Ajker Patrika

হজের আহকাম ও আরকান সম্পর্কে জানুন

আদিয়াত উল্লাহ
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

আল্লাহর সন্তুষ্টি, প্রেম ও ভালোবাসা অর্জনের এক অনন্য প্রেমময় ও তুলনাহীন ইবাদত হজ। প্রতিবছর বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে লাখো মোমিন বান্দা আল্লাহর সন্তুষ্টি, ভালোবাসা ও নৈকট্য লাভের আশায় হজ পালন করতে মক্কা মোকাররমায় ছুটে যান। বিশ্ব মুসলিমের এক অনন্য মহা মিলনমেলা এ হজ। সবার কণ্ঠে একই সুর, একই তালবিয়া। একই লেবাস সবার পরনে। সবার অবস্থা যেন একরকম হয়ে যায়। সে এক মনোমুগ্ধকর দৃশ্য। সবার কণ্ঠে এক লয়ে এক তালবিয়া—‘লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক, লাব্বাইকা লা শারিকা লাকা লাব্বাইক, ইন্নাল হামদা ওয়ান নিমাতা লাকা ওয়াল মুলক, লা শারিকা লাক’। অর্থ: ‘আমি হাজির, হে আল্লাহ, আমি হাজির। আমি হাজির, আপনার কোনো অংশীদার নেই, আমি হাজির। নিশ্চয় সকল প্রশংসা, নিয়ামত ও রাজত্ব আপনারই। আপনার কোনো অংশীদার নেই।’ আজকের লেখায় আলোচনা করব হজের প্রকারভেদ, হজের প্রয়োজনীয় মাসআলা ও আহকাম বিষয়ে।

হজ কাকে বলে—

কোরআন-হাদিসের বর্ণনা এবং ইসলামবিষয়ক গবেষকদের মত অনুসারে—পবিত্র মক্কায় জিলহজ মাসের ৮ থেকে ১২ তারিখের মধ্যে নির্দিষ্ট স্থানসমূহে নির্দিষ্ট কিছু ইবাদতের সমষ্টিকে হজ বলে।

হজ সামর্থ্যবান প্রত্যেক মুসলমানের জন্য আল্লাহ তাআলার একটি অলঙ্ঘনীয় বিধান। আল্লাহ তাআলা এটি জীবনে একবার আদায় করা ফরজ করেছেন। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আর মানুষের উচিত আল্লাহর জন্য ঘরের (বায়তুল্লাহ শরিফ) হজ করা, যারা সেখানে যেতে সক্ষম। (সুরা আলে ইমরান: ৯৭)

হজ তিন প্রকার—

এক. হজে তামাত্তু অর্থাৎ ভিন্ন ভিন্ন নিয়তে এবং ইহরামে হজ ও ওমরাহ পালন করা।

দুই. হজে কিরান অর্থাৎ একই নিয়ত ও ইহরামে হজ এবং ওমরাহ পালন করা।

তিন. হজে ইফরাদ অর্থাৎ শুধু হজ পালন করা।

ইমাম আবু হানিফা (রহ.)–এর মতে কিরান হজ সর্বোত্তম। কেননা এতে দীর্ঘদিন ইহরাম বেঁধে থাকতে হয়। এ ছাড়া নবী করিম (সা.)-এর বিদায় হজ ছিল কিরান হজ। আনাস (রা.) বলেন, ‘আমি নবীজি (সা.)-কে একত্রে হজ ও ওমরাহর তালবিয়া পাঠ করতে শুনেছি। তালবিয়ায় তিনি বলছিলেন—লাব্বাইকা ওমরাতান ওয়া হাজ্জান।’ (সহিহ্ মুসলিম)

তবে অন্যান্য ফকিহদের মতে, যদি কিরান হজ পালনে দীর্ঘদিন ইহরামের নিষেধাজ্ঞাগুলো পালন করা সম্ভব না হয় তবে তামাত্তু হজ করাই উত্তম। (ফাতাওয়ায়ে শামি)

হজের ফরজ তিনটি—

এক. ইহরাম বাঁধা। (সুনানুল কুবরা: ৯১৯০)।

দুই. উকুফে আরাফা অর্থাৎ জিলহজ মাসের ৯ তারিখ সূর্য হেলার পর থেকে ঈদুল আজহার দিন সুবহে সাদিক পর্যন্ত যেকোনো সময় আরাফার ময়দানে অবস্থান করা। এ সময়ের মধ্যে অতি অল্প সময়ও আরাফার ময়দানে অবস্থান করলে ফরজ আদায় হয়ে যাবে। (জামে তিরমিজি: ৮১৪)

তিন. তাওয়াফে জিয়ারত অর্থাৎ আরাফায় অবস্থানের পর কাবায় সাতবার তাওয়াফ (চক্কর) করা।

হজের ওয়াজিব প্রধানত ছয়টি—

এক. জিলহজের ১০ তারিখ সুবহে সাদিক থেকে সূর্যোদয় পর্যন্ত সামান্য সময়ের জন্য হলেও মুজদালিফায় অবস্থান করা। (সুরা বাকারা: ১৯৮, জামে তিরমিজি: ৮১৫)

দুই. সাফা-মারওয়ায় সাতবার সায়ি করা বা চক্কর লাগানো। এটা সাফা থেকে শুরু হয়ে মারওয়ায় গিয়ে শেষ হবে। (সহিহ্ মুসলিম: ২১৩৭)

তিন. যথাসময়ে রমি (শয়তানকে পাথর নিক্ষেপ) করা। (সহিহ্ মুসলিম: ২২৮৬)

চার. তামাত্তু ও কিরান হজকারীরা দমে শোকর বা হজের কোরবানি করা।

পাঁচ. হারামে কোরবানির দিনসমূহে মাথা মুণ্ডানো বা চুল ছোট করা। (সহিহ্ বুখারি)

ছয়. মক্কাবাসী ছাড়া অন্যরা তাওয়াফে সদর বা তাওয়াফে বিদা করা। (সহিহ্ মুসলিম)

হজের সুন্নাতগুলো হলো—

এক. ইহরাম বাঁধার সময় গোসল বা অজু করা ও শরীরে সুগন্ধি মাখা। (জামে তিরমিজি: ৭৬০)

দুই. নতুন বা পরিষ্কার চাদর পরা। সাদা হওয়া উত্তম। (জামে তিরমিজি: ২৭২৩)

তিন. ইহরাম বাঁধার আগে দু’রাকাত নামাজ আদায় করা। (সহিহ্ মুসলিম: ২০৩১)

চার. বেশি বেশি তালবিয়া পড়া। (সহিহ্ মুসলিম: ২২৪৬)

পাঁচ. মক্কাবাসী ছাড়া অন্যরা হজে ইফরাদ বা কিরান করার সময় তাওয়াফে কুদুম করা। (সহিহ্ মুসলিম: ২১৩৯)

ছয়. মক্কায় থাকাকালীন বেশি বেশি তাওয়াফ করা। (জামে তিরমিজি: ৭৯৪)

সাত. ইজতিবা করা। এটা হলো তাওয়াফ শুরু করার আগে চাদরের এক দিককে নিজের ডান বাহুর নিচে রাখা এবং অপর দিককে বাম কাঁধের উপর পেঁচিয়ে দেওয়া। (জামে তিরমিজি: ৭৮৭)

আট. তাওয়াফের সময় রমল করা। রমলের পদ্ধতি হলো তাওয়াফের প্রথম তিন চক্করের সময় ঘনঘন কদম ফেলা ও উভয় কাঁধ হেলাতে হেলাতে চলা। (সহিহ্ বুখারি: ১৫০১)

নয়. কোরবানির দিনগুলোতে মিনায় রাত্রিযাপন করা। (সুনানে আবু দাউদ: ১৬৮৩)

ইহরাম অবস্থায় যেসব কাজ নিষিদ্ধ

নারী-পুরুষ উভয়ের জন্য নিষিদ্ধ কাজসমূহ হচ্ছে—সুগন্ধি ব্যবহার, নখ কাটা, শরীরের কোনো স্থানের লোম পরিষ্কার করা বা উপড়ানো, পশু শিকার, মাথার চুল উঠিয়ে ফেলা বা কাটা, ঝগড়া-বিবাদ করা, সহবাস করা, যৌন কামনার সঙ্গে চুম্বন করা, স্পর্শ করা বা জড়িয়ে ধরা।

পুরুষের জন্য নিষিদ্ধ কাজসমূহ হচ্ছে—সেলাইকৃত কাপড় পরিধান করা, মাথা ও মুখমণ্ডল আবৃত করা এবং টাকনুর হাড় ঢেকে যায় এমন জুতা পরা।

নারীদের নিষিদ্ধ কাজ—অলংকার পরা, হাতমোজা পরা, মুখমণ্ডলের ওপর নিকাব পরা (সামনে পুরুষ থাকলেও মুখমণ্ডল ঢাকা যাবে না), প্রাণী হত্যা (কাপড় ও শরীরের উকুন মারাও নিষিদ্ধ)।

যেসব কারণে দম ও সদকা ওয়াজিব হয়—

এক. হজ, ওমরাহ বা অন্য উদ্দেশ্যে মক্কায় গমনকারী ব্যক্তির ইহরাম ছাড়া মিকাত অতিক্রম করা।

দুই. ইহরাম অবস্থায় বড় অঙ্গসমূহের পূর্ণ জায়গায় খুশবু লাগানো। ছোট অঙ্গগুলোতে বেশি পরিমাণ খুশবু লাগানোর হুকুমও একই।

এ ছাড়া দম ও সদকা ওয়াজিব হওয়ার আরও অনেক কারণ রয়েছে। নির্ভরযোগ্য কোনো আলেম, মসজিদের ইমাম সাহেব বা হজের মুআল্লিমদের নিকট থেকে জেনে নেওয়া উচিত।

লেখক: শিক্ষার্থী, আরবি বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ওসমান হাদিকে হত্যাচেষ্টায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলের মালিক আটক

রাজধানীতে অপরাধ: ১৪ ভাগ করে মিরপুর নিয়ন্ত্রণ করছে চার শীর্ষ সন্ত্রাসী

হাদিকে হত্যাচেষ্টা: সন্দেহভাজন ফয়সালের ব্যাংক হিসাব জব্দ

আজকের রাশিফল: প্রাক্তন ফোন করবে ও পুরোনো পাওনা টাকার কথা স্মরণ হবে, তবে পরিণতি একই

বকশীগঞ্জের ‘বটগাছ’খ্যাত বিএনপি নেতা আব্দুর রউফ তালুকদারের ইসলামী আন্দোলনে যোগদান

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

অপমৃত্যু থেকে রক্ষা করে যে আমল

ইসলাম ডেস্ক 
আপডেট : ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯: ২৪
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

ইসলামে দান-সদকা অত্যন্ত মর্যাদাপূর্ণ একটি আমল। পবিত্র কোরআন ও হাদিসে এর অসংখ্য ফজিলতের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। সদকা কেবল দরিদ্রের প্রয়োজনই মেটায় না, বরং এটি বান্দা ও তার প্রতিপালকের মধ্যে সম্পর্ককে আরও মজবুত করে। মহানবী (সা.) সদকার এমন কিছু অসামান্য ফজিলত বর্ণনা করেছেন, যা আমাদের জীবনে এর গুরুত্ব আরও বাড়িয়ে দেয়।

সদকার এক অন্যতম ফজিলত হলো, এটি আল্লাহর ক্রোধ প্রশমিত করে। হাদিসে মহানবী (সা.) বলেন, ‘দান-সদকা আল্লাহর ক্রোধ কমায় এবং মানুষকে অপমৃত্যু থেকে রক্ষা করে।’ (জামে তিরমিজি)

মানুষ জীবনে ইচ্ছায়-অনিচ্ছায় নানা পাপ করে আল্লাহর নাফরমানিতে লিপ্ত হয়, ফলে সে আল্লাহর বিরাগভাজন হয়। এমতাবস্থায় আল্লাহর রাগ কমানোর জন্য এবং তাঁর সন্তুষ্টি ফিরে পাওয়ার জন্য সদকা এক ফলপ্রসূ আমল। সদকার বরকতে আল্লাহ সেই রাগ দূর করে দেন। এ ছাড়া, এই হাদিসের মাধ্যমে জানা যায়, সদকার কারণে আল্লাহ তাআলা দানশীল ব্যক্তিকে অপমৃত্যু থেকে রক্ষা করেন এবং তাকে ইমানের সঙ্গে মৃত্যু দান করেন।

দান-সদকা যে শুধু পরকালে সওয়াব বৃদ্ধি করে তা নয়; বরং এর বরকতে আল্লাহ দুনিয়ার সম্পদও বহুগুণ বাড়িয়ে দেন। এক হাদিসে আবু উমামা (রা.) থেকে বর্ণিত, আবু জর (রা.) রাসুল (সা.)-কে জিজ্ঞেস করলেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল, সদকা কী?’ জবাবে তিনি বললেন, ‘কয়েক গুণ। (অর্থাৎ, কোনো ব্যক্তি যে পরিমাণ আল্লাহর জন্য দান করবে, তার কয়েক গুণ বেশি সওয়াব সে পাবে)। আর আল্লাহ তাআলা বিপুল ভান্ডারের অধিকারী।’ (মুসনাদে আহমাদ)

অনেক হাদিসবিশারদ এই হাদিসের ব্যাখ্যায় বলেছেন, সদকার বরকতে আল্লাহ দুনিয়ায়ও সম্পদ বহুগুণ বাড়িয়ে দেন। আর পরকালে যে প্রতিদান সে পাবে, তা হবে এর চেয়েও বহুগুণ বেশি। বাস্তবেও দেখা যায়, যে ব্যক্তি আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস রেখে নিষ্ঠার সঙ্গে দান করেন, তাঁর সম্পদ অদ্ভুতভাবে বেড়ে যায়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ওসমান হাদিকে হত্যাচেষ্টায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলের মালিক আটক

রাজধানীতে অপরাধ: ১৪ ভাগ করে মিরপুর নিয়ন্ত্রণ করছে চার শীর্ষ সন্ত্রাসী

হাদিকে হত্যাচেষ্টা: সন্দেহভাজন ফয়সালের ব্যাংক হিসাব জব্দ

আজকের রাশিফল: প্রাক্তন ফোন করবে ও পুরোনো পাওনা টাকার কথা স্মরণ হবে, তবে পরিণতি একই

বকশীগঞ্জের ‘বটগাছ’খ্যাত বিএনপি নেতা আব্দুর রউফ তালুকদারের ইসলামী আন্দোলনে যোগদান

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আজকের নামাজের সময়সূচি: ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫

ইসলাম ডেস্ক 
আজকের নামাজের সময়সূচি। ছবি: সংগৃহীত
আজকের নামাজের সময়সূচি। ছবি: সংগৃহীত

জীবনকে সুশৃঙ্খল করতে এবং আল্লাহর সান্নিধ্য পেতে নামাজের কোনো বিকল্প নেই। একজন মুমিনের জন্য নামাজ হলো আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি কথোপকথনের মাধ্যম। এটি এমন এক ইবাদত—যা আমাদের মনে আধ্যাত্মিক প্রশান্তি আনে, জীবনের প্রতিটি কাজে আনে বরকত।

প্রতিদিন সময় মতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর আবশ্যক। তাই জেনে নেওয়া যাক আজ কোন ওয়াক্তের নামাজ কখন আদায় করতে হবে।

আজ রোববার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫ ইংরেজি, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বাংলা, ২২ জমাদিউস সানি ১৪৪৭ হিজরি। ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকার নামাজের সময়সূচি তুলে ধরা হলো—

আজকের নামাজের সময়সূচি
নামাজ ওয়াক্ত শুরুওয়াক্ত শেষ
তাহাজ্জুদ ও সেহরির শেষ সময়০০: ০০০৫: ১১ মিনিট
ফজর০৫: ১২ মিনিট০৬: ৩১ মিনিট
জোহর১১: ৫৪ মিনিট০৩: ৩৭ মিনিট
আসর০৩: ৩৮ মিনিট০৫: ১২ মিনিট
মাগরিব০৫: ১৪ মিনিট০৬: ৩৩ মিনিট
এশা০৬: ৩৪ মিনিট০৫: ১১ মিনিট

উল্লিখিত সময়ের সঙ্গে যেসব বিভাগের সময় যোগ-বিয়োগ করতে হবে, সেগুলো হলো:

বিয়োগ করতে হবে—
চট্টগ্রাম: ০৫ মিনিট
সিলেট: ০৬ মিনিট

যোগ করতে হবে—
খুলনা: ০৩ মিনিট
রাজশাহী: ০৭ মিনিট
রংপুর: ০৮ মিনিট
বরিশাল: ০১ মিনিট

নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।

আসুন, নামাজের মাধ্যমে আমরা নিজেদেরকে তাঁর আরও কাছে নিয়ে যাই। জীবনে নিয়ে আসি ইমানের নুর।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ওসমান হাদিকে হত্যাচেষ্টায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলের মালিক আটক

রাজধানীতে অপরাধ: ১৪ ভাগ করে মিরপুর নিয়ন্ত্রণ করছে চার শীর্ষ সন্ত্রাসী

হাদিকে হত্যাচেষ্টা: সন্দেহভাজন ফয়সালের ব্যাংক হিসাব জব্দ

আজকের রাশিফল: প্রাক্তন ফোন করবে ও পুরোনো পাওনা টাকার কথা স্মরণ হবে, তবে পরিণতি একই

বকশীগঞ্জের ‘বটগাছ’খ্যাত বিএনপি নেতা আব্দুর রউফ তালুকদারের ইসলামী আন্দোলনে যোগদান

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

যেভাবে অন্যদের ভুল শুধরে দিতেন নবীজি

ইসলাম ডেস্ক 
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

ভুল করা মানুষের স্বভাবজাত বিষয়। জীবন চলার পথে ছোট-বড় ভুল সবারই হয়। কিন্তু সে ভুলকে কীভাবে সংশোধন করতে হবে, তা মানবজাতির সর্বশ্রেষ্ঠ শিক্ষাবিদ হজরত মুহাম্মদ (সা.) শিখিয়ে গেছেন। তিনি ভুলকে লজ্জা বা অপমানের কারণ হিসেবে দেখেননি; বরং এটিকে ইতিবাচক পরিবর্তনের একটি সুযোগ হিসেবে গ্রহণ করেছেন। মহানবী (সা.) কঠোরতা নয়, বরং ভদ্রতা, কোমলতা, সহানুভূতি এবং সৃজনশীলতার মাধ্যমে মানুষের ভুলত্রুটি শুধরেছেন।

ভুল সংশোধনে তাঁর প্রথম কৌশল ছিল কৌশলগত নীরবতা এবং ইঙ্গিতপূর্ণ আচরণ। তিনি সরাসরি সমালোচনা না করে এমনভাবে আচরণ করতেন, যেন ভুলকারী নিজেই নিজের ভুল বুঝতে পারে। একবার সাহাবিদের কোনো কাজে ভুল দেখতে পেলে তিনি তাঁদের ছেড়ে অন্য পথে হেঁটেছেন, যা দেখে তাঁরা নিজেদের ভুল বুঝতে পেরেছেন। আবার কখনো কখনো, বিশেষ করে যখন ভুলটি গুরুতর হতো, তখন তিনি কথার পুনরাবৃত্তি করে এর গুরুত্ব বোঝাতেন। তাঁর আরেকটি অসাধারণ পদ্ধতি ছিল দুর্বল ও অসহায়দের প্রতি কোমল আচরণ। একইভাবে, তিনি মানুষকে আল্লাহর ক্ষমতা ও করুণার কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে ভুল থেকে ফিরিয়ে আনতেন।

মানুষের মর্যাদা রক্ষা ছিল তাঁর ভুল সংশোধনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দিক। তিনি কখনো জনসমক্ষে কাউকে লজ্জা দিতেন না। তাই অনেক সময় তিনি বলতেন, ‘লোকদের কী হয়েছে যে তারা এমন এমন কাজ করছে!’ এভাবে তিনি ব্যক্তির পরিচয় গোপন রেখে সাধারণ ভুলকারীদের সতর্ক করতেন। এমনকি যারা বারবার একই ভুল করত, তাদেরও তিনি তিরস্কারের পরিবর্তে ভালোবাসা ও দোয়া করতেন। তাঁর এই সহানুভূতিশীল পদ্ধতি প্রমাণ করে, ভুল শুধরানোর মূল উদ্দেশ্য হলো ব্যক্তিকে পরিশুদ্ধ করা, অপমান করা নয়।

রাসুল (সা.)-এর এ কৌশলগুলো আমাদের শেখায়, ভুল সংশোধন একটি শিল্প, যেখানে ভালোবাসা, সহমর্মিতা এবং সম্মানই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। এটি শুধু একটি ত্রুটি দূর করার বিষয় নয়; বরং ব্যক্তির অন্তরকে আলোকময় করে তোলার এক মহৎ প্রক্রিয়া।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ওসমান হাদিকে হত্যাচেষ্টায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলের মালিক আটক

রাজধানীতে অপরাধ: ১৪ ভাগ করে মিরপুর নিয়ন্ত্রণ করছে চার শীর্ষ সন্ত্রাসী

হাদিকে হত্যাচেষ্টা: সন্দেহভাজন ফয়সালের ব্যাংক হিসাব জব্দ

আজকের রাশিফল: প্রাক্তন ফোন করবে ও পুরোনো পাওনা টাকার কথা স্মরণ হবে, তবে পরিণতি একই

বকশীগঞ্জের ‘বটগাছ’খ্যাত বিএনপি নেতা আব্দুর রউফ তালুকদারের ইসলামী আন্দোলনে যোগদান

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আজকের নামাজের সময়সূচি: ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫

ইসলাম ডেস্ক 
আজকের নামাজের সময়সূচি। ছবি: সংগৃহীত
আজকের নামাজের সময়সূচি। ছবি: সংগৃহীত

জীবনকে সুশৃঙ্খল করতে এবং আল্লাহর সান্নিধ্য পেতে নামাজের কোনো বিকল্প নেই। একজন মুমিনের জন্য নামাজ হলো আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি কথোপকথনের মাধ্যম। এটি এমন এক ইবাদত—যা আমাদের মনে আধ্যাত্মিক প্রশান্তি আনে, জীবনের প্রতিটি কাজে আনে বরকত।

প্রতিদিন সময় মতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর আবশ্যক। তাই জেনে নেওয়া যাক আজ কোন ওয়াক্তের নামাজ কখন আদায় করতে হবে।

আজ শনিবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫ ইংরেজি, ২৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বাংলা, ২১ জমাদিউস সানি ১৪৪৭ হিজরি। ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকার নামাজের সময়সূচি তুলে ধরা হলো—

আজকের নামাজের সময়সূচি
নামাজওয়াক্ত শুরুওয়াক্ত শেষ
তাহাজ্জুদ ও সেহরির শেষ সময়০০: ০০০৫: ১০ মিনিট
ফজর০৫: ১১ মিনিট০৬: ৩০ মিনিট
জোহর১১: ৫৩ মিনিট০৩: ৩৬ মিনিট
আসর০৩: ৩৭ মিনিট০৫: ১২ মিনিট
মাগরিব০৫: ১৪ মিনিট০৬: ৩৩ মিনিট
এশা০৬: ৩৪ মিনিট০৫: ১০ মিনিট

উল্লিখিত সময়ের সঙ্গে যেসব বিভাগের সময় যোগ-বিয়োগ করতে হবে, সেগুলো হলো:

বিয়োগ করতে হবে—
চট্টগ্রাম: ০৫ মিনিট
সিলেট: ০৬ মিনিট

যোগ করতে হবে—
খুলনা: ০৩ মিনিট
রাজশাহী: ০৭ মিনিট
রংপুর: ০৮ মিনিট
বরিশাল: ০১ মিনিট

নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।

আসুন, নামাজের মাধ্যমে আমরা নিজেদেরকে তাঁর আরও কাছে নিয়ে যাই। জীবনে নিয়ে আসি ইমানের নুর।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ওসমান হাদিকে হত্যাচেষ্টায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলের মালিক আটক

রাজধানীতে অপরাধ: ১৪ ভাগ করে মিরপুর নিয়ন্ত্রণ করছে চার শীর্ষ সন্ত্রাসী

হাদিকে হত্যাচেষ্টা: সন্দেহভাজন ফয়সালের ব্যাংক হিসাব জব্দ

আজকের রাশিফল: প্রাক্তন ফোন করবে ও পুরোনো পাওনা টাকার কথা স্মরণ হবে, তবে পরিণতি একই

বকশীগঞ্জের ‘বটগাছ’খ্যাত বিএনপি নেতা আব্দুর রউফ তালুকদারের ইসলামী আন্দোলনে যোগদান

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত