Ajker Patrika

আজকের তারাবি-১৯: নারীর প্রতি ৯ উপদেশ ও সাবাবাসীর অকৃতজ্ঞতার পরিণাম

রায়হান রাশেদ
আপডেট : ১৯ মার্চ ২০২৫, ১২: ৫৬
আজকের তারাবি-১৯: নারীর প্রতি ৯ উপদেশ ও সাবাবাসীর অকৃতজ্ঞতার পরিণাম

আজ খতমে তারাবিতে পবিত্র কোরআনের ২২ তম পারা তিলাওয়াত করা হবে। সুরা আহজাবের ৩১ থেকে সুরা সাবা, সুরা ফাতির ও সুরা ইয়াসিনের ১ থেকে ২১ নম্বর আয়াত পর্যন্ত। এই অংশে নবীপত্মী ও অন্য নারীদের উপদেশ, মহানবী (সা.) শেষ নবী, নবীজির বহুবিবাহ, সামাজিক শিষ্টাচার, নবীজির প্রতি দরুদ পাঠ, আল্লাহর অনুগ্রহসহ নানা বিষয় আলোচিত হয়েছে। এখানে সংক্ষেপে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তুলে ধরা হলো—

নারীর প্রতি কোরআনের উপদেশ
সুরা আহজাবের ৩২ থেকে ৩৪ নম্বর আয়াতে নবী পরিবার ও তাঁদের মাধ্যমে নারীদের কিছু উপদেশ দেওয়া হয়েছে। উপদেশগুলো হলো—
 ১. (প্রয়োজনে) পরপুরুষের সঙ্গে কোমলকণ্ঠে বাক্যালাপ করবে না
 ২. ঘরে অবস্থান করবে
 ৩. অপ্রয়োজনে ঘর থেকে বের হবে না
 ৪. জাহিলি যুগের নারীদের মতো সৌন্দর্য প্রকাশ করে বেড়াবে না
 ৫. নামাজ কায়েম করবে
 ৬. জাকাত দেবে
 ৭. আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের আনুগত্য করবে
 ৮. কোরআন তিলাওয়াত করবে
 ৯. নবীজির আনুগত্য করবে 

ক্ষমা লাভের ১০ গুণ
সুরা আহজাবের ৩৫ নম্বর আয়াতে ১০টি গুণের বর্ণনা রয়েছে। যাদের মধ্যে এই গুণ থাকবে, তারা আল্লাহর পক্ষ থেকে ক্ষমা ও বিশেষ পুরস্কার পাবে। যথা—১. ইসলাম, ২. ইমান, ৩. আল্লাহর আনুগত্য, ৪. সততা ও সত্যবাদিতা, ৫. ধৈর্য, ৬. বিনয়, ৭. দান, ৮. রোজা, ৯. লজ্জাস্থানের হেফাজত ও ১০. বেশি বেশি আল্লাহর স্মরণ। 

হজরত মুহাম্মদ (সা.) শেষ নবী
আদম (আ.) পৃথিবীর প্রথম মানুষ ও প্রথম নবী। তাঁর মাধ্যমে পৃথিবীতে নবুওয়তের ধারা চালু হয়েছে। এই ধারা শেষ ও পূর্ণ হয়েছে রাসুল (সা.)-এর মাধ্যমে। তিনিই শেষ নবী। তাঁর পরে আর কেউ নবী হবেন না, আর কারও ওপর অহিও নাজিল হবে না। প্রত্যেক মুসলমানের এ বিশ্বাস রাখা ফরজ। নামাজ, হজ, জাকাত, কোরআন, ইত্যাদির অস্বীকারকারী যেমন স্পষ্ট কাফের, তেমনি খতমে নবুওয়ত অস্বীকারকারী এবং অবিশ্বাসী কাফের। মুহাম্মদ (সা.) আল্লাহর রাসুল—এ বিশ্বাস যেমন অকাট্য, তেমনি তিনি শেষ নবী—এ বিশ্বাসও অকাট্য। আল্লাহ বলেন, ‘মুহাম্মদ তোমাদের কারও পিতা নন; বরং তিনি আল্লাহর রাসুল এবং শেষ নবী। আল্লাহ সব বিষয়ে জ্ঞাত।’ (সুরা আহজাব: ৪০) 

রাসুল (সা.) বলেন, ‘আমি এবং আমার আগের নবীদের উদাহরণ হলো, এক ব্যক্তি একটি ভবন নির্মাণ করল এবং সেটিকে সুশোভিত ও সুসজ্জিত করল, কিন্তু এক কোণে একটি ইটের জায়গা খালি রয়ে গেল; এরপর লোকজন চারপাশে ঘুরে ঘুরে বিস্ময়ের সঙ্গে বলতে লাগল, ওই শূন্যস্থানের ইটটি লাগানো হলো না কেন? নবী (সা.) বলেন, ‘আমিই সেই ইট। আর আমিই শেষ নবী।’ (বুখারি: ৩২৭১) 

নবীজির প্রতি দরুদ পাঠ
মুহাম্মদ (সা.) জগতের শ্রেষ্ঠ মানুষ। তিনি চির প্রশংসিত। আকাশে আল্লাহ আর দুনিয়াতে সব সৃষ্টি তাঁর প্রশংসা করে। তাঁর পবিত্র নামে দরুদ পড়ে। তাঁর নামে দরুদ পড়া ইমানের অংশ। তাঁর প্রতি সালাম জানানো ইবাদত। আল্লাহ বলেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ ও তাঁর ফেরেশতারা নবীর প্রতি সালাত-দরুদ পেশ করেন। হে মুমিনেরা, তোমরাও তাঁর প্রতি সালাত পেশ করো এবং তাঁকে যথাযথভাবে সালাম জানাও।’ (সুরা আহজাব: ৫৬) 

নবীজির প্রতি দরুদ পড়ার গুরুত্ব ও ফজিলত অপরিসীম। রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি আমার প্রতি একবার দরুদ পাঠ করবে, আল্লাহ তার ওপর দশবার দরুদ পাঠ করবেন।’ (মুসলিম: ৩৮৪) আরেক হাদিসে নবীজি (সা.) বলেন, ‘তোমরা আমার প্রতি দরুদ পেশ কর। কারণ, তোমরা যেখানেই থাক, তোমাদের পেশকৃত দরুদ আমার কাছে পৌঁছে যায়।’ (আবু দাউদ: ২০৪২) 

সাবাবাসীর গল্পগাথা—সুরা সাবা
 ৫৪ আয়াত বিশিষ্ট মক্কায় অবতীর্ণ সুরা সাবাতে আখেরাত ও পুনরুত্থান, দাউদ ও সুলাইমান (আ.) এবং সাবাবাসীকে প্রদত্ত আল্লাহর নেয়ামত, নবীদের কৃতজ্ঞতা আর কওমে সাবার অকৃতজ্ঞতা, তাদের পরিণাম, মুশরিকদের কিছু ভ্রান্ত বিশ্বাসের খণ্ডন, রিজিকের মালিক আল্লাহ, কিয়ামতের দিন কাফেরদের অসহায়ত্বের বর্ণনা রয়েছে। 

সাবাবাসীর অকৃতজ্ঞতার গল্প
ইয়েমেনের সানা থেকে কিছু দূরে অবস্থিত প্রাচীন নগরী মাআরিবে সাবা জাতির বসবাস ছিল। আল্লাহর নেয়ামতে ভরপুর ছিল সেই জনপদ। নবীদের মাধ্যমে আল্লাহ তাদের কৃতজ্ঞতা আদায়ের আদেশ দিলেন। কিন্তু তারা অবাধ্য হলো। ফলে বন্যা দিয়ে আল্লাহ তাদের সুন্দর বাগান ধ্বংস করে দিলেন। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘অবশ্যই সাবাবাসীর জন্য তাদের বাসভূমিতে ছিল এক নিদর্শন। দুটি উদ্যান, একটি ডান দিকে, অন্যটি বাম দিকে। বলা হয়েছিল, তোমরা তোমাদের রবের দেওয়া রিজিক ভোগ করো এবং তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করো। এ শহর উত্তম এবং তোমাদের রব ক্ষমাশীল। এরপর তারা অবাধ্য হলো। ফলে আমরা তাদের ওপর প্রবাহিত করলাম আরিম বাঁধের বন্যা এবং তাদের উদ্যান দুটিকে পরিবর্তন করে দিলাম এমন দুটি উদ্যানে, যাতে উৎপন্ন হয় বিস্বাদ ফলমূল, ঝাউ গাছ এবং সামান্য কিছু কুল গাছ। এটি ছিল অকৃতজ্ঞতাভরে সত্যকে প্রত্যাখ্যান করার কারণে তাদের প্রতি আমার শাস্তি। আমি অকৃতজ্ঞ ছাড়া কাউকে শাস্তি দেই না।’ (সুরা সাবা: ১৫-১৭) 

আল্লাহর কুদরতের বয়ান—সুরা ফাতির
মক্কায় অবতীর্ণ ৪৫ আয়াত বিশিষ্ট সুরা ফাতিরে আল্লাহর একত্ববাদ, সঠিক দীনের ওপর থাকার তাগিদ, আল্লাহর অমুখাপেক্ষিতা, আল্লাহর নেয়ামত, তাঁর কুদরতের বয়ান, কুদরতের নিদর্শন, এগুলোর সুস্পষ্ট দলিল, কোরআন পাঠের ফজিলত, মানুষের শ্রেণিবিন্যাস, জান্নাতবাসী, আল্লাহ গুনাহগারদের তাৎক্ষণিক সাজা দেন না ইত্যাদি বিষয়ের আলোচনা রয়েছে।

কোরআনের হৃদয়—সুরা ইয়াসিন
সুরা ইয়াসিন মক্কায় অবতীর্ণ। এ সুরার আয়াত সংখ্যা ৮৩। কোরআনের ৩৬ তম সুরা এটি। নবীজি এ সুরাকে কোরআনুল কারিমের কলব বা হৃদয় বলেছেন। মহানবী (সা.) বলেন, ‘প্রতিটি বস্তুর একটি হৃদয় রয়েছে, আর কোরআনে হৃদয় হচ্ছে ইয়াসিন। যে ইয়াসিন পড়বে আল্লাহ তার আমলনামায় দশবার পূর্ণ কোরআন পড়ার নেকি দান করবেন।’ (তিরমিজি: ২৮৮৭) 

তাফসিরে রুহুল মাআনিতে আছে, ইমাম গাজ্জালি (রহ.) বলেন, ‘সুরা ইয়াসিনকে কোরআনের হৃদয় এ কারণে বলা হয়েছে যে, এ সুরায় কিয়ামত ও হাশর বিষয়ে ব্যাখ্যা অলঙ্কারপূর্ণ ভাষায় বর্ণিত হয়েছে। পরকালে বিশ্বাস ইমানের এমন একটি মূলনীতি, যার ওপর মানুষের সব আমল ও আচরণের শুদ্ধতা নির্ভরশীল। আমরা জানি, পরকালভীতি মানুষকে সৎকর্মে উদ্বুদ্ধ করে এবং অবৈধ কামনা-বাসনা ও হারাম কাজ থেকে বিরত রাখে।’ 
 
এ ছাড়া তারাবির আজকের অংশে পালকপুত্রের তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রীকে বিয়ে, আল্লাহর প্রশংসা, রিজিক, দীনের ওপর অবিচল, ইমান ও কুফরের পার্থক্য, উম্মতে মুহাম্মদির প্রশংসা, গুনাহের কঠোর শাস্তি ইত্যাদি বিষয় আলোচিত হয়েছে। 

লেখক: ইসলামবিষয়ক গবেষক ও সাংবাদিক

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আরও ক্ষমতাধর হচ্ছেন পাকিস্তানের সেনাপ্রধান আসিম মুনির, দুর্বল হচ্ছে সুপ্রিম কোর্ট

উত্তরায় শিক্ষকের ডাস্টারের আঘাতে ছাত্র রক্তাক্ত, বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ

মুহূর্তেই উধাও ৬ হাজার কোটি টাকা—৫ ইসলামী ধারার ব্যাংকের শেয়ার ‘শূন্য’ ঘোষণা

মুগদা-মান্ডা সড়ক: উচ্ছেদের পর ফের দখল

চট্টগ্রামে যুবদল কর্মী নিহত: মেয়রের ক্ষোভ ঝাড়া সেই ওসিকে বদলি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সোমবার যে কারণে রোজা রাখতেন নবীজি (সা.)

ইসলাম ডেস্ক 
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

ইসলামের অন্যতম মর্যাদাপূর্ণ ইবাদত রোজা। আল্লাহ তাআলা বান্দাকে নিজ হাতে রোজার প্রতিদান দেবেন। এ ছাড়া জান্নাতে রোজাদারদের জন্য থাকবে বিশেষ প্রবেশপথ, যা দিয়ে একমাত্র তারাই প্রবেশ করবে।

মহানবী (সা.) বলেন, ‘জান্নাতে রাইয়ান নামক একটি দরজা আছে। এ দরজা দিয়ে কিয়ামতের দিন রোজাদাররা প্রবেশ করবে। তারা ছাড়া আর কেউ এ দরজা দিয়ে প্রবেশ করতে পারবে না। ঘোষণা দেওয়া হবে, রোজাদাররা কোথায়? তখন তারা দাঁড়াবে। তাদের প্রবেশের পরই সেই দরজা বন্ধ করে দেওয়া হবে, যেন এ দরজা দিয়ে আর কেউ প্রবেশ করতে না পারে।’ (সহিহ বুখারি: ১৮৯৬)। প্রিয় নবীজি (সা.) আরও বলেন, ‘যে রোজা অবস্থায় ইন্তেকাল করবে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে’। (সহিহ আল জামে: ৬২২৪)

নবী করিম (সা.) সাহাবায়ে কেরামকে বেশি বেশি নফল রোজা রাখতে বলতেন। নিজেও বছরের নানা দিনে নফল রোজা রাখতেন। আল্লাহর রাসুল (সা.) যেসব দিন নফল রোজা রাখতেন, তার মধ্যে অন্যতম সোমবার। আয়েশা (রা.) বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) সোম ও বৃহস্পতিবারে রোজা রাখাকে প্রাধান্য দিতেন।’ (সুনানে তিরমিজি: ১০২৭)

আবু কাতাদাহ আনসারি (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে একবার সোমবারে রোজা রাখার কারণ জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, ‘এই দিনে আমি জন্মগ্রহণ করেছিলাম এবং এই দিনেই আমাকে নবুওয়াত দেওয়া হয়েছিল। অথবা, এই দিনে আমার ওপর (কোরআন) নাজিল করা হয়েছে।’ (সহিহ মুসলিম: ১১৬২)

হাফসা (রা.) বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) প্রতি মাসে তিন দিন রোজা রাখতেন। (মাসের প্রথম সপ্তাহের) সোম ও বৃহস্পতিবার এবং (দ্বিতীয় সপ্তাহের) সোমবার।’ (সুনানে আবু দাউদ: ২৪৫১)

আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে বলেছেন, রোজা তাকওয়া অর্জনের মাধ্যম। সোমবারের রোজা আমাদের জন্য হতে পারে তাকওয়া অর্জনের অপার সুযোগ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আরও ক্ষমতাধর হচ্ছেন পাকিস্তানের সেনাপ্রধান আসিম মুনির, দুর্বল হচ্ছে সুপ্রিম কোর্ট

উত্তরায় শিক্ষকের ডাস্টারের আঘাতে ছাত্র রক্তাক্ত, বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ

মুহূর্তেই উধাও ৬ হাজার কোটি টাকা—৫ ইসলামী ধারার ব্যাংকের শেয়ার ‘শূন্য’ ঘোষণা

মুগদা-মান্ডা সড়ক: উচ্ছেদের পর ফের দখল

চট্টগ্রামে যুবদল কর্মী নিহত: মেয়রের ক্ষোভ ঝাড়া সেই ওসিকে বদলি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আজকের নামাজের সময়সূচি: ১০ নভেম্বর ২০২৫

ইসলাম ডেস্ক 
আজকের নামাজের সময়সূচি। ছবি: সংগৃহীত
আজকের নামাজের সময়সূচি। ছবি: সংগৃহীত

জীবনকে সুশৃঙ্খল করতে এবং আল্লাহর সান্নিধ্য পেতে নামাজের কোনো বিকল্প নেই। একজন মুমিনের জন্য নামাজ হলো আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি কথোপকথনের মাধ্যম। এটি এমন এক ইবাদত—যা আমাদের মনে আধ্যাত্মিক প্রশান্তি আনে, জীবনের প্রতিটি কাজে আনে বরকত। প্রতিদিন সময় মতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর আবশ্যক। তাই জেনে নেওয়া যাক আজ কোন ওয়াক্তের নামাজ কখন আদায় করতে হবে।

আজ সোমবার, ১০ নভেম্বর ২০২৫ ইংরেজি, ২৫ কার্তিক ১৪৩২ বাংলা, ১৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭ হিজরি। ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকার নামাজের সময়সূচি তুলে ধরা হলো—

আজকের নামাজের সময়সূচি
নামাজ ওয়াক্ত শুরুওয়াক্ত শেষ
তাহাজ্জুদ ও সেহরির শেষ সময়০০: ০০০৪: ৫১ মিনিট
ফজর০৪: ৫২ মিনিট০৬: ০৯ মিনিট
জোহর১১: ৪৩ মিনিট০৩: ৩৮ মিনিট
আসর০৩: ৩৯ মিনিট০৫: ১৪ মিনিট
মাগরিব০৫: ১৬ মিনিট০৬: ৩১ মিনিট
এশা০৬: ৩২ মিনিট০৪: ৫১ মিনিট

উল্লিখিত সময়ের সঙ্গে যেসব বিভাগের সময় যোগ-বিয়োগ করতে হবে, সেগুলো হলো:

বিয়োগ করতে হবে—
চট্টগ্রাম: ০৫ মিনিট
সিলেট: ০৬ মিনিট

যোগ করতে হবে—
খুলনা: ০৩ মিনিট
রাজশাহী: ০৭ মিনিট
রংপুর: ০৮ মিনিট
বরিশাল: ০১ মিনিট

নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।

আসুন, নামাজের মাধ্যমে আমরা নিজেদেরকে তাঁর আরও কাছে নিয়ে যাই। জীবনে নিয়ে আসি ইমানের নুর।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আরও ক্ষমতাধর হচ্ছেন পাকিস্তানের সেনাপ্রধান আসিম মুনির, দুর্বল হচ্ছে সুপ্রিম কোর্ট

উত্তরায় শিক্ষকের ডাস্টারের আঘাতে ছাত্র রক্তাক্ত, বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ

মুহূর্তেই উধাও ৬ হাজার কোটি টাকা—৫ ইসলামী ধারার ব্যাংকের শেয়ার ‘শূন্য’ ঘোষণা

মুগদা-মান্ডা সড়ক: উচ্ছেদের পর ফের দখল

চট্টগ্রামে যুবদল কর্মী নিহত: মেয়রের ক্ষোভ ঝাড়া সেই ওসিকে বদলি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সালাম: সমাজে শান্তি ফিরিয়ে আনার সহজ উপায়

ইসলাম ডেস্ক 
পরস্পর সাক্ষাতের আদব। ছবি: সংগৃহীত
পরস্পর সাক্ষাতের আদব। ছবি: সংগৃহীত

আদব ও আন্তরিকতার সঙ্গে সালাম একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। এটি শান্তি, কল্যাণ ও নিরাপত্তার বার্তা বহন করে, যা আমাদের ধর্মীয় ও সামাজিক বন্ধনকে দৃঢ় করে। দুঃখজনকভাবে, সমাজে এই মহান সুন্নাহর চর্চা কমে আসছে।

সালাম বিনিময়ের মাধ্যমে হৃদয়ে ভালোবাসা সৃষ্টি হয় এবং পারস্পরিক বিদ্বেষ দূর হয়। আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে সালামের গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, ‘আর যখন তোমাদেরকে সালাম জানানো হয়, তখন তার চেয়েও উত্তমভাবে জবাব দাও অথবা অন্তত সেভাবে জবাব দাও।’ (সুরা নিসা: ৮৬)

নবীজি (সা.) সালামের মাধ্যমে জান্নাতের পথ সহজ করার শিক্ষা দিয়েছেন। হাদিস অনুসারে, সালামের পূর্ণ বাক্য বিনিময়ে ৩০ নেকি লাভ হয়। (সুনানে আবু দাউদ: ৫১৯৫)

রাসুল (সা.) আরও বলেন, ‘তোমরা ইমানদার হতে পারবে না, যতক্ষণ না একে অন্যকে ভালোবাসবে। আর তা হলো পরস্পরের মধ্যে সালামের ব্যাপক প্রচলন করা।’ (সহিহ মুসলিম: ৫৪)

সালামের এত গুরুত্ব থাকা সত্ত্বেও অবহেলা, মনোযোগের অভাব, সালামকে স্রেফ সৌজন্য মনে করার কারণে এর চর্চা কমছে। অপরিচিত বা কম পরিচিত ব্যক্তিকে সালাম দিতে দ্বিধা করা হয়, অথচ হাদিস অনুযায়ী এতেই বেশি সওয়াব। বিশেষ করে, তরুণ প্রজন্মের মধ্যে সালামের চর্চা উল্লেখযোগ্য হারে কমছে।

সালাম কেবল একটি সুন্নাহ নয়, এটি সামাজিক নিরাপত্তা ও আত্মিক শান্তির প্রতীক। যিনি প্রথমে সালাম দেন, তিনি আল্লাহর কাছে বেশি প্রিয় এবং উত্তম। আমরা এই মহান সুন্নাহর ব্যাপক অনুশীলনের মাধ্যমে সমাজে শান্তি ও ভালোবাসা প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা রাখতে পারি।

লেখক: মির্জা রিজওয়ান আলম, প্রাবন্ধিক

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আরও ক্ষমতাধর হচ্ছেন পাকিস্তানের সেনাপ্রধান আসিম মুনির, দুর্বল হচ্ছে সুপ্রিম কোর্ট

উত্তরায় শিক্ষকের ডাস্টারের আঘাতে ছাত্র রক্তাক্ত, বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ

মুহূর্তেই উধাও ৬ হাজার কোটি টাকা—৫ ইসলামী ধারার ব্যাংকের শেয়ার ‘শূন্য’ ঘোষণা

মুগদা-মান্ডা সড়ক: উচ্ছেদের পর ফের দখল

চট্টগ্রামে যুবদল কর্মী নিহত: মেয়রের ক্ষোভ ঝাড়া সেই ওসিকে বদলি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

হাদিয়া বিনিময়ে উৎসাহ দিয়েছেন নবী (সা.)

সাকী মাহবুব
দুজন বন্ধু। ছবি: সংগৃহীত
দুজন বন্ধু। ছবি: সংগৃহীত

মানবসমাজে পারস্পরিক ভালোবাসা, সদ্ভাব ও সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠা করা ইসলামের অন্যতম প্রধান শিক্ষা। এই লক্ষ্য অর্জনে হাদিয়া বা উপহার আদান-প্রদান একটি অত্যন্ত কার্যকরী ও পরীক্ষিত পদ্ধতি।

হাদিয়া শুধু একটি বস্তুগত বিনিময় নয়, এটি হৃদয়ের অনুভূতি, ভালোবাসা এবং শুভেচ্ছার এক শক্তিশালী বহিঃপ্রকাশ। ইসলামে এই আমলটিকে অত্যন্ত উৎসাহিত করা হয়েছে। কারণ, এর মাধ্যমে পাষাণ হৃদয়ও নরম হয়ে যায় এবং তিক্ত সম্পর্কও মধুর হয়ে ওঠে। হাদিয়া আদান-প্রদানের মূল উদ্দেশ্য হলো মানুষের মাঝে আন্তরিকতা সৃষ্টি করা। এটি মানুষের মন থেকে রাগ, বিদ্বেষ ও শত্রুতার ভাব দূর করে ভালোবাসার বীজ বপন করে।

রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা পরস্পর উপহার আদান-প্রদান করো, তাহলে তোমাদের মাঝে ভালোবাসা বৃদ্ধি হবে।’ (জামে তিরমিজি)

অনেক সময় সম্পর্কের মধ্যে ভুল-বোঝাবুঝি বা তিক্ততা সৃষ্টি হয়, যা থেকে শত্রুতার জন্ম নেয়। হাদিয়া এ ক্ষেত্রে জাদুকরী ভূমিকা পালন করতে পারে। আন্তরিকভাবে দেওয়া একটি উপহার কঠিন হৃদয়ের দেয়াল ভেঙে দিতে সক্ষম।

হাদিসে এসেছে, ‘তোমরা পরস্পর হাদিয়া আদান-প্রদান করো। কেননা, হাদিয়া অন্তর থেকে বিদ্বেষ দূর করে দেয়।’ (জামে তিরমিজি)। আরেকটি বর্ণনায় এসেছে, ‘তোমরা পরস্পরের সঙ্গে হাত মেলাও, তাহলে তোমাদের বিদ্বেষ দূর হয়ে যাবে; আর তোমরা পরস্পরকে উপহার দাও, তাহলে শত্রুতা দূর হয়ে যাবে।’ (মুআত্তা ইমাম মালেক, আল-আদাবুল মুফরাদ)

বাস্তব জীবনে দেখা যায়, একজন তিক্ততা পোষণকারী আত্মীয় বা প্রতিবেশীকে আন্তরিকতার সঙ্গে একটি উপহার দিলে তার পাষাণ হৃদয়ে পরিবর্তন আসে এবং সম্পর্ক স্বাভাবিক হতে শুরু করে। এটি প্রমাণ করে যে হাদিয়া মানুষের ভেতরের নেতিবাচক অনুভূতিকে ইতিবাচক রূপে রূপান্তরিত করতে পারে।

হাদিয়া গ্রহণ ও প্রদান করা রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর একটি প্রিয় অভ্যাস ছিল। তিনি উপহার গ্রহণ করতেন এবং বিনিময়ে কিছু উপহার দেওয়ার চেষ্টা করতেন। এটি ছিল তাঁর উচ্চ নৈতিকতার প্রমাণ।

আবদুল্লাহ ইবন উমার (রা.) থেকে বর্ণিত, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) হাদিয়া গ্রহণ করতেন এবং এর প্রতিদান দিতেন।’ (সহিহ্ বুখারি)

সামান্য ও নগণ্য হাদিয়াও তিনি ফিরিয়ে দিতেন না। এর মাধ্যমে তিনি উম্মতকে শিক্ষা দিয়েছেন যে উপহারের মূল্য নয়, বরং আন্তরিকতাই আসল। হাদিয়া আদান-প্রদান শুধু একটি সামাজিক প্রথা নয়, এটি একটি ইবাদত এবং নবুওয়াতের শিক্ষা। এটি এমন এক মানবিক কৌশল, যা মানুষের হৃদয়ের গভীরে প্রবেশ করে বিদ্বেষ দূর করে ভালোবাসা ও সদ্ভাব প্রতিষ্ঠা করে।

আমাদের ব্যক্তিগত, পারিবারিক ও সামাজিক জীবনে সম্পর্কগুলোকে সুন্দর ও মজবুত করার জন্য হাদিয়ার এই ঐশী মাধ্যমটিকে গুরুত্ব দেওয়া অপরিহার্য। হাদিয়ার মূল্য নয়, বরং এর পেছনে থাকা আন্তরিকতাই পারে যেকোনো মানুষের অন্তর পরিবর্তন করে সম্পর্ককে স্থায়ী ও মধুর করতে।

লেখক: সহকারী শিক্ষক, নাদির হোসেন উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়, কশবামাজাইল, পাংশা, রাজবাড়ী।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আরও ক্ষমতাধর হচ্ছেন পাকিস্তানের সেনাপ্রধান আসিম মুনির, দুর্বল হচ্ছে সুপ্রিম কোর্ট

উত্তরায় শিক্ষকের ডাস্টারের আঘাতে ছাত্র রক্তাক্ত, বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ

মুহূর্তেই উধাও ৬ হাজার কোটি টাকা—৫ ইসলামী ধারার ব্যাংকের শেয়ার ‘শূন্য’ ঘোষণা

মুগদা-মান্ডা সড়ক: উচ্ছেদের পর ফের দখল

চট্টগ্রামে যুবদল কর্মী নিহত: মেয়রের ক্ষোভ ঝাড়া সেই ওসিকে বদলি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত