মুফতি আবু আবদুল্লাহ আহমদ
হজ ইসলামের অন্যতম মৌলিক ফরজ বিধান। মানব জাতির ইবাদতের জন্য প্রথম নির্মিত ঘর পবিত্র কাবা শরিফকে কেন্দ্র করে এই বিধান পালিত হয়। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘নিশ্চয়ই মানব জাতির (ইবাদতের) জন্য প্রথম যে ঘর স্থাপিত হয়েছিল, তা তো মক্কায়। এটা বরকতময় ও বিশ্বজগতের দিশারি। এতে অনেক সুস্পষ্ট নিদর্শন আছে, যেমন মাকামে ইবরাহিম। আর যে কেউ সেখানে প্রবেশ করে, সে নিরাপদ। মানুষের মধ্যে যার সেখানে যাওয়ার সামর্থ্য আছে, আল্লাহর উদ্দেশ্যে ওই ঘরের হজ করা তার অবশ্যকর্তব্য। আর কেউ প্রত্যাখ্যান করলে সে জেনে রাখুক, নিশ্চয়ই আল্লাহ বিশ্বজগতের মুখাপেক্ষী নন।’ (সুরা আলে ইমরান: ৯৬-৯৭)
কোরআন-হাদিসের বর্ণনা থেকে বোঝা যায়, হজরত ইবরাহিম (আ.) কুফর-শিরক দূর করে সর্বত্র আল্লাহর একত্ববাদ প্রতিষ্ঠার যে মিশন নিয়ে মাঠে নেমেছিলেন, তারই অংশ হিসেবে আল্লাহর নির্দেশনা অনুসারে পবিত্র কাবাঘর নির্মাণ এবং পবিত্র হজের সূচনা করেন। এ সম্পর্কে পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, ‘এবং স্মরণ করো, যখন ইবরাহিমের জন্য এই ঘরের স্থান ঠিক করেছিলাম এ কথা বলে যে এখানে কোনো প্রকার শিরক কোরো না এবং আমার ঘরকে তাওয়াফকারী ও নামাজিদের জন্য পাকসাফ করে রাখো। আর মানুষকে হজ করার জন্য প্রকাশ্যে আহ্বান জানাও, তারা যেন তোমার কাছে আসে পায়ে হেঁটে কিংবা দূরবর্তী স্থান থেকে কৃশ উটের পিঠে চড়ে। এখানে এসে তারা যেন দেখতে পায় তাদের জন্য দ্বীন-দুনিয়ার কল্যাণের কত সুন্দর ব্যবস্থা রয়েছে এবং নির্দিষ্ট দিনগুলোতে আল্লাহর দেওয়া জন্তুগুলো আল্লাহর নামে কোরবানি করবে, তা থেকে নিজেরাও খাবে এবং দরিদ্র ও অভাবগ্রস্ত লোকজনেরও খেতে দেবে।’ (সুরা হজ: ২৬-২৮)
আল্লাহ তাআলা পবিত্র কাবাঘরকে তাওহিদের কেন্দ্ররূপে গড়ে তোলার মহান দায়িত্ব ইবরাহিম (আ.)-এর ওপর ন্যস্ত করেছিলেন। এর জন্য প্রথমে তাঁকে নিজের স্ত্রী হাজেরা ও দুধের ছেলে ইসমাইলকে মক্কার নির্জন মরুভূমিতে রেখে যাওয়ার নির্দেশ দেন। দুধের শিশুকে নিয়ে মা হাজেরার সংগ্রামী জীবনের কিছু চিত্র হাদিসে বর্ণিত হয়েছে। বুখারির বর্ণনায় এসেছে, পানি ফুরিয়ে গেলে হাজেরা পানির খোঁজ করতে থাকেন। এর জন্য প্রথমে সাফা পাহাড়ে আরোহণ করেন। এরপর মারওয়া পাহাড়ে চলে যান। এভাবে এক পাহাড় থেকে অপর পাহাড়ে মোট সাতবার চক্কর দেন। এ সময় আল্লাহ তাআলা ফেরেশতা পাঠিয়ে জমজম কূপ খনন করেন। দুই পাহাড়ের মাঝে মা হাজেরার এই দৌড়াদৌড়ির স্মৃতিকে অম্লান করার জন্য আল্লাহ তাআলা একে হজের অংশ করে দেন।
শিশু ইসমাইল বড় হওয়ার পর তাকে নিয়ে ইবরাহিম (আ.) পবিত্র কাবাঘর নির্মাণ ও তাওয়াফ করেন। তারপর আল্লাহর দেখানো স্বপ্নের বিবরণ অনুযায়ী আদরের ছেলে ইসমাইলকে কোরবানি করতে প্রস্তুত হন। ছেলেও আল্লাহর নির্দেশ পালনে একবাক্যে রাজি হয়ে যান। এই স্মৃতি জাগ্রত রাখতে হাজিদের জন্য কোরবানির বিশেষ আমল প্রবর্তন করা হয়। কোরবানির মাঠে যাওয়ার সময় শয়তানের উদ্দেশে ইবরাহিম (আ.) যে পাথর নিক্ষেপ করেছিলেন, সেটাও হাজার বছর ধরে জামারায় কঙ্কর নিক্ষেপ করার বিধানের মাধ্যমে জাগরূক রয়েছে। এ ছাড়া কাবাঘর নির্মাণের সময় যে পাথরের ওপর ইবরাহিম (আ.) দাঁড়িয়েছিলেন, সেই মাকামে ইবরাহিমে নামাজ আদায় করার বিশেষ বিধানও রাখা হয়েছে হজে। এভাবে দেখতে গেলে হজের বিধানের পরতে পরতে রয়েছে ইবরাহিম, হাজেরা ও ইসমাইল (আ.)-এর স্মৃতি। (তাফসিরে মাআরিফুল কোরআন)
পবিত্র কোরআনের বর্ণনা থেকে বোঝা যায়, শিরকের মূলোৎপাটন, পৃথিবীর আনাচকানাচ থেকে তাওহিদবাদী মানুষকে এক স্থানে সমবেত করে তাদের মধ্যে ভ্রাতৃত্ববোধ জাগ্রত করা, আল্লাহর অনুগ্রহ প্রদর্শন, তাঁর জিকির প্রতিষ্ঠা, তাঁর জন্য জন্তু কোরবানি করার মাধ্যমে গরিবদের জন্য আহারের ব্যবস্থা করা ইত্যাদি হজের উদ্দেশ্য। এর আলোকে আলিমগণ কয়েকটি বিষয়কে হজের বিধানসমূহের আধ্যাত্মিক উদ্দেশ্য হিসেবে চিহ্নিত করেছেন।
এক. আল্লাহর একত্ববাদ প্রতিষ্ঠা: হজ প্রবর্তনের প্রথম ঘোষণা যে আয়াতে দেওয়া হয়েছে, সেখানে আল্লাহ তাআলা স্পষ্ট করে তাঁর সঙ্গে কাউকে শরিক করতে নিষেধ করেছেন। এ ছাড়া হজের মধ্যে যে তালবিয়া পড়া হয়, তাতে স্পষ্ট বাক্যে আল্লাহর একত্ববাদের সাক্ষ্য দেওয়া হয়।
দুই. বান্দার দাসত্ব প্রকাশ করা: হাজি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত সেলাইবিহীন সাদা ইহরামের পোশাক পরিধান করে এবং সাজসজ্জা, আতর-খুশবু ইত্যাদি থেকে বিরত থেকে আল্লাহর সামনে নিজের দাসত্ব ও তুচ্ছতা প্রকাশ করে।
তিন. আল্লাহর জিকির প্রতিষ্ঠা: হজের প্রায় পুরো সময়টাই আল্লাহর জিকিরে অতিবাহিত হয়। বিশেষ করে আরাফাহর ময়দানে অবস্থান সম্পন্ন করার পর মাশআরে হারামে এসে এবং এর পরেও বিশেষভাবে আল্লাহর জিকির করার নির্দেশ এসেছে কোরআনে। (সুরা বাকারা: ১৯৮-২০০)
চার. প্রবৃত্তির ওপর নিয়ন্ত্রণ: ইহরাম অবস্থায় সব ধরনের অশ্লীলতা, ঝগড়া-বিবাদ এমনকি স্ত্রীর সঙ্গে অন্তরঙ্গ হওয়া থেকেও বিরত থাকতে হয়। এভাবে প্রবৃত্তির ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করা সহজ হয়ে যায়।
পাঁচ. হাশরের ময়দানে আল্লাহর দরবারে দাঁড়ানোর অনুভূতি সৃষ্টি হয়। আরাফাহর ময়দানে খোলা মাথায় জীর্ণ পোশাকে আল্লাহর নামে তালবিয়া পাঠ করতে করতে অবস্থান করা কিয়ামতের দিন দিগম্বর অবস্থায় আল্লাহর ভয়ে হাশরের মাঠে অবস্থানের সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ। এভাবে হজ হাজির মনে হাশরের মাঠে দাঁড়ানোর অনুভূতি সৃষ্টি করে।
ছয়. জাতি-বর্ণ-গোত্রনির্বিশেষে সব মানুষ সমান তা দেখিয়ে দেয় হজ। এতে ধনী-গরিব, রাজা-প্রজা, আরব-অনারব, কালো-সাদা সবাইকে একই বেশে একই জায়গায় থাকতে হয়। এটা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়, পার্থিব কোনো পরিচয় আল্লাহর কাছে শ্রেষ্ঠত্বের মাপকাঠি নয়; একমাত্র তাকওয়াই শ্রেষ্ঠত্বের মানদণ্ড। এ জন্য হজের আয়াতে তিনি বলেন, ‘তোমরা পাথেয় সংগ্রহ করো। আর সর্বোত্তম পাথেয় হচ্ছে তাকওয়া। আর হে বিবেকবানেরা, আমাকে ভয় করো (অর্থাৎ তাকওয়া অবলম্বন করো)।
(সুরা বাকারা: ১৯৭)
হজ ইসলামের অন্যতম মৌলিক ফরজ বিধান। মানব জাতির ইবাদতের জন্য প্রথম নির্মিত ঘর পবিত্র কাবা শরিফকে কেন্দ্র করে এই বিধান পালিত হয়। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘নিশ্চয়ই মানব জাতির (ইবাদতের) জন্য প্রথম যে ঘর স্থাপিত হয়েছিল, তা তো মক্কায়। এটা বরকতময় ও বিশ্বজগতের দিশারি। এতে অনেক সুস্পষ্ট নিদর্শন আছে, যেমন মাকামে ইবরাহিম। আর যে কেউ সেখানে প্রবেশ করে, সে নিরাপদ। মানুষের মধ্যে যার সেখানে যাওয়ার সামর্থ্য আছে, আল্লাহর উদ্দেশ্যে ওই ঘরের হজ করা তার অবশ্যকর্তব্য। আর কেউ প্রত্যাখ্যান করলে সে জেনে রাখুক, নিশ্চয়ই আল্লাহ বিশ্বজগতের মুখাপেক্ষী নন।’ (সুরা আলে ইমরান: ৯৬-৯৭)
কোরআন-হাদিসের বর্ণনা থেকে বোঝা যায়, হজরত ইবরাহিম (আ.) কুফর-শিরক দূর করে সর্বত্র আল্লাহর একত্ববাদ প্রতিষ্ঠার যে মিশন নিয়ে মাঠে নেমেছিলেন, তারই অংশ হিসেবে আল্লাহর নির্দেশনা অনুসারে পবিত্র কাবাঘর নির্মাণ এবং পবিত্র হজের সূচনা করেন। এ সম্পর্কে পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, ‘এবং স্মরণ করো, যখন ইবরাহিমের জন্য এই ঘরের স্থান ঠিক করেছিলাম এ কথা বলে যে এখানে কোনো প্রকার শিরক কোরো না এবং আমার ঘরকে তাওয়াফকারী ও নামাজিদের জন্য পাকসাফ করে রাখো। আর মানুষকে হজ করার জন্য প্রকাশ্যে আহ্বান জানাও, তারা যেন তোমার কাছে আসে পায়ে হেঁটে কিংবা দূরবর্তী স্থান থেকে কৃশ উটের পিঠে চড়ে। এখানে এসে তারা যেন দেখতে পায় তাদের জন্য দ্বীন-দুনিয়ার কল্যাণের কত সুন্দর ব্যবস্থা রয়েছে এবং নির্দিষ্ট দিনগুলোতে আল্লাহর দেওয়া জন্তুগুলো আল্লাহর নামে কোরবানি করবে, তা থেকে নিজেরাও খাবে এবং দরিদ্র ও অভাবগ্রস্ত লোকজনেরও খেতে দেবে।’ (সুরা হজ: ২৬-২৮)
আল্লাহ তাআলা পবিত্র কাবাঘরকে তাওহিদের কেন্দ্ররূপে গড়ে তোলার মহান দায়িত্ব ইবরাহিম (আ.)-এর ওপর ন্যস্ত করেছিলেন। এর জন্য প্রথমে তাঁকে নিজের স্ত্রী হাজেরা ও দুধের ছেলে ইসমাইলকে মক্কার নির্জন মরুভূমিতে রেখে যাওয়ার নির্দেশ দেন। দুধের শিশুকে নিয়ে মা হাজেরার সংগ্রামী জীবনের কিছু চিত্র হাদিসে বর্ণিত হয়েছে। বুখারির বর্ণনায় এসেছে, পানি ফুরিয়ে গেলে হাজেরা পানির খোঁজ করতে থাকেন। এর জন্য প্রথমে সাফা পাহাড়ে আরোহণ করেন। এরপর মারওয়া পাহাড়ে চলে যান। এভাবে এক পাহাড় থেকে অপর পাহাড়ে মোট সাতবার চক্কর দেন। এ সময় আল্লাহ তাআলা ফেরেশতা পাঠিয়ে জমজম কূপ খনন করেন। দুই পাহাড়ের মাঝে মা হাজেরার এই দৌড়াদৌড়ির স্মৃতিকে অম্লান করার জন্য আল্লাহ তাআলা একে হজের অংশ করে দেন।
শিশু ইসমাইল বড় হওয়ার পর তাকে নিয়ে ইবরাহিম (আ.) পবিত্র কাবাঘর নির্মাণ ও তাওয়াফ করেন। তারপর আল্লাহর দেখানো স্বপ্নের বিবরণ অনুযায়ী আদরের ছেলে ইসমাইলকে কোরবানি করতে প্রস্তুত হন। ছেলেও আল্লাহর নির্দেশ পালনে একবাক্যে রাজি হয়ে যান। এই স্মৃতি জাগ্রত রাখতে হাজিদের জন্য কোরবানির বিশেষ আমল প্রবর্তন করা হয়। কোরবানির মাঠে যাওয়ার সময় শয়তানের উদ্দেশে ইবরাহিম (আ.) যে পাথর নিক্ষেপ করেছিলেন, সেটাও হাজার বছর ধরে জামারায় কঙ্কর নিক্ষেপ করার বিধানের মাধ্যমে জাগরূক রয়েছে। এ ছাড়া কাবাঘর নির্মাণের সময় যে পাথরের ওপর ইবরাহিম (আ.) দাঁড়িয়েছিলেন, সেই মাকামে ইবরাহিমে নামাজ আদায় করার বিশেষ বিধানও রাখা হয়েছে হজে। এভাবে দেখতে গেলে হজের বিধানের পরতে পরতে রয়েছে ইবরাহিম, হাজেরা ও ইসমাইল (আ.)-এর স্মৃতি। (তাফসিরে মাআরিফুল কোরআন)
পবিত্র কোরআনের বর্ণনা থেকে বোঝা যায়, শিরকের মূলোৎপাটন, পৃথিবীর আনাচকানাচ থেকে তাওহিদবাদী মানুষকে এক স্থানে সমবেত করে তাদের মধ্যে ভ্রাতৃত্ববোধ জাগ্রত করা, আল্লাহর অনুগ্রহ প্রদর্শন, তাঁর জিকির প্রতিষ্ঠা, তাঁর জন্য জন্তু কোরবানি করার মাধ্যমে গরিবদের জন্য আহারের ব্যবস্থা করা ইত্যাদি হজের উদ্দেশ্য। এর আলোকে আলিমগণ কয়েকটি বিষয়কে হজের বিধানসমূহের আধ্যাত্মিক উদ্দেশ্য হিসেবে চিহ্নিত করেছেন।
এক. আল্লাহর একত্ববাদ প্রতিষ্ঠা: হজ প্রবর্তনের প্রথম ঘোষণা যে আয়াতে দেওয়া হয়েছে, সেখানে আল্লাহ তাআলা স্পষ্ট করে তাঁর সঙ্গে কাউকে শরিক করতে নিষেধ করেছেন। এ ছাড়া হজের মধ্যে যে তালবিয়া পড়া হয়, তাতে স্পষ্ট বাক্যে আল্লাহর একত্ববাদের সাক্ষ্য দেওয়া হয়।
দুই. বান্দার দাসত্ব প্রকাশ করা: হাজি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত সেলাইবিহীন সাদা ইহরামের পোশাক পরিধান করে এবং সাজসজ্জা, আতর-খুশবু ইত্যাদি থেকে বিরত থেকে আল্লাহর সামনে নিজের দাসত্ব ও তুচ্ছতা প্রকাশ করে।
তিন. আল্লাহর জিকির প্রতিষ্ঠা: হজের প্রায় পুরো সময়টাই আল্লাহর জিকিরে অতিবাহিত হয়। বিশেষ করে আরাফাহর ময়দানে অবস্থান সম্পন্ন করার পর মাশআরে হারামে এসে এবং এর পরেও বিশেষভাবে আল্লাহর জিকির করার নির্দেশ এসেছে কোরআনে। (সুরা বাকারা: ১৯৮-২০০)
চার. প্রবৃত্তির ওপর নিয়ন্ত্রণ: ইহরাম অবস্থায় সব ধরনের অশ্লীলতা, ঝগড়া-বিবাদ এমনকি স্ত্রীর সঙ্গে অন্তরঙ্গ হওয়া থেকেও বিরত থাকতে হয়। এভাবে প্রবৃত্তির ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করা সহজ হয়ে যায়।
পাঁচ. হাশরের ময়দানে আল্লাহর দরবারে দাঁড়ানোর অনুভূতি সৃষ্টি হয়। আরাফাহর ময়দানে খোলা মাথায় জীর্ণ পোশাকে আল্লাহর নামে তালবিয়া পাঠ করতে করতে অবস্থান করা কিয়ামতের দিন দিগম্বর অবস্থায় আল্লাহর ভয়ে হাশরের মাঠে অবস্থানের সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ। এভাবে হজ হাজির মনে হাশরের মাঠে দাঁড়ানোর অনুভূতি সৃষ্টি করে।
ছয়. জাতি-বর্ণ-গোত্রনির্বিশেষে সব মানুষ সমান তা দেখিয়ে দেয় হজ। এতে ধনী-গরিব, রাজা-প্রজা, আরব-অনারব, কালো-সাদা সবাইকে একই বেশে একই জায়গায় থাকতে হয়। এটা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়, পার্থিব কোনো পরিচয় আল্লাহর কাছে শ্রেষ্ঠত্বের মাপকাঠি নয়; একমাত্র তাকওয়াই শ্রেষ্ঠত্বের মানদণ্ড। এ জন্য হজের আয়াতে তিনি বলেন, ‘তোমরা পাথেয় সংগ্রহ করো। আর সর্বোত্তম পাথেয় হচ্ছে তাকওয়া। আর হে বিবেকবানেরা, আমাকে ভয় করো (অর্থাৎ তাকওয়া অবলম্বন করো)।
(সুরা বাকারা: ১৯৭)
ইসলামে দান-সদকা অত্যন্ত মর্যাদাপূর্ণ একটি আমল। পবিত্র কোরআন ও হাদিসে এর অসংখ্য ফজিলতের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। সদকা কেবল দরিদ্রের প্রয়োজনই মেটায় না, বরং এটি বান্দা ও তার প্রতিপালকের মধ্যে সম্পর্ককে আরও মজবুত করে।
৪ ঘণ্টা আগেআত্মীয়তার বন্ধন আছে বলেই পৃথিবী এত সুন্দর। পারস্পরিক সম্পর্কের এ বন্ধন না থাকলে হয়তো পৃথিবীর রূপ ভিন্ন থাকত। মা তার সন্তানের প্রতি, ভাই তার ভাইয়ের প্রতি, স্বামী তার স্ত্রীর প্রতি ভালোবাসার যে রূপ আমরা দেখতে পাই—তা হয়তো থাকত না। কোরআন ও হাদিসে আত্মীয়তার বন্ধন রক্ষার প্রতি বিশেষ গুরুত্বারোপ করা হয়েছে।
১৫ ঘণ্টা আগেজুলুম আরবি শব্দ। জুলুমের অর্থ ব্যাপক এবং অনেক বিস্তৃত। সাধারণত জুলুম অর্থ নির্যাতন, নিপীড়ন। শরিয়তের পরিভাষায় জুলুম বলা হয়—কোনো উপযুক্ত জিনিসকে উপযুক্ত স্থানে না রেখে অনুপযুক্ত স্থানে রাখা। যে জুলুম করে তাকে জালিম বলা হয়। মানুষ বিভিন্ন পদ্ধতিতে একজন অন্যজনের ওপর জুলুম করে।
১৯ ঘণ্টা আগেমা-বাবা পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ সম্পদ এবং নিরাপদ আশ্রয়স্থল। তাঁদের আদর-সোহাগে আমাদের জীবনের ভিত্তি রচিত হয়। তাঁদের ত্যাগ ও পরিশ্রমে গড়ে ওঠে সুন্দর ভবিষ্যৎ। তাঁদের ভরসায় আমরা শক্তি পাই এবং তাঁদের দোয়ায় জীবন সার্থক হয়। ইসলাম তাই মা-বাবাকে সর্বোচ্চ সম্মান দিয়েছে এবং তাঁদের প্রতি সদাচরণকে আল্লাহ তাআলার ইবাদতের
১ দিন আগে