নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
জুলাই সনদ চলতি মাসেই দেওয়া এবং আগামী ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের ভাবনা থেকে রাষ্ট্র পরিচালনার মৌলিক পদ্ধতি সংস্কারে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ করছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। সংস্কার প্রস্তাবের বেশির ভাগ দল মোটামুটি একমত হলেও দুটি বিষয়ে প্রায় অনড় অবস্থান নিয়েছে জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। এতে সংলাপে বেশ ভালোই জট লেগেছে।
যে দুই বিষয়ে বিএনপির প্রবল আপত্তি, তার একটি হলো সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানে নিয়োগের জন্য কমিটি গঠন, অন্যটি দ্বিকক্ষবিশিষ্ট আইনসভার উচ্চকক্ষের গঠন পদ্ধতি ও এর এখতিয়ার।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশন সংবিধান ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানে নিয়োগের জন্য কমিটি গঠনের বিষয়টি সংবিধানে যুক্ত করার প্রস্তাব দিয়েছে। অনেক দল এ প্রস্তাব সমর্থন করেছে। কিন্তু বিএনপি সংবিধানে এই বিধান যুক্ত করার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। দলটি মনে করছে, এসব প্রতিষ্ঠানে নিয়োগের বিষয়ে সাংবিধানিক বিধিবিধান যুক্ত করা হলে তা নির্বাহী বিভাগের এখতিয়ার বেশ সীমিত করে দেবে। এতে যে দলই ভোটে জিতে আসুক, তাদের জন্য রাষ্ট্র পরিচালনা করা কঠিন হয়ে পড়বে। বিএনপির এ অবস্থান সমর্থন করছে ১২ দলীয় জোট, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট, এনডিএম, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম ও লেবার পার্টি। অন্যদিকে জামায়াতে ইসলামী, এনসিপি, ইসলামী আন্দোলন, গণসংহতি আন্দোলন, এবি পার্টি, এলডিপি, সিপিবি, বাসদসহ সংলাপে অংশ নেওয়া বাকি ২৪টি দল সংবিধানে নিয়োগ কমিটির বিধান চায়।
জাতীয় নির্বাচনের মাধ্যমে সরাসরি ভোটে আইনসভার নিম্নকক্ষের সদস্য নির্বাচনের বর্তমান বিধান বহাল রেখে দলগুলোর প্রাপ্ত ভোটের সংখ্যানুপাতে উচ্চকক্ষ গঠনের প্রস্তাব করেছে ঐকমত্য কমিশন। এ প্রস্তাবটি অনেক দলের সমর্থন পেয়েছে। তবে বিএনপি বলছে, বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে সংখ্যানুপাতে উচ্চকক্ষের সদস্য নির্বাচন একটি অবাস্তব ধারণা। দলটি বলেছে, সংরক্ষিত নারী আসনে নির্বাচনের যে ব্যবস্থা বিদ্যমান, সেটার মতোই নিম্নকক্ষে দলগুলোর প্রাপ্ত আসনসংখ্যার ভিত্তিতে উচ্চকক্ষের সদস্য নির্বাচন করা যেতে পারে। ১২ দলীয় জোট, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট, এনডিএম ও লেবার পার্টি বিএনপির এ ধারণা সমর্থন করছে। তবে সংলাপে অংশ নেওয়া বেশির ভাগ দল বিএনপির এ ধারণার বিপরীতে অবস্থান নিয়েছে। জাতীয় নির্বাচনে দলগুলোর প্রাপ্ত ভোটের সংখ্যানুপাতে উভয় কক্ষ চায় জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলনসহ ইসলামপন্থী দলগুলো। এনসিপি, গণসংহতি আন্দোলন, এবি পার্টি, নাগরিক ঐক্য, গণঅধিকার পরিষদসহ ভোটের সংখ্যানুপাতে উচ্চকক্ষের দাবি করছে। অন্যদিকে সিপিবি ও বাসদ এক কক্ষের সংসদ রাখার পক্ষে।
টানা সংলাপের পরও দলগুলোর মধ্যে কিছু বিষয়ে বড় ধরনের ব্যবধান থেকে যাওয়ায় কমিশন এখন কৌশল বদলাতে শুরু করেছে। প্রকাশ্য সংলাপে আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি নেপথ্যে প্রভাবশালী দলগুলোর শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে কথা চলছে। একই সঙ্গে জট যে যে প্রস্তাব নিয়ে লেগেছে, সেগুলোর মূল ধারণা ঠিক রেখে কিছুটা শিথিল করা যায় কি না, তাও বিবেচনা করা হচ্ছে।
সংলাপ প্রায় অচলাবস্থা দেখা দেওয়ার পর্যায়ে গড়ালেও আশা ছাড়ছেন না ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ। এ পর্যন্ত কতটুকু এগোনো গেল আজকের পত্রিকা থেকে গতকাল মঙ্গলবার জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, ‘যেখানে আমাদের যাওয়ার কথা ছিল, সেখানে আমরা এখন পর্যন্ত পৌঁছাতে পারিনি। এখনো আমরা আশাবাদী, রাজনৈতিক দলগুলো তাঁদের ভূমিকা বুঝতে পারবে।’
রাষ্ট্রব্যবস্থার মৌলিক সংস্কারের আলোচনায় যে বিষয়গুলো প্রাধান্য পাচ্ছে তা হলো—প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ, সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ কমিটি গঠন, জাতীয় নির্বাচনে দলগুলোর প্রাপ্ত ভোটের সংখ্যানুপাতে উচ্চকক্ষ গঠন, বিচার বিভাগ বিকেন্দ্রীকরণ, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিধান সংবিধানে আবার যুক্ত করা, রাষ্ট্রপতি নির্বাচন ও সংবিধান সংশোধনের প্রক্রিয়া এবং একজন সংসদ সদস্য কতগুলো পদে থাকতে পারবেন তা।
একজন ব্যক্তি সর্বোচ্চ দুইবার প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করার প্রস্তাব করেছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। দলগুলোর সঙ্গে আলোচনায় এক ব্যক্তির জীবনে সর্বোচ্চ ১০ বছর প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করার বিষয়ে মোটামুটি ঐকমত্য হয়েছে। তবে বিএনপি বলেছে, সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানে নিয়োগে কমিটি গঠনের বিষয়টি সংবিধানে যুক্ত করা হলে এক ব্যক্তির সর্বোচ্চ ১০ বছর প্রধানমন্ত্রী পদে থাকার বিষয়ে দেওয়া সমর্থন প্রত্যাহার করবে তারা।
সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ দুই বিচারপতি থেকে পরবর্তী প্রধান বিচারপতি নিয়োগের বিষয়ে দলগুলো একমত হয়েছে। এ ছাড়া আইনসভায় উভয় কক্ষের দুই-তৃতীয়াংশে ভোটে সংবিধান সংশোধনের বিধান সুপারিশ করেছে কমিশন। তবে বিএনপি বলছে, দেশের চলমান রাজনৈতিক বাস্তবতায় কোনো দল ৫০ শতাংশ ভোট পায় না। সে ক্ষেত্রে দুই-তৃতীয়াংশের এ বিধান থাকলে প্রয়োজন হলেও সংবিধান সংশোধন করা যাবে না।
বিএনপির হয়ে সংলাপে নেতৃত্ব দেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। তিনি বলেন, সব বিষয়ে সব দল একমত হতে হবে, এটা গণতান্ত্রিক ধারণা নয়। ভিন্নমত থাকতেই পারে। দেখতে হবে বিভিন্ন ইস্যুতে দেশের বাস্তবতা বিবেচনায় নিয়ে দলীয় অবস্থান ঠিক করা হচ্ছে কি না।
সংলাপে এ পর্যন্ত দুই ধাপে ৫২টি অধিবেশনে কথা হয়েছে। প্রথম ধাপে পৃথকভাবে ৩৩টি দল ও জোটের সঙ্গে ৪৫টি অধিবেশনে কমিশন মতবিনিময় করেছে। দ্বিতীয় ধাপে সব দল ও জোটের সঙ্গে একসঙ্গে আলোচনা চলছে।
আজ বুধবার দ্বিতীয় ধাপের অষ্টম অধিবেশন অনুষ্ঠিত হবে। তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি, নির্বাচনী এলাকা নির্ধারণ, রাষ্ট্রপতির ক্ষমা প্রদর্শনসহ কিছু বিষয়ে আজ আলোচনা হতে পারে।
কমিশনের ভেতরকার তথ্য অনুযায়ী, বিভিন্ন বিষয়ে দলগুলোর মধ্যকার ব্যবধান কমিয়ে আনতে কমিশন সোম ও মঙ্গলবার বড় দলগুলোর নেতাদের সঙ্গে সরাসরি বা ভার্চুয়ালি কথা বলেছে। সরকারের একজন উপদেষ্টাও দলগুলোর সঙ্গে কথা বলছেন। কয়েকটি দলের নেতাদের সঙ্গে শিগগির সরাসরি বৈঠকও হতে পারে।
আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার বিষয়ে কমিশন দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। তবে সংস্কারে ছাড় দেওয়ার ক্ষেত্রে বড় দলগুলোর অনুদার মনোভাবে ঐকমত্য কমিশনের অনেকেই বিরক্ত। আবার কিছু রাজনৈতিক দলের অবস্থানে বিস্মিত হয়েছেন কমিশনের কেউ কেউ। একজন প্রভাবশালী সদস্য মনে করছেন, ভোটের হিসাবনিকাশের দিক থেকে কিছুটা পিছিয়ে থাকায় বাম সংগঠনগুলোর বেশির ভাগ পুরোনো ধ্যানধারণা থেকে বেরোচ্ছে না। অন্যদিকে ভোটে কিছুটা এগিয়ে থাকার আশা থেকে কয়েকটি ইসলামপন্থী দল তুলনামূলক উদার মনোভাব দেখাচ্ছে।
রাজনৈতিক দলগুলোর নেতাদের আত্মজিজ্ঞাসার তাগিদ দিয়ে আলী রীয়াজ বলেন, এখন জুলাই মাস, প্রত্যেকের স্মৃতিতে গত বছরের জুলাই ও ১৬ বছরের দুঃশাসন। রাজনৈতিক দলগুলোর উচিত তাদের কর্মীদের কাছে জিজ্ঞেস করা—কী পরিমাণ নিপীড়নের মধ্য দিয়ে তাঁরা গেছেন। ৫৩ বছরে যে সুযোগ সবাই পেয়েছেন, দেশের মানুষ ও যাঁরা প্রাণ দিয়েছেন, তাঁরা যে দায়িত্ব দিয়ে গেছেন, সে দায়িত্ব সহজে আসেনি। কিন্তু দায়িত্ব সবাই পালন করছেন কি না, সে প্রশ্ন নিজেকে করা উচিত।
কমিশনের সদস্য বদিউল আলম মজুমদার বলেন, কিছু কিছু বিষয়ে সবাই একমত হয়েছে। বাকি বিষয়ে আলাপ হচ্ছে। কতগুলো মৌলিক বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছানো গেলে একটা জাতীয় সনদ প্রণয়ন ও স্বাক্ষর হবে। তিনি বলেন, যে সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে তা ব্যর্থ হোক, কেউ চায় না। আর যাঁরা প্রাণ দিয়েছেন, রক্ত দিয়েছেন, তাঁদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করতে কেউ চায় না।
জুলাই সনদ চলতি মাসেই দেওয়া এবং আগামী ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের ভাবনা থেকে রাষ্ট্র পরিচালনার মৌলিক পদ্ধতি সংস্কারে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ করছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। সংস্কার প্রস্তাবের বেশির ভাগ দল মোটামুটি একমত হলেও দুটি বিষয়ে প্রায় অনড় অবস্থান নিয়েছে জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। এতে সংলাপে বেশ ভালোই জট লেগেছে।
যে দুই বিষয়ে বিএনপির প্রবল আপত্তি, তার একটি হলো সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানে নিয়োগের জন্য কমিটি গঠন, অন্যটি দ্বিকক্ষবিশিষ্ট আইনসভার উচ্চকক্ষের গঠন পদ্ধতি ও এর এখতিয়ার।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশন সংবিধান ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানে নিয়োগের জন্য কমিটি গঠনের বিষয়টি সংবিধানে যুক্ত করার প্রস্তাব দিয়েছে। অনেক দল এ প্রস্তাব সমর্থন করেছে। কিন্তু বিএনপি সংবিধানে এই বিধান যুক্ত করার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। দলটি মনে করছে, এসব প্রতিষ্ঠানে নিয়োগের বিষয়ে সাংবিধানিক বিধিবিধান যুক্ত করা হলে তা নির্বাহী বিভাগের এখতিয়ার বেশ সীমিত করে দেবে। এতে যে দলই ভোটে জিতে আসুক, তাদের জন্য রাষ্ট্র পরিচালনা করা কঠিন হয়ে পড়বে। বিএনপির এ অবস্থান সমর্থন করছে ১২ দলীয় জোট, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট, এনডিএম, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম ও লেবার পার্টি। অন্যদিকে জামায়াতে ইসলামী, এনসিপি, ইসলামী আন্দোলন, গণসংহতি আন্দোলন, এবি পার্টি, এলডিপি, সিপিবি, বাসদসহ সংলাপে অংশ নেওয়া বাকি ২৪টি দল সংবিধানে নিয়োগ কমিটির বিধান চায়।
জাতীয় নির্বাচনের মাধ্যমে সরাসরি ভোটে আইনসভার নিম্নকক্ষের সদস্য নির্বাচনের বর্তমান বিধান বহাল রেখে দলগুলোর প্রাপ্ত ভোটের সংখ্যানুপাতে উচ্চকক্ষ গঠনের প্রস্তাব করেছে ঐকমত্য কমিশন। এ প্রস্তাবটি অনেক দলের সমর্থন পেয়েছে। তবে বিএনপি বলছে, বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে সংখ্যানুপাতে উচ্চকক্ষের সদস্য নির্বাচন একটি অবাস্তব ধারণা। দলটি বলেছে, সংরক্ষিত নারী আসনে নির্বাচনের যে ব্যবস্থা বিদ্যমান, সেটার মতোই নিম্নকক্ষে দলগুলোর প্রাপ্ত আসনসংখ্যার ভিত্তিতে উচ্চকক্ষের সদস্য নির্বাচন করা যেতে পারে। ১২ দলীয় জোট, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট, এনডিএম ও লেবার পার্টি বিএনপির এ ধারণা সমর্থন করছে। তবে সংলাপে অংশ নেওয়া বেশির ভাগ দল বিএনপির এ ধারণার বিপরীতে অবস্থান নিয়েছে। জাতীয় নির্বাচনে দলগুলোর প্রাপ্ত ভোটের সংখ্যানুপাতে উভয় কক্ষ চায় জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলনসহ ইসলামপন্থী দলগুলো। এনসিপি, গণসংহতি আন্দোলন, এবি পার্টি, নাগরিক ঐক্য, গণঅধিকার পরিষদসহ ভোটের সংখ্যানুপাতে উচ্চকক্ষের দাবি করছে। অন্যদিকে সিপিবি ও বাসদ এক কক্ষের সংসদ রাখার পক্ষে।
টানা সংলাপের পরও দলগুলোর মধ্যে কিছু বিষয়ে বড় ধরনের ব্যবধান থেকে যাওয়ায় কমিশন এখন কৌশল বদলাতে শুরু করেছে। প্রকাশ্য সংলাপে আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি নেপথ্যে প্রভাবশালী দলগুলোর শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে কথা চলছে। একই সঙ্গে জট যে যে প্রস্তাব নিয়ে লেগেছে, সেগুলোর মূল ধারণা ঠিক রেখে কিছুটা শিথিল করা যায় কি না, তাও বিবেচনা করা হচ্ছে।
সংলাপ প্রায় অচলাবস্থা দেখা দেওয়ার পর্যায়ে গড়ালেও আশা ছাড়ছেন না ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ। এ পর্যন্ত কতটুকু এগোনো গেল আজকের পত্রিকা থেকে গতকাল মঙ্গলবার জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, ‘যেখানে আমাদের যাওয়ার কথা ছিল, সেখানে আমরা এখন পর্যন্ত পৌঁছাতে পারিনি। এখনো আমরা আশাবাদী, রাজনৈতিক দলগুলো তাঁদের ভূমিকা বুঝতে পারবে।’
রাষ্ট্রব্যবস্থার মৌলিক সংস্কারের আলোচনায় যে বিষয়গুলো প্রাধান্য পাচ্ছে তা হলো—প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ, সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ কমিটি গঠন, জাতীয় নির্বাচনে দলগুলোর প্রাপ্ত ভোটের সংখ্যানুপাতে উচ্চকক্ষ গঠন, বিচার বিভাগ বিকেন্দ্রীকরণ, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিধান সংবিধানে আবার যুক্ত করা, রাষ্ট্রপতি নির্বাচন ও সংবিধান সংশোধনের প্রক্রিয়া এবং একজন সংসদ সদস্য কতগুলো পদে থাকতে পারবেন তা।
একজন ব্যক্তি সর্বোচ্চ দুইবার প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করার প্রস্তাব করেছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। দলগুলোর সঙ্গে আলোচনায় এক ব্যক্তির জীবনে সর্বোচ্চ ১০ বছর প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করার বিষয়ে মোটামুটি ঐকমত্য হয়েছে। তবে বিএনপি বলেছে, সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানে নিয়োগে কমিটি গঠনের বিষয়টি সংবিধানে যুক্ত করা হলে এক ব্যক্তির সর্বোচ্চ ১০ বছর প্রধানমন্ত্রী পদে থাকার বিষয়ে দেওয়া সমর্থন প্রত্যাহার করবে তারা।
সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ দুই বিচারপতি থেকে পরবর্তী প্রধান বিচারপতি নিয়োগের বিষয়ে দলগুলো একমত হয়েছে। এ ছাড়া আইনসভায় উভয় কক্ষের দুই-তৃতীয়াংশে ভোটে সংবিধান সংশোধনের বিধান সুপারিশ করেছে কমিশন। তবে বিএনপি বলছে, দেশের চলমান রাজনৈতিক বাস্তবতায় কোনো দল ৫০ শতাংশ ভোট পায় না। সে ক্ষেত্রে দুই-তৃতীয়াংশের এ বিধান থাকলে প্রয়োজন হলেও সংবিধান সংশোধন করা যাবে না।
বিএনপির হয়ে সংলাপে নেতৃত্ব দেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। তিনি বলেন, সব বিষয়ে সব দল একমত হতে হবে, এটা গণতান্ত্রিক ধারণা নয়। ভিন্নমত থাকতেই পারে। দেখতে হবে বিভিন্ন ইস্যুতে দেশের বাস্তবতা বিবেচনায় নিয়ে দলীয় অবস্থান ঠিক করা হচ্ছে কি না।
সংলাপে এ পর্যন্ত দুই ধাপে ৫২টি অধিবেশনে কথা হয়েছে। প্রথম ধাপে পৃথকভাবে ৩৩টি দল ও জোটের সঙ্গে ৪৫টি অধিবেশনে কমিশন মতবিনিময় করেছে। দ্বিতীয় ধাপে সব দল ও জোটের সঙ্গে একসঙ্গে আলোচনা চলছে।
আজ বুধবার দ্বিতীয় ধাপের অষ্টম অধিবেশন অনুষ্ঠিত হবে। তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি, নির্বাচনী এলাকা নির্ধারণ, রাষ্ট্রপতির ক্ষমা প্রদর্শনসহ কিছু বিষয়ে আজ আলোচনা হতে পারে।
কমিশনের ভেতরকার তথ্য অনুযায়ী, বিভিন্ন বিষয়ে দলগুলোর মধ্যকার ব্যবধান কমিয়ে আনতে কমিশন সোম ও মঙ্গলবার বড় দলগুলোর নেতাদের সঙ্গে সরাসরি বা ভার্চুয়ালি কথা বলেছে। সরকারের একজন উপদেষ্টাও দলগুলোর সঙ্গে কথা বলছেন। কয়েকটি দলের নেতাদের সঙ্গে শিগগির সরাসরি বৈঠকও হতে পারে।
আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার বিষয়ে কমিশন দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। তবে সংস্কারে ছাড় দেওয়ার ক্ষেত্রে বড় দলগুলোর অনুদার মনোভাবে ঐকমত্য কমিশনের অনেকেই বিরক্ত। আবার কিছু রাজনৈতিক দলের অবস্থানে বিস্মিত হয়েছেন কমিশনের কেউ কেউ। একজন প্রভাবশালী সদস্য মনে করছেন, ভোটের হিসাবনিকাশের দিক থেকে কিছুটা পিছিয়ে থাকায় বাম সংগঠনগুলোর বেশির ভাগ পুরোনো ধ্যানধারণা থেকে বেরোচ্ছে না। অন্যদিকে ভোটে কিছুটা এগিয়ে থাকার আশা থেকে কয়েকটি ইসলামপন্থী দল তুলনামূলক উদার মনোভাব দেখাচ্ছে।
রাজনৈতিক দলগুলোর নেতাদের আত্মজিজ্ঞাসার তাগিদ দিয়ে আলী রীয়াজ বলেন, এখন জুলাই মাস, প্রত্যেকের স্মৃতিতে গত বছরের জুলাই ও ১৬ বছরের দুঃশাসন। রাজনৈতিক দলগুলোর উচিত তাদের কর্মীদের কাছে জিজ্ঞেস করা—কী পরিমাণ নিপীড়নের মধ্য দিয়ে তাঁরা গেছেন। ৫৩ বছরে যে সুযোগ সবাই পেয়েছেন, দেশের মানুষ ও যাঁরা প্রাণ দিয়েছেন, তাঁরা যে দায়িত্ব দিয়ে গেছেন, সে দায়িত্ব সহজে আসেনি। কিন্তু দায়িত্ব সবাই পালন করছেন কি না, সে প্রশ্ন নিজেকে করা উচিত।
কমিশনের সদস্য বদিউল আলম মজুমদার বলেন, কিছু কিছু বিষয়ে সবাই একমত হয়েছে। বাকি বিষয়ে আলাপ হচ্ছে। কতগুলো মৌলিক বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছানো গেলে একটা জাতীয় সনদ প্রণয়ন ও স্বাক্ষর হবে। তিনি বলেন, যে সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে তা ব্যর্থ হোক, কেউ চায় না। আর যাঁরা প্রাণ দিয়েছেন, রক্ত দিয়েছেন, তাঁদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করতে কেউ চায় না।
ট্রেন দেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ গণপরিবহন। অপেক্ষাকৃত নিম্ন আয়ের মানুষসহ বিশাল জনগোষ্ঠী এর ওপর নির্ভরশীল। কিন্তু সাম্প্রতিককালে এতে ভ্রমণকালে নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। নিয়মিত যাত্রীদের অভিযোগ, চলন্ত ট্রেনে প্রায়ই ঘটছে চুরি, ছিনতাই। কখনো কখনো ঘটছে ধর্ষণ এবং ট্রেন থেকে ফেলে দেওয়ার মতো গুরুতর অপরাধও।
৬ ঘণ্টা আগেচিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেছেন, আওয়ামী লীগ মনে করে যে, শুধুমাত্র শেখ মুজিবুর রহমানই বাংলাদেশের স্বাধীনতার একক কারিগর। তাই তাকে বাংলাদেশের রাজনৈতিক ক্ষমতায় এক ধরণের পারিবারিক উত্তরাধিকার হিসেবে চিত্রিত করে শেখ মুজিবের কন্যা হিসেবে শেখ হাসিনাকে ‘জাতির অভিভাবক’ রুপে উপস্থাপন করা হয়।
৮ ঘণ্টা আগেহযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পার্কিং করা অবস্থায় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের একটি বোয়িং ৭৩৭-৮০০ মডেলের উড়োজাহাজে আঘাত হেনেছে একটি লাগেজ ট্রলি। এতে উড়োজাহাজটির বাইরের অংশের সামান্য ক্ষতি হয়। তবে দুর্ঘটনার সময় উড়োজাহাজটিতে কোনো যাত্রী ছিলেন না।
৯ ঘণ্টা আগেইরানে বসবাসরত প্রত্যাবাসন-ইচ্ছুক বাংলাদেশিদের প্রথম দল দেশে ফিরেছে। আজ মঙ্গলবার (১ জুলাই) মোট ২৮ জন পাকিস্তানের করাচি হয়ে ঢাকায় অবতরণ করেছেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
১০ ঘণ্টা আগে