Ajker Patrika

বিএনপি কি সেন্ট মার্টিন বিক্রির মুচলেকা দিয়ে ক্ষমতায় আসতে চায়, প্রশ্ন প্রধানমন্ত্রীর

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২১ জুন ২০২৩, ১৬: ১১
বিএনপি কি সেন্ট মার্টিন বিক্রির মুচলেকা দিয়ে ক্ষমতায় আসতে চায়, প্রশ্ন প্রধানমন্ত্রীর

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় এসেছিল কীভাবে? তখন তো গ্যাস বিক্রি করার মুচলেকা দিয়েই ক্ষমতায় এসেছিল। তাহলে এখন তারা দেশ বিক্রি করবে? নাকি সেন্ট মার্টিন দ্বীপ বিক্রির মুচলেকা দিয়ে ক্ষমতায় আসতে চায়? আমি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা। আমার হাত দিয়ে এই দেশের কোনো সম্পদ বিক্রি করে ক্ষমতায় আসতে চাই না।’ 

আজ বুধবার গণভবনে সুইজারল্যান্ড ও কাতারে সাম্প্রতিক সফর নিয়ে গণমাধ্যমকে বিস্তারিত জানাতে সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

২০০১ সালে আমিও ক্ষমতায় আসতে পারতাম মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘গ্যাস বিক্রির মুচলেকা দিলে আমিও ক্ষমতায় আসতে পারতাম। আর এখন যদি বলি সেন্ট মার্টিন দ্বীপ বা আমাদের দেশ কারও কাছে লিজ দেব, তাহলে আমার ক্ষমতায় থাকার কোনো অসুবিধা নাই। কিন্তু আমার দ্বারা সেটা হবে না।’ 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে কাউকে খেলতে দেব না। দেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলার অধিকার কারও নেই। আমার দেশের মাটি ব্যবহার করে কোনো দেশ সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালাবে, কাউকে আক্রমণ করবে—এ ধরনের কাজ আমরা হতে দেব না। আমরা শান্তিতে বিশ্বাস করি। শান্তিপূর্ণ সহযোগিতায় বিশ্বাস করি।’

রোহিঙ্গা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মিয়ানমার থেকে যে ১১ লাখ শরণার্থী এসেছে, তারপরও তাদের সঙ্গে ঝগড়া করিনি। তাদের সঙ্গে আলোচনা করছি। এরা যাতে ফেরত যায় তার চেষ্টা করছি। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে অনুরোধ করছি। আমরা কিন্তু ঝগড়া বা যুদ্ধ করিনি। আমরা সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব কারও সঙ্গে শত্রুতা নয়—এই নীতিতে বিশ্বাস করি। তা মেনে চলব।’ 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আজকে যে বিএনপিসহ কিছু দল মাঠে নেমেছে, তাদের অসুবিধা কোথায়? সমস্যাটা কী? মানুষ দুই বেলা পেট ভরে ভাত খাচ্ছে। এত মুদ্রাস্ফীতির পরেও মানুষের খাবারের অভাব হচ্ছে না। হ্যাঁ, একটু চাপে আছে মানুষ, সেই কষ্টটা আমি বুঝি। তাই আমাদের প্রচেষ্টা আছে। মানুষের দুঃখ-কষ্টটা আমরা উপলব্ধি করতে পারি। তাই যতটা সহজ করা দরকার সেটা করে যাচ্ছি। আগে তো মানুষ খেতে পারত না।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আগে যেখানে মাটি দিয়ে হেঁটে যেত হতো সেন্ডেল জোড়া বগলদাবা করে, এখন সেখানে হয় ভ্যানে যাচ্ছে, না হয় স্যান্ডেল পরে। মানুষের তো একজোড়া স্যান্ডেলও ছিল না। এখন তো পাচ্ছে। কার জন্য পাচ্ছে? আওয়ামী লীগ সরকারে আছে বলেই সম্ভব। সাড়ে ১৪ বছর আমরা অগ্নিসন্ত্রাস, মানুষ খুন, অপপ্রচার মোকাবিলা করেই দেশটাকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। সেটাই মানুষ চাইবে? নাকি আবার সেই সন্ত্রাসের যুগে প্রবেশ করবে, ভোট চুরি, ভোট ডাকাতির যুগে প্রবেশ করবে? সেটা জনগণের ওপর ছেড়ে দিচ্ছি। তারা করুক, কী করবে।’ 

এ সময় এক সাংবাদিক (সোহেল সানী) মাইক ছাড়া প্রধানমন্ত্রীকে প্রশ্ন করতে থাকেন। তিনি অভিযোগ করেন, একটা প্রশ্ন আছে আমার, কিন্তু এখানে তো (গণভবন) সুযোগ দেওয়া হয় না প্রশ্ন করার, কথা বলার। কিন্তু আমরা যারা কলাম লিখি...

এ সময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আপনি তো দেখি বিএনপির লোকদের মতো সারা দিন মাইক লাগিয়ে বলছেন কথা বলতে দেয় না। আপনি তো কথা বলতেছেন রে ভাই। ঠেকাল কে? বাধা দিয়েছে কেউ?’ তখন প্রধানমন্ত্রীর প্রেস উইংয়ের সদস্যরা বলেন, তাঁরা বাধা দেননি। 

পরে ওই সাংবাদিক প্রধানমন্ত্রীর কাছে জানতে চান, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির যুক্তরাষ্ট্র সফরে আমরা কি আসা করতে পারি, দেশটি আমাদের নির্বাচনের বিষয়ে যে ভূমিকা রাখছে তার নিন্দা করবে? যা আমাদের নির্বাচনের জন্য ভূমিকা রাখবে? 

পরে প্রধানমন্ত্রী তাঁর উত্তরে বলেন, ‘প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে আমাদের সদ্ভাব রয়েছে। তাদের নিজের সার্বভৌমত্ব আছে। কাজেই তারা কী করবে-না করবে, সেটা সম্পূর্ণ তাদের বিষয়। আমাদের সঙ্গে সুসম্পর্ক আছে। শুধু এইটুকু বলতে পারি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ওসমান হাদিকে হত্যাচেষ্টায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলের মালিক আটক

রাজধানীতে অপরাধ: ১৪ ভাগ করে মিরপুর নিয়ন্ত্রণ করছে চার শীর্ষ সন্ত্রাসী

হাদিকে হত্যাচেষ্টা: সন্দেহভাজন ফয়সালের ব্যাংক হিসাব জব্দ

আজকের রাশিফল: প্রাক্তন ফোন করবে ও পুরোনো পাওনা টাকার কথা স্মরণ হবে, তবে পরিণতি একই

বকশীগঞ্জের ‘বটগাছ’খ্যাত বিএনপি নেতা আব্দুর রউফ তালুকদারের ইসলামী আন্দোলনে যোগদান

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

গুম করে নির্যাতন: হাসিনাসহ সেনা কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের আদেশ ২১ ডিসেম্বর

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
শেখ হাসিনা। ছবি: সংগৃহীত
শেখ হাসিনা। ছবি: সংগৃহীত

বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে গুম করে টাস্কফোর্স ফর ইন্টারোগেশন সেলে (টিএফআই সেল) নির্যাতনের ঘটনায় করা মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেখ হাসিনা ও সেনা কর্মকর্তাসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের বিষয়ে আদেশ ২১ ডিসেম্বর।

উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আজ রোববার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এই দিন ধার্য করেন।

মামলার ১৭ আসামির মধ্যে আজ শুনানির সময় ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত ছিলেন ১০ সেনা কর্মকর্তা।

তাঁরা হলেন—র‍্যাবের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক কর্নেল আনোয়ার লতিফ খান, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জাহাঙ্গীর আলম, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তোফায়েল মোস্তফা সারোয়ার, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক কর্নেল কে এম আজাদ, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল কামরুল হাসান, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মাহবুব আলম, সাবেক পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল সারোয়ার বিন কাশেম, সাবেক পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) খায়রুল ইসলাম, সাবেক পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মশিউর রহমান জুয়েল ও সাবেক পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল সাইফুল ইসলাম সুমন।

ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত তিন আসামির পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী হামিদুল মিসবাহ এবং সাতজনের পক্ষে ছিলেন তাবারক হোসেন। শেখ হাসিনার পক্ষে ছিলেন রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী মো. আমির হোসেন, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালসহ তিনজনের পক্ষে শুনানি করেন রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী এম হাসান ইমাম ও পলাতক তিনজনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী সুজাদ মিয়া।

আসামিদের মধ্যে জুলাই অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তাঁর সাবেক প্রতিরক্ষা-বিষয়ক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিকী, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ, র‍্যাবের সাবেক মহাপরিচালক এম খুরশিদ হোসেন, র‍্যাবের সাবেক মহাপরিচালক ব্যারিস্টার হারুন অর রশিদ ও সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক কর্নেল আবদুল্লাহ আল মোমেন পলাতক রয়েছেন।

র‍্যাবের টাস্কফোর্স ফর ইন্টারোগেশন সেলে নির্যাতনের ঘটনায় করা মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় গত ৮ অক্টোবর আসামিদের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ জমা দেয় প্রসিকিউশন।

পরে ওই দিনই তাঁদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়। আসামিদের বিরুদ্ধে ১৪ জন ব্যক্তিকে গুম করে নির্যাতনের ঘটনায় চারটি অভিযোগ আনা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ওসমান হাদিকে হত্যাচেষ্টায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলের মালিক আটক

রাজধানীতে অপরাধ: ১৪ ভাগ করে মিরপুর নিয়ন্ত্রণ করছে চার শীর্ষ সন্ত্রাসী

হাদিকে হত্যাচেষ্টা: সন্দেহভাজন ফয়সালের ব্যাংক হিসাব জব্দ

আজকের রাশিফল: প্রাক্তন ফোন করবে ও পুরোনো পাওনা টাকার কথা স্মরণ হবে, তবে পরিণতি একই

বকশীগঞ্জের ‘বটগাছ’খ্যাত বিএনপি নেতা আব্দুর রউফ তালুকদারের ইসলামী আন্দোলনে যোগদান

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বিকেলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে বৈঠকে বসবে ইসি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৫: ০৩
ছবি: আজকের পত্রিকা
ছবি: আজকের পত্রিকা

আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি একই দিন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট অনুষ্ঠিত হবে। এই নির্বাচনের সার্বিক নিরাপত্তা নিয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে বৈঠকে বসছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। আজ রোববার বিকেল ৪টায় আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।

ইসির জনসংযোগ পরিচালক মো. রুহুল আমিন মল্লিক জানান, বৈঠকের পর সাংবাদিকদের ব্রিফ করবেন ইসির সিনিয়র সচিব।

আজ দুপুরে নির্বাচন কমিশনার আব্দুর রহমানেল মাছউদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘সার্বিক নিরাপত্তার জন্য আইজিপি, বিজিবির প্রধান, স্বরাষ্ট্রসচিব, আইনসচিব, ডিএমপি কমিশনার, এনটিএমসির সঙ্গে আমরা আজ বৈঠকে বসব।’

এর আগে গতকাল শনিবার প্রধান নির্বাচন কমিশনার, চার নির্বাচন কমিশনার, ইসি সচিব, ইসির নিজস্ব তিন রিটার্নিং কর্মকর্তাসহ মাঠপর্যায়ের সব অফিস ও কর্মকর্তাদের অতিরিক্ত নিরাপত্তা চেয়ে পুলিশের আইজিপি ও পুলিশ কমিশনারকে চিঠি দিয়েছে কমিশন।

গত শুক্রবার বেলা ২টা ২০ মিনিটের দিকে রাজধানীর বিজয়নগর বক্স কালভার্ট রোডে ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির ওপর গুলির ঘটনা ঘটে। এ ছাড়া লক্ষ্মীপুর জেলা নির্বাচন অফিস এবং পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলা নির্বাচন অফিসে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। সবকিছু বিবেচনায় নিয়ে এই বৈঠকের আয়োজন করছে ইসি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ওসমান হাদিকে হত্যাচেষ্টায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলের মালিক আটক

রাজধানীতে অপরাধ: ১৪ ভাগ করে মিরপুর নিয়ন্ত্রণ করছে চার শীর্ষ সন্ত্রাসী

হাদিকে হত্যাচেষ্টা: সন্দেহভাজন ফয়সালের ব্যাংক হিসাব জব্দ

আজকের রাশিফল: প্রাক্তন ফোন করবে ও পুরোনো পাওনা টাকার কথা স্মরণ হবে, তবে পরিণতি একই

বকশীগঞ্জের ‘বটগাছ’খ্যাত বিএনপি নেতা আব্দুর রউফ তালুকদারের ইসলামী আন্দোলনে যোগদান

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

সুদানে নিহত ও আহত শান্তিরক্ষীদের পরিচয় জানাল আইএসপিআর

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৪: ০২
সুদানে নিহত বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর শান্তিরক্ষী। ছবি: আইএসপিআর
সুদানে নিহত বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর শান্তিরক্ষী। ছবি: আইএসপিআর

সুদানের আবেই এলাকায় জাতিসংঘ শান্তি রক্ষা মিশনের আওতাধীন কাদুগলি লজিস্টিক বেসে সন্ত্রাসী ড্রোন হামলায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ছয়জন শান্তিরক্ষী শহীদ হয়েছেন এবং আটজন আহত হয়েছেন। আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) পক্ষ থেকে আজ রোববার এই তথ্য জানানো হয়েছে।

গতকাল শনিবার স্থানীয় সময় আনুমানিক বেলা ৩টা ৪০ মিনিট থেকে ৩টা ৫০ মিনিট পর্যন্ত বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্র গোষ্ঠী কর্তৃক এই নৃশংস ড্রোন হামলাটি পরিচালিত হয়।

বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এই হামলায় কর্তব্যরত ছয়জন বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী শহীদ হন। শহীদদের আত্মত্যাগ বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশের অঙ্গীকারের এক উজ্জ্বল ও গৌরবময় নিদর্শন হয়ে থাকবে।

ড্রোন হামলায় শহীদ হয়েছেন ছয়জন বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী। তাঁরা হলেন নাটোরের কর্পোরাল মো. মাসুদ রানা (এএসসি), কুড়িগ্রামের সৈনিক মো. মমিনুল ইসলাম (বীর), রাজবাড়ীর সৈনিক শামীম রেজা (বীর), কুড়িগ্রামের সৈনিক শান্ত মন্ডল (বীর), কিশোরগঞ্জের মেস ওয়েটার মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম এবং গাইবান্ধার লন্ড্রি কর্মচারী মো. সবুজ মিয়া।

হামলায় আহত হয়েছেন আটজন শান্তিরক্ষী। আহত ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন কুষ্টিয়ার লেফটেন্যান্ট কর্নেল খোন্দকার খালেকুজ্জামান (পিএসসি, অর্ডন্যান্স), দিনাজপুরের সার্জেন্ট মো. মোস্তাকিম হোসেন (বীর), ঢাকার কর্পোরাল আফরোজা পারভিন ইতি (সিগন্যালস), বরগুনার ল্যান্স কর্পোরাল মহিবুল ইসলাম (ইএমই), কুড়িগ্রামের সৈনিক মো. মেজবাউল কবির (বীর), রংপুরের সৈনিক মোসা. উম্মে হানি আক্তার (ইঞ্জিনিয়ারিং), মানিকগঞ্জের সৈনিক চুমকি আক্তার (অর্ডন্যান্স) এবং নোয়াখালীর সৈনিক মো. মানাজির আহসান (বীর)।

আহত শান্তিরক্ষীদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তাঁদের মধ্যে সৈনিক মো. মেজবাউল কবিরের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় দ্রুত তাঁর সফল অস্ত্রোপচার সম্পন্ন হয়েছে এবং তিনি বর্তমানে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রয়েছেন। অপর সাত আহত শান্তিরক্ষীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য হেলিকপ্টারযোগে অন্য স্থানে স্থানান্তর করা হয়েছে। সেনা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, স্থানান্তরিত সকলেই বর্তমানে শঙ্কামুক্ত রয়েছেন।

বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এই নৃশংস সন্ত্রাসী হামলার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছে। সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে শহীদদের শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানানো হয়েছে এবং আহত ব্যক্তিদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ওসমান হাদিকে হত্যাচেষ্টায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলের মালিক আটক

রাজধানীতে অপরাধ: ১৪ ভাগ করে মিরপুর নিয়ন্ত্রণ করছে চার শীর্ষ সন্ত্রাসী

হাদিকে হত্যাচেষ্টা: সন্দেহভাজন ফয়সালের ব্যাংক হিসাব জব্দ

আজকের রাশিফল: প্রাক্তন ফোন করবে ও পুরোনো পাওনা টাকার কথা স্মরণ হবে, তবে পরিণতি একই

বকশীগঞ্জের ‘বটগাছ’খ্যাত বিএনপি নেতা আব্দুর রউফ তালুকদারের ইসলামী আন্দোলনে যোগদান

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টার শ্রদ্ধা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০: ৫৬
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ফাইল ছবি
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ফাইল ছবি

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে রাজধানীর মিরপুরে আজ রোববার শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন এবং অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

আজ ভোরের আলো ফোটার সঙ্গে সঙ্গে মিরপুরের শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে আসেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। এরপর স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে ১৯৭১ সালে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন এবং কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন রাষ্ট্রপতি।

রাষ্ট্রপতির পর সকাল সোয়া ৭টার দিকে মিরপুরের শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণের মধ্য দিয়ে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এরপর সেখানে তিনি কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন।

এ সময় সশস্ত্র বাহিনীর একটি চৌকস দল সালাম জানায়। তখন বিউগলে করুণ সুর বেজে ওঠে।

শ্রদ্ধা নিবেদনের পর বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে উপস্থিত যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন এবং প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন বলেছেন, সব অপশক্তির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের অবিচল সাহস ও দৃঢ় অবস্থান দেশের ইতিহাসে অনন্য ও চিরস্মরণীয়।

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে গতকাল শনিবার রাতে দেওয়া এক বাণীতে তিনি আরও বলেন, ‘১৪ ডিসেম্বর, শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস। বাংলাদেশের ইতিহাসে এক শোকাবহ দিন। ১৯৭১ সালের এই দিনে পাকিস্তানি দখলদার বাহিনী ও তাদের দোসরেরা নির্মমভাবে হত্যা করে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের। আমি গভীর শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করছি সেসব সূর্যসন্তান ও শহীদ বুদ্ধিজীবীকে, যাঁদের আত্মদান আমাদের মুক্তির সংগ্রামকে ত্বরান্বিত করেছে। আমি তাঁদের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত ও শান্তি কামনা করছি।’

রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘বুদ্ধিজীবীরা একটি জাতির উন্নয়ন ও অগ্রগতির অন্যতম রূপকার।’

শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ‘শহীদ বুদ্ধিজীবীরা ছিলেন পাকিস্তানি শোষকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে আমাদের বুদ্ধিবৃত্তিক লড়াইয়ে সম্মুখসারির যোদ্ধা।’

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে গতকাল দেওয়া এক বাণীতে তিনি বলেন, বুদ্ধিজীবীরা তাঁদের মেধা ও প্রজ্ঞার প্রয়োগ, সাংস্কৃতিক চর্চা ও ক্ষুরধার লেখনীর মাধ্যমে জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করতে এবং মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে জনমত তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন। যুদ্ধকালীন সরকারকে বুদ্ধিবৃত্তিক ও কৌশলগত পরামর্শ দিয়ে জাতিকে বিজয়ের পথে এগিয়ে নিতেও তাঁদের ছিল অসামান্য ভূমিকা।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস। বাংলাদেশের ইতিহাসে এক দুঃখজনক ও কলঙ্কময় দিন। মহান মুক্তিযুদ্ধের শেষের দিনগুলোতে পরাজয় নিশ্চিত জেনে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসরেরা বাংলাদেশকে মেধাশূন্য করতে দেশের বুদ্ধিজীবীদের নির্মমভাবে হত্যা করে। শোকাবহ এই দিনে আমি শহীদ বুদ্ধিজীবীসহ মুক্তিযুদ্ধের সকল বীর শহীদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাই এবং তাঁদের বিদেহী আত্মার শান্তি ও মাগফিরাত কামনা করি।’

তিনি বলেন, শহীদ বুদ্ধিজীবীরা ছিলেন পাকিস্তানি শোষকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে আমাদের বুদ্ধিবৃত্তিক লড়াইয়ে সম্মুখসারির যোদ্ধা। বুদ্ধিজীবীরা তাঁদের মেধা ও প্রজ্ঞার প্রয়োগ, সাংস্কৃতিক চর্চা ও ক্ষুরধার লেখনীর মাধ্যমে জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করতে এবং মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে জনমত তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন। যুদ্ধকালীন সরকারকে বুদ্ধিবৃত্তিক ও কৌশলগত পরামর্শ দিয়ে জাতিকে বিজয়ের পথে এগিয়ে নিতেও তাঁদের ছিল অসামান্য ভূমিকা।

প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, বাঙালি জাতির বিজয়ের প্রাক্কালে হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসরেরা এসব দেশপ্রেমিক শিক্ষাবিদ, সাংবাদিক, সাহিত্যিক, চিকিৎসক, বিজ্ঞানী, আইনজীবী, শিল্পী, প্রকৌশলী, দার্শনিক, রাজনৈতিক ও চিন্তাবিদসহ দেশের মেধাবী সন্তানদের নির্মমভাবে গুম ও হত্যা করে। এ পরিকল্পিত নৃশংস হত্যাযজ্ঞের মধ্য দিয়ে স্বাধীনতার দ্বারপ্রান্তে থাকা বাংলাদেশকে মেধাশূন্য করে একটি ব্যর্থ জাতিতে পরিণত করাই ছিল স্বাধীনতাবিরোধীদের মূল উদ্দেশ্য।

তিনি বলেন, ‘আমাদের শহীদ বুদ্ধিজীবীরা স্বপ্ন দেখেছিলেন একটি গণতান্ত্রিক উন্নত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে গঠিত বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সমগ্র জাতিকে সঙ্গে নিয়ে তেমনই একটি বৈষম্যহীন, ন্যায়ভিত্তিক নতুন বাংলাদেশ গড়ার কাজ শুরু করেছে। এর মাধ্যমে আমাদের শহীদ বুদ্ধিজীবীদের আমৃত্যু লালিত স্বপ্নের সফল বাস্তবায়ন সম্ভব হবে বলে আমি বিশ্বাস করি।’

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে সবাইকে নতুনভাবে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আসুন সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় গড়ে তুলি উন্নত, সমৃদ্ধ আগামীর বাংলাদেশ।’

১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের পুরো ৯ মাসই বুদ্ধিজীবীদের ধরে ধরে হত্যা করা হচ্ছিল, তবে ১৪ ডিসেম্বর পরিকল্পিতভাবে একযোগে ধরে নেওয়া হয় বহু বুদ্ধিজীবীকে। বিজয়ের পরই তাঁদের অনেকের ক্ষতবিক্ষত মরদেহের সন্ধান মেলে। এ দিনটিকে তাই শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস হিসেবে পালন করে জাতি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ওসমান হাদিকে হত্যাচেষ্টায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলের মালিক আটক

রাজধানীতে অপরাধ: ১৪ ভাগ করে মিরপুর নিয়ন্ত্রণ করছে চার শীর্ষ সন্ত্রাসী

হাদিকে হত্যাচেষ্টা: সন্দেহভাজন ফয়সালের ব্যাংক হিসাব জব্দ

আজকের রাশিফল: প্রাক্তন ফোন করবে ও পুরোনো পাওনা টাকার কথা স্মরণ হবে, তবে পরিণতি একই

বকশীগঞ্জের ‘বটগাছ’খ্যাত বিএনপি নেতা আব্দুর রউফ তালুকদারের ইসলামী আন্দোলনে যোগদান

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত