রায়হান রাশেদ

আজ খতমে তারাবিতে পবিত্র কোরআনের ২১তম পারা তিলাওয়াত করা হবে। সুরা আনকাবুতের ৪৫ থেকে সুরা রুম, সুরা লোকমান, সুরা সাজদা ও আহজাবের ১ থেকে ৩০ নম্বর আয়াত পর্যন্ত পড়া হবে। এই অংশে নামাজের উপকারিতা, ধৈর্য, স্বামী-স্ত্রীর ভালোবাসা, সুদ, সন্তানের প্রতি লোকমান (আ.)-এর উপদেশ, পাঁচ জিনিসের জ্ঞান, পালক পুত্রের বিধান, নবীপত্নীদের প্রতি নির্দেশসহ নানা বিষয় আলোচিত হয়েছে। এখানে সংক্ষেপে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তুলে ধরা হলো—
নামাজ অশ্লীল কাজ থেকে বিরত রাখে
আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘নিশ্চয়ই নামাজ অশ্লীল ও মন্দ কাজ থেকে বিরত রাখে।’ (সুরা আনকাবুত: ৪৫) নামাজ বান্দাকে সব ধরনের অশ্লীলতা, পাপাচার, প্রবৃত্তি পূজা, ক্ষণস্থায়ী ভোগবিলাসের অন্ধ মোহ থেকে মুক্ত করে পবিত্র ও জান্নাতি জীবনের সন্ধান দেয়।
তবে সমাজে দেখা যায়, অনেকে নামাজ পড়ে কিন্তু পাপ কাজে নিমজ্জিত হয়ে আছে। মসজিদের নিয়মিত মুসল্লি কিন্তু ঘুষ খায়, সুদি কারবার করে, এতিমের সম্পদ দখল করে, প্রতিবেশীর হক নষ্ট করে, উত্তরাধিকার থেকে আত্মীয়দের বঞ্চিত করে, ব্যভিচারসহ নানা পাপ করে।
ইমাম তবারি, ইবনে কাসির, কুরতুবি, আলুসিসহ সংখ্যাগরিষ্ঠ তাফসিরবিদের মতে, ‘এই আয়াতের মর্ম হলো, তাকবির, তাসবিহ, কেরাত, আল্লাহর সামনে কিয়াম ও রুকু-সেজদাহসহ অনেক আমলের সমষ্টি হচ্ছে নামাজ। এ কারণে নামাজ যেন মুসল্লিকে বলে, তুমি কোনো অশ্লীল বা অন্যায় কাজ কোরো না। তুমি এমন প্রভুর নাফরমানি কোরো না, যিনি তোমার কৃত ইবাদতসমূহের প্রকৃত হকদার। তুমি এখন কীভাবে তাঁর অবাধ্য হবে, অথচ তুমি এমন আমল করেছ, যা তাঁর বড়ত্ব ও মহত্ত্বকে প্রকাশ করে। এর পরও যদি তাঁর অবাধ্য হও, তবে এর মাধ্যমে তুমি স্ববিরোধী কাজে লিপ্ত হলে। (আর স্ববিরোধী কাজের মাধ্যমে ব্যক্তি কোন স্তরে নেমে আসে,, সেটা তোমার ভালোই জানা আছে।) (তাফসিরে রুহুল মাআনি: ১০ / ৪৮২)
নামাজ ইসলামের মূল স্তম্ভ। আল্লাহর পক্ষ থেকে বান্দার জন্য বিশেষ নেয়ামত। কোরআনে ৮২ বার নামাজের কথা এসেছে। নামাজে যদি একনিষ্ঠতা, বিনয় ও নম্রতা এবং পূর্ণ মনোযোগ না থাকে, তাহলে নামাজ অশ্লীলতা ও মন্দ কাজ থেকে ব্যক্তিকে বিরত রাখবে না। রাসুল (সা.) বলেন, ‘আল্লাহর ইবাদত করো এমনভাবে, যেন তাঁকে তুমি দেখতে পাচ্ছ। আর যদি দেখতে না পাও, তবে তিনি যেন তোমাকে দেখছেন।’ (বুখারি: ৫০)
রোমানদের জয়ের ভবিষ্যদ্বাণী—সুরা রুম
সুরা রুম মক্কায় অবতীর্ণ। এ সুরার আয়াত সংখ্যা ৬০। কোরআনের ৩০তম সুরা এটি। এই সুরার শুরুতে রোমান ও পার্সিয়ানদের যুদ্ধ ঘিরে মক্কার মুসলমান ও কাফেরদের আনন্দ-বেদনার কথা রয়েছে। তখন ৬০৩ খ্রিষ্টাব্দ। রোমানরা জীবন-মৃত্যুর চরম সংকটকাল অতিক্রম করছিল। একের পর এক যুদ্ধে পরাজিত হচ্ছিল। ৬১৫ খ্রিষ্টাব্দে পার্সিয়ানরা দামেস্ক, বায়তুল মুকাদ্দাস পর্যন্ত দখল করে নেয়। এতে মুসলমানদের মন ভাঙে। কাফেররা খুশি হয়। কারণ পার্সিয়ানরা ছিল তাদের মতো পৌত্তলিক। অন্যদিকে মুসলিমদের মতো রোমানরাও নবী, আসমানি কিতাব ও আখিরাত ইত্যাদিতে বিশ্বাসী ছিল।
এ সময় কোরআন ভবিষ্যদ্বাণী করে, কয়েক বছরের মধ্যেই রোমানরা পারসিকদের ওপর বিজয় লাভ করবে। মুশরিকরা ভবিষ্যদ্বাণীটি শুনে বিদ্রুপ করেছিল। কিন্তু ঠিক ৯ বছরের মাথায় কোরআনের এই ভবিষ্যদ্বাণী সত্য হয়েছিল। ৬২৪ সালে রোমানরা ইরানিদের সবচেয়ে বড় অগ্নিকুণ্ড ভেঙে ফেলে।
ভাষার বৈচিত্র্যে স্রষ্টার নিদর্শন
ভাষা আল্লাহর নেয়ামত। সৃষ্টির প্রথম প্রভাত থেকে মানুষের জন্য ভাষা ছিল। পৃথিবীতে হাজারো রকমের ভাষা আছে। সব নবী-রাসুল স্বজাতির ভাষায় পণ্ডিত ছিলেন। তাঁরা জাতিকে মাতৃভাষায় দাওয়াত দিতেন। মানুষের মধ্যে আছে ভাষার ভিন্নতা, রুচির ভিন্নতা ও রঙের ভিন্নতা। ভাষাবৈচিত্র্যে রয়েছে আল্লাহর নিদর্শন। কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘আর তাঁর নিদর্শনাবলির মধ্যে রয়েছে আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবীর সৃষ্টি এবং তোমাদের ভাষা ও বর্ণের বৈচিত্র্য।’ (সুরা রুম: ২২)
সুরা লোকমানের বিষয়বস্তু
সুরা লোকমান মক্কায় অবতীর্ণ। এই সুরার আয়াত সংখ্যা ৩৪। কোরআনের ৩১তম সুরা এটি। এই সুরায় আল্লাহ তাআলা সন্তানের প্রতি হজরত লোকমান হাকিমের কিছু প্রজ্ঞাপূর্ণ উপদেশ তুলে ধরেছেন। এ কারণে এই সুরার নাম লোকমান।
সন্তানের প্রতি পিতা লোকমানের অমূল্য উপদেশ
সুরা লোকমানের ১২ থেকে ১৯ নম্বর আয়াতে সন্তানের প্রতি লোকমান হাকিমের প্রজ্ঞাপূর্ণ উপদেশের কথা বর্ণনা করা হয়েছে। মুফাসসিরদের মতে, লোকমান নবী ছিলেন না। কিন্তু তিনি এতটা ধার্মিক ও জ্ঞানী ছিলেন যে, মহান আল্লাহ তাঁর তাকওয়ায় মুগ্ধ হয়ে তাঁকে প্রজ্ঞা শিক্ষা দিয়েছিলেন। সন্তানের প্রতি তাঁর দেওয়া উপদেশগুলোয় আল্লাহ খুশি হয়ে সেগুলো কোরআনে বর্ণনা করেছেন। উপদেশগুলো হলো—
১. আল্লাহর সঙ্গে কাউকে শরিক কোরো না
২. বাবা-মায়ের সঙ্গে সদাচার কোরো
৩. বাবা-মা যদি আল্লাহর সঙ্গে কাউকে শরিক করতে বলে, তাহলে তাঁদের কথা গ্রহণ করবে না
৪. মনে আল্লাহর স্মরণ জাগ্রত রাখো
৫. নামাজ কায়েম করো
৬. নেক কাজের আদেশ দাও
৭. মন্দ কাজ থেকে নিষেধ করো
৮. বিপদে ধৈর্যধারণ করো
৯. অহংকারবশে মানুষকে অবজ্ঞা কোরো না
১০. পৃথিবীতে গর্বভরে বিচরণ কোরো না
১১. মধ্যপন্থা অবলম্বন কোরো
১২. কণ্ঠস্বর নিচু রাখো
পালক পুত্রের বিধান
প্রাক-ইসলামি যুগে আরবে পালক সন্তানকে ঔরসজাত সন্তানের মতোই মনে করা হতো। ইসলাম মনে করে, বাবা-মা ও সন্তানের পরিচয়ের বাস্তব ভিত্তি হলো ঔরস ও গর্ভধারণ। রাসুলুল্লাহ (সা.)-ও জায়েদ ইবনে হারেসা নামে এক সাহাবিকে দত্তক নিয়েছিলেন। তাঁকে সবাই জায়েদ ইবনে মোহাম্মাদ—অর্থাৎ মুহাম্মদের ছেলে বলে ডাকত। কোরআনে বিষয়টি নিষেধ করে দেওয়া হয়। পরে সবাই তাঁকে জায়েদ ইবনে হারেসা বলেই ডাকা আরম্ভ করে। সুরা আহজাবের ৪ থেকে ৫ নম্বর আয়াতে পালকপুত্র পুত্র নয়, তাকে তাদের পিতৃপরিচয়ে ডাকা, পরিচয় জানা না থাকলে ভাই-বন্ধু হিসেবে গ্রহণের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি জেনেশুনে নিজের বাবাকে ছাড়া অন্য কাউকে বাবা বলে দাবি করে, তার জন্য জান্নাত হারাম।’ (বুখারি: ৪৩২৬)
এ ছাড়া তারাবির আজকের অংশে মাতৃভূমি ত্যাগ, সামাজিক শিষ্টাচার, কোরআন অস্বীকারের পরিণাম, দীনের পথে বিপদ, ভ্রমণ, বাতাস, মুমিন ও কাফেরের অবস্থা, ছয় দিনে পৃথিবী সৃষ্টি, মুমিনের পুরস্কার, নবীদের জীবন উম্মতের আদর্শ, দুনিয়ার মায়া ত্যাগ, জাকাত ইত্যাদি বিষয়ের আলোচনা রয়েছে।
লেখক: ইসলামবিষয়ক গবেষক ও সাংবাদিক
বিস্তারিত পড়ুন:

আজ খতমে তারাবিতে পবিত্র কোরআনের ২১তম পারা তিলাওয়াত করা হবে। সুরা আনকাবুতের ৪৫ থেকে সুরা রুম, সুরা লোকমান, সুরা সাজদা ও আহজাবের ১ থেকে ৩০ নম্বর আয়াত পর্যন্ত পড়া হবে। এই অংশে নামাজের উপকারিতা, ধৈর্য, স্বামী-স্ত্রীর ভালোবাসা, সুদ, সন্তানের প্রতি লোকমান (আ.)-এর উপদেশ, পাঁচ জিনিসের জ্ঞান, পালক পুত্রের বিধান, নবীপত্নীদের প্রতি নির্দেশসহ নানা বিষয় আলোচিত হয়েছে। এখানে সংক্ষেপে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তুলে ধরা হলো—
নামাজ অশ্লীল কাজ থেকে বিরত রাখে
আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘নিশ্চয়ই নামাজ অশ্লীল ও মন্দ কাজ থেকে বিরত রাখে।’ (সুরা আনকাবুত: ৪৫) নামাজ বান্দাকে সব ধরনের অশ্লীলতা, পাপাচার, প্রবৃত্তি পূজা, ক্ষণস্থায়ী ভোগবিলাসের অন্ধ মোহ থেকে মুক্ত করে পবিত্র ও জান্নাতি জীবনের সন্ধান দেয়।
তবে সমাজে দেখা যায়, অনেকে নামাজ পড়ে কিন্তু পাপ কাজে নিমজ্জিত হয়ে আছে। মসজিদের নিয়মিত মুসল্লি কিন্তু ঘুষ খায়, সুদি কারবার করে, এতিমের সম্পদ দখল করে, প্রতিবেশীর হক নষ্ট করে, উত্তরাধিকার থেকে আত্মীয়দের বঞ্চিত করে, ব্যভিচারসহ নানা পাপ করে।
ইমাম তবারি, ইবনে কাসির, কুরতুবি, আলুসিসহ সংখ্যাগরিষ্ঠ তাফসিরবিদের মতে, ‘এই আয়াতের মর্ম হলো, তাকবির, তাসবিহ, কেরাত, আল্লাহর সামনে কিয়াম ও রুকু-সেজদাহসহ অনেক আমলের সমষ্টি হচ্ছে নামাজ। এ কারণে নামাজ যেন মুসল্লিকে বলে, তুমি কোনো অশ্লীল বা অন্যায় কাজ কোরো না। তুমি এমন প্রভুর নাফরমানি কোরো না, যিনি তোমার কৃত ইবাদতসমূহের প্রকৃত হকদার। তুমি এখন কীভাবে তাঁর অবাধ্য হবে, অথচ তুমি এমন আমল করেছ, যা তাঁর বড়ত্ব ও মহত্ত্বকে প্রকাশ করে। এর পরও যদি তাঁর অবাধ্য হও, তবে এর মাধ্যমে তুমি স্ববিরোধী কাজে লিপ্ত হলে। (আর স্ববিরোধী কাজের মাধ্যমে ব্যক্তি কোন স্তরে নেমে আসে,, সেটা তোমার ভালোই জানা আছে।) (তাফসিরে রুহুল মাআনি: ১০ / ৪৮২)
নামাজ ইসলামের মূল স্তম্ভ। আল্লাহর পক্ষ থেকে বান্দার জন্য বিশেষ নেয়ামত। কোরআনে ৮২ বার নামাজের কথা এসেছে। নামাজে যদি একনিষ্ঠতা, বিনয় ও নম্রতা এবং পূর্ণ মনোযোগ না থাকে, তাহলে নামাজ অশ্লীলতা ও মন্দ কাজ থেকে ব্যক্তিকে বিরত রাখবে না। রাসুল (সা.) বলেন, ‘আল্লাহর ইবাদত করো এমনভাবে, যেন তাঁকে তুমি দেখতে পাচ্ছ। আর যদি দেখতে না পাও, তবে তিনি যেন তোমাকে দেখছেন।’ (বুখারি: ৫০)
রোমানদের জয়ের ভবিষ্যদ্বাণী—সুরা রুম
সুরা রুম মক্কায় অবতীর্ণ। এ সুরার আয়াত সংখ্যা ৬০। কোরআনের ৩০তম সুরা এটি। এই সুরার শুরুতে রোমান ও পার্সিয়ানদের যুদ্ধ ঘিরে মক্কার মুসলমান ও কাফেরদের আনন্দ-বেদনার কথা রয়েছে। তখন ৬০৩ খ্রিষ্টাব্দ। রোমানরা জীবন-মৃত্যুর চরম সংকটকাল অতিক্রম করছিল। একের পর এক যুদ্ধে পরাজিত হচ্ছিল। ৬১৫ খ্রিষ্টাব্দে পার্সিয়ানরা দামেস্ক, বায়তুল মুকাদ্দাস পর্যন্ত দখল করে নেয়। এতে মুসলমানদের মন ভাঙে। কাফেররা খুশি হয়। কারণ পার্সিয়ানরা ছিল তাদের মতো পৌত্তলিক। অন্যদিকে মুসলিমদের মতো রোমানরাও নবী, আসমানি কিতাব ও আখিরাত ইত্যাদিতে বিশ্বাসী ছিল।
এ সময় কোরআন ভবিষ্যদ্বাণী করে, কয়েক বছরের মধ্যেই রোমানরা পারসিকদের ওপর বিজয় লাভ করবে। মুশরিকরা ভবিষ্যদ্বাণীটি শুনে বিদ্রুপ করেছিল। কিন্তু ঠিক ৯ বছরের মাথায় কোরআনের এই ভবিষ্যদ্বাণী সত্য হয়েছিল। ৬২৪ সালে রোমানরা ইরানিদের সবচেয়ে বড় অগ্নিকুণ্ড ভেঙে ফেলে।
ভাষার বৈচিত্র্যে স্রষ্টার নিদর্শন
ভাষা আল্লাহর নেয়ামত। সৃষ্টির প্রথম প্রভাত থেকে মানুষের জন্য ভাষা ছিল। পৃথিবীতে হাজারো রকমের ভাষা আছে। সব নবী-রাসুল স্বজাতির ভাষায় পণ্ডিত ছিলেন। তাঁরা জাতিকে মাতৃভাষায় দাওয়াত দিতেন। মানুষের মধ্যে আছে ভাষার ভিন্নতা, রুচির ভিন্নতা ও রঙের ভিন্নতা। ভাষাবৈচিত্র্যে রয়েছে আল্লাহর নিদর্শন। কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘আর তাঁর নিদর্শনাবলির মধ্যে রয়েছে আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবীর সৃষ্টি এবং তোমাদের ভাষা ও বর্ণের বৈচিত্র্য।’ (সুরা রুম: ২২)
সুরা লোকমানের বিষয়বস্তু
সুরা লোকমান মক্কায় অবতীর্ণ। এই সুরার আয়াত সংখ্যা ৩৪। কোরআনের ৩১তম সুরা এটি। এই সুরায় আল্লাহ তাআলা সন্তানের প্রতি হজরত লোকমান হাকিমের কিছু প্রজ্ঞাপূর্ণ উপদেশ তুলে ধরেছেন। এ কারণে এই সুরার নাম লোকমান।
সন্তানের প্রতি পিতা লোকমানের অমূল্য উপদেশ
সুরা লোকমানের ১২ থেকে ১৯ নম্বর আয়াতে সন্তানের প্রতি লোকমান হাকিমের প্রজ্ঞাপূর্ণ উপদেশের কথা বর্ণনা করা হয়েছে। মুফাসসিরদের মতে, লোকমান নবী ছিলেন না। কিন্তু তিনি এতটা ধার্মিক ও জ্ঞানী ছিলেন যে, মহান আল্লাহ তাঁর তাকওয়ায় মুগ্ধ হয়ে তাঁকে প্রজ্ঞা শিক্ষা দিয়েছিলেন। সন্তানের প্রতি তাঁর দেওয়া উপদেশগুলোয় আল্লাহ খুশি হয়ে সেগুলো কোরআনে বর্ণনা করেছেন। উপদেশগুলো হলো—
১. আল্লাহর সঙ্গে কাউকে শরিক কোরো না
২. বাবা-মায়ের সঙ্গে সদাচার কোরো
৩. বাবা-মা যদি আল্লাহর সঙ্গে কাউকে শরিক করতে বলে, তাহলে তাঁদের কথা গ্রহণ করবে না
৪. মনে আল্লাহর স্মরণ জাগ্রত রাখো
৫. নামাজ কায়েম করো
৬. নেক কাজের আদেশ দাও
৭. মন্দ কাজ থেকে নিষেধ করো
৮. বিপদে ধৈর্যধারণ করো
৯. অহংকারবশে মানুষকে অবজ্ঞা কোরো না
১০. পৃথিবীতে গর্বভরে বিচরণ কোরো না
১১. মধ্যপন্থা অবলম্বন কোরো
১২. কণ্ঠস্বর নিচু রাখো
পালক পুত্রের বিধান
প্রাক-ইসলামি যুগে আরবে পালক সন্তানকে ঔরসজাত সন্তানের মতোই মনে করা হতো। ইসলাম মনে করে, বাবা-মা ও সন্তানের পরিচয়ের বাস্তব ভিত্তি হলো ঔরস ও গর্ভধারণ। রাসুলুল্লাহ (সা.)-ও জায়েদ ইবনে হারেসা নামে এক সাহাবিকে দত্তক নিয়েছিলেন। তাঁকে সবাই জায়েদ ইবনে মোহাম্মাদ—অর্থাৎ মুহাম্মদের ছেলে বলে ডাকত। কোরআনে বিষয়টি নিষেধ করে দেওয়া হয়। পরে সবাই তাঁকে জায়েদ ইবনে হারেসা বলেই ডাকা আরম্ভ করে। সুরা আহজাবের ৪ থেকে ৫ নম্বর আয়াতে পালকপুত্র পুত্র নয়, তাকে তাদের পিতৃপরিচয়ে ডাকা, পরিচয় জানা না থাকলে ভাই-বন্ধু হিসেবে গ্রহণের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি জেনেশুনে নিজের বাবাকে ছাড়া অন্য কাউকে বাবা বলে দাবি করে, তার জন্য জান্নাত হারাম।’ (বুখারি: ৪৩২৬)
এ ছাড়া তারাবির আজকের অংশে মাতৃভূমি ত্যাগ, সামাজিক শিষ্টাচার, কোরআন অস্বীকারের পরিণাম, দীনের পথে বিপদ, ভ্রমণ, বাতাস, মুমিন ও কাফেরের অবস্থা, ছয় দিনে পৃথিবী সৃষ্টি, মুমিনের পুরস্কার, নবীদের জীবন উম্মতের আদর্শ, দুনিয়ার মায়া ত্যাগ, জাকাত ইত্যাদি বিষয়ের আলোচনা রয়েছে।
লেখক: ইসলামবিষয়ক গবেষক ও সাংবাদিক
বিস্তারিত পড়ুন:
রায়হান রাশেদ

আজ খতমে তারাবিতে পবিত্র কোরআনের ২১তম পারা তিলাওয়াত করা হবে। সুরা আনকাবুতের ৪৫ থেকে সুরা রুম, সুরা লোকমান, সুরা সাজদা ও আহজাবের ১ থেকে ৩০ নম্বর আয়াত পর্যন্ত পড়া হবে। এই অংশে নামাজের উপকারিতা, ধৈর্য, স্বামী-স্ত্রীর ভালোবাসা, সুদ, সন্তানের প্রতি লোকমান (আ.)-এর উপদেশ, পাঁচ জিনিসের জ্ঞান, পালক পুত্রের বিধান, নবীপত্নীদের প্রতি নির্দেশসহ নানা বিষয় আলোচিত হয়েছে। এখানে সংক্ষেপে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তুলে ধরা হলো—
নামাজ অশ্লীল কাজ থেকে বিরত রাখে
আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘নিশ্চয়ই নামাজ অশ্লীল ও মন্দ কাজ থেকে বিরত রাখে।’ (সুরা আনকাবুত: ৪৫) নামাজ বান্দাকে সব ধরনের অশ্লীলতা, পাপাচার, প্রবৃত্তি পূজা, ক্ষণস্থায়ী ভোগবিলাসের অন্ধ মোহ থেকে মুক্ত করে পবিত্র ও জান্নাতি জীবনের সন্ধান দেয়।
তবে সমাজে দেখা যায়, অনেকে নামাজ পড়ে কিন্তু পাপ কাজে নিমজ্জিত হয়ে আছে। মসজিদের নিয়মিত মুসল্লি কিন্তু ঘুষ খায়, সুদি কারবার করে, এতিমের সম্পদ দখল করে, প্রতিবেশীর হক নষ্ট করে, উত্তরাধিকার থেকে আত্মীয়দের বঞ্চিত করে, ব্যভিচারসহ নানা পাপ করে।
ইমাম তবারি, ইবনে কাসির, কুরতুবি, আলুসিসহ সংখ্যাগরিষ্ঠ তাফসিরবিদের মতে, ‘এই আয়াতের মর্ম হলো, তাকবির, তাসবিহ, কেরাত, আল্লাহর সামনে কিয়াম ও রুকু-সেজদাহসহ অনেক আমলের সমষ্টি হচ্ছে নামাজ। এ কারণে নামাজ যেন মুসল্লিকে বলে, তুমি কোনো অশ্লীল বা অন্যায় কাজ কোরো না। তুমি এমন প্রভুর নাফরমানি কোরো না, যিনি তোমার কৃত ইবাদতসমূহের প্রকৃত হকদার। তুমি এখন কীভাবে তাঁর অবাধ্য হবে, অথচ তুমি এমন আমল করেছ, যা তাঁর বড়ত্ব ও মহত্ত্বকে প্রকাশ করে। এর পরও যদি তাঁর অবাধ্য হও, তবে এর মাধ্যমে তুমি স্ববিরোধী কাজে লিপ্ত হলে। (আর স্ববিরোধী কাজের মাধ্যমে ব্যক্তি কোন স্তরে নেমে আসে,, সেটা তোমার ভালোই জানা আছে।) (তাফসিরে রুহুল মাআনি: ১০ / ৪৮২)
নামাজ ইসলামের মূল স্তম্ভ। আল্লাহর পক্ষ থেকে বান্দার জন্য বিশেষ নেয়ামত। কোরআনে ৮২ বার নামাজের কথা এসেছে। নামাজে যদি একনিষ্ঠতা, বিনয় ও নম্রতা এবং পূর্ণ মনোযোগ না থাকে, তাহলে নামাজ অশ্লীলতা ও মন্দ কাজ থেকে ব্যক্তিকে বিরত রাখবে না। রাসুল (সা.) বলেন, ‘আল্লাহর ইবাদত করো এমনভাবে, যেন তাঁকে তুমি দেখতে পাচ্ছ। আর যদি দেখতে না পাও, তবে তিনি যেন তোমাকে দেখছেন।’ (বুখারি: ৫০)
রোমানদের জয়ের ভবিষ্যদ্বাণী—সুরা রুম
সুরা রুম মক্কায় অবতীর্ণ। এ সুরার আয়াত সংখ্যা ৬০। কোরআনের ৩০তম সুরা এটি। এই সুরার শুরুতে রোমান ও পার্সিয়ানদের যুদ্ধ ঘিরে মক্কার মুসলমান ও কাফেরদের আনন্দ-বেদনার কথা রয়েছে। তখন ৬০৩ খ্রিষ্টাব্দ। রোমানরা জীবন-মৃত্যুর চরম সংকটকাল অতিক্রম করছিল। একের পর এক যুদ্ধে পরাজিত হচ্ছিল। ৬১৫ খ্রিষ্টাব্দে পার্সিয়ানরা দামেস্ক, বায়তুল মুকাদ্দাস পর্যন্ত দখল করে নেয়। এতে মুসলমানদের মন ভাঙে। কাফেররা খুশি হয়। কারণ পার্সিয়ানরা ছিল তাদের মতো পৌত্তলিক। অন্যদিকে মুসলিমদের মতো রোমানরাও নবী, আসমানি কিতাব ও আখিরাত ইত্যাদিতে বিশ্বাসী ছিল।
এ সময় কোরআন ভবিষ্যদ্বাণী করে, কয়েক বছরের মধ্যেই রোমানরা পারসিকদের ওপর বিজয় লাভ করবে। মুশরিকরা ভবিষ্যদ্বাণীটি শুনে বিদ্রুপ করেছিল। কিন্তু ঠিক ৯ বছরের মাথায় কোরআনের এই ভবিষ্যদ্বাণী সত্য হয়েছিল। ৬২৪ সালে রোমানরা ইরানিদের সবচেয়ে বড় অগ্নিকুণ্ড ভেঙে ফেলে।
ভাষার বৈচিত্র্যে স্রষ্টার নিদর্শন
ভাষা আল্লাহর নেয়ামত। সৃষ্টির প্রথম প্রভাত থেকে মানুষের জন্য ভাষা ছিল। পৃথিবীতে হাজারো রকমের ভাষা আছে। সব নবী-রাসুল স্বজাতির ভাষায় পণ্ডিত ছিলেন। তাঁরা জাতিকে মাতৃভাষায় দাওয়াত দিতেন। মানুষের মধ্যে আছে ভাষার ভিন্নতা, রুচির ভিন্নতা ও রঙের ভিন্নতা। ভাষাবৈচিত্র্যে রয়েছে আল্লাহর নিদর্শন। কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘আর তাঁর নিদর্শনাবলির মধ্যে রয়েছে আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবীর সৃষ্টি এবং তোমাদের ভাষা ও বর্ণের বৈচিত্র্য।’ (সুরা রুম: ২২)
সুরা লোকমানের বিষয়বস্তু
সুরা লোকমান মক্কায় অবতীর্ণ। এই সুরার আয়াত সংখ্যা ৩৪। কোরআনের ৩১তম সুরা এটি। এই সুরায় আল্লাহ তাআলা সন্তানের প্রতি হজরত লোকমান হাকিমের কিছু প্রজ্ঞাপূর্ণ উপদেশ তুলে ধরেছেন। এ কারণে এই সুরার নাম লোকমান।
সন্তানের প্রতি পিতা লোকমানের অমূল্য উপদেশ
সুরা লোকমানের ১২ থেকে ১৯ নম্বর আয়াতে সন্তানের প্রতি লোকমান হাকিমের প্রজ্ঞাপূর্ণ উপদেশের কথা বর্ণনা করা হয়েছে। মুফাসসিরদের মতে, লোকমান নবী ছিলেন না। কিন্তু তিনি এতটা ধার্মিক ও জ্ঞানী ছিলেন যে, মহান আল্লাহ তাঁর তাকওয়ায় মুগ্ধ হয়ে তাঁকে প্রজ্ঞা শিক্ষা দিয়েছিলেন। সন্তানের প্রতি তাঁর দেওয়া উপদেশগুলোয় আল্লাহ খুশি হয়ে সেগুলো কোরআনে বর্ণনা করেছেন। উপদেশগুলো হলো—
১. আল্লাহর সঙ্গে কাউকে শরিক কোরো না
২. বাবা-মায়ের সঙ্গে সদাচার কোরো
৩. বাবা-মা যদি আল্লাহর সঙ্গে কাউকে শরিক করতে বলে, তাহলে তাঁদের কথা গ্রহণ করবে না
৪. মনে আল্লাহর স্মরণ জাগ্রত রাখো
৫. নামাজ কায়েম করো
৬. নেক কাজের আদেশ দাও
৭. মন্দ কাজ থেকে নিষেধ করো
৮. বিপদে ধৈর্যধারণ করো
৯. অহংকারবশে মানুষকে অবজ্ঞা কোরো না
১০. পৃথিবীতে গর্বভরে বিচরণ কোরো না
১১. মধ্যপন্থা অবলম্বন কোরো
১২. কণ্ঠস্বর নিচু রাখো
পালক পুত্রের বিধান
প্রাক-ইসলামি যুগে আরবে পালক সন্তানকে ঔরসজাত সন্তানের মতোই মনে করা হতো। ইসলাম মনে করে, বাবা-মা ও সন্তানের পরিচয়ের বাস্তব ভিত্তি হলো ঔরস ও গর্ভধারণ। রাসুলুল্লাহ (সা.)-ও জায়েদ ইবনে হারেসা নামে এক সাহাবিকে দত্তক নিয়েছিলেন। তাঁকে সবাই জায়েদ ইবনে মোহাম্মাদ—অর্থাৎ মুহাম্মদের ছেলে বলে ডাকত। কোরআনে বিষয়টি নিষেধ করে দেওয়া হয়। পরে সবাই তাঁকে জায়েদ ইবনে হারেসা বলেই ডাকা আরম্ভ করে। সুরা আহজাবের ৪ থেকে ৫ নম্বর আয়াতে পালকপুত্র পুত্র নয়, তাকে তাদের পিতৃপরিচয়ে ডাকা, পরিচয় জানা না থাকলে ভাই-বন্ধু হিসেবে গ্রহণের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি জেনেশুনে নিজের বাবাকে ছাড়া অন্য কাউকে বাবা বলে দাবি করে, তার জন্য জান্নাত হারাম।’ (বুখারি: ৪৩২৬)
এ ছাড়া তারাবির আজকের অংশে মাতৃভূমি ত্যাগ, সামাজিক শিষ্টাচার, কোরআন অস্বীকারের পরিণাম, দীনের পথে বিপদ, ভ্রমণ, বাতাস, মুমিন ও কাফেরের অবস্থা, ছয় দিনে পৃথিবী সৃষ্টি, মুমিনের পুরস্কার, নবীদের জীবন উম্মতের আদর্শ, দুনিয়ার মায়া ত্যাগ, জাকাত ইত্যাদি বিষয়ের আলোচনা রয়েছে।
লেখক: ইসলামবিষয়ক গবেষক ও সাংবাদিক
বিস্তারিত পড়ুন:

আজ খতমে তারাবিতে পবিত্র কোরআনের ২১তম পারা তিলাওয়াত করা হবে। সুরা আনকাবুতের ৪৫ থেকে সুরা রুম, সুরা লোকমান, সুরা সাজদা ও আহজাবের ১ থেকে ৩০ নম্বর আয়াত পর্যন্ত পড়া হবে। এই অংশে নামাজের উপকারিতা, ধৈর্য, স্বামী-স্ত্রীর ভালোবাসা, সুদ, সন্তানের প্রতি লোকমান (আ.)-এর উপদেশ, পাঁচ জিনিসের জ্ঞান, পালক পুত্রের বিধান, নবীপত্নীদের প্রতি নির্দেশসহ নানা বিষয় আলোচিত হয়েছে। এখানে সংক্ষেপে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তুলে ধরা হলো—
নামাজ অশ্লীল কাজ থেকে বিরত রাখে
আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘নিশ্চয়ই নামাজ অশ্লীল ও মন্দ কাজ থেকে বিরত রাখে।’ (সুরা আনকাবুত: ৪৫) নামাজ বান্দাকে সব ধরনের অশ্লীলতা, পাপাচার, প্রবৃত্তি পূজা, ক্ষণস্থায়ী ভোগবিলাসের অন্ধ মোহ থেকে মুক্ত করে পবিত্র ও জান্নাতি জীবনের সন্ধান দেয়।
তবে সমাজে দেখা যায়, অনেকে নামাজ পড়ে কিন্তু পাপ কাজে নিমজ্জিত হয়ে আছে। মসজিদের নিয়মিত মুসল্লি কিন্তু ঘুষ খায়, সুদি কারবার করে, এতিমের সম্পদ দখল করে, প্রতিবেশীর হক নষ্ট করে, উত্তরাধিকার থেকে আত্মীয়দের বঞ্চিত করে, ব্যভিচারসহ নানা পাপ করে।
ইমাম তবারি, ইবনে কাসির, কুরতুবি, আলুসিসহ সংখ্যাগরিষ্ঠ তাফসিরবিদের মতে, ‘এই আয়াতের মর্ম হলো, তাকবির, তাসবিহ, কেরাত, আল্লাহর সামনে কিয়াম ও রুকু-সেজদাহসহ অনেক আমলের সমষ্টি হচ্ছে নামাজ। এ কারণে নামাজ যেন মুসল্লিকে বলে, তুমি কোনো অশ্লীল বা অন্যায় কাজ কোরো না। তুমি এমন প্রভুর নাফরমানি কোরো না, যিনি তোমার কৃত ইবাদতসমূহের প্রকৃত হকদার। তুমি এখন কীভাবে তাঁর অবাধ্য হবে, অথচ তুমি এমন আমল করেছ, যা তাঁর বড়ত্ব ও মহত্ত্বকে প্রকাশ করে। এর পরও যদি তাঁর অবাধ্য হও, তবে এর মাধ্যমে তুমি স্ববিরোধী কাজে লিপ্ত হলে। (আর স্ববিরোধী কাজের মাধ্যমে ব্যক্তি কোন স্তরে নেমে আসে,, সেটা তোমার ভালোই জানা আছে।) (তাফসিরে রুহুল মাআনি: ১০ / ৪৮২)
নামাজ ইসলামের মূল স্তম্ভ। আল্লাহর পক্ষ থেকে বান্দার জন্য বিশেষ নেয়ামত। কোরআনে ৮২ বার নামাজের কথা এসেছে। নামাজে যদি একনিষ্ঠতা, বিনয় ও নম্রতা এবং পূর্ণ মনোযোগ না থাকে, তাহলে নামাজ অশ্লীলতা ও মন্দ কাজ থেকে ব্যক্তিকে বিরত রাখবে না। রাসুল (সা.) বলেন, ‘আল্লাহর ইবাদত করো এমনভাবে, যেন তাঁকে তুমি দেখতে পাচ্ছ। আর যদি দেখতে না পাও, তবে তিনি যেন তোমাকে দেখছেন।’ (বুখারি: ৫০)
রোমানদের জয়ের ভবিষ্যদ্বাণী—সুরা রুম
সুরা রুম মক্কায় অবতীর্ণ। এ সুরার আয়াত সংখ্যা ৬০। কোরআনের ৩০তম সুরা এটি। এই সুরার শুরুতে রোমান ও পার্সিয়ানদের যুদ্ধ ঘিরে মক্কার মুসলমান ও কাফেরদের আনন্দ-বেদনার কথা রয়েছে। তখন ৬০৩ খ্রিষ্টাব্দ। রোমানরা জীবন-মৃত্যুর চরম সংকটকাল অতিক্রম করছিল। একের পর এক যুদ্ধে পরাজিত হচ্ছিল। ৬১৫ খ্রিষ্টাব্দে পার্সিয়ানরা দামেস্ক, বায়তুল মুকাদ্দাস পর্যন্ত দখল করে নেয়। এতে মুসলমানদের মন ভাঙে। কাফেররা খুশি হয়। কারণ পার্সিয়ানরা ছিল তাদের মতো পৌত্তলিক। অন্যদিকে মুসলিমদের মতো রোমানরাও নবী, আসমানি কিতাব ও আখিরাত ইত্যাদিতে বিশ্বাসী ছিল।
এ সময় কোরআন ভবিষ্যদ্বাণী করে, কয়েক বছরের মধ্যেই রোমানরা পারসিকদের ওপর বিজয় লাভ করবে। মুশরিকরা ভবিষ্যদ্বাণীটি শুনে বিদ্রুপ করেছিল। কিন্তু ঠিক ৯ বছরের মাথায় কোরআনের এই ভবিষ্যদ্বাণী সত্য হয়েছিল। ৬২৪ সালে রোমানরা ইরানিদের সবচেয়ে বড় অগ্নিকুণ্ড ভেঙে ফেলে।
ভাষার বৈচিত্র্যে স্রষ্টার নিদর্শন
ভাষা আল্লাহর নেয়ামত। সৃষ্টির প্রথম প্রভাত থেকে মানুষের জন্য ভাষা ছিল। পৃথিবীতে হাজারো রকমের ভাষা আছে। সব নবী-রাসুল স্বজাতির ভাষায় পণ্ডিত ছিলেন। তাঁরা জাতিকে মাতৃভাষায় দাওয়াত দিতেন। মানুষের মধ্যে আছে ভাষার ভিন্নতা, রুচির ভিন্নতা ও রঙের ভিন্নতা। ভাষাবৈচিত্র্যে রয়েছে আল্লাহর নিদর্শন। কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘আর তাঁর নিদর্শনাবলির মধ্যে রয়েছে আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবীর সৃষ্টি এবং তোমাদের ভাষা ও বর্ণের বৈচিত্র্য।’ (সুরা রুম: ২২)
সুরা লোকমানের বিষয়বস্তু
সুরা লোকমান মক্কায় অবতীর্ণ। এই সুরার আয়াত সংখ্যা ৩৪। কোরআনের ৩১তম সুরা এটি। এই সুরায় আল্লাহ তাআলা সন্তানের প্রতি হজরত লোকমান হাকিমের কিছু প্রজ্ঞাপূর্ণ উপদেশ তুলে ধরেছেন। এ কারণে এই সুরার নাম লোকমান।
সন্তানের প্রতি পিতা লোকমানের অমূল্য উপদেশ
সুরা লোকমানের ১২ থেকে ১৯ নম্বর আয়াতে সন্তানের প্রতি লোকমান হাকিমের প্রজ্ঞাপূর্ণ উপদেশের কথা বর্ণনা করা হয়েছে। মুফাসসিরদের মতে, লোকমান নবী ছিলেন না। কিন্তু তিনি এতটা ধার্মিক ও জ্ঞানী ছিলেন যে, মহান আল্লাহ তাঁর তাকওয়ায় মুগ্ধ হয়ে তাঁকে প্রজ্ঞা শিক্ষা দিয়েছিলেন। সন্তানের প্রতি তাঁর দেওয়া উপদেশগুলোয় আল্লাহ খুশি হয়ে সেগুলো কোরআনে বর্ণনা করেছেন। উপদেশগুলো হলো—
১. আল্লাহর সঙ্গে কাউকে শরিক কোরো না
২. বাবা-মায়ের সঙ্গে সদাচার কোরো
৩. বাবা-মা যদি আল্লাহর সঙ্গে কাউকে শরিক করতে বলে, তাহলে তাঁদের কথা গ্রহণ করবে না
৪. মনে আল্লাহর স্মরণ জাগ্রত রাখো
৫. নামাজ কায়েম করো
৬. নেক কাজের আদেশ দাও
৭. মন্দ কাজ থেকে নিষেধ করো
৮. বিপদে ধৈর্যধারণ করো
৯. অহংকারবশে মানুষকে অবজ্ঞা কোরো না
১০. পৃথিবীতে গর্বভরে বিচরণ কোরো না
১১. মধ্যপন্থা অবলম্বন কোরো
১২. কণ্ঠস্বর নিচু রাখো
পালক পুত্রের বিধান
প্রাক-ইসলামি যুগে আরবে পালক সন্তানকে ঔরসজাত সন্তানের মতোই মনে করা হতো। ইসলাম মনে করে, বাবা-মা ও সন্তানের পরিচয়ের বাস্তব ভিত্তি হলো ঔরস ও গর্ভধারণ। রাসুলুল্লাহ (সা.)-ও জায়েদ ইবনে হারেসা নামে এক সাহাবিকে দত্তক নিয়েছিলেন। তাঁকে সবাই জায়েদ ইবনে মোহাম্মাদ—অর্থাৎ মুহাম্মদের ছেলে বলে ডাকত। কোরআনে বিষয়টি নিষেধ করে দেওয়া হয়। পরে সবাই তাঁকে জায়েদ ইবনে হারেসা বলেই ডাকা আরম্ভ করে। সুরা আহজাবের ৪ থেকে ৫ নম্বর আয়াতে পালকপুত্র পুত্র নয়, তাকে তাদের পিতৃপরিচয়ে ডাকা, পরিচয় জানা না থাকলে ভাই-বন্ধু হিসেবে গ্রহণের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি জেনেশুনে নিজের বাবাকে ছাড়া অন্য কাউকে বাবা বলে দাবি করে, তার জন্য জান্নাত হারাম।’ (বুখারি: ৪৩২৬)
এ ছাড়া তারাবির আজকের অংশে মাতৃভূমি ত্যাগ, সামাজিক শিষ্টাচার, কোরআন অস্বীকারের পরিণাম, দীনের পথে বিপদ, ভ্রমণ, বাতাস, মুমিন ও কাফেরের অবস্থা, ছয় দিনে পৃথিবী সৃষ্টি, মুমিনের পুরস্কার, নবীদের জীবন উম্মতের আদর্শ, দুনিয়ার মায়া ত্যাগ, জাকাত ইত্যাদি বিষয়ের আলোচনা রয়েছে।
লেখক: ইসলামবিষয়ক গবেষক ও সাংবাদিক
বিস্তারিত পড়ুন:

শায়খ জুলফিকার আহমদ নকশবন্দি ১৯৫৩ সালের ১ এপ্রিল পাকিস্তানের ঝং জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি নকশবন্দি তরিকার একজন খ্যাতিমান সুফি সাধক ছিলেন এবং দেওবন্দি আন্দোলনের সঙ্গে তাঁর গভীর সম্পর্ক ছিল। ইসলামি আধ্যাত্মিকতা, তাজকিয়া ও আত্মশুদ্ধির ক্ষেত্রে তিনি বিশ্বব্যাপী সুপরিচিত ছিলেন।
২ ঘণ্টা আগে
ইসলামে দান-সদকা অত্যন্ত মর্যাদাপূর্ণ একটি আমল। পবিত্র কোরআন ও হাদিসে এর অসংখ্য ফজিলতের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। সদকা কেবল দরিদ্রের প্রয়োজনই মেটায় না, বরং এটি বান্দা ও তার প্রতিপালকের মধ্যে সম্পর্ককে আরও মজবুত করে।
১১ ঘণ্টা আগে
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
১৭ ঘণ্টা আগে
ভুল করা মানুষের স্বভাবজাত বিষয়। জীবন চলার পথে ছোট-বড় ভুল সবারই হয়। কিন্তু সে ভুলকে কীভাবে সংশোধন করতে হবে, তা মানবজাতির সর্বশ্রেষ্ঠ শিক্ষাবিদ হজরত মুহাম্মদ (সা.) শিখিয়ে গেছেন। তিনি ভুলকে লজ্জা বা অপমানের কারণ হিসেবে দেখেননি; বরং এটিকে ইতিবাচক পরিবর্তনের একটি সুযোগ হিসেবে গ্রহণ করেছেন।
১ দিন আগেইসলাম ডেস্ক

প্রখ্যাত সুফি সাধক, নকশবন্দি তরিকার প্রভাবশালী পীর ও ইসলামিক স্কলার শায়খ জুলফিকার আহমদ নকশবন্দি ইন্তেকাল করেছেন।
আজ রোববার (১৪ ডিসেম্বর) পাকিস্তানের লাহোরে তিনি শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।
তাঁর ইন্তেকালের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তাঁরই খলিফা মাওলানা মাসুমুল হক। একই তথ্য নিশ্চিত করেছেন পাকিস্তানের গণমাধ্যম ম্যাসেজ টিভির পরিচালক আবদুল মতিন।
শায়খ জুলফিকার আহমদ নকশবন্দি ১৯৫৩ সালের ১ এপ্রিল পাকিস্তানের ঝং জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি নকশবন্দি তরিকার একজন খ্যাতিমান সুফি সাধক ছিলেন এবং দেওবন্দি আন্দোলনের সঙ্গে তাঁর গভীর সম্পর্ক ছিল। ইসলামি আধ্যাত্মিকতা, তাজকিয়া ও আত্মশুদ্ধির ক্ষেত্রে তিনি বিশ্বব্যাপী সুপরিচিত ছিলেন।
শায়খ জুলফিকার আহমদ ঝং জেলায় মাহদুল ফাকির আল ইসলামি নামে একটি ইসলামি প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করেন। প্রতিষ্ঠানটি তাজকিয়া, ইসলাহে নফস ও সুফি শিক্ষার একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত। দেশ-বিদেশে তাঁর অসংখ্য মুরিদ ও অনুসারী রয়েছেন।
শায়খ জুলফিকার আহমদ নকশবন্দি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে দাওয়াতি সফর করেছেন। দারুল উলুম দেওবন্দসহ বহু গুরুত্বপূর্ণ ইসলামি প্রতিষ্ঠানে তিনি বক্তব্য দিয়েছেন। তাঁর বয়ান ও নসিহত ইউটিউবসহ বিভিন্ন ডিজিটাল মাধ্যমে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করে।
শায়খ জুলফিকার আহমদ একজন প্রথিতযশা লেখকও ছিলেন। ফিকহ, আত্মশুদ্ধি, পারিবারিক জীবন এবং নারীদের ইসলামি ভূমিকা বিষয়ে রচিত তাঁর বহু গ্রন্থ মুসলিম সমাজে বিশেষভাবে সমাদৃত।

প্রখ্যাত সুফি সাধক, নকশবন্দি তরিকার প্রভাবশালী পীর ও ইসলামিক স্কলার শায়খ জুলফিকার আহমদ নকশবন্দি ইন্তেকাল করেছেন।
আজ রোববার (১৪ ডিসেম্বর) পাকিস্তানের লাহোরে তিনি শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।
তাঁর ইন্তেকালের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তাঁরই খলিফা মাওলানা মাসুমুল হক। একই তথ্য নিশ্চিত করেছেন পাকিস্তানের গণমাধ্যম ম্যাসেজ টিভির পরিচালক আবদুল মতিন।
শায়খ জুলফিকার আহমদ নকশবন্দি ১৯৫৩ সালের ১ এপ্রিল পাকিস্তানের ঝং জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি নকশবন্দি তরিকার একজন খ্যাতিমান সুফি সাধক ছিলেন এবং দেওবন্দি আন্দোলনের সঙ্গে তাঁর গভীর সম্পর্ক ছিল। ইসলামি আধ্যাত্মিকতা, তাজকিয়া ও আত্মশুদ্ধির ক্ষেত্রে তিনি বিশ্বব্যাপী সুপরিচিত ছিলেন।
শায়খ জুলফিকার আহমদ ঝং জেলায় মাহদুল ফাকির আল ইসলামি নামে একটি ইসলামি প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করেন। প্রতিষ্ঠানটি তাজকিয়া, ইসলাহে নফস ও সুফি শিক্ষার একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত। দেশ-বিদেশে তাঁর অসংখ্য মুরিদ ও অনুসারী রয়েছেন।
শায়খ জুলফিকার আহমদ নকশবন্দি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে দাওয়াতি সফর করেছেন। দারুল উলুম দেওবন্দসহ বহু গুরুত্বপূর্ণ ইসলামি প্রতিষ্ঠানে তিনি বক্তব্য দিয়েছেন। তাঁর বয়ান ও নসিহত ইউটিউবসহ বিভিন্ন ডিজিটাল মাধ্যমে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করে।
শায়খ জুলফিকার আহমদ একজন প্রথিতযশা লেখকও ছিলেন। ফিকহ, আত্মশুদ্ধি, পারিবারিক জীবন এবং নারীদের ইসলামি ভূমিকা বিষয়ে রচিত তাঁর বহু গ্রন্থ মুসলিম সমাজে বিশেষভাবে সমাদৃত।

আজ খতমে তারাবিতে পবিত্র কোরআনের ২১তম পারা তিলাওয়াত করা হবে। সুরা আনকাবুতের ৪৫ থেকে সুরা রুম, সুরা লোকমান, সুরা সাজদা ও আহজাবের ১ থেকে ৩০ নম্বর আয়াত পর্যন্ত পড়া হবে। এই অংশে নামাজের উপকারিতা, ধৈর্য, স্বামী-স্ত্রীর ভালোবাসা, সুদ, সন্তানের প্রতি লোকমান (আ.)-এর উপদেশ, পাঁচ জিনিসের জ্ঞান, পালক পুত্রের বি
০৯ এপ্রিল ২০২৩
ইসলামে দান-সদকা অত্যন্ত মর্যাদাপূর্ণ একটি আমল। পবিত্র কোরআন ও হাদিসে এর অসংখ্য ফজিলতের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। সদকা কেবল দরিদ্রের প্রয়োজনই মেটায় না, বরং এটি বান্দা ও তার প্রতিপালকের মধ্যে সম্পর্ককে আরও মজবুত করে।
১১ ঘণ্টা আগে
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
১৭ ঘণ্টা আগে
ভুল করা মানুষের স্বভাবজাত বিষয়। জীবন চলার পথে ছোট-বড় ভুল সবারই হয়। কিন্তু সে ভুলকে কীভাবে সংশোধন করতে হবে, তা মানবজাতির সর্বশ্রেষ্ঠ শিক্ষাবিদ হজরত মুহাম্মদ (সা.) শিখিয়ে গেছেন। তিনি ভুলকে লজ্জা বা অপমানের কারণ হিসেবে দেখেননি; বরং এটিকে ইতিবাচক পরিবর্তনের একটি সুযোগ হিসেবে গ্রহণ করেছেন।
১ দিন আগেইসলাম ডেস্ক

ইসলামে দান-সদকা অত্যন্ত মর্যাদাপূর্ণ একটি আমল। পবিত্র কোরআন ও হাদিসে এর অসংখ্য ফজিলতের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। সদকা কেবল দরিদ্রের প্রয়োজনই মেটায় না, বরং এটি বান্দা ও তার প্রতিপালকের মধ্যে সম্পর্ককে আরও মজবুত করে। মহানবী (সা.) সদকার এমন কিছু অসামান্য ফজিলত বর্ণনা করেছেন, যা আমাদের জীবনে এর গুরুত্ব আরও বাড়িয়ে দেয়।
সদকার এক অন্যতম ফজিলত হলো, এটি আল্লাহর ক্রোধ প্রশমিত করে। হাদিসে মহানবী (সা.) বলেন, ‘দান-সদকা আল্লাহর ক্রোধ কমায় এবং মানুষকে অপমৃত্যু থেকে রক্ষা করে।’ (জামে তিরমিজি)
মানুষ জীবনে ইচ্ছায়-অনিচ্ছায় নানা পাপ করে আল্লাহর নাফরমানিতে লিপ্ত হয়, ফলে সে আল্লাহর বিরাগভাজন হয়। এমতাবস্থায় আল্লাহর রাগ কমানোর জন্য এবং তাঁর সন্তুষ্টি ফিরে পাওয়ার জন্য সদকা এক ফলপ্রসূ আমল। সদকার বরকতে আল্লাহ সেই রাগ দূর করে দেন। এ ছাড়া, এই হাদিসের মাধ্যমে জানা যায়, সদকার কারণে আল্লাহ তাআলা দানশীল ব্যক্তিকে অপমৃত্যু থেকে রক্ষা করেন এবং তাকে ইমানের সঙ্গে মৃত্যু দান করেন।
দান-সদকা যে শুধু পরকালে সওয়াব বৃদ্ধি করে তা নয়; বরং এর বরকতে আল্লাহ দুনিয়ার সম্পদও বহুগুণ বাড়িয়ে দেন। এক হাদিসে আবু উমামা (রা.) থেকে বর্ণিত, আবু জর (রা.) রাসুল (সা.)-কে জিজ্ঞেস করলেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল, সদকা কী?’ জবাবে তিনি বললেন, ‘কয়েক গুণ। (অর্থাৎ, কোনো ব্যক্তি যে পরিমাণ আল্লাহর জন্য দান করবে, তার কয়েক গুণ বেশি সওয়াব সে পাবে)। আর আল্লাহ তাআলা বিপুল ভান্ডারের অধিকারী।’ (মুসনাদে আহমাদ)
অনেক হাদিসবিশারদ এই হাদিসের ব্যাখ্যায় বলেছেন, সদকার বরকতে আল্লাহ দুনিয়ায়ও সম্পদ বহুগুণ বাড়িয়ে দেন। আর পরকালে যে প্রতিদান সে পাবে, তা হবে এর চেয়েও বহুগুণ বেশি। বাস্তবেও দেখা যায়, যে ব্যক্তি আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস রেখে নিষ্ঠার সঙ্গে দান করেন, তাঁর সম্পদ অদ্ভুতভাবে বেড়ে যায়।

ইসলামে দান-সদকা অত্যন্ত মর্যাদাপূর্ণ একটি আমল। পবিত্র কোরআন ও হাদিসে এর অসংখ্য ফজিলতের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। সদকা কেবল দরিদ্রের প্রয়োজনই মেটায় না, বরং এটি বান্দা ও তার প্রতিপালকের মধ্যে সম্পর্ককে আরও মজবুত করে। মহানবী (সা.) সদকার এমন কিছু অসামান্য ফজিলত বর্ণনা করেছেন, যা আমাদের জীবনে এর গুরুত্ব আরও বাড়িয়ে দেয়।
সদকার এক অন্যতম ফজিলত হলো, এটি আল্লাহর ক্রোধ প্রশমিত করে। হাদিসে মহানবী (সা.) বলেন, ‘দান-সদকা আল্লাহর ক্রোধ কমায় এবং মানুষকে অপমৃত্যু থেকে রক্ষা করে।’ (জামে তিরমিজি)
মানুষ জীবনে ইচ্ছায়-অনিচ্ছায় নানা পাপ করে আল্লাহর নাফরমানিতে লিপ্ত হয়, ফলে সে আল্লাহর বিরাগভাজন হয়। এমতাবস্থায় আল্লাহর রাগ কমানোর জন্য এবং তাঁর সন্তুষ্টি ফিরে পাওয়ার জন্য সদকা এক ফলপ্রসূ আমল। সদকার বরকতে আল্লাহ সেই রাগ দূর করে দেন। এ ছাড়া, এই হাদিসের মাধ্যমে জানা যায়, সদকার কারণে আল্লাহ তাআলা দানশীল ব্যক্তিকে অপমৃত্যু থেকে রক্ষা করেন এবং তাকে ইমানের সঙ্গে মৃত্যু দান করেন।
দান-সদকা যে শুধু পরকালে সওয়াব বৃদ্ধি করে তা নয়; বরং এর বরকতে আল্লাহ দুনিয়ার সম্পদও বহুগুণ বাড়িয়ে দেন। এক হাদিসে আবু উমামা (রা.) থেকে বর্ণিত, আবু জর (রা.) রাসুল (সা.)-কে জিজ্ঞেস করলেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল, সদকা কী?’ জবাবে তিনি বললেন, ‘কয়েক গুণ। (অর্থাৎ, কোনো ব্যক্তি যে পরিমাণ আল্লাহর জন্য দান করবে, তার কয়েক গুণ বেশি সওয়াব সে পাবে)। আর আল্লাহ তাআলা বিপুল ভান্ডারের অধিকারী।’ (মুসনাদে আহমাদ)
অনেক হাদিসবিশারদ এই হাদিসের ব্যাখ্যায় বলেছেন, সদকার বরকতে আল্লাহ দুনিয়ায়ও সম্পদ বহুগুণ বাড়িয়ে দেন। আর পরকালে যে প্রতিদান সে পাবে, তা হবে এর চেয়েও বহুগুণ বেশি। বাস্তবেও দেখা যায়, যে ব্যক্তি আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস রেখে নিষ্ঠার সঙ্গে দান করেন, তাঁর সম্পদ অদ্ভুতভাবে বেড়ে যায়।

আজ খতমে তারাবিতে পবিত্র কোরআনের ২১তম পারা তিলাওয়াত করা হবে। সুরা আনকাবুতের ৪৫ থেকে সুরা রুম, সুরা লোকমান, সুরা সাজদা ও আহজাবের ১ থেকে ৩০ নম্বর আয়াত পর্যন্ত পড়া হবে। এই অংশে নামাজের উপকারিতা, ধৈর্য, স্বামী-স্ত্রীর ভালোবাসা, সুদ, সন্তানের প্রতি লোকমান (আ.)-এর উপদেশ, পাঁচ জিনিসের জ্ঞান, পালক পুত্রের বি
০৯ এপ্রিল ২০২৩
শায়খ জুলফিকার আহমদ নকশবন্দি ১৯৫৩ সালের ১ এপ্রিল পাকিস্তানের ঝং জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি নকশবন্দি তরিকার একজন খ্যাতিমান সুফি সাধক ছিলেন এবং দেওবন্দি আন্দোলনের সঙ্গে তাঁর গভীর সম্পর্ক ছিল। ইসলামি আধ্যাত্মিকতা, তাজকিয়া ও আত্মশুদ্ধির ক্ষেত্রে তিনি বিশ্বব্যাপী সুপরিচিত ছিলেন।
২ ঘণ্টা আগে
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
১৭ ঘণ্টা আগে
ভুল করা মানুষের স্বভাবজাত বিষয়। জীবন চলার পথে ছোট-বড় ভুল সবারই হয়। কিন্তু সে ভুলকে কীভাবে সংশোধন করতে হবে, তা মানবজাতির সর্বশ্রেষ্ঠ শিক্ষাবিদ হজরত মুহাম্মদ (সা.) শিখিয়ে গেছেন। তিনি ভুলকে লজ্জা বা অপমানের কারণ হিসেবে দেখেননি; বরং এটিকে ইতিবাচক পরিবর্তনের একটি সুযোগ হিসেবে গ্রহণ করেছেন।
১ দিন আগেইসলাম ডেস্ক

জীবনকে সুশৃঙ্খল করতে এবং আল্লাহর সান্নিধ্য পেতে নামাজের কোনো বিকল্প নেই। একজন মুমিনের জন্য নামাজ হলো আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি কথোপকথনের মাধ্যম। এটি এমন এক ইবাদত—যা আমাদের মনে আধ্যাত্মিক প্রশান্তি আনে, জীবনের প্রতিটি কাজে আনে বরকত।
প্রতিদিন সময় মতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর আবশ্যক। তাই জেনে নেওয়া যাক আজ কোন ওয়াক্তের নামাজ কখন আদায় করতে হবে।
আজ রোববার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫ ইংরেজি, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বাংলা, ২২ জমাদিউস সানি ১৪৪৭ হিজরি। ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকার নামাজের সময়সূচি তুলে ধরা হলো—
| নামাজ | ওয়াক্ত শুরু | ওয়াক্ত শেষ |
|---|---|---|
| তাহাজ্জুদ ও সেহরির শেষ সময় | ০০: ০০ | ০৫: ১১ মিনিট |
| ফজর | ০৫: ১২ মিনিট | ০৬: ৩১ মিনিট |
| জোহর | ১১: ৫৪ মিনিট | ০৩: ৩৭ মিনিট |
| আসর | ০৩: ৩৮ মিনিট | ০৫: ১২ মিনিট |
| মাগরিব | ০৫: ১৪ মিনিট | ০৬: ৩৩ মিনিট |
| এশা | ০৬: ৩৪ মিনিট | ০৫: ১১ মিনিট |
উল্লিখিত সময়ের সঙ্গে যেসব বিভাগের সময় যোগ-বিয়োগ করতে হবে, সেগুলো হলো:
বিয়োগ করতে হবে—
চট্টগ্রাম: ০৫ মিনিট
সিলেট: ০৬ মিনিট
যোগ করতে হবে—
খুলনা: ০৩ মিনিট
রাজশাহী: ০৭ মিনিট
রংপুর: ০৮ মিনিট
বরিশাল: ০১ মিনিট
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
আসুন, নামাজের মাধ্যমে আমরা নিজেদেরকে তাঁর আরও কাছে নিয়ে যাই। জীবনে নিয়ে আসি ইমানের নুর।

জীবনকে সুশৃঙ্খল করতে এবং আল্লাহর সান্নিধ্য পেতে নামাজের কোনো বিকল্প নেই। একজন মুমিনের জন্য নামাজ হলো আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি কথোপকথনের মাধ্যম। এটি এমন এক ইবাদত—যা আমাদের মনে আধ্যাত্মিক প্রশান্তি আনে, জীবনের প্রতিটি কাজে আনে বরকত।
প্রতিদিন সময় মতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর আবশ্যক। তাই জেনে নেওয়া যাক আজ কোন ওয়াক্তের নামাজ কখন আদায় করতে হবে।
আজ রোববার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫ ইংরেজি, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বাংলা, ২২ জমাদিউস সানি ১৪৪৭ হিজরি। ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকার নামাজের সময়সূচি তুলে ধরা হলো—
| নামাজ | ওয়াক্ত শুরু | ওয়াক্ত শেষ |
|---|---|---|
| তাহাজ্জুদ ও সেহরির শেষ সময় | ০০: ০০ | ০৫: ১১ মিনিট |
| ফজর | ০৫: ১২ মিনিট | ০৬: ৩১ মিনিট |
| জোহর | ১১: ৫৪ মিনিট | ০৩: ৩৭ মিনিট |
| আসর | ০৩: ৩৮ মিনিট | ০৫: ১২ মিনিট |
| মাগরিব | ০৫: ১৪ মিনিট | ০৬: ৩৩ মিনিট |
| এশা | ০৬: ৩৪ মিনিট | ০৫: ১১ মিনিট |
উল্লিখিত সময়ের সঙ্গে যেসব বিভাগের সময় যোগ-বিয়োগ করতে হবে, সেগুলো হলো:
বিয়োগ করতে হবে—
চট্টগ্রাম: ০৫ মিনিট
সিলেট: ০৬ মিনিট
যোগ করতে হবে—
খুলনা: ০৩ মিনিট
রাজশাহী: ০৭ মিনিট
রংপুর: ০৮ মিনিট
বরিশাল: ০১ মিনিট
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
আসুন, নামাজের মাধ্যমে আমরা নিজেদেরকে তাঁর আরও কাছে নিয়ে যাই। জীবনে নিয়ে আসি ইমানের নুর।

আজ খতমে তারাবিতে পবিত্র কোরআনের ২১তম পারা তিলাওয়াত করা হবে। সুরা আনকাবুতের ৪৫ থেকে সুরা রুম, সুরা লোকমান, সুরা সাজদা ও আহজাবের ১ থেকে ৩০ নম্বর আয়াত পর্যন্ত পড়া হবে। এই অংশে নামাজের উপকারিতা, ধৈর্য, স্বামী-স্ত্রীর ভালোবাসা, সুদ, সন্তানের প্রতি লোকমান (আ.)-এর উপদেশ, পাঁচ জিনিসের জ্ঞান, পালক পুত্রের বি
০৯ এপ্রিল ২০২৩
শায়খ জুলফিকার আহমদ নকশবন্দি ১৯৫৩ সালের ১ এপ্রিল পাকিস্তানের ঝং জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি নকশবন্দি তরিকার একজন খ্যাতিমান সুফি সাধক ছিলেন এবং দেওবন্দি আন্দোলনের সঙ্গে তাঁর গভীর সম্পর্ক ছিল। ইসলামি আধ্যাত্মিকতা, তাজকিয়া ও আত্মশুদ্ধির ক্ষেত্রে তিনি বিশ্বব্যাপী সুপরিচিত ছিলেন।
২ ঘণ্টা আগে
ইসলামে দান-সদকা অত্যন্ত মর্যাদাপূর্ণ একটি আমল। পবিত্র কোরআন ও হাদিসে এর অসংখ্য ফজিলতের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। সদকা কেবল দরিদ্রের প্রয়োজনই মেটায় না, বরং এটি বান্দা ও তার প্রতিপালকের মধ্যে সম্পর্ককে আরও মজবুত করে।
১১ ঘণ্টা আগে
ভুল করা মানুষের স্বভাবজাত বিষয়। জীবন চলার পথে ছোট-বড় ভুল সবারই হয়। কিন্তু সে ভুলকে কীভাবে সংশোধন করতে হবে, তা মানবজাতির সর্বশ্রেষ্ঠ শিক্ষাবিদ হজরত মুহাম্মদ (সা.) শিখিয়ে গেছেন। তিনি ভুলকে লজ্জা বা অপমানের কারণ হিসেবে দেখেননি; বরং এটিকে ইতিবাচক পরিবর্তনের একটি সুযোগ হিসেবে গ্রহণ করেছেন।
১ দিন আগেইসলাম ডেস্ক

ভুল করা মানুষের স্বভাবজাত বিষয়। জীবন চলার পথে ছোট-বড় ভুল সবারই হয়। কিন্তু সে ভুলকে কীভাবে সংশোধন করতে হবে, তা মানবজাতির সর্বশ্রেষ্ঠ শিক্ষাবিদ হজরত মুহাম্মদ (সা.) শিখিয়ে গেছেন। তিনি ভুলকে লজ্জা বা অপমানের কারণ হিসেবে দেখেননি; বরং এটিকে ইতিবাচক পরিবর্তনের একটি সুযোগ হিসেবে গ্রহণ করেছেন। মহানবী (সা.) কঠোরতা নয়, বরং ভদ্রতা, কোমলতা, সহানুভূতি এবং সৃজনশীলতার মাধ্যমে মানুষের ভুলত্রুটি শুধরেছেন।
ভুল সংশোধনে তাঁর প্রথম কৌশল ছিল কৌশলগত নীরবতা এবং ইঙ্গিতপূর্ণ আচরণ। তিনি সরাসরি সমালোচনা না করে এমনভাবে আচরণ করতেন, যেন ভুলকারী নিজেই নিজের ভুল বুঝতে পারে। একবার সাহাবিদের কোনো কাজে ভুল দেখতে পেলে তিনি তাঁদের ছেড়ে অন্য পথে হেঁটেছেন, যা দেখে তাঁরা নিজেদের ভুল বুঝতে পেরেছেন। আবার কখনো কখনো, বিশেষ করে যখন ভুলটি গুরুতর হতো, তখন তিনি কথার পুনরাবৃত্তি করে এর গুরুত্ব বোঝাতেন। তাঁর আরেকটি অসাধারণ পদ্ধতি ছিল দুর্বল ও অসহায়দের প্রতি কোমল আচরণ। একইভাবে, তিনি মানুষকে আল্লাহর ক্ষমতা ও করুণার কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে ভুল থেকে ফিরিয়ে আনতেন।
মানুষের মর্যাদা রক্ষা ছিল তাঁর ভুল সংশোধনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দিক। তিনি কখনো জনসমক্ষে কাউকে লজ্জা দিতেন না। তাই অনেক সময় তিনি বলতেন, ‘লোকদের কী হয়েছে যে তারা এমন এমন কাজ করছে!’ এভাবে তিনি ব্যক্তির পরিচয় গোপন রেখে সাধারণ ভুলকারীদের সতর্ক করতেন। এমনকি যারা বারবার একই ভুল করত, তাদেরও তিনি তিরস্কারের পরিবর্তে ভালোবাসা ও দোয়া করতেন। তাঁর এই সহানুভূতিশীল পদ্ধতি প্রমাণ করে, ভুল শুধরানোর মূল উদ্দেশ্য হলো ব্যক্তিকে পরিশুদ্ধ করা, অপমান করা নয়।
রাসুল (সা.)-এর এ কৌশলগুলো আমাদের শেখায়, ভুল সংশোধন একটি শিল্প, যেখানে ভালোবাসা, সহমর্মিতা এবং সম্মানই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। এটি শুধু একটি ত্রুটি দূর করার বিষয় নয়; বরং ব্যক্তির অন্তরকে আলোকময় করে তোলার এক মহৎ প্রক্রিয়া।

ভুল করা মানুষের স্বভাবজাত বিষয়। জীবন চলার পথে ছোট-বড় ভুল সবারই হয়। কিন্তু সে ভুলকে কীভাবে সংশোধন করতে হবে, তা মানবজাতির সর্বশ্রেষ্ঠ শিক্ষাবিদ হজরত মুহাম্মদ (সা.) শিখিয়ে গেছেন। তিনি ভুলকে লজ্জা বা অপমানের কারণ হিসেবে দেখেননি; বরং এটিকে ইতিবাচক পরিবর্তনের একটি সুযোগ হিসেবে গ্রহণ করেছেন। মহানবী (সা.) কঠোরতা নয়, বরং ভদ্রতা, কোমলতা, সহানুভূতি এবং সৃজনশীলতার মাধ্যমে মানুষের ভুলত্রুটি শুধরেছেন।
ভুল সংশোধনে তাঁর প্রথম কৌশল ছিল কৌশলগত নীরবতা এবং ইঙ্গিতপূর্ণ আচরণ। তিনি সরাসরি সমালোচনা না করে এমনভাবে আচরণ করতেন, যেন ভুলকারী নিজেই নিজের ভুল বুঝতে পারে। একবার সাহাবিদের কোনো কাজে ভুল দেখতে পেলে তিনি তাঁদের ছেড়ে অন্য পথে হেঁটেছেন, যা দেখে তাঁরা নিজেদের ভুল বুঝতে পেরেছেন। আবার কখনো কখনো, বিশেষ করে যখন ভুলটি গুরুতর হতো, তখন তিনি কথার পুনরাবৃত্তি করে এর গুরুত্ব বোঝাতেন। তাঁর আরেকটি অসাধারণ পদ্ধতি ছিল দুর্বল ও অসহায়দের প্রতি কোমল আচরণ। একইভাবে, তিনি মানুষকে আল্লাহর ক্ষমতা ও করুণার কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে ভুল থেকে ফিরিয়ে আনতেন।
মানুষের মর্যাদা রক্ষা ছিল তাঁর ভুল সংশোধনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দিক। তিনি কখনো জনসমক্ষে কাউকে লজ্জা দিতেন না। তাই অনেক সময় তিনি বলতেন, ‘লোকদের কী হয়েছে যে তারা এমন এমন কাজ করছে!’ এভাবে তিনি ব্যক্তির পরিচয় গোপন রেখে সাধারণ ভুলকারীদের সতর্ক করতেন। এমনকি যারা বারবার একই ভুল করত, তাদেরও তিনি তিরস্কারের পরিবর্তে ভালোবাসা ও দোয়া করতেন। তাঁর এই সহানুভূতিশীল পদ্ধতি প্রমাণ করে, ভুল শুধরানোর মূল উদ্দেশ্য হলো ব্যক্তিকে পরিশুদ্ধ করা, অপমান করা নয়।
রাসুল (সা.)-এর এ কৌশলগুলো আমাদের শেখায়, ভুল সংশোধন একটি শিল্প, যেখানে ভালোবাসা, সহমর্মিতা এবং সম্মানই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। এটি শুধু একটি ত্রুটি দূর করার বিষয় নয়; বরং ব্যক্তির অন্তরকে আলোকময় করে তোলার এক মহৎ প্রক্রিয়া।

আজ খতমে তারাবিতে পবিত্র কোরআনের ২১তম পারা তিলাওয়াত করা হবে। সুরা আনকাবুতের ৪৫ থেকে সুরা রুম, সুরা লোকমান, সুরা সাজদা ও আহজাবের ১ থেকে ৩০ নম্বর আয়াত পর্যন্ত পড়া হবে। এই অংশে নামাজের উপকারিতা, ধৈর্য, স্বামী-স্ত্রীর ভালোবাসা, সুদ, সন্তানের প্রতি লোকমান (আ.)-এর উপদেশ, পাঁচ জিনিসের জ্ঞান, পালক পুত্রের বি
০৯ এপ্রিল ২০২৩
শায়খ জুলফিকার আহমদ নকশবন্দি ১৯৫৩ সালের ১ এপ্রিল পাকিস্তানের ঝং জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি নকশবন্দি তরিকার একজন খ্যাতিমান সুফি সাধক ছিলেন এবং দেওবন্দি আন্দোলনের সঙ্গে তাঁর গভীর সম্পর্ক ছিল। ইসলামি আধ্যাত্মিকতা, তাজকিয়া ও আত্মশুদ্ধির ক্ষেত্রে তিনি বিশ্বব্যাপী সুপরিচিত ছিলেন।
২ ঘণ্টা আগে
ইসলামে দান-সদকা অত্যন্ত মর্যাদাপূর্ণ একটি আমল। পবিত্র কোরআন ও হাদিসে এর অসংখ্য ফজিলতের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। সদকা কেবল দরিদ্রের প্রয়োজনই মেটায় না, বরং এটি বান্দা ও তার প্রতিপালকের মধ্যে সম্পর্ককে আরও মজবুত করে।
১১ ঘণ্টা আগে
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
১৭ ঘণ্টা আগে