Ajker Patrika

বাবুনগরীদের গ্রেপ্তারের দাবি শফীপন্থীদের

প্রতিনিধি
বাবুনগরীদের গ্রেপ্তারের দাবি শফীপন্থীদের

ঢাকা: হেফাজতে ইসলামের প্রতিষ্ঠাতা শাহ আহমদ শফীর হত্যার অভিযোগে সাবেক আমীর জুনায়েদ বাবুনগরীসহ অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবি জানিয়েছেন সংগঠনটির শফীপন্থীরা। একইসঙ্গে হেফাজতসহ শফীর রেখে যাওয়া সব প্রতিষ্ঠান থেকে বাবুনগরীদেরকে অপসারণ করারও দাবি জানিয়েছেন তারা। আজ বুধবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়।

গত বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর রাজধানীর একটি হাসপাতালে মারা যান আহমদ শফী। তাঁকে হত্যা করা হয়েছে, এমন অভিযোগ এনে তাঁর শ্যালক মোহাম্মদ মাঈনুদ্দিন ১৭ ডিসেম্বর একটি মামলা করেন। চলতি বছরের ১২ এপ্রিল এ বিষয়ে আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। শফীকে হত্যা করা হয়েছে বলে যে অভিযোগ, তার সত্যতা থাকার কথা প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। প্রতিবেদনে ৪৩ জন অভিযুক্তের মধ্যে বাবুনগরীর নাম উল্লেখ রয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে হেফাজতের সাবেক যুগ্ম মহাসচিব ফয়জুল্লাহ বলেন, আমি মনে করি তদন্ত প্রতিবেদনে যা এসেছে, তা বাস্তব। এই তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা অপরিহার্য। এ সময় হাটহাজারী মাদরাসার সাবেক শিক্ষা সচিব শফীপুত্র আনাস মাদানীও উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে হাটহাজারী মাদরাসার শিক্ষা সচিব পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় শফীপুত্র আনাস মাদানীকে। তার ওই পদটি আবারও তাকে ফিরিয়ে দেওয়া হবে কীনা জানতে চাইলে ফয়জুল্লাহ বলেন, আনাস মাদানী যে দায়িত্বে ছিলেন, সেই দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়ার কোনও সুযোগ ছিল না। আইনগত কোনও বৈধতা ছিল না। যা করা হয়েছে, অবৈধ এবং অন্যায়ভাবে করা হয়েছে। জুলুম করা হয়েছে। দুই জন মিলে ১২ জনের সিদ্ধান্ত নিতে পারে না, নেওয়া সমীচীন নয়। আমি মনে করি তাকে পূণর্বহালের কিছু নাই।

গত ২৫ এপ্রিল রাতে এক ভিডিও বার্তায় হেফাজতের কমিটি বিলুপ্তির ঘোষণা দেন তৎকালীন আমির জুনায়েদ বাবুনগরী। সেই রাতেই ৫ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি গঠিত হয়। সেই কমিটির আহ্বায়ক থাকেন বাবুনগরী নিজেই। আগামীতে হেফাজতের নতুন কমিটিতে নিজেদের নিয়ন্ত্রণ রাখতে বাবুনগরীদের পাশাপাশি সক্রিয় রয়েছেন শফীপন্থীরাও। এ নিয়ে দুই পক্ষই বিভিন্নভাবে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এরই মধ্যে সরকারের দায়িত্বশীল মন্ত্রীদের সঙ্গেও এ বিষয়ে একাধিকবার বৈঠক করেছেন।

বিলুপ্ত কমিটি প্রসঙ্গে ফয়জুল্লাহ বলেন, যে কমিটি করা হয়েছিল, সেখানে অধিকাংশ সদস্য উপস্থিতও হন নাই। তারা জানেনও না তাদের নাম কমিটিতে অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন সাবেক হেফাজত নেতা নুরুল ইসলাম জাদীদ। তিনি বলেন, একটি মহল ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে দেশের আলেম সমাজকে ভুল পথে ঠেলে দেওয়ার পাঁয়তারা করছে। ওলামায়ে কেরামের সরলতার সুযাগে তারা ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করার অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে।

বর্তমান আহ্বায়ক কমিটির সমালোচনা করে তিনি বলেন, গঠনতন্ত্রে না থাকলেও এককভাবেই তিনি (বাবুনগরী) নিয়ম বহির্ভূত ৫ সদস্য বিশিষ্ট একটি আহবায়ক কমিটি গঠন করেছেন। নতুনভাবে আলেম-উলামা ও ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের ষড়যন্ত্রের ফাদে নিপতিত করার পাঁয়তারা করছেন। হেফাজতের কোনো আহবায়ক কমিটি নয়, মামা-ভাগ্নের ফটিকছড়ি পকেট কমিটি করা হয়েছে। এই আহবায়ক কমিটিই আবারও কোনও কাউন্সিল না করে নিজেদের পছন্দমাফিক লোকদের দিয়ে নতুন কমিটি জন্ম দেওয়ার নীলনকশা চূড়ান্ত করছে।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে মাঈনুদ্দীন রুহী, আব্দুল হামিদ মধুপুরীসহ আরও অনেক শফীপন্থী হেফাজত নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত