মুনীরুল ইসলাম

বাংলাদেশ একটি মুসলিমপ্রধান দেশ। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, দেশের ৯১ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ নাগরিক মুসলমান। ইসলাম শুধু একটি ধর্ম নয়, এটি পূর্ণাঙ্গ জীবনব্যবস্থা। এবং নৈতিকতা, শিষ্টাচার, মানবিকতা ও সমাজ গঠনের পূর্ণাঙ্গ দিকনির্দেশনা। এই ইসলামের বনিয়াদি শিক্ষা যদি শিশু বয়সেই আগামী প্রজন্মের হৃদয়ে সঞ্চারিত না হয়, তবে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম নৈতিক দিক থেকে দুর্বল হয়ে পড়বে। এ জন্য দেশের প্রায় ৬৫ হাজার প্রাইমারি স্কুল তথা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ইসলাম ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগ এখন সময়ের অপরিহার্য দাবি।
নৈতিকতার প্রথম পাঠ
প্রাথমিক বিদ্যালয় হলো শিক্ষার্থীদের জীবনের প্রথম আনুষ্ঠানিক শিক্ষাঙ্গন। এখানেই গড়ে ওঠে তাদের চিন্তা, চরিত্র ও মূল্যবোধের ভিত। এই স্তরে শিশুরা যে শিক্ষা পায়, তা-ই তার সারা জীবনের নৈতিক ও মানসিক গঠন নির্ধারণ করে। যদি এই পর্যায়ে ইসলামের মৌলিক বিষয়—ইমান, আকিদা, কোরআন তিলাওয়াত, নামাজ, রোজা, আদব-আখলাক ইত্যাদি শেখানো না হয়, তাহলে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম ধর্মীয় দিক থেকে পিছিয়ে পড়বে। আজকের শিশু আগামী দিনের নাগরিক। যদি ছোটবেলা থেকেই সঠিকভাবে ইসলাম সম্পর্কে জানতে পারে, তবে তারা বড় হয়ে সত্যবাদী, ন্যায়পরায়ণ, দায়িত্বশীল ও সৎ মানুষ হিসেবে সমাজে অবদান রাখবে।
বর্তমান প্রেক্ষাপটে ধর্মীয় শিক্ষার ঘাটতি
বাংলাদেশের প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে ইসলাম শিক্ষা পাঠ্যসূচিতে থাকলেও বাস্তবে তা যথাযথভাবে প্রয়োগ করা যাচ্ছে না। বিষয়টাও আরও ঢেলে সাজানো দরকার। এ ছাড়া অধিকাংশ বিদ্যালয়ে আলাদা ধর্মীয় শিক্ষক নেই। সাধারণ শিক্ষকেরা অন্য বিষয় পড়ানোর পাশাপাশি ধর্ম শিক্ষা পড়ান, ফলে ধর্মীয় বিষয়গুলো শুধু আনুষ্ঠানিকতার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থেকে যায়। ইসলামের বনিয়াদি বিষয়, বিশুদ্ধ কোরআন তিলাওয়াত, প্রয়োজনীয় দোয়া-কালাম, ইমান-আকিদার মৌলিক বিষয়, আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস, নবী-রাসুলের প্রতি বিশ্বাস, ফেরেশতাদের প্রতি বিশ্বাস, আখিরাত ও তাকদিরের ধারণা ইত্যাদি শিশুরা সঠিকভাবে জানতে পারে না। এতে তাদের ধর্মীয় ভিত্তি দুর্বল হয়ে পড়ে এবং তারা ইসলামি মূল্যবোধ থেকে ধীরে ধীরে বিচ্যুত হতে থাকে।
ইসলামি শিক্ষার গুরুত্ব
ইসলামে জ্ঞান অর্জনকে ফরজ করা হয়েছে। মহান আল্লাহ প্রথম ওহি নাজিল করেই বলেন, ‘পড়ো, তোমার প্রভুর নামে, যিনি সৃষ্টি করেছেন।’ (সুরা আলাক: ১)। মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) বলেছেন, ‘তোমাদের মধ্যে উত্তম সেই ব্যক্তি, যে কোরআন শেখে এবং তা শিক্ষা দেয়।’ (সহিহ বুখারি)। তাই শিশুদের কোরআনের হরফ, তিলাওয়াত, অর্থ ও আদর্শ শেখানো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও প্রয়োজনীয় বিষয়। প্রাথমিক স্তরে একজন ইসলামি শিক্ষক থাকলে শিশুদের মধ্যে এই ধর্মীয় অনুপ্রেরণা জাগ্রত হবে।
জাতীয় ঐক্য ও শান্তি প্রতিষ্ঠায় ধর্মীয় শিক্ষা
ধর্মীয় শিক্ষা সমাজে সহনশীলতা, ভ্রাতৃত্ববোধ ও মানবিকতা জাগ্রত করে। যদি শিশু বয়সেই ইসলাম ধর্মের আদর্শে লালিত হয়, তাহলে তারা বড় হয়ে চরমপন্থা, ঘৃণা বা সহিংসতায় জড়াবে না। ইসলাম শেখায়, ‘ধর্মে কোনো জবরদস্তি নেই’। এই মৌলিক নীতিটি বুঝে নিলে শিশুরা অন্য ধর্মের মানুষকেও সম্মান করতে শেখে। ফলে দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও সামাজিক শান্তি প্রতিষ্ঠিত হয়। ইসলামি শিক্ষা হলো সেই আলোর প্রদীপ, যা জাতিকে নৈতিক অন্ধকার থেকে মুক্ত করে উন্নতির পথে এগিয়ে নিয়ে যায়।
জাতীয় শিক্ষানীতিতে ধর্মীয় শিক্ষার অবস্থান
বাংলাদেশের ২০১০ সালের জাতীয় শিক্ষানীতিতেও বলা আছে, ‘শিশুদের নৈতিক ও মানবিক বিকাশের জন্য ধর্মীয় শিক্ষাকে গুরুত্ব দিতে হবে।’ কিন্তু নীতিগত সিদ্ধান্ত থাকলেও বাস্তবায়নে ঘাটতি রয়ে গেছে। সরকারি ও বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বিশাল অংশে আজও ইসলাম ধর্মীয় শিক্ষক নেই। ফলস্বরূপ, ধর্ম শিক্ষা পাঠ্যবই থাকলেও তা শিশুর অন্তরে যথাযথ প্রভাব ফেলতে পারছে না। যদি এই নীতিকে বাস্তবায়ন করতে হয়, তবে প্রতিটি বিদ্যালয়ে একজন যোগ্য ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া অপরিহার্য।
বিদেশে ধর্মীয় শিক্ষার দৃষ্টান্ত
অনেক উন্নত মুসলিম দেশ যেমন সৌদি আরব, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাত—তাদের জাতীয় শিক্ষাব্যবস্থায় ধর্মীয় শিক্ষাকে প্রাথমিক স্তর থেকেই বাধ্যতামূলক করেছে। এমনকি অনেক অমুসলিম দেশেও মুসলিম সম্প্রদায়ের শিশুদের জন্য ‘ইসলামিক স্টাডিজ’ নামে আলাদা বিষয় চালু আছে। তাহলে প্রায় ৯২ শতাংশ মুসলমানের দেশে কেন শিশুদের ইমানি শিক্ষার জন্য একজন ইসলামি শিক্ষক থাকবেন না?
চাই প্রশিক্ষিত দক্ষ শিক্ষক
ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগের পাশাপাশি তাঁদের সঠিক প্রশিক্ষণও অত্যন্ত জরুরি। আধুনিক যুগের শিশুরা কেবল মুখস্থনির্ভর শিক্ষা নয়, ব্যাখ্যামূলক ও বাস্তবজীবনভিত্তিক শিক্ষায় আগ্রহী। তাই এই শিক্ষকদের জন্য প্রয়োজন—শিশু মনোবিজ্ঞানে প্রশিক্ষণ, আধুনিক শিক্ষণপদ্ধতির জ্ঞান, বিশুদ্ধ কোরআন তিলাওয়াত, কোরআন-হাদিস ও ফিকহে মজবুত দক্ষতা, নৈতিক আদর্শে দৃঢ় অবস্থান এবং নিজে ইসলাম পরিপালনকারী।
এ ক্ষেত্রে কওমি মাদ্রাসার দাওরায়ে হাদিস পাস ও প্রশিক্ষিত আলেমকে উপযুক্ত। পাশাপাশি নুরানি ট্রেনিংপ্রাপ্ত হলে কোমলমতি শিশুদের জন্য সোনায় সোহাগা হবে। তাহলে একদিকে যেমন প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে যোগ্য ও দক্ষ শিক্ষকের অভাব পূরণ হবে, অন্যদিকে হাজার হাজার কওমি আলেমের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হবে এবং একটি ভিন্ন অঙ্গনে মনপ্রাণ উজাড় করে আগামী প্রজন্মকে গড়ে তোলার সুযোগ পাবেন। এমন একজন ধর্মীয় শিক্ষকই বিষয়গুলো শিশুদের কাছে আকর্ষণীয়ভাবে উপস্থাপন করতে পারবেন।
শেষ কথা হলো, প্রায় ৯২ শতাংশ মুসলমানের দেশে ইসলাম ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগ জাতীয় দায়িত্ব ও সময়ের দাবি। শিশুরা যদি ধর্মীয়ভাবে শিক্ষিত হয়; তারা সৎ, ন্যায়ের পক্ষে দৃঢ়, অন্যায়ের বিরুদ্ধে সাহসী এবং সমাজে শান্তি ও মানবতার দূত হয়ে উঠবে। তাই প্রতিটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অবিলম্বে একজন করে ইসলাম ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হোক। এটি শুধু শিক্ষাব্যবস্থাকে নয়, পুরো জাতিকে নৈতিকভাবে শক্তিশালী করবে।
লেখক: সভাপতি, বাংলাদেশ ইসলামি লেখক ফোরাম; পরিচালক, সম্পাদনা কেন্দ্র।

বাংলাদেশ একটি মুসলিমপ্রধান দেশ। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, দেশের ৯১ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ নাগরিক মুসলমান। ইসলাম শুধু একটি ধর্ম নয়, এটি পূর্ণাঙ্গ জীবনব্যবস্থা। এবং নৈতিকতা, শিষ্টাচার, মানবিকতা ও সমাজ গঠনের পূর্ণাঙ্গ দিকনির্দেশনা। এই ইসলামের বনিয়াদি শিক্ষা যদি শিশু বয়সেই আগামী প্রজন্মের হৃদয়ে সঞ্চারিত না হয়, তবে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম নৈতিক দিক থেকে দুর্বল হয়ে পড়বে। এ জন্য দেশের প্রায় ৬৫ হাজার প্রাইমারি স্কুল তথা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ইসলাম ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগ এখন সময়ের অপরিহার্য দাবি।
নৈতিকতার প্রথম পাঠ
প্রাথমিক বিদ্যালয় হলো শিক্ষার্থীদের জীবনের প্রথম আনুষ্ঠানিক শিক্ষাঙ্গন। এখানেই গড়ে ওঠে তাদের চিন্তা, চরিত্র ও মূল্যবোধের ভিত। এই স্তরে শিশুরা যে শিক্ষা পায়, তা-ই তার সারা জীবনের নৈতিক ও মানসিক গঠন নির্ধারণ করে। যদি এই পর্যায়ে ইসলামের মৌলিক বিষয়—ইমান, আকিদা, কোরআন তিলাওয়াত, নামাজ, রোজা, আদব-আখলাক ইত্যাদি শেখানো না হয়, তাহলে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম ধর্মীয় দিক থেকে পিছিয়ে পড়বে। আজকের শিশু আগামী দিনের নাগরিক। যদি ছোটবেলা থেকেই সঠিকভাবে ইসলাম সম্পর্কে জানতে পারে, তবে তারা বড় হয়ে সত্যবাদী, ন্যায়পরায়ণ, দায়িত্বশীল ও সৎ মানুষ হিসেবে সমাজে অবদান রাখবে।
বর্তমান প্রেক্ষাপটে ধর্মীয় শিক্ষার ঘাটতি
বাংলাদেশের প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে ইসলাম শিক্ষা পাঠ্যসূচিতে থাকলেও বাস্তবে তা যথাযথভাবে প্রয়োগ করা যাচ্ছে না। বিষয়টাও আরও ঢেলে সাজানো দরকার। এ ছাড়া অধিকাংশ বিদ্যালয়ে আলাদা ধর্মীয় শিক্ষক নেই। সাধারণ শিক্ষকেরা অন্য বিষয় পড়ানোর পাশাপাশি ধর্ম শিক্ষা পড়ান, ফলে ধর্মীয় বিষয়গুলো শুধু আনুষ্ঠানিকতার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থেকে যায়। ইসলামের বনিয়াদি বিষয়, বিশুদ্ধ কোরআন তিলাওয়াত, প্রয়োজনীয় দোয়া-কালাম, ইমান-আকিদার মৌলিক বিষয়, আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস, নবী-রাসুলের প্রতি বিশ্বাস, ফেরেশতাদের প্রতি বিশ্বাস, আখিরাত ও তাকদিরের ধারণা ইত্যাদি শিশুরা সঠিকভাবে জানতে পারে না। এতে তাদের ধর্মীয় ভিত্তি দুর্বল হয়ে পড়ে এবং তারা ইসলামি মূল্যবোধ থেকে ধীরে ধীরে বিচ্যুত হতে থাকে।
ইসলামি শিক্ষার গুরুত্ব
ইসলামে জ্ঞান অর্জনকে ফরজ করা হয়েছে। মহান আল্লাহ প্রথম ওহি নাজিল করেই বলেন, ‘পড়ো, তোমার প্রভুর নামে, যিনি সৃষ্টি করেছেন।’ (সুরা আলাক: ১)। মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) বলেছেন, ‘তোমাদের মধ্যে উত্তম সেই ব্যক্তি, যে কোরআন শেখে এবং তা শিক্ষা দেয়।’ (সহিহ বুখারি)। তাই শিশুদের কোরআনের হরফ, তিলাওয়াত, অর্থ ও আদর্শ শেখানো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও প্রয়োজনীয় বিষয়। প্রাথমিক স্তরে একজন ইসলামি শিক্ষক থাকলে শিশুদের মধ্যে এই ধর্মীয় অনুপ্রেরণা জাগ্রত হবে।
জাতীয় ঐক্য ও শান্তি প্রতিষ্ঠায় ধর্মীয় শিক্ষা
ধর্মীয় শিক্ষা সমাজে সহনশীলতা, ভ্রাতৃত্ববোধ ও মানবিকতা জাগ্রত করে। যদি শিশু বয়সেই ইসলাম ধর্মের আদর্শে লালিত হয়, তাহলে তারা বড় হয়ে চরমপন্থা, ঘৃণা বা সহিংসতায় জড়াবে না। ইসলাম শেখায়, ‘ধর্মে কোনো জবরদস্তি নেই’। এই মৌলিক নীতিটি বুঝে নিলে শিশুরা অন্য ধর্মের মানুষকেও সম্মান করতে শেখে। ফলে দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও সামাজিক শান্তি প্রতিষ্ঠিত হয়। ইসলামি শিক্ষা হলো সেই আলোর প্রদীপ, যা জাতিকে নৈতিক অন্ধকার থেকে মুক্ত করে উন্নতির পথে এগিয়ে নিয়ে যায়।
জাতীয় শিক্ষানীতিতে ধর্মীয় শিক্ষার অবস্থান
বাংলাদেশের ২০১০ সালের জাতীয় শিক্ষানীতিতেও বলা আছে, ‘শিশুদের নৈতিক ও মানবিক বিকাশের জন্য ধর্মীয় শিক্ষাকে গুরুত্ব দিতে হবে।’ কিন্তু নীতিগত সিদ্ধান্ত থাকলেও বাস্তবায়নে ঘাটতি রয়ে গেছে। সরকারি ও বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বিশাল অংশে আজও ইসলাম ধর্মীয় শিক্ষক নেই। ফলস্বরূপ, ধর্ম শিক্ষা পাঠ্যবই থাকলেও তা শিশুর অন্তরে যথাযথ প্রভাব ফেলতে পারছে না। যদি এই নীতিকে বাস্তবায়ন করতে হয়, তবে প্রতিটি বিদ্যালয়ে একজন যোগ্য ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া অপরিহার্য।
বিদেশে ধর্মীয় শিক্ষার দৃষ্টান্ত
অনেক উন্নত মুসলিম দেশ যেমন সৌদি আরব, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাত—তাদের জাতীয় শিক্ষাব্যবস্থায় ধর্মীয় শিক্ষাকে প্রাথমিক স্তর থেকেই বাধ্যতামূলক করেছে। এমনকি অনেক অমুসলিম দেশেও মুসলিম সম্প্রদায়ের শিশুদের জন্য ‘ইসলামিক স্টাডিজ’ নামে আলাদা বিষয় চালু আছে। তাহলে প্রায় ৯২ শতাংশ মুসলমানের দেশে কেন শিশুদের ইমানি শিক্ষার জন্য একজন ইসলামি শিক্ষক থাকবেন না?
চাই প্রশিক্ষিত দক্ষ শিক্ষক
ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগের পাশাপাশি তাঁদের সঠিক প্রশিক্ষণও অত্যন্ত জরুরি। আধুনিক যুগের শিশুরা কেবল মুখস্থনির্ভর শিক্ষা নয়, ব্যাখ্যামূলক ও বাস্তবজীবনভিত্তিক শিক্ষায় আগ্রহী। তাই এই শিক্ষকদের জন্য প্রয়োজন—শিশু মনোবিজ্ঞানে প্রশিক্ষণ, আধুনিক শিক্ষণপদ্ধতির জ্ঞান, বিশুদ্ধ কোরআন তিলাওয়াত, কোরআন-হাদিস ও ফিকহে মজবুত দক্ষতা, নৈতিক আদর্শে দৃঢ় অবস্থান এবং নিজে ইসলাম পরিপালনকারী।
এ ক্ষেত্রে কওমি মাদ্রাসার দাওরায়ে হাদিস পাস ও প্রশিক্ষিত আলেমকে উপযুক্ত। পাশাপাশি নুরানি ট্রেনিংপ্রাপ্ত হলে কোমলমতি শিশুদের জন্য সোনায় সোহাগা হবে। তাহলে একদিকে যেমন প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে যোগ্য ও দক্ষ শিক্ষকের অভাব পূরণ হবে, অন্যদিকে হাজার হাজার কওমি আলেমের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হবে এবং একটি ভিন্ন অঙ্গনে মনপ্রাণ উজাড় করে আগামী প্রজন্মকে গড়ে তোলার সুযোগ পাবেন। এমন একজন ধর্মীয় শিক্ষকই বিষয়গুলো শিশুদের কাছে আকর্ষণীয়ভাবে উপস্থাপন করতে পারবেন।
শেষ কথা হলো, প্রায় ৯২ শতাংশ মুসলমানের দেশে ইসলাম ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগ জাতীয় দায়িত্ব ও সময়ের দাবি। শিশুরা যদি ধর্মীয়ভাবে শিক্ষিত হয়; তারা সৎ, ন্যায়ের পক্ষে দৃঢ়, অন্যায়ের বিরুদ্ধে সাহসী এবং সমাজে শান্তি ও মানবতার দূত হয়ে উঠবে। তাই প্রতিটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অবিলম্বে একজন করে ইসলাম ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হোক। এটি শুধু শিক্ষাব্যবস্থাকে নয়, পুরো জাতিকে নৈতিকভাবে শক্তিশালী করবে।
লেখক: সভাপতি, বাংলাদেশ ইসলামি লেখক ফোরাম; পরিচালক, সম্পাদনা কেন্দ্র।
মুনীরুল ইসলাম

বাংলাদেশ একটি মুসলিমপ্রধান দেশ। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, দেশের ৯১ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ নাগরিক মুসলমান। ইসলাম শুধু একটি ধর্ম নয়, এটি পূর্ণাঙ্গ জীবনব্যবস্থা। এবং নৈতিকতা, শিষ্টাচার, মানবিকতা ও সমাজ গঠনের পূর্ণাঙ্গ দিকনির্দেশনা। এই ইসলামের বনিয়াদি শিক্ষা যদি শিশু বয়সেই আগামী প্রজন্মের হৃদয়ে সঞ্চারিত না হয়, তবে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম নৈতিক দিক থেকে দুর্বল হয়ে পড়বে। এ জন্য দেশের প্রায় ৬৫ হাজার প্রাইমারি স্কুল তথা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ইসলাম ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগ এখন সময়ের অপরিহার্য দাবি।
নৈতিকতার প্রথম পাঠ
প্রাথমিক বিদ্যালয় হলো শিক্ষার্থীদের জীবনের প্রথম আনুষ্ঠানিক শিক্ষাঙ্গন। এখানেই গড়ে ওঠে তাদের চিন্তা, চরিত্র ও মূল্যবোধের ভিত। এই স্তরে শিশুরা যে শিক্ষা পায়, তা-ই তার সারা জীবনের নৈতিক ও মানসিক গঠন নির্ধারণ করে। যদি এই পর্যায়ে ইসলামের মৌলিক বিষয়—ইমান, আকিদা, কোরআন তিলাওয়াত, নামাজ, রোজা, আদব-আখলাক ইত্যাদি শেখানো না হয়, তাহলে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম ধর্মীয় দিক থেকে পিছিয়ে পড়বে। আজকের শিশু আগামী দিনের নাগরিক। যদি ছোটবেলা থেকেই সঠিকভাবে ইসলাম সম্পর্কে জানতে পারে, তবে তারা বড় হয়ে সত্যবাদী, ন্যায়পরায়ণ, দায়িত্বশীল ও সৎ মানুষ হিসেবে সমাজে অবদান রাখবে।
বর্তমান প্রেক্ষাপটে ধর্মীয় শিক্ষার ঘাটতি
বাংলাদেশের প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে ইসলাম শিক্ষা পাঠ্যসূচিতে থাকলেও বাস্তবে তা যথাযথভাবে প্রয়োগ করা যাচ্ছে না। বিষয়টাও আরও ঢেলে সাজানো দরকার। এ ছাড়া অধিকাংশ বিদ্যালয়ে আলাদা ধর্মীয় শিক্ষক নেই। সাধারণ শিক্ষকেরা অন্য বিষয় পড়ানোর পাশাপাশি ধর্ম শিক্ষা পড়ান, ফলে ধর্মীয় বিষয়গুলো শুধু আনুষ্ঠানিকতার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থেকে যায়। ইসলামের বনিয়াদি বিষয়, বিশুদ্ধ কোরআন তিলাওয়াত, প্রয়োজনীয় দোয়া-কালাম, ইমান-আকিদার মৌলিক বিষয়, আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস, নবী-রাসুলের প্রতি বিশ্বাস, ফেরেশতাদের প্রতি বিশ্বাস, আখিরাত ও তাকদিরের ধারণা ইত্যাদি শিশুরা সঠিকভাবে জানতে পারে না। এতে তাদের ধর্মীয় ভিত্তি দুর্বল হয়ে পড়ে এবং তারা ইসলামি মূল্যবোধ থেকে ধীরে ধীরে বিচ্যুত হতে থাকে।
ইসলামি শিক্ষার গুরুত্ব
ইসলামে জ্ঞান অর্জনকে ফরজ করা হয়েছে। মহান আল্লাহ প্রথম ওহি নাজিল করেই বলেন, ‘পড়ো, তোমার প্রভুর নামে, যিনি সৃষ্টি করেছেন।’ (সুরা আলাক: ১)। মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) বলেছেন, ‘তোমাদের মধ্যে উত্তম সেই ব্যক্তি, যে কোরআন শেখে এবং তা শিক্ষা দেয়।’ (সহিহ বুখারি)। তাই শিশুদের কোরআনের হরফ, তিলাওয়াত, অর্থ ও আদর্শ শেখানো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও প্রয়োজনীয় বিষয়। প্রাথমিক স্তরে একজন ইসলামি শিক্ষক থাকলে শিশুদের মধ্যে এই ধর্মীয় অনুপ্রেরণা জাগ্রত হবে।
জাতীয় ঐক্য ও শান্তি প্রতিষ্ঠায় ধর্মীয় শিক্ষা
ধর্মীয় শিক্ষা সমাজে সহনশীলতা, ভ্রাতৃত্ববোধ ও মানবিকতা জাগ্রত করে। যদি শিশু বয়সেই ইসলাম ধর্মের আদর্শে লালিত হয়, তাহলে তারা বড় হয়ে চরমপন্থা, ঘৃণা বা সহিংসতায় জড়াবে না। ইসলাম শেখায়, ‘ধর্মে কোনো জবরদস্তি নেই’। এই মৌলিক নীতিটি বুঝে নিলে শিশুরা অন্য ধর্মের মানুষকেও সম্মান করতে শেখে। ফলে দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও সামাজিক শান্তি প্রতিষ্ঠিত হয়। ইসলামি শিক্ষা হলো সেই আলোর প্রদীপ, যা জাতিকে নৈতিক অন্ধকার থেকে মুক্ত করে উন্নতির পথে এগিয়ে নিয়ে যায়।
জাতীয় শিক্ষানীতিতে ধর্মীয় শিক্ষার অবস্থান
বাংলাদেশের ২০১০ সালের জাতীয় শিক্ষানীতিতেও বলা আছে, ‘শিশুদের নৈতিক ও মানবিক বিকাশের জন্য ধর্মীয় শিক্ষাকে গুরুত্ব দিতে হবে।’ কিন্তু নীতিগত সিদ্ধান্ত থাকলেও বাস্তবায়নে ঘাটতি রয়ে গেছে। সরকারি ও বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বিশাল অংশে আজও ইসলাম ধর্মীয় শিক্ষক নেই। ফলস্বরূপ, ধর্ম শিক্ষা পাঠ্যবই থাকলেও তা শিশুর অন্তরে যথাযথ প্রভাব ফেলতে পারছে না। যদি এই নীতিকে বাস্তবায়ন করতে হয়, তবে প্রতিটি বিদ্যালয়ে একজন যোগ্য ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া অপরিহার্য।
বিদেশে ধর্মীয় শিক্ষার দৃষ্টান্ত
অনেক উন্নত মুসলিম দেশ যেমন সৌদি আরব, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাত—তাদের জাতীয় শিক্ষাব্যবস্থায় ধর্মীয় শিক্ষাকে প্রাথমিক স্তর থেকেই বাধ্যতামূলক করেছে। এমনকি অনেক অমুসলিম দেশেও মুসলিম সম্প্রদায়ের শিশুদের জন্য ‘ইসলামিক স্টাডিজ’ নামে আলাদা বিষয় চালু আছে। তাহলে প্রায় ৯২ শতাংশ মুসলমানের দেশে কেন শিশুদের ইমানি শিক্ষার জন্য একজন ইসলামি শিক্ষক থাকবেন না?
চাই প্রশিক্ষিত দক্ষ শিক্ষক
ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগের পাশাপাশি তাঁদের সঠিক প্রশিক্ষণও অত্যন্ত জরুরি। আধুনিক যুগের শিশুরা কেবল মুখস্থনির্ভর শিক্ষা নয়, ব্যাখ্যামূলক ও বাস্তবজীবনভিত্তিক শিক্ষায় আগ্রহী। তাই এই শিক্ষকদের জন্য প্রয়োজন—শিশু মনোবিজ্ঞানে প্রশিক্ষণ, আধুনিক শিক্ষণপদ্ধতির জ্ঞান, বিশুদ্ধ কোরআন তিলাওয়াত, কোরআন-হাদিস ও ফিকহে মজবুত দক্ষতা, নৈতিক আদর্শে দৃঢ় অবস্থান এবং নিজে ইসলাম পরিপালনকারী।
এ ক্ষেত্রে কওমি মাদ্রাসার দাওরায়ে হাদিস পাস ও প্রশিক্ষিত আলেমকে উপযুক্ত। পাশাপাশি নুরানি ট্রেনিংপ্রাপ্ত হলে কোমলমতি শিশুদের জন্য সোনায় সোহাগা হবে। তাহলে একদিকে যেমন প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে যোগ্য ও দক্ষ শিক্ষকের অভাব পূরণ হবে, অন্যদিকে হাজার হাজার কওমি আলেমের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হবে এবং একটি ভিন্ন অঙ্গনে মনপ্রাণ উজাড় করে আগামী প্রজন্মকে গড়ে তোলার সুযোগ পাবেন। এমন একজন ধর্মীয় শিক্ষকই বিষয়গুলো শিশুদের কাছে আকর্ষণীয়ভাবে উপস্থাপন করতে পারবেন।
শেষ কথা হলো, প্রায় ৯২ শতাংশ মুসলমানের দেশে ইসলাম ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগ জাতীয় দায়িত্ব ও সময়ের দাবি। শিশুরা যদি ধর্মীয়ভাবে শিক্ষিত হয়; তারা সৎ, ন্যায়ের পক্ষে দৃঢ়, অন্যায়ের বিরুদ্ধে সাহসী এবং সমাজে শান্তি ও মানবতার দূত হয়ে উঠবে। তাই প্রতিটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অবিলম্বে একজন করে ইসলাম ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হোক। এটি শুধু শিক্ষাব্যবস্থাকে নয়, পুরো জাতিকে নৈতিকভাবে শক্তিশালী করবে।
লেখক: সভাপতি, বাংলাদেশ ইসলামি লেখক ফোরাম; পরিচালক, সম্পাদনা কেন্দ্র।

বাংলাদেশ একটি মুসলিমপ্রধান দেশ। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, দেশের ৯১ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ নাগরিক মুসলমান। ইসলাম শুধু একটি ধর্ম নয়, এটি পূর্ণাঙ্গ জীবনব্যবস্থা। এবং নৈতিকতা, শিষ্টাচার, মানবিকতা ও সমাজ গঠনের পূর্ণাঙ্গ দিকনির্দেশনা। এই ইসলামের বনিয়াদি শিক্ষা যদি শিশু বয়সেই আগামী প্রজন্মের হৃদয়ে সঞ্চারিত না হয়, তবে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম নৈতিক দিক থেকে দুর্বল হয়ে পড়বে। এ জন্য দেশের প্রায় ৬৫ হাজার প্রাইমারি স্কুল তথা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ইসলাম ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগ এখন সময়ের অপরিহার্য দাবি।
নৈতিকতার প্রথম পাঠ
প্রাথমিক বিদ্যালয় হলো শিক্ষার্থীদের জীবনের প্রথম আনুষ্ঠানিক শিক্ষাঙ্গন। এখানেই গড়ে ওঠে তাদের চিন্তা, চরিত্র ও মূল্যবোধের ভিত। এই স্তরে শিশুরা যে শিক্ষা পায়, তা-ই তার সারা জীবনের নৈতিক ও মানসিক গঠন নির্ধারণ করে। যদি এই পর্যায়ে ইসলামের মৌলিক বিষয়—ইমান, আকিদা, কোরআন তিলাওয়াত, নামাজ, রোজা, আদব-আখলাক ইত্যাদি শেখানো না হয়, তাহলে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম ধর্মীয় দিক থেকে পিছিয়ে পড়বে। আজকের শিশু আগামী দিনের নাগরিক। যদি ছোটবেলা থেকেই সঠিকভাবে ইসলাম সম্পর্কে জানতে পারে, তবে তারা বড় হয়ে সত্যবাদী, ন্যায়পরায়ণ, দায়িত্বশীল ও সৎ মানুষ হিসেবে সমাজে অবদান রাখবে।
বর্তমান প্রেক্ষাপটে ধর্মীয় শিক্ষার ঘাটতি
বাংলাদেশের প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে ইসলাম শিক্ষা পাঠ্যসূচিতে থাকলেও বাস্তবে তা যথাযথভাবে প্রয়োগ করা যাচ্ছে না। বিষয়টাও আরও ঢেলে সাজানো দরকার। এ ছাড়া অধিকাংশ বিদ্যালয়ে আলাদা ধর্মীয় শিক্ষক নেই। সাধারণ শিক্ষকেরা অন্য বিষয় পড়ানোর পাশাপাশি ধর্ম শিক্ষা পড়ান, ফলে ধর্মীয় বিষয়গুলো শুধু আনুষ্ঠানিকতার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থেকে যায়। ইসলামের বনিয়াদি বিষয়, বিশুদ্ধ কোরআন তিলাওয়াত, প্রয়োজনীয় দোয়া-কালাম, ইমান-আকিদার মৌলিক বিষয়, আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস, নবী-রাসুলের প্রতি বিশ্বাস, ফেরেশতাদের প্রতি বিশ্বাস, আখিরাত ও তাকদিরের ধারণা ইত্যাদি শিশুরা সঠিকভাবে জানতে পারে না। এতে তাদের ধর্মীয় ভিত্তি দুর্বল হয়ে পড়ে এবং তারা ইসলামি মূল্যবোধ থেকে ধীরে ধীরে বিচ্যুত হতে থাকে।
ইসলামি শিক্ষার গুরুত্ব
ইসলামে জ্ঞান অর্জনকে ফরজ করা হয়েছে। মহান আল্লাহ প্রথম ওহি নাজিল করেই বলেন, ‘পড়ো, তোমার প্রভুর নামে, যিনি সৃষ্টি করেছেন।’ (সুরা আলাক: ১)। মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) বলেছেন, ‘তোমাদের মধ্যে উত্তম সেই ব্যক্তি, যে কোরআন শেখে এবং তা শিক্ষা দেয়।’ (সহিহ বুখারি)। তাই শিশুদের কোরআনের হরফ, তিলাওয়াত, অর্থ ও আদর্শ শেখানো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও প্রয়োজনীয় বিষয়। প্রাথমিক স্তরে একজন ইসলামি শিক্ষক থাকলে শিশুদের মধ্যে এই ধর্মীয় অনুপ্রেরণা জাগ্রত হবে।
জাতীয় ঐক্য ও শান্তি প্রতিষ্ঠায় ধর্মীয় শিক্ষা
ধর্মীয় শিক্ষা সমাজে সহনশীলতা, ভ্রাতৃত্ববোধ ও মানবিকতা জাগ্রত করে। যদি শিশু বয়সেই ইসলাম ধর্মের আদর্শে লালিত হয়, তাহলে তারা বড় হয়ে চরমপন্থা, ঘৃণা বা সহিংসতায় জড়াবে না। ইসলাম শেখায়, ‘ধর্মে কোনো জবরদস্তি নেই’। এই মৌলিক নীতিটি বুঝে নিলে শিশুরা অন্য ধর্মের মানুষকেও সম্মান করতে শেখে। ফলে দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও সামাজিক শান্তি প্রতিষ্ঠিত হয়। ইসলামি শিক্ষা হলো সেই আলোর প্রদীপ, যা জাতিকে নৈতিক অন্ধকার থেকে মুক্ত করে উন্নতির পথে এগিয়ে নিয়ে যায়।
জাতীয় শিক্ষানীতিতে ধর্মীয় শিক্ষার অবস্থান
বাংলাদেশের ২০১০ সালের জাতীয় শিক্ষানীতিতেও বলা আছে, ‘শিশুদের নৈতিক ও মানবিক বিকাশের জন্য ধর্মীয় শিক্ষাকে গুরুত্ব দিতে হবে।’ কিন্তু নীতিগত সিদ্ধান্ত থাকলেও বাস্তবায়নে ঘাটতি রয়ে গেছে। সরকারি ও বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বিশাল অংশে আজও ইসলাম ধর্মীয় শিক্ষক নেই। ফলস্বরূপ, ধর্ম শিক্ষা পাঠ্যবই থাকলেও তা শিশুর অন্তরে যথাযথ প্রভাব ফেলতে পারছে না। যদি এই নীতিকে বাস্তবায়ন করতে হয়, তবে প্রতিটি বিদ্যালয়ে একজন যোগ্য ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া অপরিহার্য।
বিদেশে ধর্মীয় শিক্ষার দৃষ্টান্ত
অনেক উন্নত মুসলিম দেশ যেমন সৌদি আরব, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাত—তাদের জাতীয় শিক্ষাব্যবস্থায় ধর্মীয় শিক্ষাকে প্রাথমিক স্তর থেকেই বাধ্যতামূলক করেছে। এমনকি অনেক অমুসলিম দেশেও মুসলিম সম্প্রদায়ের শিশুদের জন্য ‘ইসলামিক স্টাডিজ’ নামে আলাদা বিষয় চালু আছে। তাহলে প্রায় ৯২ শতাংশ মুসলমানের দেশে কেন শিশুদের ইমানি শিক্ষার জন্য একজন ইসলামি শিক্ষক থাকবেন না?
চাই প্রশিক্ষিত দক্ষ শিক্ষক
ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগের পাশাপাশি তাঁদের সঠিক প্রশিক্ষণও অত্যন্ত জরুরি। আধুনিক যুগের শিশুরা কেবল মুখস্থনির্ভর শিক্ষা নয়, ব্যাখ্যামূলক ও বাস্তবজীবনভিত্তিক শিক্ষায় আগ্রহী। তাই এই শিক্ষকদের জন্য প্রয়োজন—শিশু মনোবিজ্ঞানে প্রশিক্ষণ, আধুনিক শিক্ষণপদ্ধতির জ্ঞান, বিশুদ্ধ কোরআন তিলাওয়াত, কোরআন-হাদিস ও ফিকহে মজবুত দক্ষতা, নৈতিক আদর্শে দৃঢ় অবস্থান এবং নিজে ইসলাম পরিপালনকারী।
এ ক্ষেত্রে কওমি মাদ্রাসার দাওরায়ে হাদিস পাস ও প্রশিক্ষিত আলেমকে উপযুক্ত। পাশাপাশি নুরানি ট্রেনিংপ্রাপ্ত হলে কোমলমতি শিশুদের জন্য সোনায় সোহাগা হবে। তাহলে একদিকে যেমন প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে যোগ্য ও দক্ষ শিক্ষকের অভাব পূরণ হবে, অন্যদিকে হাজার হাজার কওমি আলেমের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হবে এবং একটি ভিন্ন অঙ্গনে মনপ্রাণ উজাড় করে আগামী প্রজন্মকে গড়ে তোলার সুযোগ পাবেন। এমন একজন ধর্মীয় শিক্ষকই বিষয়গুলো শিশুদের কাছে আকর্ষণীয়ভাবে উপস্থাপন করতে পারবেন।
শেষ কথা হলো, প্রায় ৯২ শতাংশ মুসলমানের দেশে ইসলাম ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগ জাতীয় দায়িত্ব ও সময়ের দাবি। শিশুরা যদি ধর্মীয়ভাবে শিক্ষিত হয়; তারা সৎ, ন্যায়ের পক্ষে দৃঢ়, অন্যায়ের বিরুদ্ধে সাহসী এবং সমাজে শান্তি ও মানবতার দূত হয়ে উঠবে। তাই প্রতিটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অবিলম্বে একজন করে ইসলাম ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হোক। এটি শুধু শিক্ষাব্যবস্থাকে নয়, পুরো জাতিকে নৈতিকভাবে শক্তিশালী করবে।
লেখক: সভাপতি, বাংলাদেশ ইসলামি লেখক ফোরাম; পরিচালক, সম্পাদনা কেন্দ্র।

দীর্ঘ ১৭ বছরের নির্বাসনের অবসান ঘটিয়ে অবশেষে দেশের মাটিতে পা রাখলেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তাঁর সঙ্গে দেশে ফিরেছেন স্ত্রী জুবাইদা রহমান ও কন্যা জাইমা রহমান। রাজনীতির বাইরে ও ভেতরে—এই প্রত্যাবর্তনকে ঘিরে ছিল আবেগ, কৌতূহল ও আলোচনার ঢেউ।
৬ ঘণ্টা আগে
সফর মানুষের জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। নানা প্রয়োজনে মানুষ সফর করে। এই ধারা পৃথিবীতে মানুষের বসবাস শুরু হওয়ার পর থেকেই চলে আসছে। সফর এক ভিন্নরকম অভিজ্ঞতা। এর মাধ্যমে মানুষের জ্ঞান সমৃদ্ধ হয়, বিভিন্ন বিষয়ে জানতে পারে। ইসলামে সফর, অর্থাৎ ভ্রমণের প্রতি উৎসাহিত করা হয়েছে।
৭ ঘণ্টা আগে
ইসলাম আগমনের আগেই নবী (সা.) যেসব গুণের জন্য সবার প্রিয় ছিলেন, তার মধ্যে একটি মেহমানদারি বা অতিথিপরায়ণতা। মেহমানদারি ইসলামের অন্যতম সৌন্দর্যমণ্ডিত মানবিক দিক। নবী (সা.) নিজেই মেহমানদারি করতেন এবং সাহাবায়ে কেরামগণকেও উৎসাহিত করতেন।
১০ ঘণ্টা আগে
পরকালীন সফলতার জন্য পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের পাশাপাশি কোরআন-সুন্নাহ অনুযায়ী আমল করা জরুরি। তবে ইবাদতের ক্ষেত্রে ইসলাম আমাদের বাড়াবাড়ি করতে নিষেধ করেছে। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘নিশ্চয়ই দ্বীন সহজ-সরল।
১৪ ঘণ্টা আগেইসলাম ডেস্ক

দীর্ঘ ১৭ বছরের নির্বাসনের অবসান ঘটিয়ে অবশেষে দেশের মাটিতে পা রাখলেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তাঁর সঙ্গে দেশে ফিরেছেন স্ত্রী জুবাইদা রহমান ও কন্যা জাইমা রহমান। রাজনীতির বাইরে ও ভেতরে—এই প্রত্যাবর্তনকে ঘিরে ছিল আবেগ, কৌতূহল ও আলোচনার ঢেউ।
আজ বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) বেলা ১১টা ৫৪ মিনিটে সপরিবারে তিনি ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্রবেশ করেন। ভিআইপি লাউঞ্জে তারেক রহমানকে ফুল দিয়ে স্বাগত জানান বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ স্থায়ী কমিটির সদস্যরা।
এরপর সব আনুষ্ঠানিকতা শেষে লাল-সবুজ রঙের একটি বুলেটপ্রুফ গাড়িতে চড়ে তিনি রওনা হন পূর্বাচলের ৩০০ ফুটে গণসংবর্ধনা মঞ্চের দিকে।
এদিনের প্রতিটি মুহূর্ত ধরা পড়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ফ্রেমে। দেশে ফেরা উপলক্ষে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে বেলা ২টা পর্যন্ত ধারাবাহিকভাবে সাতটি পোস্ট দেন তারেক রহমান। প্রতিটি পোস্টে ফুটে ওঠে দীর্ঘ প্রবাসজীবন শেষে দেশে ফেরার অনুভূতি, আবেগ ও কৃতজ্ঞতার ভাষা।
পূর্বাচলের ৩০০ ফুটে গণসংবর্ধনা মঞ্চে পৌঁছার আগ মুহূর্তে আজ বেলা ৩টা ১৭ মিনিটে তাঁর ফেসবুকে পোস্ট করা একটি ভিডিওতে দেখা যায় তিনি জনতাকে উদ্দেশ্য করে হাত নেড়ে শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন। এর ক্যাপশনে তিনি উল্লেখ করেন পবিত্র কোরআনের সুরা আলে ইমরানের ২৬ নম্বর আয়াত—‘হে সার্বভৌম শক্তির মালিক আল্লাহ্! আপনি যাকে ইচ্ছা ক্ষমতা প্রদান করেন এবং যার থেকে ইচ্ছা ক্ষমতা কেড়ে নেন; যাকে ইচ্ছা আপনি সম্মানিত করেন আর যাকে ইচ্ছা আপনি হীন করেন। কল্যাণ আপনারই হাতে। নিশ্চয়ই আপনি সবকিছুর ওপর ক্ষমতাবান।’

দীর্ঘ ১৭ বছরের নির্বাসনের অবসান ঘটিয়ে অবশেষে দেশের মাটিতে পা রাখলেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তাঁর সঙ্গে দেশে ফিরেছেন স্ত্রী জুবাইদা রহমান ও কন্যা জাইমা রহমান। রাজনীতির বাইরে ও ভেতরে—এই প্রত্যাবর্তনকে ঘিরে ছিল আবেগ, কৌতূহল ও আলোচনার ঢেউ।
আজ বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) বেলা ১১টা ৫৪ মিনিটে সপরিবারে তিনি ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্রবেশ করেন। ভিআইপি লাউঞ্জে তারেক রহমানকে ফুল দিয়ে স্বাগত জানান বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ স্থায়ী কমিটির সদস্যরা।
এরপর সব আনুষ্ঠানিকতা শেষে লাল-সবুজ রঙের একটি বুলেটপ্রুফ গাড়িতে চড়ে তিনি রওনা হন পূর্বাচলের ৩০০ ফুটে গণসংবর্ধনা মঞ্চের দিকে।
এদিনের প্রতিটি মুহূর্ত ধরা পড়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ফ্রেমে। দেশে ফেরা উপলক্ষে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে বেলা ২টা পর্যন্ত ধারাবাহিকভাবে সাতটি পোস্ট দেন তারেক রহমান। প্রতিটি পোস্টে ফুটে ওঠে দীর্ঘ প্রবাসজীবন শেষে দেশে ফেরার অনুভূতি, আবেগ ও কৃতজ্ঞতার ভাষা।
পূর্বাচলের ৩০০ ফুটে গণসংবর্ধনা মঞ্চে পৌঁছার আগ মুহূর্তে আজ বেলা ৩টা ১৭ মিনিটে তাঁর ফেসবুকে পোস্ট করা একটি ভিডিওতে দেখা যায় তিনি জনতাকে উদ্দেশ্য করে হাত নেড়ে শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন। এর ক্যাপশনে তিনি উল্লেখ করেন পবিত্র কোরআনের সুরা আলে ইমরানের ২৬ নম্বর আয়াত—‘হে সার্বভৌম শক্তির মালিক আল্লাহ্! আপনি যাকে ইচ্ছা ক্ষমতা প্রদান করেন এবং যার থেকে ইচ্ছা ক্ষমতা কেড়ে নেন; যাকে ইচ্ছা আপনি সম্মানিত করেন আর যাকে ইচ্ছা আপনি হীন করেন। কল্যাণ আপনারই হাতে। নিশ্চয়ই আপনি সবকিছুর ওপর ক্ষমতাবান।’

বাংলাদেশ একটি মুসলিমপ্রধান দেশ। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, দেশের ৯১ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ নাগরিক মুসলমান। ইসলাম শুধু একটি ধর্ম নয়, এটি পূর্ণাঙ্গ জীবনব্যবস্থা। এবং নৈতিকতা, শিষ্টাচার, মানবিকতা ও সমাজ গঠনের পূর্ণাঙ্গ দিকনির্দেশনা। এই ইসলামের বনিয়াদি শিক্ষা যদি শিশু বয়সেই আগামী প্রজন্মের হৃদয়ে সঞ্চারিত...
২১ নভেম্বর ২০২৫
সফর মানুষের জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। নানা প্রয়োজনে মানুষ সফর করে। এই ধারা পৃথিবীতে মানুষের বসবাস শুরু হওয়ার পর থেকেই চলে আসছে। সফর এক ভিন্নরকম অভিজ্ঞতা। এর মাধ্যমে মানুষের জ্ঞান সমৃদ্ধ হয়, বিভিন্ন বিষয়ে জানতে পারে। ইসলামে সফর, অর্থাৎ ভ্রমণের প্রতি উৎসাহিত করা হয়েছে।
৭ ঘণ্টা আগে
ইসলাম আগমনের আগেই নবী (সা.) যেসব গুণের জন্য সবার প্রিয় ছিলেন, তার মধ্যে একটি মেহমানদারি বা অতিথিপরায়ণতা। মেহমানদারি ইসলামের অন্যতম সৌন্দর্যমণ্ডিত মানবিক দিক। নবী (সা.) নিজেই মেহমানদারি করতেন এবং সাহাবায়ে কেরামগণকেও উৎসাহিত করতেন।
১০ ঘণ্টা আগে
পরকালীন সফলতার জন্য পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের পাশাপাশি কোরআন-সুন্নাহ অনুযায়ী আমল করা জরুরি। তবে ইবাদতের ক্ষেত্রে ইসলাম আমাদের বাড়াবাড়ি করতে নিষেধ করেছে। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘নিশ্চয়ই দ্বীন সহজ-সরল।
১৪ ঘণ্টা আগেকাউসার লাবীব

সফর মানুষের জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। নানা প্রয়োজনে মানুষ সফর করে। এই ধারা পৃথিবীতে মানুষের বসবাস শুরু হওয়ার পর থেকেই চলে আসছে। সফর এক ভিন্ন রকম অভিজ্ঞতা। এর মাধ্যমে মানুষের জ্ঞান সমৃদ্ধ হয়, বিভিন্ন বিষয়ে জানতে পারে। ইসলামে সফর, অর্থাৎ ভ্রমণের প্রতি উৎসাহিত করা হয়েছে। পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা পৃথিবীতে পরিভ্রমণ করো।’ (সুরা রুম: ৪২)
অন্য আয়াতে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তারা কি পৃথিবীতে ভ্রমণ করে না—তাহলে তারা হৃদয় দিয়ে বুঝতে পারত, আর তাদের কান শুনতে পারত। প্রকৃতপক্ষে চোখ অন্ধ নয়, বরং বুকের ভেতর যে হৃদয় আছে তা অন্ধ।’ (সুরা হজ: ৪৬)
আমাদের নবী করিম (সা.) একেবারে ছেলেবেলা থেকেই ভ্রমণ করেছেন দূরদেশে। এরপর ব্যবসায়িক কাজে তিনি ঘুরে বেড়িয়েছেন কাফেলা নিয়ে দেশ থেকে দেশান্তরে। আল্লাহর পক্ষ থেকে নবুওয়াত প্রাপ্তির পরও এই ধারা অব্যাহত ছিল। ইসলামের জন্য হিজরত করেছেন মক্কা থেকে মদিনায়। আল্লাহর পথে লড়াইয়ের জন্য সফর করেছেন। নানা কাজে ভ্রমণ করেছেন বিভিন্ন জায়গায়।
নবীজি (সা.)-এর সুন্নত ছিল, তিনি সফর থেকে ফিরে দুই রাকাত নামাজ পড়তেন। সফর নিরাপদে শেষ করতে পারায় আল্লাহর কৃতজ্ঞতা আদায় করতেন। দোয়া পড়তেন। এরপর পরিবারের কাছে যেতেন।
সাহাবি আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) বলেন, আল্লাহর রাসুল (সা.) সফর থেকে যখন ফিরতেন, তখন একটি দোয়া পড়তেন। দোয়াটি হলো, ‘আয়িবুনা ইনশা আল্লাহু তায়িবুনা আবিদুনা লি-রাব্বিনা হামিদুন।’
অর্থ: আল্লাহর ইচ্ছায় আমরা প্রত্যাবর্তনকারী, তওবাকারী, ইবাদতকারী নিজ রবের প্রশংসাকারী। (সহিহ্ বুখারি: ১৭৯৭, সহিহ্ মুসলিম: ১৩৪৪)
অন্য হাদিসে এসেছে, রাসুলুল্লাহ (সা.) কোথাও সফরের উদ্দেশ্যে তাঁর উটে আরোহণের সময় তিনবার ‘আল্লাহু আকবার’ বলতেন, এরপর এই দোয়াটি পাঠ করতেন—‘সুবহানাল্লাজি সাখখারা লানা ওয়ামা কুন্না লাহু মুকরিনিন, ওয়া ইন্না ইলা রাব্বিনা লামুনকালিবুন। আল্লাহুম্মা ইন্না নাসআলুকা ফি সাফারিনা হাজাল বিররা ওয়াত তাকওয়া। ওয়া মিনাল আমালি মা তারদা। আল্লাহুম্মা হাওয়িন আলাইনা সাফারানা হাজা ওয়াত্উই আন্না বু’দাহু। আল্লাহুম্মা আনতাস সাহিবু ফিস সাফারি ওয়াল খালিফাতু ফিল আহলি। আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিন ওয়াছাইস সাফারি ওয়া কাআবাতিল মানজারি ওয়া সুইল মুনকালাবি ফিল মালি ওয়াল আহলি।’
অর্থ: ‘পবিত্র মহান সে সত্তা, যিনি একে আমাদের বশীভূত করে দিয়েছেন, যদিও আমরা একে বশীভূত করতে সক্ষম ছিলাম না। অবশ্যই আমাদের প্রতিপালকের নিকট ফিরে যেতে হবে। হে আল্লাহ, এই সফরে আমরা তোমার নিকট কল্যাণ, তাকওয়া এবং তোমার সন্তুষ্টি অর্জন হয় এমন কাজের সামর্থ্য চাই। হে আল্লাহ, আমাদের এই সফর সহজ করে দাও এবং এর দূরত্ব কমিয়ে দাও। হে আল্লাহ, তুমিই (আমাদের) সফরসঙ্গী এবং পরিবারের তত্ত্বাবধানকারী। হে আল্লাহ, তোমার নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করি সফরের কষ্ট, দুঃখজনক দৃশ্য এবং ফিরে এসে সম্পদ ও পরিবারের ক্ষতিকর পরিবর্তন থেকে।’
এরপর তিনি যখন সফর থেকে ফিরে আসতেন, তখনো উপরিউক্ত দোয়া পড়তেন এবং এর সঙ্গে যুক্ত করতেন, ‘আইবুনা তাইবুনা আবিদুনা লিরাব্বিনা হামিদুন।’ অর্থ: ‘আমরা প্রত্যাবর্তনকারী, তওবাকারী, আমাদের প্রতিপালকের ইবাদতকারী ও প্রশংসাকারী।’ (সহিহ্ মুসলিম: ১৩৪২)

সফর মানুষের জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। নানা প্রয়োজনে মানুষ সফর করে। এই ধারা পৃথিবীতে মানুষের বসবাস শুরু হওয়ার পর থেকেই চলে আসছে। সফর এক ভিন্ন রকম অভিজ্ঞতা। এর মাধ্যমে মানুষের জ্ঞান সমৃদ্ধ হয়, বিভিন্ন বিষয়ে জানতে পারে। ইসলামে সফর, অর্থাৎ ভ্রমণের প্রতি উৎসাহিত করা হয়েছে। পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা পৃথিবীতে পরিভ্রমণ করো।’ (সুরা রুম: ৪২)
অন্য আয়াতে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তারা কি পৃথিবীতে ভ্রমণ করে না—তাহলে তারা হৃদয় দিয়ে বুঝতে পারত, আর তাদের কান শুনতে পারত। প্রকৃতপক্ষে চোখ অন্ধ নয়, বরং বুকের ভেতর যে হৃদয় আছে তা অন্ধ।’ (সুরা হজ: ৪৬)
আমাদের নবী করিম (সা.) একেবারে ছেলেবেলা থেকেই ভ্রমণ করেছেন দূরদেশে। এরপর ব্যবসায়িক কাজে তিনি ঘুরে বেড়িয়েছেন কাফেলা নিয়ে দেশ থেকে দেশান্তরে। আল্লাহর পক্ষ থেকে নবুওয়াত প্রাপ্তির পরও এই ধারা অব্যাহত ছিল। ইসলামের জন্য হিজরত করেছেন মক্কা থেকে মদিনায়। আল্লাহর পথে লড়াইয়ের জন্য সফর করেছেন। নানা কাজে ভ্রমণ করেছেন বিভিন্ন জায়গায়।
নবীজি (সা.)-এর সুন্নত ছিল, তিনি সফর থেকে ফিরে দুই রাকাত নামাজ পড়তেন। সফর নিরাপদে শেষ করতে পারায় আল্লাহর কৃতজ্ঞতা আদায় করতেন। দোয়া পড়তেন। এরপর পরিবারের কাছে যেতেন।
সাহাবি আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) বলেন, আল্লাহর রাসুল (সা.) সফর থেকে যখন ফিরতেন, তখন একটি দোয়া পড়তেন। দোয়াটি হলো, ‘আয়িবুনা ইনশা আল্লাহু তায়িবুনা আবিদুনা লি-রাব্বিনা হামিদুন।’
অর্থ: আল্লাহর ইচ্ছায় আমরা প্রত্যাবর্তনকারী, তওবাকারী, ইবাদতকারী নিজ রবের প্রশংসাকারী। (সহিহ্ বুখারি: ১৭৯৭, সহিহ্ মুসলিম: ১৩৪৪)
অন্য হাদিসে এসেছে, রাসুলুল্লাহ (সা.) কোথাও সফরের উদ্দেশ্যে তাঁর উটে আরোহণের সময় তিনবার ‘আল্লাহু আকবার’ বলতেন, এরপর এই দোয়াটি পাঠ করতেন—‘সুবহানাল্লাজি সাখখারা লানা ওয়ামা কুন্না লাহু মুকরিনিন, ওয়া ইন্না ইলা রাব্বিনা লামুনকালিবুন। আল্লাহুম্মা ইন্না নাসআলুকা ফি সাফারিনা হাজাল বিররা ওয়াত তাকওয়া। ওয়া মিনাল আমালি মা তারদা। আল্লাহুম্মা হাওয়িন আলাইনা সাফারানা হাজা ওয়াত্উই আন্না বু’দাহু। আল্লাহুম্মা আনতাস সাহিবু ফিস সাফারি ওয়াল খালিফাতু ফিল আহলি। আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিন ওয়াছাইস সাফারি ওয়া কাআবাতিল মানজারি ওয়া সুইল মুনকালাবি ফিল মালি ওয়াল আহলি।’
অর্থ: ‘পবিত্র মহান সে সত্তা, যিনি একে আমাদের বশীভূত করে দিয়েছেন, যদিও আমরা একে বশীভূত করতে সক্ষম ছিলাম না। অবশ্যই আমাদের প্রতিপালকের নিকট ফিরে যেতে হবে। হে আল্লাহ, এই সফরে আমরা তোমার নিকট কল্যাণ, তাকওয়া এবং তোমার সন্তুষ্টি অর্জন হয় এমন কাজের সামর্থ্য চাই। হে আল্লাহ, আমাদের এই সফর সহজ করে দাও এবং এর দূরত্ব কমিয়ে দাও। হে আল্লাহ, তুমিই (আমাদের) সফরসঙ্গী এবং পরিবারের তত্ত্বাবধানকারী। হে আল্লাহ, তোমার নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করি সফরের কষ্ট, দুঃখজনক দৃশ্য এবং ফিরে এসে সম্পদ ও পরিবারের ক্ষতিকর পরিবর্তন থেকে।’
এরপর তিনি যখন সফর থেকে ফিরে আসতেন, তখনো উপরিউক্ত দোয়া পড়তেন এবং এর সঙ্গে যুক্ত করতেন, ‘আইবুনা তাইবুনা আবিদুনা লিরাব্বিনা হামিদুন।’ অর্থ: ‘আমরা প্রত্যাবর্তনকারী, তওবাকারী, আমাদের প্রতিপালকের ইবাদতকারী ও প্রশংসাকারী।’ (সহিহ্ মুসলিম: ১৩৪২)

বাংলাদেশ একটি মুসলিমপ্রধান দেশ। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, দেশের ৯১ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ নাগরিক মুসলমান। ইসলাম শুধু একটি ধর্ম নয়, এটি পূর্ণাঙ্গ জীবনব্যবস্থা। এবং নৈতিকতা, শিষ্টাচার, মানবিকতা ও সমাজ গঠনের পূর্ণাঙ্গ দিকনির্দেশনা। এই ইসলামের বনিয়াদি শিক্ষা যদি শিশু বয়সেই আগামী প্রজন্মের হৃদয়ে সঞ্চারিত...
২১ নভেম্বর ২০২৫
দীর্ঘ ১৭ বছরের নির্বাসনের অবসান ঘটিয়ে অবশেষে দেশের মাটিতে পা রাখলেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তাঁর সঙ্গে দেশে ফিরেছেন স্ত্রী জুবাইদা রহমান ও কন্যা জাইমা রহমান। রাজনীতির বাইরে ও ভেতরে—এই প্রত্যাবর্তনকে ঘিরে ছিল আবেগ, কৌতূহল ও আলোচনার ঢেউ।
৬ ঘণ্টা আগে
ইসলাম আগমনের আগেই নবী (সা.) যেসব গুণের জন্য সবার প্রিয় ছিলেন, তার মধ্যে একটি মেহমানদারি বা অতিথিপরায়ণতা। মেহমানদারি ইসলামের অন্যতম সৌন্দর্যমণ্ডিত মানবিক দিক। নবী (সা.) নিজেই মেহমানদারি করতেন এবং সাহাবায়ে কেরামগণকেও উৎসাহিত করতেন।
১০ ঘণ্টা আগে
পরকালীন সফলতার জন্য পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের পাশাপাশি কোরআন-সুন্নাহ অনুযায়ী আমল করা জরুরি। তবে ইবাদতের ক্ষেত্রে ইসলাম আমাদের বাড়াবাড়ি করতে নিষেধ করেছে। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘নিশ্চয়ই দ্বীন সহজ-সরল।
১৪ ঘণ্টা আগেহুসাইন আহমদ

ইসলাম আগমনের আগেই নবী (সা.) যেসব গুণের জন্য সবার প্রিয় ছিলেন, তার মধ্যে একটি মেহমানদারি বা অতিথিপরায়ণতা। মেহমানদারি ইসলামের অন্যতম সৌন্দর্যমণ্ডিত মানবিক দিক। নবী (সা.) নিজেই মেহমানদারি করতেন এবং সাহাবায়ে কেরামগণকেও উৎসাহিত করতেন।
হেরা গুহায় নবী (সা.) প্রথমবার যখন হজরত জিবরাইল (আ.)-কে দেখে ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে হজরত খাদিজা (রা.)-এর কাছে ফিরে এলেন, তখন তিনি তাঁকে যেসব কথা বলে সান্ত্বনা দিয়েছিলেন, এর মধ্যে মেহমানদারি অন্যতম। খাদিজা (রা.) বলেছিলেন, ‘আল্লাহর কসম, কখনোই নয়। আল্লাহ তাআলা আপনাকে কখনো লাঞ্ছিত করবেন না। আপনি তো আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে সদাচরণ করেন, অসহায়-দুস্থদের দায়িত্ব বহন করেন, নিঃস্বকে সহযোগিতা করেন, মেহমানের আপ্যায়ন করেন এবং হক পথের দুর্দশাগ্রস্তকে সাহায্য করেন।’ (সহিহ্ বুখারি: ৩)
মেহমানদারির ফজিলত প্রসঙ্গে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তারা নিজের ওপর অন্যকে অগ্রাধিকার দিয়ে থাকে। যদিও নিজেরা ক্ষুধার্ত থাকে। আর যারা স্বভাবজাত লোভ-লালসা ও কামনা থেকে মুক্তি লাভ করে, তারাই সফলকাম।’ (সুরা হাশর: ৯)
মেহমানদারির ফজিলত প্রসঙ্গে হজরত ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী (সা.) বলেছেন, ‘যে ঘরে মেহমানদারি করা হয়, উটের কুঁজের মাংস কাটার উদ্দেশ্যে ছুরি যত দ্রুত অগ্রসর হয়, সে ঘরে বরকত তার চেয়েও দ্রুত প্রবেশ করে।’ (সুনানে ইবনে মাজাহ)
অন্যত্র মেহমানদারির প্রতি উৎসাহিত করে নবী (সা.) আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.)-কে উদ্দেশ করে বলেন, ‘নিশ্চয়ই তোমার ওপর তোমার মেহমানের হক রয়েছে।’ (সহিহ্ বুখারি)
প্রত্যেক মুমিন মুসলমানের উচিত, মেহমানদারির হক ও নিয়মগুলো মেনে চলা। কোরআন-সুন্নাহয় বর্ণিত ফজিলত ও মর্যাদাগুলো অর্জন করা। অযথা কাউকে কষ্ট দেওয়া থেকে বিরত থাকা। আল্লাহ তাআলা উম্মাহকে মেহমানদারির হকগুলো যথাযথ আদায় ও ফজিলতসমূহ লাভ করার তাওফিক দান করুন।

ইসলাম আগমনের আগেই নবী (সা.) যেসব গুণের জন্য সবার প্রিয় ছিলেন, তার মধ্যে একটি মেহমানদারি বা অতিথিপরায়ণতা। মেহমানদারি ইসলামের অন্যতম সৌন্দর্যমণ্ডিত মানবিক দিক। নবী (সা.) নিজেই মেহমানদারি করতেন এবং সাহাবায়ে কেরামগণকেও উৎসাহিত করতেন।
হেরা গুহায় নবী (সা.) প্রথমবার যখন হজরত জিবরাইল (আ.)-কে দেখে ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে হজরত খাদিজা (রা.)-এর কাছে ফিরে এলেন, তখন তিনি তাঁকে যেসব কথা বলে সান্ত্বনা দিয়েছিলেন, এর মধ্যে মেহমানদারি অন্যতম। খাদিজা (রা.) বলেছিলেন, ‘আল্লাহর কসম, কখনোই নয়। আল্লাহ তাআলা আপনাকে কখনো লাঞ্ছিত করবেন না। আপনি তো আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে সদাচরণ করেন, অসহায়-দুস্থদের দায়িত্ব বহন করেন, নিঃস্বকে সহযোগিতা করেন, মেহমানের আপ্যায়ন করেন এবং হক পথের দুর্দশাগ্রস্তকে সাহায্য করেন।’ (সহিহ্ বুখারি: ৩)
মেহমানদারির ফজিলত প্রসঙ্গে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তারা নিজের ওপর অন্যকে অগ্রাধিকার দিয়ে থাকে। যদিও নিজেরা ক্ষুধার্ত থাকে। আর যারা স্বভাবজাত লোভ-লালসা ও কামনা থেকে মুক্তি লাভ করে, তারাই সফলকাম।’ (সুরা হাশর: ৯)
মেহমানদারির ফজিলত প্রসঙ্গে হজরত ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী (সা.) বলেছেন, ‘যে ঘরে মেহমানদারি করা হয়, উটের কুঁজের মাংস কাটার উদ্দেশ্যে ছুরি যত দ্রুত অগ্রসর হয়, সে ঘরে বরকত তার চেয়েও দ্রুত প্রবেশ করে।’ (সুনানে ইবনে মাজাহ)
অন্যত্র মেহমানদারির প্রতি উৎসাহিত করে নবী (সা.) আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.)-কে উদ্দেশ করে বলেন, ‘নিশ্চয়ই তোমার ওপর তোমার মেহমানের হক রয়েছে।’ (সহিহ্ বুখারি)
প্রত্যেক মুমিন মুসলমানের উচিত, মেহমানদারির হক ও নিয়মগুলো মেনে চলা। কোরআন-সুন্নাহয় বর্ণিত ফজিলত ও মর্যাদাগুলো অর্জন করা। অযথা কাউকে কষ্ট দেওয়া থেকে বিরত থাকা। আল্লাহ তাআলা উম্মাহকে মেহমানদারির হকগুলো যথাযথ আদায় ও ফজিলতসমূহ লাভ করার তাওফিক দান করুন।

বাংলাদেশ একটি মুসলিমপ্রধান দেশ। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, দেশের ৯১ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ নাগরিক মুসলমান। ইসলাম শুধু একটি ধর্ম নয়, এটি পূর্ণাঙ্গ জীবনব্যবস্থা। এবং নৈতিকতা, শিষ্টাচার, মানবিকতা ও সমাজ গঠনের পূর্ণাঙ্গ দিকনির্দেশনা। এই ইসলামের বনিয়াদি শিক্ষা যদি শিশু বয়সেই আগামী প্রজন্মের হৃদয়ে সঞ্চারিত...
২১ নভেম্বর ২০২৫
দীর্ঘ ১৭ বছরের নির্বাসনের অবসান ঘটিয়ে অবশেষে দেশের মাটিতে পা রাখলেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তাঁর সঙ্গে দেশে ফিরেছেন স্ত্রী জুবাইদা রহমান ও কন্যা জাইমা রহমান। রাজনীতির বাইরে ও ভেতরে—এই প্রত্যাবর্তনকে ঘিরে ছিল আবেগ, কৌতূহল ও আলোচনার ঢেউ।
৬ ঘণ্টা আগে
সফর মানুষের জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। নানা প্রয়োজনে মানুষ সফর করে। এই ধারা পৃথিবীতে মানুষের বসবাস শুরু হওয়ার পর থেকেই চলে আসছে। সফর এক ভিন্নরকম অভিজ্ঞতা। এর মাধ্যমে মানুষের জ্ঞান সমৃদ্ধ হয়, বিভিন্ন বিষয়ে জানতে পারে। ইসলামে সফর, অর্থাৎ ভ্রমণের প্রতি উৎসাহিত করা হয়েছে।
৭ ঘণ্টা আগে
পরকালীন সফলতার জন্য পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের পাশাপাশি কোরআন-সুন্নাহ অনুযায়ী আমল করা জরুরি। তবে ইবাদতের ক্ষেত্রে ইসলাম আমাদের বাড়াবাড়ি করতে নিষেধ করেছে। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘নিশ্চয়ই দ্বীন সহজ-সরল।
১৪ ঘণ্টা আগেইসলাম ডেস্ক

পরকালীন সফলতার জন্য পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের পাশাপাশি কোরআন-সুন্নাহ অনুযায়ী আমল করা জরুরি। তবে ইবাদতের ক্ষেত্রে ইসলাম আমাদের বাড়াবাড়ি করতে নিষেধ করেছে। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘নিশ্চয়ই দ্বীন সহজ-সরল। দ্বীন নিয়ে যে কড়াকড়ি করে, দ্বীন তার ওপর বিজয়ী হয় (অর্থাৎ সে ক্লান্ত হয়ে আমল ছেড়ে দেয়)। কাজেই তোমরা মধ্যপন্থা অবলম্বন করো এবং তার নিকটবর্তী থাকো। আশান্বিত থাকো এবং সকাল-সন্ধ্যায় ও রাতের শেষাংশে (ইবাদতের মাধ্যমে) আল্লাহর সাহায্য প্রার্থনা করো।’ (সহিহ বুখারি: ৩৮)
রাসুলুল্লাহ (সা.) সকাল-সন্ধ্যায় মহান রবের কাছে কল্যাণ কামনার বিশেষ কিছু দোয়া শিখিয়েছেন। এমন একটি জিকির আছে, যা নিয়মিত করলে কিয়ামতের দিন সওয়াবের দিক থেকে কেউ তাকে ছাড়িয়ে যেতে পারবে না। আবু হুরায়রা (রা.) সূত্রে বর্ণিত হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি সকালে জেগে উঠে ১০০ বার বলবে—‘সুবহানাল্লাহিল আজিম, ওয়া বিহামদিহি’ এবং সন্ধ্যায়ও অনুরূপ বলে, তাহলে সৃষ্টিজগতের কেউই (কিয়ামতের দিন) তার মতো মর্যাদা ও সওয়াব অর্জনে সক্ষম হবে না।’ (সুনান আবু দাউদ: ৫০৯১)
দৈন্য, অলসতা ও কবরের আজাব থেকে সুরক্ষা পেতে রাসুল (সা.) একটি বিশেষ দোয়া পাঠ করতেন। হজরত আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিস অনুযায়ী দোয়াটি হলো—‘আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিনাল বুখলি, ওয়াল কাসালি, ওয়া-আরদালিল উমুরি, ওয়া-আজাবিল কাবরি, ওয়া-ফিতনাতিল মাহইয়া ওয়াল মামাতি।’ অর্থ: ‘হে আল্লাহ, আমি আপনার কাছে কৃপণতা, অলসতা, বয়সের নিকৃষ্টতম সময় (বার্ধক্যের দৈন্য), কবরের আজাব এবং জীবন ও মৃত্যুর ফিতনা থেকে আশ্রয় চাই।’ (সহিহ মুসলিম: ৬৬২৯)
প্রতিদিনের কর্মব্যস্ততার মাঝে সকাল ও সন্ধ্যায় এই ছোট ছোট আমল আমাদের আত্মিক প্রশান্তি দেওয়ার পাশাপাশি পরকালে বিশাল সাফল্যের পথ সুগম করতে পারে। আল্লাহ আমাদের নবীজি (সা.)-এর শেখানো এই দোয়া ও জিকিরগুলোর ওপর আমল করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

পরকালীন সফলতার জন্য পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের পাশাপাশি কোরআন-সুন্নাহ অনুযায়ী আমল করা জরুরি। তবে ইবাদতের ক্ষেত্রে ইসলাম আমাদের বাড়াবাড়ি করতে নিষেধ করেছে। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘নিশ্চয়ই দ্বীন সহজ-সরল। দ্বীন নিয়ে যে কড়াকড়ি করে, দ্বীন তার ওপর বিজয়ী হয় (অর্থাৎ সে ক্লান্ত হয়ে আমল ছেড়ে দেয়)। কাজেই তোমরা মধ্যপন্থা অবলম্বন করো এবং তার নিকটবর্তী থাকো। আশান্বিত থাকো এবং সকাল-সন্ধ্যায় ও রাতের শেষাংশে (ইবাদতের মাধ্যমে) আল্লাহর সাহায্য প্রার্থনা করো।’ (সহিহ বুখারি: ৩৮)
রাসুলুল্লাহ (সা.) সকাল-সন্ধ্যায় মহান রবের কাছে কল্যাণ কামনার বিশেষ কিছু দোয়া শিখিয়েছেন। এমন একটি জিকির আছে, যা নিয়মিত করলে কিয়ামতের দিন সওয়াবের দিক থেকে কেউ তাকে ছাড়িয়ে যেতে পারবে না। আবু হুরায়রা (রা.) সূত্রে বর্ণিত হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি সকালে জেগে উঠে ১০০ বার বলবে—‘সুবহানাল্লাহিল আজিম, ওয়া বিহামদিহি’ এবং সন্ধ্যায়ও অনুরূপ বলে, তাহলে সৃষ্টিজগতের কেউই (কিয়ামতের দিন) তার মতো মর্যাদা ও সওয়াব অর্জনে সক্ষম হবে না।’ (সুনান আবু দাউদ: ৫০৯১)
দৈন্য, অলসতা ও কবরের আজাব থেকে সুরক্ষা পেতে রাসুল (সা.) একটি বিশেষ দোয়া পাঠ করতেন। হজরত আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিস অনুযায়ী দোয়াটি হলো—‘আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিনাল বুখলি, ওয়াল কাসালি, ওয়া-আরদালিল উমুরি, ওয়া-আজাবিল কাবরি, ওয়া-ফিতনাতিল মাহইয়া ওয়াল মামাতি।’ অর্থ: ‘হে আল্লাহ, আমি আপনার কাছে কৃপণতা, অলসতা, বয়সের নিকৃষ্টতম সময় (বার্ধক্যের দৈন্য), কবরের আজাব এবং জীবন ও মৃত্যুর ফিতনা থেকে আশ্রয় চাই।’ (সহিহ মুসলিম: ৬৬২৯)
প্রতিদিনের কর্মব্যস্ততার মাঝে সকাল ও সন্ধ্যায় এই ছোট ছোট আমল আমাদের আত্মিক প্রশান্তি দেওয়ার পাশাপাশি পরকালে বিশাল সাফল্যের পথ সুগম করতে পারে। আল্লাহ আমাদের নবীজি (সা.)-এর শেখানো এই দোয়া ও জিকিরগুলোর ওপর আমল করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

বাংলাদেশ একটি মুসলিমপ্রধান দেশ। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, দেশের ৯১ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ নাগরিক মুসলমান। ইসলাম শুধু একটি ধর্ম নয়, এটি পূর্ণাঙ্গ জীবনব্যবস্থা। এবং নৈতিকতা, শিষ্টাচার, মানবিকতা ও সমাজ গঠনের পূর্ণাঙ্গ দিকনির্দেশনা। এই ইসলামের বনিয়াদি শিক্ষা যদি শিশু বয়সেই আগামী প্রজন্মের হৃদয়ে সঞ্চারিত...
২১ নভেম্বর ২০২৫
দীর্ঘ ১৭ বছরের নির্বাসনের অবসান ঘটিয়ে অবশেষে দেশের মাটিতে পা রাখলেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তাঁর সঙ্গে দেশে ফিরেছেন স্ত্রী জুবাইদা রহমান ও কন্যা জাইমা রহমান। রাজনীতির বাইরে ও ভেতরে—এই প্রত্যাবর্তনকে ঘিরে ছিল আবেগ, কৌতূহল ও আলোচনার ঢেউ।
৬ ঘণ্টা আগে
সফর মানুষের জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। নানা প্রয়োজনে মানুষ সফর করে। এই ধারা পৃথিবীতে মানুষের বসবাস শুরু হওয়ার পর থেকেই চলে আসছে। সফর এক ভিন্নরকম অভিজ্ঞতা। এর মাধ্যমে মানুষের জ্ঞান সমৃদ্ধ হয়, বিভিন্ন বিষয়ে জানতে পারে। ইসলামে সফর, অর্থাৎ ভ্রমণের প্রতি উৎসাহিত করা হয়েছে।
৭ ঘণ্টা আগে
ইসলাম আগমনের আগেই নবী (সা.) যেসব গুণের জন্য সবার প্রিয় ছিলেন, তার মধ্যে একটি মেহমানদারি বা অতিথিপরায়ণতা। মেহমানদারি ইসলামের অন্যতম সৌন্দর্যমণ্ডিত মানবিক দিক। নবী (সা.) নিজেই মেহমানদারি করতেন এবং সাহাবায়ে কেরামগণকেও উৎসাহিত করতেন।
১০ ঘণ্টা আগে