Ajker Patrika

নতুন ম্যানেজারের নেতৃত্বদানের প্রথম ১০০ দিন

চাকরি ডেস্ক 
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

প্রথমবারের মতো ম্যানেজারের দায়িত্ব পাওয়াটা যেমন উত্তেজনাপূর্ণ, তেমনি চ্যালেঞ্জিংও। আপনার কাঁধে রয়েছে দল ও প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য পূরণের গুরুদায়িত্ব। এই নতুন ভূমিকার প্রথম ১০০ দিন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এ সময়ে আপনি আপনার নেতৃত্বশৈলীর ভিত্তি তৈরি করবেন এবং দলের আস্থা অর্জন করবেন। চলুন একনজরে দেখা নেওয়া যাক, নতুন ম্যানেজারের জন্য কার্যকর কিছু কৌশল, যা তাঁর গুরুত্বপূর্ণ এ সময় সফলভাবে অতিক্রম করতে সাহায্য করবে।

শোনার ওপর জোর দিন

দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই কোনো বড় পরিবর্তন আনার চেষ্টা করবেন না। বরং প্রথম কয়েকটি দিন দলের সদস্যদের কথা মন দিয়ে শুনুন। তাঁদের কাজের প্রক্রিয়া, চ্যালেঞ্জ এবং প্রত্যাশা সম্পর্কে জানতে চান। প্রত্যেকের সঙ্গে আলাদাভাবে কথা বলুন এবং বোঝার চেষ্টা করুন তাঁরা কর্মক্ষেত্রে কী চান। একটি টিমের প্রধান হিসেবে আপনার প্রাথমিক কাজ হলো তাঁদের প্রয়োজনগুলো বোঝা। এটি আপনার জন্য একধরনের ‘ইনসাইট’ সংগ্রহ, যা আপনাকে ভবিষ্যতে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করবে।

ব্যক্তিগত সম্পর্ক তৈরি করুন: ভালো নেতৃত্ব শুধু পেশাদারত্বের ওপর নির্ভর করে না, ব্যক্তিগত সম্পর্কের ওপরও নির্ভর করে। আপনার দলের প্রত্যেক সদস্যের সঙ্গে একটি ইতিবাচক সম্পর্ক স্থাপন করুন। তাঁদের আগ্রহ, শখ ও পেশাগত লক্ষ্য সম্পর্কে জানুন। তাঁদের ব্যক্তিগত অর্জন বা গুরুত্বপূর্ণ দিনগুলোতে শুভেচ্ছা জানান। এই ছোট ছোট পদক্ষেপ দলের মধ্যে বিশ্বাস ও বোঝাপড়ার একটি মজবুত ভিত্তি তৈরি করবে।

নিজের প্রত্যাশা স্পষ্ট করুন

প্রথম ১০০ দিনের মধ্যেই দলের কাছে আপনার প্রত্যাশাগুলো পরিষ্কারভাবে তুলে ধরুন। আপনি দলের কাছ থেকে কী ধরনের পারফরম্যান্স আশা করেন, কাজের গুণগত মান কেমন হবে এবং কীভাবে একে অপরের সঙ্গে যোগাযোগ করবেন—এ বিষয়গুলো স্পষ্ট করে দিন। যখন প্রত্যাশাগুলো পরিষ্কার থাকে, তখন ভুল-বোঝাবুঝির আশঙ্কা কমে যায় এবং সবাই একটি নির্দিষ্ট লক্ষ্যে কাজ করতে পারেন।

ছোট সাফল্য উদ্‌যাপন করুন

বড় কোনো লক্ষ্য অর্জনের জন্য অপেক্ষা না করে ছোট সাফল্যগুলো উদ্‌যাপন করুন। এটি দলের মনোবল বাড়ায় এবং তাঁদের আরও ভালো কাজ করতে উৎসাহিত করে। হতে পারে কোনো একটি ছোট প্রজেক্ট সময়মতো শেষ হয়েছে অথবা একজন সদস্য কোনো কঠিন সমস্যার সমাধান করতে পেরেছেন। এ ধরনের অর্জনগুলোকে স্বীকৃতি দিন। এটি কেবল একজন ব্যক্তির আত্মবিশ্বাসই বাড়ায় না, বরং পুরো দলের মধ্যেও ইতিবাচক শক্তি জোগায়।

সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে সামঞ্জস্য বজায় রাখুন: নেতৃত্বের প্রথম ১০০ দিনে আপনার নেওয়া প্রতিটি সিদ্ধান্ত দলের সদস্যরা নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করবেন। তাই সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে ধারাবাহিকতা ও সামঞ্জস্য বজায় রাখা খুব জরুরি। আপনার সিদ্ধান্তের পেছনে কী যুক্তি রয়েছে, তা দলের সঙ্গে আলোচনা করুন। পক্ষপাতিত্ব এড়িয়ে চলুন এবং নিশ্চিত করুন যে আপনার সিদ্ধান্তগুলো নিরপেক্ষ ও ন্যায্য। এতে আপনার নেতৃত্বের প্রতি দলের বিশ্বাস আরও বাড়বে।

প্রতিক্রিয়া দেওয়ার অভ্যাস করুন

একজন নেতা হিসেবে আপনার কাজ শুধু অন্যদের কাজের প্রতিক্রিয়া দেওয়া নয়; বরং অন্যদের কাছ থেকে প্রতিক্রিয়া নেওয়ার জন্যও প্রস্তুত থাকা। দলের সদস্যদের সঙ্গে নিয়মিত ওয়ান-অন-ওয়ান মিটিং করুন এবং তাঁদের কাজের বিষয়ে গঠনমূলক ফিডব্যাক দিন। একই সঙ্গে, তাঁদের কাছে জানতে চান, আপনি কীভাবে আপনার নেতৃত্বকে আরও উন্নত করতে পারেন। এটি আপনার বিনয় ও শেখার আগ্রহের প্রতিফলন ঘটাবে।

রোল মডেল হন

প্রথম ১০০ দিন হলো নিজেকে একজন অনুকরণীয় নেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার সময়। আপনি যে ধরনের কর্মসংস্কৃতি দেখতে চান, নিজে সে ধরনের আচরণ করুন। সময়মতো অফিসে আসুন, কাজের প্রতি আপনার আগ্রহ দেখান এবং দলের অন্য সদস্যদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করুন। আপনার কাজ ও আচরণ দলের জন্য একটি মানদণ্ড স্থাপন করবে।

এ কৌশলগুলো একজন নতুন ম্যানেজারকে সফলভাবে তাঁর নেতৃত্ব শুরু করতে সাহায্য করবে। প্রথম ১০০ দিন শেষে আপনি একটি আত্মবিশ্বাসী, সুসংগঠিত এবং অনুপ্রাণিত দল নিয়ে কাজ শুরু করতে পারবেন, যা আপনাকে দীর্ঘ মেয়াদে সফল হতে সাহায্য করবে।

সোর্স: হার্ভার্ড বিজনেস রিভিউ

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ড. ইউনূসের সফরসঙ্গী হয়েও ফখরুল–আখতাররা ভিভিআইপি সুবিধা পাননি কেন—জানাল প্রেস উইং

স্পিকারের বাসভবনই হবে প্রধানমন্ত্রীর অস্থায়ী আবাস

আ.লীগের ঝটিকা মিছিল: মানিকগঞ্জের প্যানেল মেয়র আরশেদ আলীসহ চারজন কারাগারে

ঘরে সদ্য বিবাহিত বিক্রয় প্রতিনিধির লাশ, চিরকুটে লেখা ‘জীবন খুবই কঠিন’

জাতীয় সংসদ নির্বাচন: আলোচনায় আসনের ভাগ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত