Ajker Patrika

পুলিশ ভেরিফিকেশনে রাজনৈতিক পরিচয় রাখার বিপক্ষে কমিশন

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ২১: ৪১
পুলিশ সংস্কার কমিশনের প্রধান সফর রাজ হোসেন। ছবি: সংগৃহীত
পুলিশ সংস্কার কমিশনের প্রধান সফর রাজ হোসেন। ছবি: সংগৃহীত

পুলিশ ভেরিফিকেশনে রাজনৈতিক পরিচয়ের বিষয়টি বাদ দেওয়ার পক্ষে পুলিশ সংস্কার কমিশন। এটি বাদ দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংস্কার কমিশনের প্রধান সফর রাজ হোসেন।

আজ সোমবার বিকেলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পুলিশ সংস্কার কমিশনের বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান সফর রাজ হোসেন। বৈঠকে অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ও সংস্কার কমিশনের প্রধানসহ সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। গত ৬ অক্টোবর এই কমিশন কাজ শুরু করে।

সরকারি চাকরি, পাসপোর্ট, লাইসেন্স বা অন্য কোনো প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে আবেদনকারীর দেওয়া তথ্যাদি সঠিক আছে কি না, তা পুলিশ দিয়ে যাচাই (ভেরিফিকেশন) করা হয়। এ ক্ষেত্রে সাধারণত আবেদনকারীর রাজনৈতিক পরিচয়কে বড় করে দেখা হয়। এটি পুলিশ ভেরিফিকেশন প্রতিবেদনকে প্রভাবিত করতে পারে।

সফর রাজ হোসেন বলেন, এই কমিশন আগামী ৩১ ডিসেম্বর সরকারের কাছে প্রতিবেদন দেবে। তিনি বলেন, ‘আমরা মোটামুটি মাঝামাঝি সময়ে এসেছি। এটাকে খসড়ার চূড়ান্ত রূপ বলা যায়। আমরা যেসব সুপারিশ করছি এর কিছু কিছু স্বল্প সময়ে বাস্তবায়ন করা সম্ভব। কিছু কিছু বাস্তবায়নে দীর্ঘ সময় লাগবে। কিছু সুপারিশ বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে অর্থের প্রয়োজন রয়েছে। কিছু ক্ষেত্রে সরকারকে আইন ও বিধিবিধান পাল্টাতে হবে। আমরা শুধু সুপারিশ করার মালিক।’

পুলিশ সংস্কার কমিশনের প্রধান বলেন, সরকারি, আধা সরকারি কিংবা ব্যাংকের চাকরির জন্য পুলিশ ভেরিফিকেশন করতে হয়। পুলিশ ভেরিফিকেশনের এই পদ্ধতি ১৯২৮ সাল থেকে হয়ে আসছে। ব্রিটিশ আইনের ম্যানুয়াল অনুযায়ী এখানে কয়েক ধরনের প্রশ্ন এবং তদন্ত করা হয়। এতে অনেক সময় অনেক চাকরিপ্রার্থী বাদ পড়ে যায়। দ্বিতীয়ত, আরেকটি বিষয় প্রচলিত আছে আত্মীয়স্বজনের কেউ রাজনীতি করে কি না এবং রাষ্ট্রবিরোধী কেউ আছে কি না, এটা ব্রিটিশদের আঙ্গিকে চিন্তা করা হতো। সম্প্রতি এমন একটি অভিযোগ এসেছে যে কারও আত্মীয়স্বজন রাজনীতি করে, কিন্তু সরকারি দল করে না, তাদের অনেকের ক্ষেত্রে এসব যুক্তি দেখিয়ে চাকরি দেওয়া হয়নি। তাই প্রচলিত এই প্রথা বাদ দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।

সফর রাজ হোসেন আরও বলেন, অনেক সময় নাম-পরিচয় পরিবর্তন করে কেউ চাকরিতে ঢুকতে পারে। পরে দেখা যেতে পারে সে কোনো অপরাধের সঙ্গে জড়িত। সুতরাং, সে ক্ষেত্রে পুলিশ ভেরিফিকেশন জরুরি। যেভাবেই হোক, পুলিশ ভেরিফিকেশনে যাতে ভোগান্তি না হয়, সে বিষয়ে সুপারিশ করা হয়েছে। পুলিশ ভেরিফিকেশন হবে, কিন্তু সেখানে আত্মীয়স্বজনের রাজনৈতিক বিবেচনা আমলযোগ্য হবে না।

সংস্কার কমিশনের প্রধান বলেন, ১৮৯৮ সালের ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৪ ধারায় পুলিশ বিনা পরোয়ানায় গ্রেপ্তার করতে পারে। তবে এ ক্ষেত্রে হাইকোর্টের নির্দেশনা মানতে হবে। ৫৪ ধারায় পুলিশ পরোয়ানা ছাড়া গ্রেপ্তার করতে পারে। ১৬৭ ধারায় পুলিশ রিমান্ডে নেয়। এ দুটি ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত নেওয়ার কর্তৃপক্ষ কমিশন কিংবা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নয়। এটি আইন মন্ত্রণালয়ের আইন। এ কারণে আইন মন্ত্রণালয় থেকে একজন যুগ্ম সচিবকে সংস্কার কমিশনে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

সফর রাজ হোসেন বলেন, আইনপ্রয়োগের ক্ষেত্রে পুলিশ এবং সরকারের অন্য সংস্থাগুলোকে বেশ কিছু নিয়ম মেনে চলতে হবে। কাউকে গ্রেপ্তার করলে অবশ্যই তাঁর পরিবারকে জানাতে হবে। এটা হাইকোর্টের একটি রায়। পুলিশের দুর্নীতি বিষয়ে তিনি বলেন, দেশের বড় সমস্যাই দুর্নীতি। পুলিশের বেতনকাঠামো নিয়ে আলোচনা হয়েছে। পুলিশসহ সরকারের সব বিভাগকে রাজনীতিমুক্ত রাখার চেষ্টা করতে হবে। গত ১৫ বছরে পুলিশসহ অন্যান্য বিভাগ রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংযুক্ত ছিল। অনেকে দুর্নীতি করেছেন এবং পদোন্নতি নেওয়ার চেষ্টা করেছেন। এটি বন্ধে সুপারিশ করা হয়েছে। পুলিশের সাদাপোশাকে গ্রেপ্তারের বিষয়ে এখনো কোনো সুপারিশ করা হয়নি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ফোন-ইন্টারনেট ভাতা পাচ্ছেন মাঠ প্রশাসনের সব কর্মচারী

ভাড়া বাড়িতে চলা ১৬ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিসহ সব শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধের নির্দেশ

পিপির বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব ৪৯ জন সহকারী পিপির

জোবাইদার নিরাপত্তার নামে প্রতিবেশীদের বিরক্ত না করার নির্দেশ তারেক রহমানের

শান্ত যে কারণে টি-টোয়েন্টি দলে, মিরাজ কেন নেই

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত