Ajker Patrika

অপরাধীকে শাস্তির আওতায় নিতে হবে

সুলতানা কামাল, মানবাধিকারকর্মী
অপরাধীকে শাস্তির আওতায় নিতে হবে

একজন পুলিশ সুপারের বিরুদ্ধে একজন নারী পুলিশ পরিদর্শক যৌন হয়রানির অভিযোগ করেছেন। হয়রানির শিকার নারী প্রশাসনের একজন পদস্থ সরকারি কর্মকর্তা।তারপরও তাঁকে যৌন হয়রানির শিকার হতে হয়েছে। অনেক নারীই এমন ক্ষমতার জায়গা অর্জন করে নেন। কিন্তু নারীর উচ্চ পদের এই অবস্থানকে স্বীকার করে নেওয়ার মতো মানসিকতা আমাদের তৈরি হয়নি। বিশেষ করে নারীরা যখন ক্ষমতায় যান কিংবা উচ্চ পদে আসীন হন; তখন আমরা নারীকে পদে পদে বাধা দেওয়ার জন্য উঠেপড়ে লাগি। নারীর প্রাপ্য সম্মান ও মর্যাদা দেওয়ার মানসিক পরিবর্তন না এনে শুধু পদায়ন করলে হবে না।

আমাদের সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও মানসিক উৎকর্ষসাধনের বিষয়টি আমরা সেভাবে মনোযোগ দিয়ে করিনি। শুধু প্রশাসনিকভাবে নারীকে একটা জায়গায় বসিয়ে দিলেই হবে না। প্রথমত নারীকে একজন মানুষ হিসেবে স্বীকার করতে হবে। সম অধিকারের অংশীদার হিসেবে স্বীকার করার যে প্রক্রিয়া, সেটা আমাদের অনেক বেশি গুরুত্ব দিয়ে করতে হবে। সেখানে যদি কোনো ব্যত্যয় ঘটে তাহলে অপরাধীকে শাস্তির আওতায় নিয়ে আসতে হবে। দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হলে এই বিষয়গুলো কমে আসবে।

নারী নির্যাতনের যতগুলো অভিযোগ ওঠে তার চেয়ে অনেক কম মামলা হয়। তার মধ্যে নগণ্যসংখ্যক বিচার হয় ও শাস্তির আওতায় আসে। তাই নারীর শুধু পদায়ন করলেই হবে, শুধু ক্ষমতায়ন করলেই হবে না। নারীর অধিকার, মর্যাদা ও সম অধিকারের বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখতে হবে। এটা সাংবিধানিকভাবে রাষ্ট্রের দায়িত্ব। সংবিধানে আমাদের বারবার নারীর অধিকার ও মর্যাদার বিষয়টি বলা আছে। এর ব্যত্যয় ঘটলে অবশ্যই যেন তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা নেওয়া হয়। যাতে করে কেউ এ ধরনের কাজ করতে আর কোনোভাবে সাহস না পায়। বিচার না হওয়ার কারণে সমাজে এমন অনেক নারী আছে, যারা অভিযোগ করার সাহসই করে না।

সামাজিক মাধ্যমে নিম্ন রুচির পরিচয় আমরা পাই। যারা নির্যাতনের শিকার হয়, তাদেরই হেয় ও ব্যঙ্গ করা হয়। সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে আমাদের রুচির উৎকর্ষ সাধন করতে না পারলে নারীর জন্য পরিবেশ তৈরি হবে না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত