ছোটবেলায় দুঃখ কী জিনিস, বুঝতেন না। শুধু দেখতেন, বাবা কাজ থেকে ফিরে বসে থাকেন নিঃশব্দে। মা নিজের শাড়ির আঁচল কেটে বস্ত্র বানাতে বসে যেতেন, যেন কিছুই হয়নি। বুঝতেন না অভাব কাকে বলে, ভাঙা ঘরের নীরবতা কেন এত ভারী। তবে একটা জিনিস জানতেন, মায়ের মুখের হাসিই একমাত্র সুখ। সেই হাসিকে চিরস্থায়ী করতে ছুটে চলা। সময়ের স্রোতে হয়ে ওঠেন একজন সরকারি কর্মী। নিজের এই ছোট্ট সফলতার গল্প জানিয়েছেন ভূমি জরিপ কর্মকর্তা তাসফীর ইসলাম ইমরান।
তাসফীর ইসলাম ইমরান
শুরুটা হয়েছিল মায়ের হাত ধরে। স্কুলে যাওয়ার আগেই শিখেছেন বর্ণমালা, দোয়া, সুরা। মা পাশে বসে জেগে থাকতেন রাতভর, চোখে ছিল একটিই স্বপ্ন—‘আমার ছেলে মানুষের মতো মানুষ হবে।’
পথ হারিয়েও ঘুরে দাঁড়ালেন
পিএসসিতে ভালো ফল করে গ্রামের মানুষের প্রশংসা কুড়িয়েছিলেন ইমরান। কিন্তু মাধ্যমিকে এসে হারিয়ে ফেলেন পথ। বন্ধুবান্ধব, অসংগত সঙ্গ, অনিয়ম—সব মিলিয়ে চারপাশে ধীরে ধীরে তৈরি হয় ব্যর্থতার দেয়াল। একসময় মায়ের ওপরও এসে পড়ে অপমানের ছায়া। গ্রামের এক বৃদ্ধ মুখের ওপর বলে দেন—‘এই ছেলেকে দিয়ে কিছু হবে না।’ সেই রাতে চুপচাপ কাঁদছিলেন ইমরানের মা। আর সেই কান্নার শব্দ বুকের ভেতরে আগুন লাগিয়ে দেয় তার। ঘুরে দাঁড়ানোর শপথ নিয়ে জেএসসিতে গোল্ডেন জিপিএ ফাইভ পান। এরপর এসএসসি, এইচএসসি পেরিয়ে পা রাখেন শহরে। পড়াশোনার প্রয়োজনে বাড়ি ছাড়ার দিন মায়ের চোখে ছিল আশঙ্কার ছায়া।
মায়ের প্রত্যাশা
ইঞ্জিনিয়ারিং শেষে এক চায়নিজ প্রকল্প থেকে আসে চাকরির প্রস্তাব। ভালো বেতন, নিশ্চিন্ত জীবন। বাড়ির অভাব ঘোচানোর আশায় যখন মাকে জানালেন চাকরির সিদ্ধান্ত, মা শুধু বলেছিলেন—‘তুই সরকারি অফিসার হলেই আমাদের সব কষ্ট শেষ হবে। তোর বাবার স্বপ্ন তুই পূরণ কর।’ সেই মুহূর্তে ভেতরে একটা প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছিল—আমি কি পারব?
পরীক্ষার পর পরীক্ষা
২০২৩ সালের শেষ দিকে শুরু হয় সেই যুদ্ধ। এলজিইডি, পানি উন্নয়ন বোর্ড, রাজউক, রেলওয়ে, ভূমি—সব জায়গায় পরীক্ষা দিচ্ছেন, ফল মিলছে না। কখনো প্রিলিতে বাদ, কখনো লিখিত বা ভাইভায়। একটা একটা করে পরীক্ষা দিয়ে বাড়ি ফিরতেন চোখে জল আর বুকে ব্যথা নিয়ে। পরিবার চুপচাপ। বন্ধুরা দূরে। সমাজে একটা প্রশ্নই কাঁটার মতো বেঁধে—‘কী করিস?’ দিনের বেলা বাড়ির বাইরে যেতেন না, সন্ধ্যার অন্ধকারে হাঁটতেন যেন কেউ চিনতে না পারে। ভালোবাসার মানুষটিও হারিয়ে যায়।
কাঙ্ক্ষিত সেই দিন
তবু হাল ছাড়েননি। প্রতিটি রমজানে মা যে দোয়া করতেন, সেই দোয়ার প্রতীক্ষায় থাকতেন ইমরান। অবশেষে সে দিন এল—২০২৪ সালের ১ এপ্রিল, রমজানের ২১তম দিনে। প্রকাশিত হলো বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের চূড়ান্ত ফল। মেধাক্রম ৩—সুপারিশপ্রাপ্ত! নিজের রোল নম্বর তিনবার মিলিয়ে দেখেছেন। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় মাকে ফোন করলেন—‘মা, চাকরিটা পেয়ে গেছি।’ ওপাশে দীর্ঘ নিশ্বাস। তারপর কাঁপা গলায় মা বললেন—‘বাবা... চোখের পানি তো আর আটকে রাখা যায় না।’
সফলতার পেছনে মা-বাবা
ইমরান জানেন, এ চাকরি শুধু তাঁর নয়। এ চাকরি, সেই রমজানের প্রতিটি রাতে করা মায়ের দোয়ার ফসল। বাবার উপোস দিন, আর ঘামে ভেজা রাতের ফসল। তাঁর একলা কান্নার বিনিময়। ২০২৪ সালের পর ২০২৫ সাল এল আরও বড় আশীর্বাদ হয়ে। মে মাসের শেষ দিকে মাত্র ১৫ দিনের ব্যবধানে পেলেন তিনটি সরকারি নিয়োগপত্র—ভূমি মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড এবং ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড থেকে। পাশাপাশি সুপারিশপ্রাপ্ত হলেন বাংলাদেশ রেলওয়েতেও।
আজ তিনি দাঁড়িয়ে আছেন একটি সরকারি ভবনের করিডরে। গলায় ঝুলছে সেই বহুপ্রতীক্ষিত আইডি কার্ড। মা-বাবার চোখে এখন গর্বের আলো। তবু থেমে থাকার সময় নয়। যুদ্ধ এখনো বাকি। কারণ বাবার স্বপ্ন এখানেই থেমে নেই। তবু আজ বুকভরে বলতে পারেন—‘মা শুনছ? তোমার সেই ছেলেটা অবশেষে চাকরিটা পেয়ে গেছে।’
শুরুটা হয়েছিল মায়ের হাত ধরে। স্কুলে যাওয়ার আগেই শিখেছেন বর্ণমালা, দোয়া, সুরা। মা পাশে বসে জেগে থাকতেন রাতভর, চোখে ছিল একটিই স্বপ্ন—‘আমার ছেলে মানুষের মতো মানুষ হবে।’
পথ হারিয়েও ঘুরে দাঁড়ালেন
পিএসসিতে ভালো ফল করে গ্রামের মানুষের প্রশংসা কুড়িয়েছিলেন ইমরান। কিন্তু মাধ্যমিকে এসে হারিয়ে ফেলেন পথ। বন্ধুবান্ধব, অসংগত সঙ্গ, অনিয়ম—সব মিলিয়ে চারপাশে ধীরে ধীরে তৈরি হয় ব্যর্থতার দেয়াল। একসময় মায়ের ওপরও এসে পড়ে অপমানের ছায়া। গ্রামের এক বৃদ্ধ মুখের ওপর বলে দেন—‘এই ছেলেকে দিয়ে কিছু হবে না।’ সেই রাতে চুপচাপ কাঁদছিলেন ইমরানের মা। আর সেই কান্নার শব্দ বুকের ভেতরে আগুন লাগিয়ে দেয় তার। ঘুরে দাঁড়ানোর শপথ নিয়ে জেএসসিতে গোল্ডেন জিপিএ ফাইভ পান। এরপর এসএসসি, এইচএসসি পেরিয়ে পা রাখেন শহরে। পড়াশোনার প্রয়োজনে বাড়ি ছাড়ার দিন মায়ের চোখে ছিল আশঙ্কার ছায়া।
মায়ের প্রত্যাশা
ইঞ্জিনিয়ারিং শেষে এক চায়নিজ প্রকল্প থেকে আসে চাকরির প্রস্তাব। ভালো বেতন, নিশ্চিন্ত জীবন। বাড়ির অভাব ঘোচানোর আশায় যখন মাকে জানালেন চাকরির সিদ্ধান্ত, মা শুধু বলেছিলেন—‘তুই সরকারি অফিসার হলেই আমাদের সব কষ্ট শেষ হবে। তোর বাবার স্বপ্ন তুই পূরণ কর।’ সেই মুহূর্তে ভেতরে একটা প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছিল—আমি কি পারব?
পরীক্ষার পর পরীক্ষা
২০২৩ সালের শেষ দিকে শুরু হয় সেই যুদ্ধ। এলজিইডি, পানি উন্নয়ন বোর্ড, রাজউক, রেলওয়ে, ভূমি—সব জায়গায় পরীক্ষা দিচ্ছেন, ফল মিলছে না। কখনো প্রিলিতে বাদ, কখনো লিখিত বা ভাইভায়। একটা একটা করে পরীক্ষা দিয়ে বাড়ি ফিরতেন চোখে জল আর বুকে ব্যথা নিয়ে। পরিবার চুপচাপ। বন্ধুরা দূরে। সমাজে একটা প্রশ্নই কাঁটার মতো বেঁধে—‘কী করিস?’ দিনের বেলা বাড়ির বাইরে যেতেন না, সন্ধ্যার অন্ধকারে হাঁটতেন যেন কেউ চিনতে না পারে। ভালোবাসার মানুষটিও হারিয়ে যায়।
কাঙ্ক্ষিত সেই দিন
তবু হাল ছাড়েননি। প্রতিটি রমজানে মা যে দোয়া করতেন, সেই দোয়ার প্রতীক্ষায় থাকতেন ইমরান। অবশেষে সে দিন এল—২০২৪ সালের ১ এপ্রিল, রমজানের ২১তম দিনে। প্রকাশিত হলো বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের চূড়ান্ত ফল। মেধাক্রম ৩—সুপারিশপ্রাপ্ত! নিজের রোল নম্বর তিনবার মিলিয়ে দেখেছেন। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় মাকে ফোন করলেন—‘মা, চাকরিটা পেয়ে গেছি।’ ওপাশে দীর্ঘ নিশ্বাস। তারপর কাঁপা গলায় মা বললেন—‘বাবা... চোখের পানি তো আর আটকে রাখা যায় না।’
সফলতার পেছনে মা-বাবা
ইমরান জানেন, এ চাকরি শুধু তাঁর নয়। এ চাকরি, সেই রমজানের প্রতিটি রাতে করা মায়ের দোয়ার ফসল। বাবার উপোস দিন, আর ঘামে ভেজা রাতের ফসল। তাঁর একলা কান্নার বিনিময়। ২০২৪ সালের পর ২০২৫ সাল এল আরও বড় আশীর্বাদ হয়ে। মে মাসের শেষ দিকে মাত্র ১৫ দিনের ব্যবধানে পেলেন তিনটি সরকারি নিয়োগপত্র—ভূমি মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড এবং ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড থেকে। পাশাপাশি সুপারিশপ্রাপ্ত হলেন বাংলাদেশ রেলওয়েতেও।
আজ তিনি দাঁড়িয়ে আছেন একটি সরকারি ভবনের করিডরে। গলায় ঝুলছে সেই বহুপ্রতীক্ষিত আইডি কার্ড। মা-বাবার চোখে এখন গর্বের আলো। তবু থেমে থাকার সময় নয়। যুদ্ধ এখনো বাকি। কারণ বাবার স্বপ্ন এখানেই থেমে নেই। তবু আজ বুকভরে বলতে পারেন—‘মা শুনছ? তোমার সেই ছেলেটা অবশেষে চাকরিটা পেয়ে গেছে।’
সম্প্রতি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে ক্ষুদ্রঋণ প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান আশা (এনজিও সংস্থা)। সংস্থাটি সিনিয়র আইটি সিকিউরিটি ইঞ্জিনিয়ার পদে কর্মী নিয়োগ দেবে।
৩ ঘণ্টা আগেসম্প্রতি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে বেসরকারি প্রিমিয়ার ব্যাংক পিএলসি। প্রতিষ্ঠানটি ম্যানেজমেন্ট ট্রেইনি অফিসার (এমটিও) পদে কর্মী নিয়োগ নেবে। গতকাল ২৪ জুন থেকেই আবেদন নেওয়া শুরু হয়েছে। আবেদন করা যাবে আগামী ১০ জুলাই পর্যন্ত। আগ্রহী প্রার্থীরা অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন।
৫ ঘণ্টা আগেনিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের আওতাধীন সুনামগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি। ২২ জুন থেকে আবেদন নেওয়া শুরু হয়েছে। আবেদন করা যাবে আগামী ১৩ জুলাই পর্যন্ত।
৫ ঘণ্টা আগেবাংলাদেশ পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ডের প্রতিষ্ঠান নর্থ-ওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি লিমিটেডে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির একটি শূন্য পদে ২৮ জনকে নিয়োগ দেওয়া হবে। আগ্রহী ও যোগ্য প্রার্থীরা আবেদন করতে পারবেন।
৭ ঘণ্টা আগে