উপসম্পাদকীয়
বাংলাদেশে এখন প্রেমও রাজনৈতিক। আগে প্রেমে পড়লে মানুষ কবিতা লিখত, এখন ফেসবুক স্ট্যাটাস দেয়। একসময় ‘কিছু বলব না, বুঝে নিও’ টাইপ প্রেমিকা ছিল—এখন ‘টক্সিসিটিই প্রেমের সৌন্দর্য’ বলে নিজের ফ্যান-ফলোয়ারদের মাঝে থ্রো করে দেয় একখানা থিওরিটিক্যাল বোমা।
কথা হচ্ছে, প্রেম কি আর আগের মতো থাকে? না। প্রেম এখন তিন স্তরে বিভক্ত—ব্যক্তিগত, রাজনৈতিক এবং পাবলিক ইনফ্লুয়েন্স। আর এই তিনটি স্তরের ত্রিভুজে দাঁড়িয়ে আছেন আমাদের ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক মুখপাত্র’ উমামা ফাতেমা, যিনি সদ্য একটি ফেসবুক পোস্ট দিয়ে জানান দিলেন, ‘মেরেছ কলসির কানা, তাই বলে প্রেম দেব না?’
এ তো গেল সাহিত্যিক এক্সপ্রেশন। কিন্তু আসলেই কি কেউ কলসির কানা মেরেছে? নাকি কলসিই ভেঙে গেছে, পানি গড়িয়ে পড়ছে? কেউ জানে না। কিন্তু উমামা নিশ্চয়ই জানেন, কারণ তিনিই তো পোস্ট দিয়েছেন!
ফেসবুক পোস্টে তিনি লিখলেন, ‘প্রেমের সম্পর্কে টুকটাক মন-কষাকষি হতেই পারে। তবে বেশি
জনসমক্ষে না হওয়াই ভালো। মেনে নিন, টক্সিসিটিই প্রেমের সৌন্দর্য।’
এই একটি বাক্যই যথেষ্ট ছিল সোশ্যাল মিডিয়াকে দুই ভাগে ভাগ করে দেওয়ার জন্য। একদল বলছে, ‘উমামা বুঝিয়ে দিল, রাজনৈতিক প্রেমেও টেনশন থাকে’; আরেক দল বলছে, ‘টক্সিক প্রেমে পড়ে আজকাল মানুষ বক্তৃতা দেয়, ব্রেকআপ করে না।’
তৃতীয় একটি দল আছে, যারা চুপচাপ পোস্টের কমেন্টে লাইক দিয়ে যাচ্ছে, এই ভেবে যে, ‘এই তো সুযোগ! হয়তো এখন ইনবক্সে ঢুকলে রিপ্লাই দেবে!’
বাংলাদেশে ছাত্রনেতারা প্রেম করতে পারবে কি না, এটা নিয়েও একটা জাতীয় বিতর্ক হওয়া উচিত। কারণ, অনেকেই মনে করেন, ‘যে কিনা প্রেম করতে পারে, সে কীভাবে বিপ্লব করবে?’ আবার অনেকেই বলেন, ‘বিপ্লব তো প্রেম দিয়েই শুরু হয়।’
তবে উমামার ক্ষেত্রে সমস্যা হলো—তিনি ‘বৈষম্যবিরোধী’। প্রেমে যদি পক্ষপাত থাকে, কার বেশি ভালোবাসা কে পেল, কে কাকে ব্লক করল, কে শেষ কথা বলল—সবকিছুই বৈষম্যমূলক হয়ে ওঠে। তো, তাঁর প্রেমের সম্পর্কেও নিশ্চয়ই একটি কমিটি থাকা উচিত ছিল, যেখানে মন-কষাকষি হলে তা রেজলিউশনের মাধ্যমে সমাধান করা হতো।
উমামা যে বলছেন, ‘মেনে নিন, টক্সিসিটিই প্রেমের সৌন্দর্য’—এই বাক্যটি শুনে সক্রেটিসের আত্মা
বোধ হয় কেঁদে ফেলেছে—‘জানো না, টক্সিসিটি মানেই বিষ!’ কিন্তু না, এই টক্সিসিটি এখন একটি রাজনৈতিক কৌশল। যেমন ধরুন: কারও প্রেমিক যদি কোনো কারণ ছাড়াই গোমড়া মুখে থাকে, তাকে বলা হবে, ‘তুমি টক্সিক, তাই আমি আরও গভীরভাবে তোমায় ভালোবাসি।’
যদি সে হঠাৎ রিপ্লাই না দেয়, এটা প্রেমের খেলা। যদি সে রেগে গিয়ে তিন দিন কথা না বলে, সেটা হচ্ছে ‘ডিসেন্ট ইন লাভ’, মানে মতবিরোধের মধ্যে সৌন্দর্য। এবং সবশেষে, যদি সে প্রেম ভঙ্গ করে, তাহলেই ‘বিপ্লব’। কারণ সব বড় আন্দোলনের পেছনে থাকে একটুখানি হৃদয় ভাঙা!
কেউ বলছে, উমামা আসলে কারও উদ্দেশে ইঙ্গিত করেছেন। কে সে? এটা নিয়ে সাংবাদিক মহলে, রাজনৈতিক মহলে এবং প্রেমিক-প্রেমিকা মহলে দারুণ আগ্রহ। কেউ কেউ বলছেন, এটা তাঁর সাবেক প্রেমিকের বিরুদ্ধে স্টেটমেন্ট। কেউ বলছেন, এটা ভবিষ্যৎ প্রেমিকের জন্য একটি শর্ত।
একটা কথা অবশ্য সত্য। এই পোস্টের পর হয়তো আবার কেউ তাঁর প্রেমে পড়বেন, ভাববেন, ‘এই মেয়ের হৃদয়ে টক্সিসিটির সৌন্দর্য আছে। তাকেই চাই।’
এভাবেই প্রেম এখন পারফরমেন্স আর পলিটিকসের মিশেল—যেখানে সম্পর্ক মানেই নয় শুধু কফি খাওয়া, কফি-চাপ দেওয়া, বরং একটা পোস্ট, একটা হ্যাশট্যাগ, একটা আইডিওলজিক্যাল বার্তা।
এই যে পোস্ট দিয়ে আলোড়ন তোলা—এটা এখন প্রেমের একটি কৌশল। আগে মানুষ প্রেমিকাকে চিঠি দিত। এখন চিঠি নয়, দেয় পাবলিক পোস্ট!
বিষয়টা এমন দাঁড়িয়েছে—
প্রেমিক: আমাদের মধ্যে দূরত্ব কেন?
প্রেমিকা: কারণ তুমি আমার পোস্টে রিয়্যাক্ট দাও না।
এটাই আধুনিক প্রেম। পোস্ট দিলে সবাই জানবে—হ্যাঁ, উমামা ফাতেমার জীবনেও প্রেম আছে, টেনশন আছে, সৌন্দর্য আছে এবং তা টক্সিক!
আমরা যারা এখনো নিরীহ, কফিশপে গিয়ে নির্লজ্জভাবে হাসি, প্রেমিকাকে ‘বেবি’ ডাকি—আমাদের প্রেম এখন পুরোনো হয়ে গেছে। আমাদের প্রেমে কোনো টক্সিসিটি নেই, আমরা রাজপথে প্রেম করি না, ফেসবুকে পোস্ট দিই না, তাই আমাদের কেউ মনে রাখে না।
তাই আমরা চাই—বৈষম্যবিরোধী প্রেম আন্দোলনের দ্বিতীয় পর্ব হোক—যেখানে সব প্রেমিক-প্রেমিকা পোস্ট দিয়ে জানিয়ে দেবে কে কারে কতটা প্যারা দিচ্ছে। পোস্টের শিরোনাম হবে: ‘মেরেছি কলসির কানা, তবু কলসি আমারই!’
আন্দোলনের স্লোগান হবে: ‘টক্সিক প্রেম চাই, পাবলিক পোস্ট চাই, উমামার মতো হৃদয়স্পর্শী
ব্যথা চাই!’
বাংলাদেশে এখন প্রেমও রাজনৈতিক। আগে প্রেমে পড়লে মানুষ কবিতা লিখত, এখন ফেসবুক স্ট্যাটাস দেয়। একসময় ‘কিছু বলব না, বুঝে নিও’ টাইপ প্রেমিকা ছিল—এখন ‘টক্সিসিটিই প্রেমের সৌন্দর্য’ বলে নিজের ফ্যান-ফলোয়ারদের মাঝে থ্রো করে দেয় একখানা থিওরিটিক্যাল বোমা।
কথা হচ্ছে, প্রেম কি আর আগের মতো থাকে? না। প্রেম এখন তিন স্তরে বিভক্ত—ব্যক্তিগত, রাজনৈতিক এবং পাবলিক ইনফ্লুয়েন্স। আর এই তিনটি স্তরের ত্রিভুজে দাঁড়িয়ে আছেন আমাদের ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক মুখপাত্র’ উমামা ফাতেমা, যিনি সদ্য একটি ফেসবুক পোস্ট দিয়ে জানান দিলেন, ‘মেরেছ কলসির কানা, তাই বলে প্রেম দেব না?’
এ তো গেল সাহিত্যিক এক্সপ্রেশন। কিন্তু আসলেই কি কেউ কলসির কানা মেরেছে? নাকি কলসিই ভেঙে গেছে, পানি গড়িয়ে পড়ছে? কেউ জানে না। কিন্তু উমামা নিশ্চয়ই জানেন, কারণ তিনিই তো পোস্ট দিয়েছেন!
ফেসবুক পোস্টে তিনি লিখলেন, ‘প্রেমের সম্পর্কে টুকটাক মন-কষাকষি হতেই পারে। তবে বেশি
জনসমক্ষে না হওয়াই ভালো। মেনে নিন, টক্সিসিটিই প্রেমের সৌন্দর্য।’
এই একটি বাক্যই যথেষ্ট ছিল সোশ্যাল মিডিয়াকে দুই ভাগে ভাগ করে দেওয়ার জন্য। একদল বলছে, ‘উমামা বুঝিয়ে দিল, রাজনৈতিক প্রেমেও টেনশন থাকে’; আরেক দল বলছে, ‘টক্সিক প্রেমে পড়ে আজকাল মানুষ বক্তৃতা দেয়, ব্রেকআপ করে না।’
তৃতীয় একটি দল আছে, যারা চুপচাপ পোস্টের কমেন্টে লাইক দিয়ে যাচ্ছে, এই ভেবে যে, ‘এই তো সুযোগ! হয়তো এখন ইনবক্সে ঢুকলে রিপ্লাই দেবে!’
বাংলাদেশে ছাত্রনেতারা প্রেম করতে পারবে কি না, এটা নিয়েও একটা জাতীয় বিতর্ক হওয়া উচিত। কারণ, অনেকেই মনে করেন, ‘যে কিনা প্রেম করতে পারে, সে কীভাবে বিপ্লব করবে?’ আবার অনেকেই বলেন, ‘বিপ্লব তো প্রেম দিয়েই শুরু হয়।’
তবে উমামার ক্ষেত্রে সমস্যা হলো—তিনি ‘বৈষম্যবিরোধী’। প্রেমে যদি পক্ষপাত থাকে, কার বেশি ভালোবাসা কে পেল, কে কাকে ব্লক করল, কে শেষ কথা বলল—সবকিছুই বৈষম্যমূলক হয়ে ওঠে। তো, তাঁর প্রেমের সম্পর্কেও নিশ্চয়ই একটি কমিটি থাকা উচিত ছিল, যেখানে মন-কষাকষি হলে তা রেজলিউশনের মাধ্যমে সমাধান করা হতো।
উমামা যে বলছেন, ‘মেনে নিন, টক্সিসিটিই প্রেমের সৌন্দর্য’—এই বাক্যটি শুনে সক্রেটিসের আত্মা
বোধ হয় কেঁদে ফেলেছে—‘জানো না, টক্সিসিটি মানেই বিষ!’ কিন্তু না, এই টক্সিসিটি এখন একটি রাজনৈতিক কৌশল। যেমন ধরুন: কারও প্রেমিক যদি কোনো কারণ ছাড়াই গোমড়া মুখে থাকে, তাকে বলা হবে, ‘তুমি টক্সিক, তাই আমি আরও গভীরভাবে তোমায় ভালোবাসি।’
যদি সে হঠাৎ রিপ্লাই না দেয়, এটা প্রেমের খেলা। যদি সে রেগে গিয়ে তিন দিন কথা না বলে, সেটা হচ্ছে ‘ডিসেন্ট ইন লাভ’, মানে মতবিরোধের মধ্যে সৌন্দর্য। এবং সবশেষে, যদি সে প্রেম ভঙ্গ করে, তাহলেই ‘বিপ্লব’। কারণ সব বড় আন্দোলনের পেছনে থাকে একটুখানি হৃদয় ভাঙা!
কেউ বলছে, উমামা আসলে কারও উদ্দেশে ইঙ্গিত করেছেন। কে সে? এটা নিয়ে সাংবাদিক মহলে, রাজনৈতিক মহলে এবং প্রেমিক-প্রেমিকা মহলে দারুণ আগ্রহ। কেউ কেউ বলছেন, এটা তাঁর সাবেক প্রেমিকের বিরুদ্ধে স্টেটমেন্ট। কেউ বলছেন, এটা ভবিষ্যৎ প্রেমিকের জন্য একটি শর্ত।
একটা কথা অবশ্য সত্য। এই পোস্টের পর হয়তো আবার কেউ তাঁর প্রেমে পড়বেন, ভাববেন, ‘এই মেয়ের হৃদয়ে টক্সিসিটির সৌন্দর্য আছে। তাকেই চাই।’
এভাবেই প্রেম এখন পারফরমেন্স আর পলিটিকসের মিশেল—যেখানে সম্পর্ক মানেই নয় শুধু কফি খাওয়া, কফি-চাপ দেওয়া, বরং একটা পোস্ট, একটা হ্যাশট্যাগ, একটা আইডিওলজিক্যাল বার্তা।
এই যে পোস্ট দিয়ে আলোড়ন তোলা—এটা এখন প্রেমের একটি কৌশল। আগে মানুষ প্রেমিকাকে চিঠি দিত। এখন চিঠি নয়, দেয় পাবলিক পোস্ট!
বিষয়টা এমন দাঁড়িয়েছে—
প্রেমিক: আমাদের মধ্যে দূরত্ব কেন?
প্রেমিকা: কারণ তুমি আমার পোস্টে রিয়্যাক্ট দাও না।
এটাই আধুনিক প্রেম। পোস্ট দিলে সবাই জানবে—হ্যাঁ, উমামা ফাতেমার জীবনেও প্রেম আছে, টেনশন আছে, সৌন্দর্য আছে এবং তা টক্সিক!
আমরা যারা এখনো নিরীহ, কফিশপে গিয়ে নির্লজ্জভাবে হাসি, প্রেমিকাকে ‘বেবি’ ডাকি—আমাদের প্রেম এখন পুরোনো হয়ে গেছে। আমাদের প্রেমে কোনো টক্সিসিটি নেই, আমরা রাজপথে প্রেম করি না, ফেসবুকে পোস্ট দিই না, তাই আমাদের কেউ মনে রাখে না।
তাই আমরা চাই—বৈষম্যবিরোধী প্রেম আন্দোলনের দ্বিতীয় পর্ব হোক—যেখানে সব প্রেমিক-প্রেমিকা পোস্ট দিয়ে জানিয়ে দেবে কে কারে কতটা প্যারা দিচ্ছে। পোস্টের শিরোনাম হবে: ‘মেরেছি কলসির কানা, তবু কলসি আমারই!’
আন্দোলনের স্লোগান হবে: ‘টক্সিক প্রেম চাই, পাবলিক পোস্ট চাই, উমামার মতো হৃদয়স্পর্শী
ব্যথা চাই!’
লেখার শিরোনাম দেখেই যদি কেউ ভেবে থাকেন, এখানে অমূল্য রতন পেয়ে যাবেন, তাহলে ভুল করবেন। ফেব্রুয়ারি আর এপ্রিল নিয়ে এমন এক গাড্ডায় পড়েছে নির্বাচন যে, কোনো ধরনের ভবিষ্যদ্বাণী করার শক্তি কারও নেই। বিএনপির হাতে মুলা ধরিয়ে দিয়ে এই সরকারই আরও অনেক দিন ক্ষমতায় থাকার বাসনা পোষণ করছে কি না...
১৫ ঘণ্টা আগেবিশ্বে পরিবেশদূষণকারী হিসেবে ১৫টি প্রধান দূষক চিহ্নিত করা হয়েছে। পয়লা নম্বরে আছে জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার। বিশ্বব্যাপী পরিবেশদূষণে ৫ নম্বর দূষণকারী এখন প্লাস্টিক। দূষণের মাত্রা অনুযায়ী এই অবস্থান নির্ধারিত হয়েছে।
১৫ ঘণ্টা আগেবাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) পরিচালিত ‘সিটিজেন পারসেপশন সার্ভে (সিপিএস) ২০২৫’-এর প্রাথমিক প্রতিবেদন আমাদের সামনে একটি হতাশাজনক বাস্তবতা তুলে ধরেছে।
১৬ ঘণ্টা আগেঅন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মধ্যে লন্ডনে অনুষ্ঠিত সভা এখন অতীত বিষয়। ওই সভার পর দেশের রাজনীতিতে অনেক কিছুই সমন্বয় হয়ে গেছে এবং এখনো হয়ে যাচ্ছে। রাজনীতি একটি দ্রুত অগ্রসরমাণ বিষয়। তার কয়েক দিনও এক জায়গায় অবস্থানের সুযোগ নেই।
২ দিন আগে