Ajker Patrika

বন্য প্রাণী ও বনাঞ্চল সংরক্ষণ: ইসলামের নির্দেশনা

ডা. মুহাম্মাদ মাহতাব হোসাইন মাজেদ 
বন্য প্রাণী। ছবি: সংগৃহীত
বন্য প্রাণী। ছবি: সংগৃহীত

ইসলাম কেবল মানবজাতির নৈতিকতা ও আধ্যাত্মিক জীবন নির্দেশ করে না; বরং পৃথিবী, প্রকৃতি এবং জীবজগৎ সংরক্ষণের ওপরও গুরুত্বারোপ করেছে। কোরআন ও হাদিসে নিয়মিত উল্লেখ করা হয়েছে, মানুষ পৃথিবীতে আল্লাহর প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্বপ্রাপ্ত, যার মধ্যে রয়েছে বন্য প্রাণী, গাছপালা এবং বনাঞ্চল সংরক্ষণ করা।

পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘অবিশ্বাসীরা কি দেখে না, আকাশ ও পৃথিবী একসঙ্গে মিশে ছিল, অতঃপর আমি তাদেরকে পৃথক করে দিয়েছি এবং পানি থেকে আমি সব জীবন্ত বস্তুকে সৃষ্টি করেছি? তবুও কি তারা বিশ্বাস করবে না?’ (সুরা আম্বিয়া: ৩০)

এই আয়াত থেকে বোঝা যায়, পৃথিবী ও জীবজগৎ আল্লাহর সৃষ্টির অংশ এবং মানুষের কর্তব্য হলো এটি সংরক্ষণ করা।

নবী করিম (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি একটি গাছ রোপণ করে বা প্রাণীর জন্য পানি রাখে, আল্লাহ তা দিয়ে তাকে পুরস্কৃত করবেন এবং সেই কাজ তার জন্য ধারাবাহিক সওয়াব হিসেবে গণ্য হবে।’ (সহিহ্ মুসলিম: ১৫৫৩)। এই হাদিস প্রমাণ করে, প্রাণী ও গাছপালার কল্যাণে সক্রিয়ভাবে অবদান রাখা ইসলামে প্রশংসনীয়।

বনাঞ্চল ও বন্য প্রাণী সংরক্ষণ

বনাঞ্চল এবং বন্য প্রাণী সংরক্ষণ কেবল পরিবেশ রক্ষার জন্য নয়, বরং মানব সমাজের দীর্ঘমেয়াদি কল্যাণেরও জন্য অপরিহার্য। বনাঞ্চল মাটির উর্বরতা রক্ষা করে, জলবায়ু নিয়ন্ত্রণে সহায়ক হয় এবং বন্য প্রাণীর প্রাকৃতিক আবাসস্থল হিসেবে কাজ করে।

ইসলামে এ সংরক্ষণকে একটি নৈতিক ও আধ্যাত্মিক দায়িত্ব হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে। হাদিসে বলা হয়েছে, ‘প্রকৃতির প্রতি সদয় হওয়া মুসলিমদের মধ্যে অন্যতম সেরা কাজ।’ (সহিহ্ বুখারি: ২৩৩৪)

অতএব, বন্য প্রাণী হত্যা, বন উজাড় বা পরিবেশ দূষণ প্রতিরোধ করা মুসলমানের জন্য একটি ইমানি দায়িত্ব। প্রকৃতির প্রতি সহানুভূতিশীল মনোভাব এবং সচেতন সংরক্ষণ কেবল আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের মাধ্যম নয়; বরং আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কল্যাণ নিশ্চিত করার পথ।

লেখক: প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান, জাতীয় রোগীকল্যাণ সোসাইটি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত