রেজা করিম
ঢাকা: ‘আপনি যখন রিপোর্টটি করবেন, তখন বলা হবে, সিরাজগঞ্জের কামারখন্দে অথবা সুনামগঞ্জের অমুক জায়গায় অথবা হবিগঞ্জের অমুক জায়গায় দু’জন মারা গেছে, দু’জন আহত। দু’জন বজ্রাঘাতে মৃত এবং দু’জন আহত। এই দু’জন যে আহত হলো, তাদের পরবর্তীতে কী অবস্থা? তারা কি পরবর্তীতে মারা গেল নাকি তারা সুস্থ হয়ে ফিরে এল? এই যে বজ্রাঘাতে আহত হলো, তাদের বিষয়ে পরবর্তীতে আমরা কিন্তু আর কোনো খবর জানি না।’
বজ্রপাতের খুঁটিনাটি নিয়ে আজকের পত্রিকার সঙ্গে আলাপকালে এ কথাই বলেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়া বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক এম এ ফারুক। বজ্রপাত নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে গবেষণা করছেন তিনি। এবং সত্যি সত্যিই রোববার সিরাজগঞ্জে বজ্রপাতে পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে!
সবচেয়ে বজ্রপাত প্রবণ এলাকা হিসেবে পরিচিত সুনামগঞ্জের একটি ঘটনার উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘ওই এলাকায় বজ্রপাতের একটি ঘটনায় দেখেছি, মৃত্যুর পাশাপাশি যাঁরা আহত হয়েছেন, তাঁদের মধ্যে ৭০ থেকে ৮০ শতাংশের মৃত্যু হয়েছে। বজ্রাহত হওয়ার পরে তাঁরা আর ফেরেননি। এই যে, যাঁরা বজ্রাহত হওয়ার পরে মরে গেলেন, তাঁদের হিসাবটা কিন্তু বজ্রপাতের মোট মৃত্যুর সঙ্গে যোগ হয়নি। পরে আর কেউ কোনো খোঁজখবরও রাখেনি।’
অধ্যাপক ফারুকের গবেষণা বলছে, ২০২০–এ বজ্রপাতে দেশে ২৪৬ জনের মৃত্যু হয়। এ সময়ে বজ্রপাতে আহত হয়েছেন সাড়ে তিন শ’রও বেশি মানুষ। পাশাপাশি গবাদিপশুসহ আরও অনেক প্রাণী বজ্রাহত হয়েছে। অধ্যাপক ফারুকের হিসাব অনুযায়ী, আহতদের মধ্য থেকে গত বছরই কমপক্ষে আরও ২৪৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। যে মৃত্যুগুলো হিসাবের খাতায় স্থান পায়নি। সে হিসাবে বজ্রপাতে গত বছরই দেশে প্রায় পাঁচ শ মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন।
এ বছর ঝড়-বৃষ্টির মৌসুম শুরু হতে না হতেই রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বজ্রপাতে প্রাণ হারিয়েছেন প্রায় এক শ মানুষ। প্রায় প্রতিদিনই হতাহতের ঘটনা ঘটছে। রোববার সন্ধ্যা পর্যন্ত বজ্রপাতে দেশে নয়জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এর মধ্যে শুধু সিরাজগঞ্জেই প্রাণ হারিয়েছেন পাঁচজন।
পরিসংখ্যান বলছে, ২০১০ থেকে ২০১৭ পর্যন্ত বজ্রপাতে দেশে প্রতি বছর গড়ে ১৮০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ সময় বজ্রপাতে সবচেয়ে বড় প্রাণহানি ঘটে ২০১৬–তে। সে বছর সাড়ে তিন শ’র বেশি মানুষ বজ্রপাতে প্রাণ হারান। ২০১৬০–এর পরে বছরে গড় মৃত্যু ২০০–এর নিচে থাকলেও বিগত তিন বছর (২০১৮-২০২০) তা বেড়েছে।
দেশে বজ্রপাতে প্রাণহানির এমন ভয়াবহ চিত্র, তা সত্ত্বেও জীবন বাঁচাতে কোনো কার্যকর উদ্যোগ আজও দৃশ্যমান হয়নি। বজ্রপাতের আগাম সতর্কবার্তা দিতে ২০১৭ সালে ৬৬ কোটি টাকা ব্যয়ে আটটি স্থানে ‘লাইটনিং ডিটেকশন সেন্সর’ স্থাপন করা হয়। ঢাকা, চট্টগ্রাম, পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া, নওগাঁর বদলগাছি, ময়মনসিংহ, সিলেট, খুলনার কয়রা এবং পটুয়াখালীতে স্থাপিত রাডারগুলো ৩০ থেকে ৪০ মিনিট আগেই বজ্রপাতের সংকেত পাঠাতে সক্ষম বলে জানানো হলেও আসলে কোনো কাজেই আসেনি।
নাম প্রকাশ না করারা শর্তে এক রাডার বিশেষজ্ঞ বলেন, এসব রাডারের একটিও সঠিকভাবে কাজ করছে না। রাডারগুলো চালানোর মতো দক্ষ লোকও নেই। অযত্ন অবহেলায় দামি যন্ত্রগুলো নষ্ট হচ্ছে। যদিও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আতিকুল হক আবহাওয়া অধিদপ্তরের বরাত দিয়ে দাবি করছেন, রাডারগুলো সঠিকভাবেই কাজ করছে।
বজ্রপাতের ক্ষয়-ক্ষতি কমাতে আরেকটি ব্যর্থ উদ্যোগ সারা দেশে তাল গাছ রোপণ। এর পেছনেও বেশ বড় অঙ্কের অর্থ খরচ হয়েছে। বিভিন্ন এলাকায় ৩১ লাখের বেশি বীজ রোপণ করা হয়েছে। কিন্তু অধিকাংশই বীজই স্থানীয়রা তুলে নিয়ে গেছে। কিছু বীজ থেকে চারা গজালেও দেখভালের অভাবে গরু-ছাগলে মুড়ে খেয়েছে। আবার বীজ রোপণের ক্ষেত্রেও বজ্রপাত প্রবণ এলাকাগুলো সেখানে প্রাধান্য পায়নি।
যদিও এই ব্যর্থতার দায় পুরোটাই স্থানীয়দের ঘাড়ে চাপাচ্ছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আতিকুল হক। আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, সঠিক স্থানেই বীজ রোপণ করা হয়েছে এবং এ প্রক্রিয়া চলমান। কিন্তু জনসচেতনতার অভাবে তালগাছ বড় হতে পারছে না।
বজ্রপাতে ক্ষয় ক্ষতি কমাতে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার পরামর্শ দিয়েছেন অধ্যাপক এম এ ফারুক। তিনি বলেন, বজ্রপাত নিয়ন্ত্রণের কোনো প্রযুক্তি এখনো মানুষের হাতে নেই। যেকারণে সচেতনতার কোনো বিকল্প নেই। এ বিষয়ে সরকারকে বিশেষভাবে উদ্যোগী হতে হবে। একই সঙ্গে বজ্রপাত প্রবণ এলাকাগুলোতে আশ্রয় কেন্দ্র গড়ে তোলারও পরামর্শ দেন তিনি।
ঢাকা: ‘আপনি যখন রিপোর্টটি করবেন, তখন বলা হবে, সিরাজগঞ্জের কামারখন্দে অথবা সুনামগঞ্জের অমুক জায়গায় অথবা হবিগঞ্জের অমুক জায়গায় দু’জন মারা গেছে, দু’জন আহত। দু’জন বজ্রাঘাতে মৃত এবং দু’জন আহত। এই দু’জন যে আহত হলো, তাদের পরবর্তীতে কী অবস্থা? তারা কি পরবর্তীতে মারা গেল নাকি তারা সুস্থ হয়ে ফিরে এল? এই যে বজ্রাঘাতে আহত হলো, তাদের বিষয়ে পরবর্তীতে আমরা কিন্তু আর কোনো খবর জানি না।’
বজ্রপাতের খুঁটিনাটি নিয়ে আজকের পত্রিকার সঙ্গে আলাপকালে এ কথাই বলেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়া বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক এম এ ফারুক। বজ্রপাত নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে গবেষণা করছেন তিনি। এবং সত্যি সত্যিই রোববার সিরাজগঞ্জে বজ্রপাতে পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে!
সবচেয়ে বজ্রপাত প্রবণ এলাকা হিসেবে পরিচিত সুনামগঞ্জের একটি ঘটনার উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘ওই এলাকায় বজ্রপাতের একটি ঘটনায় দেখেছি, মৃত্যুর পাশাপাশি যাঁরা আহত হয়েছেন, তাঁদের মধ্যে ৭০ থেকে ৮০ শতাংশের মৃত্যু হয়েছে। বজ্রাহত হওয়ার পরে তাঁরা আর ফেরেননি। এই যে, যাঁরা বজ্রাহত হওয়ার পরে মরে গেলেন, তাঁদের হিসাবটা কিন্তু বজ্রপাতের মোট মৃত্যুর সঙ্গে যোগ হয়নি। পরে আর কেউ কোনো খোঁজখবরও রাখেনি।’
অধ্যাপক ফারুকের গবেষণা বলছে, ২০২০–এ বজ্রপাতে দেশে ২৪৬ জনের মৃত্যু হয়। এ সময়ে বজ্রপাতে আহত হয়েছেন সাড়ে তিন শ’রও বেশি মানুষ। পাশাপাশি গবাদিপশুসহ আরও অনেক প্রাণী বজ্রাহত হয়েছে। অধ্যাপক ফারুকের হিসাব অনুযায়ী, আহতদের মধ্য থেকে গত বছরই কমপক্ষে আরও ২৪৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। যে মৃত্যুগুলো হিসাবের খাতায় স্থান পায়নি। সে হিসাবে বজ্রপাতে গত বছরই দেশে প্রায় পাঁচ শ মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন।
এ বছর ঝড়-বৃষ্টির মৌসুম শুরু হতে না হতেই রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বজ্রপাতে প্রাণ হারিয়েছেন প্রায় এক শ মানুষ। প্রায় প্রতিদিনই হতাহতের ঘটনা ঘটছে। রোববার সন্ধ্যা পর্যন্ত বজ্রপাতে দেশে নয়জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এর মধ্যে শুধু সিরাজগঞ্জেই প্রাণ হারিয়েছেন পাঁচজন।
পরিসংখ্যান বলছে, ২০১০ থেকে ২০১৭ পর্যন্ত বজ্রপাতে দেশে প্রতি বছর গড়ে ১৮০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ সময় বজ্রপাতে সবচেয়ে বড় প্রাণহানি ঘটে ২০১৬–তে। সে বছর সাড়ে তিন শ’র বেশি মানুষ বজ্রপাতে প্রাণ হারান। ২০১৬০–এর পরে বছরে গড় মৃত্যু ২০০–এর নিচে থাকলেও বিগত তিন বছর (২০১৮-২০২০) তা বেড়েছে।
দেশে বজ্রপাতে প্রাণহানির এমন ভয়াবহ চিত্র, তা সত্ত্বেও জীবন বাঁচাতে কোনো কার্যকর উদ্যোগ আজও দৃশ্যমান হয়নি। বজ্রপাতের আগাম সতর্কবার্তা দিতে ২০১৭ সালে ৬৬ কোটি টাকা ব্যয়ে আটটি স্থানে ‘লাইটনিং ডিটেকশন সেন্সর’ স্থাপন করা হয়। ঢাকা, চট্টগ্রাম, পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া, নওগাঁর বদলগাছি, ময়মনসিংহ, সিলেট, খুলনার কয়রা এবং পটুয়াখালীতে স্থাপিত রাডারগুলো ৩০ থেকে ৪০ মিনিট আগেই বজ্রপাতের সংকেত পাঠাতে সক্ষম বলে জানানো হলেও আসলে কোনো কাজেই আসেনি।
নাম প্রকাশ না করারা শর্তে এক রাডার বিশেষজ্ঞ বলেন, এসব রাডারের একটিও সঠিকভাবে কাজ করছে না। রাডারগুলো চালানোর মতো দক্ষ লোকও নেই। অযত্ন অবহেলায় দামি যন্ত্রগুলো নষ্ট হচ্ছে। যদিও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আতিকুল হক আবহাওয়া অধিদপ্তরের বরাত দিয়ে দাবি করছেন, রাডারগুলো সঠিকভাবেই কাজ করছে।
বজ্রপাতের ক্ষয়-ক্ষতি কমাতে আরেকটি ব্যর্থ উদ্যোগ সারা দেশে তাল গাছ রোপণ। এর পেছনেও বেশ বড় অঙ্কের অর্থ খরচ হয়েছে। বিভিন্ন এলাকায় ৩১ লাখের বেশি বীজ রোপণ করা হয়েছে। কিন্তু অধিকাংশই বীজই স্থানীয়রা তুলে নিয়ে গেছে। কিছু বীজ থেকে চারা গজালেও দেখভালের অভাবে গরু-ছাগলে মুড়ে খেয়েছে। আবার বীজ রোপণের ক্ষেত্রেও বজ্রপাত প্রবণ এলাকাগুলো সেখানে প্রাধান্য পায়নি।
যদিও এই ব্যর্থতার দায় পুরোটাই স্থানীয়দের ঘাড়ে চাপাচ্ছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আতিকুল হক। আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, সঠিক স্থানেই বীজ রোপণ করা হয়েছে এবং এ প্রক্রিয়া চলমান। কিন্তু জনসচেতনতার অভাবে তালগাছ বড় হতে পারছে না।
বজ্রপাতে ক্ষয় ক্ষতি কমাতে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার পরামর্শ দিয়েছেন অধ্যাপক এম এ ফারুক। তিনি বলেন, বজ্রপাত নিয়ন্ত্রণের কোনো প্রযুক্তি এখনো মানুষের হাতে নেই। যেকারণে সচেতনতার কোনো বিকল্প নেই। এ বিষয়ে সরকারকে বিশেষভাবে উদ্যোগী হতে হবে। একই সঙ্গে বজ্রপাত প্রবণ এলাকাগুলোতে আশ্রয় কেন্দ্র গড়ে তোলারও পরামর্শ দেন তিনি।
আদালতে দুদকের করা আবেদনে বলা হয়, অভিযোগ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি নসরুল হামিদ তাঁর স্থাবর সম্পদ অন্যত্র হস্তান্তর, স্থানান্তর বা বেহাত করার চেষ্টা করছেন। মামলা নিষ্পত্তির আগে বর্ণিত সম্পদ হস্তান্তর বা স্থানান্তর হয়ে গেলে তদন্তের ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে।
২৬ মিনিট আগে‘শ্রমিক-মালিক এক হয়ে, গড়ব এ দেশ নতুন করে’ প্রতিপাদ্য সামনে রেখে আগামীকাল বৃহস্পতিবার বিশ্বব্যাপী পালিত হবে মহান মে দিবস। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে নিহত ও আহত শ্রমিকদের শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করে এবং জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের চেতনাকে ধারণ করে মে দিবস উপলক্ষে নানা কর্মসূচি ঘোষণা করেছে শ্রম মন্ত্রণালয়।
৩৪ মিনিট আগেবহু বঞ্চনার শিকার হওয়া অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা আনসার উদ্দিন খান পাঠানকে অবশেষে দুই বছর মেয়াদে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের (আইসিটি) তদন্ত সংস্থায় কো-অর্ডিনেটর হিসেবে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
১ ঘণ্টা আগে২০২৪ সালের আগস্ট-সেপ্টেম্বর মাসে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের কাছে বিশেষ আবাসন প্রকল্পে নির্মিত ৩০০ ঘর হস্তান্তর করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। দেশের চারটি জেলা—ফেনী, নোয়াখালী, কুমিল্লা ও চট্টগ্রাম জেলায় এই ঘরগুলো বিতরণ করা হয়। আজ বুধবার সকালে প্রধান উপদেষ্টা নিজ কার্যালয় থেকে...
১ ঘণ্টা আগে