Ajker Patrika

বিশ্ব শিক্ষক দিবস আজ

অবসরের পর নিরাশ্রয় তাঁরা

আনোয়ার সাদাৎ ইমরান, টাঙ্গাইল
অবসরপ্রাপ্ত ইংরেজি শিক্ষক আনোয়ারুল ইসলাম বাবুল তাঁর হতাশা ব্যক্ত করেন। ছবি: আজকের পত্রিকা
অবসরপ্রাপ্ত ইংরেজি শিক্ষক আনোয়ারুল ইসলাম বাবুল তাঁর হতাশা ব্যক্ত করেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

বিশ্ব শিক্ষক দিবস আজ। নানা আয়োজনে দিবসটি পালন করা হলেও অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকদের ক্ষেত্রে ভিন্ন চিত্র। অনেক শিক্ষক অবসর নেওয়ার পর ভোগান্তির জীবন যাপন করছেন। অবসরে যাওয়া কর্মচারীদের অবস্থাও একই। বছরের পর বছর প্রতীক্ষার পরও কল্যাণ ফান্ড ও অবসর ভাতা পাচ্ছেন না তাঁরা। সংসারের দৈনন্দিন খরচ, চিকিৎসার ব্যয় আর বয়সজনিত অসুবিধা মোকাবিলায় নিজেরাই নিরাশ্রয় হয়ে পড়েন। জীবনভর শিক্ষকতা করা এই মানুষগুলোকে এখন কেউ দেখছে না, কেউ শুনছে না।

টাঙ্গাইলের ধনবাড়ীর নল্লাবাজার এলাকার মমতাজ আলী উচ্চবিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক মো. আনোয়ারুল ইসলাম বাবুল। ২০২১ সালের অক্টোবর মাসে অবসরে যান তিনি। এখনো অবসর ভাতার আশায় দিন গুনছেন। তিনি বলেন, ‘আমি হার্টের রোগী। এখন ভাত খাওয়ার চেয়ে ওষুধের চিন্তা বেশি লাগে। গিন্নির তিনবার অপারেশন করিয়েছি। ডাক্তারের পরামর্শেই চলতে হয়। মাসে সাড়ে পাঁচ-ছয় হাজার টাকার ওষুধ লাগে। এই টাকার জন্যও অনেক সময় অস্থির হয়ে পড়ি। অবসর ভাতা পাইলে অন্তত কয়টা দিন টেনশন ছাড়া কাটাইতে পারতাম।’

টাঙ্গাইল জেলা অধ্যক্ষ পরিষদের সভাপতি অধ্যক্ষ বজলুর রশীদ খান চুন্নুও আড়াই বছর ধরে অপেক্ষায় আছেন কল্যাণ ফান্ড ও অবসরকালীন ভাতার জন্য। তাঁদের মতো টাঙ্গাইলের ১২টি উপজেলার শত শত শিক্ষক-কর্মচারী এবং সারা দেশের প্রায় ৬৪ হাজার শিক্ষক-কর্মচারী অবসর-পরবর্তী অনিশ্চয়তার জীবনে দিন কাটাচ্ছেন। সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন, চিকিৎসার খরচ জোগাতে অন্যের দ্বারস্থ হচ্ছেন অনেকে।

শিক্ষকজীবনে নিজেদের সর্বস্ব বিলিয়ে দেওয়া এসব শিক্ষক-কর্মচারীর খবর রাখছে না সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোও। স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসার শিক্ষক সংগঠনগুলোর নেতারাও জানেন না জেলায় কতজন শিক্ষক অবসরে গেছেন বা কারা ভোগান্তিতে আছেন। টাঙ্গাইল জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয়ও জানে না, জেলায় কতজন শিক্ষক অবসরে গেছেন এবং কারা ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। কারণ হিসেবে কর্মকর্তারা জানান, অবসর-সংক্রান্ত কার্যক্রম তাঁদের দপ্তরে হয় না।

এ বিষয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও অবসর সুবিধা বোর্ডের সহসভাপতি ড. মুহাম্মদ আজাদ খান বলেন, ‘আমরা দায়িত্ব নেওয়ার পর দেখি, অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকদের ভাতা ও কল্যাণ ফান্ডে চরম বিশৃঙ্খলা চলছে। তাঁদের কোনো ক্রমতালিকা ছিল না। যেভাবে ইচ্ছা, সেভাবেই কাজ করা হয়েছে। শিক্ষকদের কাছ থেকে সংগৃহীত টাকা বেসরকারি ব্যাংকে রেখে সুবিধা নিয়েছেন দায়িত্বপ্রাপ্তরা। কিন্তু শিক্ষকদের কল্যাণ নিয়ে ভাবেননি।’

আজাদ খান আরও বলেন, ‘আমরা প্রথমেই সব ফান্ড রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকে স্থানান্তরের ব্যবস্থা করেছি। সরকার অবসর ভাতার জন্য ২ হাজার কোটি টাকা এবং কল্যাণ ফান্ডের জন্য ২০০ কোটি টাকার তহবিল দিয়েছে। এর লভ্যাংশ থেকে ক্রমতালিকা অনুসারে ভাতা পরিশোধ করা হবে। ২০১৮ সালের আগের অনেক আবেদনপত্র পাওয়া যায়নি। আমরা ২০২৩ সাল পর্যন্ত সারা দেশের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের তালিকা অনলাইনে হালনাগাদ করেছি। তাঁদের টাকা দ্রুত দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তোফায়েল আহমেদের অবস্থা ‘ক্রিটিক্যাল’

ইসরায়েলি কৌশলেই ট্রাম্পকে ‘হ্যাঁ’ বলল হামাস, উভয়সংকটে নেতানিয়াহু

ফরিদপুরে শ্বশুরবাড়িতে যুবককে গলা কেটে হত্যার চেষ্টা, পাশের ঘরে খোঁড়া হয় কবর

গুলশান থেকে আওয়ামী লীগ নেতা আহসান হাবিব ভূঁইয়া গ্রেপ্তার

চীনের মিত্র পাকিস্তানের নতুন কৌশল, যুক্তরাষ্ট্রের মন পেতে বন্দর দিতে চান সেনাপ্রধান আসিম মুনির

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত