মুফতি আবু আবদুল্লাহ আহমদ

পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেছেন, ‘আমি মানুষকে পরীক্ষা করার জন্য মিলিত শুক্রবিন্দু থেকে সৃষ্টি করেছি। (সুরা দাহর: ২) এ পরীক্ষারই অংশ হিসেবে কিছু মানুষকে তিনি শারীরিক বিভিন্ন নেয়ামত থেকে বঞ্চিত রেখেছেন—যাদের আমরা শারীরিক প্রতিবন্ধী বলে শনাক্ত করি।
তবে শারীরিকভাবে কিছুটা অক্ষম হলেও ইসলামে এ শ্রেণির মানুষকে অবজ্ঞা বা তাচ্ছিল্য করার কোনো সুযোগ নেই। ইসলাম প্রতিবন্ধীদের সব মানবিক মর্যাদা নিশ্চিত করার কথা বলে এবং তাঁদের অক্ষমতা অনুসারে বিধিবিধানে ছাড় দেয়। এখানে কয়েকটি উল্লেখযোগ্য দিক তুলে ধরা হলো—
স্বাভাবিক জীবনযাপনের অধিকার
সমাজে প্রতিবন্ধীদের স্বাভাবিক জীবনযাপনের সুযোগ নিশ্চিত করার কথা বলে ইসলাম। তাফসিরকার জাহহাক (রহ.) বলেন, নবীজির মদিনা আগমনের আগে মদিনার লোকজন খাবারের অনুষ্ঠানে অন্ধ, খোঁড়া ও রোগীদের সঙ্গে বসে খাবার খেত না। এ ব্যাপারে কিছু মানুষের যুক্তি ছিল, এ শ্রেণির মানুষের শরীরে ময়লা-আবর্জনা থাকে, তাই তাদের সঙ্গে খাবার খাওয়া যাবে না। কেউ মনে করত, অসুস্থ ব্যক্তি সুস্থ ব্যক্তির মতো পূর্ণভাবে খাবার খেতে পারে না, খোঁড়া লোক খাওয়া-দাওয়ার সময়ের ভিড় সহ্য করতে পারে না, আর অন্ধ ব্যক্তি ভালো খাবার দেখতে পায় না, তাই তাদের সঙ্গে বসে খাবার খেলে খাবারের পরিমাণে তারতম্য হয়ে তাদের প্রতি জুলুম হতে পারে। উদ্দেশ্য যেটাই হোক, এতে প্রতিবন্ধীরা মানসিকভাবে খুব কষ্ট পেত। তাই তাদের সঙ্গে স্বাভাবিক আচরণ করার প্রতি উৎসাহ দিয়েছেন আল্লাহ তাআলা।
এ বিষয়ে পবিত্র কোরআনের আয়াত নাজিল হয়েছে, ‘অন্ধের দোষ নেই, খোঁড়ার দোষ নেই, রোগীর দোষ নেই এবং তোমাদের নিজেদেরও দোষ নেই এ ব্যাপারে যে, তোমরা আহার করবে তোমাদের ঘরে, তোমাদের বাবাদের ঘরে, তোমাদের মায়েদের ঘরে, তোমাদের ভাইদের ঘরে, তোমাদের বোনদের ঘরে, তোমাদের চাচাদের ঘরে, তোমাদের ফুফুদের ঘরে, তোমাদের মামাদের ঘরে, তোমাদের খালাদের ঘরে বা এমন কোনো ঘরে যার চাবি তোমাদের হাতে রয়েছে বা তোমাদের বন্ধুদের ঘরে।’ (সুরা নুর: ৬১; তাফসিরে তাবারি)
প্রতিবন্ধীদের দায়িত্ব নেওয়া ফরজে কেফায়া
মুসলিম সমাজব্যবস্থায় প্রতিবন্ধীর দায়িত্ব নেওয়া ফরজে কেফায়া। রাষ্ট্র যদি এই দায়িত্ব পালন না করে এবং কোনো নাগরিকই তাদের সেবায় এগিয়ে না আসে, তাহলে সমাজের প্রতিটি মুসলমান গুনাহগার হবে। মহানবী (সা.) প্রতিবন্ধীদের অধিকার নিশ্চিত করেছেন। তাঁর মৃত্যুর পর মুসলিম খলিফারাও প্রতিবন্ধীদের ব্যাপারে তাঁর পথ অনুসরণ করেন। তাঁরা রাষ্ট্রীয়ভাবে প্রতিবন্ধীদের শারীরিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক, মানসিক সব ধরনের প্রয়োজন পূরণ করেছেন।
খলিফা ওমর ইবনে আবদুল আজিজ (রহ.) সব প্রদেশে ফরমান জারি করে সব অন্ধ, অক্ষম, প্লেগ রোগী ও এমন অঙ্গবৈকল্য, যা তাকে সালাতে যেতে বাধা দেয়, তাদের পরিসংখ্যান তৈরির আদেশ দেন। ফলে তারা এসব লোকের তালিকা করে খলিফার কাছে পেশ করলে তিনি প্রত্যেক অন্ধের জন্য একজন সাহায্যকারী নিয়োগ করেন, আর প্রতি দুজন প্রতিবন্ধীর জন্য একজন খাদেম নিযুক্ত করেন, যে তাদের দেখাশোনা ও সেবা করবে।
উমাইয়া খলিফা ওয়ালিদ ইবন আবদুল মালিকও প্রতিবন্ধীদের কল্যাণে কাজ করেছেন। তিনি সর্বপ্রথম প্রতিবন্ধীদের দেখাশোনার জন্য বিশেষ ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সেবাকেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করেন। ৮৮ হিজরি মোতাবেক ৭০৭ খ্রিস্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত এসব শিক্ষাকেন্দ্রে চিকিৎসক ও সেবক নিয়োগ করেন। প্রতিবন্ধীদের নিয়মিত ভাতা প্রদান করেন। সব অক্ষম, পঙ্গু ও অন্ধের জন্য খাদেম নিযুক্ত করেন।
ড. আবদুল্লাহ নাসেহ ‘উলওয়ান তাকাফুল ইজতিমায়ি ফিল ইসলাম’ বইয়ে বলেন, প্রতিবন্ধীরা রাষ্ট্র, সমাজ ও ধনীদের থেকে সাহায্য-সহযোগিতা, ভালোবাসা ও অনুগ্রহ পাবে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘আল্লাহ দয়ালুদের ওপর দয়া ও অনুগ্রহ করেন। যারা জমিনে বসবাস করছে তাদের প্রতি তোমরা দয়া করো, তাহলে যিনি আকাশে আছেন, তিনি তোমাদের প্রতি দয়া করবেন। যে লোক দয়ার সম্পর্ক বজায় রাখে, আল্লাহও তার সঙ্গে নিজ সম্পর্ক বজায় রাখেন। যে লোক দয়ার সম্পর্ক ছিন্ন করে, আল্লাহও তার সঙ্গে দয়ার সম্পর্ক ছিন্ন করেন।’ (তিরমিজি, হাদিস: ১৯২৪)
অবজ্ঞা করা যাবে না
প্রতিবন্ধীদের কোনোভাবেই অবজ্ঞা করা যাবে না। তাদের অবস্থানকে ছোট করা বা কম গুরুত্বপূর্ণ মনে করা ইসলামে নিন্দনীয়। প্রতিবন্ধীর প্রতি সামান্য অবজ্ঞাপূর্ণ আচরণের কারণে মহানবী (সা.)-কে আল্লাহ তাআলা কঠোর কথা বলেছেন। হাদিসে এসেছে, একদিন রাসুল (সা.) কুরাইশের এক নেতৃস্থানীয় লোকের সঙ্গে কথা বলছিলেন এবং তার ইসলাম গ্রহণের আশা করছিলেন। তখন সেখানে অন্ধ সাহাবি আবদুল্লাহ ইবনে উম্ম মাকতুম (রা.) উপস্থিত হলেন। এসেই তিনি রাসুল (সা.)-এর কাছে একটি বিষয় সম্পর্কে জানতে চাইলেন এবং উত্তর জানার জন্য খুব পীড়াপীড়ি করতে লাগলেন। রাসুল (সা.) যেহেতু কুরাইশের লোকটির হিদায়াতের আশা করছিলেন, তাই ইবনে উম্মে মাকতুম থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়ে লোকটার প্রতি মনোনিবেশ করলেন।
এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে আল্লাহ তাআলা আয়াত নাজিল করেন এবং মহানবী (সা.)-কে মৃদু তিরস্কার করে বলেন, ‘সে ভ্রূকুঞ্চিত করল এবং মুখ ফিরিয়ে নিল, কারণ তার কাছে অন্ধ লোকটি এসেছে। তোমার জানা আছে কি, সে হয়তো শুদ্ধ হতো অথবা উপদেশ গ্রহণ করত। ফলে উপদেশ তার উপকারে আসত। পক্ষান্তরে যে ব্যক্তি অগ্রাহ্য করছিল, তুমি তার প্রতি মনোযোগ দিয়েছ। অথচ সে নিজেকে না শোধরালে তোমার কোনো দায়িত্ব নেই। অন্য পক্ষে, যে তোমার কাছে আল্লাহর ভয় নিয়ে ছুটে এলো, তার প্রতি তুমি অবজ্ঞা-প্রদর্শন করলে! কিছুতেই এমন করা উচিত নয়। কোরআন তো এক উপদেশবাণী।’ (সুরা আবাসা: ১-১১) এ ঘটনার পর থেকে রাসুল (সা.) আবদুল্লাহ ইবনে উম্মে মাকতুম (রা.)-কে অনেক সমীহ করতেন।
তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য ও হাসি-ঠাট্টা করা যাবে না
প্রতিবন্ধীদের অসহায়ত্ব নিয়ে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য ও হাসি-ঠাট্টা করতে নিষেধ করেছেন মহানবী (সা.)। এক হাদিসে এসেছে, আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.)-এর পায়ের নলা খুব চিকন ছিল। একদিন তিনি একটি গাছ থেকে মিসওয়াকের জন্য ডাল সংগ্রহ করছিলেন, এমন সময় দমকা বাতাস এসে তাঁকে ফেলে দিতে চাইল। তা দেখে লোকজন হেসে উঠল। রাসুল (সা.) তাদের হাসির কারণ জিজ্ঞাসা করলে তারা বলল, ‘ওর চিকন নলা দেখে হাসছি।’ তখন রাসুল (সা.) বললেন, ‘আল্লাহর কসম, তাঁর এ চিকন নলা দুটি আমলের পাল্লায় উহুদ পাহাড়ের চেয়ে বেশি ভারি হবে।’ (মুসনাদে আহমদ)
প্রতিবন্ধীদের দুর্বলতার দিকে ইঙ্গিত করে ‘অন্ধ’ ‘বধির’ ইত্যাদি নামে ডাকা অনুচিত। আল্লাহ বলেন, ‘হে মুমিনেরা, তোমরা একে অন্যকে দোষারোপ করো না এবং তোমরা একে অন্যকে মন্দ নামে ডেকো না। ইমানের পর মন্দ নাম অতি নিকৃষ্ট। আর যারা তওবা করে না, তারাই জালিম।’ (সুরা হুজুরাত: ১১)
অন্য হাদিসে মহানবী (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি (ঠাট্টার ছলে) অন্ধ ব্যক্তিকে ভুল পথ দেখায়, সে অভিশপ্ত।’ (মুসনাদে আহমদ)
নেতৃত্ব দেওয়ার অধিকার
প্রতিবন্ধীদের নেতৃত্ব দেওয়ার অধিকারও রয়েছে। রাসুল (সা.) কোনো প্রয়োজনে মদিনার বাইরে গেলে শাসনকার্য ও ইমামতি পরিচালনার জন্য কাউকে তাঁর স্থলাভিষিক্ত করে যেতেন। একাধিকবার তিনি অন্ধ সাহাবি আবদুল্লাহ ইবনে উম্মে মাকতুম (রা.)-এর কাঁধে এ গুরুদায়িত্ব তুলে দিয়ে মদিনার বাইরে গিয়েছিলেন। (আবু দাউদ)
এ ছাড়া রাসুল (সা.) এ অন্ধ সাহাবিকে মসজিদে নববির মুয়াজ্জিন নিযুক্ত করেন। নেতৃত্বের যোগ্যতা থাকলে প্রতিবন্ধীরাও রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ পদে অধিষ্ঠিত হওয়ার অধিকার রাখে, তা তিনি প্রমাণ করেছেন। (বুখারি, মুসলিম)
ক্ষমা, সহমর্মিতা ও উদারতা পাওয়ার অধিকার
প্রতিবন্ধীদের দুর্ব্যবহার ও রূঢ় আচরণে শাস্তি না দিয়ে উদারতা ও ক্ষমা দেখানোর কথা বলে ইসলাম। অমুসলিম প্রতিবন্ধীর প্রতি ক্ষমা দেখিয়েছেন মহানবী (সা.)। একদিন তিনি মুসলিম সেনাবাহিনী নিয়ে একটি অভিযানে যাচ্ছিলেন। পথে মারবা বিন কাইজি নামক এক প্রতিবন্ধীর বাগানের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন। মারবা বললেন, ‘হে মুহাম্মদ, তুমি যদি নবী হওয়ার দাবি করো, তাহলে আমি তোমাকে আমার বাগানের ওপর দিয়ে যাওয়ার অনুমতি দেব না।’ এক মুঠো মাটি নিয়ে তিনি বললেন, ‘আল্লাহর কসম, আমি যদি জানতাম, এই মাটি শুধু তোমার ওপরই পড়বে, তবে আমি তোমাকে লক্ষ্য করে তা নিক্ষেপ করতাম।’ এমন ঔদ্ধত্য দেখে সাহাবিরা তাঁর ওপর আঘাত করতে চাইলে রাসুল (সা.) বললেন, ‘তাকে ছেড়ে দাও, বেচারার বিবেক ও চোখ দুটোই অন্ধ।’ (জাদুল মাআদ)
মহানবী (সা.) প্রতিবন্ধীদের প্রতি সম্মান ও সহমর্মিতা প্রদর্শন করতেন। হজরত আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, ‘এক নারীর বুদ্ধিতে কিছু ত্রুটি ছিল। তিনি বললেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল! আপনার সঙ্গে আমার প্রয়োজন আছে।’ রাসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, ‘হে অমুকের মা, তুমি কোনো রাস্তা দেখে নাও, আমি তোমার কাজ করে দেব।’ তারপর তিনি কোনো পথের মধ্যে তাঁর সঙ্গে দেখা করেন এবং তাঁর কাজ সম্পাদন করে দেন।’ (মুসলিম)
ইসলামের ফরজ বিধানেও ছাড় রয়েছে
অক্ষম ব্যক্তিদের জন্য শরিয়তের বিধিবিধান পালনে ছাড় দেওয়া হয়েছে। প্রত্যেক ফরজ বিধান তাদের সাধ্যের ওপর নির্ভর করবে। তাই নামাজ, রোজা, হজ, জাকাত ও জিহাদের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিধানগুলো প্রতিবন্ধীদের জন্য পালন করা আবশ্যক নয়। মানসিক ভারসাম্যহীন হলে তো কোনো বিধানই তার জন্য প্রযোজ্য নয়। আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘তিন ব্যক্তি থেকে কলম উঠিয়ে রাখা হয়েছে অর্থাৎ, বিধিবিধান প্রয়োগ করা থেকে বিরত রাখা হয়েছে— ঘুমন্ত ব্যক্তি যতক্ষণ না সে জাগ্রত হয়, নাবালেগ যতক্ষণ না সে বালেগ হয় এবং পাগল যতক্ষণ না সে জ্ঞান ফিরে পায় বা সুস্থ হয়।’ (ইবনে মাজাহ)
আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘ (যুদ্ধ না করলে) অন্ধের জন্য গুনাহ নেই, খোঁড়ার জন্য গুনাহ নেই এবং রুগ্নের জন্যও গুনাহ নেই।’ (সুরা ফাতহ: ১৭) খোঁড়া সাহাবি আমর বিন জামুহ (রা.)-কে রাসুল (সা.) বলেন, ‘তোমাকে আল্লাহ তাআলা অপারগ করেছেন, সুতরাং তোমার ওপর যুদ্ধ করা বাধ্যতামূলক নয়।’ (ইবনে হিশাম)
পরকালে প্রতিবন্ধী থাকবে না
অঙ্গবৈকল্য ও প্রতিবন্ধিতা পৃথিবীতে আল্লাহর শক্তিমত্তার নিদর্শন। পরকালে কোনো প্রতিবন্ধী থাকবে না। সাহাবি আমর ইবনে জামুহ (রা.) রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে এসে বললেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল, আমি যদি আল্লাহর পথে যুদ্ধ করে শহীদ হই, তাহলে জান্নাতে আমি কি সুস্থ ও স্বাভাবিক পায়ে হাঁটতে পারব?’ আমর পঙ্গু ছিলেন। রাসুল (সা.) বললেন, ‘হ্যাঁ।’ ওহুদের যুদ্ধে তিনি, তাঁর এক ভাতিজা ও তাঁদের একজন দাস শহীদ হন। তাঁর মৃতদেহের কাছ দিয়ে যাওয়ার সময় রাসুল (সা.) তাঁকে লক্ষ্য করে বললেন, ‘আমি যেন তোমাকে জান্নাতে সুস্থ ও স্বাভাবিক পায়ে হাঁটতে দেখছি।...’ (মুসনাদে আহমাদ)
ইসলাম শুধু প্রতিবন্ধীদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করেনি, বরং তাদের উপস্থিতিকে পৃথিবীর জন্য রহমত ও আশীর্বাদ বলা হয়েছে। রাসুল (সা.) বলেন, ‘তোমাদের সাহায্য করা হয় এবং রিজিক দেওয়া হয় কেবল তোমাদের দুর্বল শ্রেণির লোকদের অসিলায়।’ (বুখারি) প্রতিবন্ধীরা পৃথিবীতে আল্লাহর রহমত প্রবেশের দরজা। তাই সর্বদা তাদের সঙ্গে সদাচরণ করা উচিত।
লেখক: ইসলামবিষয়ক গবেষক

পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেছেন, ‘আমি মানুষকে পরীক্ষা করার জন্য মিলিত শুক্রবিন্দু থেকে সৃষ্টি করেছি। (সুরা দাহর: ২) এ পরীক্ষারই অংশ হিসেবে কিছু মানুষকে তিনি শারীরিক বিভিন্ন নেয়ামত থেকে বঞ্চিত রেখেছেন—যাদের আমরা শারীরিক প্রতিবন্ধী বলে শনাক্ত করি।
তবে শারীরিকভাবে কিছুটা অক্ষম হলেও ইসলামে এ শ্রেণির মানুষকে অবজ্ঞা বা তাচ্ছিল্য করার কোনো সুযোগ নেই। ইসলাম প্রতিবন্ধীদের সব মানবিক মর্যাদা নিশ্চিত করার কথা বলে এবং তাঁদের অক্ষমতা অনুসারে বিধিবিধানে ছাড় দেয়। এখানে কয়েকটি উল্লেখযোগ্য দিক তুলে ধরা হলো—
স্বাভাবিক জীবনযাপনের অধিকার
সমাজে প্রতিবন্ধীদের স্বাভাবিক জীবনযাপনের সুযোগ নিশ্চিত করার কথা বলে ইসলাম। তাফসিরকার জাহহাক (রহ.) বলেন, নবীজির মদিনা আগমনের আগে মদিনার লোকজন খাবারের অনুষ্ঠানে অন্ধ, খোঁড়া ও রোগীদের সঙ্গে বসে খাবার খেত না। এ ব্যাপারে কিছু মানুষের যুক্তি ছিল, এ শ্রেণির মানুষের শরীরে ময়লা-আবর্জনা থাকে, তাই তাদের সঙ্গে খাবার খাওয়া যাবে না। কেউ মনে করত, অসুস্থ ব্যক্তি সুস্থ ব্যক্তির মতো পূর্ণভাবে খাবার খেতে পারে না, খোঁড়া লোক খাওয়া-দাওয়ার সময়ের ভিড় সহ্য করতে পারে না, আর অন্ধ ব্যক্তি ভালো খাবার দেখতে পায় না, তাই তাদের সঙ্গে বসে খাবার খেলে খাবারের পরিমাণে তারতম্য হয়ে তাদের প্রতি জুলুম হতে পারে। উদ্দেশ্য যেটাই হোক, এতে প্রতিবন্ধীরা মানসিকভাবে খুব কষ্ট পেত। তাই তাদের সঙ্গে স্বাভাবিক আচরণ করার প্রতি উৎসাহ দিয়েছেন আল্লাহ তাআলা।
এ বিষয়ে পবিত্র কোরআনের আয়াত নাজিল হয়েছে, ‘অন্ধের দোষ নেই, খোঁড়ার দোষ নেই, রোগীর দোষ নেই এবং তোমাদের নিজেদেরও দোষ নেই এ ব্যাপারে যে, তোমরা আহার করবে তোমাদের ঘরে, তোমাদের বাবাদের ঘরে, তোমাদের মায়েদের ঘরে, তোমাদের ভাইদের ঘরে, তোমাদের বোনদের ঘরে, তোমাদের চাচাদের ঘরে, তোমাদের ফুফুদের ঘরে, তোমাদের মামাদের ঘরে, তোমাদের খালাদের ঘরে বা এমন কোনো ঘরে যার চাবি তোমাদের হাতে রয়েছে বা তোমাদের বন্ধুদের ঘরে।’ (সুরা নুর: ৬১; তাফসিরে তাবারি)
প্রতিবন্ধীদের দায়িত্ব নেওয়া ফরজে কেফায়া
মুসলিম সমাজব্যবস্থায় প্রতিবন্ধীর দায়িত্ব নেওয়া ফরজে কেফায়া। রাষ্ট্র যদি এই দায়িত্ব পালন না করে এবং কোনো নাগরিকই তাদের সেবায় এগিয়ে না আসে, তাহলে সমাজের প্রতিটি মুসলমান গুনাহগার হবে। মহানবী (সা.) প্রতিবন্ধীদের অধিকার নিশ্চিত করেছেন। তাঁর মৃত্যুর পর মুসলিম খলিফারাও প্রতিবন্ধীদের ব্যাপারে তাঁর পথ অনুসরণ করেন। তাঁরা রাষ্ট্রীয়ভাবে প্রতিবন্ধীদের শারীরিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক, মানসিক সব ধরনের প্রয়োজন পূরণ করেছেন।
খলিফা ওমর ইবনে আবদুল আজিজ (রহ.) সব প্রদেশে ফরমান জারি করে সব অন্ধ, অক্ষম, প্লেগ রোগী ও এমন অঙ্গবৈকল্য, যা তাকে সালাতে যেতে বাধা দেয়, তাদের পরিসংখ্যান তৈরির আদেশ দেন। ফলে তারা এসব লোকের তালিকা করে খলিফার কাছে পেশ করলে তিনি প্রত্যেক অন্ধের জন্য একজন সাহায্যকারী নিয়োগ করেন, আর প্রতি দুজন প্রতিবন্ধীর জন্য একজন খাদেম নিযুক্ত করেন, যে তাদের দেখাশোনা ও সেবা করবে।
উমাইয়া খলিফা ওয়ালিদ ইবন আবদুল মালিকও প্রতিবন্ধীদের কল্যাণে কাজ করেছেন। তিনি সর্বপ্রথম প্রতিবন্ধীদের দেখাশোনার জন্য বিশেষ ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সেবাকেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করেন। ৮৮ হিজরি মোতাবেক ৭০৭ খ্রিস্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত এসব শিক্ষাকেন্দ্রে চিকিৎসক ও সেবক নিয়োগ করেন। প্রতিবন্ধীদের নিয়মিত ভাতা প্রদান করেন। সব অক্ষম, পঙ্গু ও অন্ধের জন্য খাদেম নিযুক্ত করেন।
ড. আবদুল্লাহ নাসেহ ‘উলওয়ান তাকাফুল ইজতিমায়ি ফিল ইসলাম’ বইয়ে বলেন, প্রতিবন্ধীরা রাষ্ট্র, সমাজ ও ধনীদের থেকে সাহায্য-সহযোগিতা, ভালোবাসা ও অনুগ্রহ পাবে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘আল্লাহ দয়ালুদের ওপর দয়া ও অনুগ্রহ করেন। যারা জমিনে বসবাস করছে তাদের প্রতি তোমরা দয়া করো, তাহলে যিনি আকাশে আছেন, তিনি তোমাদের প্রতি দয়া করবেন। যে লোক দয়ার সম্পর্ক বজায় রাখে, আল্লাহও তার সঙ্গে নিজ সম্পর্ক বজায় রাখেন। যে লোক দয়ার সম্পর্ক ছিন্ন করে, আল্লাহও তার সঙ্গে দয়ার সম্পর্ক ছিন্ন করেন।’ (তিরমিজি, হাদিস: ১৯২৪)
অবজ্ঞা করা যাবে না
প্রতিবন্ধীদের কোনোভাবেই অবজ্ঞা করা যাবে না। তাদের অবস্থানকে ছোট করা বা কম গুরুত্বপূর্ণ মনে করা ইসলামে নিন্দনীয়। প্রতিবন্ধীর প্রতি সামান্য অবজ্ঞাপূর্ণ আচরণের কারণে মহানবী (সা.)-কে আল্লাহ তাআলা কঠোর কথা বলেছেন। হাদিসে এসেছে, একদিন রাসুল (সা.) কুরাইশের এক নেতৃস্থানীয় লোকের সঙ্গে কথা বলছিলেন এবং তার ইসলাম গ্রহণের আশা করছিলেন। তখন সেখানে অন্ধ সাহাবি আবদুল্লাহ ইবনে উম্ম মাকতুম (রা.) উপস্থিত হলেন। এসেই তিনি রাসুল (সা.)-এর কাছে একটি বিষয় সম্পর্কে জানতে চাইলেন এবং উত্তর জানার জন্য খুব পীড়াপীড়ি করতে লাগলেন। রাসুল (সা.) যেহেতু কুরাইশের লোকটির হিদায়াতের আশা করছিলেন, তাই ইবনে উম্মে মাকতুম থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়ে লোকটার প্রতি মনোনিবেশ করলেন।
এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে আল্লাহ তাআলা আয়াত নাজিল করেন এবং মহানবী (সা.)-কে মৃদু তিরস্কার করে বলেন, ‘সে ভ্রূকুঞ্চিত করল এবং মুখ ফিরিয়ে নিল, কারণ তার কাছে অন্ধ লোকটি এসেছে। তোমার জানা আছে কি, সে হয়তো শুদ্ধ হতো অথবা উপদেশ গ্রহণ করত। ফলে উপদেশ তার উপকারে আসত। পক্ষান্তরে যে ব্যক্তি অগ্রাহ্য করছিল, তুমি তার প্রতি মনোযোগ দিয়েছ। অথচ সে নিজেকে না শোধরালে তোমার কোনো দায়িত্ব নেই। অন্য পক্ষে, যে তোমার কাছে আল্লাহর ভয় নিয়ে ছুটে এলো, তার প্রতি তুমি অবজ্ঞা-প্রদর্শন করলে! কিছুতেই এমন করা উচিত নয়। কোরআন তো এক উপদেশবাণী।’ (সুরা আবাসা: ১-১১) এ ঘটনার পর থেকে রাসুল (সা.) আবদুল্লাহ ইবনে উম্মে মাকতুম (রা.)-কে অনেক সমীহ করতেন।
তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য ও হাসি-ঠাট্টা করা যাবে না
প্রতিবন্ধীদের অসহায়ত্ব নিয়ে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য ও হাসি-ঠাট্টা করতে নিষেধ করেছেন মহানবী (সা.)। এক হাদিসে এসেছে, আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.)-এর পায়ের নলা খুব চিকন ছিল। একদিন তিনি একটি গাছ থেকে মিসওয়াকের জন্য ডাল সংগ্রহ করছিলেন, এমন সময় দমকা বাতাস এসে তাঁকে ফেলে দিতে চাইল। তা দেখে লোকজন হেসে উঠল। রাসুল (সা.) তাদের হাসির কারণ জিজ্ঞাসা করলে তারা বলল, ‘ওর চিকন নলা দেখে হাসছি।’ তখন রাসুল (সা.) বললেন, ‘আল্লাহর কসম, তাঁর এ চিকন নলা দুটি আমলের পাল্লায় উহুদ পাহাড়ের চেয়ে বেশি ভারি হবে।’ (মুসনাদে আহমদ)
প্রতিবন্ধীদের দুর্বলতার দিকে ইঙ্গিত করে ‘অন্ধ’ ‘বধির’ ইত্যাদি নামে ডাকা অনুচিত। আল্লাহ বলেন, ‘হে মুমিনেরা, তোমরা একে অন্যকে দোষারোপ করো না এবং তোমরা একে অন্যকে মন্দ নামে ডেকো না। ইমানের পর মন্দ নাম অতি নিকৃষ্ট। আর যারা তওবা করে না, তারাই জালিম।’ (সুরা হুজুরাত: ১১)
অন্য হাদিসে মহানবী (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি (ঠাট্টার ছলে) অন্ধ ব্যক্তিকে ভুল পথ দেখায়, সে অভিশপ্ত।’ (মুসনাদে আহমদ)
নেতৃত্ব দেওয়ার অধিকার
প্রতিবন্ধীদের নেতৃত্ব দেওয়ার অধিকারও রয়েছে। রাসুল (সা.) কোনো প্রয়োজনে মদিনার বাইরে গেলে শাসনকার্য ও ইমামতি পরিচালনার জন্য কাউকে তাঁর স্থলাভিষিক্ত করে যেতেন। একাধিকবার তিনি অন্ধ সাহাবি আবদুল্লাহ ইবনে উম্মে মাকতুম (রা.)-এর কাঁধে এ গুরুদায়িত্ব তুলে দিয়ে মদিনার বাইরে গিয়েছিলেন। (আবু দাউদ)
এ ছাড়া রাসুল (সা.) এ অন্ধ সাহাবিকে মসজিদে নববির মুয়াজ্জিন নিযুক্ত করেন। নেতৃত্বের যোগ্যতা থাকলে প্রতিবন্ধীরাও রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ পদে অধিষ্ঠিত হওয়ার অধিকার রাখে, তা তিনি প্রমাণ করেছেন। (বুখারি, মুসলিম)
ক্ষমা, সহমর্মিতা ও উদারতা পাওয়ার অধিকার
প্রতিবন্ধীদের দুর্ব্যবহার ও রূঢ় আচরণে শাস্তি না দিয়ে উদারতা ও ক্ষমা দেখানোর কথা বলে ইসলাম। অমুসলিম প্রতিবন্ধীর প্রতি ক্ষমা দেখিয়েছেন মহানবী (সা.)। একদিন তিনি মুসলিম সেনাবাহিনী নিয়ে একটি অভিযানে যাচ্ছিলেন। পথে মারবা বিন কাইজি নামক এক প্রতিবন্ধীর বাগানের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন। মারবা বললেন, ‘হে মুহাম্মদ, তুমি যদি নবী হওয়ার দাবি করো, তাহলে আমি তোমাকে আমার বাগানের ওপর দিয়ে যাওয়ার অনুমতি দেব না।’ এক মুঠো মাটি নিয়ে তিনি বললেন, ‘আল্লাহর কসম, আমি যদি জানতাম, এই মাটি শুধু তোমার ওপরই পড়বে, তবে আমি তোমাকে লক্ষ্য করে তা নিক্ষেপ করতাম।’ এমন ঔদ্ধত্য দেখে সাহাবিরা তাঁর ওপর আঘাত করতে চাইলে রাসুল (সা.) বললেন, ‘তাকে ছেড়ে দাও, বেচারার বিবেক ও চোখ দুটোই অন্ধ।’ (জাদুল মাআদ)
মহানবী (সা.) প্রতিবন্ধীদের প্রতি সম্মান ও সহমর্মিতা প্রদর্শন করতেন। হজরত আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, ‘এক নারীর বুদ্ধিতে কিছু ত্রুটি ছিল। তিনি বললেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল! আপনার সঙ্গে আমার প্রয়োজন আছে।’ রাসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, ‘হে অমুকের মা, তুমি কোনো রাস্তা দেখে নাও, আমি তোমার কাজ করে দেব।’ তারপর তিনি কোনো পথের মধ্যে তাঁর সঙ্গে দেখা করেন এবং তাঁর কাজ সম্পাদন করে দেন।’ (মুসলিম)
ইসলামের ফরজ বিধানেও ছাড় রয়েছে
অক্ষম ব্যক্তিদের জন্য শরিয়তের বিধিবিধান পালনে ছাড় দেওয়া হয়েছে। প্রত্যেক ফরজ বিধান তাদের সাধ্যের ওপর নির্ভর করবে। তাই নামাজ, রোজা, হজ, জাকাত ও জিহাদের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিধানগুলো প্রতিবন্ধীদের জন্য পালন করা আবশ্যক নয়। মানসিক ভারসাম্যহীন হলে তো কোনো বিধানই তার জন্য প্রযোজ্য নয়। আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘তিন ব্যক্তি থেকে কলম উঠিয়ে রাখা হয়েছে অর্থাৎ, বিধিবিধান প্রয়োগ করা থেকে বিরত রাখা হয়েছে— ঘুমন্ত ব্যক্তি যতক্ষণ না সে জাগ্রত হয়, নাবালেগ যতক্ষণ না সে বালেগ হয় এবং পাগল যতক্ষণ না সে জ্ঞান ফিরে পায় বা সুস্থ হয়।’ (ইবনে মাজাহ)
আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘ (যুদ্ধ না করলে) অন্ধের জন্য গুনাহ নেই, খোঁড়ার জন্য গুনাহ নেই এবং রুগ্নের জন্যও গুনাহ নেই।’ (সুরা ফাতহ: ১৭) খোঁড়া সাহাবি আমর বিন জামুহ (রা.)-কে রাসুল (সা.) বলেন, ‘তোমাকে আল্লাহ তাআলা অপারগ করেছেন, সুতরাং তোমার ওপর যুদ্ধ করা বাধ্যতামূলক নয়।’ (ইবনে হিশাম)
পরকালে প্রতিবন্ধী থাকবে না
অঙ্গবৈকল্য ও প্রতিবন্ধিতা পৃথিবীতে আল্লাহর শক্তিমত্তার নিদর্শন। পরকালে কোনো প্রতিবন্ধী থাকবে না। সাহাবি আমর ইবনে জামুহ (রা.) রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে এসে বললেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল, আমি যদি আল্লাহর পথে যুদ্ধ করে শহীদ হই, তাহলে জান্নাতে আমি কি সুস্থ ও স্বাভাবিক পায়ে হাঁটতে পারব?’ আমর পঙ্গু ছিলেন। রাসুল (সা.) বললেন, ‘হ্যাঁ।’ ওহুদের যুদ্ধে তিনি, তাঁর এক ভাতিজা ও তাঁদের একজন দাস শহীদ হন। তাঁর মৃতদেহের কাছ দিয়ে যাওয়ার সময় রাসুল (সা.) তাঁকে লক্ষ্য করে বললেন, ‘আমি যেন তোমাকে জান্নাতে সুস্থ ও স্বাভাবিক পায়ে হাঁটতে দেখছি।...’ (মুসনাদে আহমাদ)
ইসলাম শুধু প্রতিবন্ধীদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করেনি, বরং তাদের উপস্থিতিকে পৃথিবীর জন্য রহমত ও আশীর্বাদ বলা হয়েছে। রাসুল (সা.) বলেন, ‘তোমাদের সাহায্য করা হয় এবং রিজিক দেওয়া হয় কেবল তোমাদের দুর্বল শ্রেণির লোকদের অসিলায়।’ (বুখারি) প্রতিবন্ধীরা পৃথিবীতে আল্লাহর রহমত প্রবেশের দরজা। তাই সর্বদা তাদের সঙ্গে সদাচরণ করা উচিত।
লেখক: ইসলামবিষয়ক গবেষক
মুফতি আবু আবদুল্লাহ আহমদ

পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেছেন, ‘আমি মানুষকে পরীক্ষা করার জন্য মিলিত শুক্রবিন্দু থেকে সৃষ্টি করেছি। (সুরা দাহর: ২) এ পরীক্ষারই অংশ হিসেবে কিছু মানুষকে তিনি শারীরিক বিভিন্ন নেয়ামত থেকে বঞ্চিত রেখেছেন—যাদের আমরা শারীরিক প্রতিবন্ধী বলে শনাক্ত করি।
তবে শারীরিকভাবে কিছুটা অক্ষম হলেও ইসলামে এ শ্রেণির মানুষকে অবজ্ঞা বা তাচ্ছিল্য করার কোনো সুযোগ নেই। ইসলাম প্রতিবন্ধীদের সব মানবিক মর্যাদা নিশ্চিত করার কথা বলে এবং তাঁদের অক্ষমতা অনুসারে বিধিবিধানে ছাড় দেয়। এখানে কয়েকটি উল্লেখযোগ্য দিক তুলে ধরা হলো—
স্বাভাবিক জীবনযাপনের অধিকার
সমাজে প্রতিবন্ধীদের স্বাভাবিক জীবনযাপনের সুযোগ নিশ্চিত করার কথা বলে ইসলাম। তাফসিরকার জাহহাক (রহ.) বলেন, নবীজির মদিনা আগমনের আগে মদিনার লোকজন খাবারের অনুষ্ঠানে অন্ধ, খোঁড়া ও রোগীদের সঙ্গে বসে খাবার খেত না। এ ব্যাপারে কিছু মানুষের যুক্তি ছিল, এ শ্রেণির মানুষের শরীরে ময়লা-আবর্জনা থাকে, তাই তাদের সঙ্গে খাবার খাওয়া যাবে না। কেউ মনে করত, অসুস্থ ব্যক্তি সুস্থ ব্যক্তির মতো পূর্ণভাবে খাবার খেতে পারে না, খোঁড়া লোক খাওয়া-দাওয়ার সময়ের ভিড় সহ্য করতে পারে না, আর অন্ধ ব্যক্তি ভালো খাবার দেখতে পায় না, তাই তাদের সঙ্গে বসে খাবার খেলে খাবারের পরিমাণে তারতম্য হয়ে তাদের প্রতি জুলুম হতে পারে। উদ্দেশ্য যেটাই হোক, এতে প্রতিবন্ধীরা মানসিকভাবে খুব কষ্ট পেত। তাই তাদের সঙ্গে স্বাভাবিক আচরণ করার প্রতি উৎসাহ দিয়েছেন আল্লাহ তাআলা।
এ বিষয়ে পবিত্র কোরআনের আয়াত নাজিল হয়েছে, ‘অন্ধের দোষ নেই, খোঁড়ার দোষ নেই, রোগীর দোষ নেই এবং তোমাদের নিজেদেরও দোষ নেই এ ব্যাপারে যে, তোমরা আহার করবে তোমাদের ঘরে, তোমাদের বাবাদের ঘরে, তোমাদের মায়েদের ঘরে, তোমাদের ভাইদের ঘরে, তোমাদের বোনদের ঘরে, তোমাদের চাচাদের ঘরে, তোমাদের ফুফুদের ঘরে, তোমাদের মামাদের ঘরে, তোমাদের খালাদের ঘরে বা এমন কোনো ঘরে যার চাবি তোমাদের হাতে রয়েছে বা তোমাদের বন্ধুদের ঘরে।’ (সুরা নুর: ৬১; তাফসিরে তাবারি)
প্রতিবন্ধীদের দায়িত্ব নেওয়া ফরজে কেফায়া
মুসলিম সমাজব্যবস্থায় প্রতিবন্ধীর দায়িত্ব নেওয়া ফরজে কেফায়া। রাষ্ট্র যদি এই দায়িত্ব পালন না করে এবং কোনো নাগরিকই তাদের সেবায় এগিয়ে না আসে, তাহলে সমাজের প্রতিটি মুসলমান গুনাহগার হবে। মহানবী (সা.) প্রতিবন্ধীদের অধিকার নিশ্চিত করেছেন। তাঁর মৃত্যুর পর মুসলিম খলিফারাও প্রতিবন্ধীদের ব্যাপারে তাঁর পথ অনুসরণ করেন। তাঁরা রাষ্ট্রীয়ভাবে প্রতিবন্ধীদের শারীরিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক, মানসিক সব ধরনের প্রয়োজন পূরণ করেছেন।
খলিফা ওমর ইবনে আবদুল আজিজ (রহ.) সব প্রদেশে ফরমান জারি করে সব অন্ধ, অক্ষম, প্লেগ রোগী ও এমন অঙ্গবৈকল্য, যা তাকে সালাতে যেতে বাধা দেয়, তাদের পরিসংখ্যান তৈরির আদেশ দেন। ফলে তারা এসব লোকের তালিকা করে খলিফার কাছে পেশ করলে তিনি প্রত্যেক অন্ধের জন্য একজন সাহায্যকারী নিয়োগ করেন, আর প্রতি দুজন প্রতিবন্ধীর জন্য একজন খাদেম নিযুক্ত করেন, যে তাদের দেখাশোনা ও সেবা করবে।
উমাইয়া খলিফা ওয়ালিদ ইবন আবদুল মালিকও প্রতিবন্ধীদের কল্যাণে কাজ করেছেন। তিনি সর্বপ্রথম প্রতিবন্ধীদের দেখাশোনার জন্য বিশেষ ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সেবাকেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করেন। ৮৮ হিজরি মোতাবেক ৭০৭ খ্রিস্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত এসব শিক্ষাকেন্দ্রে চিকিৎসক ও সেবক নিয়োগ করেন। প্রতিবন্ধীদের নিয়মিত ভাতা প্রদান করেন। সব অক্ষম, পঙ্গু ও অন্ধের জন্য খাদেম নিযুক্ত করেন।
ড. আবদুল্লাহ নাসেহ ‘উলওয়ান তাকাফুল ইজতিমায়ি ফিল ইসলাম’ বইয়ে বলেন, প্রতিবন্ধীরা রাষ্ট্র, সমাজ ও ধনীদের থেকে সাহায্য-সহযোগিতা, ভালোবাসা ও অনুগ্রহ পাবে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘আল্লাহ দয়ালুদের ওপর দয়া ও অনুগ্রহ করেন। যারা জমিনে বসবাস করছে তাদের প্রতি তোমরা দয়া করো, তাহলে যিনি আকাশে আছেন, তিনি তোমাদের প্রতি দয়া করবেন। যে লোক দয়ার সম্পর্ক বজায় রাখে, আল্লাহও তার সঙ্গে নিজ সম্পর্ক বজায় রাখেন। যে লোক দয়ার সম্পর্ক ছিন্ন করে, আল্লাহও তার সঙ্গে দয়ার সম্পর্ক ছিন্ন করেন।’ (তিরমিজি, হাদিস: ১৯২৪)
অবজ্ঞা করা যাবে না
প্রতিবন্ধীদের কোনোভাবেই অবজ্ঞা করা যাবে না। তাদের অবস্থানকে ছোট করা বা কম গুরুত্বপূর্ণ মনে করা ইসলামে নিন্দনীয়। প্রতিবন্ধীর প্রতি সামান্য অবজ্ঞাপূর্ণ আচরণের কারণে মহানবী (সা.)-কে আল্লাহ তাআলা কঠোর কথা বলেছেন। হাদিসে এসেছে, একদিন রাসুল (সা.) কুরাইশের এক নেতৃস্থানীয় লোকের সঙ্গে কথা বলছিলেন এবং তার ইসলাম গ্রহণের আশা করছিলেন। তখন সেখানে অন্ধ সাহাবি আবদুল্লাহ ইবনে উম্ম মাকতুম (রা.) উপস্থিত হলেন। এসেই তিনি রাসুল (সা.)-এর কাছে একটি বিষয় সম্পর্কে জানতে চাইলেন এবং উত্তর জানার জন্য খুব পীড়াপীড়ি করতে লাগলেন। রাসুল (সা.) যেহেতু কুরাইশের লোকটির হিদায়াতের আশা করছিলেন, তাই ইবনে উম্মে মাকতুম থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়ে লোকটার প্রতি মনোনিবেশ করলেন।
এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে আল্লাহ তাআলা আয়াত নাজিল করেন এবং মহানবী (সা.)-কে মৃদু তিরস্কার করে বলেন, ‘সে ভ্রূকুঞ্চিত করল এবং মুখ ফিরিয়ে নিল, কারণ তার কাছে অন্ধ লোকটি এসেছে। তোমার জানা আছে কি, সে হয়তো শুদ্ধ হতো অথবা উপদেশ গ্রহণ করত। ফলে উপদেশ তার উপকারে আসত। পক্ষান্তরে যে ব্যক্তি অগ্রাহ্য করছিল, তুমি তার প্রতি মনোযোগ দিয়েছ। অথচ সে নিজেকে না শোধরালে তোমার কোনো দায়িত্ব নেই। অন্য পক্ষে, যে তোমার কাছে আল্লাহর ভয় নিয়ে ছুটে এলো, তার প্রতি তুমি অবজ্ঞা-প্রদর্শন করলে! কিছুতেই এমন করা উচিত নয়। কোরআন তো এক উপদেশবাণী।’ (সুরা আবাসা: ১-১১) এ ঘটনার পর থেকে রাসুল (সা.) আবদুল্লাহ ইবনে উম্মে মাকতুম (রা.)-কে অনেক সমীহ করতেন।
তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য ও হাসি-ঠাট্টা করা যাবে না
প্রতিবন্ধীদের অসহায়ত্ব নিয়ে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য ও হাসি-ঠাট্টা করতে নিষেধ করেছেন মহানবী (সা.)। এক হাদিসে এসেছে, আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.)-এর পায়ের নলা খুব চিকন ছিল। একদিন তিনি একটি গাছ থেকে মিসওয়াকের জন্য ডাল সংগ্রহ করছিলেন, এমন সময় দমকা বাতাস এসে তাঁকে ফেলে দিতে চাইল। তা দেখে লোকজন হেসে উঠল। রাসুল (সা.) তাদের হাসির কারণ জিজ্ঞাসা করলে তারা বলল, ‘ওর চিকন নলা দেখে হাসছি।’ তখন রাসুল (সা.) বললেন, ‘আল্লাহর কসম, তাঁর এ চিকন নলা দুটি আমলের পাল্লায় উহুদ পাহাড়ের চেয়ে বেশি ভারি হবে।’ (মুসনাদে আহমদ)
প্রতিবন্ধীদের দুর্বলতার দিকে ইঙ্গিত করে ‘অন্ধ’ ‘বধির’ ইত্যাদি নামে ডাকা অনুচিত। আল্লাহ বলেন, ‘হে মুমিনেরা, তোমরা একে অন্যকে দোষারোপ করো না এবং তোমরা একে অন্যকে মন্দ নামে ডেকো না। ইমানের পর মন্দ নাম অতি নিকৃষ্ট। আর যারা তওবা করে না, তারাই জালিম।’ (সুরা হুজুরাত: ১১)
অন্য হাদিসে মহানবী (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি (ঠাট্টার ছলে) অন্ধ ব্যক্তিকে ভুল পথ দেখায়, সে অভিশপ্ত।’ (মুসনাদে আহমদ)
নেতৃত্ব দেওয়ার অধিকার
প্রতিবন্ধীদের নেতৃত্ব দেওয়ার অধিকারও রয়েছে। রাসুল (সা.) কোনো প্রয়োজনে মদিনার বাইরে গেলে শাসনকার্য ও ইমামতি পরিচালনার জন্য কাউকে তাঁর স্থলাভিষিক্ত করে যেতেন। একাধিকবার তিনি অন্ধ সাহাবি আবদুল্লাহ ইবনে উম্মে মাকতুম (রা.)-এর কাঁধে এ গুরুদায়িত্ব তুলে দিয়ে মদিনার বাইরে গিয়েছিলেন। (আবু দাউদ)
এ ছাড়া রাসুল (সা.) এ অন্ধ সাহাবিকে মসজিদে নববির মুয়াজ্জিন নিযুক্ত করেন। নেতৃত্বের যোগ্যতা থাকলে প্রতিবন্ধীরাও রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ পদে অধিষ্ঠিত হওয়ার অধিকার রাখে, তা তিনি প্রমাণ করেছেন। (বুখারি, মুসলিম)
ক্ষমা, সহমর্মিতা ও উদারতা পাওয়ার অধিকার
প্রতিবন্ধীদের দুর্ব্যবহার ও রূঢ় আচরণে শাস্তি না দিয়ে উদারতা ও ক্ষমা দেখানোর কথা বলে ইসলাম। অমুসলিম প্রতিবন্ধীর প্রতি ক্ষমা দেখিয়েছেন মহানবী (সা.)। একদিন তিনি মুসলিম সেনাবাহিনী নিয়ে একটি অভিযানে যাচ্ছিলেন। পথে মারবা বিন কাইজি নামক এক প্রতিবন্ধীর বাগানের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন। মারবা বললেন, ‘হে মুহাম্মদ, তুমি যদি নবী হওয়ার দাবি করো, তাহলে আমি তোমাকে আমার বাগানের ওপর দিয়ে যাওয়ার অনুমতি দেব না।’ এক মুঠো মাটি নিয়ে তিনি বললেন, ‘আল্লাহর কসম, আমি যদি জানতাম, এই মাটি শুধু তোমার ওপরই পড়বে, তবে আমি তোমাকে লক্ষ্য করে তা নিক্ষেপ করতাম।’ এমন ঔদ্ধত্য দেখে সাহাবিরা তাঁর ওপর আঘাত করতে চাইলে রাসুল (সা.) বললেন, ‘তাকে ছেড়ে দাও, বেচারার বিবেক ও চোখ দুটোই অন্ধ।’ (জাদুল মাআদ)
মহানবী (সা.) প্রতিবন্ধীদের প্রতি সম্মান ও সহমর্মিতা প্রদর্শন করতেন। হজরত আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, ‘এক নারীর বুদ্ধিতে কিছু ত্রুটি ছিল। তিনি বললেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল! আপনার সঙ্গে আমার প্রয়োজন আছে।’ রাসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, ‘হে অমুকের মা, তুমি কোনো রাস্তা দেখে নাও, আমি তোমার কাজ করে দেব।’ তারপর তিনি কোনো পথের মধ্যে তাঁর সঙ্গে দেখা করেন এবং তাঁর কাজ সম্পাদন করে দেন।’ (মুসলিম)
ইসলামের ফরজ বিধানেও ছাড় রয়েছে
অক্ষম ব্যক্তিদের জন্য শরিয়তের বিধিবিধান পালনে ছাড় দেওয়া হয়েছে। প্রত্যেক ফরজ বিধান তাদের সাধ্যের ওপর নির্ভর করবে। তাই নামাজ, রোজা, হজ, জাকাত ও জিহাদের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিধানগুলো প্রতিবন্ধীদের জন্য পালন করা আবশ্যক নয়। মানসিক ভারসাম্যহীন হলে তো কোনো বিধানই তার জন্য প্রযোজ্য নয়। আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘তিন ব্যক্তি থেকে কলম উঠিয়ে রাখা হয়েছে অর্থাৎ, বিধিবিধান প্রয়োগ করা থেকে বিরত রাখা হয়েছে— ঘুমন্ত ব্যক্তি যতক্ষণ না সে জাগ্রত হয়, নাবালেগ যতক্ষণ না সে বালেগ হয় এবং পাগল যতক্ষণ না সে জ্ঞান ফিরে পায় বা সুস্থ হয়।’ (ইবনে মাজাহ)
আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘ (যুদ্ধ না করলে) অন্ধের জন্য গুনাহ নেই, খোঁড়ার জন্য গুনাহ নেই এবং রুগ্নের জন্যও গুনাহ নেই।’ (সুরা ফাতহ: ১৭) খোঁড়া সাহাবি আমর বিন জামুহ (রা.)-কে রাসুল (সা.) বলেন, ‘তোমাকে আল্লাহ তাআলা অপারগ করেছেন, সুতরাং তোমার ওপর যুদ্ধ করা বাধ্যতামূলক নয়।’ (ইবনে হিশাম)
পরকালে প্রতিবন্ধী থাকবে না
অঙ্গবৈকল্য ও প্রতিবন্ধিতা পৃথিবীতে আল্লাহর শক্তিমত্তার নিদর্শন। পরকালে কোনো প্রতিবন্ধী থাকবে না। সাহাবি আমর ইবনে জামুহ (রা.) রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে এসে বললেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল, আমি যদি আল্লাহর পথে যুদ্ধ করে শহীদ হই, তাহলে জান্নাতে আমি কি সুস্থ ও স্বাভাবিক পায়ে হাঁটতে পারব?’ আমর পঙ্গু ছিলেন। রাসুল (সা.) বললেন, ‘হ্যাঁ।’ ওহুদের যুদ্ধে তিনি, তাঁর এক ভাতিজা ও তাঁদের একজন দাস শহীদ হন। তাঁর মৃতদেহের কাছ দিয়ে যাওয়ার সময় রাসুল (সা.) তাঁকে লক্ষ্য করে বললেন, ‘আমি যেন তোমাকে জান্নাতে সুস্থ ও স্বাভাবিক পায়ে হাঁটতে দেখছি।...’ (মুসনাদে আহমাদ)
ইসলাম শুধু প্রতিবন্ধীদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করেনি, বরং তাদের উপস্থিতিকে পৃথিবীর জন্য রহমত ও আশীর্বাদ বলা হয়েছে। রাসুল (সা.) বলেন, ‘তোমাদের সাহায্য করা হয় এবং রিজিক দেওয়া হয় কেবল তোমাদের দুর্বল শ্রেণির লোকদের অসিলায়।’ (বুখারি) প্রতিবন্ধীরা পৃথিবীতে আল্লাহর রহমত প্রবেশের দরজা। তাই সর্বদা তাদের সঙ্গে সদাচরণ করা উচিত।
লেখক: ইসলামবিষয়ক গবেষক

পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেছেন, ‘আমি মানুষকে পরীক্ষা করার জন্য মিলিত শুক্রবিন্দু থেকে সৃষ্টি করেছি। (সুরা দাহর: ২) এ পরীক্ষারই অংশ হিসেবে কিছু মানুষকে তিনি শারীরিক বিভিন্ন নেয়ামত থেকে বঞ্চিত রেখেছেন—যাদের আমরা শারীরিক প্রতিবন্ধী বলে শনাক্ত করি।
তবে শারীরিকভাবে কিছুটা অক্ষম হলেও ইসলামে এ শ্রেণির মানুষকে অবজ্ঞা বা তাচ্ছিল্য করার কোনো সুযোগ নেই। ইসলাম প্রতিবন্ধীদের সব মানবিক মর্যাদা নিশ্চিত করার কথা বলে এবং তাঁদের অক্ষমতা অনুসারে বিধিবিধানে ছাড় দেয়। এখানে কয়েকটি উল্লেখযোগ্য দিক তুলে ধরা হলো—
স্বাভাবিক জীবনযাপনের অধিকার
সমাজে প্রতিবন্ধীদের স্বাভাবিক জীবনযাপনের সুযোগ নিশ্চিত করার কথা বলে ইসলাম। তাফসিরকার জাহহাক (রহ.) বলেন, নবীজির মদিনা আগমনের আগে মদিনার লোকজন খাবারের অনুষ্ঠানে অন্ধ, খোঁড়া ও রোগীদের সঙ্গে বসে খাবার খেত না। এ ব্যাপারে কিছু মানুষের যুক্তি ছিল, এ শ্রেণির মানুষের শরীরে ময়লা-আবর্জনা থাকে, তাই তাদের সঙ্গে খাবার খাওয়া যাবে না। কেউ মনে করত, অসুস্থ ব্যক্তি সুস্থ ব্যক্তির মতো পূর্ণভাবে খাবার খেতে পারে না, খোঁড়া লোক খাওয়া-দাওয়ার সময়ের ভিড় সহ্য করতে পারে না, আর অন্ধ ব্যক্তি ভালো খাবার দেখতে পায় না, তাই তাদের সঙ্গে বসে খাবার খেলে খাবারের পরিমাণে তারতম্য হয়ে তাদের প্রতি জুলুম হতে পারে। উদ্দেশ্য যেটাই হোক, এতে প্রতিবন্ধীরা মানসিকভাবে খুব কষ্ট পেত। তাই তাদের সঙ্গে স্বাভাবিক আচরণ করার প্রতি উৎসাহ দিয়েছেন আল্লাহ তাআলা।
এ বিষয়ে পবিত্র কোরআনের আয়াত নাজিল হয়েছে, ‘অন্ধের দোষ নেই, খোঁড়ার দোষ নেই, রোগীর দোষ নেই এবং তোমাদের নিজেদেরও দোষ নেই এ ব্যাপারে যে, তোমরা আহার করবে তোমাদের ঘরে, তোমাদের বাবাদের ঘরে, তোমাদের মায়েদের ঘরে, তোমাদের ভাইদের ঘরে, তোমাদের বোনদের ঘরে, তোমাদের চাচাদের ঘরে, তোমাদের ফুফুদের ঘরে, তোমাদের মামাদের ঘরে, তোমাদের খালাদের ঘরে বা এমন কোনো ঘরে যার চাবি তোমাদের হাতে রয়েছে বা তোমাদের বন্ধুদের ঘরে।’ (সুরা নুর: ৬১; তাফসিরে তাবারি)
প্রতিবন্ধীদের দায়িত্ব নেওয়া ফরজে কেফায়া
মুসলিম সমাজব্যবস্থায় প্রতিবন্ধীর দায়িত্ব নেওয়া ফরজে কেফায়া। রাষ্ট্র যদি এই দায়িত্ব পালন না করে এবং কোনো নাগরিকই তাদের সেবায় এগিয়ে না আসে, তাহলে সমাজের প্রতিটি মুসলমান গুনাহগার হবে। মহানবী (সা.) প্রতিবন্ধীদের অধিকার নিশ্চিত করেছেন। তাঁর মৃত্যুর পর মুসলিম খলিফারাও প্রতিবন্ধীদের ব্যাপারে তাঁর পথ অনুসরণ করেন। তাঁরা রাষ্ট্রীয়ভাবে প্রতিবন্ধীদের শারীরিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক, মানসিক সব ধরনের প্রয়োজন পূরণ করেছেন।
খলিফা ওমর ইবনে আবদুল আজিজ (রহ.) সব প্রদেশে ফরমান জারি করে সব অন্ধ, অক্ষম, প্লেগ রোগী ও এমন অঙ্গবৈকল্য, যা তাকে সালাতে যেতে বাধা দেয়, তাদের পরিসংখ্যান তৈরির আদেশ দেন। ফলে তারা এসব লোকের তালিকা করে খলিফার কাছে পেশ করলে তিনি প্রত্যেক অন্ধের জন্য একজন সাহায্যকারী নিয়োগ করেন, আর প্রতি দুজন প্রতিবন্ধীর জন্য একজন খাদেম নিযুক্ত করেন, যে তাদের দেখাশোনা ও সেবা করবে।
উমাইয়া খলিফা ওয়ালিদ ইবন আবদুল মালিকও প্রতিবন্ধীদের কল্যাণে কাজ করেছেন। তিনি সর্বপ্রথম প্রতিবন্ধীদের দেখাশোনার জন্য বিশেষ ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সেবাকেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করেন। ৮৮ হিজরি মোতাবেক ৭০৭ খ্রিস্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত এসব শিক্ষাকেন্দ্রে চিকিৎসক ও সেবক নিয়োগ করেন। প্রতিবন্ধীদের নিয়মিত ভাতা প্রদান করেন। সব অক্ষম, পঙ্গু ও অন্ধের জন্য খাদেম নিযুক্ত করেন।
ড. আবদুল্লাহ নাসেহ ‘উলওয়ান তাকাফুল ইজতিমায়ি ফিল ইসলাম’ বইয়ে বলেন, প্রতিবন্ধীরা রাষ্ট্র, সমাজ ও ধনীদের থেকে সাহায্য-সহযোগিতা, ভালোবাসা ও অনুগ্রহ পাবে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘আল্লাহ দয়ালুদের ওপর দয়া ও অনুগ্রহ করেন। যারা জমিনে বসবাস করছে তাদের প্রতি তোমরা দয়া করো, তাহলে যিনি আকাশে আছেন, তিনি তোমাদের প্রতি দয়া করবেন। যে লোক দয়ার সম্পর্ক বজায় রাখে, আল্লাহও তার সঙ্গে নিজ সম্পর্ক বজায় রাখেন। যে লোক দয়ার সম্পর্ক ছিন্ন করে, আল্লাহও তার সঙ্গে দয়ার সম্পর্ক ছিন্ন করেন।’ (তিরমিজি, হাদিস: ১৯২৪)
অবজ্ঞা করা যাবে না
প্রতিবন্ধীদের কোনোভাবেই অবজ্ঞা করা যাবে না। তাদের অবস্থানকে ছোট করা বা কম গুরুত্বপূর্ণ মনে করা ইসলামে নিন্দনীয়। প্রতিবন্ধীর প্রতি সামান্য অবজ্ঞাপূর্ণ আচরণের কারণে মহানবী (সা.)-কে আল্লাহ তাআলা কঠোর কথা বলেছেন। হাদিসে এসেছে, একদিন রাসুল (সা.) কুরাইশের এক নেতৃস্থানীয় লোকের সঙ্গে কথা বলছিলেন এবং তার ইসলাম গ্রহণের আশা করছিলেন। তখন সেখানে অন্ধ সাহাবি আবদুল্লাহ ইবনে উম্ম মাকতুম (রা.) উপস্থিত হলেন। এসেই তিনি রাসুল (সা.)-এর কাছে একটি বিষয় সম্পর্কে জানতে চাইলেন এবং উত্তর জানার জন্য খুব পীড়াপীড়ি করতে লাগলেন। রাসুল (সা.) যেহেতু কুরাইশের লোকটির হিদায়াতের আশা করছিলেন, তাই ইবনে উম্মে মাকতুম থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়ে লোকটার প্রতি মনোনিবেশ করলেন।
এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে আল্লাহ তাআলা আয়াত নাজিল করেন এবং মহানবী (সা.)-কে মৃদু তিরস্কার করে বলেন, ‘সে ভ্রূকুঞ্চিত করল এবং মুখ ফিরিয়ে নিল, কারণ তার কাছে অন্ধ লোকটি এসেছে। তোমার জানা আছে কি, সে হয়তো শুদ্ধ হতো অথবা উপদেশ গ্রহণ করত। ফলে উপদেশ তার উপকারে আসত। পক্ষান্তরে যে ব্যক্তি অগ্রাহ্য করছিল, তুমি তার প্রতি মনোযোগ দিয়েছ। অথচ সে নিজেকে না শোধরালে তোমার কোনো দায়িত্ব নেই। অন্য পক্ষে, যে তোমার কাছে আল্লাহর ভয় নিয়ে ছুটে এলো, তার প্রতি তুমি অবজ্ঞা-প্রদর্শন করলে! কিছুতেই এমন করা উচিত নয়। কোরআন তো এক উপদেশবাণী।’ (সুরা আবাসা: ১-১১) এ ঘটনার পর থেকে রাসুল (সা.) আবদুল্লাহ ইবনে উম্মে মাকতুম (রা.)-কে অনেক সমীহ করতেন।
তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য ও হাসি-ঠাট্টা করা যাবে না
প্রতিবন্ধীদের অসহায়ত্ব নিয়ে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য ও হাসি-ঠাট্টা করতে নিষেধ করেছেন মহানবী (সা.)। এক হাদিসে এসেছে, আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.)-এর পায়ের নলা খুব চিকন ছিল। একদিন তিনি একটি গাছ থেকে মিসওয়াকের জন্য ডাল সংগ্রহ করছিলেন, এমন সময় দমকা বাতাস এসে তাঁকে ফেলে দিতে চাইল। তা দেখে লোকজন হেসে উঠল। রাসুল (সা.) তাদের হাসির কারণ জিজ্ঞাসা করলে তারা বলল, ‘ওর চিকন নলা দেখে হাসছি।’ তখন রাসুল (সা.) বললেন, ‘আল্লাহর কসম, তাঁর এ চিকন নলা দুটি আমলের পাল্লায় উহুদ পাহাড়ের চেয়ে বেশি ভারি হবে।’ (মুসনাদে আহমদ)
প্রতিবন্ধীদের দুর্বলতার দিকে ইঙ্গিত করে ‘অন্ধ’ ‘বধির’ ইত্যাদি নামে ডাকা অনুচিত। আল্লাহ বলেন, ‘হে মুমিনেরা, তোমরা একে অন্যকে দোষারোপ করো না এবং তোমরা একে অন্যকে মন্দ নামে ডেকো না। ইমানের পর মন্দ নাম অতি নিকৃষ্ট। আর যারা তওবা করে না, তারাই জালিম।’ (সুরা হুজুরাত: ১১)
অন্য হাদিসে মহানবী (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি (ঠাট্টার ছলে) অন্ধ ব্যক্তিকে ভুল পথ দেখায়, সে অভিশপ্ত।’ (মুসনাদে আহমদ)
নেতৃত্ব দেওয়ার অধিকার
প্রতিবন্ধীদের নেতৃত্ব দেওয়ার অধিকারও রয়েছে। রাসুল (সা.) কোনো প্রয়োজনে মদিনার বাইরে গেলে শাসনকার্য ও ইমামতি পরিচালনার জন্য কাউকে তাঁর স্থলাভিষিক্ত করে যেতেন। একাধিকবার তিনি অন্ধ সাহাবি আবদুল্লাহ ইবনে উম্মে মাকতুম (রা.)-এর কাঁধে এ গুরুদায়িত্ব তুলে দিয়ে মদিনার বাইরে গিয়েছিলেন। (আবু দাউদ)
এ ছাড়া রাসুল (সা.) এ অন্ধ সাহাবিকে মসজিদে নববির মুয়াজ্জিন নিযুক্ত করেন। নেতৃত্বের যোগ্যতা থাকলে প্রতিবন্ধীরাও রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ পদে অধিষ্ঠিত হওয়ার অধিকার রাখে, তা তিনি প্রমাণ করেছেন। (বুখারি, মুসলিম)
ক্ষমা, সহমর্মিতা ও উদারতা পাওয়ার অধিকার
প্রতিবন্ধীদের দুর্ব্যবহার ও রূঢ় আচরণে শাস্তি না দিয়ে উদারতা ও ক্ষমা দেখানোর কথা বলে ইসলাম। অমুসলিম প্রতিবন্ধীর প্রতি ক্ষমা দেখিয়েছেন মহানবী (সা.)। একদিন তিনি মুসলিম সেনাবাহিনী নিয়ে একটি অভিযানে যাচ্ছিলেন। পথে মারবা বিন কাইজি নামক এক প্রতিবন্ধীর বাগানের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন। মারবা বললেন, ‘হে মুহাম্মদ, তুমি যদি নবী হওয়ার দাবি করো, তাহলে আমি তোমাকে আমার বাগানের ওপর দিয়ে যাওয়ার অনুমতি দেব না।’ এক মুঠো মাটি নিয়ে তিনি বললেন, ‘আল্লাহর কসম, আমি যদি জানতাম, এই মাটি শুধু তোমার ওপরই পড়বে, তবে আমি তোমাকে লক্ষ্য করে তা নিক্ষেপ করতাম।’ এমন ঔদ্ধত্য দেখে সাহাবিরা তাঁর ওপর আঘাত করতে চাইলে রাসুল (সা.) বললেন, ‘তাকে ছেড়ে দাও, বেচারার বিবেক ও চোখ দুটোই অন্ধ।’ (জাদুল মাআদ)
মহানবী (সা.) প্রতিবন্ধীদের প্রতি সম্মান ও সহমর্মিতা প্রদর্শন করতেন। হজরত আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, ‘এক নারীর বুদ্ধিতে কিছু ত্রুটি ছিল। তিনি বললেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল! আপনার সঙ্গে আমার প্রয়োজন আছে।’ রাসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, ‘হে অমুকের মা, তুমি কোনো রাস্তা দেখে নাও, আমি তোমার কাজ করে দেব।’ তারপর তিনি কোনো পথের মধ্যে তাঁর সঙ্গে দেখা করেন এবং তাঁর কাজ সম্পাদন করে দেন।’ (মুসলিম)
ইসলামের ফরজ বিধানেও ছাড় রয়েছে
অক্ষম ব্যক্তিদের জন্য শরিয়তের বিধিবিধান পালনে ছাড় দেওয়া হয়েছে। প্রত্যেক ফরজ বিধান তাদের সাধ্যের ওপর নির্ভর করবে। তাই নামাজ, রোজা, হজ, জাকাত ও জিহাদের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিধানগুলো প্রতিবন্ধীদের জন্য পালন করা আবশ্যক নয়। মানসিক ভারসাম্যহীন হলে তো কোনো বিধানই তার জন্য প্রযোজ্য নয়। আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘তিন ব্যক্তি থেকে কলম উঠিয়ে রাখা হয়েছে অর্থাৎ, বিধিবিধান প্রয়োগ করা থেকে বিরত রাখা হয়েছে— ঘুমন্ত ব্যক্তি যতক্ষণ না সে জাগ্রত হয়, নাবালেগ যতক্ষণ না সে বালেগ হয় এবং পাগল যতক্ষণ না সে জ্ঞান ফিরে পায় বা সুস্থ হয়।’ (ইবনে মাজাহ)
আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘ (যুদ্ধ না করলে) অন্ধের জন্য গুনাহ নেই, খোঁড়ার জন্য গুনাহ নেই এবং রুগ্নের জন্যও গুনাহ নেই।’ (সুরা ফাতহ: ১৭) খোঁড়া সাহাবি আমর বিন জামুহ (রা.)-কে রাসুল (সা.) বলেন, ‘তোমাকে আল্লাহ তাআলা অপারগ করেছেন, সুতরাং তোমার ওপর যুদ্ধ করা বাধ্যতামূলক নয়।’ (ইবনে হিশাম)
পরকালে প্রতিবন্ধী থাকবে না
অঙ্গবৈকল্য ও প্রতিবন্ধিতা পৃথিবীতে আল্লাহর শক্তিমত্তার নিদর্শন। পরকালে কোনো প্রতিবন্ধী থাকবে না। সাহাবি আমর ইবনে জামুহ (রা.) রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে এসে বললেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল, আমি যদি আল্লাহর পথে যুদ্ধ করে শহীদ হই, তাহলে জান্নাতে আমি কি সুস্থ ও স্বাভাবিক পায়ে হাঁটতে পারব?’ আমর পঙ্গু ছিলেন। রাসুল (সা.) বললেন, ‘হ্যাঁ।’ ওহুদের যুদ্ধে তিনি, তাঁর এক ভাতিজা ও তাঁদের একজন দাস শহীদ হন। তাঁর মৃতদেহের কাছ দিয়ে যাওয়ার সময় রাসুল (সা.) তাঁকে লক্ষ্য করে বললেন, ‘আমি যেন তোমাকে জান্নাতে সুস্থ ও স্বাভাবিক পায়ে হাঁটতে দেখছি।...’ (মুসনাদে আহমাদ)
ইসলাম শুধু প্রতিবন্ধীদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করেনি, বরং তাদের উপস্থিতিকে পৃথিবীর জন্য রহমত ও আশীর্বাদ বলা হয়েছে। রাসুল (সা.) বলেন, ‘তোমাদের সাহায্য করা হয় এবং রিজিক দেওয়া হয় কেবল তোমাদের দুর্বল শ্রেণির লোকদের অসিলায়।’ (বুখারি) প্রতিবন্ধীরা পৃথিবীতে আল্লাহর রহমত প্রবেশের দরজা। তাই সর্বদা তাদের সঙ্গে সদাচরণ করা উচিত।
লেখক: ইসলামবিষয়ক গবেষক

নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
৫ ঘণ্টা আগে
পবিত্র কোরআন ইসলাম ধর্মের মূল ভিত্তি, মানবজীবনের পূর্ণাঙ্গ দিকনির্দেশনা। এটি আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে প্রেরিত এক অনন্য অলৌকিক গ্রন্থ—যা শুধু ধর্মীয় উপদেশ নয় বরং একটি পূর্ণাঙ্গ জীবনবিধান। কোরআনের প্রত্যেকটি শব্দ, অক্ষর এবং অর্থে রয়েছে এমন গভীরতা ও প্রজ্ঞা যা মানবমস্তিষ্ককে চিন্তা ও গবেষণার জন্য...
১৪ ঘণ্টা আগে
আমরা আল্লাহ তাআলার দয়ায় বাঁচি। তাঁর দয়াতেই হাঁটি-চলি, সুখের ভেলায় জীবন ভাসাই। তাঁর দয়া ছাড়া এক মুহূর্তও বেঁচে থাকা সম্ভব নয়। কিন্তু আমরা যদি আল্লাহর দয়া পেতে চাই, তাহলে তাঁর সৃষ্টির প্রতি দয়ার নজর দিতে হবে। যারা অসহায়, তাদের পাশে দাঁড়াতে হবে।
১ দিন আগে
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
১ দিন আগেইসলাম ডেস্ক

জীবনকে সুশৃঙ্খল করতে এবং আল্লাহর সান্নিধ্য পেতে নামাজের কোনো বিকল্প নেই। একজন মুমিনের জন্য নামাজ হলো আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি কথোপকথনের মাধ্যম। এটি এমন এক ইবাদত—যা আমাদের মনে আধ্যাত্মিক প্রশান্তি আনে, জীবনের প্রতিটি কাজে আনে বরকত। প্রতিদিন সময় মতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর আবশ্যক। তাই জেনে নেওয়া যাক আজ কোন ওয়াক্তের নামাজ কখন আদায় করতে হবে।
আজ বুধবার, ০৫ নভেম্বর ২০২৫ ইংরেজি, ২০ কার্তিক ১৪৩২ বাংলা, ১৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭ হিজরি। ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকার নামাজের সময়সূচি তুলে ধরা হলো—
| নামাজ | ওয়াক্ত শুরু | ওয়াক্ত শেষ |
|---|---|---|
| তাহাজ্জুদ ও সেহরির শেষ সময় | ০০: ০০ | ০৪: ৪৮মিনিট |
| ফজর | ০৪: ৪৯ মিনিট | ০৬: ০৫ মিনিট |
| জোহর | ১১: ৪৩ মিনিট | ০৩: ৪০ মিনিট |
| আসর | ০৩: ৪১ মিনিট | ০৫: ১৬ মিনিট |
| মাগরিব | ০৫: ১৮ মিনিট | ০৬: ৩৩ মিনিট |
| এশা | ০৬: ৩৪ মিনিট | ০৪: ৪৮ মিনিট |
উল্লিখিত সময়ের সঙ্গে যেসব বিভাগের সময় যোগ-বিয়োগ করতে হবে, সেগুলো হলো:
বিয়োগ করতে হবে—
চট্টগ্রাম: ০৫ মিনিট
সিলেট: ০৬ মিনিট
যোগ করতে হবে—
খুলনা: ০৩ মিনিট
রাজশাহী: ০৭ মিনিট
রংপুর: ০৮ মিনিট
বরিশাল: ০১ মিনিট
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
আসুন, নামাজের মাধ্যমে আমরা নিজেদেরকে তাঁর আরও কাছে নিয়ে যাই। জীবনে নিয়ে আসি ইমানের নুর।

জীবনকে সুশৃঙ্খল করতে এবং আল্লাহর সান্নিধ্য পেতে নামাজের কোনো বিকল্প নেই। একজন মুমিনের জন্য নামাজ হলো আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি কথোপকথনের মাধ্যম। এটি এমন এক ইবাদত—যা আমাদের মনে আধ্যাত্মিক প্রশান্তি আনে, জীবনের প্রতিটি কাজে আনে বরকত। প্রতিদিন সময় মতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর আবশ্যক। তাই জেনে নেওয়া যাক আজ কোন ওয়াক্তের নামাজ কখন আদায় করতে হবে।
আজ বুধবার, ০৫ নভেম্বর ২০২৫ ইংরেজি, ২০ কার্তিক ১৪৩২ বাংলা, ১৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭ হিজরি। ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকার নামাজের সময়সূচি তুলে ধরা হলো—
| নামাজ | ওয়াক্ত শুরু | ওয়াক্ত শেষ |
|---|---|---|
| তাহাজ্জুদ ও সেহরির শেষ সময় | ০০: ০০ | ০৪: ৪৮মিনিট |
| ফজর | ০৪: ৪৯ মিনিট | ০৬: ০৫ মিনিট |
| জোহর | ১১: ৪৩ মিনিট | ০৩: ৪০ মিনিট |
| আসর | ০৩: ৪১ মিনিট | ০৫: ১৬ মিনিট |
| মাগরিব | ০৫: ১৮ মিনিট | ০৬: ৩৩ মিনিট |
| এশা | ০৬: ৩৪ মিনিট | ০৪: ৪৮ মিনিট |
উল্লিখিত সময়ের সঙ্গে যেসব বিভাগের সময় যোগ-বিয়োগ করতে হবে, সেগুলো হলো:
বিয়োগ করতে হবে—
চট্টগ্রাম: ০৫ মিনিট
সিলেট: ০৬ মিনিট
যোগ করতে হবে—
খুলনা: ০৩ মিনিট
রাজশাহী: ০৭ মিনিট
রংপুর: ০৮ মিনিট
বরিশাল: ০১ মিনিট
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
আসুন, নামাজের মাধ্যমে আমরা নিজেদেরকে তাঁর আরও কাছে নিয়ে যাই। জীবনে নিয়ে আসি ইমানের নুর।

পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেছেন, ‘আমি মানুষকে পরীক্ষা করার জন্য মিলিত শুক্রবিন্দু থেকে সৃষ্টি করেছি। (সুরা দাহর: ২) এ পরীক্ষারই অংশ হিসেবে কিছু মানুষকে তিনি শারীরিক বিভিন্ন নেয়ামত থেকে বঞ্চিত রেখেছেন—যাদের আমরা শারীরিক প্রতিবন্ধী বলে শনাক্ত করি।
০৩ ডিসেম্বর ২০২২
পবিত্র কোরআন ইসলাম ধর্মের মূল ভিত্তি, মানবজীবনের পূর্ণাঙ্গ দিকনির্দেশনা। এটি আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে প্রেরিত এক অনন্য অলৌকিক গ্রন্থ—যা শুধু ধর্মীয় উপদেশ নয় বরং একটি পূর্ণাঙ্গ জীবনবিধান। কোরআনের প্রত্যেকটি শব্দ, অক্ষর এবং অর্থে রয়েছে এমন গভীরতা ও প্রজ্ঞা যা মানবমস্তিষ্ককে চিন্তা ও গবেষণার জন্য...
১৪ ঘণ্টা আগে
আমরা আল্লাহ তাআলার দয়ায় বাঁচি। তাঁর দয়াতেই হাঁটি-চলি, সুখের ভেলায় জীবন ভাসাই। তাঁর দয়া ছাড়া এক মুহূর্তও বেঁচে থাকা সম্ভব নয়। কিন্তু আমরা যদি আল্লাহর দয়া পেতে চাই, তাহলে তাঁর সৃষ্টির প্রতি দয়ার নজর দিতে হবে। যারা অসহায়, তাদের পাশে দাঁড়াতে হবে।
১ দিন আগে
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
১ দিন আগেইসলাম ডেস্ক

পবিত্র কোরআন ইসলাম ধর্মের মূল ভিত্তি, মানবজীবনের পূর্ণাঙ্গ দিকনির্দেশনা। এটি আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে প্রেরিত এক অনন্য অলৌকিক গ্রন্থ—যা শুধু ধর্মীয় উপদেশ নয় বরং একটি পূর্ণাঙ্গ জীবনবিধান। কোরআনের প্রত্যেকটি শব্দ, অক্ষর এবং অর্থে রয়েছে এমন গভীরতা ও প্রজ্ঞা যা মানবমস্তিষ্ককে চিন্তা ও গবেষণার জন্য আহ্বান করে।
প্রায় ১৪০০ বছর আগে নিরক্ষর মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর ওপর এই কোরআন অবতীর্ণ হয়েছিল। তখনকার যুগে বিজ্ঞান, দর্শন, রাজনীতি কিংবা সমাজব্যবস্থা আজকের মতো এত উন্নত ছিল না, অথচ কোরআনের ভাষা, শৈলী ও ভাব এত উচ্চমানের যে, সে সময়ের শ্রেষ্ঠ কবি ও সাহিত্যিকরাও তা অনুকরণ করে তৈরি করতে পারেননি। কোরআনের এই ভাষাগত সৌন্দর্যই প্রমাণ করে এটি কোনো মানব রচিত গ্রন্থ হতে পারে না, বরং আল্লাহর বাণী।
কোরআনের নির্দেশনাগুলো শুধু মুসলমানদের জন্য নয় বরং সমগ্র মানবজাতির জন্য প্রযোজ্য। এটি মানুষকে ন্যায়, দয়া, শান্তি ও ভ্রাতৃত্ববোধ সম্পর্কে শেখায়। এতে বলা হয়েছে জ্ঞানার্জনের গুরুত্ব, সমাজে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার প্রয়োজনীয়তা এবং পরিবেশ ও মানবতার প্রতি দায়িত্ববোধের কথা, নারী-পুরুষের অধিকার, প্রাণীর অধিকার, সৃষ্টির অধিকারসহ এমন কোনো বিষয় নেই যে এতে বাদ আছে।
এমনকি আধুনিক বিজ্ঞান যখন মহাবিশ্ব, ভ্রূণের সৃষ্টি বা সমুদ্রের রহস্য উন্মোচন করছে, তখন দেখা যায়—মহাগ্রন্থ কোরআনে শত শত বছর আগেই সেসব বিষয় সম্পর্কে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে। শুধুমাত্র মাথা খাটিয়ে গবেষণা করে এগুলোর খুঁটিনাটি বিচার-বিশ্লেষণ, গভীর তত্ত্ব বের করতে হবে।
পবিত্র কোরআন এমন এক মুজিজা যা শতাব্দীর পর শতাব্দী পর্যন্ত মানব জাতির জন্য অনুসরণীয়। এটি শুধু একটি ধর্মগ্রন্থ নয় বরং এটি হৃদয়কে আলোয় ভরিয়ে দেয়, মনের অন্ধকার দূর করে এবং মানুষকে ন্যায় ও সত্যের পথে চলার শিক্ষা দেয়। যতই যুগ পরিবর্তিত হোক, যতই প্রযুক্তি উন্নত হোক—কোরআনের বাণী সব সময় সমানভাবে প্রাসঙ্গিক, প্রেরণাদায়ক ও চিরন্তন সত্যের প্রতীক।
কোরআনের সবচেয়ে বড় মুজিজা হলো এর অপরিবর্তনীয়তা। কেয়ামত পর্যন্ত পবিত্র কোরআনের একটি অক্ষরমাত্রও কেউ পরিবর্তন করতে পারবে না। আল্লাহ আমাদের সবাইকে কোরআন মোতাবেক জীবন পরিচালনা করার তৌফিক দান করুন।
লেখক: জনি সিদ্দিক, প্রাবন্ধিক

পবিত্র কোরআন ইসলাম ধর্মের মূল ভিত্তি, মানবজীবনের পূর্ণাঙ্গ দিকনির্দেশনা। এটি আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে প্রেরিত এক অনন্য অলৌকিক গ্রন্থ—যা শুধু ধর্মীয় উপদেশ নয় বরং একটি পূর্ণাঙ্গ জীবনবিধান। কোরআনের প্রত্যেকটি শব্দ, অক্ষর এবং অর্থে রয়েছে এমন গভীরতা ও প্রজ্ঞা যা মানবমস্তিষ্ককে চিন্তা ও গবেষণার জন্য আহ্বান করে।
প্রায় ১৪০০ বছর আগে নিরক্ষর মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর ওপর এই কোরআন অবতীর্ণ হয়েছিল। তখনকার যুগে বিজ্ঞান, দর্শন, রাজনীতি কিংবা সমাজব্যবস্থা আজকের মতো এত উন্নত ছিল না, অথচ কোরআনের ভাষা, শৈলী ও ভাব এত উচ্চমানের যে, সে সময়ের শ্রেষ্ঠ কবি ও সাহিত্যিকরাও তা অনুকরণ করে তৈরি করতে পারেননি। কোরআনের এই ভাষাগত সৌন্দর্যই প্রমাণ করে এটি কোনো মানব রচিত গ্রন্থ হতে পারে না, বরং আল্লাহর বাণী।
কোরআনের নির্দেশনাগুলো শুধু মুসলমানদের জন্য নয় বরং সমগ্র মানবজাতির জন্য প্রযোজ্য। এটি মানুষকে ন্যায়, দয়া, শান্তি ও ভ্রাতৃত্ববোধ সম্পর্কে শেখায়। এতে বলা হয়েছে জ্ঞানার্জনের গুরুত্ব, সমাজে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার প্রয়োজনীয়তা এবং পরিবেশ ও মানবতার প্রতি দায়িত্ববোধের কথা, নারী-পুরুষের অধিকার, প্রাণীর অধিকার, সৃষ্টির অধিকারসহ এমন কোনো বিষয় নেই যে এতে বাদ আছে।
এমনকি আধুনিক বিজ্ঞান যখন মহাবিশ্ব, ভ্রূণের সৃষ্টি বা সমুদ্রের রহস্য উন্মোচন করছে, তখন দেখা যায়—মহাগ্রন্থ কোরআনে শত শত বছর আগেই সেসব বিষয় সম্পর্কে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে। শুধুমাত্র মাথা খাটিয়ে গবেষণা করে এগুলোর খুঁটিনাটি বিচার-বিশ্লেষণ, গভীর তত্ত্ব বের করতে হবে।
পবিত্র কোরআন এমন এক মুজিজা যা শতাব্দীর পর শতাব্দী পর্যন্ত মানব জাতির জন্য অনুসরণীয়। এটি শুধু একটি ধর্মগ্রন্থ নয় বরং এটি হৃদয়কে আলোয় ভরিয়ে দেয়, মনের অন্ধকার দূর করে এবং মানুষকে ন্যায় ও সত্যের পথে চলার শিক্ষা দেয়। যতই যুগ পরিবর্তিত হোক, যতই প্রযুক্তি উন্নত হোক—কোরআনের বাণী সব সময় সমানভাবে প্রাসঙ্গিক, প্রেরণাদায়ক ও চিরন্তন সত্যের প্রতীক।
কোরআনের সবচেয়ে বড় মুজিজা হলো এর অপরিবর্তনীয়তা। কেয়ামত পর্যন্ত পবিত্র কোরআনের একটি অক্ষরমাত্রও কেউ পরিবর্তন করতে পারবে না। আল্লাহ আমাদের সবাইকে কোরআন মোতাবেক জীবন পরিচালনা করার তৌফিক দান করুন।
লেখক: জনি সিদ্দিক, প্রাবন্ধিক

পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেছেন, ‘আমি মানুষকে পরীক্ষা করার জন্য মিলিত শুক্রবিন্দু থেকে সৃষ্টি করেছি। (সুরা দাহর: ২) এ পরীক্ষারই অংশ হিসেবে কিছু মানুষকে তিনি শারীরিক বিভিন্ন নেয়ামত থেকে বঞ্চিত রেখেছেন—যাদের আমরা শারীরিক প্রতিবন্ধী বলে শনাক্ত করি।
০৩ ডিসেম্বর ২০২২
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
৫ ঘণ্টা আগে
আমরা আল্লাহ তাআলার দয়ায় বাঁচি। তাঁর দয়াতেই হাঁটি-চলি, সুখের ভেলায় জীবন ভাসাই। তাঁর দয়া ছাড়া এক মুহূর্তও বেঁচে থাকা সম্ভব নয়। কিন্তু আমরা যদি আল্লাহর দয়া পেতে চাই, তাহলে তাঁর সৃষ্টির প্রতি দয়ার নজর দিতে হবে। যারা অসহায়, তাদের পাশে দাঁড়াতে হবে।
১ দিন আগে
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
১ দিন আগেইসলাম ডেস্ক

আমরা আল্লাহ তাআলার দয়ায় বাঁচি। তাঁর দয়াতেই হাঁটি-চলি, সুখের ভেলায় জীবন ভাসাই। তাঁর দয়া ছাড়া এক মুহূর্তও বেঁচে থাকা সম্ভব নয়। কিন্তু আমরা যদি আল্লাহর দয়া পেতে চাই, তাহলে তাঁর সৃষ্টির প্রতি দয়ার নজর দিতে হবে। যারা অসহায়, তাদের পাশে দাঁড়াতে হবে।
যারা অনাহারী তাদের মুখে খাদ্য তুলে দিতে হবে। দয়ার নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) বলেন, ‘দয়াশীলদের প্রতি করুণাময় আল্লাহ দয়া করেন। তোমরা দুনিয়াবাসীকে দয়া করো, তাহলে যিনি আসমানে আছেন, তিনি তোমাদের দয়া করবেন।’ (সুনানে আবু দাউদ: ৪৯৪১)
মানুষ সমাজবদ্ধ হয়ে বাস করে। তবে সমাজের সবাই সমান ভাগ্যবান নয়—কেউ কেউ আর্থিক, শারীরিক বা মানসিক দিক থেকে অসহায় অবস্থায় দিন কাটান। তাঁদের পাশে দাঁড়ানো অনেক বড় সওয়াবের কাজ। এ ছাড়া মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকেও অসহায়ের সাহায্যে এগিয়ে আসা অত্যন্ত মহৎ কাজ। ইসলামে এ বিষয়টিতে খুব গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘পূর্ব ও পশ্চিমে মুখ ফেরানোটাই সৎকর্ম নয়, বরং প্রকৃত সৎকর্মশীল ওই ব্যক্তি, যে বিশ্বাস স্থাপন করে আল্লাহ, পরকাল, ফেরেশতা, আল্লাহর কিতাব ও নবীদের ওপর এবং যে ব্যক্তি আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে সম্পদ ব্যয় করে নিকটাত্মীয়, এতিম, মিসকিন, মুসাফির, প্রার্থী ও দাস মুক্তির জন্য।’ (সুরা বাকারা: ১৭৭)
মহান আল্লাহ আরও বলেন, ‘যারা নিজের সম্পদ দিনে বা রাতে, প্রকাশ্যে অথবা গোপনে আল্লাহর পথে খরচ করে; তাদের পুরস্কার তাদের প্রতিপালকের কাছে আছে। তাদের কোনো ভয় নেই। তাদের কোনো চিন্তাও নেই।’ (সুরা বাকারা: ২৭৪)
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি দুনিয়ায় অন্যের একটি প্রয়োজন মিটিয়ে দেবে, পরকালে আল্লাহ তার ১০০ প্রয়োজন পূরণ করে দেবেন এবং বান্দার দুঃখ-দুর্দশায় কেউ সহযোগিতার হাত বাড়ালে আল্লাহ তার প্রতি করুণার দৃষ্টি দেন।’ (সহিহ মুসলিম: ২৫৬৬)

আমরা আল্লাহ তাআলার দয়ায় বাঁচি। তাঁর দয়াতেই হাঁটি-চলি, সুখের ভেলায় জীবন ভাসাই। তাঁর দয়া ছাড়া এক মুহূর্তও বেঁচে থাকা সম্ভব নয়। কিন্তু আমরা যদি আল্লাহর দয়া পেতে চাই, তাহলে তাঁর সৃষ্টির প্রতি দয়ার নজর দিতে হবে। যারা অসহায়, তাদের পাশে দাঁড়াতে হবে।
যারা অনাহারী তাদের মুখে খাদ্য তুলে দিতে হবে। দয়ার নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) বলেন, ‘দয়াশীলদের প্রতি করুণাময় আল্লাহ দয়া করেন। তোমরা দুনিয়াবাসীকে দয়া করো, তাহলে যিনি আসমানে আছেন, তিনি তোমাদের দয়া করবেন।’ (সুনানে আবু দাউদ: ৪৯৪১)
মানুষ সমাজবদ্ধ হয়ে বাস করে। তবে সমাজের সবাই সমান ভাগ্যবান নয়—কেউ কেউ আর্থিক, শারীরিক বা মানসিক দিক থেকে অসহায় অবস্থায় দিন কাটান। তাঁদের পাশে দাঁড়ানো অনেক বড় সওয়াবের কাজ। এ ছাড়া মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকেও অসহায়ের সাহায্যে এগিয়ে আসা অত্যন্ত মহৎ কাজ। ইসলামে এ বিষয়টিতে খুব গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘পূর্ব ও পশ্চিমে মুখ ফেরানোটাই সৎকর্ম নয়, বরং প্রকৃত সৎকর্মশীল ওই ব্যক্তি, যে বিশ্বাস স্থাপন করে আল্লাহ, পরকাল, ফেরেশতা, আল্লাহর কিতাব ও নবীদের ওপর এবং যে ব্যক্তি আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে সম্পদ ব্যয় করে নিকটাত্মীয়, এতিম, মিসকিন, মুসাফির, প্রার্থী ও দাস মুক্তির জন্য।’ (সুরা বাকারা: ১৭৭)
মহান আল্লাহ আরও বলেন, ‘যারা নিজের সম্পদ দিনে বা রাতে, প্রকাশ্যে অথবা গোপনে আল্লাহর পথে খরচ করে; তাদের পুরস্কার তাদের প্রতিপালকের কাছে আছে। তাদের কোনো ভয় নেই। তাদের কোনো চিন্তাও নেই।’ (সুরা বাকারা: ২৭৪)
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি দুনিয়ায় অন্যের একটি প্রয়োজন মিটিয়ে দেবে, পরকালে আল্লাহ তার ১০০ প্রয়োজন পূরণ করে দেবেন এবং বান্দার দুঃখ-দুর্দশায় কেউ সহযোগিতার হাত বাড়ালে আল্লাহ তার প্রতি করুণার দৃষ্টি দেন।’ (সহিহ মুসলিম: ২৫৬৬)

পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেছেন, ‘আমি মানুষকে পরীক্ষা করার জন্য মিলিত শুক্রবিন্দু থেকে সৃষ্টি করেছি। (সুরা দাহর: ২) এ পরীক্ষারই অংশ হিসেবে কিছু মানুষকে তিনি শারীরিক বিভিন্ন নেয়ামত থেকে বঞ্চিত রেখেছেন—যাদের আমরা শারীরিক প্রতিবন্ধী বলে শনাক্ত করি।
০৩ ডিসেম্বর ২০২২
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
৫ ঘণ্টা আগে
পবিত্র কোরআন ইসলাম ধর্মের মূল ভিত্তি, মানবজীবনের পূর্ণাঙ্গ দিকনির্দেশনা। এটি আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে প্রেরিত এক অনন্য অলৌকিক গ্রন্থ—যা শুধু ধর্মীয় উপদেশ নয় বরং একটি পূর্ণাঙ্গ জীবনবিধান। কোরআনের প্রত্যেকটি শব্দ, অক্ষর এবং অর্থে রয়েছে এমন গভীরতা ও প্রজ্ঞা যা মানবমস্তিষ্ককে চিন্তা ও গবেষণার জন্য...
১৪ ঘণ্টা আগে
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
১ দিন আগেইসলাম ডেস্ক

জীবনকে সুশৃঙ্খল করতে এবং আল্লাহর সান্নিধ্য পেতে নামাজের কোনো বিকল্প নেই। একজন মুমিনের জন্য নামাজ হলো আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি কথোপকথনের মাধ্যম। এটি এমন এক ইবাদত—যা আমাদের মনে আধ্যাত্মিক প্রশান্তি আনে, জীবনের প্রতিটি কাজে আনে বরকত। প্রতিদিন সময় মতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর আবশ্যক। তাই জেনে নেওয়া যাক আজ কোন ওয়াক্তের নামাজ কখন আদায় করতে হবে।
আজ মঙ্গলবার, ০৪ নভেম্বর ২০২৫ ইংরেজি, ১৯ কার্তিক ১৪৩২ বাংলা, ১২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭ হিজরি। ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকার নামাজের সময়সূচি তুলে ধরা হলো—
| নামাজ | ওয়াক্ত শুরু | ওয়াক্ত শেষ |
|---|---|---|
| তাহাজ্জুদ ও সেহরির শেষ সময় | ০০: ০০ | ০৪: ৪৮ মিনিট |
| ফজর | ০৪: ৪৯ মিনিট | ০৬: ০৫ মিনিট |
| জোহর | ১১: ৪৩ মিনিট | ০৩: ৪১ মিনিট |
| আসর | ০৩: ৪২ মিনিট | ০৫: ১৭ মিনিট |
| মাগরিব | ০৫: ১৯ মিনিট | ০৬: ৩৪ মিনিট |
| এশা | ০৬: ৩৫ মিনিট | ০৪: ৪৮ মিনিট |
উল্লিখিত সময়ের সঙ্গে যেসব বিভাগের সময় যোগ-বিয়োগ করতে হবে, সেগুলো হলো:
বিয়োগ করতে হবে—
চট্টগ্রাম: ০৫ মিনিট
সিলেট: ০৬ মিনিট
যোগ করতে হবে—
খুলনা: ০৩ মিনিট
রাজশাহী: ০৭ মিনিট
রংপুর: ০৮ মিনিট
বরিশাল: ০১ মিনিট
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
আসুন, নামাজের মাধ্যমে আমরা নিজেদেরকে তাঁর আরও কাছে নিয়ে যাই। জীবনে নিয়ে আসি ইমানের নুর।

জীবনকে সুশৃঙ্খল করতে এবং আল্লাহর সান্নিধ্য পেতে নামাজের কোনো বিকল্প নেই। একজন মুমিনের জন্য নামাজ হলো আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি কথোপকথনের মাধ্যম। এটি এমন এক ইবাদত—যা আমাদের মনে আধ্যাত্মিক প্রশান্তি আনে, জীবনের প্রতিটি কাজে আনে বরকত। প্রতিদিন সময় মতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর আবশ্যক। তাই জেনে নেওয়া যাক আজ কোন ওয়াক্তের নামাজ কখন আদায় করতে হবে।
আজ মঙ্গলবার, ০৪ নভেম্বর ২০২৫ ইংরেজি, ১৯ কার্তিক ১৪৩২ বাংলা, ১২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭ হিজরি। ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকার নামাজের সময়সূচি তুলে ধরা হলো—
| নামাজ | ওয়াক্ত শুরু | ওয়াক্ত শেষ |
|---|---|---|
| তাহাজ্জুদ ও সেহরির শেষ সময় | ০০: ০০ | ০৪: ৪৮ মিনিট |
| ফজর | ০৪: ৪৯ মিনিট | ০৬: ০৫ মিনিট |
| জোহর | ১১: ৪৩ মিনিট | ০৩: ৪১ মিনিট |
| আসর | ০৩: ৪২ মিনিট | ০৫: ১৭ মিনিট |
| মাগরিব | ০৫: ১৯ মিনিট | ০৬: ৩৪ মিনিট |
| এশা | ০৬: ৩৫ মিনিট | ০৪: ৪৮ মিনিট |
উল্লিখিত সময়ের সঙ্গে যেসব বিভাগের সময় যোগ-বিয়োগ করতে হবে, সেগুলো হলো:
বিয়োগ করতে হবে—
চট্টগ্রাম: ০৫ মিনিট
সিলেট: ০৬ মিনিট
যোগ করতে হবে—
খুলনা: ০৩ মিনিট
রাজশাহী: ০৭ মিনিট
রংপুর: ০৮ মিনিট
বরিশাল: ০১ মিনিট
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
আসুন, নামাজের মাধ্যমে আমরা নিজেদেরকে তাঁর আরও কাছে নিয়ে যাই। জীবনে নিয়ে আসি ইমানের নুর।

পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেছেন, ‘আমি মানুষকে পরীক্ষা করার জন্য মিলিত শুক্রবিন্দু থেকে সৃষ্টি করেছি। (সুরা দাহর: ২) এ পরীক্ষারই অংশ হিসেবে কিছু মানুষকে তিনি শারীরিক বিভিন্ন নেয়ামত থেকে বঞ্চিত রেখেছেন—যাদের আমরা শারীরিক প্রতিবন্ধী বলে শনাক্ত করি।
০৩ ডিসেম্বর ২০২২
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
৫ ঘণ্টা আগে
পবিত্র কোরআন ইসলাম ধর্মের মূল ভিত্তি, মানবজীবনের পূর্ণাঙ্গ দিকনির্দেশনা। এটি আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে প্রেরিত এক অনন্য অলৌকিক গ্রন্থ—যা শুধু ধর্মীয় উপদেশ নয় বরং একটি পূর্ণাঙ্গ জীবনবিধান। কোরআনের প্রত্যেকটি শব্দ, অক্ষর এবং অর্থে রয়েছে এমন গভীরতা ও প্রজ্ঞা যা মানবমস্তিষ্ককে চিন্তা ও গবেষণার জন্য...
১৪ ঘণ্টা আগে
আমরা আল্লাহ তাআলার দয়ায় বাঁচি। তাঁর দয়াতেই হাঁটি-চলি, সুখের ভেলায় জীবন ভাসাই। তাঁর দয়া ছাড়া এক মুহূর্তও বেঁচে থাকা সম্ভব নয়। কিন্তু আমরা যদি আল্লাহর দয়া পেতে চাই, তাহলে তাঁর সৃষ্টির প্রতি দয়ার নজর দিতে হবে। যারা অসহায়, তাদের পাশে দাঁড়াতে হবে।
১ দিন আগে