ইজাজুল হক, ঢাকা

দ্বিতীয় হিজরির রজব অথবা শাবান মাসে মুসলমানদের ইবাদতের কেবলা পরিবর্তন হয়। ফিলিস্তিনের বায়তুল মোকাদ্দাসের বদলে মক্কার পবিত্র কাবাঘরের দিকে মুখ করে নামাজ পড়ার নির্দেশ আসে। এ ঘটনার মাধ্যমে আল্লাহ তাআলা দেখিয়েছেন, মুসলমানেরা কোনো দিক, স্থাপনা বা নির্দিষ্ট জায়গার ইবাদত করে না। বরং তারা আল্লাহর নির্দেশিত পথে তাঁরই ইবাদত করে। এখানে কেবলা পরিবর্তনের ঘটনাটি সংক্ষেপে তুলে ধরা হলো—
হজরত আদম (আ.)-কে পৃথিবীতে পাঠিয়ে দেওয়ার আগেই ফেরেশতাদের মাধ্যমে আল্লাহ তাআলা পবিত্র কাবাঘরের ভিত্তি স্থাপন করেছিলেন। আদম (আ.) ও তাঁর সন্তানদের জন্য কাবাঘরকেই প্রথম কেবলা সাব্যস্ত করা হয়। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেছেন, ‘মানুষের জন্য সর্বপ্রথম যে ঘর বানানো হয়, তা মক্কায় অবস্থিত এবং এ ঘর বিশ্ববাসীর জন্য হেদায়ত ও বরকতের উৎস।’ (সুরা আলে ইমরান: ৯৬)
আদম (আ.) থেকে নুহ (আ.) পর্যন্ত সব নবীর কেবলাও ছিল পবিত্র কাবাঘর। নুহ (আ.)-এর আমলে সংঘটিত মহাপ্লাবনের সময় পবিত্র কাবাঘরের দেয়াল ধসে পড়ে। এরপর হজরত ইবরাহিম ও ইসমাইল (আ.) আল্লাহর নির্দেশে কাবাঘর ফের নির্মাণ করেন। কাবাঘরই ছিল তাঁদের ও তাঁদের উম্মতের কেবলা। এরপর বনি ইসরাইলের নবী-রাসুলদের জন্য বায়তুল মোকাদ্দাসকে কেবলা নির্ধারণ করা হয়। মুফাসসির ইমাম কুরতুবি হাদিস বর্ণনাকারী (রাভি) আবুল আলিয়ার সূত্রে বলেন, আগের নবীগণ বায়তুল মোকাদ্দাসে নামাজ পড়ার সময় এমনভাবে দাঁড়াতেন, যাতে বায়তুল মোকাদ্দাসের সখরা (হলুদ গম্বুজ) ও কাবাঘর দুটোই সামনে থাকে। (কুরতুবি)
নামাজ ফরজ হওয়ার সময় কেবলা
মহানবী (সা.) মক্কায় অবস্থানকালে মিরাজের রাতে আল্লাহ তাআলা পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ করে দেন। তখন মুসলমানদের কেবলা কাবাঘরই ছিল। অধিকাংশ সাহাবি ও তাবিয়িগণ এ বিষয়ে ঐকমত্য পোষণ করেছেন। তাঁদের মত অনুযায়ী, মক্কার কিছু মানুষ ইবরাহিম (আ.)-এর ধর্মের অনুসারী ছিলেন। আর হজরত ইবরাহিম ও ইসমাইল (আ.)-এর কেবলা কাবাঘরই ছিল। সুতরাং ইসলামে নামাজ ফরজ হওয়ার সময় কাবাঘরই কেবলা ছিল। মহানবী (সা.) মক্কায় অবস্থানকালে কাবাঘরের দিকে মুখ করেই নামাজ পড়তেন। হিজরতের আগ পর্যন্ত কাবাঘরের দিকেই মুখ করে নামাজ আদায় করেছেন। (কুরতুবি, ইবনে কাসির ও মাআরিফুল কোরআন)
তবে ইবনে আব্বাস (রা.)–এর বর্ণনা অনুযায়ী, শুরু থেকেই কেবলা ছিল বায়তুল মোকাদ্দাস। হিজরতের পরও ষোলো-সতেরো মাস পর্যন্ত বায়তুল মোকাদ্দাসই কেবলা ছিল। এরপর পবিত্র কাবাঘরকে কেবলা করার নির্দেশ আসে। তবে মহানবী (সা.) মক্কায় অবস্থানকালে হাজরে আসওয়াদ ও রোকনে ইয়ামানির মাঝখানে দাঁড়িয়ে নামাজ পড়তেন, যাতে কাবাঘর ও বায়তুল মোকাদ্দাস দুটোই সামনে থাকে। মদিনায় পৌঁছার পর এমনটি করা সম্ভব ছিল না। তাই তাঁর মনে কেবলা পরিবর্তনের বাসনা দানা বাঁধতে থাকে। (ইবনে কাসির)
তবে ইমাম কুরতুবি (রহ.) প্রথম মতটিকেই অধিক শুদ্ধ বলেছেন। কারণ মহানবী (সা.)-এর মদিনায় আগমনের পর যখন ইহুদিদের সঙ্গে মেলামেশা শুরু হয়, তখন তাদের আকৃষ্ট করার উদ্দেশ্যে আল্লাহর নির্দেশে তিনি তাদের কেবলাকেই কেবলা হিসেবে গ্রহণ করেন। কিন্তু যখন পরে অভিজ্ঞতায় দেখা গেল, ইহুদিরা হঠকারী মনোভাব ত্যাগ করবে না, তখন মহানবী (সা.)-কে আগের কেবলার দিকে মুখ করার নির্দেশ দেওয়া হয়। পবিত্র কাবাঘর তাঁর পূর্বপুরুষ হজরত ইবরাহিম (আ.) ও ইসমাইল (আ.)-এর কেবলা হওয়ার কারণে তিনি স্বভাবতই সেদিকে নামাজ পড়তে পছন্দ করতেন। (মাআরিফুল কোরআন)
কেবলা পরিবর্তনের ঘটনা
ওপরের আলোচনা থেকে বোঝা যায়, হিজরতের পর ষোলো-সতেরো মাস মহানবী (সা.) বায়তুল মোকাদ্দাসকে কেবলা মেনে নামাজ আদায় করেছেন। এরপর আল্লাহ তাআলা তাঁকে কাবাঘরের দিকে ফিরে নামাজ পড়ার আদেশ দেন। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তুমি যেখান থেকেই বের হও না কেন, মসজিদুল হারামের দিকে মুখ ফেরাও এবং যেখানেই থাক না কেন, সেদিকেই মুখ ফেরাও, যাতে তাদের মধ্যে সীমালঙ্ঘনকারীরা ছাড়া অন্য কোনো লোক তোমাদের সঙ্গে বিতর্ক করতে না পারে। সুতরাং তাদের ভয় পেয়ো না; বরং একমাত্র আমাকেই ভয় করো, যাতে আমি আমার অনুগ্রহ তোমাদের পুরোপুরি দিতে পারি এবং যাতে তোমরা সৎ পথ পেতে পার।’ (সুরা বাকারা: ১৫০)
কেবলা পরিবর্তনের এ নির্দেশ দ্বিতীয় হিজরির রজব অথবা শাবান মাসে নাজিল হয়। হাদিস বর্ণনাকারী ইবনে সাআদ বলেন, রাসুল (সা.) উম্মে বিশর ইবনে বারা ইবনে মারুর ঘরে দাওয়াতে গিয়েছিলেন। সেখানে জোহরের সময় হলে লোকজন নিয়ে নামাজে দাঁড়িয়ে যান। দুই রাকাত নামাজ শেষে তৃতীয় রাকাত আদায়কালে অহির মাধ্যমে এই আয়াত নাজিল হয়। সঙ্গে সঙ্গে তিনি অন্যদের নিয়ে বায়তুল মোকাদ্দাসের দিক থেকে কাবাঘরের দিকে মুখ ঘুরিয়ে নেন। (তাবাকাতে ইবনে সাআদ: ১ / ২৪২)
মহানবী (সা.)-এর আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়ন
মহানবী (সা.) মদিনায় যাওয়ার পর থেকেই কাবাঘরের দিকে ফিরে নামাজ আদায়ের ইচ্ছা পোষণ করতেন। তিনি অনুভব করছিলেন, বনি ইসরাইলের নবীদের যুগ শেষ হয়ে গেছে এবং বায়তুল মোকাদ্দাসের কেন্দ্রীয় মর্যাদার অবসান ঘটেছে। এখন ইবরাহিম (আ.)-এর কেবলার দিকে মুখ ফেরানোর সময় হয়ে গেছে। কাবা মুসলিমদের কেবলা সাব্যস্ত হোক—এটাই ছিল তাঁর আন্তরিক বাসনা। এ জন্য তিনি আল্লাহর কাছে দোয়াও করছিলেন। বারবার আকাশের দিকে চাইতেন—কখন ফেরেশতা কেবলা পরিবর্তনের নির্দেশ নিয়ে আসবেন। (তাফসিরে যাকারিয়া)
পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আকাশের দিকে তোমার বারবার মুখ ফেরানোকে আমি প্রায় লক্ষ্য করি। সুতরাং আমি তোমাকে সেই কেবলার দিকে অবশ্যই ফিরিয়ে দেব, যা তুমি পছন্দ করো। অতএব তুমি মসজিদে হারামের দিকে মুখ ফেরাও। তোমরা যেখানেই থাক না কেন, সেই দিকে মুখ ফেরাও। আর যাদের কিতাব দেওয়া হয়েছে, তারা (আগের আসমানি কিতাবের মাধ্যমে) নিশ্চিতভাবে জানে যে, এ তাদের প্রতিপালকের কাছ থেকে আসা সত্য। তারা যা করে সে সম্পর্কে আল্লাহ উদাসীন নন।’ (সুরা বাকারা: ১৪৪)
ইহুদি, মুশরিক ও মুনাফিকদের প্রতিক্রিয়া
কেবলা পরিবর্তনের ঘটনা জানার পর মক্কার মুশরিকেরা বলতে শুরু করল, মুহাম্মদ যেভাবে আমাদের কেবলার দিকে ফেরত এসেছেন, তেমনি অচিরেই আমাদের ধর্মেও ফেরত আসবেন। আমাদের কেবলা সত্য মনে করেই তিনি ফিরে এসেছেন। ইহুদিরা বলতে লাগল, মুহাম্মদ তাঁর আগের নবীদের কেবলার বিরোধিতা করেছেন। মুনাফিকেরা বলতে লাগল, জানি না, তিনি কোন দিকে যাচ্ছেন? প্রথম কেবলা সঠিক হয়ে থাকলে তিনি সত্য বর্জন করেছেন। আর দ্বিতীয়টি সঠিক হয়ে থাকলে প্রথমটির ব্যাপারে তিনি ভ্রষ্ট ছিলেন। (তাফসিরে জাকারিয়া)
এসবের জবাব দিতেই আল্লাহ তাআলা বলেছেন, ‘বোকারা অচিরেই বলবে, তারা এত দিন যে কেবলার অনুসরণ করে আসছিল, তা থেকে কীসে তাদের ফিরিয়ে দিল? বলো—পূর্ব ও পশ্চিম আল্লাহরই। তিনি যাকে ইচ্ছা সরল পথে পরিচালিত করেন। তুমি এত দিন যে কেবলার অনুসরণ করছিলে, তা এই উদ্দেশ্যে প্রতিষ্ঠিত করেছিলাম, যাতে আমি জানতে পারি—কে রাসুলের অনুসরণ করে এবং কে ফিরে যায়? আল্লাহ যাদের সৎ পথে পরিচালিত করেছেন, তারা ছাড়া অন্যের কাছে এ (পরিবর্তন) নিশ্চয়ই কঠিন ব্যাপার। … আর যাদের কিতাব দেওয়া হয়েছে, তুমি যদি তাদের কাছে সব প্রমাণ নিয়ে আসো, তবু তারা তোমার কেবলার অনুসরণ করবে না; এবং তুমিও তাদের কেবলার অনুসারী নও। …’ (সুরা বাকারা: ১৪২-১৪৫)

দ্বিতীয় হিজরির রজব অথবা শাবান মাসে মুসলমানদের ইবাদতের কেবলা পরিবর্তন হয়। ফিলিস্তিনের বায়তুল মোকাদ্দাসের বদলে মক্কার পবিত্র কাবাঘরের দিকে মুখ করে নামাজ পড়ার নির্দেশ আসে। এ ঘটনার মাধ্যমে আল্লাহ তাআলা দেখিয়েছেন, মুসলমানেরা কোনো দিক, স্থাপনা বা নির্দিষ্ট জায়গার ইবাদত করে না। বরং তারা আল্লাহর নির্দেশিত পথে তাঁরই ইবাদত করে। এখানে কেবলা পরিবর্তনের ঘটনাটি সংক্ষেপে তুলে ধরা হলো—
হজরত আদম (আ.)-কে পৃথিবীতে পাঠিয়ে দেওয়ার আগেই ফেরেশতাদের মাধ্যমে আল্লাহ তাআলা পবিত্র কাবাঘরের ভিত্তি স্থাপন করেছিলেন। আদম (আ.) ও তাঁর সন্তানদের জন্য কাবাঘরকেই প্রথম কেবলা সাব্যস্ত করা হয়। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেছেন, ‘মানুষের জন্য সর্বপ্রথম যে ঘর বানানো হয়, তা মক্কায় অবস্থিত এবং এ ঘর বিশ্ববাসীর জন্য হেদায়ত ও বরকতের উৎস।’ (সুরা আলে ইমরান: ৯৬)
আদম (আ.) থেকে নুহ (আ.) পর্যন্ত সব নবীর কেবলাও ছিল পবিত্র কাবাঘর। নুহ (আ.)-এর আমলে সংঘটিত মহাপ্লাবনের সময় পবিত্র কাবাঘরের দেয়াল ধসে পড়ে। এরপর হজরত ইবরাহিম ও ইসমাইল (আ.) আল্লাহর নির্দেশে কাবাঘর ফের নির্মাণ করেন। কাবাঘরই ছিল তাঁদের ও তাঁদের উম্মতের কেবলা। এরপর বনি ইসরাইলের নবী-রাসুলদের জন্য বায়তুল মোকাদ্দাসকে কেবলা নির্ধারণ করা হয়। মুফাসসির ইমাম কুরতুবি হাদিস বর্ণনাকারী (রাভি) আবুল আলিয়ার সূত্রে বলেন, আগের নবীগণ বায়তুল মোকাদ্দাসে নামাজ পড়ার সময় এমনভাবে দাঁড়াতেন, যাতে বায়তুল মোকাদ্দাসের সখরা (হলুদ গম্বুজ) ও কাবাঘর দুটোই সামনে থাকে। (কুরতুবি)
নামাজ ফরজ হওয়ার সময় কেবলা
মহানবী (সা.) মক্কায় অবস্থানকালে মিরাজের রাতে আল্লাহ তাআলা পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ করে দেন। তখন মুসলমানদের কেবলা কাবাঘরই ছিল। অধিকাংশ সাহাবি ও তাবিয়িগণ এ বিষয়ে ঐকমত্য পোষণ করেছেন। তাঁদের মত অনুযায়ী, মক্কার কিছু মানুষ ইবরাহিম (আ.)-এর ধর্মের অনুসারী ছিলেন। আর হজরত ইবরাহিম ও ইসমাইল (আ.)-এর কেবলা কাবাঘরই ছিল। সুতরাং ইসলামে নামাজ ফরজ হওয়ার সময় কাবাঘরই কেবলা ছিল। মহানবী (সা.) মক্কায় অবস্থানকালে কাবাঘরের দিকে মুখ করেই নামাজ পড়তেন। হিজরতের আগ পর্যন্ত কাবাঘরের দিকেই মুখ করে নামাজ আদায় করেছেন। (কুরতুবি, ইবনে কাসির ও মাআরিফুল কোরআন)
তবে ইবনে আব্বাস (রা.)–এর বর্ণনা অনুযায়ী, শুরু থেকেই কেবলা ছিল বায়তুল মোকাদ্দাস। হিজরতের পরও ষোলো-সতেরো মাস পর্যন্ত বায়তুল মোকাদ্দাসই কেবলা ছিল। এরপর পবিত্র কাবাঘরকে কেবলা করার নির্দেশ আসে। তবে মহানবী (সা.) মক্কায় অবস্থানকালে হাজরে আসওয়াদ ও রোকনে ইয়ামানির মাঝখানে দাঁড়িয়ে নামাজ পড়তেন, যাতে কাবাঘর ও বায়তুল মোকাদ্দাস দুটোই সামনে থাকে। মদিনায় পৌঁছার পর এমনটি করা সম্ভব ছিল না। তাই তাঁর মনে কেবলা পরিবর্তনের বাসনা দানা বাঁধতে থাকে। (ইবনে কাসির)
তবে ইমাম কুরতুবি (রহ.) প্রথম মতটিকেই অধিক শুদ্ধ বলেছেন। কারণ মহানবী (সা.)-এর মদিনায় আগমনের পর যখন ইহুদিদের সঙ্গে মেলামেশা শুরু হয়, তখন তাদের আকৃষ্ট করার উদ্দেশ্যে আল্লাহর নির্দেশে তিনি তাদের কেবলাকেই কেবলা হিসেবে গ্রহণ করেন। কিন্তু যখন পরে অভিজ্ঞতায় দেখা গেল, ইহুদিরা হঠকারী মনোভাব ত্যাগ করবে না, তখন মহানবী (সা.)-কে আগের কেবলার দিকে মুখ করার নির্দেশ দেওয়া হয়। পবিত্র কাবাঘর তাঁর পূর্বপুরুষ হজরত ইবরাহিম (আ.) ও ইসমাইল (আ.)-এর কেবলা হওয়ার কারণে তিনি স্বভাবতই সেদিকে নামাজ পড়তে পছন্দ করতেন। (মাআরিফুল কোরআন)
কেবলা পরিবর্তনের ঘটনা
ওপরের আলোচনা থেকে বোঝা যায়, হিজরতের পর ষোলো-সতেরো মাস মহানবী (সা.) বায়তুল মোকাদ্দাসকে কেবলা মেনে নামাজ আদায় করেছেন। এরপর আল্লাহ তাআলা তাঁকে কাবাঘরের দিকে ফিরে নামাজ পড়ার আদেশ দেন। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তুমি যেখান থেকেই বের হও না কেন, মসজিদুল হারামের দিকে মুখ ফেরাও এবং যেখানেই থাক না কেন, সেদিকেই মুখ ফেরাও, যাতে তাদের মধ্যে সীমালঙ্ঘনকারীরা ছাড়া অন্য কোনো লোক তোমাদের সঙ্গে বিতর্ক করতে না পারে। সুতরাং তাদের ভয় পেয়ো না; বরং একমাত্র আমাকেই ভয় করো, যাতে আমি আমার অনুগ্রহ তোমাদের পুরোপুরি দিতে পারি এবং যাতে তোমরা সৎ পথ পেতে পার।’ (সুরা বাকারা: ১৫০)
কেবলা পরিবর্তনের এ নির্দেশ দ্বিতীয় হিজরির রজব অথবা শাবান মাসে নাজিল হয়। হাদিস বর্ণনাকারী ইবনে সাআদ বলেন, রাসুল (সা.) উম্মে বিশর ইবনে বারা ইবনে মারুর ঘরে দাওয়াতে গিয়েছিলেন। সেখানে জোহরের সময় হলে লোকজন নিয়ে নামাজে দাঁড়িয়ে যান। দুই রাকাত নামাজ শেষে তৃতীয় রাকাত আদায়কালে অহির মাধ্যমে এই আয়াত নাজিল হয়। সঙ্গে সঙ্গে তিনি অন্যদের নিয়ে বায়তুল মোকাদ্দাসের দিক থেকে কাবাঘরের দিকে মুখ ঘুরিয়ে নেন। (তাবাকাতে ইবনে সাআদ: ১ / ২৪২)
মহানবী (সা.)-এর আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়ন
মহানবী (সা.) মদিনায় যাওয়ার পর থেকেই কাবাঘরের দিকে ফিরে নামাজ আদায়ের ইচ্ছা পোষণ করতেন। তিনি অনুভব করছিলেন, বনি ইসরাইলের নবীদের যুগ শেষ হয়ে গেছে এবং বায়তুল মোকাদ্দাসের কেন্দ্রীয় মর্যাদার অবসান ঘটেছে। এখন ইবরাহিম (আ.)-এর কেবলার দিকে মুখ ফেরানোর সময় হয়ে গেছে। কাবা মুসলিমদের কেবলা সাব্যস্ত হোক—এটাই ছিল তাঁর আন্তরিক বাসনা। এ জন্য তিনি আল্লাহর কাছে দোয়াও করছিলেন। বারবার আকাশের দিকে চাইতেন—কখন ফেরেশতা কেবলা পরিবর্তনের নির্দেশ নিয়ে আসবেন। (তাফসিরে যাকারিয়া)
পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আকাশের দিকে তোমার বারবার মুখ ফেরানোকে আমি প্রায় লক্ষ্য করি। সুতরাং আমি তোমাকে সেই কেবলার দিকে অবশ্যই ফিরিয়ে দেব, যা তুমি পছন্দ করো। অতএব তুমি মসজিদে হারামের দিকে মুখ ফেরাও। তোমরা যেখানেই থাক না কেন, সেই দিকে মুখ ফেরাও। আর যাদের কিতাব দেওয়া হয়েছে, তারা (আগের আসমানি কিতাবের মাধ্যমে) নিশ্চিতভাবে জানে যে, এ তাদের প্রতিপালকের কাছ থেকে আসা সত্য। তারা যা করে সে সম্পর্কে আল্লাহ উদাসীন নন।’ (সুরা বাকারা: ১৪৪)
ইহুদি, মুশরিক ও মুনাফিকদের প্রতিক্রিয়া
কেবলা পরিবর্তনের ঘটনা জানার পর মক্কার মুশরিকেরা বলতে শুরু করল, মুহাম্মদ যেভাবে আমাদের কেবলার দিকে ফেরত এসেছেন, তেমনি অচিরেই আমাদের ধর্মেও ফেরত আসবেন। আমাদের কেবলা সত্য মনে করেই তিনি ফিরে এসেছেন। ইহুদিরা বলতে লাগল, মুহাম্মদ তাঁর আগের নবীদের কেবলার বিরোধিতা করেছেন। মুনাফিকেরা বলতে লাগল, জানি না, তিনি কোন দিকে যাচ্ছেন? প্রথম কেবলা সঠিক হয়ে থাকলে তিনি সত্য বর্জন করেছেন। আর দ্বিতীয়টি সঠিক হয়ে থাকলে প্রথমটির ব্যাপারে তিনি ভ্রষ্ট ছিলেন। (তাফসিরে জাকারিয়া)
এসবের জবাব দিতেই আল্লাহ তাআলা বলেছেন, ‘বোকারা অচিরেই বলবে, তারা এত দিন যে কেবলার অনুসরণ করে আসছিল, তা থেকে কীসে তাদের ফিরিয়ে দিল? বলো—পূর্ব ও পশ্চিম আল্লাহরই। তিনি যাকে ইচ্ছা সরল পথে পরিচালিত করেন। তুমি এত দিন যে কেবলার অনুসরণ করছিলে, তা এই উদ্দেশ্যে প্রতিষ্ঠিত করেছিলাম, যাতে আমি জানতে পারি—কে রাসুলের অনুসরণ করে এবং কে ফিরে যায়? আল্লাহ যাদের সৎ পথে পরিচালিত করেছেন, তারা ছাড়া অন্যের কাছে এ (পরিবর্তন) নিশ্চয়ই কঠিন ব্যাপার। … আর যাদের কিতাব দেওয়া হয়েছে, তুমি যদি তাদের কাছে সব প্রমাণ নিয়ে আসো, তবু তারা তোমার কেবলার অনুসরণ করবে না; এবং তুমিও তাদের কেবলার অনুসারী নও। …’ (সুরা বাকারা: ১৪২-১৪৫)
ইজাজুল হক, ঢাকা

দ্বিতীয় হিজরির রজব অথবা শাবান মাসে মুসলমানদের ইবাদতের কেবলা পরিবর্তন হয়। ফিলিস্তিনের বায়তুল মোকাদ্দাসের বদলে মক্কার পবিত্র কাবাঘরের দিকে মুখ করে নামাজ পড়ার নির্দেশ আসে। এ ঘটনার মাধ্যমে আল্লাহ তাআলা দেখিয়েছেন, মুসলমানেরা কোনো দিক, স্থাপনা বা নির্দিষ্ট জায়গার ইবাদত করে না। বরং তারা আল্লাহর নির্দেশিত পথে তাঁরই ইবাদত করে। এখানে কেবলা পরিবর্তনের ঘটনাটি সংক্ষেপে তুলে ধরা হলো—
হজরত আদম (আ.)-কে পৃথিবীতে পাঠিয়ে দেওয়ার আগেই ফেরেশতাদের মাধ্যমে আল্লাহ তাআলা পবিত্র কাবাঘরের ভিত্তি স্থাপন করেছিলেন। আদম (আ.) ও তাঁর সন্তানদের জন্য কাবাঘরকেই প্রথম কেবলা সাব্যস্ত করা হয়। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেছেন, ‘মানুষের জন্য সর্বপ্রথম যে ঘর বানানো হয়, তা মক্কায় অবস্থিত এবং এ ঘর বিশ্ববাসীর জন্য হেদায়ত ও বরকতের উৎস।’ (সুরা আলে ইমরান: ৯৬)
আদম (আ.) থেকে নুহ (আ.) পর্যন্ত সব নবীর কেবলাও ছিল পবিত্র কাবাঘর। নুহ (আ.)-এর আমলে সংঘটিত মহাপ্লাবনের সময় পবিত্র কাবাঘরের দেয়াল ধসে পড়ে। এরপর হজরত ইবরাহিম ও ইসমাইল (আ.) আল্লাহর নির্দেশে কাবাঘর ফের নির্মাণ করেন। কাবাঘরই ছিল তাঁদের ও তাঁদের উম্মতের কেবলা। এরপর বনি ইসরাইলের নবী-রাসুলদের জন্য বায়তুল মোকাদ্দাসকে কেবলা নির্ধারণ করা হয়। মুফাসসির ইমাম কুরতুবি হাদিস বর্ণনাকারী (রাভি) আবুল আলিয়ার সূত্রে বলেন, আগের নবীগণ বায়তুল মোকাদ্দাসে নামাজ পড়ার সময় এমনভাবে দাঁড়াতেন, যাতে বায়তুল মোকাদ্দাসের সখরা (হলুদ গম্বুজ) ও কাবাঘর দুটোই সামনে থাকে। (কুরতুবি)
নামাজ ফরজ হওয়ার সময় কেবলা
মহানবী (সা.) মক্কায় অবস্থানকালে মিরাজের রাতে আল্লাহ তাআলা পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ করে দেন। তখন মুসলমানদের কেবলা কাবাঘরই ছিল। অধিকাংশ সাহাবি ও তাবিয়িগণ এ বিষয়ে ঐকমত্য পোষণ করেছেন। তাঁদের মত অনুযায়ী, মক্কার কিছু মানুষ ইবরাহিম (আ.)-এর ধর্মের অনুসারী ছিলেন। আর হজরত ইবরাহিম ও ইসমাইল (আ.)-এর কেবলা কাবাঘরই ছিল। সুতরাং ইসলামে নামাজ ফরজ হওয়ার সময় কাবাঘরই কেবলা ছিল। মহানবী (সা.) মক্কায় অবস্থানকালে কাবাঘরের দিকে মুখ করেই নামাজ পড়তেন। হিজরতের আগ পর্যন্ত কাবাঘরের দিকেই মুখ করে নামাজ আদায় করেছেন। (কুরতুবি, ইবনে কাসির ও মাআরিফুল কোরআন)
তবে ইবনে আব্বাস (রা.)–এর বর্ণনা অনুযায়ী, শুরু থেকেই কেবলা ছিল বায়তুল মোকাদ্দাস। হিজরতের পরও ষোলো-সতেরো মাস পর্যন্ত বায়তুল মোকাদ্দাসই কেবলা ছিল। এরপর পবিত্র কাবাঘরকে কেবলা করার নির্দেশ আসে। তবে মহানবী (সা.) মক্কায় অবস্থানকালে হাজরে আসওয়াদ ও রোকনে ইয়ামানির মাঝখানে দাঁড়িয়ে নামাজ পড়তেন, যাতে কাবাঘর ও বায়তুল মোকাদ্দাস দুটোই সামনে থাকে। মদিনায় পৌঁছার পর এমনটি করা সম্ভব ছিল না। তাই তাঁর মনে কেবলা পরিবর্তনের বাসনা দানা বাঁধতে থাকে। (ইবনে কাসির)
তবে ইমাম কুরতুবি (রহ.) প্রথম মতটিকেই অধিক শুদ্ধ বলেছেন। কারণ মহানবী (সা.)-এর মদিনায় আগমনের পর যখন ইহুদিদের সঙ্গে মেলামেশা শুরু হয়, তখন তাদের আকৃষ্ট করার উদ্দেশ্যে আল্লাহর নির্দেশে তিনি তাদের কেবলাকেই কেবলা হিসেবে গ্রহণ করেন। কিন্তু যখন পরে অভিজ্ঞতায় দেখা গেল, ইহুদিরা হঠকারী মনোভাব ত্যাগ করবে না, তখন মহানবী (সা.)-কে আগের কেবলার দিকে মুখ করার নির্দেশ দেওয়া হয়। পবিত্র কাবাঘর তাঁর পূর্বপুরুষ হজরত ইবরাহিম (আ.) ও ইসমাইল (আ.)-এর কেবলা হওয়ার কারণে তিনি স্বভাবতই সেদিকে নামাজ পড়তে পছন্দ করতেন। (মাআরিফুল কোরআন)
কেবলা পরিবর্তনের ঘটনা
ওপরের আলোচনা থেকে বোঝা যায়, হিজরতের পর ষোলো-সতেরো মাস মহানবী (সা.) বায়তুল মোকাদ্দাসকে কেবলা মেনে নামাজ আদায় করেছেন। এরপর আল্লাহ তাআলা তাঁকে কাবাঘরের দিকে ফিরে নামাজ পড়ার আদেশ দেন। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তুমি যেখান থেকেই বের হও না কেন, মসজিদুল হারামের দিকে মুখ ফেরাও এবং যেখানেই থাক না কেন, সেদিকেই মুখ ফেরাও, যাতে তাদের মধ্যে সীমালঙ্ঘনকারীরা ছাড়া অন্য কোনো লোক তোমাদের সঙ্গে বিতর্ক করতে না পারে। সুতরাং তাদের ভয় পেয়ো না; বরং একমাত্র আমাকেই ভয় করো, যাতে আমি আমার অনুগ্রহ তোমাদের পুরোপুরি দিতে পারি এবং যাতে তোমরা সৎ পথ পেতে পার।’ (সুরা বাকারা: ১৫০)
কেবলা পরিবর্তনের এ নির্দেশ দ্বিতীয় হিজরির রজব অথবা শাবান মাসে নাজিল হয়। হাদিস বর্ণনাকারী ইবনে সাআদ বলেন, রাসুল (সা.) উম্মে বিশর ইবনে বারা ইবনে মারুর ঘরে দাওয়াতে গিয়েছিলেন। সেখানে জোহরের সময় হলে লোকজন নিয়ে নামাজে দাঁড়িয়ে যান। দুই রাকাত নামাজ শেষে তৃতীয় রাকাত আদায়কালে অহির মাধ্যমে এই আয়াত নাজিল হয়। সঙ্গে সঙ্গে তিনি অন্যদের নিয়ে বায়তুল মোকাদ্দাসের দিক থেকে কাবাঘরের দিকে মুখ ঘুরিয়ে নেন। (তাবাকাতে ইবনে সাআদ: ১ / ২৪২)
মহানবী (সা.)-এর আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়ন
মহানবী (সা.) মদিনায় যাওয়ার পর থেকেই কাবাঘরের দিকে ফিরে নামাজ আদায়ের ইচ্ছা পোষণ করতেন। তিনি অনুভব করছিলেন, বনি ইসরাইলের নবীদের যুগ শেষ হয়ে গেছে এবং বায়তুল মোকাদ্দাসের কেন্দ্রীয় মর্যাদার অবসান ঘটেছে। এখন ইবরাহিম (আ.)-এর কেবলার দিকে মুখ ফেরানোর সময় হয়ে গেছে। কাবা মুসলিমদের কেবলা সাব্যস্ত হোক—এটাই ছিল তাঁর আন্তরিক বাসনা। এ জন্য তিনি আল্লাহর কাছে দোয়াও করছিলেন। বারবার আকাশের দিকে চাইতেন—কখন ফেরেশতা কেবলা পরিবর্তনের নির্দেশ নিয়ে আসবেন। (তাফসিরে যাকারিয়া)
পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আকাশের দিকে তোমার বারবার মুখ ফেরানোকে আমি প্রায় লক্ষ্য করি। সুতরাং আমি তোমাকে সেই কেবলার দিকে অবশ্যই ফিরিয়ে দেব, যা তুমি পছন্দ করো। অতএব তুমি মসজিদে হারামের দিকে মুখ ফেরাও। তোমরা যেখানেই থাক না কেন, সেই দিকে মুখ ফেরাও। আর যাদের কিতাব দেওয়া হয়েছে, তারা (আগের আসমানি কিতাবের মাধ্যমে) নিশ্চিতভাবে জানে যে, এ তাদের প্রতিপালকের কাছ থেকে আসা সত্য। তারা যা করে সে সম্পর্কে আল্লাহ উদাসীন নন।’ (সুরা বাকারা: ১৪৪)
ইহুদি, মুশরিক ও মুনাফিকদের প্রতিক্রিয়া
কেবলা পরিবর্তনের ঘটনা জানার পর মক্কার মুশরিকেরা বলতে শুরু করল, মুহাম্মদ যেভাবে আমাদের কেবলার দিকে ফেরত এসেছেন, তেমনি অচিরেই আমাদের ধর্মেও ফেরত আসবেন। আমাদের কেবলা সত্য মনে করেই তিনি ফিরে এসেছেন। ইহুদিরা বলতে লাগল, মুহাম্মদ তাঁর আগের নবীদের কেবলার বিরোধিতা করেছেন। মুনাফিকেরা বলতে লাগল, জানি না, তিনি কোন দিকে যাচ্ছেন? প্রথম কেবলা সঠিক হয়ে থাকলে তিনি সত্য বর্জন করেছেন। আর দ্বিতীয়টি সঠিক হয়ে থাকলে প্রথমটির ব্যাপারে তিনি ভ্রষ্ট ছিলেন। (তাফসিরে জাকারিয়া)
এসবের জবাব দিতেই আল্লাহ তাআলা বলেছেন, ‘বোকারা অচিরেই বলবে, তারা এত দিন যে কেবলার অনুসরণ করে আসছিল, তা থেকে কীসে তাদের ফিরিয়ে দিল? বলো—পূর্ব ও পশ্চিম আল্লাহরই। তিনি যাকে ইচ্ছা সরল পথে পরিচালিত করেন। তুমি এত দিন যে কেবলার অনুসরণ করছিলে, তা এই উদ্দেশ্যে প্রতিষ্ঠিত করেছিলাম, যাতে আমি জানতে পারি—কে রাসুলের অনুসরণ করে এবং কে ফিরে যায়? আল্লাহ যাদের সৎ পথে পরিচালিত করেছেন, তারা ছাড়া অন্যের কাছে এ (পরিবর্তন) নিশ্চয়ই কঠিন ব্যাপার। … আর যাদের কিতাব দেওয়া হয়েছে, তুমি যদি তাদের কাছে সব প্রমাণ নিয়ে আসো, তবু তারা তোমার কেবলার অনুসরণ করবে না; এবং তুমিও তাদের কেবলার অনুসারী নও। …’ (সুরা বাকারা: ১৪২-১৪৫)

দ্বিতীয় হিজরির রজব অথবা শাবান মাসে মুসলমানদের ইবাদতের কেবলা পরিবর্তন হয়। ফিলিস্তিনের বায়তুল মোকাদ্দাসের বদলে মক্কার পবিত্র কাবাঘরের দিকে মুখ করে নামাজ পড়ার নির্দেশ আসে। এ ঘটনার মাধ্যমে আল্লাহ তাআলা দেখিয়েছেন, মুসলমানেরা কোনো দিক, স্থাপনা বা নির্দিষ্ট জায়গার ইবাদত করে না। বরং তারা আল্লাহর নির্দেশিত পথে তাঁরই ইবাদত করে। এখানে কেবলা পরিবর্তনের ঘটনাটি সংক্ষেপে তুলে ধরা হলো—
হজরত আদম (আ.)-কে পৃথিবীতে পাঠিয়ে দেওয়ার আগেই ফেরেশতাদের মাধ্যমে আল্লাহ তাআলা পবিত্র কাবাঘরের ভিত্তি স্থাপন করেছিলেন। আদম (আ.) ও তাঁর সন্তানদের জন্য কাবাঘরকেই প্রথম কেবলা সাব্যস্ত করা হয়। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেছেন, ‘মানুষের জন্য সর্বপ্রথম যে ঘর বানানো হয়, তা মক্কায় অবস্থিত এবং এ ঘর বিশ্ববাসীর জন্য হেদায়ত ও বরকতের উৎস।’ (সুরা আলে ইমরান: ৯৬)
আদম (আ.) থেকে নুহ (আ.) পর্যন্ত সব নবীর কেবলাও ছিল পবিত্র কাবাঘর। নুহ (আ.)-এর আমলে সংঘটিত মহাপ্লাবনের সময় পবিত্র কাবাঘরের দেয়াল ধসে পড়ে। এরপর হজরত ইবরাহিম ও ইসমাইল (আ.) আল্লাহর নির্দেশে কাবাঘর ফের নির্মাণ করেন। কাবাঘরই ছিল তাঁদের ও তাঁদের উম্মতের কেবলা। এরপর বনি ইসরাইলের নবী-রাসুলদের জন্য বায়তুল মোকাদ্দাসকে কেবলা নির্ধারণ করা হয়। মুফাসসির ইমাম কুরতুবি হাদিস বর্ণনাকারী (রাভি) আবুল আলিয়ার সূত্রে বলেন, আগের নবীগণ বায়তুল মোকাদ্দাসে নামাজ পড়ার সময় এমনভাবে দাঁড়াতেন, যাতে বায়তুল মোকাদ্দাসের সখরা (হলুদ গম্বুজ) ও কাবাঘর দুটোই সামনে থাকে। (কুরতুবি)
নামাজ ফরজ হওয়ার সময় কেবলা
মহানবী (সা.) মক্কায় অবস্থানকালে মিরাজের রাতে আল্লাহ তাআলা পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ করে দেন। তখন মুসলমানদের কেবলা কাবাঘরই ছিল। অধিকাংশ সাহাবি ও তাবিয়িগণ এ বিষয়ে ঐকমত্য পোষণ করেছেন। তাঁদের মত অনুযায়ী, মক্কার কিছু মানুষ ইবরাহিম (আ.)-এর ধর্মের অনুসারী ছিলেন। আর হজরত ইবরাহিম ও ইসমাইল (আ.)-এর কেবলা কাবাঘরই ছিল। সুতরাং ইসলামে নামাজ ফরজ হওয়ার সময় কাবাঘরই কেবলা ছিল। মহানবী (সা.) মক্কায় অবস্থানকালে কাবাঘরের দিকে মুখ করেই নামাজ পড়তেন। হিজরতের আগ পর্যন্ত কাবাঘরের দিকেই মুখ করে নামাজ আদায় করেছেন। (কুরতুবি, ইবনে কাসির ও মাআরিফুল কোরআন)
তবে ইবনে আব্বাস (রা.)–এর বর্ণনা অনুযায়ী, শুরু থেকেই কেবলা ছিল বায়তুল মোকাদ্দাস। হিজরতের পরও ষোলো-সতেরো মাস পর্যন্ত বায়তুল মোকাদ্দাসই কেবলা ছিল। এরপর পবিত্র কাবাঘরকে কেবলা করার নির্দেশ আসে। তবে মহানবী (সা.) মক্কায় অবস্থানকালে হাজরে আসওয়াদ ও রোকনে ইয়ামানির মাঝখানে দাঁড়িয়ে নামাজ পড়তেন, যাতে কাবাঘর ও বায়তুল মোকাদ্দাস দুটোই সামনে থাকে। মদিনায় পৌঁছার পর এমনটি করা সম্ভব ছিল না। তাই তাঁর মনে কেবলা পরিবর্তনের বাসনা দানা বাঁধতে থাকে। (ইবনে কাসির)
তবে ইমাম কুরতুবি (রহ.) প্রথম মতটিকেই অধিক শুদ্ধ বলেছেন। কারণ মহানবী (সা.)-এর মদিনায় আগমনের পর যখন ইহুদিদের সঙ্গে মেলামেশা শুরু হয়, তখন তাদের আকৃষ্ট করার উদ্দেশ্যে আল্লাহর নির্দেশে তিনি তাদের কেবলাকেই কেবলা হিসেবে গ্রহণ করেন। কিন্তু যখন পরে অভিজ্ঞতায় দেখা গেল, ইহুদিরা হঠকারী মনোভাব ত্যাগ করবে না, তখন মহানবী (সা.)-কে আগের কেবলার দিকে মুখ করার নির্দেশ দেওয়া হয়। পবিত্র কাবাঘর তাঁর পূর্বপুরুষ হজরত ইবরাহিম (আ.) ও ইসমাইল (আ.)-এর কেবলা হওয়ার কারণে তিনি স্বভাবতই সেদিকে নামাজ পড়তে পছন্দ করতেন। (মাআরিফুল কোরআন)
কেবলা পরিবর্তনের ঘটনা
ওপরের আলোচনা থেকে বোঝা যায়, হিজরতের পর ষোলো-সতেরো মাস মহানবী (সা.) বায়তুল মোকাদ্দাসকে কেবলা মেনে নামাজ আদায় করেছেন। এরপর আল্লাহ তাআলা তাঁকে কাবাঘরের দিকে ফিরে নামাজ পড়ার আদেশ দেন। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তুমি যেখান থেকেই বের হও না কেন, মসজিদুল হারামের দিকে মুখ ফেরাও এবং যেখানেই থাক না কেন, সেদিকেই মুখ ফেরাও, যাতে তাদের মধ্যে সীমালঙ্ঘনকারীরা ছাড়া অন্য কোনো লোক তোমাদের সঙ্গে বিতর্ক করতে না পারে। সুতরাং তাদের ভয় পেয়ো না; বরং একমাত্র আমাকেই ভয় করো, যাতে আমি আমার অনুগ্রহ তোমাদের পুরোপুরি দিতে পারি এবং যাতে তোমরা সৎ পথ পেতে পার।’ (সুরা বাকারা: ১৫০)
কেবলা পরিবর্তনের এ নির্দেশ দ্বিতীয় হিজরির রজব অথবা শাবান মাসে নাজিল হয়। হাদিস বর্ণনাকারী ইবনে সাআদ বলেন, রাসুল (সা.) উম্মে বিশর ইবনে বারা ইবনে মারুর ঘরে দাওয়াতে গিয়েছিলেন। সেখানে জোহরের সময় হলে লোকজন নিয়ে নামাজে দাঁড়িয়ে যান। দুই রাকাত নামাজ শেষে তৃতীয় রাকাত আদায়কালে অহির মাধ্যমে এই আয়াত নাজিল হয়। সঙ্গে সঙ্গে তিনি অন্যদের নিয়ে বায়তুল মোকাদ্দাসের দিক থেকে কাবাঘরের দিকে মুখ ঘুরিয়ে নেন। (তাবাকাতে ইবনে সাআদ: ১ / ২৪২)
মহানবী (সা.)-এর আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়ন
মহানবী (সা.) মদিনায় যাওয়ার পর থেকেই কাবাঘরের দিকে ফিরে নামাজ আদায়ের ইচ্ছা পোষণ করতেন। তিনি অনুভব করছিলেন, বনি ইসরাইলের নবীদের যুগ শেষ হয়ে গেছে এবং বায়তুল মোকাদ্দাসের কেন্দ্রীয় মর্যাদার অবসান ঘটেছে। এখন ইবরাহিম (আ.)-এর কেবলার দিকে মুখ ফেরানোর সময় হয়ে গেছে। কাবা মুসলিমদের কেবলা সাব্যস্ত হোক—এটাই ছিল তাঁর আন্তরিক বাসনা। এ জন্য তিনি আল্লাহর কাছে দোয়াও করছিলেন। বারবার আকাশের দিকে চাইতেন—কখন ফেরেশতা কেবলা পরিবর্তনের নির্দেশ নিয়ে আসবেন। (তাফসিরে যাকারিয়া)
পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আকাশের দিকে তোমার বারবার মুখ ফেরানোকে আমি প্রায় লক্ষ্য করি। সুতরাং আমি তোমাকে সেই কেবলার দিকে অবশ্যই ফিরিয়ে দেব, যা তুমি পছন্দ করো। অতএব তুমি মসজিদে হারামের দিকে মুখ ফেরাও। তোমরা যেখানেই থাক না কেন, সেই দিকে মুখ ফেরাও। আর যাদের কিতাব দেওয়া হয়েছে, তারা (আগের আসমানি কিতাবের মাধ্যমে) নিশ্চিতভাবে জানে যে, এ তাদের প্রতিপালকের কাছ থেকে আসা সত্য। তারা যা করে সে সম্পর্কে আল্লাহ উদাসীন নন।’ (সুরা বাকারা: ১৪৪)
ইহুদি, মুশরিক ও মুনাফিকদের প্রতিক্রিয়া
কেবলা পরিবর্তনের ঘটনা জানার পর মক্কার মুশরিকেরা বলতে শুরু করল, মুহাম্মদ যেভাবে আমাদের কেবলার দিকে ফেরত এসেছেন, তেমনি অচিরেই আমাদের ধর্মেও ফেরত আসবেন। আমাদের কেবলা সত্য মনে করেই তিনি ফিরে এসেছেন। ইহুদিরা বলতে লাগল, মুহাম্মদ তাঁর আগের নবীদের কেবলার বিরোধিতা করেছেন। মুনাফিকেরা বলতে লাগল, জানি না, তিনি কোন দিকে যাচ্ছেন? প্রথম কেবলা সঠিক হয়ে থাকলে তিনি সত্য বর্জন করেছেন। আর দ্বিতীয়টি সঠিক হয়ে থাকলে প্রথমটির ব্যাপারে তিনি ভ্রষ্ট ছিলেন। (তাফসিরে জাকারিয়া)
এসবের জবাব দিতেই আল্লাহ তাআলা বলেছেন, ‘বোকারা অচিরেই বলবে, তারা এত দিন যে কেবলার অনুসরণ করে আসছিল, তা থেকে কীসে তাদের ফিরিয়ে দিল? বলো—পূর্ব ও পশ্চিম আল্লাহরই। তিনি যাকে ইচ্ছা সরল পথে পরিচালিত করেন। তুমি এত দিন যে কেবলার অনুসরণ করছিলে, তা এই উদ্দেশ্যে প্রতিষ্ঠিত করেছিলাম, যাতে আমি জানতে পারি—কে রাসুলের অনুসরণ করে এবং কে ফিরে যায়? আল্লাহ যাদের সৎ পথে পরিচালিত করেছেন, তারা ছাড়া অন্যের কাছে এ (পরিবর্তন) নিশ্চয়ই কঠিন ব্যাপার। … আর যাদের কিতাব দেওয়া হয়েছে, তুমি যদি তাদের কাছে সব প্রমাণ নিয়ে আসো, তবু তারা তোমার কেবলার অনুসরণ করবে না; এবং তুমিও তাদের কেবলার অনুসারী নও। …’ (সুরা বাকারা: ১৪২-১৪৫)

সুখময় পরিবার জীবনের অমূল্য সম্পদ। সুখী সংসারকে বলা হয় দুনিয়ার জান্নাত। পরিবার আমাদের আশ্রয়, ভালোবাসা ও সাহসের উৎস। পরিবারে একে অপরের পাশে থাকলে সব বাধা সহজে অতিক্রম করা যায়। ছোঁয়া যায় ভালোবাসার আকাশ। মাখা যায় সুখের আবেশ। এ ক্ষেত্রে মহানবী (সা.) হতে পারেন উত্তম আদর্শ।
১০ ঘণ্টা আগে
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
১৭ ঘণ্টা আগে
আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘যারা আল্লাহর কিতাব পাঠ করে, নামাজ কায়েম করে, আমি তাদের যে রিজিক দিয়েছি, তা গোপনে ও প্রকাশ্যে ব্যয় করে, তারাই আশা করতে পারে, তাদের এমন ব্যবসায়ের, যার ক্ষয় নেই। এ জন্য যে আল্লাহ তাদের কর্মের পূর্ণ প্রতিফল দেবেন এবং নিজ অনুগ্রহে তাদের আরও বেশি দেবেন। তিনি তো ক্ষমাশীল, গুণগ্রাহী।’
১ দিন আগে
জীবনের প্রয়োজনে আমরা কখনো কখনো ঋণগ্রস্ত হই। ঋণগ্রস্ত হওয়া জীবন নানা সময় কুফল ডেকে আনে। ঋণের চাপ উদ্বেগ ও দুশ্চিন্তা সৃষ্টি করে। নবী করিম (সা.)-এর শেখানো কিছু দোয়ার মাধ্যমে আমরা ঋণ থেকে মুক্তি পেতে পারি।
১ দিন আগেইসলাম ডেস্ক

সুখময় পরিবার জীবনের অমূল্য সম্পদ। সুখী সংসারকে বলা হয় দুনিয়ার জান্নাত। পরিবার আমাদের আশ্রয়, ভালোবাসা ও সাহসের উৎস। পরিবারে একে অপরের পাশে থাকলে সব বাধা সহজে অতিক্রম করা যায়। ছোঁয়া যায় ভালোবাসার আকাশ। মাখা যায় সুখের আবেশ। এ ক্ষেত্রে মহানবী (সা.) হতে পারেন উত্তম আদর্শ।
পারিবারিক জীবনে সুখের অন্যতম মাধ্যম ধৈর্য ও সহিষ্ণুতা। দুই মনের দুজন এক ছাদের নিচে বসবাস শুরু করার পর কখনো অযাচিত মনোমালিন্য তৈরি হতে পারে। সংসারজীবনে এটা স্বাভাবিক ঘটনা। তবে এই স্বাভাবিক বিষয় যেন জটিলতার দিকে এগোতে না পারে, সে বিষয়ে সচেতন থাকতে হবে। পরিবারে কোনোভাবেই সন্দেহ প্রবেশের সুযোগ দেওয়া যাবে না। সন্দেহ সম্পর্ককে তিলে তিলে ক্ষয় করে। কখনো একজন রেগে গেলে অন্যজনকে ধৈর্যের পরিচয় দিতে হবে। নিজেদের মাঝে অভিমান জমা হলে আগের ভালোবাসার মুহূর্তগুলোর কথা স্মরণ করতে হবে। যত দ্রুত সম্ভব রাগ-অভিমান পেছনে ফেলে একে অপরকে আপন করে নিতে হবে।
আবু বকর (রা.) একবার আয়েশা (রা.)-এর ঘরে প্রবেশ করে দেখলেন, তিনি নবীজি (সা.)-এর সঙ্গে জোরগলায় কথা বলছেন। তখন তিনি আয়েশা (রা.)-কে বলেন, ‘তুমি আল্লাহর রাসুলের (সা.) সঙ্গে এভাবে উঁচু গলায় কথা বলছ!’ ঠিক ওই সময় নবী করিম (সা.) আবু বকরকে (রা.) থামিয়ে দেন। কিছুক্ষণ পর হজরত আবু বকর বের হয়ে যান। তখন নবীজি (সা.) প্রিয়তমা স্ত্রীকে সন্তুষ্ট করার জন্য বলেন, ‘দেখলে, কীভাবে তোমাকে ওই লোকের হাত থেকে বাঁচালাম!’ কিছুক্ষণ পর আবার আবু বকর (রা.) এসে তাঁদের দুজনকেই হাসতে দেখলেন। তখন তিনি বললেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল (সা.), যুদ্ধের সময় আপনারা যেভাবে আমাকে দলে নিয়েছিলেন, সন্ধির সময়ও সেভাবে দলে নিন।’ (মুসনাদে আহমদ: ১৭৯২৭)
পারিবারিক, সাংসারিক ও দাম্পত্যজীবনে সুখ বজায় রাখতে পারস্পরিক দায়িত্ব সম্পর্কে সচেতনতা অপরিহার্য। স্বামী-স্ত্রী প্রত্যেকেরই আলাদা দায়িত্ব রয়েছে। সেসব দায়িত্ব পালনে সচেষ্ট থাকলে পরিবারে নেমে আসে অনাবিল সুখ।

সুখময় পরিবার জীবনের অমূল্য সম্পদ। সুখী সংসারকে বলা হয় দুনিয়ার জান্নাত। পরিবার আমাদের আশ্রয়, ভালোবাসা ও সাহসের উৎস। পরিবারে একে অপরের পাশে থাকলে সব বাধা সহজে অতিক্রম করা যায়। ছোঁয়া যায় ভালোবাসার আকাশ। মাখা যায় সুখের আবেশ। এ ক্ষেত্রে মহানবী (সা.) হতে পারেন উত্তম আদর্শ।
পারিবারিক জীবনে সুখের অন্যতম মাধ্যম ধৈর্য ও সহিষ্ণুতা। দুই মনের দুজন এক ছাদের নিচে বসবাস শুরু করার পর কখনো অযাচিত মনোমালিন্য তৈরি হতে পারে। সংসারজীবনে এটা স্বাভাবিক ঘটনা। তবে এই স্বাভাবিক বিষয় যেন জটিলতার দিকে এগোতে না পারে, সে বিষয়ে সচেতন থাকতে হবে। পরিবারে কোনোভাবেই সন্দেহ প্রবেশের সুযোগ দেওয়া যাবে না। সন্দেহ সম্পর্ককে তিলে তিলে ক্ষয় করে। কখনো একজন রেগে গেলে অন্যজনকে ধৈর্যের পরিচয় দিতে হবে। নিজেদের মাঝে অভিমান জমা হলে আগের ভালোবাসার মুহূর্তগুলোর কথা স্মরণ করতে হবে। যত দ্রুত সম্ভব রাগ-অভিমান পেছনে ফেলে একে অপরকে আপন করে নিতে হবে।
আবু বকর (রা.) একবার আয়েশা (রা.)-এর ঘরে প্রবেশ করে দেখলেন, তিনি নবীজি (সা.)-এর সঙ্গে জোরগলায় কথা বলছেন। তখন তিনি আয়েশা (রা.)-কে বলেন, ‘তুমি আল্লাহর রাসুলের (সা.) সঙ্গে এভাবে উঁচু গলায় কথা বলছ!’ ঠিক ওই সময় নবী করিম (সা.) আবু বকরকে (রা.) থামিয়ে দেন। কিছুক্ষণ পর হজরত আবু বকর বের হয়ে যান। তখন নবীজি (সা.) প্রিয়তমা স্ত্রীকে সন্তুষ্ট করার জন্য বলেন, ‘দেখলে, কীভাবে তোমাকে ওই লোকের হাত থেকে বাঁচালাম!’ কিছুক্ষণ পর আবার আবু বকর (রা.) এসে তাঁদের দুজনকেই হাসতে দেখলেন। তখন তিনি বললেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল (সা.), যুদ্ধের সময় আপনারা যেভাবে আমাকে দলে নিয়েছিলেন, সন্ধির সময়ও সেভাবে দলে নিন।’ (মুসনাদে আহমদ: ১৭৯২৭)
পারিবারিক, সাংসারিক ও দাম্পত্যজীবনে সুখ বজায় রাখতে পারস্পরিক দায়িত্ব সম্পর্কে সচেতনতা অপরিহার্য। স্বামী-স্ত্রী প্রত্যেকেরই আলাদা দায়িত্ব রয়েছে। সেসব দায়িত্ব পালনে সচেষ্ট থাকলে পরিবারে নেমে আসে অনাবিল সুখ।

তৃতীয় হিজরির রজব অথবা শাবান মাসে মুসলমানদের ইবাদতের কেবলা পরিবর্তন হয়। ফিলিস্তিনের বায়তুল মোকাদ্দাসের বদলে মক্কার পবিত্র কাবাঘরের দিকে মুখ করে নামাজ পড়ার নির্দেশ আসে। এ ঘটনার মাধ্যমে আল্লাহ তাআলা দেখিয়েছেন, মুসলমানেরা কোনো দিক, স্থাপনা বা নির্দিষ্ট জায়গার ইবাদত করে না।
০৫ মার্চ ২০২৩
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
১৭ ঘণ্টা আগে
আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘যারা আল্লাহর কিতাব পাঠ করে, নামাজ কায়েম করে, আমি তাদের যে রিজিক দিয়েছি, তা গোপনে ও প্রকাশ্যে ব্যয় করে, তারাই আশা করতে পারে, তাদের এমন ব্যবসায়ের, যার ক্ষয় নেই। এ জন্য যে আল্লাহ তাদের কর্মের পূর্ণ প্রতিফল দেবেন এবং নিজ অনুগ্রহে তাদের আরও বেশি দেবেন। তিনি তো ক্ষমাশীল, গুণগ্রাহী।’
১ দিন আগে
জীবনের প্রয়োজনে আমরা কখনো কখনো ঋণগ্রস্ত হই। ঋণগ্রস্ত হওয়া জীবন নানা সময় কুফল ডেকে আনে। ঋণের চাপ উদ্বেগ ও দুশ্চিন্তা সৃষ্টি করে। নবী করিম (সা.)-এর শেখানো কিছু দোয়ার মাধ্যমে আমরা ঋণ থেকে মুক্তি পেতে পারি।
১ দিন আগেইসলাম ডেস্ক

জীবনকে সুশৃঙ্খল করতে এবং আল্লাহর সান্নিধ্য পেতে নামাজের কোনো বিকল্প নেই। একজন মুমিনের জন্য নামাজ হলো আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি কথোপকথনের মাধ্যম। এটি এমন এক ইবাদত—যা আমাদের মনে আধ্যাত্মিক প্রশান্তি আনে, জীবনের প্রতিটি কাজে আনে বরকত। প্রতিদিন সময় মতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর আবশ্যক। তাই জেনে নেওয়া যাক আজ কোন ওয়াক্তের নামাজ কখন আদায় করতে হবে।
আজ বৃহস্পতিবার, ১৩ নভেম্বর ২০২৫ ইংরেজি, ২৮ কার্তিক ১৪৩২ বাংলা, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭ হিজরি। ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকার নামাজের সময়সূচি তুলে ধরা হলো—
| নামাজ | ওয়াক্ত শুরু | ওয়াক্ত শেষ |
|---|---|---|
| তাহাজ্জুদ ও সেহরির শেষ সময় | ০০: ০০ | ০৪: ৫২ মিনিট |
| ফজর | ০৪: ৫৩ মিনিট | ০৬: ১০ মিনিট |
| জোহর | ১১: ৪৪ মিনিট | ০৩: ৩৭ মিনিট |
| আসর | ০৩: ৩৮ মিনিট | ০৫: ১২ মিনিট |
| মাগরিব | ০৫: ১৪ মিনিট | ০৬: ৩০ মিনিট |
| এশা | ০৬: ৩১ মিনিট | ০৪: ৫২ মিনিট |
উল্লিখিত সময়ের সঙ্গে যেসব বিভাগের সময় যোগ-বিয়োগ করতে হবে, সেগুলো হলো:
বিয়োগ করতে হবে—
চট্টগ্রাম: ০৫ মিনিট
সিলেট: ০৬ মিনিট
যোগ করতে হবে—
খুলনা: ০৩ মিনিট
রাজশাহী: ০৭ মিনিট
রংপুর: ০৮ মিনিট
বরিশাল: ০১ মিনিট
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
আসুন, নামাজের মাধ্যমে আমরা নিজেদেরকে তাঁর আরও কাছে নিয়ে যাই। জীবনে নিয়ে আসি ইমানের নুর।

জীবনকে সুশৃঙ্খল করতে এবং আল্লাহর সান্নিধ্য পেতে নামাজের কোনো বিকল্প নেই। একজন মুমিনের জন্য নামাজ হলো আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি কথোপকথনের মাধ্যম। এটি এমন এক ইবাদত—যা আমাদের মনে আধ্যাত্মিক প্রশান্তি আনে, জীবনের প্রতিটি কাজে আনে বরকত। প্রতিদিন সময় মতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর আবশ্যক। তাই জেনে নেওয়া যাক আজ কোন ওয়াক্তের নামাজ কখন আদায় করতে হবে।
আজ বৃহস্পতিবার, ১৩ নভেম্বর ২০২৫ ইংরেজি, ২৮ কার্তিক ১৪৩২ বাংলা, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭ হিজরি। ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকার নামাজের সময়সূচি তুলে ধরা হলো—
| নামাজ | ওয়াক্ত শুরু | ওয়াক্ত শেষ |
|---|---|---|
| তাহাজ্জুদ ও সেহরির শেষ সময় | ০০: ০০ | ০৪: ৫২ মিনিট |
| ফজর | ০৪: ৫৩ মিনিট | ০৬: ১০ মিনিট |
| জোহর | ১১: ৪৪ মিনিট | ০৩: ৩৭ মিনিট |
| আসর | ০৩: ৩৮ মিনিট | ০৫: ১২ মিনিট |
| মাগরিব | ০৫: ১৪ মিনিট | ০৬: ৩০ মিনিট |
| এশা | ০৬: ৩১ মিনিট | ০৪: ৫২ মিনিট |
উল্লিখিত সময়ের সঙ্গে যেসব বিভাগের সময় যোগ-বিয়োগ করতে হবে, সেগুলো হলো:
বিয়োগ করতে হবে—
চট্টগ্রাম: ০৫ মিনিট
সিলেট: ০৬ মিনিট
যোগ করতে হবে—
খুলনা: ০৩ মিনিট
রাজশাহী: ০৭ মিনিট
রংপুর: ০৮ মিনিট
বরিশাল: ০১ মিনিট
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
আসুন, নামাজের মাধ্যমে আমরা নিজেদেরকে তাঁর আরও কাছে নিয়ে যাই। জীবনে নিয়ে আসি ইমানের নুর।

তৃতীয় হিজরির রজব অথবা শাবান মাসে মুসলমানদের ইবাদতের কেবলা পরিবর্তন হয়। ফিলিস্তিনের বায়তুল মোকাদ্দাসের বদলে মক্কার পবিত্র কাবাঘরের দিকে মুখ করে নামাজ পড়ার নির্দেশ আসে। এ ঘটনার মাধ্যমে আল্লাহ তাআলা দেখিয়েছেন, মুসলমানেরা কোনো দিক, স্থাপনা বা নির্দিষ্ট জায়গার ইবাদত করে না।
০৫ মার্চ ২০২৩
সুখময় পরিবার জীবনের অমূল্য সম্পদ। সুখী সংসারকে বলা হয় দুনিয়ার জান্নাত। পরিবার আমাদের আশ্রয়, ভালোবাসা ও সাহসের উৎস। পরিবারে একে অপরের পাশে থাকলে সব বাধা সহজে অতিক্রম করা যায়। ছোঁয়া যায় ভালোবাসার আকাশ। মাখা যায় সুখের আবেশ। এ ক্ষেত্রে মহানবী (সা.) হতে পারেন উত্তম আদর্শ।
১০ ঘণ্টা আগে
আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘যারা আল্লাহর কিতাব পাঠ করে, নামাজ কায়েম করে, আমি তাদের যে রিজিক দিয়েছি, তা গোপনে ও প্রকাশ্যে ব্যয় করে, তারাই আশা করতে পারে, তাদের এমন ব্যবসায়ের, যার ক্ষয় নেই। এ জন্য যে আল্লাহ তাদের কর্মের পূর্ণ প্রতিফল দেবেন এবং নিজ অনুগ্রহে তাদের আরও বেশি দেবেন। তিনি তো ক্ষমাশীল, গুণগ্রাহী।’
১ দিন আগে
জীবনের প্রয়োজনে আমরা কখনো কখনো ঋণগ্রস্ত হই। ঋণগ্রস্ত হওয়া জীবন নানা সময় কুফল ডেকে আনে। ঋণের চাপ উদ্বেগ ও দুশ্চিন্তা সৃষ্টি করে। নবী করিম (সা.)-এর শেখানো কিছু দোয়ার মাধ্যমে আমরা ঋণ থেকে মুক্তি পেতে পারি।
১ দিন আগেইসলাম ডেস্ক

কোরআন নুর, আলো এবং এক চিরন্তন মুজিজা। এটি কেবল একটি কিতাব নয়, বরং মুমিন হৃদয়ের জন্য পরম শান্তি ও প্রশান্তির উৎস। কোরআন পাঠ করা মুমিনদের জন্য এক অফুরন্ত কল্যাণের পথ।
আল্লাহর কিতাব পাঠ ও সে অনুযায়ী আমল করা দুনিয়ার সব ব্যবসার চেয়ে বহুগুণে উত্তম ও নিরাপদ। এই ব্যবসায় কোনো ক্ষতি নেই, আছে শুধু লাভ আর লাভ, যা আমাদের আল্লাহর শাস্তি থেকে রক্ষা করে।
আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘যারা আল্লাহর কিতাব পাঠ করে, নামাজ কায়েম করে, আমি তাদের যে রিজিক দিয়েছি, তা গোপনে ও প্রকাশ্যে ব্যয় করে, তারাই আশা করতে পারে, তাদের এমন ব্যবসায়ের, যার ক্ষয় নেই। এ জন্য যে আল্লাহ তাদের কর্মের পূর্ণ প্রতিফল দেবেন এবং নিজ অনুগ্রহে তাদের আরও বেশি দেবেন। তিনি তো ক্ষমাশীল, গুণগ্রাহী।’ (সুরা ফাতির: ২৯-৩০)
আল্লাহর প্রিয় বান্দারা সব সময় এই লাভজনক ব্যবসার সন্ধানে রত ছিলেন। এই ব্যবসার প্রতি আহ্বান জানিয়ে আল্লাহ বলেন, ‘হে মুমিনগণ, আমি কি তোমাদের এমন এক বাণিজ্যের সন্ধান দেব—যা তোমাদের রক্ষা করবে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি হতে?’ (সুরা সাফ: ১০)
যারা আল্লাহর কিতাব অধ্যয়নে রত থাকে, ইমানের সঙ্গে তা পাঠ করে, নামাজ কায়েম করে এবং নেক আমল করে, আল্লাহ পরকালে তাদের কর্মের প্রতিদান তাদের কল্পনার চেয়েও বহুগুণ বেশি দেবেন। আল্লাহ পরম ক্ষমাশীল ও দয়াময়।
কোরআন পাঠকারী মুমিনদের জন্য মহান আল্লাহ বহু মর্যাদা ও পুরস্কারের ব্যবস্থা রেখেছেন:
উহুদের শহীদদের দাফনের ক্ষেত্রেও নবীজি (সা.) তাদের মধ্য থেকে কোরআন সম্পর্কে অধিক জ্ঞান রাখতেন এমন ব্যক্তিকে কবরে আগে রাখতেন। এটি কোরআন পাঠকারীর মর্যাদারই প্রমাণ।
কোরআন পাঠ করা, এর অর্থ বোঝা এবং তদনুযায়ী জীবন পরিচালনা করা আমাদের জন্য সর্বোত্তম ব্যবসা এবং মুক্তি লাভের একমাত্র পথ। আসুন, আমরা বেশি বেশি করে কোরআন পাঠ করি এবং এর মাধ্যমে আল্লাহর প্রিয় বান্দা হওয়ার পথে অগ্রসর হই।
লেখক: মাওলানা সাইফুল ইসলাম সালেহী, ইসলামবিষয়ক গবেষক

কোরআন নুর, আলো এবং এক চিরন্তন মুজিজা। এটি কেবল একটি কিতাব নয়, বরং মুমিন হৃদয়ের জন্য পরম শান্তি ও প্রশান্তির উৎস। কোরআন পাঠ করা মুমিনদের জন্য এক অফুরন্ত কল্যাণের পথ।
আল্লাহর কিতাব পাঠ ও সে অনুযায়ী আমল করা দুনিয়ার সব ব্যবসার চেয়ে বহুগুণে উত্তম ও নিরাপদ। এই ব্যবসায় কোনো ক্ষতি নেই, আছে শুধু লাভ আর লাভ, যা আমাদের আল্লাহর শাস্তি থেকে রক্ষা করে।
আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘যারা আল্লাহর কিতাব পাঠ করে, নামাজ কায়েম করে, আমি তাদের যে রিজিক দিয়েছি, তা গোপনে ও প্রকাশ্যে ব্যয় করে, তারাই আশা করতে পারে, তাদের এমন ব্যবসায়ের, যার ক্ষয় নেই। এ জন্য যে আল্লাহ তাদের কর্মের পূর্ণ প্রতিফল দেবেন এবং নিজ অনুগ্রহে তাদের আরও বেশি দেবেন। তিনি তো ক্ষমাশীল, গুণগ্রাহী।’ (সুরা ফাতির: ২৯-৩০)
আল্লাহর প্রিয় বান্দারা সব সময় এই লাভজনক ব্যবসার সন্ধানে রত ছিলেন। এই ব্যবসার প্রতি আহ্বান জানিয়ে আল্লাহ বলেন, ‘হে মুমিনগণ, আমি কি তোমাদের এমন এক বাণিজ্যের সন্ধান দেব—যা তোমাদের রক্ষা করবে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি হতে?’ (সুরা সাফ: ১০)
যারা আল্লাহর কিতাব অধ্যয়নে রত থাকে, ইমানের সঙ্গে তা পাঠ করে, নামাজ কায়েম করে এবং নেক আমল করে, আল্লাহ পরকালে তাদের কর্মের প্রতিদান তাদের কল্পনার চেয়েও বহুগুণ বেশি দেবেন। আল্লাহ পরম ক্ষমাশীল ও দয়াময়।
কোরআন পাঠকারী মুমিনদের জন্য মহান আল্লাহ বহু মর্যাদা ও পুরস্কারের ব্যবস্থা রেখেছেন:
উহুদের শহীদদের দাফনের ক্ষেত্রেও নবীজি (সা.) তাদের মধ্য থেকে কোরআন সম্পর্কে অধিক জ্ঞান রাখতেন এমন ব্যক্তিকে কবরে আগে রাখতেন। এটি কোরআন পাঠকারীর মর্যাদারই প্রমাণ।
কোরআন পাঠ করা, এর অর্থ বোঝা এবং তদনুযায়ী জীবন পরিচালনা করা আমাদের জন্য সর্বোত্তম ব্যবসা এবং মুক্তি লাভের একমাত্র পথ। আসুন, আমরা বেশি বেশি করে কোরআন পাঠ করি এবং এর মাধ্যমে আল্লাহর প্রিয় বান্দা হওয়ার পথে অগ্রসর হই।
লেখক: মাওলানা সাইফুল ইসলাম সালেহী, ইসলামবিষয়ক গবেষক

তৃতীয় হিজরির রজব অথবা শাবান মাসে মুসলমানদের ইবাদতের কেবলা পরিবর্তন হয়। ফিলিস্তিনের বায়তুল মোকাদ্দাসের বদলে মক্কার পবিত্র কাবাঘরের দিকে মুখ করে নামাজ পড়ার নির্দেশ আসে। এ ঘটনার মাধ্যমে আল্লাহ তাআলা দেখিয়েছেন, মুসলমানেরা কোনো দিক, স্থাপনা বা নির্দিষ্ট জায়গার ইবাদত করে না।
০৫ মার্চ ২০২৩
সুখময় পরিবার জীবনের অমূল্য সম্পদ। সুখী সংসারকে বলা হয় দুনিয়ার জান্নাত। পরিবার আমাদের আশ্রয়, ভালোবাসা ও সাহসের উৎস। পরিবারে একে অপরের পাশে থাকলে সব বাধা সহজে অতিক্রম করা যায়। ছোঁয়া যায় ভালোবাসার আকাশ। মাখা যায় সুখের আবেশ। এ ক্ষেত্রে মহানবী (সা.) হতে পারেন উত্তম আদর্শ।
১০ ঘণ্টা আগে
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
১৭ ঘণ্টা আগে
জীবনের প্রয়োজনে আমরা কখনো কখনো ঋণগ্রস্ত হই। ঋণগ্রস্ত হওয়া জীবন নানা সময় কুফল ডেকে আনে। ঋণের চাপ উদ্বেগ ও দুশ্চিন্তা সৃষ্টি করে। নবী করিম (সা.)-এর শেখানো কিছু দোয়ার মাধ্যমে আমরা ঋণ থেকে মুক্তি পেতে পারি।
১ দিন আগেইসলাম ডেস্ক

জীবনের প্রয়োজনে আমরা কখনো কখনো ঋণগ্রস্ত হই। ঋণগ্রস্ত হওয়া জীবন নানা সময় কুফল ডেকে আনে। ঋণের চাপ উদ্বেগ ও দুশ্চিন্তা সৃষ্টি করে। নবী করিম (সা.)-এর শেখানো কিছু দোয়ার মাধ্যমে আমরা ঋণ থেকে মুক্তি পেতে পারি।
আয়েশা (রা.) বর্ণনা করেন, মহানবী (সা.) দোয়া করতেন, ‘আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিনাল মা-ছামি ওয়াল মাগরামি।’ অর্থ: ‘হে আল্লাহ, আমি তোমার কাছে পাপ ও ঋণ থেকে আশ্রয় চাই।’
একবার এক সাহাবি নবীজি (সা.)-কে জিজ্ঞেস করলেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল (সা.), আপনি ঋণ থেকে এত বেশি পরিত্রাণ চান কেন?’ নবীজি (সা.) বললেন, ‘মানুষ ঋণগ্রস্ত হলে যখন কথা বলে মিথ্যা বলে এবং ওয়াদা করলে তা খেলাপ করে।’ (সহিহ্ বুখারি: ২৩৯৭)
আবু উমামা (রা.) একবার নবী করিম (সা.)-কে বললেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল (সা.), ঋণের বোঝা ও দুশ্চিন্তা আমাকে ঘিরে ধরেছে।’ রাসুল (সা.) সকাল-সন্ধ্যায় তাকে এই দোয়া পড়তে বললেন—‘আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিনাল হাম্মি ওয়াল হাজানি, ওয়া আউজুবিকা মিনাল আজজি ওয়াল কাসালি, ওয়া আউজুবিকা মিনাল বুখলি ওয়াল জুবনি, ওয়া আউজুবিকা মিন দ্বালায়িদ্দাইনি ওয়া গালাবাতির রিজাল।’ অর্থ: ‘হে আল্লাহ, নিশ্চয়ই আমি আপনার আশ্রয় নিচ্ছি দুশ্চিন্তা ও দুঃখ থেকে, অপারগতা ও অলসতা থেকে, কৃপণতা ও ভীরুতা থেকে, ঋণের ভার ও মানুষের দমন-পীড়ন থেকে।’
আবু উমামা (রা.) বলেন, ‘দোয়াটি পড়ার ফলে চিন্তামুক্ত হই এবং ঋণ আদায়ে সক্ষম হই।’ (সহিহ্ বুখারি: ২৮৯৩) ঋণ থেকে মুক্তি পেতে আলি (রা.)-কে নবীজি (সা.) একটি দোয়া শিখিয়েছিলেন। দোয়াটি হলো, ‘আল্লাহুম্মাক ফিনি বি হালালিকা আন হারামিকা, ওয়া আগনিনি বিফাদলিকা আম্মান সিওয়াক।’ অর্থ: হে আল্লাহ, হারামের পরিবর্তে তোমার হালাল রুজি আমার জন্য যথেষ্ট করো। আর তোমাকে ছাড়া আমাকে কারও মুখাপেক্ষী করো না। তোমার অনুগ্রহে আমাকে সচ্ছলতা দান করো।’ (সুনানে তিরমিজি: ৩৫৬৩)

জীবনের প্রয়োজনে আমরা কখনো কখনো ঋণগ্রস্ত হই। ঋণগ্রস্ত হওয়া জীবন নানা সময় কুফল ডেকে আনে। ঋণের চাপ উদ্বেগ ও দুশ্চিন্তা সৃষ্টি করে। নবী করিম (সা.)-এর শেখানো কিছু দোয়ার মাধ্যমে আমরা ঋণ থেকে মুক্তি পেতে পারি।
আয়েশা (রা.) বর্ণনা করেন, মহানবী (সা.) দোয়া করতেন, ‘আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিনাল মা-ছামি ওয়াল মাগরামি।’ অর্থ: ‘হে আল্লাহ, আমি তোমার কাছে পাপ ও ঋণ থেকে আশ্রয় চাই।’
একবার এক সাহাবি নবীজি (সা.)-কে জিজ্ঞেস করলেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল (সা.), আপনি ঋণ থেকে এত বেশি পরিত্রাণ চান কেন?’ নবীজি (সা.) বললেন, ‘মানুষ ঋণগ্রস্ত হলে যখন কথা বলে মিথ্যা বলে এবং ওয়াদা করলে তা খেলাপ করে।’ (সহিহ্ বুখারি: ২৩৯৭)
আবু উমামা (রা.) একবার নবী করিম (সা.)-কে বললেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল (সা.), ঋণের বোঝা ও দুশ্চিন্তা আমাকে ঘিরে ধরেছে।’ রাসুল (সা.) সকাল-সন্ধ্যায় তাকে এই দোয়া পড়তে বললেন—‘আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিনাল হাম্মি ওয়াল হাজানি, ওয়া আউজুবিকা মিনাল আজজি ওয়াল কাসালি, ওয়া আউজুবিকা মিনাল বুখলি ওয়াল জুবনি, ওয়া আউজুবিকা মিন দ্বালায়িদ্দাইনি ওয়া গালাবাতির রিজাল।’ অর্থ: ‘হে আল্লাহ, নিশ্চয়ই আমি আপনার আশ্রয় নিচ্ছি দুশ্চিন্তা ও দুঃখ থেকে, অপারগতা ও অলসতা থেকে, কৃপণতা ও ভীরুতা থেকে, ঋণের ভার ও মানুষের দমন-পীড়ন থেকে।’
আবু উমামা (রা.) বলেন, ‘দোয়াটি পড়ার ফলে চিন্তামুক্ত হই এবং ঋণ আদায়ে সক্ষম হই।’ (সহিহ্ বুখারি: ২৮৯৩) ঋণ থেকে মুক্তি পেতে আলি (রা.)-কে নবীজি (সা.) একটি দোয়া শিখিয়েছিলেন। দোয়াটি হলো, ‘আল্লাহুম্মাক ফিনি বি হালালিকা আন হারামিকা, ওয়া আগনিনি বিফাদলিকা আম্মান সিওয়াক।’ অর্থ: হে আল্লাহ, হারামের পরিবর্তে তোমার হালাল রুজি আমার জন্য যথেষ্ট করো। আর তোমাকে ছাড়া আমাকে কারও মুখাপেক্ষী করো না। তোমার অনুগ্রহে আমাকে সচ্ছলতা দান করো।’ (সুনানে তিরমিজি: ৩৫৬৩)

তৃতীয় হিজরির রজব অথবা শাবান মাসে মুসলমানদের ইবাদতের কেবলা পরিবর্তন হয়। ফিলিস্তিনের বায়তুল মোকাদ্দাসের বদলে মক্কার পবিত্র কাবাঘরের দিকে মুখ করে নামাজ পড়ার নির্দেশ আসে। এ ঘটনার মাধ্যমে আল্লাহ তাআলা দেখিয়েছেন, মুসলমানেরা কোনো দিক, স্থাপনা বা নির্দিষ্ট জায়গার ইবাদত করে না।
০৫ মার্চ ২০২৩
সুখময় পরিবার জীবনের অমূল্য সম্পদ। সুখী সংসারকে বলা হয় দুনিয়ার জান্নাত। পরিবার আমাদের আশ্রয়, ভালোবাসা ও সাহসের উৎস। পরিবারে একে অপরের পাশে থাকলে সব বাধা সহজে অতিক্রম করা যায়। ছোঁয়া যায় ভালোবাসার আকাশ। মাখা যায় সুখের আবেশ। এ ক্ষেত্রে মহানবী (সা.) হতে পারেন উত্তম আদর্শ।
১০ ঘণ্টা আগে
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
১৭ ঘণ্টা আগে
আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘যারা আল্লাহর কিতাব পাঠ করে, নামাজ কায়েম করে, আমি তাদের যে রিজিক দিয়েছি, তা গোপনে ও প্রকাশ্যে ব্যয় করে, তারাই আশা করতে পারে, তাদের এমন ব্যবসায়ের, যার ক্ষয় নেই। এ জন্য যে আল্লাহ তাদের কর্মের পূর্ণ প্রতিফল দেবেন এবং নিজ অনুগ্রহে তাদের আরও বেশি দেবেন। তিনি তো ক্ষমাশীল, গুণগ্রাহী।’
১ দিন আগে