Ajker Patrika

আজকের তারাবি-১০: ইউসুফ (আ.) কি জুলেখাকে বিয়ে করেছিলেন

রায়হান রাশেদ
আপডেট : ১০ মার্চ ২০২৫, ১৪: ১৪
আজকের তারাবি-১০: ইউসুফ (আ.) কি জুলেখাকে বিয়ে করেছিলেন

আজ খতমে তারাবিতে পবিত্র কোরআনের ১৩তম পারা তিলাওয়াত করা হবে। সুরা ইউসুফের ৫৩ নম্বর আয়াত থেকে সুরা ইবরাহিম পুরোটা পড়া হবে। এই অংশে ইউসুফ (আ.)–এর জীবনের রোমাঞ্চকর কাহিনির শেষাংশ, আল্লাহ সবকিছুর সৃষ্টিকর্তা, জীবন-মরণ তাঁর হাতে, মুত্তাকিদের বৈশিষ্ট্য, কিয়ামত ও জাহান্নামের শাস্তি ইত্যাদি বিষয়ের বিবরণ রয়েছে। এখানে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি বিষয় তুলে ধরা হলো—

ধৈর্যের পুরস্কার পেয়েছিলেন ইউসুফ (আ.) 
গতকাল তারাবিতে ইউসুফ (আ.)-এর কাহিনির শুরুর অংশ পাঠ করা হয়েছিল। আজ শুরুতে বাকি অংশ তিলাওয়াত করা হবে। ইউসুফ (আ.)-এর কাছে স্বপ্নের সঠিক ব্যাখ্যা শুনে মিসরের বাদশাহ অভিভূত হলেন। খুশি হয়ে তাঁকে জেল থেকে মুক্তি দিলেন। মুক্তির আগে ইউসুফ (আ.) নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করতে চাইলেন। জুলেখা বাধ্য হয়ে অপরাধের কথা স্বীকার করলেন। তাঁর সাজানো নাটকের কথা বললেন। 

ইউসুফ (আ.) মিসরের অর্থ বিভাগের দায়িত্ব চেয়ে নেন। তখন মিসর ও এর আশপাশে দুর্ভিক্ষ চলছিল। অভাবে পড়ে তাঁর ভাইয়েরা বিশেষ দান পেতে মিসরে আসেন। কয়েকবার সাক্ষাতে পরই ভাইয়েরা তাঁকে চিনতে পারেননি। তবে ইউসুফ চিনতে পেরেও পরিচয় গোপন রাখেন। তিনি তাঁদের শর্ত দেন, পরেরবার ত্রাণ পেতে হলে তাঁদের ছোট ভাই বেনইয়ামিনকে সঙ্গে আনতে হবে। বেনইয়ামিন হলেন ইউসুফ (আ.)–এর সহোদর ভাই।

পরে ভাইয়েরা বেনইয়ামিনকে সঙ্গে করে আবার মিসর আসেন। তখন ছোট ভাইকে কৌশলে নিজের কাছে রেখে দেন ইউসুফ (আ.)। ভাইদের কাছে বাবা ইয়াকুবের জন্য নিজের পরনের জামা দিয়ে বলেন, ‘এটা আমার আব্বার চেহারার ওপর রেখ। এতে তিনি দৃষ্টি পাবেন। ইয়াকুব (আ.) জামার বদৌলতে দৃষ্টি ফিরে পেয়েছিলেন।’ পুত্রশোকে ইয়াকুব (আ.) অন্ধ হয়ে গিয়েছিলেন। ইউসুফ (আ.)–এর জামার ঘ্রাণেই তিনি বুঝতে পেরেছিলেন। পরে সপরিবারে মিসরে চলে আসেন।

অনেকের ধারণা, ইউসুফ (আ.) জুলেখার সঙ্গে প্রেম করেছেন। এটি সত্য নয়। ইউসুফ (আ.) কোনো দিন জুলেখার সঙ্গে প্রেম করেননি; জুলেখার একপক্ষীয় প্রেম ছিল। ইউসুফ (আ.) প্রেমে মজেছেন এবং তাঁকে যৌন নিপীড়ন করেছেন—জুলেখা তাঁকে এই মিথ্যা অপবাদ দিয়েছিলেন। ইউসুফ (আ.) তা অস্বীকার করেন এবং একটি দুগ্ধপোষ্য শিশু ইউসুফ (আ.)-এর পক্ষে সাক্ষ্য দিয়েছিল। সত্য বুঝতে পারার পরও জুলেখার সম্মান বাঁচাতে তাঁর স্বামী কিতফির হজরত ইউসুফ (আ.)-কে কারাগারে পাঠিয়েছিলেন। আল্লাহর ওপর ভরসা করে ধৈর্য ধরে দীর্ঘ দিন কারাবন্দী থেকেছেন ইউসুফ (আ.), যার সুফলও তিনি পেয়েছেন। নবী হয়েছেন। হয়েছেন মিসরের ধন-ভান্ডারের রক্ষক। 

ইউসুফ (আ.) কি জুলেখাকে বিয়ে করেছিলেন
স্বামীর মৃত্যুর পর জুলেখার সঙ্গে ইউসুফ (আ.)-এর বিয়ে হয়েছিল কি না—এ বিষয়ে কোরআন-হাদিস থেকে স্পষ্ট কিছুই জানা যায় না। তবে ঐতিহাসিক ও মুফাসসিরগণ বিচ্ছিন্ন সনদে উল্লেখ করেছেন যে, স্বামী কিতফিরের মৃত্যুর পর এবং তওবা করার পর ইউসুফ (আ.)-এর সঙ্গে জুলেখার বিয়ে হয়েছিল এবং তাঁদের ঘরে দুটি ছেলে সন্তানও হয়েছিল। (তাফসিরে ইবনে আবি হাতিম: ৮ / ৩৯০; তাফসিরে তবারি: ১৬ / ১৫১; আদ-দুররুল মানসুর: ৪ / ৫৫৩; আল-বিদায়া ওয়ান-নিহায়া ১ / ১৯৬-১৯৭) 

ইসরাইলি বর্ণনা (তাওরাত, ইঞ্জিল ও অন্যান্য সহিফা) থেকেই এসব ঘটনা বর্ণিত হয়েছে। যার সত্য-মিথ্যা—কোনোটাই প্রমাণ করা যায় না। তাই বিষয়টি ইসলামি আকিদা-বিশ্বাস বিরোধী না হলে সত্য-মিথ্যা আল্লাহর হাতে সোপর্দ করে দিয়ে এসব বর্ণনা বিশ্বাস করা যেতে পারে। (বুখারি, মিশকাত: ১৫৫) 

সুরা রাদ-এ আল্লাহর সৃষ্টির কথা
সুরা রাদ মক্কায় অবতীর্ণ। এ সুরার আয়াত সংখ্যা ৪৩। এটি কোরআনের ১৩ নম্বর সুরা। এ সুরার শুরু থেকে ১৮ নম্বর আয়াত পর্যন্ত আল্লাহ কর্তৃক আসমান-জমিন, চাঁদ-সূর্য, রাত-দিন, পাহাড়-পর্বত ও নদী-নালা, লতাগুল্ম, বৈচিত্র্যময় স্বাদ ও রঙের ফলমূলের সৃষ্টি, প্রকাশ্য-গোপন ও স্ত্রীর গর্ভে যা আছে তার খবর আল্লাহ জানেন, বৃষ্টি বর্ষণ, মেঘমালা এবং আল্লাহর ডাকে বান্দার সাড়া দেওয়া ইত্যাদি বিষয়ের বিবরণ রয়েছে। 

সুরা রাদ-এ বর্ণিত বিবেকবানদের ৯ গুণ
সুরা রাদের ২০ থেকে ২৪ নম্বর আয়াতে বিবেক সম্পন্নদের ৯টি গুণের উল্লেখ রয়েছে। মুত্তাকিরা—
১. আল্লাহর সঙ্গে করা অঙ্গীকার পূর্ণ করেন
২. প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করেন না
৩. আল্লাহর নির্দেশিত সম্পর্ক বজায় রাখেন
৪. আল্লাহকে ভয় করেন
৫. জবাবদিহি খারাপ হওয়াকে ভয় করেন
৬. আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনে ধৈর্য ধারণ করেন
৭. নামাজ প্রতিষ্ঠা করেন
৮. আল্লাহর দেওয়া রিজিক থেকে গোপনে ও প্রকাশ্যে ব্যয় করেন
৯. ভালো দিয়ে মন্দ দূর করেন 

সুরা ইবরাহিম (আ.)-এর বিষয়বস্তু
সুরা ইবরাহিম মক্কায় অবতীর্ণ। এ সুরার আয়াত সংখ্যা ৫২। কোরআনুল কারিমের ১৪ তম সুরা এটি। মদিনায় হিজরতের কিছুদিন আগে এটি নাজিল হয়। এতে ইবরাহিম (আ.)-এর সম্পর্কে দীর্ঘ আলোচনা রয়েছে। সে দৃষ্টিকোণ থেকে এ সুরার নামকরণ করা হয়েছে সুরা ইবরাহিম। এ সুরাতে মৌলিকভাবে তাওহিদ, রিসালাত ও আখিরাতের আলোচনা স্থান পেয়েছে। 

আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতায় নেয়ামত বাড়ে
এই পৃথিবীতে যা কিছু আছে—বসবাসের উপযুক্ত পরিবেশ, আলো, বাতাস, পানি, চাঁদ-সূর্য, রাত-দিন, বৃক্ষ; প্রতিটি জিনিস সৃষ্টি করা হয়েছে মানুষের জন্য। আল্লাহ তাআলা মানুষকে এসব থেকে উপকার ভোগের সুযোগ দিয়েছেন। না চাইতেই দিয়েছেন মহামূল্যবান জীবন, সুস্থতা, উপলব্ধি, প্রখর মেধা ও তীক্ষ্ণ জ্ঞান-বুদ্ধি, নাক, কান, চোখ, মুখ, জিহ্বা, হাত-পাসহ অসংখ্য নেয়ামত। মহান আল্লাহ বান্দার প্রতি কত করুণা করেছেন, তা বলে, লিখে কিংবা চিন্তা করে শেষ করা যাবে না! বান্দার ওপর আল্লাহর যে পরিমাণ রহমত আছে, তা কল্পনা করাও সম্ভব নয়। এসব কিছুর বিনিময়ে আল্লাহ বান্দার কৃতজ্ঞতাবোধ দেখতে পছন্দ করেন। ধীর–স্থির ও প্রশান্ত চিত্তের সেজদা চান। কায়মনোবাক্যে প্রার্থনা চান। 

বান্দা আল্লাহর নেয়ামত ও অনুগ্রহের প্রশংসা, শুকরিয়া ও গুণকীর্তন করলে, তিনি নেয়ামত আরও বাড়িয়ে দেন। খুশি হয়ে বান্দার ওপর রহমত বর্ষণ করেন। ফেরেশতাদের সামনে প্রশংসা করেন। অকৃতার্থ হৃদয়ের প্রতি আল্লাহ শুভদৃষ্টি দেন না। আল্লাহ বলেন, ‘যদি তোমরা শুকরিয়া আদায় করো, তাহলে আমি অবশ্যই তোমাদের বাড়িয়ে দেব, আর যদি তোমরা অকৃতজ্ঞ হও, নিশ্চয়ই আমার আজাব বড় কঠিন।’ (সুরা ইবরাহিম: ৭) 

পৃথিবীর সব নবী-রাসুল জীবনভর আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করেছেন। মহানবী (সা.) আল্লাহর কৃতজ্ঞ বান্দা হওয়ার আকাঙ্ক্ষায় বেশি বেশি নামাজ পড়তেন। ফলে তাঁর পদযুগল ফুলে যেত। অথচ তাঁর আগে-পরের গুনাহ আল্লাহ মাফ করে দিয়েছিলেন। রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ ওই বান্দার প্রতি সন্তুষ্ট হন, যে কিছু খেলে আল্লাহর প্রশংসা করে এবং কিছু পান করলেও আল্লাহর প্রশংসা করে।’ (মুসলিম: ২৭৩৪) 

মানুষের কল্যাণে ইবরাহিম (আ.)-এর প্রার্থনা
সুরা ইবরাহিমের শেষাংশে আল্লাহর কাছে ইবরাহিম (আ.)-এর বিশেষ দোয়ার উল্লেখ রয়েছে। সে দোয়ায় তিনি দেশ, নিজের সন্তান–সন্ততি, পরবর্তী বংশধরদের জন্য সুকল্যাণ, তাদের মধ্যে বিশ্বাসী মুসলমান ও নামাজি সন্তান কামনা করেছেন। ক্ষমা চেয়েছেন নিজের জন্য, পিতার জন্য ও সব মুমিন-মুসলমানের জন্য। 

এ ছাড়া স্তম্ভহীন আকাশে আল্লাহর নিদর্শন, কোরআনের মাহাত্ম্য, আল্লাহর জিকিরে অন্তরে প্রশান্তি লাভ, নবী-রাসুলদের সঙ্গে কাফেরদের আচরণ ও পরিণতি, হক-বাতিলের পরিচয় ইত্যাদি বিষয় আলোচিত হয়েছে। 

লেখক: ইসলামবিষয়ক গবেষক ও সাংবাদিক

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

অপমৃত্যু থেকে রক্ষা করে যে আমল

ইসলাম ডেস্ক 
আপডেট : ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯: ২৪
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

ইসলামে দান-সদকা অত্যন্ত মর্যাদাপূর্ণ একটি আমল। পবিত্র কোরআন ও হাদিসে এর অসংখ্য ফজিলতের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। সদকা কেবল দরিদ্রের প্রয়োজনই মেটায় না, বরং এটি বান্দা ও তার প্রতিপালকের মধ্যে সম্পর্ককে আরও মজবুত করে। মহানবী (সা.) সদকার এমন কিছু অসামান্য ফজিলত বর্ণনা করেছেন, যা আমাদের জীবনে এর গুরুত্ব আরও বাড়িয়ে দেয়।

সদকার এক অন্যতম ফজিলত হলো, এটি আল্লাহর ক্রোধ প্রশমিত করে। হাদিসে মহানবী (সা.) বলেন, ‘দান-সদকা আল্লাহর ক্রোধ কমায় এবং মানুষকে অপমৃত্যু থেকে রক্ষা করে।’ (জামে তিরমিজি)

মানুষ জীবনে ইচ্ছায়-অনিচ্ছায় নানা পাপ করে আল্লাহর নাফরমানিতে লিপ্ত হয়, ফলে সে আল্লাহর বিরাগভাজন হয়। এমতাবস্থায় আল্লাহর রাগ কমানোর জন্য এবং তাঁর সন্তুষ্টি ফিরে পাওয়ার জন্য সদকা এক ফলপ্রসূ আমল। সদকার বরকতে আল্লাহ সেই রাগ দূর করে দেন। এ ছাড়া, এই হাদিসের মাধ্যমে জানা যায়, সদকার কারণে আল্লাহ তাআলা দানশীল ব্যক্তিকে অপমৃত্যু থেকে রক্ষা করেন এবং তাকে ইমানের সঙ্গে মৃত্যু দান করেন।

দান-সদকা যে শুধু পরকালে সওয়াব বৃদ্ধি করে তা নয়; বরং এর বরকতে আল্লাহ দুনিয়ার সম্পদও বহুগুণ বাড়িয়ে দেন। এক হাদিসে আবু উমামা (রা.) থেকে বর্ণিত, আবু জর (রা.) রাসুল (সা.)-কে জিজ্ঞেস করলেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল, সদকা কী?’ জবাবে তিনি বললেন, ‘কয়েক গুণ। (অর্থাৎ, কোনো ব্যক্তি যে পরিমাণ আল্লাহর জন্য দান করবে, তার কয়েক গুণ বেশি সওয়াব সে পাবে)। আর আল্লাহ তাআলা বিপুল ভান্ডারের অধিকারী।’ (মুসনাদে আহমাদ)

অনেক হাদিসবিশারদ এই হাদিসের ব্যাখ্যায় বলেছেন, সদকার বরকতে আল্লাহ দুনিয়ায়ও সম্পদ বহুগুণ বাড়িয়ে দেন। আর পরকালে যে প্রতিদান সে পাবে, তা হবে এর চেয়েও বহুগুণ বেশি। বাস্তবেও দেখা যায়, যে ব্যক্তি আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস রেখে নিষ্ঠার সঙ্গে দান করেন, তাঁর সম্পদ অদ্ভুতভাবে বেড়ে যায়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আজকের নামাজের সময়সূচি: ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫

ইসলাম ডেস্ক 
আজকের নামাজের সময়সূচি। ছবি: সংগৃহীত
আজকের নামাজের সময়সূচি। ছবি: সংগৃহীত

জীবনকে সুশৃঙ্খল করতে এবং আল্লাহর সান্নিধ্য পেতে নামাজের কোনো বিকল্প নেই। একজন মুমিনের জন্য নামাজ হলো আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি কথোপকথনের মাধ্যম। এটি এমন এক ইবাদত—যা আমাদের মনে আধ্যাত্মিক প্রশান্তি আনে, জীবনের প্রতিটি কাজে আনে বরকত।

প্রতিদিন সময় মতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর আবশ্যক। তাই জেনে নেওয়া যাক আজ কোন ওয়াক্তের নামাজ কখন আদায় করতে হবে।

আজ রোববার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫ ইংরেজি, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বাংলা, ২২ জমাদিউস সানি ১৪৪৭ হিজরি। ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকার নামাজের সময়সূচি তুলে ধরা হলো—

আজকের নামাজের সময়সূচি
নামাজ ওয়াক্ত শুরুওয়াক্ত শেষ
তাহাজ্জুদ ও সেহরির শেষ সময়০০: ০০০৫: ১১ মিনিট
ফজর০৫: ১২ মিনিট০৬: ৩১ মিনিট
জোহর১১: ৫৪ মিনিট০৩: ৩৭ মিনিট
আসর০৩: ৩৮ মিনিট০৫: ১২ মিনিট
মাগরিব০৫: ১৪ মিনিট০৬: ৩৩ মিনিট
এশা০৬: ৩৪ মিনিট০৫: ১১ মিনিট

উল্লিখিত সময়ের সঙ্গে যেসব বিভাগের সময় যোগ-বিয়োগ করতে হবে, সেগুলো হলো:

বিয়োগ করতে হবে—
চট্টগ্রাম: ০৫ মিনিট
সিলেট: ০৬ মিনিট

যোগ করতে হবে—
খুলনা: ০৩ মিনিট
রাজশাহী: ০৭ মিনিট
রংপুর: ০৮ মিনিট
বরিশাল: ০১ মিনিট

নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।

আসুন, নামাজের মাধ্যমে আমরা নিজেদেরকে তাঁর আরও কাছে নিয়ে যাই। জীবনে নিয়ে আসি ইমানের নুর।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

যেভাবে অন্যদের ভুল শুধরে দিতেন নবীজি

ইসলাম ডেস্ক 
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

ভুল করা মানুষের স্বভাবজাত বিষয়। জীবন চলার পথে ছোট-বড় ভুল সবারই হয়। কিন্তু সে ভুলকে কীভাবে সংশোধন করতে হবে, তা মানবজাতির সর্বশ্রেষ্ঠ শিক্ষাবিদ হজরত মুহাম্মদ (সা.) শিখিয়ে গেছেন। তিনি ভুলকে লজ্জা বা অপমানের কারণ হিসেবে দেখেননি; বরং এটিকে ইতিবাচক পরিবর্তনের একটি সুযোগ হিসেবে গ্রহণ করেছেন। মহানবী (সা.) কঠোরতা নয়, বরং ভদ্রতা, কোমলতা, সহানুভূতি এবং সৃজনশীলতার মাধ্যমে মানুষের ভুলত্রুটি শুধরেছেন।

ভুল সংশোধনে তাঁর প্রথম কৌশল ছিল কৌশলগত নীরবতা এবং ইঙ্গিতপূর্ণ আচরণ। তিনি সরাসরি সমালোচনা না করে এমনভাবে আচরণ করতেন, যেন ভুলকারী নিজেই নিজের ভুল বুঝতে পারে। একবার সাহাবিদের কোনো কাজে ভুল দেখতে পেলে তিনি তাঁদের ছেড়ে অন্য পথে হেঁটেছেন, যা দেখে তাঁরা নিজেদের ভুল বুঝতে পেরেছেন। আবার কখনো কখনো, বিশেষ করে যখন ভুলটি গুরুতর হতো, তখন তিনি কথার পুনরাবৃত্তি করে এর গুরুত্ব বোঝাতেন। তাঁর আরেকটি অসাধারণ পদ্ধতি ছিল দুর্বল ও অসহায়দের প্রতি কোমল আচরণ। একইভাবে, তিনি মানুষকে আল্লাহর ক্ষমতা ও করুণার কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে ভুল থেকে ফিরিয়ে আনতেন।

মানুষের মর্যাদা রক্ষা ছিল তাঁর ভুল সংশোধনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দিক। তিনি কখনো জনসমক্ষে কাউকে লজ্জা দিতেন না। তাই অনেক সময় তিনি বলতেন, ‘লোকদের কী হয়েছে যে তারা এমন এমন কাজ করছে!’ এভাবে তিনি ব্যক্তির পরিচয় গোপন রেখে সাধারণ ভুলকারীদের সতর্ক করতেন। এমনকি যারা বারবার একই ভুল করত, তাদেরও তিনি তিরস্কারের পরিবর্তে ভালোবাসা ও দোয়া করতেন। তাঁর এই সহানুভূতিশীল পদ্ধতি প্রমাণ করে, ভুল শুধরানোর মূল উদ্দেশ্য হলো ব্যক্তিকে পরিশুদ্ধ করা, অপমান করা নয়।

রাসুল (সা.)-এর এ কৌশলগুলো আমাদের শেখায়, ভুল সংশোধন একটি শিল্প, যেখানে ভালোবাসা, সহমর্মিতা এবং সম্মানই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। এটি শুধু একটি ত্রুটি দূর করার বিষয় নয়; বরং ব্যক্তির অন্তরকে আলোকময় করে তোলার এক মহৎ প্রক্রিয়া।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আজকের নামাজের সময়সূচি: ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫

ইসলাম ডেস্ক 
আজকের নামাজের সময়সূচি। ছবি: সংগৃহীত
আজকের নামাজের সময়সূচি। ছবি: সংগৃহীত

জীবনকে সুশৃঙ্খল করতে এবং আল্লাহর সান্নিধ্য পেতে নামাজের কোনো বিকল্প নেই। একজন মুমিনের জন্য নামাজ হলো আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি কথোপকথনের মাধ্যম। এটি এমন এক ইবাদত—যা আমাদের মনে আধ্যাত্মিক প্রশান্তি আনে, জীবনের প্রতিটি কাজে আনে বরকত।

প্রতিদিন সময় মতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর আবশ্যক। তাই জেনে নেওয়া যাক আজ কোন ওয়াক্তের নামাজ কখন আদায় করতে হবে।

আজ শনিবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫ ইংরেজি, ২৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বাংলা, ২১ জমাদিউস সানি ১৪৪৭ হিজরি। ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকার নামাজের সময়সূচি তুলে ধরা হলো—

আজকের নামাজের সময়সূচি
নামাজওয়াক্ত শুরুওয়াক্ত শেষ
তাহাজ্জুদ ও সেহরির শেষ সময়০০: ০০০৫: ১০ মিনিট
ফজর০৫: ১১ মিনিট০৬: ৩০ মিনিট
জোহর১১: ৫৩ মিনিট০৩: ৩৬ মিনিট
আসর০৩: ৩৭ মিনিট০৫: ১২ মিনিট
মাগরিব০৫: ১৪ মিনিট০৬: ৩৩ মিনিট
এশা০৬: ৩৪ মিনিট০৫: ১০ মিনিট

উল্লিখিত সময়ের সঙ্গে যেসব বিভাগের সময় যোগ-বিয়োগ করতে হবে, সেগুলো হলো:

বিয়োগ করতে হবে—
চট্টগ্রাম: ০৫ মিনিট
সিলেট: ০৬ মিনিট

যোগ করতে হবে—
খুলনা: ০৩ মিনিট
রাজশাহী: ০৭ মিনিট
রংপুর: ০৮ মিনিট
বরিশাল: ০১ মিনিট

নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।

আসুন, নামাজের মাধ্যমে আমরা নিজেদেরকে তাঁর আরও কাছে নিয়ে যাই। জীবনে নিয়ে আসি ইমানের নুর।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত