Ajker Patrika

আশু বাস্তবায়নযোগ্য সংস্কার সুনির্দিষ্ট করার পরামর্শ জামায়াতের

  • সংবিধান সংস্কারে অধ্যাদেশ জারির সুপারিশ খেলাফত মজলিসের।
  • আদালতে প্রশ্ন না তোলা-সংক্রান্ত ধারার বিরুদ্ধে এলডিপি, জেএসডি ও বাসদের (মার্কসবাদী)।
নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

জুলাই জাতীয় সনদের খসড়ার বিষয়ে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনে জমা দিয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। সংবিধানের চেয়েও জুলাই সনদকে প্রাধান্য দেওয়া এবং আদালতে সনদ নিয়ে প্রশ্ন না তোলার বিষয়ে একমত দলটি। সে সঙ্গে দ্রুত বাস্তবায়নযোগ্য সুপারিশগুলো সুনির্দিষ্ট করতে কমিশনকে পরামর্শ দিয়েছে জামায়াত।

জামায়াতে ইসলামী গতকাল বৃহস্পতিবার জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের জুলাই সনদ নিয়ে তাদের মতামত জমা দিয়েছে বলে জানিয়েছেন ঐকমত্য কমিশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা পবন চৌধুরী। তিনি জানিয়েছেন, দলটি ছাড়াও খেলাফত মজলিস, এলডিপি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি) এবং বাসদ-মার্কসবাদী জুলাই সনদের চূড়ান্ত খসড়ার বিষয়ে মতামত দিয়েছে। এর আগে গত বুধবার বিএনপি, এবি পার্টি, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, এনডিএম, জাতীয় গণফ্রন্ট ও আমজনতার দল মতামত জমা দেয়।

জুলাই সনদের চূড়ান্ত খসড়ায় সনদের পটভূমি, দুই ধাপের সংলাপের মধ্য দিয়ে ঐকমত্য হওয়া ৮৪টি প্রস্তাব এবং আটটি অঙ্গীকারনামা রয়েছে। এসবের ওপর এখন রাজনৈতিক দলগুলোর মতামত দেওয়ার পর্ব চলছে।

জুলাই সনদের সব বিধান, নীতি ও সিদ্ধান্ত সংবিধানে যুক্ত করার বিষয়ে একমত জামায়াতে ইসলামী। একই সঙ্গে বিদ্যমান সংবিধান বা অন্য কোনো আইনে ভিন্নতর কিছু থাকলে সে ক্ষেত্রে এই সনদের বিধান, প্রস্তাব ও সুপারিশকে প্রাধান্যের বিষয়ে একমত দলটি। সনদের চূড়ান্ত মীমাংসার এখতিয়ার বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের ওপর ন্যস্ত থাকার পাশাপাশি আদালতে প্রশ্ন না তোলার বিষয়েও জামায়াতের সমর্থন রয়েছে।

সনদের ৮ নম্বর অঙ্গীকারনামায় দ্রুত বাস্তবায়নযোগ্য বলে বিবেচিত সব সুপারিশ কালক্ষেপণ না করে নির্বাচনের আগে বাস্তবায়ন করার কথা বলা হয়েছে। তবে, সুপারিশগুলো সুনির্দিষ্ট করা হয়নি খসড়ায়। জামায়াতের পক্ষ থেকে সেগুলো সুনির্দিষ্ট করতে মতামত দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি দিতেও বলেছে দলটি।

জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আজাদ জানান, খসড়ায় একাধিক ‘বিরোধপূর্ণ বিষয়’ ও ‘অসামঞ্জস্য’ চিহ্নিত করেছেন তাঁরা। তিনি বলেন, ‘আমরা অঙ্গীকার অংশের সঙ্গে একমত। তবে আমরা সুপারিশ করেছি, কমিশন যেন তাৎক্ষণিকভাবে বাস্তবায়নযোগ্য সংস্কার বিষয়গুলো চিহ্নিত করে এবং অঙ্গীকারনামায় একটি সময়সীমা উল্লেখ করে।’

এদিকে খেলাফত মজলিসের মহাসচিব আহমদ আব্দুল কাদের জানান, তাঁরা জাতীয় সনদের সব ধারার বাস্তবায়ন আইনি ভিত্তিতে করার জোর সুপারিশ করেছে। সংবিধান-সংক্রান্ত সংস্কার প্রসঙ্গে প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমরা সংবিধান সংস্কারের জন্য অধ্যাদেশ জারির সুপারিশ করেছি।’ তাদের দল গণভোটের বিরোধী, কারণ এ পদ্ধতি ‘সময়সাপেক্ষ’ বলে মন্তব্য করেন খেলাফত মজলিসের মহাসচিব।

জেএসডির পক্ষ থেকে জুলাই সনদকে সংবিধানে একটি পৃথক অধ্যায় হিসেবে যুক্ত করার কথা বলা হয়েছে। এ ছাড়া দলটি খসড়া অঙ্গীকারের ধারা ৪ (যেখানে বলা হয়েছে যে ঘোষণাপত্র কোনো আদালতে প্রশ্নবিদ্ধ করা যাবে না) বাদ দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে।

এলডিপি তাদের মতামতে খসড়ার অঙ্গীকারনামার অংশের ধারা ৪-এর বিরোধিতা করেছে, যেখানে সংবিধানের ৭ (ক), ধারা ৩ এবং অঙ্গীকার অংশের ধারা ৪ বাতিল করার প্রস্তাব করা হয়েছিল।

এলডিপির মহাসচিব রেদোয়ান আহমেদ বলেন, ‘আমরা সুপারিশ করেছি যে ১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিলের স্বাধীনতার ঘোষণা ৭(ক) অনুচ্ছেদের মাধ্যমে সুরক্ষিত থাকতে হবে। অঙ্গীকার অংশে জুলাই সনদের ব্যাখ্যাদাতা হিসেবে শুধু আপিল বিভাগের উল্লেখ নিয়ে তাদের দল উদ্বেগ জানিয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘আপিল বিভাগের কাছে ব্যাখ্যা চাওয়ার একটি সংজ্ঞায়িত আইনিপ্রক্রিয়া আছে, যা অঙ্গীকার অংশে অনুপস্থিত। এ ছাড়া আমরা জোরালোভাবে অঙ্গীকার অংশের ধারা ৪-এর বিরোধিতা করেছি, যেখানে বলা হয়েছে জুলাই সনদকে কোনো আদালতে প্রশ্নবিদ্ধ করা যাবে না।’ রেদোয়ান বলেন, তাঁদের দল প্রস্তাব করেছে পরবর্তী সংসদ গঠনের পর দুই বছরের মধ্যে সনদ বাস্তবায়নের।

অঙ্গীকারনামার বিষয়ে বাসদ মার্কসবাদীর পক্ষ থেকে বলা হয়, কোনো প্রস্তাব বা সুপারিশের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে আদালতে প্রশ্ন তোলা না গেলে সুপ্রিম কোর্ট কীভাবে ব্যাখ্যা দেবে? বিষয়টি সম্পর্কে কমিশনের ব্যাখ্যার দাবি করে দলটি। দলটি মনে করে, এই সনদ কার্যকর করার পথ নিয়ে আলোচনা হতে পারে; কিন্তু একে রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ দলিল হিসেবে ঘোষণা করাটা ভালো উদাহরণ হয় না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বাংলাদেশসহ এশিয়ার ৫ দেশে সফর বাতিল করলেন ইতালির প্রধানমন্ত্রী মেলোনি

স্ত্রীকে হতে হবে নোরা ফাতেহির মতো, না খাইয়ে রেখে তিন ঘণ্টা করে ব্যায়াম করান স্বামী

বাংলা বলায় কলকাতার মার্কেটে ছুরি, বন্দুকের বাঁট ও হকিস্টিক নিয়ে ছাত্রদের ওপর হামলা

ঢাকা কলেজের বাস ভাঙচুর, আবারও শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ, পুলিশের টিয়ার শেল-সাউন্ড গ্রেনেড

২০২৬ সালের পাঠ্যবইয়ে শেখ হাসিনার নামের আগে গণহত্যাকারী, ফেসবুকে আসিফ মাহমুদ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত