বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী নাজমুল হক। তিনি ৪৪তম বিসিএসে প্রাণিসম্পদ ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন। তাঁর চাকরি পাওয়ার গল্প শুনেছেন এম এম মুজাহিদ উদ্দীন
এম এম মুজাহিদ উদ্দীন
নাজমুলের বেড়ে ওঠা গাজীপুরের টঙ্গীতে মধ্যবিত্ত পরিবারে। বাবা ছিলেন রেজিস্টাড প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক, মা গৃহিণী। ছোট বোন আর তিনি—ছোট্ট পরিবার। শিক্ষক বাবার অনুপ্রেরণা ও কঠোর নজরদারিতে ছোটকাল থেকে পড়াশোনায় মনোযোগী ছিলেন নাজমুল। প্রথম থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত রোল ছিল ১। প্রিয় শিক্ষক আতাউরের উৎসাহ তাঁকে পড়াশোনার পথে দৃঢ় করে তোলে। বাবার সহকর্মীদের সন্তানদের ভালো ফল দেখে নিজের মধ্যেও ভালো করার তাগিদ জন্মাত। আর সবকিছুর পেছনে ছিলেন মা—অক্লান্ত পরিশ্রমী, ধৈর্যশীলা কখনো হাল না ছাড়া এক নারী।
হঠাৎ ভেঙে পড়া জীবনের ভিত
২০১০ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি। এসএসসি পরীক্ষার মাত্র কয়েক দিন বাকি, হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন বাবা। হাসপাতালে নেওয়া হলেও তিনি আর ফেরেননি। বাবার মৃত্যুতে পরিবারে নেমে আসে গভীর শোক। এমন পরিস্থিতিতে পরীক্ষায় অংশ নেওয়া অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। আত্মীয়স্বজন, মামা-চাচাদের সহায়তায় ১১ ফেব্রুয়ারি থেকে পরীক্ষা দেন নাজমুল। পরীক্ষা শেষে টিউশনি শুরু করে পরিবারের হাল ধরেন। ফল প্রকাশের দিন প্রধান শিক্ষকের ফোনে জানতে পারেন, তিনি জিপিএ-৫ পেয়েছেন। খুশির চেয়ে কষ্টই মনে বেশি। কারণ বাবা তাঁর সাফল্য দেখে যেতে পারেননি। পরবর্তী সময়ে সফিউদ্দিন সরকার একাডেমি অ্যান্ড কলেজে ভর্তি হয়ে এইচএসসিতেও জিপিএ-৫ অর্জন করেন।
ভর্তিযুদ্ধ ও বিশ্ববিদ্যালয়জীবন
এইচএসসির পর ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে না পেরে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দেন। তিতুমীর কলেজে চান্স পান। আবার ভর্তি পরীক্ষা দিয়ে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের পশুপালন অনুষদে ভর্তি হন। বিশ্ববিদ্যালয়ের শেষ দিকে ঠিক করেন সরকারি চাকরি করবেন।
চাকরির পথে প্রথম ব্যর্থতা
প্রথম চাকরির পরীক্ষা ছিল ৪০তম বিসিএস। কিন্তু তিনি প্রিলিমিনারিই উত্তীর্ণ হতে পারেননি। তবুও হাল না ছেড়ে পরবর্তী বিসিএসের জন্য প্রস্তুতি নেন। এর মধ্যেই শুরু হয় করোনা মহামারি। বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ হয়ে যায়, ফিরে আসেন বাড়িতে। আবার টিউশনি শুরু করেন। ৪১তম বিসিএসে প্রিলিমিনারি পাস করলেও লিখিত পরীক্ষার প্রস্তুতিতে লাগে প্রচুর বই ও টাকার জোগান। পরিচিত বড় ভাইদের সহায়তায় পড়াশোনা চালিয়ে যান। লিখিত পরীক্ষা দেন, একই সঙ্গে প্রাইমারি শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায়ও অংশ নেন।
ধার করা পোশাকে ভাইভা প্রাইমারির ভাইভার দিন নিজের শার্ট-প্যান্ট-জুতা না থাকায় ধার নিয়ে বোর্ডে হাজির হন। ফলাফলে উত্তীর্ণ হয়ে সহকারী শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন। তখন পরিবারের জন্য এটি বড় স্বস্তি। ৪১তম বিসিএসের ভাইভায় নন-ক্যাডার হিসেবে সুপারিশ পান। মা সাহস জোগান—‘ধৈর্য ধর, সামনে ভালো কিছু হবে।’ ব্যাংকের চাকরির পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে অগ্রণী ব্যাংকে অফিসার (ক্যাশ) হিসেবে যোগ দেন। কিছুদিন পর প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের নন-ক্যাডার পদে নিয়োগ পেয়ে বদলি হয়ে যান বাগেরহাটের মহিষ প্রজনন ও উন্নয়ন খামারে।
অবশেষে কাঙ্ক্ষিত সাফল্য ৪৪তম বিসিএসের ভাইভা দেন নাজমুল। অপেক্ষার দিনগুলো ছিল অনিশ্চয়তায় ভরা। অবশেষে ৩০ জুন রাতে বন্ধু ফিরোজের মাধ্যমে জানতে পারেন—তিনি প্রাণিসম্পদ ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন।
নাজমুলের যাত্রা সহজ ছিল না। আর্থিক সংকট, রোগ-শোক, কটাক্ষ, সমালোচনা, মানসিক বিষণ্নতা—সবকিছু সামলেও তিনি এগিয়ে গেছেন। তাঁর বিশ্বাস, বিসিএসে লিখিত পাস করা প্রতিটি প্রার্থীই ক্যাডার হওয়ার যোগ্যতা রাখেন। ভাইভা অনেকটাই ভাগ্যের ব্যাপার। ধৈর্য ধরে চেষ্টা করলে সৃষ্টিকর্তা কাউকে নিরাশ করেন না।
নাজমুলের বেড়ে ওঠা গাজীপুরের টঙ্গীতে মধ্যবিত্ত পরিবারে। বাবা ছিলেন রেজিস্টাড প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক, মা গৃহিণী। ছোট বোন আর তিনি—ছোট্ট পরিবার। শিক্ষক বাবার অনুপ্রেরণা ও কঠোর নজরদারিতে ছোটকাল থেকে পড়াশোনায় মনোযোগী ছিলেন নাজমুল। প্রথম থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত রোল ছিল ১। প্রিয় শিক্ষক আতাউরের উৎসাহ তাঁকে পড়াশোনার পথে দৃঢ় করে তোলে। বাবার সহকর্মীদের সন্তানদের ভালো ফল দেখে নিজের মধ্যেও ভালো করার তাগিদ জন্মাত। আর সবকিছুর পেছনে ছিলেন মা—অক্লান্ত পরিশ্রমী, ধৈর্যশীলা কখনো হাল না ছাড়া এক নারী।
হঠাৎ ভেঙে পড়া জীবনের ভিত
২০১০ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি। এসএসসি পরীক্ষার মাত্র কয়েক দিন বাকি, হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন বাবা। হাসপাতালে নেওয়া হলেও তিনি আর ফেরেননি। বাবার মৃত্যুতে পরিবারে নেমে আসে গভীর শোক। এমন পরিস্থিতিতে পরীক্ষায় অংশ নেওয়া অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। আত্মীয়স্বজন, মামা-চাচাদের সহায়তায় ১১ ফেব্রুয়ারি থেকে পরীক্ষা দেন নাজমুল। পরীক্ষা শেষে টিউশনি শুরু করে পরিবারের হাল ধরেন। ফল প্রকাশের দিন প্রধান শিক্ষকের ফোনে জানতে পারেন, তিনি জিপিএ-৫ পেয়েছেন। খুশির চেয়ে কষ্টই মনে বেশি। কারণ বাবা তাঁর সাফল্য দেখে যেতে পারেননি। পরবর্তী সময়ে সফিউদ্দিন সরকার একাডেমি অ্যান্ড কলেজে ভর্তি হয়ে এইচএসসিতেও জিপিএ-৫ অর্জন করেন।
ভর্তিযুদ্ধ ও বিশ্ববিদ্যালয়জীবন
এইচএসসির পর ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে না পেরে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দেন। তিতুমীর কলেজে চান্স পান। আবার ভর্তি পরীক্ষা দিয়ে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের পশুপালন অনুষদে ভর্তি হন। বিশ্ববিদ্যালয়ের শেষ দিকে ঠিক করেন সরকারি চাকরি করবেন।
চাকরির পথে প্রথম ব্যর্থতা
প্রথম চাকরির পরীক্ষা ছিল ৪০তম বিসিএস। কিন্তু তিনি প্রিলিমিনারিই উত্তীর্ণ হতে পারেননি। তবুও হাল না ছেড়ে পরবর্তী বিসিএসের জন্য প্রস্তুতি নেন। এর মধ্যেই শুরু হয় করোনা মহামারি। বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ হয়ে যায়, ফিরে আসেন বাড়িতে। আবার টিউশনি শুরু করেন। ৪১তম বিসিএসে প্রিলিমিনারি পাস করলেও লিখিত পরীক্ষার প্রস্তুতিতে লাগে প্রচুর বই ও টাকার জোগান। পরিচিত বড় ভাইদের সহায়তায় পড়াশোনা চালিয়ে যান। লিখিত পরীক্ষা দেন, একই সঙ্গে প্রাইমারি শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায়ও অংশ নেন।
ধার করা পোশাকে ভাইভা প্রাইমারির ভাইভার দিন নিজের শার্ট-প্যান্ট-জুতা না থাকায় ধার নিয়ে বোর্ডে হাজির হন। ফলাফলে উত্তীর্ণ হয়ে সহকারী শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন। তখন পরিবারের জন্য এটি বড় স্বস্তি। ৪১তম বিসিএসের ভাইভায় নন-ক্যাডার হিসেবে সুপারিশ পান। মা সাহস জোগান—‘ধৈর্য ধর, সামনে ভালো কিছু হবে।’ ব্যাংকের চাকরির পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে অগ্রণী ব্যাংকে অফিসার (ক্যাশ) হিসেবে যোগ দেন। কিছুদিন পর প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের নন-ক্যাডার পদে নিয়োগ পেয়ে বদলি হয়ে যান বাগেরহাটের মহিষ প্রজনন ও উন্নয়ন খামারে।
অবশেষে কাঙ্ক্ষিত সাফল্য ৪৪তম বিসিএসের ভাইভা দেন নাজমুল। অপেক্ষার দিনগুলো ছিল অনিশ্চয়তায় ভরা। অবশেষে ৩০ জুন রাতে বন্ধু ফিরোজের মাধ্যমে জানতে পারেন—তিনি প্রাণিসম্পদ ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন।
নাজমুলের যাত্রা সহজ ছিল না। আর্থিক সংকট, রোগ-শোক, কটাক্ষ, সমালোচনা, মানসিক বিষণ্নতা—সবকিছু সামলেও তিনি এগিয়ে গেছেন। তাঁর বিশ্বাস, বিসিএসে লিখিত পাস করা প্রতিটি প্রার্থীই ক্যাডার হওয়ার যোগ্যতা রাখেন। ভাইভা অনেকটাই ভাগ্যের ব্যাপার। ধৈর্য ধরে চেষ্টা করলে সৃষ্টিকর্তা কাউকে নিরাশ করেন না।
আগামী ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, শুক্রবার সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত সারা দেশের আটটি কেন্দ্রে একযোগে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ৪৭তম বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষা। এবার মোট ৩ লাখ ৭৪ হাজার ৭৪৭ জন চাকরিপ্রার্থীর মধ্য থেকে বিভিন্ন ক্যাডার পদে ৩ হাজার ৪৮৭ জন এবং নন-ক্যাডার পদে ২০১ জনকে নিয়োগ দেওয়ার কথা রয়েছে।
১৪ ঘণ্টা আগেভূমি মন্ত্রণালয়ের অধীন ভূমি ব্যবস্থাপনা অটোমেশন প্রকল্পে জনবল নিয়োগের বড় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছে। প্রকল্পটিতে ৫ ধরনের শূন্য পদে মোট ১২৪ জনকে নিয়োগ দেওয়া হবে। ৮ সেপ্টেম্বর এ নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়। গত বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) থেকে আবেদনের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। আগ্রহী ও যোগ্য প্রার্থীরা আবেদন
১৫ ঘণ্টা আগেইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছে। অধিদপ্তরের ৬ ধরনের শূন্য পদে মোট ২৭ জনকে নিয়োগ দেওয়া হবে। ৪ সেপ্টেম্বর এই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছে। ১৪ সেপ্টেম্বর থেকে আবেদনপ্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। আগ্রহী ও যোগ্য প্রার্থীরা আবেদন করতে পারবেন।
১৮ ঘণ্টা আগেবিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষা হলো দীর্ঘ পথের প্রথম ধাপ। এখানে ভালো প্রস্তুতি যেমন জরুরি, তেমনি শেষ মুহূর্তের বিষয়ভিত্তিক প্রস্তুতি ও দিকনির্দেশনা পরীক্ষার ফল নির্ধারণে বড় ভূমিকা রাখে। ৪১তম বিসিএসে ট্যাক্স এবং ৪৩তম বিসিএসে প্রশাসন ক্যাডারে উত্তীর্ণ নাফিস সাদিক তাঁর অভিজ্ঞতা থেকে...
১ দিন আগে