা নিয়ে গভীরভাবে হতাশ’। কারণ, ‘আমাদের সব সামাজিক নীতি এই তথ্যের ওপর ভিত্তি করে তৈরি যে তাদের (আফ্রিকানদের) বুদ্ধিমত্তা আমাদের মতোই—যদিও সব পরীক্ষামূলক ফলাফলে তেমনটি দেখা যায় না।’ এই মন্তব্যের জেরে নিউইয়র্কের কোল্ড স্প্রিং হারবার ল্যাবরেটরির চ্যান্সেলরের পদ হারান তিনি।
২০১৯ সালে ওয়াটসন পুনরায় একই ধরনের মন্তব্য করেন, যেখানে তিনি আরও একবার বর্ণ ও বুদ্ধিমত্তার মধ্যে যোগসূত্র টেনেছিলেন। এর ফলস্বরূপ, ল্যাবরেটরি তাঁর চ্যান্সেলর ইমেরিটাসসহ সমস্ত সম্মানসূচক পদ কেড়ে নেয়। ল্যাবরেটরি সেই সময় এক বিবৃতিতে জানিয়েছিল, ‘ড. ওয়াটসনের বক্তব্য নিন্দনীয় এবং বিজ্ঞানের দ্বারা অসমর্থিত।’
২০১৪ সালে বৈজ্ঞানিক মহলে একঘরে হওয়ার অনুভূতির কথা বলে ওয়াটসন তাঁর নোবেল পদকটি ৪৮ লাখ ডলারে (প্রায় ৩৬ কোটি টাকা) নিলামে বিক্রি করে দেন। যদিও পদকটি ক্রয় করা এক রুশ বিলিয়নিয়ার সঙ্গে সঙ্গেই সেটি আবার তাঁকে ফিরিয়ে দিয়েছিলেন।
১৯২৮ সালের এপ্রিলে শিকাগোতে জন্মগ্রহণ করেন জেমস ওয়াটসন। মাত্র ১৫ বছর বয়সে তিনি শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার জন্য স্কলারশিপ পান। ডিএনএ নিয়ে গবেষণার জন্য তিনি কেমব্রিজে যান, যেখানে ফ্রান্সিস ক্রিকের সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়। ডিএনএর গঠন আবিষ্কারের পর তিনি হার্ভার্ডে জীববিজ্ঞানের অধ্যাপক হিসেবে যোগ দেন এবং ১৯৬৮ সালে কোল্ড স্প্রিং হারবার ল্যাবরেটরির দায়িত্ব নেন। এই প্রতিষ্ঠানকে বিশ্বের অন্যতম প্রধান বৈজ্ঞানিক গবেষণা কেন্দ্রে পরিণত করার কৃতিত্ব তাঁর।

নোবেলজয়ী আমেরিকান বিজ্ঞানী জেমস ওয়াটসন মারা গেছেন। তাঁর বয়স হয়েছিল ৯৭ বছর। ডিএনএর (DNA) যুগান্তকারী ডাবল হেলিক্স কাঠামো আবিষ্কারকদের অন্যতম তিনি। তিনি কোল্ড স্প্রিং হারবার ল্যাবরেটরিতে দীর্ঘদিন গবেষণা করেছেন। ল্যাবরেটরি কর্তৃপক্ষ তাঁর মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে বলে বিবিসির প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
ওয়াটসন ব্রিটিশ বিজ্ঞানী ফ্রান্সিস ক্রিকের সঙ্গে মিলে ১৯৫৩ সালে ডিএনএর কাঠামোগত রহস্য উন্মোচন করেন। এই আবিষ্কারকে ‘বিশ শতকের অন্যতম সেরা অগ্রগতি’ হিসেবে গণ্য করা হয়। এই আবিষ্কার আণবিক জীববিজ্ঞানের দ্রুত বিকাশের পথ প্রশস্ত করেছিল।
ডিএনএ ডাবল হেলিক্স হলো ডিএনএর দুটি সর্পিল বা প্যাঁচানো মইয়ের মতো কাঠামো, যা পরস্পরকে পেঁচিয়ে থাকে। এই কাঠামোতে দুটি শৃঙ্খল থাকে, সেটি আবার হাইড্রোজেন বন্ধনের মাধ্যমে সংযুক্ত। এই শৃঙ্খলগুলো অ্যাডেনিন (A) ও থাইমিন (T) এবং সাইটোসিন (C) ও গুয়ানিনের (G) মতো নাইট্রোজেনাস বেস জোড়া দিয়ে গঠিত।
জেমস ওয়াটসন, ফ্রান্সিস ক্রিক এবং মরিস উইলকিন্স—এই তিনজন বিজ্ঞানী ১৯৬২ সালে ডিএনএর ডাবল হেলিক্স কাঠামো আবিষ্কারের জন্য যৌথভাবে নোবেল পুরস্কার পান। এই আবিষ্কারের সময় তাঁরা বলেছিলেন, ‘আমরা জীবনের রহস্য আবিষ্কার করেছি।’
যদিও এই আবিষ্কারের পেছনে কিংস কলেজের গবেষক রোজালিন্ড ফ্রাঙ্কলিনের তোলা এক্স-রে চিত্র ব্যবহার করা হয়েছিল। সেটি তাঁর সম্মতি ছাড়াই ওয়াটসন ও ক্রিক ব্যবহার করেছিলেন। মরিস উইলকিন্স ফ্রাঙ্কলিনের সঙ্গে ডিএনএ অণুর কাঠামো নির্ণয়ের কাজ করেছিলেন।
এমন যুগান্তকারী বৈজ্ঞানিক সাফল্যের পরও পরবর্তীকালে বর্ণ ও বুদ্ধিমত্তা নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যের কারণে জেমস ওয়াটসনের খ্যাতি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ২০০৭ সালে তিনি এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, তিনি ‘আফ্রিকার সম্ভাবনা নিয়ে গভীরভাবে হতাশ’। কারণ, ‘আমাদের সব সামাজিক নীতি এই তথ্যের ওপর ভিত্তি করে তৈরি যে তাদের (আফ্রিকানদের) বুদ্ধিমত্তা আমাদের মতোই—যদিও সব পরীক্ষামূলক ফলাফলে তেমনটি দেখা যায় না।’ এই মন্তব্যের জেরে নিউইয়র্কের কোল্ড স্প্রিং হারবার ল্যাবরেটরির চ্যান্সেলরের পদ হারান তিনি।
২০১৯ সালে ওয়াটসন পুনরায় একই ধরনের মন্তব্য করেন, যেখানে তিনি আরও একবার বর্ণ ও বুদ্ধিমত্তার মধ্যে যোগসূত্র টেনেছিলেন। এর ফলস্বরূপ, ল্যাবরেটরি তাঁর চ্যান্সেলর ইমেরিটাসসহ সমস্ত সম্মানসূচক পদ কেড়ে নেয়। ল্যাবরেটরি সেই সময় এক বিবৃতিতে জানিয়েছিল, ‘ড. ওয়াটসনের বক্তব্য নিন্দনীয় এবং বিজ্ঞানের দ্বারা অসমর্থিত।’
২০১৪ সালে বৈজ্ঞানিক মহলে একঘরে হওয়ার অনুভূতির কথা বলে ওয়াটসন তাঁর নোবেল পদকটি ৪৮ লাখ ডলারে (প্রায় ৩৬ কোটি টাকা) নিলামে বিক্রি করে দেন। যদিও পদকটি ক্রয় করা এক রুশ বিলিয়নিয়ার সঙ্গে সঙ্গেই সেটি আবার তাঁকে ফিরিয়ে দিয়েছিলেন।
১৯২৮ সালের এপ্রিলে শিকাগোতে জন্মগ্রহণ করেন জেমস ওয়াটসন। মাত্র ১৫ বছর বয়সে তিনি শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার জন্য স্কলারশিপ পান। ডিএনএ নিয়ে গবেষণার জন্য তিনি কেমব্রিজে যান, যেখানে ফ্রান্সিস ক্রিকের সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়। ডিএনএর গঠন আবিষ্কারের পর তিনি হার্ভার্ডে জীববিজ্ঞানের অধ্যাপক হিসেবে যোগ দেন এবং ১৯৬৮ সালে কোল্ড স্প্রিং হারবার ল্যাবরেটরির দায়িত্ব নেন। এই প্রতিষ্ঠানকে বিশ্বের অন্যতম প্রধান বৈজ্ঞানিক গবেষণা কেন্দ্রে পরিণত করার কৃতিত্ব তাঁর।

মহাকাশযান দুটির যাত্রা শুরু হয় ৪৭ বছর আগে, ১৯৭৭ সালে। এগুলোতে রয়েছে গোল্ডেন রেকর্ড নামের গ্রামোফোন রেকর্ড। তামার ওপরে সোনার প্রলেপ দিয়ে এই রেকর্ডটি বানানো হয়েছে। আর এর মোড়ক বানানো হয়েছে অ্যালুমিনিয়াম ও ইউরেনিয়াম–২৩৮ আইসোটোপ দিয়ে। নাসার বিজ্ঞানীরা বলছেন, এই ধাতব চাকতি কোটি কোটি বছর অক্ষত থাকবে।
০৭ ডিসেম্বর ২০২৪
বেলজিয়ামের জীবাশ্মবিজ্ঞানী মিৎসে গেরমোঁপ্রে দাবি করেছেন, তাঁর আবিষ্কার মানুষের সঙ্গে কুকুরের বন্ধুত্বের ইতিহাসকে নতুন করে লিখতে পারে। তাঁর মতে, কুকুরের গৃহপালিত হওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল আজ থেকে প্রায় ৩৫ হাজার বছর আগে, যা প্রচলিত ধারণার চেয়ে প্রায় ২০ হাজার বছর আগে!
৩ দিন আগে
বারবিকিউ পার্টি চলছে এখন মহাকাশেও! তিয়ানগং স্পেস স্টেশনে চীনের ছয়জন নভোচারী এই আয়োজন করেছেন। চীনের অ্যাস্ট্রোনট সেন্টার (এসিসি) প্রকাশিত এক ভিডিওতে দেখা যায়, শেনঝো–২০ ও শেনঝো–২১ মিশনের নভোচারীরা একটি নতুন ধরনের ওভেন ব্যবহার করে রান্না করছেন, যা মহাকাশের মাইক্রোগ্র্যাভিটি পরিবেশে ব্যবহারের উপযোগী
৫ দিন আগে
টাইটানের মতো চরম, প্রতিকূল পরিবেশে প্রাণের উৎপত্তির আগে রসায়ন কীভাবে কাজ করতে পারত, এই গবেষণা সেই বিষয়েও নতুন অন্তর্দৃষ্টি যোগ করবে।
৫ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

বেলজিয়ামের জীবাশ্মবিজ্ঞানী মিৎসে গেরমোঁপ্রে দাবি করেছেন, তাঁর আবিষ্কার মানুষের সঙ্গে কুকুরের বন্ধুত্বের ইতিহাসকে নতুন করে লিখতে পারে। তাঁর মতে, কুকুরের গৃহপালিত হওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল আজ থেকে প্রায় ৩৫ হাজার বছর আগে, যা প্রচলিত ধারণার চেয়ে প্রায় ২০ হাজার বছর আগে!
শুক্রবার (৭ অক্টোবর) যুক্তরাজ্যভিত্তিক দ্য টাইমস জানিয়েছে, গেরমোঁপ্রে ছোটবেলা থেকেই বরফযুগের প্রাণীদের নিয়ে মুগ্ধ ছিলেন। ২০০৯ সালে তিনি বেলজিয়ান ইনস্টিটিউট অব ন্যাচারাল সায়েন্সেসে কাজ করার সময় গ্রামের একটি গুহা থেকে পাওয়া প্রাগৈতিহাসিক কিছু প্রাণীর হাড় পরীক্ষা করছিলেন।
এই কাজ করতে গিয়ে একটি মাথার খুলির দিকে মনোযোগী হন গেরমোঁপ্রে। দীর্ঘদিন ধরে খুলিটিকে বরফযুগের কোনো নেকড়ের বলে ধরে নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু গেরমোঁপ্রে বুঝতে পারেন—এটির নাক বা মুখের অংশটি ছোট ও চওড়া এবং এগুলো গৃহপালিত প্রাণীর বৈশিষ্ট্য।
পরে রেডিওকার্বন পরীক্ষায় দেখা যায়, ওই খুলির বয়স প্রায় ৩৫ হাজার বছর। আর বৈশিষ্টগুলোই বলে দিচ্ছে, এটি সেই সময়ের কোনো নেকড়ে নয়, বরং মানুষের সান্নিধ্যে থাকা প্রাচীন কোনো কুকুর হতে পারে।
গেরমোঁপ্রে বলেন, ‘আমি ভেবেছিলাম, কেউ বিশ্বাস করবে না।’ তবে তাঁর এই গবেষণা প্রকাশের পর থেকে বিজ্ঞানমহলে বিতর্ক শুরু হয়েছে। অনেকে মনে করেন, এটি আসলে অস্বাভাবিক আকৃতির একটি নেকড়ের মাথার খুলি। আবার কেউ কেউ মনে করছেন, এটি সত্যিই গৃহপালিত কুকুরের সবচেয়ে পুরোনো নিদর্শন।
গেরমোঁপ্রে মনে করেন, এটি এমন এক যুগের চিহ্ন, যখন মানুষ প্রথমবারের মতো প্রাণীদের সঙ্গে সহাবস্থান শুরু করেছিল। তিনি বিশ্বাস করেন, কুকুর গৃহপালিত হওয়ার প্রক্রিয়া মানুষের উদ্যোগেই ঘটেছিল। প্রাচীন মানুষেরা নেকড়ে শাবক লালন করত, আক্রমণাত্মকদের বেছে হত্যা করত আর শান্তগুলোকে নিজেদের সঙ্গী বানাত। এভাবেই ধীরে ধীরে জন্ম নেয় প্যালিওলিথিক কুকুর।
বরফযুগের বেলজিয়াম ছিল খোলা তৃণভূমি—চারপাশে ম্যামথ, ঘোড়া, রেইনডিয়ার আর বন্য সিংহ-ভালুকের ভিড়। এমন বিপজ্জনক পৃথিবীতে কুকুর ছিল মানুষের সহচর, রক্ষক ও পথপ্রদর্শক।
গেরমোঁপ্রের মতে, এই প্রাচীন খুলি শুধু একটি প্রাণীর নয়, মানবসভ্যতার প্রথম বন্ধুত্বের প্রতীকও বটে—যখন মানুষ আর কুকুর একে অন্যের ভরসা হয়ে উঠেছিল বরফে ঢাকা নীরব পৃথিবীর প্রান্তরে।

বেলজিয়ামের জীবাশ্মবিজ্ঞানী মিৎসে গেরমোঁপ্রে দাবি করেছেন, তাঁর আবিষ্কার মানুষের সঙ্গে কুকুরের বন্ধুত্বের ইতিহাসকে নতুন করে লিখতে পারে। তাঁর মতে, কুকুরের গৃহপালিত হওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল আজ থেকে প্রায় ৩৫ হাজার বছর আগে, যা প্রচলিত ধারণার চেয়ে প্রায় ২০ হাজার বছর আগে!
শুক্রবার (৭ অক্টোবর) যুক্তরাজ্যভিত্তিক দ্য টাইমস জানিয়েছে, গেরমোঁপ্রে ছোটবেলা থেকেই বরফযুগের প্রাণীদের নিয়ে মুগ্ধ ছিলেন। ২০০৯ সালে তিনি বেলজিয়ান ইনস্টিটিউট অব ন্যাচারাল সায়েন্সেসে কাজ করার সময় গ্রামের একটি গুহা থেকে পাওয়া প্রাগৈতিহাসিক কিছু প্রাণীর হাড় পরীক্ষা করছিলেন।
এই কাজ করতে গিয়ে একটি মাথার খুলির দিকে মনোযোগী হন গেরমোঁপ্রে। দীর্ঘদিন ধরে খুলিটিকে বরফযুগের কোনো নেকড়ের বলে ধরে নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু গেরমোঁপ্রে বুঝতে পারেন—এটির নাক বা মুখের অংশটি ছোট ও চওড়া এবং এগুলো গৃহপালিত প্রাণীর বৈশিষ্ট্য।
পরে রেডিওকার্বন পরীক্ষায় দেখা যায়, ওই খুলির বয়স প্রায় ৩৫ হাজার বছর। আর বৈশিষ্টগুলোই বলে দিচ্ছে, এটি সেই সময়ের কোনো নেকড়ে নয়, বরং মানুষের সান্নিধ্যে থাকা প্রাচীন কোনো কুকুর হতে পারে।
গেরমোঁপ্রে বলেন, ‘আমি ভেবেছিলাম, কেউ বিশ্বাস করবে না।’ তবে তাঁর এই গবেষণা প্রকাশের পর থেকে বিজ্ঞানমহলে বিতর্ক শুরু হয়েছে। অনেকে মনে করেন, এটি আসলে অস্বাভাবিক আকৃতির একটি নেকড়ের মাথার খুলি। আবার কেউ কেউ মনে করছেন, এটি সত্যিই গৃহপালিত কুকুরের সবচেয়ে পুরোনো নিদর্শন।
গেরমোঁপ্রে মনে করেন, এটি এমন এক যুগের চিহ্ন, যখন মানুষ প্রথমবারের মতো প্রাণীদের সঙ্গে সহাবস্থান শুরু করেছিল। তিনি বিশ্বাস করেন, কুকুর গৃহপালিত হওয়ার প্রক্রিয়া মানুষের উদ্যোগেই ঘটেছিল। প্রাচীন মানুষেরা নেকড়ে শাবক লালন করত, আক্রমণাত্মকদের বেছে হত্যা করত আর শান্তগুলোকে নিজেদের সঙ্গী বানাত। এভাবেই ধীরে ধীরে জন্ম নেয় প্যালিওলিথিক কুকুর।
বরফযুগের বেলজিয়াম ছিল খোলা তৃণভূমি—চারপাশে ম্যামথ, ঘোড়া, রেইনডিয়ার আর বন্য সিংহ-ভালুকের ভিড়। এমন বিপজ্জনক পৃথিবীতে কুকুর ছিল মানুষের সহচর, রক্ষক ও পথপ্রদর্শক।
গেরমোঁপ্রের মতে, এই প্রাচীন খুলি শুধু একটি প্রাণীর নয়, মানবসভ্যতার প্রথম বন্ধুত্বের প্রতীকও বটে—যখন মানুষ আর কুকুর একে অন্যের ভরসা হয়ে উঠেছিল বরফে ঢাকা নীরব পৃথিবীর প্রান্তরে।

মহাকাশযান দুটির যাত্রা শুরু হয় ৪৭ বছর আগে, ১৯৭৭ সালে। এগুলোতে রয়েছে গোল্ডেন রেকর্ড নামের গ্রামোফোন রেকর্ড। তামার ওপরে সোনার প্রলেপ দিয়ে এই রেকর্ডটি বানানো হয়েছে। আর এর মোড়ক বানানো হয়েছে অ্যালুমিনিয়াম ও ইউরেনিয়াম–২৩৮ আইসোটোপ দিয়ে। নাসার বিজ্ঞানীরা বলছেন, এই ধাতব চাকতি কোটি কোটি বছর অক্ষত থাকবে।
০৭ ডিসেম্বর ২০২৪
নোবেলজয়ী আমেরিকান বিজ্ঞানী জেমস ওয়াটসন মারা গেছেন। তাঁর বয়স হয়েছিল ৯৭ বছর। ডিএনএর (DNA) যুগান্তকারী ডাবল হেলিক্স কাঠামো আবিষ্কারকদের অন্যতম তিনি। তিনি কোল্ড স্প্রিং হারবার ল্যাবরেটরিতে দীর্ঘদিন গবেষণা করেছেন। ল্যাবরেটরি কর্তৃপক্ষ তাঁর মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে বলে বিবিসির প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
২ দিন আগে
বারবিকিউ পার্টি চলছে এখন মহাকাশেও! তিয়ানগং স্পেস স্টেশনে চীনের ছয়জন নভোচারী এই আয়োজন করেছেন। চীনের অ্যাস্ট্রোনট সেন্টার (এসিসি) প্রকাশিত এক ভিডিওতে দেখা যায়, শেনঝো–২০ ও শেনঝো–২১ মিশনের নভোচারীরা একটি নতুন ধরনের ওভেন ব্যবহার করে রান্না করছেন, যা মহাকাশের মাইক্রোগ্র্যাভিটি পরিবেশে ব্যবহারের উপযোগী
৫ দিন আগে
টাইটানের মতো চরম, প্রতিকূল পরিবেশে প্রাণের উৎপত্তির আগে রসায়ন কীভাবে কাজ করতে পারত, এই গবেষণা সেই বিষয়েও নতুন অন্তর্দৃষ্টি যোগ করবে।
৫ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

বারবিকিউ পার্টি চলছে এখন মহাকাশেও! তিয়ানগং স্পেস স্টেশনে চীনের ছয়জন নভোচারী এই আয়োজন করেছেন। চীনের অ্যাস্ট্রোনট সেন্টার (এসিসি) প্রকাশিত এক ভিডিওতে দেখা যায়, শেনঝো–২০ ও শেনঝো–২১ মিশনের নভোচারীরা একটি নতুন ধরনের ওভেন ব্যবহার করে রান্না করছেন, যা মহাকাশের মাইক্রোগ্র্যাভিটি পরিবেশে ব্যবহারের উপযোগী প্রথম ওভেন হিসেবে ইতিহাস গড়েছে।
স্পেস ডট কম-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই ওভেন ব্যবহার করে নভোচারীরা ২৮ মিনিটে রোস্টেড চিকেন উইংস রান্না করতে সক্ষম হন। মাধ্যাকর্ষণ না থাকায় তাপ সমভাবে ছড়ায় না বলে মহাকাশে রান্না করা একটি বড় চ্যালেঞ্জ।
চীনা রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, ওভেনটি এমনভাবে নকশা করা হয়েছে যাতে এটি তিয়ানগং স্টেশনের বিদ্যুৎ সরবরাহে কোনো চাপ সৃষ্টি না করে এবং ধোঁয়াবিহীন ও স্থিতিশীল তাপমাত্রায় রান্না করা যায়।
ভিডিওতে দেখা যায়, নভোচারীরা বিশেষভাবে তৈরি একটি গ্রিল কেস-এ চিকেন উইংস নিয়ে স্পেস স্টেশনের দেয়ালের একটি ছোট কেবিন আকৃতির অংশে স্থাপন করছেন।
অ্যারোস্পেস নলেজ সাময়িকীর প্রধান সম্পাদক ওয়াং ইয়ানান চায়না ডেইলিকে বলেন, ‘পৃথিবীতে যেমন ওভেনের ভেতর বাতাস ঘুরে তাপ সঞ্চালন ঘটায়, মহাকাশে তা হয় না। কারণ সেখানে কনভেকশন নামের এই গুরুত্বপূর্ণ প্রক্রিয়া অনুপস্থিত। তাই প্রকৌশলীদের এমন একটি বিশেষ পদ্ধতি বের করতে হয়েছে যাতে খাবার সমভাবে গরম হয় এবং রান্নার ধোঁয়াও নিরাপদভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায়। নভোচারীদের সুরক্ষাও নিশ্চিত থাকে।’
ওভেনটির সর্বোচ্চ তাপমাত্রাও রাখা হয়েছে ১০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ১৯০ ডিগ্রিতে। এর ফলে নভোচারীরা প্রসেসড ফুড গরম করার পাশাপাশি খাবার রান্নাও করতে পারছেন।
এর আগে ২০২০ সালে ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশন (আইএসএস)-এ প্রথমবারের মতো মহাকাশে খাবার বেক করার একটি পরীক্ষা চালানো হয়েছিল। ন্যানোরেকস ও জিরো জি কিচেন যৌথভাবে তৈরি একটি প্রোটোটাইপ ওভেন ব্যবহার করে ওই পরীক্ষা চালায়। তখন পাঁচটি চকলেট চিপ কুকি বেক করা হয়। এটি ছিল মহাকাশে প্রথমবারের মতো কোনো খাবার বেক করার ঘটনা। পরবর্তীতে স্পেসএক্স ড্রাগন মহাকাশযানে করে এর মধ্যে তিনটি কুকি পৃথিবীতে ফেরত আনা হয়।
গত ৩১ অক্টোবর তিয়ানগং স্পেস স্টেশনে পৌঁছান শেনঝো-২১ মিশনের তিন নভোচারী। তাঁরা সেখানে প্রায় ছয় মাসের জন্য অবস্থান করবেন। শেনঝো-২০ দলের দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন তাঁরা। শেনঝো-২০ এর সদস্যরা গত এপ্রিল থেকে স্টেশনে অবস্থান করছেন এবং আগামী ৫ নভেম্বর পৃথিবীতে ফিরে আসবেন।

বারবিকিউ পার্টি চলছে এখন মহাকাশেও! তিয়ানগং স্পেস স্টেশনে চীনের ছয়জন নভোচারী এই আয়োজন করেছেন। চীনের অ্যাস্ট্রোনট সেন্টার (এসিসি) প্রকাশিত এক ভিডিওতে দেখা যায়, শেনঝো–২০ ও শেনঝো–২১ মিশনের নভোচারীরা একটি নতুন ধরনের ওভেন ব্যবহার করে রান্না করছেন, যা মহাকাশের মাইক্রোগ্র্যাভিটি পরিবেশে ব্যবহারের উপযোগী প্রথম ওভেন হিসেবে ইতিহাস গড়েছে।
স্পেস ডট কম-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই ওভেন ব্যবহার করে নভোচারীরা ২৮ মিনিটে রোস্টেড চিকেন উইংস রান্না করতে সক্ষম হন। মাধ্যাকর্ষণ না থাকায় তাপ সমভাবে ছড়ায় না বলে মহাকাশে রান্না করা একটি বড় চ্যালেঞ্জ।
চীনা রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, ওভেনটি এমনভাবে নকশা করা হয়েছে যাতে এটি তিয়ানগং স্টেশনের বিদ্যুৎ সরবরাহে কোনো চাপ সৃষ্টি না করে এবং ধোঁয়াবিহীন ও স্থিতিশীল তাপমাত্রায় রান্না করা যায়।
ভিডিওতে দেখা যায়, নভোচারীরা বিশেষভাবে তৈরি একটি গ্রিল কেস-এ চিকেন উইংস নিয়ে স্পেস স্টেশনের দেয়ালের একটি ছোট কেবিন আকৃতির অংশে স্থাপন করছেন।
অ্যারোস্পেস নলেজ সাময়িকীর প্রধান সম্পাদক ওয়াং ইয়ানান চায়না ডেইলিকে বলেন, ‘পৃথিবীতে যেমন ওভেনের ভেতর বাতাস ঘুরে তাপ সঞ্চালন ঘটায়, মহাকাশে তা হয় না। কারণ সেখানে কনভেকশন নামের এই গুরুত্বপূর্ণ প্রক্রিয়া অনুপস্থিত। তাই প্রকৌশলীদের এমন একটি বিশেষ পদ্ধতি বের করতে হয়েছে যাতে খাবার সমভাবে গরম হয় এবং রান্নার ধোঁয়াও নিরাপদভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায়। নভোচারীদের সুরক্ষাও নিশ্চিত থাকে।’
ওভেনটির সর্বোচ্চ তাপমাত্রাও রাখা হয়েছে ১০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ১৯০ ডিগ্রিতে। এর ফলে নভোচারীরা প্রসেসড ফুড গরম করার পাশাপাশি খাবার রান্নাও করতে পারছেন।
এর আগে ২০২০ সালে ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশন (আইএসএস)-এ প্রথমবারের মতো মহাকাশে খাবার বেক করার একটি পরীক্ষা চালানো হয়েছিল। ন্যানোরেকস ও জিরো জি কিচেন যৌথভাবে তৈরি একটি প্রোটোটাইপ ওভেন ব্যবহার করে ওই পরীক্ষা চালায়। তখন পাঁচটি চকলেট চিপ কুকি বেক করা হয়। এটি ছিল মহাকাশে প্রথমবারের মতো কোনো খাবার বেক করার ঘটনা। পরবর্তীতে স্পেসএক্স ড্রাগন মহাকাশযানে করে এর মধ্যে তিনটি কুকি পৃথিবীতে ফেরত আনা হয়।
গত ৩১ অক্টোবর তিয়ানগং স্পেস স্টেশনে পৌঁছান শেনঝো-২১ মিশনের তিন নভোচারী। তাঁরা সেখানে প্রায় ছয় মাসের জন্য অবস্থান করবেন। শেনঝো-২০ দলের দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন তাঁরা। শেনঝো-২০ এর সদস্যরা গত এপ্রিল থেকে স্টেশনে অবস্থান করছেন এবং আগামী ৫ নভেম্বর পৃথিবীতে ফিরে আসবেন।

মহাকাশযান দুটির যাত্রা শুরু হয় ৪৭ বছর আগে, ১৯৭৭ সালে। এগুলোতে রয়েছে গোল্ডেন রেকর্ড নামের গ্রামোফোন রেকর্ড। তামার ওপরে সোনার প্রলেপ দিয়ে এই রেকর্ডটি বানানো হয়েছে। আর এর মোড়ক বানানো হয়েছে অ্যালুমিনিয়াম ও ইউরেনিয়াম–২৩৮ আইসোটোপ দিয়ে। নাসার বিজ্ঞানীরা বলছেন, এই ধাতব চাকতি কোটি কোটি বছর অক্ষত থাকবে।
০৭ ডিসেম্বর ২০২৪
নোবেলজয়ী আমেরিকান বিজ্ঞানী জেমস ওয়াটসন মারা গেছেন। তাঁর বয়স হয়েছিল ৯৭ বছর। ডিএনএর (DNA) যুগান্তকারী ডাবল হেলিক্স কাঠামো আবিষ্কারকদের অন্যতম তিনি। তিনি কোল্ড স্প্রিং হারবার ল্যাবরেটরিতে দীর্ঘদিন গবেষণা করেছেন। ল্যাবরেটরি কর্তৃপক্ষ তাঁর মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে বলে বিবিসির প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
২ দিন আগে
বেলজিয়ামের জীবাশ্মবিজ্ঞানী মিৎসে গেরমোঁপ্রে দাবি করেছেন, তাঁর আবিষ্কার মানুষের সঙ্গে কুকুরের বন্ধুত্বের ইতিহাসকে নতুন করে লিখতে পারে। তাঁর মতে, কুকুরের গৃহপালিত হওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল আজ থেকে প্রায় ৩৫ হাজার বছর আগে, যা প্রচলিত ধারণার চেয়ে প্রায় ২০ হাজার বছর আগে!
৩ দিন আগে
টাইটানের মতো চরম, প্রতিকূল পরিবেশে প্রাণের উৎপত্তির আগে রসায়ন কীভাবে কাজ করতে পারত, এই গবেষণা সেই বিষয়েও নতুন অন্তর্দৃষ্টি যোগ করবে।
৫ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

শনি গ্রহের বৃহত্তম এবং রহস্যময় উপগ্রহ টাইটান। চরম শীতল পরিবেশের এই উপগ্রহ রসায়ন শাস্ত্রের এক অতি মৌলিক নিয়মকে বুড়ো আঙুল দেখিয়েছে। একটি নতুন গবেষণায় দেখা গেছে, যেসব বস্তু সাধারণত একে অপরের সঙ্গে মেশে না, যেমন পৃথিবীতে তেল ও পানি—টাইটানের তীব্র ঠান্ডায় (মাইনাস ১৮৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস) দুটো একসঙ্গে মিলেমিশে থাকতে পারে।
সুইডেনের চালমার্স ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি এবং নাসার বিজ্ঞানীদের এই আবিষ্কার মহাকাশ গবেষণায় নতুন দিগন্ত খুলে দিয়েছে। গবেষণাটির নেতৃত্ব দিয়েছেন চালমার্সের রসায়ন ও রাসায়নিক প্রকৌশল বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মার্টিন রাম।
সাধারণত পৃথিবীতে পোলার এবং নন-পোলার অণুগুলো একে অপরের সঙ্গে মেশে না। এটি ‘লাইক ডিসলভস লাইক’ নীতি নামে পরিচিত। পানির মতো পোলার অণুগুলোতে আধানের বণ্টন অসম থাকে, আর তেলের মতো নন-পোলার অণুগুলোতে আধান সুষম থাকে। এই ভিন্নতার কারণেই এরা একে অপরকে বিকর্ষণ করে এবং আলাদা স্তর তৈরি করে।
পিএনএএস জার্নালে প্রকাশিত গবেষণাপত্রটিতে দেখানো হয়েছে, টাইটানের চরম শীতল পরিস্থিতি এই নিয়মকে উল্টে দেয়। গবেষকেরা ল্যাবরেটরিতে টাইটানের পরিবেশ তৈরি করে পরীক্ষা করেন এবং দেখেন যে পোলার হাইড্রোজেন সায়ানাইড এবং নন-পোলার হাইড্রোকার্বন (যেমন মিথেন ও ইথেন) কঠিন রূপে একসঙ্গে ক্রিস্টালাইজড (স্ফটিক) হতে পারে।
অধ্যাপক রাম জানান, হাইড্রোজেন সায়ানাইড ক্রিস্টালগুলোর মধ্যে আন্তঃআণবিক শক্তি অস্বাভাবিকভাবে শক্তিশালী হয়ে ওঠে। এই শক্তির কারণেই নন-পোলার অণুগুলো ক্রিস্টাল কাঠামোর ভেতরে প্রবেশ করে একসঙ্গে থাকতে পারে। এই ঘটনা পৃথিবীতে প্রায় অসম্ভব।
অধ্যাপক রাম বলেন, ‘এই আবিষ্কার টাইটানের ভূতত্ত্ব এবং এর অদ্ভুত সব ল্যান্ডস্কেপ—যেমন হ্রদ, সমুদ্র এবং বালিয়াড়ি—বোঝার ক্ষেত্রে খুবই সহায়ক হবে।’
তিনি আরও মন্তব্য করেন, টাইটানের মতো চরম, প্রতিকূল পরিবেশে প্রাণের উৎপত্তির আগে রসায়ন কীভাবে কাজ করতে পারত, এই গবেষণা সেই বিষয়েও নতুন অন্তর্দৃষ্টি যোগ করবে। হাইড্রোজেন সায়ানাইডের এই ভূমিকা প্রাণ সৃষ্টির মৌলিক উপাদান, যেমন প্রোটিন তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় অ্যামিনো অ্যাসিড এবং জেনেটিক কোডের জন্য প্রয়োজনীয় নিউক্লিওবেস অজৈবিকভাবে তৈরি হওয়ার প্রক্রিয়া বুঝতে সাহায্য করতে পারে।

শনি গ্রহের বৃহত্তম এবং রহস্যময় উপগ্রহ টাইটান। চরম শীতল পরিবেশের এই উপগ্রহ রসায়ন শাস্ত্রের এক অতি মৌলিক নিয়মকে বুড়ো আঙুল দেখিয়েছে। একটি নতুন গবেষণায় দেখা গেছে, যেসব বস্তু সাধারণত একে অপরের সঙ্গে মেশে না, যেমন পৃথিবীতে তেল ও পানি—টাইটানের তীব্র ঠান্ডায় (মাইনাস ১৮৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস) দুটো একসঙ্গে মিলেমিশে থাকতে পারে।
সুইডেনের চালমার্স ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি এবং নাসার বিজ্ঞানীদের এই আবিষ্কার মহাকাশ গবেষণায় নতুন দিগন্ত খুলে দিয়েছে। গবেষণাটির নেতৃত্ব দিয়েছেন চালমার্সের রসায়ন ও রাসায়নিক প্রকৌশল বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মার্টিন রাম।
সাধারণত পৃথিবীতে পোলার এবং নন-পোলার অণুগুলো একে অপরের সঙ্গে মেশে না। এটি ‘লাইক ডিসলভস লাইক’ নীতি নামে পরিচিত। পানির মতো পোলার অণুগুলোতে আধানের বণ্টন অসম থাকে, আর তেলের মতো নন-পোলার অণুগুলোতে আধান সুষম থাকে। এই ভিন্নতার কারণেই এরা একে অপরকে বিকর্ষণ করে এবং আলাদা স্তর তৈরি করে।
পিএনএএস জার্নালে প্রকাশিত গবেষণাপত্রটিতে দেখানো হয়েছে, টাইটানের চরম শীতল পরিস্থিতি এই নিয়মকে উল্টে দেয়। গবেষকেরা ল্যাবরেটরিতে টাইটানের পরিবেশ তৈরি করে পরীক্ষা করেন এবং দেখেন যে পোলার হাইড্রোজেন সায়ানাইড এবং নন-পোলার হাইড্রোকার্বন (যেমন মিথেন ও ইথেন) কঠিন রূপে একসঙ্গে ক্রিস্টালাইজড (স্ফটিক) হতে পারে।
অধ্যাপক রাম জানান, হাইড্রোজেন সায়ানাইড ক্রিস্টালগুলোর মধ্যে আন্তঃআণবিক শক্তি অস্বাভাবিকভাবে শক্তিশালী হয়ে ওঠে। এই শক্তির কারণেই নন-পোলার অণুগুলো ক্রিস্টাল কাঠামোর ভেতরে প্রবেশ করে একসঙ্গে থাকতে পারে। এই ঘটনা পৃথিবীতে প্রায় অসম্ভব।
অধ্যাপক রাম বলেন, ‘এই আবিষ্কার টাইটানের ভূতত্ত্ব এবং এর অদ্ভুত সব ল্যান্ডস্কেপ—যেমন হ্রদ, সমুদ্র এবং বালিয়াড়ি—বোঝার ক্ষেত্রে খুবই সহায়ক হবে।’
তিনি আরও মন্তব্য করেন, টাইটানের মতো চরম, প্রতিকূল পরিবেশে প্রাণের উৎপত্তির আগে রসায়ন কীভাবে কাজ করতে পারত, এই গবেষণা সেই বিষয়েও নতুন অন্তর্দৃষ্টি যোগ করবে। হাইড্রোজেন সায়ানাইডের এই ভূমিকা প্রাণ সৃষ্টির মৌলিক উপাদান, যেমন প্রোটিন তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় অ্যামিনো অ্যাসিড এবং জেনেটিক কোডের জন্য প্রয়োজনীয় নিউক্লিওবেস অজৈবিকভাবে তৈরি হওয়ার প্রক্রিয়া বুঝতে সাহায্য করতে পারে।

মহাকাশযান দুটির যাত্রা শুরু হয় ৪৭ বছর আগে, ১৯৭৭ সালে। এগুলোতে রয়েছে গোল্ডেন রেকর্ড নামের গ্রামোফোন রেকর্ড। তামার ওপরে সোনার প্রলেপ দিয়ে এই রেকর্ডটি বানানো হয়েছে। আর এর মোড়ক বানানো হয়েছে অ্যালুমিনিয়াম ও ইউরেনিয়াম–২৩৮ আইসোটোপ দিয়ে। নাসার বিজ্ঞানীরা বলছেন, এই ধাতব চাকতি কোটি কোটি বছর অক্ষত থাকবে।
০৭ ডিসেম্বর ২০২৪
নোবেলজয়ী আমেরিকান বিজ্ঞানী জেমস ওয়াটসন মারা গেছেন। তাঁর বয়স হয়েছিল ৯৭ বছর। ডিএনএর (DNA) যুগান্তকারী ডাবল হেলিক্স কাঠামো আবিষ্কারকদের অন্যতম তিনি। তিনি কোল্ড স্প্রিং হারবার ল্যাবরেটরিতে দীর্ঘদিন গবেষণা করেছেন। ল্যাবরেটরি কর্তৃপক্ষ তাঁর মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে বলে বিবিসির প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
২ দিন আগে
বেলজিয়ামের জীবাশ্মবিজ্ঞানী মিৎসে গেরমোঁপ্রে দাবি করেছেন, তাঁর আবিষ্কার মানুষের সঙ্গে কুকুরের বন্ধুত্বের ইতিহাসকে নতুন করে লিখতে পারে। তাঁর মতে, কুকুরের গৃহপালিত হওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল আজ থেকে প্রায় ৩৫ হাজার বছর আগে, যা প্রচলিত ধারণার চেয়ে প্রায় ২০ হাজার বছর আগে!
৩ দিন আগে
বারবিকিউ পার্টি চলছে এখন মহাকাশেও! তিয়ানগং স্পেস স্টেশনে চীনের ছয়জন নভোচারী এই আয়োজন করেছেন। চীনের অ্যাস্ট্রোনট সেন্টার (এসিসি) প্রকাশিত এক ভিডিওতে দেখা যায়, শেনঝো–২০ ও শেনঝো–২১ মিশনের নভোচারীরা একটি নতুন ধরনের ওভেন ব্যবহার করে রান্না করছেন, যা মহাকাশের মাইক্রোগ্র্যাভিটি পরিবেশে ব্যবহারের উপযোগী
৫ দিন আগে