Ajker Patrika

৫ দিনেও আইন মন্ত্রণালয়ের রিপ্লাই না পাওয়ায় ইশরাকের গেজেট করা হয়: ইসি সানাউল্লাহ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আজ নির্বাচন ভবনে চতুর্থ কমিশন সভা শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন নির্বাচন কমিশনার আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ। ছবি: সংগৃহীত
আজ নির্বাচন ভবনে চতুর্থ কমিশন সভা শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন নির্বাচন কমিশনার আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ। ছবি: সংগৃহীত

নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ জানিয়েছেন, নির্ধারিত সময়ে আইন মন্ত্রণালয়ের মতামত না আসায় আইনি বাধ্যবাধকতা থাকায় ইশরাক হোসেনের নামে গেজেট প্রকাশ করা হয়েছে। আজ বুধবার আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে ‘চতুর্থ কমিশন সভা’ শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।

আইন মন্ত্রণালয়ের মতামত পাওয়ার আগেই গেজেট প্রকাশের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেন, ‘আমাদের মধ্যে বাধ্যবাধকতা ছিল ১০ দিনের মধ্যে এটার নিষ্পত্তি করার, আমরা নিষ্পত্তি করেছি। আমরা দ্রুততম সময়ের মধ্যে আইন মন্ত্রণালয়ের মতামত চেয়েছিলাম। ২৫ এপ্রিল ছিল দশম দিন শুক্রবার; শনিবার ছুটি। রোববার ২৭ এপ্রিল বিকেল ৫টা পর্যন্ত অপেক্ষা করি, রিপ্লাই না পেয়ে আমরা কমিশন সিদ্ধান্ত নিয়ে এটা করেছি।’

নির্বাচন কমিশন সংক্ষুব্ধ ‘পার্টি’ না হওয়ায় আপিলেও যায়নি বলেও জানান এ নির্বাচন কমিশনার।

ইশরাকের গেজেট প্রকাশ হওয়ায় মেয়র হিসেবে শপথ আয়োজনের বিষয়টি দেখভাল করবে স্থানীয় সরকার বিভাগ। গেজেট প্রকাশ করে ইসির পক্ষ থেকে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে বলে জানা গেছে।

গত ২৭ মার্চ ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) ২০২০ সালের নির্বাচনে ফজলে নূর তাপসকে বিজয়ী ঘোষণার ফল বাতিল করা হয় এবং বিএনপি নেতা ইশরাককে মেয়র ঘোষণা করেন ঢাকার প্রথম যুগ্ম জেলা জজ ও নির্বাচনি ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. নুরুল ইসলাম।

ট্রাইব্যুনালের রায়ের কপি পেয়ে ২২ এপ্রিল গেজেট প্রকাশের বিষয়ে আইন মন্ত্রণালয়ের পরামর্শ চায় ইসি। এরপর ২৭ এপ্রিল ডিএসসিসির নতুন মেয়র হিসেবে ইশরাক হোসেনের নামে গেজেট আকারে প্রকাশ করে কমিশন।

গেজেট প্রকাশের পরদিন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল দাবি করেন, মন্ত্রণালয়ের মতামত দেওয়ার আগেই নির্বাচন কমিশন ইশরাক হোসেনের নামে গেজেট প্রকাশ করেছে।

ইসি কর্মকর্তারা জানান, সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে আইন মন্ত্রণালয়ের মতামতের প্রয়োজন না হলেও ইসি মতামত চেয়েছিল। কিন্তু আইনি বাধ্যবাধকতা থাকায় ইসি আর মতামতের জন্য অপেক্ষা করতে পারেনি।

রোহিঙ্গা ভোটার প্রসঙ্গে আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেন, ‘গত বছর কক্সবাজারের একটি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে এক ব্যক্তি রোহিঙ্গা ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হওয়ার অভিযোগ নিয়ে আদালতে একটি রিট করেছিলেন। তিনি নির্বাচন বন্ধ চেয়েছিলেন। ‎নির্বাচন তো বন্ধ হয়নি। তবে আদালত রোহিঙ্গা ভোটার অন্তর্ভুক্তির বিষয় তদন্ত করতে বলেছিলেন। আমরা বিশেষ এলাকা হিসেবে সংশ্লিষ্ট উপজেলার ভোটার তালিকায় যাতে রোহিঙ্গা ঢুকতে না পারে, সে জন্য নিয়মিতভাবে হালনাগাদ করে থাকি। তারপরও প্রতারণা করে কেউ ঢুকে গেলে তাৎক্ষণিকভাবে বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত আছে।’

এনআইডি সংশোধন আরও দ্রুত ও সহজ করা হবে জানিয়ে ইসি বলেন, ‘এনআইডি সংশোধনসংক্রান্ত আবেদন দীর্ঘদিন ঝুলে থাকে, এটাকে কী করে সহজীকরণ করা যায়, সে আলোচনা হয়েছে। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, কোনো ব্যক্তি বা নাগরিকের যদি অসৎ উদ্দেশ্য না থাকে, সেগুলোকে সহজভাবে সমাধান করে দেওয়া হবে। অনেকে দ্বৈত কার্ড বা এনআইডি নিয়েছেন। এই সংখ্যা খুব বেশি নয়। তাঁদের ক্ষেত্রে ভুলভাবে কেউ দুবার নিলে প্রথমটা থাকবে, দ্বিতীয়টা বাদ যাবে। এ ছাড়া বয়স বেশি কিন্তু তা কমিয়ে একটা চাকরি নিয়েছে, এমন হলে আমরা তা নিরুৎসাহিত করব। এমন হলে সেটা কমিশন পর্যন্ত আসবে। আবার পুরো পরিচয় পরিবর্তন করতে চাইলে আমরা কঠোর হব। এ ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট আবেদন নিষ্পত্তিতে সময় লাগলেও জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে এটা করতে হবে।’

ডেটাবেজে ২ লাখ ৯ হাজার ম্যাচ ফাউন্ড ভোটার আছে উল্লেখ করে ইসি সানাউল্লাহ বলেন, অনেক সময় শ্রমিক ভাই বা মা-বোনদের কারও কারও আঙুলের ছাপ পরিষ্কার থাকে না। অনেক সময় এ কারণে ফলস ম্যাচ আসে। এগুলো যেন দ্রুত করা যায়, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত