Ajker Patrika

শেষ হলো ডিসি সম্মেলন

স্থানীয় নির্বাচন আগে চান ডিসিরাও

  • যুবদের জন্য সামরিক প্রশিক্ষণের প্রস্তাব ডিসিদের।
  • অপারেশন ডেভিল হান্ট চলবে: উপদেষ্টা
  • ভোটে ডিসিরা নির্ভয়ে দায়িত্ব পালন করতে পারবেন।
আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৯: ৪৫
স্থানীয় নির্বাচন আগে চান ডিসিরাও

সংস্কার শেষে দ্রুত নির্বাচনের দাবিতে সরব বিএনপিসহ কিছু রাজনৈতিক দল। এর মধ্যে নতুন বিতর্ক শুরু হয়েছে জাতীয় নির্বাচন, নাকি স্থানীয় নির্বাচন— কোনটি আগে হবে। এ অবস্থায় জেলা প্রশাসকেরা (ডিসি) বলছেন, আগে স্থানীয় নির্বাচন করা দরকার। কারণ, জেলা-উপজেলায় জনপ্রতিনিধিদের অনুপস্থিতিতে তাঁদের কাজ করা কর্মকর্তাদের জন্য চাপের হয়ে যাচ্ছে।

ডিসিদের এই চাওয়ার কথা জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। ডিসি সম্মেলনে বক্তব্য শেষে গতকাল মঙ্গলবার তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন।

জেলা প্রশাসকদের বিভিন্ন প্রস্তাব, দাবিদাওয়া, পরামর্শ ও সুপারিশের মধ্য দিয়ে তিন দিনের ডিসি সম্মেলন গতকাল শেষ হয়েছে। এবারের সম্মেলনে সারা দেশ থেকে ৩৫৩টি প্রস্তাব এবং ৩৪টি কার্য-অধিবেশন ছিল। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়ন, জনসেবা, জনদুর্ভোগ, রাস্তাঘাট নির্মাণ, আইনকানুন ও বিধিমালা সংশোধন এবং জনস্বার্থের বিষয়গুলোকে অগ্রাধিকার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে শেষ হলো ডিসি সম্মেলন।

বিভাগীয় কমিশনার-ডিসিরা স্থানীয় নির্বাচন আগে চান

গতকাল সম্মেলনে বক্তব্য দেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। পরে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, দেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলায় জনপ্রতিনিধি না থাকায়

সেখানে কর্মকর্তাদের অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে। প্রশাসনিক কাজ ছাড়াও জনপ্রতিনিধির দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে তাঁদের। দু-তিনটি কাজ একসঙ্গে করতে গিয়ে বাধার সম্মুখীন হচ্ছেন স্থানীয় পর্যায়ের কর্মকর্তারা। এ জন্য স্থানীয় নির্বাচন আগে করা হোক বলে জানিয়েছেন ডিসিরা।

যুবদের জন্য সামরিক প্রশিক্ষণের প্রস্তাব

দেশের প্রতিরক্ষায় যুবসমাজ যাতে অংশ নিতে পারে, সেজন্য তাদের সার্বজনীন সামরিক প্রশিক্ষণের প্রস্তাব দিয়েছেন জেলা প্রশাসকেরা। ডিসি সম্মেলনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এবং সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের কার্য-অধিবেশনে তাঁরা এ প্রস্তাব দেন। উপদেষ্টা পদমর্যাদায় প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) আব্দুল হাফিজ সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।

লুটের ১৪০০ অস্ত্র ও আড়াই লাখ গুলি উদ্ধার হয়নি

সরকার পরিবর্তনের পর লুট হওয়া ১ হাজার ৪০০ অস্ত্র এবং আড়াই লাখ গুলি এখনো উদ্ধার হয়নি। এসব উদ্ধারে জেলা প্রশাসকদের সহায়তা চেয়েছে সরকার। প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, প্রায় ১৪০০ অস্ত্র এখনো উদ্ধার হয়নি, যেগুলো গত ৫ আগস্ট-পরবর্তী সময়ে লুট হয়েছিল। আড়াই লাখ গুলি এখনো উদ্ধার হয়নি। সেগুলো কোনো না কোনো জায়গায় আছে। সেগুলো সন্ত্রাসীদের হাতে পড়তে পারে এবং তারা ব্যবহার করতে পারে। প্রায় ৬ হাজার অস্ত্র লুট হয়েছিল। তিন-চতুর্থাংশের বেশি উদ্ধার হয়েছে। ৬ লাখ গুলির মধ্যে আড়াই লাখ এখনো উদ্ধার হয়নি। বাকিগুলো চলমান অভিযানে উদ্ধার করা সম্ভব হবে।

অপারেশন ডেভিল হান্ট চলবে

অপরাধীদের পাকড়াও করা না পর্যন্ত অপারেশন ডেভিল হান্ট অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি আস্তে আস্তে উন্নতি হচ্ছে বলে দাবি করেন তিনি।

আইনশৃঙ্খলা উন্নয়নে ডিসিদের কী নির্দেশনা দিয়েছেন, এ প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতির জন্যই অপারেশন ডেভিল হান্ট চালানো হচ্ছে।

ডেভিল হান্ট কত দিন চলবে, এ প্রশ্নে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘যত দিন ডেভিলরা থাকবে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি কীভাবে আরও উন্নত করা যায়, এ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সীমান্ত এলাকায় বিজিবি ও নৌ পুলিশ এবং গাজীপুর শিল্প পুলিশের জনবল বৃদ্ধির জন্য বলেছেন জেলা প্রশাসকেরা।

পুলিশের হাতে মারণাস্ত্র না দেওয়া এবং এসপি ও ওসিদের এসিআর লেখার প্রস্তাব করেছিলেন ডিসিরা। এ বিষয়ে কী সিদ্ধান্ত হয়েছে জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, এসব বিষয় নিয়ে আলোচনার সময় ছিল খুব কম।

আইনিপ্রক্রিয়া মেনেই ফল ঘোষণা করা হয়েছিল

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে হাইকোর্ট ৬ হাজার ৫৩১ জনের নিয়োগ বাতিলের বিষয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার জানান, সব ধরনের আইনিপ্রক্রিয়া অনুসরণ করেই তাঁরা ফল ঘোষণা করেছেন। এ কারণে নিয়োগ বাতিল হওয়া প্রার্থীদের প্রতি তাঁদের সহানুভূতি রয়েছে।

গণশিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, আদালত থেকে একটি রায় হয়েছে, যেটিতে উনারা ক্ষুব্ধ। সরকার আপিল করেছে। বিষয়টি আদালতে বিচারাধীন। প্রশাসনিকভাবে আলাদা কোনো উদ্যোগ নেওয়ার সুযোগ নেই। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এবং আইন মন্ত্রণালয়ের মতামত নিয়েই তাঁরা ফল ঘোষণা করেছেন।

ডিসিরা নির্ভয়ে দায়িত্ব পালন করতে পারবেন

নির্বাচন সুষ্ঠু করতে সরকারি কর্মকর্তাদের নির্ভয়ে কাজ করার সুযোগ দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন বন, পরিবেশ ও জলবায়ুবিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। ডিসি সম্মেলন শেষে উপদেষ্টা বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে নির্বাচনে ডিসিরা নির্ভয়ে নিজেদের দায়িত্ব পালন করতে পারবেন। নির্বাচন ঘিরে তাঁদের ওপর কোনো চাপ বা প্রভাব থাকবে না। কাজেই এবার ডিসিদের দলীয় তকমার সুযোগ নেই। এরপরও কোনো ডিসির ব্যাপারে রাজনৈতিক দলের আপত্তি থাকলে তা বিবেচনা করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ইমাম ও মুয়াজ্জিনদের জন্য বেতন কাঠামো

সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, অর্ধস্বায়ত্তশাসিত, ওয়াক্ফ নিয়ন্ত্রিত মসজিদের ইমাম ও মুয়াজ্জিনদের জন্য বেতন কাঠামো করার চিন্তা করছে সরকার। ডিসি সম্মেলন শেষে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান ধর্মবিষয়ক উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেন।

উপদেষ্টা বলেন, মসজিদ ব্যবস্থাপনা নীতিমালা-২০২৫ কাজ হাতে নেওয়া হয়েছে। ২০২৫ সালের নিরিখে তাঁদের জন্য একটি পে স্কেল (বেতন কাঠামো) করা যায় কি না, তাও বিশেষজ্ঞরা পরীক্ষা করে দেখছেন। তা হলে সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, অর্ধস্বায়ত্তশাসিত, ওয়াক্ফ নিয়ন্ত্রিত মসজিদগুলোতে ইউফাইড পে স্কেল কার্যকর করা সম্ভব হবে। জেলা প্রশাসকদের মাধ্যমে পরিচালিত মসজিদে পে স্কেল কার্যকর করার অনুরোধ করা হয়েছে। এ ব্যাপারে ডিসিদের সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন জাতীয় নির্বাচন প্রসঙ্গে জেলা প্রশাসকদের উদ্দেশে বলেন, জাতীয় নির্বাচনে জেলা প্রশাসকেরা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। আইনশৃঙ্খলাসহ পুরো প্রক্রিয়ায় তাঁদের সম্পৃক্ততা থাকে। তাঁদের এ মেসেজটা দেওয়া হয়েছে সামনে যে নির্বাচনটা আসছে, আপনারা আইনের সর্বোচ্চ প্রয়োগ করবেন নিজ উদ্যোগে। ডিসি সম্মেলন শেষে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান সিইসি।

সিইসি বলেন, নির্বাচন কমিশন থেকে আইনের সর্বোচ্চ প্রয়োগ করব। কমিশনের যে ক্ষমতা আছে, তা প্রয়োগ করা হবে।

একজন রিটার্নিং কর্মকর্তার ক্ষমতা সম্পর্কে একজন কমিশনার পড়ে শুনান।

সিইসি বলেন, ডিসি সাহেবরা কিছু সাজেশন দিয়েছেন, তাঁদের কিছু অসুবিধার কথা বলেছেন। বিশেষ করে ট্রেজারিতে স্টোরেজ প্রবলেমের কথা বলেছেন, এনআইডি নিয়ে মানুষের হয়রানির কথা বলেছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সাবধান! ৯৯৯ ক্লোন করে বিকাশ-নগদের পিন চাচ্ছে প্রতারকেরা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
সাবধান! ৯৯৯ ক্লোন করে বিকাশ-নগদের পিন চাচ্ছে প্রতারকেরা

সম্প্রতি জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বর ক্লোন করে প্রতারণার অভিযোগ পাওয়া গেছে। প্রতারকেরা ৯৯৯ নম্বর ব্যবহার করে বিকাশ, নগদ, রকেটসহ বিভিন্ন মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাকাউন্টের পিন নম্বর ও ব্যাংকের কার্ডসংক্রান্ত তথ্য জানতে চাইছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

আজ বুধবার (৫ নভেম্বর) জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এর প্রধান অতিরিক্ত উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মহিউল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ কখনোই কোনো নাগরিকের মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাকাউন্ট বা ব্যাংক কার্ডের পিন নম্বর জানতে চায় না। নাগরিকদের চাহিদা অনুযায়ী জরুরি মুহূর্তে পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও অ্যাম্বুলেন্সসেবা দেওয়া হয়।

আজ সকাল ১০টার দিকে এ ধরনের দুটি প্রতারণার ঘটনা ঘটে। রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের কাশিয়াডাঙ্গা থানার আরপুর বাগানপাড়া এলাকার এক বাসিন্দাকে প্রতারকেরা ৯৯৯ নম্বর ক্লোন করে ‘নগদ’ অ্যাকাউন্টের তথ্য জানতে চায়। তিনি বিষয়টি বুঝতে পেরে সরাসরি জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে যোগাযোগ করেন। পরে ৯৯৯ থেকে স্থানীয় থানার সঙ্গে ভুক্তভোগীর যোগাযোগ করিয়ে দেওয়া হয় এবং ঘটনাটি থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) হিসেবে নথিভুক্ত করা হয়।

আরও এক ঘটনায় এক ব্যক্তিকে ৯৯৯ নম্বর থেকে ফোন করে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে বলে জানানো হয় এবং বিকাশ অ্যাকাউন্টের তথ্য দাবি করা হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাকাউন্ট ও ব্যাংকের কার্ডের পিন নম্বর কোনো অবস্থায় কারও সঙ্গে শেয়ার করবেন না। এ ধরনের প্রতারক চক্র থেকে সতর্ক থাকা ও তাদের সম্পর্কে সংশ্লিষ্ট থানা বা ৯৯৯ নম্বরে জানাতে জনগণকে অনুরোধ জানানো হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মুক্তিযোদ্ধা চাচাকে বাবা বানানো সেই ইউএনও ওএসডি

বিশেষ প্রতিনিধি, ঢাকা ­­
চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. কামাল হোসেন। ছবি: সংগৃহীত
চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. কামাল হোসেন। ছবি: সংগৃহীত

নিজের চাচা-চাচিকে বাবা-মা সাজিয়ে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় চাকরি নেওয়ার অভিযোগে অভিযুক্ত চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোলের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. কামাল হোসেনকে ওএসডি করেছে সরকার। আজ বুধবার তাঁকে ওএসডি করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।

কামাল হোসেন তাঁর পিতা-মাতা মো. আবুল কাশেম ও মোছা. হাবীয়া খাতুনের পরিবর্তে নিজের চাচা বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আহসান হাবীব ও চাচি মোছা. সানোয়ারা খাতুনকে পিতা-মাতা দেখিয়ে ৩৫তম বিসিএস পরীক্ষায় অংশ নিয়ে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান কোটায় প্রশাসন ক্যাডারে চাকরি নিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

মুক্তিযোদ্ধা কোটার সুবিধা নিতে জালিয়াতির অভিযোগে গত বছরের ২৬ ডিসেম্বর দুদকের ঢাকা-১-এর সম্মিলিত জেলা কার্যালয়ের উপসহকারী পরিচালক মো. মনজুরুল ইসলাম মিন্টু বাদী হয়ে কামাল হোসেনের বিরুদ্ধে মামলা করেন।

কামাল হোসেনের প্রকৃত মা-বাবা কারা, তা নিশ্চিত হতে গত মঙ্গলবার ডিএনএ পরীক্ষার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুদক। দুদক আনুষ্ঠানিকভাবে এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরদিন ইউএনও কামাল হোসেনকে ওএসডি করা হলো।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

জুলাই বিপ্লবীরা নতুন সংবিধান চাইলে সেটাই হতো সংবিধান: অ্যাটর্নি জেনারেল

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান। ফাইল ছবি
অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান। ফাইল ছবি

অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান বলেছেন, ‘জুলাই বিপ্লবীরা যদি ঐক্যবদ্ধভাবে বলত, “আমরা ৭২-এর সংবিধান চাই না, আমরা নতুন সংবিধান রচনা করতে চাই”—তাহলে সেটাই হতো সংবিধান। কিন্তু তাদের মধ্যে বিভেদ থাকলে হবে না। ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।’

তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিলের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল শুনানিতে আজ বুধবার এসব কথা বলেন রাষ্ট্রের প্রধান এই আইন কর্মকর্তা।

প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন সাত বিচারপতির আপিল বিভাগে অষ্টম দিনের মতো এ বিষয়ে শুনানি হয়।

এদিন আরও শুনানি করেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল আনীক আর হক এবং বিএনপি-সমর্থিত আইনজীবী রুহুল কুদ্দুস কাজল।

শুনানিতে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘হাকিম নড়ে তো হুকুম নড়ে না। খায়রুল হক সাহেবরা হুকুম নড়ায়ে দিয়েছেন সংক্ষিপ্ত রায় এবং পূর্ণাঙ্গ রায়ের মধ্য দিয়ে; যা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। শাস্তি হতে পারে সর্বোচ্চ সাত বছরের কারাদণ্ড। সংবিধান একটা অরগানিক ডকুমেন্ট। এটা বিভিন্ন রকমভাবে উপস্থাপিত হয়। কোরআন কিংবা বাইবেল—কেউ পরিবর্তন করতে পারবে না। সংবিধান পরিবর্তনযোগ্য। আজকে সংবিধানের অ্যামেন্ডমেন্টে (সংশোধন) যদি বলে দেন, তত্ত্বাবধায়কে ফিরে গেলাম, সেটাই যে অ্যাবসোলিউট (যথাযথ) হবে—তাও না। এটাও জনগণের চাহিদা অনুসারে হবে। জনগণ যদি মনে করে, এটাতে তার ভোটাধিকার নিশ্চিত হচ্ছে না, জনগণ ইচ্ছা করলে এর বিরুদ্ধে সংগ্রাম করতে পারবে।’

মো. আসাদুজ্জামান বলেন, ‘আমরা মনে করি, ওই (তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিল) রায় থাকা উচিত না। আমরা বিশ্বাস করি, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে রায়টা লেখা হয়েছে একটি বিশেষ দলকে সুবিধা দেওয়ার জন্য। এই রায় দুটি গ্রাউন্ডে বাতিল হবে। সাতজন মিলে ঘোষণা করলেন, আগামী দুটি সংসদ নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে হতে হবে। সেখানে উনারা ডেভিয়েট (বিচ্যুত) করে পূর্ণাঙ্গ যে রায় দিলেন, তা ওপেন ঘোষণা রায়ের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। ঘোষিত রায় পরিবর্তন করার জন্য রিভিউ করতে হবে। রিভিউ যেকোনো পক্ষ করতে পারে। আদালত স্বতঃপ্রণোদিত হয়েও করতে পারেন। খায়রুল হক সেই পথে না গিয়ে যে পথে হেঁটেছেন, তা আইনের ব্যত্যয়। রিভিউ না করে উনি রায় পরিবর্তন করেছেন। এটা দণ্ডবিধির ২১৯ ধারা অনুসারে শাস্তিযোগ্য অপরাধ। উনি পাবলিক সার্ভেন্ট হিসেবে জানতেন, এ ধরনের পরিবর্তন করা আইনে সম্ভব নয়। তারপরও উনি সেটা করেছেন।’

আসাদুজ্জামান বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থার মাধ্যমে দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাংলাদেশে আসার পরে যেভাবে দেশের গণতন্ত্র উন্নত হয়েছে, তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিলোপের পরে সেই সুযোগ হয়নি। এই ব্যবস্থা বাতিল করার পর হত্যা, গুম, রাতের বেলায় ভোট দেওয়া, মিথ্যা মামলায় মানুষকে কারাগারে পাঠানো—এ ধরনের রাজনীতি শুরু হয়। ৭০ লাখের মতো মানুষ গায়েবি মামলায় আসামি হয়। সেই কারণে এটা ২১৯ ধারার অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বিচারকদের পারিতোষিক ও ছুটিসংক্রান্ত আইনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

সুপ্রিম কোর্টের বিচারকদের পারিতোষিক, ছুটি, পেনশন ও বিশেষাধিকারসংক্রান্ত আইনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট করা হয়েছে। ১৩ জনের পক্ষে এ রিট করা হয়েছে বলে আজ বুধবার জানিয়েছেন তাঁদের আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির।

রিটকারীরা হলেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মোহাম্মদ সাদ্দাম হোসেন, আবদুল্লাহ সাদিক, মো. মিজানুল হক, আব্দুল ওয়াদুদ, রহিম উল্লাহ, আমিনুল ইসলাম শাকিল, ঢাকার জেলা জজ আদালতের আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ, শিক্ষানবিশ আইনজীবী সাব্বির রহমান, মাহমুদুল হাসান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনের শিক্ষার্থী সাখাওয়াত জাকারিয়া, রাফিউল সাব্বির, শামিম সাহিদি ও হাবিবুর রহমান আল হাসান।

রিট আবেদনে বলা হয়, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা সংবিধানের মৌলিক কাঠামোর অংশ। সংবিধানের ৯৪(৪) ও ১৪৭(২) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী সুপ্রিম কোর্টের বিচারকদের আর্থিক স্বাধীনতা ও নিরাপত্তা সংবিধান প্রদত্ত অধিকার। তবে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের বিচারক (পারিতোষিক ও বিশেষাধিকার) আইন, ২০২১ ও বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের বিচারক (ছুটি, পেনশন ও বিশেষাধিকার) আইন, ২০২৩ অনুযায়ী বিচারকদের বেতন, পেনশন ও বিশেষাধিকার এমনভাবে নির্ধারণ করা হয়েছে, যা বাস্তবে তাঁদের আর্থিক স্বাধীনতা ও প্রাতিষ্ঠানিক মর্যাদাকে ক্ষুণ্ন করছে।

আবেদনে এশিয়ার বিভিন্ন দেশের প্রধান বিচারপতি ও বিচারকদের বেতনকাঠামো তুলে ধরা হয়েছে। এতে বলা হয়, বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্টের বিচারকদের আর্থিক অবস্থান দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশের তুলনায় নিম্ন স্তরে রয়েছে। এই অসামঞ্জস্য শুধু আর্থিক নয়, বরং বিচার বিভাগের মর্যাদা ও ন্যায়বিচারের মানের প্রতি সাংঘর্ষিক।

রিটে আরও বলা হয়, সংবিধানে প্রদত্ত বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও ক্ষমতার বিভাজনের নীতিকে উপেক্ষা করে সংসদ তার সাংবিধানিক ক্ষমতার সীমা অতিক্রম করে উক্ত আইন দুটি প্রণয়ন করেছে। এর ফলে বিচারপতিদের জন্য এক অন্যায্য ও বৈষম্যমূলক বেতনকাঠামো সৃষ্টি হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত