Ajker Patrika

শৈশবের নিজেকে কাছে পেলে কেমন হবে অনুভূতি

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ছবি: ইনস্টাগ্রাম
ছবি: ইনস্টাগ্রাম

গুগলের জেমিনি চ্যাটবটের ন্যানো ব্যানানা ফিচার ইতিমধ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। ফিচারটি উন্মোচনের পর থেকে ব্যবহারকারীরা এআইয়ের মাধ্যমে একের পর এক চমকপ্রদ ছবির ট্রেন্ডে অংশ নিচ্ছেন। কেউ নিজেকে তুলে ধরছেন ছোট ফিগারিন রূপে, আবার কেউ শাড়ি পরিহিত অবতারে—সবই তৈরি হচ্ছে অত্যাধুনিক জেমিনি এআই প্রযুক্তির ছোঁয়ায়।

এ ধারাবাহিকতায় এখন সবচেয়ে বেশি নজর কাড়ছে ‘হাগ মাই ইয়াংগার সেল্ফ’ নামের একটি আবেগঘন ট্রেন্ড। এখানে দেখা যাচ্ছে, ব্যবহারকারীদের বর্তমান রূপ তাঁদের শৈশবের নিজেকে জড়িয়ে ধরছে।

ছবি: ইনস্টাগ্রাম
ছবি: ইনস্টাগ্রাম

এই ভাইরাল ট্রেন্ডে সম্প্রতি যোগ দিয়েছেন অভিনেত্রী আলিয়া ভাট। তিনি নিজের একটি এআই ছবি শেয়ার করেন, যেখানে বর্তমান আলিয়া তাঁর ছোটবেলার নিজেকে জড়িয়ে ধরছেন। ছবিটির সঙ্গে তিনি লেখেন—‘কখনো কখনো আমাদের নিজের আট বছরের ছোট ‘‘আমিকে’’ জড়িয়ে ধরা দরকার। এই সুন্দর মুহূর্তের জন্য ধন্যবাদ। আমি পারছি না (কান্নার ইমোজি)। ছোট আমি আজকের নিজেকে দেখে গর্বিত হতো।’

অন্য তারকাদের এআই ছবি

শুধু আলিয়া নন, এই ট্রেন্ডে আরও অনেক সেলিব্রিটির এআই তৈরি ছবি ছড়িয়ে পড়েছে নেট দুনিয়ায়। প্রজক্তা কোলি একটি ছবি শেয়ার করেন, যেখানে তিনি তাঁর ছোট নিজেকে একটি ট্রফি দিচ্ছেন। ছবির ক্যাপশনে লেখেন: ‘ওএমজি’।

ছবি: ইনস্টাগ্রাম
ছবি: ইনস্টাগ্রাম

এ ছাড়া প্রিয়াঙ্কা চোপড়া জোনাস, শ্রদ্ধা কাপুর, দীপিকা পাড়ুকোন, ক্যাটরিনা কাইফ, অনন্যা পান্ডে, কারিনা কাপুর খান, ঐশ্বর্য রাই বচ্চন ও সুস্মিতা সেনের এআই তৈরি ছবি ঘুরে বেড়াচ্ছে, যেখানে তাঁদের বর্তমান রূপ শৈশবের নিজেকে জড়িয়ে ধরছে অথবা একসঙ্গে কোনো বিজয় উদ্‌যাপন করছে। যদিও এই ছবিগুলোর ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট অভিনেত্রীদের তরফ থেকে এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া আসেনি।

তবে এই ট্রেন্ড চলাকালে শুরু হয়েছে পারসোনালিটি রাইটস (Personality Rights) রক্ষার দাবি। সোশ্যাল মিডিয়ায় বিভিন্ন তারকার ছবি, নাম ও পরিচিতি অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করে কনটেন্ট তৈরির ঘটনা ক্রমেই বাড়ছে এবং বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন অনেকে।

ছবি: ইনস্টাগ্রাম
ছবি: ইনস্টাগ্রাম

সম্প্রতি ঐশ্বর্য রাই বচ্চন আদালতে অভিযোগ করেন, তাঁর অজান্তে এবং অনুমতি ছাড়া এআই দিয়ে তৈরি কিছু অশ্লীল ছবি ইন্টারনেটে ছড়ানো হয়েছে, যা তাঁর ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করছে।

এরপর অভিষেক বচ্চনও একই ধরনের একটি মামলা করেন, যেখানে তিনি অভিযোগ করেন, তাঁর নামে ভুয়া ছবি ও কনটেন্ট ব্যবহার করে পণ্য বিক্রি করা হচ্ছে।

দিল্লি হাইকোর্ট এই মামলাগুলোতে তাঁদের পক্ষে রায় দিয়েছেন।

করণ জোহরও একটি মামলা করেন, যেখানে তিনি বলেন, বিনা অনুমতিতে তাঁর নাম, ছবি ও পরিচিতি ব্যবহার করা হচ্ছে, যা তাঁর দীর্ঘদিনের পেশাগত ভাবমূর্তি নষ্ট করছে। আদালত তাঁর পক্ষে মত দিয়ে বলেন—তারকাদের নাম, ছবি ও কণ্ঠস্বর তাঁদের ব্যক্তিগত পেশাগত পরিচয়ের অংশ, যা আইনি সুরক্ষা পাওয়া উচিত।

এই প্রসঙ্গে জাহ্নবী কাপুরও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, ‘নিরাপত্তা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। আমি আইনি বা টেকনিক্যাল বিষয়ে যাই না, তবে জানি, অনেক ভুয়া ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘুরে বেড়াচ্ছে। এমনকি কিছু মিডিয়া পোর্টালও এসব শেয়ার করে।’

এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট দক্ষ কুমার, ‘পারসোনালিটি রাইটস মানে হলো—আপনার পরিচয়ের ভিআইপি পাস। আপনি নিজেই নিজের নাম, ছবি ও কণ্ঠস্বর নিয়ন্ত্রণ ও অর্থনৈতিকভাবে ব্যবহার করার অধিকার রাখেন। এটা কপিরাইট বা ট্রেডমার্কের মতো নয়—এটা সম্পূর্ণ আপনার নিজের ব্র্যান্ডসংক্রান্ত।’

দক্ষ কুমার আরও বলেন, ‘কপিরাইট হলো আপনি যা সৃষ্টি করেন (যেমন: বই, গান) তার জন্য। ট্রেডমার্ক হলো আপনার ব্র্যান্ডের জন্য। কিন্তু পারসোনালিটি রাইটস হলো আপনি নিজে। এটা হলো আপনার মুখ, আপনার কণ্ঠস্বর, আপনার নাম, যা আপনাকে অন্যদের থেকে আলাদা করে।’

ছবি: ইনস্টাগ্রাম
ছবি: ইনস্টাগ্রাম

২০২৪ সালে এআই দিয়ে তৈরি একটি ভিডিও ইন্টারনেটে ভাইরাল হয়, যেখানে হলিউড তারকারা তাঁদের ছোট ও বড়—দুই সময়ের নিজেকে একসঙ্গে জড়িয়ে ধরছেন।

এই আবেগঘন ভিডিওতে দেখা যায়—মেল গিবসন, এমিনেম, কিয়ানু রিভস, জুলিয়া রবার্টস, মাইকেল জ্যাকসন, টম হ্যাঙ্কস ও উইল স্মিথের মতো তারকারা শৈশবের নিজেকে জড়িয়ে ধরেছেন।

এই নতুন ট্রেন্ডে অংশ নেবেন যেভাবে

১. গুগল জেমিনি অ্যাপ বা ওয়েবসাইটে নিজের জিমেইল অ্যাকাউন্ট দিয়ে লগ ইন করুন।

২. দুটি ছবি আপলোড করুন—একটি বর্তমানের আপনার এবং অন্যটি আপনার শৈশবের ছবি।

৩. ছবির নিচে টেক্সট বক্সে প্রম্পট লিখুন।

প্রম্পট ১

‘Take a photo taken with a Polaroid camera. The photo should look like an ordinary photograph, without an explicit subject or property. The photo should have a slight blur and a consistent light source, like a flash from a dark room, scattered throughout the photo. Don’t change the face. Change the background behind those two people with white curtains. Make it look like both people in the reference picture are hugging each other. ’

প্রম্পট ২

Using my present photo and my childhood photo, create a realistic and heartwarming image where my current self is hugging my younger self. Make sure both faces and features are preserved accurately so the resemblance is clear. The mood should express self-love, nostalgia, and warmth, with natural lighting and a soft, emotional atmosphere—capturing the bond between who I was and who I am now.’

৪. এখন বাম পাশে সেন্ড বাটনে ট্যাপ করুন।

এবার কিছু সময় অপেক্ষা করুন। জেমিনি আপনার বর্তমানের ছবি ও শৈশবের ছবিকে মিলিয়ে অত্যাধুনিক এআই ছবি তৈরি করে দেবে। যেখানে দেখা যাবে—আপনি নিজেই জড়িয়ে ধরছেন আপনার শৈশবের ‘আমি’কে।

তথ্যসূত্র: এনডিটিভি ও হিন্দুস্তানি টাইমস

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

চুল বড় হওয়ার জন্য কোনটি বেশি উপকারী, দুধ নাকি দই?

ফিচার ডেস্ক
ছবি: পেক্সেলস
ছবি: পেক্সেলস

বাঙালির ফ্রিজে দুধ ও দই দুটোই থাকে। খাওয়া ছাড়াও এই দুই প্রাকৃতিক উপাদান চুলের যত্নে নানাভাবে ব্যবহার করা হয়। তবে একটি বিতর্ক রয়ে গেছে; চুলের বৃদ্ধির জন্য কোনটি ভালো—দুধ নাকি দই? অনেকের মতে, দুটোই তো ভালো; বাদ দেব কোনটি? বিশেষজ্ঞরাও বলছেন, চুলের জন্য এই দুটো ভালো। তবে চুলের বৃদ্ধির বেলায় দুটোর কার্যকারিতা ভিন্ন। জেনে নিন কোনটি আসলে আপনার চুল দ্রুত বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।

ছবি: পেক্সেলস
ছবি: পেক্সেলস

নরম ও মসৃণ চুলের জন্য দুধ

দুধ প্রোটিন, ক্যালসিয়াম ও ভিটামিনে পরিপূর্ণ। ফলে এটি আপনার চুলকে শক্তিশালী করতে সাহায্য করে। চুলে দুধ ব্যবহার করলে তা প্রাকৃতিক কন্ডিশনারের মতো কাজ করে। ফলে রুক্ষতা কমে গিয়ে চুল হয় নরম ও মসৃণ।

দুধের ল্যাকটিক অ্যাসিড মাথার ত্বক পরিষ্কার করে, ময়লা ও জমাট বাঁধা খুশকি দূর করে। যাঁদের চুল অতিরিক্ত শুষ্ক বা ক্ষতিগ্রস্ত, তাঁদের চুলে আর্দ্রতা ফিরিয়ে এনে প্রাকৃতিক উজ্জ্বলতা বাড়াতে দুধ ভালো কাজ করে। সে ক্ষেত্রে শুধু দুধ নয়; সঙ্গে মধু, কলা ও অ্যালোভেরা মিশিয়ে সুপার ময়েশ্চারাইজিং হেয়ার মাস্ক তৈরি করতে পারেন।

জেনে রাখা ভালো যে দুধ আপনার চুলকে স্বাস্থ্যকর ও চকচকে দেখাতে কার্যকর হলেও, এটি নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে না। এটি মাথার ত্বকের উপরিভাগে বেশি কাজ করে। কিন্তু চুল ঘন করা বা চুল গজানোর মতো ব্যাপারগুলোয় এর কোনো কার্যকারিতা নেই বললেই চলে।

ছবি: পেক্সেলস
ছবি: পেক্সেলস

টক দই চুলের গোড়া শক্তিশালী করে এবং দ্রুত চুল বৃদ্ধি করে

টক দই প্রোবায়োটিকসে পরিপূর্ণ। এর মধ্যকার ভালো ব্যাকটেরিয়া মাথার ত্বক পরিষ্কার ও সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। এতে প্রোটিন, ভিটামিন বি৫ ও জিংক রয়েছে, যা চুল বড় হওয়ার জন্য প্রয়োজনীয়।

টক দই মাথার ত্বক ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে, খুশকি প্রতিরোধ করে এবং সংক্রমণ এড়াতে সহায়তা করে। এটি চুলের গোড়ায় পুষ্টি জোগায়। টক দই ফলিকলগুলো শক্তিশালী করে বলে নতুন চুল গজায় এবং চুল দ্রুত বড় হয়। টক দইয়ের সঙ্গে আমলকীর গুঁড়া, মেথি অথবা নারকেল তেলের মতো উপাদান মিশিয়ে হেয়ার মাস্ক তৈরি করে চুলে ব্যবহার করা যেতে পারে। এ ছাড়া টক দই চুল নরম ও চকচকে করে তোলে। এটি মাথার ত্বকের স্বাস্থ্য ভালো রাখে।

চুল যতই সিল্কি হোক, ঘনত্ব না থাকলে আসল সৌন্দর্য অধরাই থেকে যায়। টক দই দিয়ে তৈরি করা যায় এমন অনেক হেয়ার প্যাক রয়েছে, যেগুলো নিয়মিত ব্যবহার করলে চুল ধীরে ধীরে ঘন হয়। ডিম আর টক দই চুলের জন্য ভীষণ উপকারী দুটি উপাদান। শ্যাম্পু করার আধা ঘণ্টা আগে মাথার ত্বক ও চুলে ডিম আর টক দইয়ের মিশ্রণ লাগিয়ে রেখে দিন। এরপর পানি দিয়ে ধুয়ে এক মগ পানিতে খানিকটা পাতিলেবুর রস আর আধা কাপ গোলাপজল মিশিয়ে আরেকবার চুল ধুয়ে নিন। এতে চুলে ডিমের আঁশটে গন্ধ থাকবে না। শারমিন কচি, রূপবিশেষজ্ঞ এবং বিন্দিয়া এক্সক্লুসিভ কেয়ারের স্বত্বাধিকারী

কোনটি বেশি ভালো: দুধ না টক দই?

যদি দ্রুত নরম ও চকচকে চুল পেতে চান, তাহলে দুধ বেছে নিন। কিন্তু গোড়া মজবুত ও লম্বা চুল পেতে আগ্রহী হলে টক দই বেছে নিতে হবে। এটি শুধু মাথার ত্বকে পুষ্টি জোগায় না, বরং সময়ের সঙ্গে সঙ্গে চুল ঘন ও স্বাস্থ্যকর করে তোলে।

তবে দুধ ও টক দই উভয়ই তাদের নিজস্ব উপায়ে চুলের যত্নে কাজ করে। এমনকি এই দুটি উপকরণ একসঙ্গেও ব্যবহার করা যায়। এক চামচ মধু বা নারকেল তেলের সঙ্গে দুধ ও টক দই মিশিয়ে চুলে ব্যবহার করলে চুলের উজ্জ্বলতা বাড়ে।

ছবি: পেক্সেলস
ছবি: পেক্সেলস

চুলে দুধ যেভাবে ব্যবহার করবেন

আধা কাপ দুধ গরম করুন। একটি তুলার বল বা স্প্রে বোতল ব্যবহার করে এটি আপনার মাথার ত্বক ও চুলে লাগান। ১৫-২০ মিনিটের জন্য রেখে দিন। এরপর শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। কোঁকড়ানো চুলের নমনীয়তার জন্য সপ্তাহে একবার দুধ এভাবে ব্যবহার করুন।

চুলে টক দই যেভাবে ব্যবহার করবেন

৩ টেবিল চামচ দই ১ টেবিল চামচ নারকেল তেলের সঙ্গে মিশিয়ে নিন। মিশ্রণটি আপনার মাথার ত্বক ও পুরো চুলে লাগান। ৩০ মিনিট রেখে শ্যাম্পু করে ধুয়ে ফেলুন। মজবুত ও চকচকে চুলের জন্য সপ্তাহে দুবার ব্যবহার করুন এটি।

চুলের যত্নে দুধ ও টক দই দুটোই উপকারী। কিন্তু টক দই ব্যবহারে কিছুটা উপকার বেশি পাওয়া যায়। চুল দ্রুত বড় করতে চাইছেন যাঁরা, তাঁরা দুধের পরিবর্তে এখন থেকে টক দই ব্যবহার করুন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সহজলভ্য এই ১০ খাবার থেকে পাবেন উচ্চমাত্রার ক্যালসিয়াম

ফিচার ডেস্ক
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

ক্যালসিয়াম শুধু হাড় ও দাঁত শক্ত রাখে না, এটি হৃদ্‌যন্ত্র, পেশির নড়াচড়া এবং স্নায়ুর সংকেত পাঠানোর ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। প্রাপ্তবয়স্কদের দৈনিক অন্তত এক হাজার মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম দরকার। তবে কিশোর-কিশোরী, মেনোপজোত্তর নারী এবং বয়স্কদের এর চেয়েও বেশি প্রয়োজন হয়।

যদিও দুধ, দই, পনির ইত্যাদি দুগ্ধজাত খাবার ক্যালসিয়ামের প্রধান উৎস, তবু অন্যান্য খাবারেও প্রচুর ক্যালসিয়াম পাওয়া যায়।

বীজ জাতীয় খাবার

এই খাবারগুলো পুষ্টিগুণে ভরপুর। তিল, চিয়া, পপি ও সেলারি বীজে প্রচুর ক্যালসিয়াম থাকে। যেমন—এক টেবিল চামচ পপিতে প্রায় ১২৭ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম থাকে। চিয়া বীজে থাকে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, যা হৃদ্‌যন্ত্র ও মস্তিষ্কের জন্য উপকারী।

ফর্টিফায়েড পানীয়

এ ধরনের পানীয়তে ক্যালসিয়াম বা অন্যান্য পুষ্টি উপাদান অতিরিক্ত যোগ করা থাকে। যেমন—এক কাপ সয়ামিল্কে দৈনিক ক্যালসিয়ামের প্রায় ২০ শতাংশ পাওয়া যায়, বাদাম দুধ বা ওট দুধেও প্রায় একই পরিমাণ থাকে। এক কাপ কমলালেবুর জুসে প্রায় ৩৫ শতাংশ ক্যালসিয়ামের চাহিদা পূরণ করা সম্ভব। এগুলো বিশেষভাবে হাড় ও দাঁতের স্বাস্থ্য বজায় রাখতে সাহায্য করে এবং যারা দুধ পান করতে পারে না বা ভেজান খাদ্যাভ্যাস অনুসরণ করে তাদের জন্য খুব ভালো বিকল্প।

চিজ

চিজ বা পনির দুধজাত খাবারের মধ্যে ক্যালসিয়ামে সবচেয়ে সমৃদ্ধ। পারমিজান চিজে এক আউন্সে থাকে প্রায় ২৪২ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম। শক্ত চিজে তুলনামূলক বেশি ক্যালসিয়াম থাকে, আর নরম চিজে কম। চিজে প্রোটিনও ভালো পরিমাণে থাকে এবং ল্যাকটোজ কম থাকায় অনেকের সহজে হজম হয়।

দই

এক কাপ দই শরীরের প্রতিদিন ক্যালসিয়ামের প্রায় ৩০ শতাংশ সরবরাহ করে। এটি প্রোবায়োটিকসেরও ভালো উৎস, যা হজমে সাহায্য করে ও রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ায়। লো-ফ্যাট দইয়ে ক্যালসিয়াম আরও বেশি থাকে, তবে গ্রিক দইয়ে তুলনামূলক কম।

ডাল ও শিম

ডাল, ছোলা ও শিমে ক্যালসিয়ামসহ ফাইবার, আয়রন ও ম্যাগনেসিয়াম থাকে। যেমন—এক কাপ রান্না করা ডালে প্রায় ৩৭ দশমিক ৬ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম থাকে। এগুলো রক্তে খারাপ কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে।

বাদাম

বাদাম ক্যালসিয়ামে ভরপুর ও হৃদ্‌রোগ ভালো রাখে এমন ফ্যাটে ভরপুর। ২৩টি বাদাম খেলে দৈনিক ক্যালসিয়ামের প্রায় ৮ শতাংশ পাওয়া যায়। এ ছাড়া এতে ফাইবার, ভিটামিন ‘ই’ ও ম্যাগনেসিয়ামও থাকে।

পাতাযুক্ত সবজি

পাতাযুক্ত সবজিতে ভালো পরিমাণ ক্যালসিয়াম আছে। এক কাপ রান্না করা পালংশাকে প্রায় ২৪৫ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম রয়েছে। তবে পালংশাকে অক্সালেট নামের উপাদান থাকায় এর ক্যালসিয়াম শরীরে কম শোষিত হয়।

ফর্টিফায়েড খাবার

ময়দা বা কর্নমিল ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ করে তৈরি করা হয়। এগুলোতে কখনো কখনো সারা দিনের ক্যালসিয়াম চাহিদা মেটায়। তবে একবারে বেশি না খেয়ে দিনে ভাগ করে খাওয়াই ভালো।

দুধ

ক্যালসিয়ামের সবচেয়ে সহজে পাওয়া যায় দুধে। এক কাপ দুধে ৩০৬–৩২৫ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম থাকে। ছাগলের দুধেও প্রায় একই পরিমাণ ক্যালসিয়াম রয়েছে। দুধে প্রোটিন, ভিটামিন ‘এ’ ও ‘ডি’ থাকায় এটি হাড়ের জন্য সম্পূর্ণ পুষ্টিকর খাবার।

ডুমুর

এটি এমন একটি ফল, যা শুকনো অবস্থায় ক্যালসিয়াম ও ফাইবারে সমৃদ্ধ। প্রায় ৪০ গ্রাম শুকনো ডুমুরে দৈনিক ক্যালসিয়ামের প্রয়োজনের প্রায় ৬ দশমিক ৫ শতাংশ পাওয়া যায়। এ ছাড়া এতে ভিটামিন ‘কে’ ও পটাশিয়ামও থাকে, যা হাড়ের স্বাস্থ্য এবং হৃদ্‌রোগ প্রতিরোধে সহায়ক। শুকনো ডুমুর নিয়মিত খাওয়া হাড় শক্ত রাখতে এবং হজমও ভালো রাখতে সাহায্য করে।

শুধু দুধ নয়, বীজ, বাদাম, মাছ, সবজি এবং ফর্টিফায়েড খাবার থেকেও পর্যাপ্ত ক্যালসিয়াম পাওয়া যায়। শরীরের হাড় ও দাঁত শক্ত রাখতে এবং পেশি ও স্নায়ুর কার্যক্রম ঠিক রাখতে প্রতিদিন সুষম খাদ্য থেকে ক্যালসিয়াম গ্রহণ করা জরুরি। খাবারের বিষয়ে সচেতনাই পারে আপনাকে সুস্থ জীবন দিতে।

সূত্র: হেলথলাইন

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ওষুধ ছাড়াই উচ্চ রক্তচাপ রাখুন নিয়ন্ত্রণে

ফিচার ডেস্ক
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

উচ্চ রক্তচাপ বা হাইপারটেনশন একটি গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যা। জীবনযাত্রার কিছু পরিবর্তন এনে ওষুধ ছাড়াই এটিকে নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। মায়ো ক্লিনিকের তথ্য অনুযায়ী, জীবনযাত্রার এই পরিবর্তনগুলো আপনার রক্তচাপ কমাতে এবং হৃদ্‌রোগের ঝুঁকি কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। ইব্রাহিম মেডিকেল কলেজের মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক এ কে এম মূসা বলেন, সময়মতো উচ্চ রক্তচাপ নির্ণয় ও চিকিৎসা না হলে হার্ট অ্যাটাক কিংবা স্ট্রোকের মতো মারাত্মক স্বাস্থ্য সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। অনেক প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ এতে ভুগলেও তা জানেন না। বিশ্বব্যাপী প্রতি তিনজনে একজন উচ্চ রক্তচাপে ভোগেন। কিন্তু কোনো লক্ষণ থাকে না বলে তাঁরা তা জানেন না।

ওজন নিয়ন্ত্রণ ও নিয়মিত ব্যায়াম

ওজন বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রক্তচাপ বাড়ে। প্রতি ১ কিলোগ্রাম বা প্রায় ২ দশমিক ২ পাউন্ড ওজন কমালে রক্তচাপ প্রায় ১ মিলিমিটার পারদ চাপ কমতে পারে। কোমরের মাপও গুরুত্বপূর্ণ: পুরুষদের ক্ষেত্রে ৪০ ইঞ্চি (১০২ সেমি) এবং নারীদের ক্ষেত্রে ৩৫ ইঞ্চির (৮৯ সেমি) বেশি হলে ঝুঁকি বাড়ে। তবে মনে রাখবেন, এই মাপ বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর ক্ষেত্রে ভিন্ন হতে পারে। নিয়মিত অ্যারোবিক ব্যায়াম যেমন হাঁটা, সাঁতার ও সাইক্লিং রক্তচাপকে ৫ থেকে ৮ মিলিমিটার পারদ চাপ কমাতে পারে। প্রতিদিন কমপক্ষে ৩০ মিনিট মাঝারি ধরনের শারীরিক কার্যকলাপের লক্ষ্য রাখুন। সপ্তাহে অন্তত দুদিন শক্তি প্রশিক্ষণ অন্তর্ভুক্ত করুন। এ বিষয়ে এ কে এম মূসা জানান, চিকিৎসকের পরামর্শে প্রতিদিন কিছু ব্যায়াম করতে হবে। যেমন ৩০ মিনিট জোরে হাঁটা, সাঁতার কাটা ইত্যাদি।

স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস

ফল, সবজি, শস্যদানা ও কম চর্বিযুক্ত দুগ্ধজাত পণ্যে সমৃদ্ধ একটি খাদ্যাভ্যাস রক্তচাপ ১১ মিলিমিটার পারদ চাপ পর্যন্ত কমাতে পারে। খাদ্যে পটাশিয়াম অন্তর্ভুক্ত করা লবণের প্রভাব কমাতে সাহায্য করে। দিনে ৩ হাজার ৫০০ থেকে ৫ হাজার মিলিগ্রাম পটাশিয়াম গ্রহণের লক্ষ্য রাখুন; যা রক্তচাপ ৪ থেকে ৫ মিলিমিটার পারদ চাপ কমাতে পারে। এ বিষয়ে এ কে এম মূসা লাল মাংস ও চর্বিযুক্ত খাবার বর্জন করার পরামর্শ দেন।

লবণ বা সোডিয়াম কমানো

খাদ্যে সামান্য সোডিয়াম কমালে হৃদ্‌যন্ত্রের স্বাস্থ্যের উন্নতি হয়। বেশির ভাগ প্রাপ্তবয়স্কের জন্য দিনে ১ হাজার ৫০০ মিলিমিটারের কম সোডিয়াম গ্রহণ করা আদর্শ, যা রক্তচাপ ৫ থেকে ৬ মিলিমিটার পারদ চাপ কমাতে পারে। প্রক্রিয়াজাত খাবার এড়িয়ে চলুন এবং রান্নায় লবণের বদলে মসলা ব্যবহার করুন। খাদ্যে লবণের পরিমাণ কমিয়ে দিন এবং অত্যধিক লবণাক্ত খাবার বাদ দিন।

ধূমপান ত্যাগ করা

ধূমপান রক্তচাপ বাড়ায়। এটি ত্যাগ করলে রক্তচাপ কমে আসে এবং হৃদ্‌রোগের ঝুঁকি ও সার্বিক স্বাস্থ্য উন্নত হয়।

পর্যাপ্ত ঘুম ও চাপ কম নিন

প্রতি রাতে ৭ থেকে ৯ ঘণ্টা ঘুমানো উচিত। ঘুমের অভাব, যেমন স্লিপ অ্যাপনিয়া বা অনিদ্রা উচ্চ রক্তচাপের কারণ হতে পারে। ঘুমের একটি নির্দিষ্ট সময়সূচি তৈরি করুন এবং শোওয়ার ঘর শান্ত, অন্ধকার ও শীতল রাখুন। এ কে এম মূসা পরামর্শ দেন, প্রতিদিন কমপক্ষে ৬ থেকে ৮ ঘণ্টা ঘুমানোর অভ্যাস করুন। দীর্ঘস্থায়ী মানসিক চাপ উচ্চ রক্তচাপের একটি কারণ হতে পারে। নিজের চাপের উৎসগুলো চিহ্নিত করুন এবং সেগুলোর মোকাবিলা করার উপায় খুঁজুন। প্রতিদিন শান্তভাবে বসে গভীরভাবে শ্বাস নেওয়া বা পছন্দের কাজ করার জন্য সময় বের করুন।

কোলেস্টেরল ও রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণ

উচ্চ কোলেস্টেরল ও রক্তে উচ্চ শর্করা হৃদ্‌রোগের ঝুঁকি বাড়ায়। রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের জন্য যে স্বাস্থ্যকর অভ্যাসগুলো, যেমন স্বাস্থ্যকর খাবার, ব্যায়াম, ওজন কমানো এবং ধূমপান ত্যাগ অনুসরণ করছেন, সেগুলোই কোলেস্টেরল ও রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করবে। এ পরিবর্তনগুলো দীর্ঘমেয়াদি, তাই প্রয়োজন হলে পরিবার বা বন্ধুদের সহযোগিতা নিতে দ্বিধা করবেন না।

চিকিৎসকের পরামর্শে করণীয়

অধ্যাপক এ কে এম মূসা উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়ার বিষয়ে কিছু পরামর্শ দেন।

চিকিৎসকের চেম্বার ও বাসায় পরপর কয়েক দিন রক্তচাপ মেপে যদি ১৪০/৯০-এর বেশি পাওয়া যায়, তাহলে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে।

ইউরিন আর/ই, সেরাম ইউরিয়া, ক্রিয়েটিনিন ও সুগার প্রোফাইল টেস্ট করতে হবে।

চিকিৎসক নির্দেশিত ওষুধ নিয়মিত সেবন করুন।

কমপক্ষে সপ্তাহে এক দিন রক্তচাপ মেপে লিখে রাখুন। মানসিক চাপ কমিয়ে ফেলুন এবং ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি নিন।

হাই কোলেস্টেরল থাকলে খাবার নিয়ন্ত্রণ করুন এবং ওষুধ সেবন করুন।

ডায়াবেটিস থাকলে খাদ্যাভ্যাস, ব্যায়াম ও ওষুধের মাধ্যমে কন্ট্রোল রাখুন।

সূত্র: মায়ো ক্লিনিক

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আজকের রাশিফল: সহকর্মীকে জ্ঞান দিতে যাবেন না, প্রাপ্তিযোগে বাল্যকালের প্রেমপত্র

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০১ নভেম্বর ২০২৫, ০৯: ৫৪
আজকের রাশিফল: সহকর্মীকে জ্ঞান দিতে যাবেন না, প্রাপ্তিযোগে বাল্যকালের প্রেমপত্র

মেষ

আজ আপনার এনার্জি লেভেল দেখলে মনে হবে ভুল করে চায়ের বদলে ডাবল এসপ্রেসো খেয়ে ফেলেছেন। দিনের শুরুটা দুর্দান্ত! কিন্তু উত্তেজনা এত বেশি থাকবে যে অফিসে যাওয়ার পথে চারবার হোঁচট খাবেন। আপনার স্বাস্থ্য বলছে: ‘শান্ত হও, ওহে মেষ!’ অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস নিয়ে কাউকে জ্ঞান দিতে যাবেন না। কারণ, তিনি পাল্টা এমন তথ্য দেবেন, যা গুগলেও পাবেন না। সন্ধ্যায় প্রিয়জনের কাছ থেকে একটি অপ্রত্যাশিত চমক পাবেন। যদিও সেটা হয়তো হবে গত জন্মদিনের উপহারের র‍্যাপার।

বৃষ

বৃষ রাশি, গ্রহ-নক্ষত্র আজ আপনাকে বলছে—বিতর্ক এড়িয়ে চলুন। বিশেষ করে সেই আড্ডার জায়গাগুলো, যেখানে কেউ একজন ‘আপনার সম্মান নিয়ে’ প্রশ্ন তুলতে পারে। অর্থাৎ আজ আপনি অফিসের ক্যানটিন, বন্ধুর বাড়ি এবং শ্বশুরবাড়ি—সব জায়গায় ‘সিক্রেট এজেন্ট অব অকোয়ার্ডনেস’-এর ভূমিকা পালন করবেন। আর্থিক দিক থেকে আজ স্থিতিশীল। তবে অনলাইনে কিছু কেনার আগে দুবার ভাবুন। দরকার নেই, শুধু ‘অন্য লোকেরা কী কিনছে’ দেখতে গিয়ে আপনি হয়তো একটা স্পেচুলা কিনতে গিয়ে ফ্রিজ কিনে ফেলতে পারেন।

মিথুন

আপনার বুদ্ধিমত্তা আজ দারুণ কাজ করবে, তবে মন এত দ্রুত চলবে যে মুখটা মাঝেমধ্যে পিছিয়ে পড়বে। ফলস্বরূপ আপনি এক কথা বলতে গিয়ে অন্য কথা বলে ফেলবেন, আর লোকে ভাববে—আপনি বোধ হয় কবিতা বলছেন! কর্মস্থলে পদোন্নতির ইঙ্গিত আছে, যদি না সহকর্মীর কফির মগে ভুল করে লবণ দিয়ে দেন। বিকেলের দিকে প্রাপ্তিযোগের সম্ভাবনা, যা হয়তো একটা পুরোনো লটারির টিকিট বা ছোটবেলার একটি বাতিল হওয়া প্রেমপত্র। নিষ্ঠা ও ভদ্রতা বজায় রাখুন, বিশেষ করে চিপস খাওয়ার সময়।

কর্কট

আজকের দিনটি আপনার জন্য ঠিক মাঝামাঝি—না ভালো, না খারাপ। গ্রহরা আপনাকে এক অদ্ভুত মিশ্র ফল দিয়েছে। মনে হবে আপনি যেন একটি পুরোনো সাদাকালো সিনেমার শেষ ১০ মিনিট দেখছেন—কী হবে, তা জানা আছে, তবু মন অস্থির। দিনের বেলা সামান্য বিষয়ে গভীর চিন্তা করার প্রবণতা বাড়বে; যেমন ‘পাউরুটি কেন স্লাইস করা হয়?’ এই ধরনের প্রশ্ন নিয়ে সারা দিন মাথা ঘামাবেন। রাতে পরিবারের সঙ্গে সময় কাটান। এতে চিন্তাগুলো হয়তো পাউরুটি থেকে সরে এসে অন্তত ডিম-পরোটার দিকে যাবে।

সিংহ

সিংহ মশাই, আজ আপনি রাজকীয় মেজাজে থাকবেন। নিজেকে জাহির করার একটা প্রবল ইচ্ছা জাগতে পারে। পারিবারিক চাপ থাকবে, তবে সেটা এমন ছোটখাটো হবে যেন একটা মশার কামড়। সেটাকে গর্জন দিয়ে উড়িয়ে দিতে সক্ষম হবেন। পরিবারের সদস্যদের প্রতি যত্ন নিন—আর যত্ন নেওয়ার মানে এই নয় যে জোর করে তাদের ডায়েট চার্ট বানিয়ে দেবেন। কাজের ক্ষেত্রে আপনার নেতৃত্ব প্রশংসিত হবে। তবে মনে রাখবেন, অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস আপনাকে কোনো গর্তে ফেলে দিতে পারে। তাই ‘আমি সব জানি’ বলার আগে একবার উইকিপিডিয়া চেক করে নেবেন।

কন্যা

আজ কাঁধে নতুন কাজের দায়িত্ব আসতে পারে। সেই দায়িত্ব হয়তো হবে অফিসে ফালতু ফাইলগুলো গুছিয়ে রাখার। কিন্তু তাতেও নিখুঁতভাবে বিশ্বের সেরা ‘ফাইল অর্গানাইজার’ হওয়ার চেষ্টা করবেন। পরিবারে আজ সংযত থাকুন। বিশেষ করে যদি পার্টনারের আলমারি বা ঘর গোছানোর ইচ্ছা আপনার মনে জাগে। নিয়ন্ত্রণ করার স্বভাবটি আজ মধুর সম্পর্ককে তিক্ত করে দিতে পারে। দিনের শেষে সবকিছু পারফেক্ট না হলেও চলবে—এ সত্যটি মেনে নেওয়াই আজকের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। মোবাইল স্ক্রিন পরিষ্কার রাখুন।

তুলা

আপনার ভাগ্যে আজ আনন্দের জোয়ার। বস আপনার ওপর এতটা খুশি হবেন যে পদোন্নতি নিয়ে আলোচনা হতে পারে। চার্ম আজ তুঙ্গে থাকবে। কিন্তু গ্রহরা একটি অদ্ভুত সতর্কবার্তা দিয়েছে: ‘নারী বন্ধুদের থেকে কিছুটা দূরত্ব বজায় রাখুন।’ কেন? কেউ জানে না! সম্ভবত তারা আপনাকে এত পার্টি দিতে বলবে যে ব্যাংক ব্যালেন্সের বারোটা বাজবে। বকেয়া টাকা হাতে আসতে পারে, যা দেখে আনন্দে লাফালাফি করতে পারেন। কিন্তু সাবধান, লাফানোর সময় যেন পুরোনো কোনো আসবাবে ধাক্কা না লাগে। স্ত্রীর কাছ থেকে সারপ্রাইজ পাবেন।

বৃশ্চিক

বৃশ্চিক, আজ আপনার হৃদয়ে গভীর চিন্তাভাবনার খেলা চলবে। সামান্য কারণে আজ একটু বেশিই ইন্টেন্স হয়ে উঠবেন। কেউ হয়তো বলবে, ‘আরে, চা-টা ঠান্ডা হয়ে গেল!’ আর আপনি ভাববেন, ‘এর পেছনে কি কোনো গভীর ষড়যন্ত্র লুকিয়ে আছে?’ আত্মবিশ্বাস আজ আপনার শক্তি। তবে এটা যেন অহংকারে পরিণত না হয়। মনে রাখবেন, আবেগ নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা আজ আপনাকে অনেক বড় সমস্যা থেকে বাঁচাবে। কিন্তু যদি নিয়ন্ত্রণ করতে না পারেন, তবে অন্তত একটি মজার অজুহাত তৈরি রাখুন।

ধনু

ধনু রাশি, আজ আর্থিক সাফল্য আপনার কদম চুম্বন করবে। টাকা আসবে, তবে তার মানে এই নয় যে আপনি আজই একটি রকেট কিনে চাঁদে চলে যাবেন। পেশা সম্পর্কিত ভ্রমণের ইঙ্গিত আছে। কিন্তু এটি সম্ভবত কোনো দূরবর্তী, অপরিচিত ব্রাঞ্চে হবে, যেখানে আপনাকে ‘অসহযোগিতার প্রতীক’ পুরস্কার দেওয়া হতে পারে। আপনার উৎসাহ আজ অন্যদের অনুপ্রাণিত করবে। তবে কথা বলার সময় একটু সংযত থাকুন, নইলে আপনার অতি উৎসাহ অন্যদের কাছে ‘বকবক’ বলে মনে হতে পারে। সন্ধ্যায় সেই টাকা দিয়ে কিছু একটা করুন, যা মনকে শান্তি দেবে; যেমন কাউকে পেট ভরে ফুচকা খাইয়ে দিন।

মকর

গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় আজ। মন আর মস্তিষ্ক, দুটোকেই কাজে লাগান। কিন্তু মনে রাখবেন, হয়তো ভাবছেন জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন, কিন্তু আদতে আপনি শুধু ঠিক করছেন কোন রঙের জামা পরে অফিস যাবেন। অর্থের ক্ষেত্রে আজ কিছুটা স্বস্তি পাবেন। মানসিক ক্লান্তি দূর করতে ধ্যান করুন বা শান্ত সংগীত শুনুন। অথবা সবচেয়ে ভালো হয়, যদি সব কাজ অন্যদের ওপর চাপিয়ে দিতে পারেন এবং নিজে চুপচাপ ঘুমাতে পারেন! মনে রাখবেন, শৃঙ্খলা বজায় রাখা ভালো, কিন্তু অতিরিক্ত শৃঙ্খলা মানুষকে বিরক্ত করে। আজ অন্তত কাজের বাইরে একবার হাসুন।

কুম্ভ

কুম্ভ, আজ আপনার আর্থিক বিষয়গুলো ধীরে ধীরে ভালো হবে। পুরোনো জিনসের পকেটে কিছু টাকা খুঁজে পেলে সেটাকেই আজকের ‘আর্থিক সাফল্য’ বলে ধরে নিতে হবে। দ্রুত ইতিবাচক পরিবর্তন আশা করুন, তবে সেই পরিবর্তনটা হয়তো হবে ফ্রিজের আলো ঠিক হয়ে যাওয়া। প্রিয়জনের সঙ্গে আজ স্মরণীয় মুহূর্ত কাটাবেন। আর সেই স্মরণীয় মুহূর্তটি হতে পারে দুজনের মধ্যে হওয়া একটি নীরব প্রতিযোগিতা—কে কার আগে ঘুমিয়ে পড়তে পারে। সহকর্মীদের সঙ্গে সহযোগিতা বজায় রাখুন। কারণ, তারা না থাকলে আপনার কাজের চাপ বেড়ে যাবে। সব কাজ শেষ করে তাড়াতাড়ি বাড়ি ফিরুন।

মীন

মীন রাশি, আজ আপনার মন ও মস্তিষ্ক দুটিই একে অপরের সঙ্গে ঝগড়া শুরু করবে। আপনার ভেতরের জগতে চলছে চরম মারামারি, আর বাইরের জগতে হাসিমুখে সবার সঙ্গে কথা বলছেন—আপনার মতো ভালো অভিনেতা আর কেউ নেই! কিছু পুরোনো জিনিস মনকে বিরক্ত করতে পারে; যেমন ১০ বছর আগে কেন ওই লাল শার্টটা কিনেছিলেন? সন্ধ্যার মধ্যে অবশ্য সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে। কারণ, ক্ষুধা পেলে মানুষ সব ঝগড়া ভুলে যায়। পরীক্ষায় শুভ ফলের আশা করতে পারেন, যদি না আপনি উত্তর লেখার বদলে পরীক্ষার খাতায় কবিতা লিখে আসেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত