আবদুল আযীয কাসেমি
ইসলামের ইতিহাসে যেসব মনীষী তাঁদের অবদান ও কীর্তির কারণে প্রোজ্জ্বল হয়ে আছেন এবং আজ পর্যন্ত মুসলিম জাতি তাঁদের কীর্তি থেকে উপকৃত হচ্ছে, তাঁদের মধ্যে অন্যতম হলেন ইমাম আবু ইসা তিরমিজি। তাঁর বিখ্যাত গ্রন্থ ‘জামে তিরমিজি’ হাদিসশাস্ত্র ও ইসলামি আইনশাস্ত্রের অন্যতম রেফারেন্স গ্রন্থের মর্যাদা লাভ করেছে।
ইমাম তিরমিজির পূর্ণ নাম মুহাম্মদ ইবনে ইসা ইবনে ইয়াজিদ ইবনে সাওরা। উপনাম আবু ইসা। কারও মতে, তিনি ছিলেন জন্মান্ধ। কিন্তু এ দাবি সঠিক নয়। তিনি জীবনের শেষ প্রান্তে অতিরিক্ত কান্নার কারণে দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে ফেলেন। বর্তমান উজবেকিস্তানের আমু দরিয়ার নিকটবর্তী শহর তিরমিজে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। ঐতিহাসিক হাফেজ জাহাবির মতে, তিনি ২১০ হিজরির (৮২৪ খ্রি.) আগে জন্মগ্রহণ করেন।
ইমাম তিরমিজি শৈশব থেকেই হাদিস ও ফিকহ চর্চায় মনোযোগী হন। উভয় ক্ষেত্রেই তিনি সমকালীনদের ছাড়িয়ে যেতে সক্ষম হন। জ্ঞানার্জনের প্রয়োজনে খোরাসান, ইরাক ও হারামাইনে ভ্রমণ করেন। সেখানকার নামকরা শিক্ষকদের কাছে হাদিসের পাঠ গ্রহণ করেন। তবে সিরিয়া ও মিসরে যেতে পারেননি। তাঁর শিক্ষকদের মধ্যে রয়েছেন ইমাম ইসহাক ইবনে রাহওয়াইহ, আহমদ ইবনে মানি, মাহমুদ ইবনে গাইলান, আমর ইবনে আলি আল ফাল্লাস, হান্নাদ ইবনে সারি প্রমুখ। তবে তিনি সবচেয়ে বেশি উপকৃত হয়েছেন জগদ্বিখ্যাত হাদিসবিশারদ ইমাম বুখারির কাছ থেকে। তাঁর সংকলিত ‘জামে তিরমিজি’তে ইমাম বুখারির বহু বক্তব্য উল্লেখ করেছেন।
ইমাম তিরমিজি বেশ কয়েকটি গ্রন্থ রচনা করেছেন। হাদিসের বিশাল সংকলন জামে তিরমিজি ছাড়াও তিনি লিখেছেন: কিতাবুল ইলাল ও শামায়েলে তিরমিজি। এ ছাড়া আরও কিছু গ্রন্থ রচনা করেছেন। তবে তাঁর শ্রেষ্ঠ কীর্তি জামে তিরমিজি।
ঐতিহাসিক ও মুহাদ্দিস হাফেজ জাহাবি এ গ্রন্থটিকে মূল্যায়ন করে বলেন, ‘উপকারী জ্ঞান ও বিপুল তথ্যসমৃদ্ধ একটি গ্রন্থ। এতে মৌলিক সব বিষয় স্থান পেয়েছে। ইসলামের একটি অন্যতম মৌলিক বই এটি। তিনি যদি কিছু অগ্রহণযোগ্য হাদিস উল্লেখ না করতেন, তাহলে আরও ভালো হতো। তবে সেগুলো সংখ্যায় খুব সামান্য।’ (সিয়ারু আলামিন নুবালা: ১৩ / ২৭৪)
সুনানে তিরমিজিতে মোট ৩ হাজার ৯৫৬টি হাদিস সংকলিত হয়েছে। এই হাদিসগুলো বিভিন্ন বিষয়বস্তু যেমন ইমান, ইবাদত, আচার-ব্যবহার, সামাজিক সম্পর্ক ইত্যাদি নিয়ে আলোচনা করে। সুনানে তিরমিজির বৈশিষ্ট্যের মধ্যে রয়েছে—
হাদিসের শ্রেণিবিভাগ: ইমাম তিরমিজি (রহ.) হাদিসগুলোকে ফিকহি অধ্যায় অনুযায়ী বিন্যস্ত করেছেন, যা পাঠকদের জন্য সহজবোধ্য।
হাদিসের মান নির্ণয়: প্রতিটি হাদিসের সনদ (বর্ণনাসূত্র) বিশ্লেষণ করে হাদিসের মান (সহিহ, হাসান, দুর্বল) উল্লেখ করেছেন। এটি তাঁর কিতাবের একটি অনন্য বৈশিষ্ট্য।
ফিকহি মতামত: তিনি হাদিসের আলোকে বিভিন্ন ফিকহি মাজহাবের মতামত তুলে ধরেছেন, যা পাঠকদের জন্য একটি তুলনামূলক বিশ্লেষণ প্রদান করে।
হাদিসের ব্যাখ্যা: কিছু হাদিসের ব্যাখ্যা ও বিশ্লেষণও তিনি সংযুক্ত করেছেন, যা হাদিসের বোধগম্যতা বাড়ায়।
হাসান হাদিসের সংকলন: ইমাম তিরমিজি (রহ.) ‘হাসান’ হাদিস সংকলনের ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা রেখেছেন। তাঁর সংকলনে প্রচুর হাসান হাদিস রয়েছে, যা অন্যান্য হাদিস গ্রন্থে কম দেখা যায়।
ইমাম তিরমিজি জ্ঞানে-গুণে সমৃদ্ধ একটি জীবন কাটানোর পর ২৭৯ হিজরির (৮৯২ খ্রি.) রজব মাসের ১৩ তারিখে আল্লাহর সান্নিধ্যে গমন করেন। মাতৃভূমি তিরমিজেই তাঁকে সমাধিস্থ করা হয়।
ইসলামের ইতিহাসে যেসব মনীষী তাঁদের অবদান ও কীর্তির কারণে প্রোজ্জ্বল হয়ে আছেন এবং আজ পর্যন্ত মুসলিম জাতি তাঁদের কীর্তি থেকে উপকৃত হচ্ছে, তাঁদের মধ্যে অন্যতম হলেন ইমাম আবু ইসা তিরমিজি। তাঁর বিখ্যাত গ্রন্থ ‘জামে তিরমিজি’ হাদিসশাস্ত্র ও ইসলামি আইনশাস্ত্রের অন্যতম রেফারেন্স গ্রন্থের মর্যাদা লাভ করেছে।
ইমাম তিরমিজির পূর্ণ নাম মুহাম্মদ ইবনে ইসা ইবনে ইয়াজিদ ইবনে সাওরা। উপনাম আবু ইসা। কারও মতে, তিনি ছিলেন জন্মান্ধ। কিন্তু এ দাবি সঠিক নয়। তিনি জীবনের শেষ প্রান্তে অতিরিক্ত কান্নার কারণে দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে ফেলেন। বর্তমান উজবেকিস্তানের আমু দরিয়ার নিকটবর্তী শহর তিরমিজে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। ঐতিহাসিক হাফেজ জাহাবির মতে, তিনি ২১০ হিজরির (৮২৪ খ্রি.) আগে জন্মগ্রহণ করেন।
ইমাম তিরমিজি শৈশব থেকেই হাদিস ও ফিকহ চর্চায় মনোযোগী হন। উভয় ক্ষেত্রেই তিনি সমকালীনদের ছাড়িয়ে যেতে সক্ষম হন। জ্ঞানার্জনের প্রয়োজনে খোরাসান, ইরাক ও হারামাইনে ভ্রমণ করেন। সেখানকার নামকরা শিক্ষকদের কাছে হাদিসের পাঠ গ্রহণ করেন। তবে সিরিয়া ও মিসরে যেতে পারেননি। তাঁর শিক্ষকদের মধ্যে রয়েছেন ইমাম ইসহাক ইবনে রাহওয়াইহ, আহমদ ইবনে মানি, মাহমুদ ইবনে গাইলান, আমর ইবনে আলি আল ফাল্লাস, হান্নাদ ইবনে সারি প্রমুখ। তবে তিনি সবচেয়ে বেশি উপকৃত হয়েছেন জগদ্বিখ্যাত হাদিসবিশারদ ইমাম বুখারির কাছ থেকে। তাঁর সংকলিত ‘জামে তিরমিজি’তে ইমাম বুখারির বহু বক্তব্য উল্লেখ করেছেন।
ইমাম তিরমিজি বেশ কয়েকটি গ্রন্থ রচনা করেছেন। হাদিসের বিশাল সংকলন জামে তিরমিজি ছাড়াও তিনি লিখেছেন: কিতাবুল ইলাল ও শামায়েলে তিরমিজি। এ ছাড়া আরও কিছু গ্রন্থ রচনা করেছেন। তবে তাঁর শ্রেষ্ঠ কীর্তি জামে তিরমিজি।
ঐতিহাসিক ও মুহাদ্দিস হাফেজ জাহাবি এ গ্রন্থটিকে মূল্যায়ন করে বলেন, ‘উপকারী জ্ঞান ও বিপুল তথ্যসমৃদ্ধ একটি গ্রন্থ। এতে মৌলিক সব বিষয় স্থান পেয়েছে। ইসলামের একটি অন্যতম মৌলিক বই এটি। তিনি যদি কিছু অগ্রহণযোগ্য হাদিস উল্লেখ না করতেন, তাহলে আরও ভালো হতো। তবে সেগুলো সংখ্যায় খুব সামান্য।’ (সিয়ারু আলামিন নুবালা: ১৩ / ২৭৪)
সুনানে তিরমিজিতে মোট ৩ হাজার ৯৫৬টি হাদিস সংকলিত হয়েছে। এই হাদিসগুলো বিভিন্ন বিষয়বস্তু যেমন ইমান, ইবাদত, আচার-ব্যবহার, সামাজিক সম্পর্ক ইত্যাদি নিয়ে আলোচনা করে। সুনানে তিরমিজির বৈশিষ্ট্যের মধ্যে রয়েছে—
হাদিসের শ্রেণিবিভাগ: ইমাম তিরমিজি (রহ.) হাদিসগুলোকে ফিকহি অধ্যায় অনুযায়ী বিন্যস্ত করেছেন, যা পাঠকদের জন্য সহজবোধ্য।
হাদিসের মান নির্ণয়: প্রতিটি হাদিসের সনদ (বর্ণনাসূত্র) বিশ্লেষণ করে হাদিসের মান (সহিহ, হাসান, দুর্বল) উল্লেখ করেছেন। এটি তাঁর কিতাবের একটি অনন্য বৈশিষ্ট্য।
ফিকহি মতামত: তিনি হাদিসের আলোকে বিভিন্ন ফিকহি মাজহাবের মতামত তুলে ধরেছেন, যা পাঠকদের জন্য একটি তুলনামূলক বিশ্লেষণ প্রদান করে।
হাদিসের ব্যাখ্যা: কিছু হাদিসের ব্যাখ্যা ও বিশ্লেষণও তিনি সংযুক্ত করেছেন, যা হাদিসের বোধগম্যতা বাড়ায়।
হাসান হাদিসের সংকলন: ইমাম তিরমিজি (রহ.) ‘হাসান’ হাদিস সংকলনের ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা রেখেছেন। তাঁর সংকলনে প্রচুর হাসান হাদিস রয়েছে, যা অন্যান্য হাদিস গ্রন্থে কম দেখা যায়।
ইমাম তিরমিজি জ্ঞানে-গুণে সমৃদ্ধ একটি জীবন কাটানোর পর ২৭৯ হিজরির (৮৯২ খ্রি.) রজব মাসের ১৩ তারিখে আল্লাহর সান্নিধ্যে গমন করেন। মাতৃভূমি তিরমিজেই তাঁকে সমাধিস্থ করা হয়।
মানুষের জীবনের প্রতিটি কাজের মধ্যে মহানবী (সা.)-এর উত্তম আদর্শ বিদ্যমান। আমাদের দৈনন্দিন জীবনের প্রতিটি অধ্যায় তাঁর দেখানো পথ অনুসরণ করে সাজানো উচিত। খাবার গ্রহণ জীবনের একটি অপরিহার্য কাজ। যদি এ খাবার গ্রহণও মহানবী (সা.)-এর সুন্নাহ অনুযায়ী করা হয়, তাহলে ক্ষুধার নিবারণ হওয়ার পাশাপাশি এর মাধ্যমে...
১ দিন আগেজুমার খুতবা চলাকালে মোবাইল ব্যবহার করা যাবে? যেমন ফেসবুক স্ক্রল করা, মেসেঞ্জার চেক করা ইত্যাদি। এ বিষয়ে ইসলামের নির্দেশনা জানতে চাই।
২ দিন আগেজুমার নামাজ সপ্তাহের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। এটি মসজিদে গিয়ে জামাতের সঙ্গে আদায় করতে হয়। এটি মুসলমানদের সাপ্তাহিক ঈদের দিন। প্রাপ্তবয়স্ক ও মানসিকভাবে সুস্থ সব পুরুষের জন্য জুমার নামাজ আদায় করা ফরজ। জুমার খুতবা শোনাও ওয়াজিব। তাই জুমার জন্য আগেভাগে প্রস্তুতি নিয়ে মসজিদে উপস্থিত হওয়া মুমিনের...
২ দিন আগেজুলুম এক অন্ধকার, যা মানবতাকে গ্রাস করার চেষ্টা করেছে প্রতিটি যুগে। কিন্তু চিরন্তন সত্য হলো, জুলুম ক্ষণস্থায়ী, আর মজলুমের বিজয় সুনিশ্চিত। মজলুমের কান্না আল্লাহর আরশ পর্যন্ত পৌঁছে যায়। তার দোয়ার মধ্যে কোনো পর্দা থাকে না। নবীজি (সা.) সতর্ক করে বলেছেন, ‘মজলুমের দোয়াকে ভয় করো। কারণ, তার (দোয়া) এবং আল্লা
২ দিন আগে