Ajker Patrika

টিকটক বন্ধের চিঠি বিটিআরসিতে

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
টিকটক বন্ধের চিঠি বিটিআরসিতে

শর্ট ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম টিকটকের নেতিবাচক দিক নিয়ে আলোচনা করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। কমিটির সভাপতি অ্যাপটি বন্ধ করার সুপারিশ করেছেন। 

আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত কমিটির বৈঠক সূত্রে এ তথ্য পাওয়া গেছে। 

বৈঠকের কার্যবিবরণী থেকে জানা গেছে, আগের বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। আজকের বৈঠকে কার্যবিবরণীটি অনুমোদন দেওয়া হয়। 

কার্যবিবরণী থেকে জানা যায়, আগের বৈঠকে টিকটক নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। ওই বৈঠকে সভাপতি বলেন, ‘টিকটক আলোচনা-সমালোচনা হচ্ছে। এই অ্যাপটি নেতিবাচকভাবে বেশি ব্যবহার হচ্ছে। বিভিন্ন হিংসাত্মক কর্মকাণ্ড, গুজব ও অপপ্রচার ছড়ানো হচ্ছে।’ পরে তিনি অ্যাপটি বন্ধের সুপারিশ করেন। 

টিকটক বন্ধের বিষয়ে ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার (এনটিএমসি) মহাপরিচালক মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসান বলেন, ‘বাংলাদেশের তরুণ সমাজের মধ্যে ব্যবহৃত ইন্টারনেটের ৮০ শতাংশ ব্যয় হয় টিকটক অ্যাপের পেছনে। এই প্ল্যাটফর্মটি ব্যবহার করে প্রতিহিংসামূলক, ভুল তথ্য ও ঘৃণাত্মক বক্তব্য প্রচার করা হয়। এর ইতিবাচকের চেয়ে নেতিবাচক ব্যবহার বেশি হচ্ছে।’ সব ধরনের তথ্য-উপাত্তসহ টিকটক অ্যাপ বন্ধে এরই মধ্যে বিটিআরসিকে চিঠি দেওয়া হয়েছে বলেও তিনি জানান। 

সংসদ সচিবালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বৈঠকে অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশে অনাকাঙ্ক্ষিত কোনো ঘটনা যাতে না ঘটে সে জন্য সবাইকে সতর্ক থাকতে। সংসদ সদস্য ভবনের পাশে গাড়ি চলাচলের সময় হর্ন না বাজানোর বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণেরও সুপারিশ করা হয়। 

এ ছাড়া স্বামী-স্ত্রী সরকারি চাকরিতে কর্মরত থাকলে তাঁদের পাশাপাশি কর্মস্থলে পদায়নে বিশেষ লক্ষ্য রাখার সুপারিশ করা হয়। 

কমিটির সভাপতি শামসুল হক টুকুর সভাপতিত্বে বৈঠকে আরও অংশ নেন—কমিটির সদস্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, হাবিবর রহমান, সামছুল আলম দুদু, কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা, নূর মোহাম্মদ, সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমদ ও রুমানা আলী।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার পর্যটনে রদবদল

ফিচার ডেস্ক
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

বিশ্বের অনেক দেশ রাজস্ব আয় বাড়াতে এখন পর্যটনশিল্পকে তালিকার শীর্ষে জায়গা করে দিয়েছে। তাই অনেক দেশ তাদের পর্যটনশিল্পকে নতুন করে ঢেলে সাজাতে শুরু করেছে। এর জন্য সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ভিসা নীতি থেকে শুরু করে পর্যটনকেন্দ্রগুলোর সংস্কার এবং পর্যটকদের নিরাপত্তার বিষয়গুলোর দিকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার; বিশেষ করে মালয়েশিয়া ও ভিয়েতনাম এ বছর নিজেদের পর্যটনশিল্পে ব্যাপক পরিবর্তন এনেছে। অন্যদিকে বিভিন্ন রাজনৈতিক পরিস্থিতির মধ্যেও লাওস ও কম্বোডিয়া তাদের পর্যটনশিল্প এগিয়ে নিয়েছে অনেক দূর। তবে এই অঞ্চলের অন্যান্য দেশের অবস্থা স্থিতিশীল থাকলেও পিছিয়ে পড়েছে থাইল্যান্ড।

মালয়েশিয়া: দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার পর্যটনের নেতৃত্বে

চলতি বছর রেকর্ড পরিমাণ আন্তর্জাতিক পর্যটক ভ্রমণ করেছে মালয়েশিয়া। জানুয়ারি থেকে আগস্ট পর্যন্ত দেশটিতে ভ্রমণ করেছে প্রায় ২ কোটি ৮০ লাখের বেশি বিদেশি পর্যটক, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় বেশি। মালয়েশিয়ার এই উত্থানের পেছনে রয়েছে একাধিক কারণ। প্রথমত, দেশটি ভিসা নীতিতে বড় পরিবর্তন এনেছে।

চীন, ভারত, মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরোপের পর্যটকদের জন্য দেশটি ভিসা ফ্রি বা ভিসা-অন-অ্যারাইভাল ব্যবস্থা চালু করেছে। সে কারণে বিদেশিদের ভ্রমণ অনেক সহজ হয়েছে।

দ্বিতীয়ত, সরকার পর্যটন অবকাঠামোতে বিনিয়োগ বাড়িয়েছে। কুয়ালালামপুর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরকে আঞ্চলিক ট্রানজিট হাব হিসেবে গড়ে তোলা, অভ্যন্তরীণ রেল ও সড়ক যোগাযোগ উন্নয়ন—সবকিছুই এই বৃদ্ধিতে ভূমিকা রেখেছে।

এ ছাড়া মালয়েশিয়া এখন ভ্রমণ ও খাদ্য পর্যটনের দিকেও জোর দিচ্ছে।

ভিয়েতনাম: দ্রুত উত্থান

মালয়েশিয়া সংখ্যায় এগিয়ে থাকলেও পর্যটনের ক্ষেত্রে ভিয়েতনাম এখন দ্রুত বর্ধনশীল দেশ। এ বছর দেশটিতে বিদেশি পর্যটক বেড়েছে ২১ দশমিক ৫ শতাংশ। হ্যানয়, হো চি মিন সিটি, হা লং বে বা ফং নিয়ার গুহা, সব মিলিয়ে ভিয়েতনাম এখন প্রকৃতি, সংস্কৃতি এবং সাশ্রয়ী ভ্রমণের অসাধারণ মিশেল। দেশটির সরকার নতুন আন্তর্জাতিক রুট চালু করেছে; বিশেষ করে চীন, দক্ষিণ কোরিয়া

ও জাপানের সঙ্গে। পাশাপাশি স্থানীয় পর্যটন উদ্যোক্তারা ছোট শহর ও গ্রামীণ এলাকায় ইকো ট্যুরিজম বাড়াচ্ছেন, যা তরুণ পর্যটকদের কাছে দারুণ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।

পর্যটনশিল্প দ্রুত পুনরুদ্ধার করেছে ইন্দোনেশিয়া

মূলত করোনার পরই অনেক অঞ্চলের মতো পর্যটন খাতের অবস্থা খারাপের দিকে যায় দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোতে। এরপর সবাই এই শিল্পকে পুনরুদ্ধারের চেষ্টা করে। এই তালিকায় এগিয়ে আছে ইন্দোনেশিয়া। এই বছরের জানুয়ারি থেকে জুনে দেশটিতে প্রায় ৭০ লাখ ৫০ হাজার বিদেশি পর্যটক ভ্রমণ করেছিল। এটি আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৯ দশমিক ৪৪ শতাংশ বেশি। এর মধ্যে বালি দ্বীপ ভ্রমণ করে ৪০ লাখের বেশি পর্যটক। দেশটির জনপ্রিয় সৈকত, প্রাচীন মন্দির, সংস্কৃতি ও অ্যাডভেঞ্চার কেন্দ্রগুলো আন্তর্জাতিক পর্যটকদের বেশ টানে। এই বৃদ্ধিতে অবদান রেখেছে উন্নত বিমান সংযোগ, রিসোর্ট ও অবকাঠামোর উন্নয়ন এবং সরকারি প্রচারণা।

পিছিয়েছে থাইল্যান্ড

এ বছরের প্রথম ৯ মাসে থাইল্যান্ডে আন্তর্জাতিক পর্যটকের সংখ্যা ছিল প্রায় ২৪ লাখ ১০ হাজার; যা ২০২৪ সালের তুলনায় প্রায় ৭ দশমিক ৫ শতাংশ কম। একই সঙ্গে, জানুয়ারি থেকে জুনে দেশটিতে প্রায় ১৮ লাখ বিদেশি পর্যটক ভ্রমণ করে। এই পিছিয়ে পড়ার কারণ সীমান্ত ও নীতিগত চ্যালেঞ্জ। এতে বিশেষ করে চীনা পর্যটকদের আগমন উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে দেশটিতে। থাইল্যান্ড সরকার যদিও ঘুরে দাঁড়ানোর দ্রুত পদক্ষেপ নিয়েছে। তাদের স্থানীয় উৎসব সঙক্রান উপলক্ষে আন্তর্জাতিক পর্যটন ফেরাতে বিশেষ প্রচারণা চালিয়েছে থাইল্যান্ড।

অন্য কোন দেশগুলো পিছিয়ে

এই অঞ্চলের অন্যান্য দেশের তুলনায় কম্বোডিয়া, মিয়ানমার ও লাওস এখনো পিছিয়ে। কম্বোডিয়ার আঙ্কর ওয়াটের জনপ্রিয়তা থাকলেও রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা এবং দুর্বল অবকাঠামো পর্যটক টানতে বাধা সৃষ্টি করছে। মিয়ানমারে চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতা ও নিরাপত্তা উদ্বেগে পর্যটন প্রায় স্থবির। লাওস কিছুটা উন্নতি করলেও বড় আকারে আন্তর্জাতিক পর্যটন আকর্ষণের মতো প্রচারণা এখনো শুরু হয়নি।

এ বছরের পরিসংখ্যান বলছে, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার পর্যটনে নতুন ভারসাম্য তৈরি হচ্ছে। মালয়েশিয়া এখন এই অঞ্চলের শীর্ষে রয়েছে। ভিয়েতনাম দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে, থাইল্যান্ড টিকে থাকতে নতুন কৌশল নিচ্ছে। অন্যান্য দেশও নতুন করে ভাবছে নিজেদের পর্যটনশিল্প নিয়ে। ভ্রমণ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভ্রমণের জন্য এশিয়া মহাদেশের সম্ভাবনাময় অঞ্চল দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া।

সূত্র: আসিয়ান ট্যুরিজম স্ট্যাটিস্টিক রিপোর্ট ২০২৫ এবং গালফ নিউজ

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আজকের রাশিফল: স্ত্রীর কথা শুনুন, অফিসে কাজের চাপ বাড়বে

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১৩ নভেম্বর ২০২৫, ১০: ০৭
আজকের রাশিফল: স্ত্রীর কথা শুনুন, অফিসে কাজের চাপ বাড়বে

মেষ

আজ আত্মবিশ্বাস এতটা আকাশছোঁয়া থাকবে যে নিজেকে ‘অ্যাভেঞ্জার্স’-এর প্রধান সদস্য মনে করবেন। কিন্তু সাবধান, ছাদে উঠে ওড়ার চেষ্টা করবেন না। আপনার ভেতরের পজিটিভ এনার্জি দেখে অন্যরা হিংসা করতে পারে। লোকদের সহযোগিতা করতে গিয়ে তাদের ঘাড়ের ওপর চেপে বসবেন না যেন! তবে আর্থিক দিক থেকে দিনটি শুভ, তাই ডিনারে চিকেন বিরিয়ানি খাওয়ার অনুমতি গ্রহরা দিয়েছে। আজ সকালে ঘুম থেকে উঠে ১০ বার বলুন, ‘আমিই সেরা!’—এতে অহংকার নয়, আত্মবিশ্বাস বাড়বে।

বৃষ

মন আজ আধ্যাত্মিকতার দিকে এমনভাবে ঝুঁকবে যে সন্ন্যাস নেওয়ার কথা ভাববেন। কিন্তু মানিব্যাগ বলছে, আগে এই মাসের ইএমআইটা দিন! আজকের দিনটি নিজেকে লক্ষ্যবস্তুতে কেন্দ্রীভূত করার জন্য শ্রেষ্ঠ। খুঁজে বের করুন, আপনার লক্ষ্য আসলে অফিসের লাঞ্চবক্স নাকি সারা বছরের সঞ্চয়! সন্ধ্যায় স্পা বা দামি ধূপকাঠির পেছনে বেশি খরচ করবেন না। কারণ, গ্রহরা আপনার বাজেট নিয়ে কৌতুক করছে। ধ্যান করুন। না পারলে ফোন বন্ধ করে কিছুক্ষণ চুপ করে বসে থাকুন—সেটাও ধ্যানের মতো কাজ করবে।

মিথুন

কথা বলার আগে দুবার ভাবুন—নইলে আপনার অজান্তেই সেই কথা কোনো সহকর্মীর ইস্তফার কারণ হতে পারে। আজকের দিনটি আত্মবিশ্লেষণের জন্য সেরা। খুঁজে বের করুন, কেন অনলাইনে এত অপ্রয়োজনীয় জিনিস কেনেন! তবে সহকর্মীরা আজ খুবই সাহায্য করবে (কারণ, আপনি অবশেষে তাদের কফির বিলটা দিয়েছেন)। জমানো পুঁজি ব্যবসায় লাগাবেন না, বরং একটি নতুন ডায়েরি কিনুন। কথোপকথনে সংবেদনশীল হন। অর্থাৎ প্রিয়জনের সামনে তার প্রাক্তন প্রেমিকের গল্প করবেন না।

কর্কট

আজ এমন কারও সঙ্গে দেখা হবে যিনি আপনার খুব প্রিয়—হতে পারে সেটা হারিয়ে যাওয়া পুরোনো চকলেট বক্স! জীবনসঙ্গী আজ সহায়কের ভূমিকায় থাকবেন, তাই সাহস করে আজই ঘর গোছানোর কাজটা চাপিয়ে দিন। সন্তানের নামে প্রতিবেশীর অভিযোগ শুনলে মাথা ঠান্ডা রাখুন, প্রতিবেশী হয়তো আপনার সন্তানকে আইনস্টাইন ভেবে ভুল করছে। আপনার দুর্বল মানসিক অবস্থা সন্ধ্যার পর কেটে যাবে, যখন আপনি প্রিয় সিরিয়ালটি দেখবেন। কোনো নারীর কাছ থেকে উপকার নিতে হতে পারে। তিনি আপনার মা অথবা সেলস এক্সিকিউটিভও হতে পারেন।

সিংহ

যতটা আশা করেছিলেন, তার চেয়ে অনেক বেশি ভালো ফল পাবেন। নিজেকে ‘সোশ্যাল স্টার’ মনে হবে, সামাজিক কাজে আপনার উন্নতি হবে। কিন্তু সন্ধ্যার পর হঠাৎ এমন দুর্বল লাগবে যেন সারা দিন ম্যারাথন দৌড়েছেন। ব্যয় হওয়ার ফলে সাশ্রয় হবে না। আজ কাউকে টাকা বা কোনো জিনিস দেবেন না—তারা ফেরত দেবে না, গ্যারান্টি! বেতন সামান্য কমতে পারে, তাই কফি খাওয়ার অভ্যাসটা একটু কমান। আজ খুব বেশি আশা করবেন না। বরং সারপ্রাইজ উপভোগ করুন।

কন্যা

আপনার সাহায্য আজ কারও এতটা উপকারে আসবে যে নিজেরই গর্ব হবে। (যেমন আপনি আপনার বন্ধুর ফোনের চার্জারটি খুঁজে দিলেন)। কর্মক্ষেত্রে খুব বেশি সতর্কতা রাখুন—বস আজ আপনার টেবিলের ধূলিকণা পর্যন্ত গুনতে পারেন। ধৈর্য প্রদর্শন বজায় রাখবেন। মানসিক বিষয়ে ভারসাম্য বজায় রাখুন—আজ ফোনটি হঠাৎ করে হ্যাং করলেও রাগ দেখাবেন না। কাছের মানুষের কাছ থেকে সমর্থন পাবেন। মানসিক বিষয়ে ভারসাম্য বজায় রাখতে, আজ রাতে একটু আগে ঘুমিয়ে পড়ুন।

তুলা

ভদ্র ব্যবহার আজ সবার কাছে প্রশংসিত হবে। এমনভাবে কথা বলুন যেন আপনি কোনো রয়্যাল ফ্যামিলির সদস্য! তবে ছোটখাটো বিষয়ে প্রতিক্রিয়া দেখানো বন্ধ করুন। কেউ আপনার পার্কিং স্পট নিয়ে নিলে সেটা নিয়ে কুরুক্ষেত্র বাধাবেন না। প্রেমের ক্ষেত্রে নম্রতা বৃদ্ধি করুন, তবে ফ্লার্ট করার সময় সাবধান! মৌখিকভাবে কাউকে কোনো কথা দেবেন না, নথিপত্র তৈরি করাই বুদ্ধিমানের কাজ। মনকে ভালোবাসা, আশা এবং বিশ্বস্ততার মতো ইতিবাচক অনুভূতি গ্রহণে উৎসাহিত করুন—এবং আজ অন্তত একবার আয়নার সামনে হেসে দেখুন।

বৃশ্চিক

আজ কোনো পরিচিত ব্যক্তি আপনার পারিবারিক অশান্তির কারণ হতে পারে। সম্ভবত তিনি আপনার শাশুড়ির কাছে আপনার গোপন ডায়েট প্ল্যান ফাঁস করে দেবেন। প্রেমের ক্ষেত্রে কোনো জোর করতে যাবেন না—প্রেম গণিত নয়, যে জোর করে সমাধান করে দেবেন। বরং একটা ভালো সিনেমা দেখুন। প্রিয়জনদের তাদের পক্ষ উপস্থাপনের সুযোগ দেবেন—যদিও জানেন যে আপনিই সঠিক। সাহস এবং প্রজ্ঞার সঙ্গে কাজের গতি ত্বরান্বিত করুন। সাহস না থাকলে কমপক্ষে এক গ্লাস পানি খেয়ে শান্ত হন।

ধনু

আজ আপনার রূঢ় আচরণ কর্মের জায়গায় অনেক পিছিয়ে নিয়ে যেতে পারে। তাই প্লিজ, সকালে বসের সামনে আপনার ঘুম ভাঙার মেজাজটা নিয়ে যাবেন না। স্ত্রীর সুপরামর্শে সারা দিনে কোনো ভালো কাজ করে উঠতে পারেন। স্ত্রীর কথা শুনুন—বিশ্বাস করুন বা না করুন, আজ ওনার গ্রহ আপনার চেয়ে ভালো কাজ করছে! মানসিক ভারসাম্য বজায় রাখুন, নয়তো সহকর্মীদের সঙ্গে তর্ক বাঁধতে পারে। নম্রতা ও বিচক্ষণতা বজায় রাখবেন। রূঢ়তা দেখানোর আগে এক সেকেন্ড থামুন।

মকর

কর্মে বেশি সময় অতিবাহিত করার ফলে পারিবারিক কিছু চাহিদা মেটাতে অক্ষম থাকবেন। পরিবার হয়তো আপনাকে বাড়িতে আসা কোনো অতিথি মনে করবে। সম্পত্তি ভাগাভাগি নিয়ে ভাইয়ের সঙ্গে মতের অমিল হতে পারে। আলোচনায় গরমিল হলে একটা বিরাট পিৎজা কিনে দুই ভাগ করে দিন, আপাতত শান্তি বজায় থাকবে। পুরোনো মামলার নিষ্পত্তি করার ওপর জোর দিন, যেমন আপনার জমে থাকা লন্ড্রি। জীবনে উজ্জ্বল হওয়ার সুযোগ থাকবে। কিন্তু তার জন্য আপনাকে কম্পিউটার থেকে মুখ তুলে বাইরে তাকাতে হবে।

কুম্ভ

মানুষ চেনার ক্ষমতা আজ তুঙ্গে থাকবে। কিন্তু তা সত্ত্বেও রাস্তায় পাওনাদারকে দেখলে আপনি চিনেও চিনতে চাইবেন না! আজ স্ত্রীর সঙ্গে বাইরে কোথাও বেড়াতে যেতে ইচ্ছা করবে। শুধু ‘ইচ্ছা’ করলেই হবে না, টিকিট কাটুন—গ্রহরা বলছে, আজ স্ত্রী খুব খুশি হবেন! নিজেকে সময় দিন। গুরুত্বপূর্ণ কথা বলতে পারবেন, তবে সেটা যেন কাজের কথা হয়, দীর্ঘ বক্তৃতা নয়। তেলবীজ দান করুন। মানে তেল দেওয়া খাবার পাখিদের দিন—নিজে খাবেন না!

মীন

আজ গুরুজনদের কথা মানতে ইচ্ছা করবে। মানলে খুবই ভালো ফল পাবেন। (যেমন খালা বা ফুফু যদি বলেন, ‘দই-ভাত খেয়ে যাও’, তাহলে তর্ক না করে খেয়ে নিন)। তবে অকারণে আজ কিছু কিছু কাজ করতে হতে পারে, যেগুলোর কোনো মানে নেই। মনে রাখবেন, গ্রহরা আপনাকে আজ ‘সার্ভিস রোবট’-এর রোল দিয়েছে! আপনার কাছে আসা সব উপদেশ ভালো না-ও হতে পারে, তবে ধৈর্য ধরে শুনে যান। শারীরিক উন্নতির জন্য কালো ঘোড়ার নাল দিয়ে তৈরি আংটি পরার চেষ্টা করুন—তবে কালো ঘোড়া জোগাড় করাটা আপনার জন্য আজকের চ্যালেঞ্জ!

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বয়সী বটের নিচে চড়ুইভাতি

মুহাম্মদ জাভেদ হাকিম 
ছবি: দে ছুট ভ্রমণ সংঘ
ছবি: দে ছুট ভ্রমণ সংঘ

একটি প্রাচীনতম বটবৃক্ষ মানে কালের সাক্ষী। পুরোনো কোনো স্থাপনা দেখলে যেমন মানুষ নস্টালজিয়ায় ভোগেন, তার চেয়ে বেশি মানুষ স্মৃতিকাতর হয়ে পড়েন, যদি কোনো শতবর্ষী গাছের ছায়ায় যান।

স্থান সাইট্টা গ্রাম, ধামরাই, ঢাকা। ব্যক্তিগত গাড়িতে সবাই যে যার মতো করে ছুটছি। শুক্রবার। তারপরেও যানজটের মহামারি ছাড়িয়ে সকাল ৯টার বদলে বেলা প্রায় ১১টায় পৌঁছাই সাভার বাজারে। তারপর নবীনগর। এরপর একটানে ঢুলিভিটা হয়ে ধানতারা। মাঝখানে নামাজের বিরতি। ধানতারা থেকে বাঁয়ে মোড় নিয়ে গাড়ি ছুটল সাইট্টার পথে।

এ এক প্রশান্তির পথ। সেই চিরচেনা সুনসান নিরিবিলি গাঁয়ের পথ। সবুজ প্রান্তর, গাছের ছায়া, পাখির কলতান। দূর থেকে গাড়ির জানালা দিয়ে যখন বটগাছ চোখে পড়ে, তখন কিছুটা নিরাশ হয়ে পড়ি। কেউ একজন মন্তব্যই করে ফেলল, এ তো দেখছি গাবগাছের পাতার মতো!

পিচঢালা পথ ছেড়ে গাড়ি ঢুকে পড়ে মেঠো পথে। থামে গিয়ে একেবারে বটবৃক্ষের নিচে। আনন্দে মন নেচে ওঠে। একি আসলেই বটবৃক্ষ, নাকি ভিন্ন কিছু! নানান জায়গায় ঘুরতে গিয়ে জীবনে অনেক বটগাছের ছায়ায় বসার সুযোগ হয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত এ রকম তো কোনো বটগাছ চোখে পড়েনি! আশ্চর্য সুন্দর সাইট্টা বটগাছের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে নিজেকে বেশ সুখী মনে হলো।

গাছের ওপর থেকে বটের ঝুরি ঝুলে মাটির সঙ্গে মিশেছে। গাছের আদ্যোপান্ত জানতে এবার স্থানীয়দের খোঁজে নামি। দু-একজনের সঙ্গে ভাব জমাই। কিন্তু তথ্যসূত্র নির্ভরযোগ্য মনে হয় না। এদিকে পেটেও টান পড়েছে। গাড়িতে হাঁড়ি-পাতিল ছিল। করিতকর্মা ফারুক বাইকে চড়ে স্থানীয় বাজার থেকে চাল-ডাল-ডিম কিনে আনে। গ্রাম্য চা-দোকানি সন্তোষের সহযোগিতায় শুরু হয় রান্না। সেসব ফেলে আমরা বের হয়ে পড়ি গ্রাম দেখতে।

বিঘার পর বিঘা জমিতে লেবুর বাগান। থোকায় থোকায় ধরে আছে নানান জাতের লেবু। গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে গেছে হাঁটুজলের ছোট নদী। আর সেই নদীতে জেলে ধরছে মাছ। গাছের ডালে ডালে নানান রঙের পাখি। জনমানবের কোলাহল নেই। পাখিরা নিশ্চিন্ত মনে গেয়ে যায় গান। যেন সাইট্টা গ্রামটি ওদের জন্য অভয়াশ্রম।

ভর সন্ধ্যায় রান্না শেষ। মাগরিব নামাজের পর জোটে ওঠা খিচুড়ি আর ডিম ভুনা। খেতে খেতেই পরিচয় হয় জনি দাস নামের এক তরুণের সঙ্গে।

তাঁর সঙ্গে আলাপচারিতায় জানা গেল বেশ কিছু তথ্য। সাইট্টা গ্রামটি ধামরাই উপজেলার যাদবপুর ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত। ষাটটি পরিবার নিয়ে প্রথম

এই গ্রামে বসতি শুরু। সেই থেকে গ্রামের নাম সাইট্টা হয়েছে। গ্রামে মানুষের সংখ্যা প্রায় চার শ। হিন্দু সম্প্রদায়-অধ্যুষিত এই গ্রামের শিক্ষার হার প্রায় ৯৫ শতাংশ। পেশায় অধিকাংশই সরকারি ও বেসরকারি চাকুরে। গ্রামবাসী বন্ধুবৎসল।

জনি বটগাছটি সম্পর্কে জানালেন, এটির বয়স আনুমানিক পাঁচ শ বছর। যদিও সুনির্দিষ্ট করে কেউ বলতে পারে না এর বয়স। তবে বেশির ভাগ মানুষের ধারণা, ‘কম করে চার শ বছর তো হবেই’! বটগাছটি প্রায় দুই একর জায়গাজুড়ে বিস্তৃত। একে ঘিরে লোকমুখে চালু আছে অনেক অদ্ভুতুড়ে গল্প। ফলে এর ডালপালা-ঝুরি কোনো দিন ছাঁটা হয়নি। তাই

এর আকার হয়েছে আক্ষরিক অর্থে জায়ান্ট, মহিরুহ। গাছটির পাশেই একটি নাটমন্দির রয়েছে। সেখানে নিয়মিত পূজা-অর্চনা চলে। নির্ভরযোগ্য তথ্য দিয়ে ভদ্রলোক বিদায় নিলেন। নীরব আর নিস্তব্ধ গ্রাম্য পরিবেশে শুরু হলো দ্বিতীয় পর্ব, বারবিকিউ।

কয়লার আগুনে গোশত ঝলসানোর সুযোগে আমাদের কেউ কেউ কুয়াশায় ডোবা ঘুটঘুটে অন্ধকারে বটগাছের তলা ঘুরে এসে অনুভূতি জানাল। রাত নয়টায় সব আয়োজনের ইতি টেনে, শিয়াল পণ্ডিতদের ভাষণ শুনে আমরা ফেরার পথ ধরলাম।

যাবেন যেভাবে

ঢাকার যেকোনো প্রান্ত থেকে নিজ নিজ সুবিধা অনুযায়ী গাবতলী ও উত্তরার থার্ড ফেস এবং আবদুল্লাহপুর হয়ে ধামরাই উপজেলার ধানতারা বা কালামপুর বাজার হয়ে সাইট্টা গ্রামে যাওয়া যাবে। নিজস্ব বা ভাড়ার গাড়িতে গেলেই সুবিধা বেশি। তবে গুলিস্তান থেকে ধামরাই রুটের বাসে ঢুলিভিটা বাসস্ট্যান্ড বা কালামপুর বাজারে নেমে সেখান থেকে অটো কিংবা ভ্যানে চেপে সাইট্টা গ্রামে যাওয়া যায়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ভ্রমণের হৃদয়ছোঁয়া অধ্যায় ইন্দোনেশিয়া

সাইফুল ইসলাম শান্ত
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

হেঁটে বিশ্ব দেখতে বের হওয়ার ৬০০ দিন পার করলাম সম্প্রতি। এই দীর্ঘ যাত্রায় বাংলাদেশ ছাড়া এখন পর্যন্ত আমি হেঁটে পেরিয়েছি ভারত, নেপাল, শ্রীলঙ্কা, উজবেকিস্তান, তাজিকিস্তান, থাইল্যান্ড, কম্বোডিয়া, লাওস, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর এবং সর্বশেষ ইন্দোনেশিয়া। এত দেশ ঘোরার পর এখন যদি আমাকে জিজ্ঞেস করা হয়, প্রিয় দেশ কোনটি? নিঃসন্দেহে বলব, ইন্দোনেশিয়া।

ভিন্ন এক অনুভূতি এই দেশে

প্রতিটি দেশের নিজস্ব সৌন্দর্য আছে। কিন্তু ইন্দোনেশিয়া একেবারে আলাদা। এখানকার দ্বীপ, সংস্কৃতি, ভাষা, মাটি, আবহাওয়া এবং পরিবেশ—সব মিলিয়ে দারুণ লেগেছে। সবচেয়ে বড় কথা, এখানকার মানুষের আন্তরিকতা অসাধারণ। আমার ভ্রমণের অভিজ্ঞতায় ইন্দোনেশিয়ার মানুষই সবচেয়ে অতিথিপরায়ণ। তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায় সহজে, যেকোনো সাহায্য চাইলে তারা আন্তরিকভাবে করে। অনেক জায়গায় শুধু ট্যুরিস্ট শুনে তারা খাবারের দাম পর্যন্ত নেয়নি। কেউ আমার যাত্রার গল্প শুনে উৎসাহ দিয়েছে। কেউ আবার বলেছে, ‘তুমি আমাদের দেশের সম্মান বাড়াচ্ছ।’ এই ভালোবাসা আমাকে সত্যিই ছুঁয়ে গেছে।

শহর নয়, গ্রামের পথে

আমি সাধারণত ট্যুরিস্ট জায়গাগুলো এড়িয়ে চলি। কারণ, হেঁটে ভ্রমণ মানেই হলো প্রকৃত জীবনের সঙ্গে মিশে যাওয়া। তাই শহরের চেয়ে গ্রামই বেশি ভালো লাগে। ইন্দোনেশিয়ার গ্রামের পথ ধরে হাঁটার সময় সে দেশের অধিবাসীদের জীবনধারা, পরিশ্রম, হাসি, সরলতা কাছ থেকে দেখেছি। ছোট দোকানে বসে চা খেতে খেতে গ্রামের মানুষের গল্প শুনেছি, তাদের সংস্কৃতি দেখেছি, তাদের জীবনযাত্রার সঙ্গে মিশেছি। গ্রামের মানুষগুলো সত্যিই আলাদা। কেউ কাজের ফাঁকে এসে আমার সঙ্গে কথা বলেছেন, কেউ ছবি তুলতে চেয়েছেন, কেউবা কৌতূহল নিয়ে জানতে চেয়েছেন, আমি এত দূর কেন হেঁটে চলেছি। তাঁদের হাসি আর আন্তরিকতা আমার এই যাত্রাকে আরও অর্থবহ করে তুলেছে।

সময়ের প্রতি শ্রদ্ধা

ইন্দোনেশিয়ার মানুষের জীবনযাপন খুব ভালো লেগেছে। এখানে মানুষ খুব ভোরে ঘুম থেকে ওঠে এবং এশার নামাজের পরপরই ঘুমিয়ে যায়। তাদের এই নিয়মিত জীবন যাপন করা, সময়ের মূল্য বোঝা, কাজের প্রতি দায়বদ্ধতা আমাকে মুগ্ধ করেছে।

আবার যেতে চাই

ইন্দোনেশিয়ার গ্রামগুলোর সৌন্দর্য, সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য আমার মনে এক গভীর টান সৃষ্টি করেছে। তাদের আন্তরিকতা, আতিথেয়তা অতুলনীয়। আমি সত্যিই চাই আবার একদিন ইন্দোনেশিয়ায় ফিরতে। বিশেষ করে গ্রামের পথে। সেখানে মানুষ হাসিমুখে অতিথিকে এখনো স্বাগত জানায় এবং সরলতা এখনো টিকে আছে।

৬০০ দিনের এই যাত্রায় আমি বুঝেছি, ভ্রমণ মানে শুধু স্থান পরিবর্তন নয়, এটা বৃহৎ অর্থে মানুষ চেনা, সংস্কৃতি বোঝা। নিজের ভেতরের নতুন এক দিক উন্মোচনের পথ এটি। আর ইন্দোনেশিয়া আমার সেই পথের সবচেয়ে হৃদয়ছোঁয়া অধ্যায়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত