Ajker Patrika

কোটা নিয়ে বাস্তব পরিস্থিতি বিবেচনায় রায় দেবেন উচ্চ আদালত, আশা কাদেরের 

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ০৯ জুলাই ২০২৪, ১১: ৪৬
কোটা নিয়ে বাস্তব পরিস্থিতি বিবেচনায় রায় দেবেন উচ্চ আদালত, আশা কাদেরের 

সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিলের বিষয়টি আদালতে বিচারাধীন। তাই চূড়ান্ত রায় পর্যন্ত আন্দোলনকারীদের অপেক্ষা করতে বলেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেছেন, ‘আমরা মনে করি, দেশের উচ্চ আদালত বাস্তব পরিস্থিতি বিবেচনা করে রায় প্রদান করবেন।’ 

আজ সোমবার রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন কাদের। তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনা স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে যে সংগ্রাম শুরু করেছেন, তার মূল চালিকাশক্তি মেধাবী জনগোষ্ঠী। শিক্ষিত, দক্ষ, স্মার্ট প্রজন্ম গঠনের মধ্য দিয়ে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের সংগ্রামকে অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছে নিতে মেধাবী তরুণ প্রজন্ম আমাদের প্রধান প্রয়োজন।’ 

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী ২০১৮ সালে পরিপত্র জারি করে সব ধরনের কোটা বিলুপ্ত করেছেন। এই আদেশের বিরুদ্ধে সাতজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান উচ্চ আদালতে রিট করেন। দেশের উচ্চ আদালত কোটা বাতিলের পরিপত্র বাতিল করেছেন। সরকারপক্ষের আইনজীবী হাইকোর্টের রায়ের বিপক্ষে আপিল করেছেন। সরকার কোটা বাতিলের দাবির প্রতি আন্তরিক বলেই অ্যাটর্নি জেনারেল আপিল দায়ের করেছেন।’ 

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরউচ্চ আদালতে বিচারাধীন বলে তা নিয়ে কোনো প্রকার মন্তব্য আইনসিদ্ধ নয় বলে দাবি করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আদালত উভয় পক্ষের যুক্তিতর্ক শুনে নিশ্চয়ই একটা চূড়ান্ত রায় প্রদান করবেন। উচ্চ আদালতের রায় না হওয়া পর্যন্ত আমাদের অপেক্ষা করতে হবে এবং কোনো প্রকার উত্তেজনা, রাস্তাঘাট বন্ধ করে মানুষের দুর্ভোগ সৃষ্টি পরিহার করা উচিত। বিশেষত এইচএসসি পরীক্ষার্থী-অভিভাবকদের অসুবিধা হয় যে কর্মসূচিতে, সে ধরনের কর্মসূচি পরিহার করা দরকার।’ 

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘এর আগে যে কোটা আন্দোলন বাংলাদেশে হয়েছিল, সেখানকার প্রথম সারির ৩১ জন নেতা কিন্তু বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পারেননি। এটার হিসাব আপনারা (সাংবাদিক) নিতে পারেন।’ 

কোটাবিরোধী আন্দোলনে রাজনৈতিক উপাদান যুক্ত হয়েছে দাবি করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আমাদের বিভক্ত ও মেরুকরণের রাজনীতি এখানে যুক্ত হয়ে গেছে। কারণ বিএনপি প্রকাশ্যে ও তাদের সমমনারা এই আন্দোলনের ওপর ভর করেছে। তারা সমর্থন করেছে প্রকাশ্যেই। সমর্থন করা মানে, তারা এর মধ্যে অংশগ্রহণও করেছে। কাজেই এটা এখন মেরুকরণের রাজনীতির ধারার মধ্যেই পড়ে। এটার রাজনৈতিক রং নতুন করে বলার অপেক্ষা রাখে না।’ 

আওয়ামী লীগের এই অন্যতম নীতিনির্ধারক বলেন, ‘এখানে কারা যুক্ত আছে, কোনো ষড়যন্ত্রের অংশ কি না—সেটা আন্দোলনের গতিধারার মধ্যেই বোঝা যাবে। এই গতিধারায় সময়ের পরিবর্তনে সবকিছু পরিষ্কার হয়ে যাবে। কোনো কিছুই লুকানো সম্ভব হবে না। আমরা গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছি।’ 

এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে কোন রাজনৈতিক দল পৃথিবীর কোন দেশে আন্দোলনে শামিল হয়েছে? এটা বিচারাধীন। কোনো রাজনৈতিক দল পারে না এভাবে। এটা তো আদালতের রায়। আদালত রায় দিয়েছেন, এখানে সরকারের দোষ কোথায়? এখানে যে বিষয়টা আদালতের এখতিয়ার, সে বিষয়টা নিয়ে কথা বলা বা সমালোচনা করা, তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা তো আইনসিদ্ধ নয়। আমরা সেটাই বলছি।’ 

কোটাবিরোধী আন্দোলনে জনদুর্ভোগ কমাতে সরকারের কঠোর হওয়ার পরিকল্পনা আছে কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে কাদের বলেন, ‘আমরা তো আপিল করলাম। এখন আদালত চূড়ান্ত রায় দেননি। এর মধ্যে আমরা কীভাবে হস্তক্ষেপ করি? আমর তো বলছি, জনদুর্ভোগ হয় এমন কর্মসূচি পরিহার করা উচিত। আদালতের রায় হোক, তারপর দেখা যাবে।’ 

আপনারা আন্দোলন স্থগিত বা প্রত্যাহারের অনুরোধ করছেন কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে কাদের বলেন, ‘আমি যা বক্তব্য রেখেছি, এ থেকে বুঝে নেন। আমার যা বলার, বলে দিয়েছি। ভাষাটা বুঝে নিন, তাহলে হবে।’ 

সর্বজনীন পেনশন স্কিমের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের আন্দোলন প্রসঙ্গে জানতে চাইলে কাদের বলেন, ‘এখানে ভুল বোঝাবুঝি থাকতে পারে। তাদের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগও আছে। আনুষ্ঠানিক বসাবসি এখনো হয়নি। সিদ্ধান্ত তো নিতে হবে বাস্তব পরিস্থিতির আলোকে। এখানে আমরা সুপিরিয়র, না শিক্ষক সুপিরিয়র—এ বিতর্কে যাব না। আমরা যাব, যার পদমর্যাদার ভিত্তিতে যেটা বাস্তবসম্মত সেটাতে করতে।’ 

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক, এস এম কামাল হোসেন, সুজিত রায় নন্দী, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া প্রমুখ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত