আসআদ শাহীন
বিশ্বজগতে বিস্তৃত প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের নানা নিদর্শনের মাঝে এমন কিছু স্থান রয়েছে, যা কেবল চোখে দেখার জন্য নয়—বরং অন্তরে উপলব্ধির জন্য। তেমনই এক আশ্চর্য সৃষ্টি চীনের ‘জানজাই ডেনজিয়া ল্যান্ডফর্ম জিওলজিক্যাল পার্ক’–এ অবস্থিত ‘রংধনু পাহাড়’ বা ‘রেইনবো মাউন্টেন’, যা নানা রঙের স্তরে স্তরে গঠিত এক অসামান্য সৌন্দর্য। এই পাহাড় দেখে মনে হয় যেন মহান কোনো শিল্পীর রংতুলি দিয়ে সযত্নে আঁকা। তবে এই রঙিন শিলার ঢেউ শুধু সৌন্দর্য নয়—ইমানদারদের কাছে এটি এক পরম সত্যের নিদর্শন, যাকে আমরা কোরআনের আলোকে আরও গভীরভাবে উপলব্ধি করতে পারি।
রেইনবো মাউন্টেনের ভূতাত্ত্বিক পরিচয়
চীনের গানসু প্রদেশে অবস্থিত এই পাহাড় অঞ্চলটি মূলত ‘ডেনজিয়া ল্যান্ডফর্ম’ নামে পরিচিত। ভূবিজ্ঞানীদের গবেষণা অনুযায়ী, প্রায় ২৪ মিলিয়ন বছর ধরে গঠিত এই স্তরবিন্যাস মূলত লাল বালুকা পাথর এবং অন্যান্য খনিজ পদার্থের জারণ বিক্রিয়ায় গঠিত হয়েছে। তবে রঙিন রেখার সুষম বিন্যাস ও বৈচিত্র্য দেখে মনে হয় যেন এটি একটি কল্পনার জগৎ। লাল, কমলা, হলুদ, নীল, সবুজ—সব রঙের নিখুঁত ভারসাম্য যেন পাহাড়ের প্রতিটি বাঁকে এক নতুন কবিতা রচনা করে। যে দিকে চোখ যায় সে দিকেই রং। এই পাহাড় আসমানি, কমলা, লাল, হলুদ, সবুজ—সব রঙে রাঙা। প্রকৃতি আপন মনের মাধুরী মিশিয়ে সুবিশাল ক্যানভাসে তুলির টানে সৃষ্টি করেছে এই রংমহল।
ভূবিজ্ঞানীরা বলেন, টেকটনিক প্লেটের সংঘর্ষের ফলে শুষ্ক পর্বতগাত্রে এমন রংধনুর সাত রং ফুটে উঠেছে। টেকটনিক প্লেটের সংঘর্ষের ফলে ভূগর্ভ থেকে বেরিয়ে এসেছিল শিলাস্তর। শিলাস্তরে ছিল প্রচুর খনিজ পদার্থ, রঙিন সিলিকাসহ নানা উপাদান। বহু বছর ধরে ঋতু পরিবর্তন, ঝড়, বৃষ্টি, তুষারপাত, নানা রকম রাসায়নিক বিক্রিয়ায় রূপ পরিবর্তন করতে করতে তৈরি হয়েছে বর্তমানের রেইনবো মাউন্টেন। কিন্তু এই নিখুঁত শৈল্পিক বিন্যাস কি কেবল প্রকৃতির সপ্তম আশ্চর্যের খেলা?
আল্লাহর নিদর্শন হিসেবে প্রকৃতি
পবিত্র কোরআন বারবার আমাদের চোখ ফেরাতে বলেন প্রকৃতির দিকে, কারণ প্রকৃতির সৌন্দর্য ‘আয়াত’ অর্থাৎ আল্লাহর নিদর্শন। কোরআনে বলা হয়েছে: ‘তুমি কি দেখ না যে আল্লাহ আকাশ থেকে পানি বর্ষণ করেন, অতঃপর তা দ্বারা বিভিন্ন রঙের ফলমূল উৎপন্ন করেন? আর পাহাড়গুলোতেও রয়েছে সাদা, লাল এবং নানান রঙের রেখাযুক্ত অংশ এবং নিকষ কালো।’ (সুরা ফাতির: ২৭)
প্রখ্যাত মুফাসসির শায়খ আবদুর রহমান আস-সাদি (রহ.) বলেন, আল্লাহ তাআলা যেভাবে পৃথিবীকে স্থিতিশীল রাখার জন্য পর্বতমালা সৃষ্টি করেছেন, সেভাবেই তিনি সেই পর্বতগুলোকেও রূপ দিয়েছেন বৈচিত্র্যময় রঙের, সৌন্দর্য ও মাধুর্যের এক বিস্ময়কর আবরণে।
আয়াতে ব্যবহৃত ‘জুদাদ’ শব্দটির অর্থ—পর্বতের বুকে আঁকা রেখা বা শিরা। তিনি বলেন, একটি পর্বতের মধ্যেই দেখা যায় সাদা শিরা, লালচে বা পিঙ্গল রেখা, এবং গভীর কালো রেখা—যাকে বলা হয়েছে ‘গারাবিবু সুদ’, যার অর্থ অত্যন্ত গাঢ় কালো, যেন কাকের পালকের মতো নিখাদ কালো। (তাফসিরে সাদি: ১ / ৬৮৮)
এই আয়াতটি চীনের রংধনু পাহাড়কে স্মরণ করিয়ে দেয়। এখানে বলা হয়েছে—‘নানা রঙের রেখাযুক্ত পাহাড়’ যা সুনির্দিষ্টভাবে ডেনজিয়ার বর্ণনা মনে করায়। প্রকৃতির এই রঙিন বিন্যাস কেবল চাক্ষুস আনন্দের বিষয় নয়—এটি আল্লাহর কুদরতের প্রতীক।
রংধনু পাহাড় ও ‘তাফসিরুল আয়াত’
কোরআনে একটি শব্দ বারবার ব্যবহৃত হয়েছে: তাফসিরুল আয়াত, অর্থাৎ নিদর্শনের বহুমাত্রিক ব্যাখ্যা ও পুনরাবৃত্তি। এটি প্রকৃতির ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। যখন আমরা রংধনু পাহাড়ের মত সৌন্দর্য দেখি, তখন তা আমাদের চিন্তা-ভাবনায় নতুন মাত্রা যোগ করে। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তিনিই সেই সত্তা, যিনি পৃথিবীতে নানা রঙের বস্তু সৃষ্টি করেছেন। এতে রয়েছে নিদর্শন চিন্তাশীল জাতির জন্য।’ (সুরা আন-নাহল: ১৩)
চীনের রংধনু পাহাড় যেন এই আয়াতের জীবন্ত ব্যাখ্যা। এখানে রঙের যে বৈচিত্র্য দেখা যায়, তা মানুষের দৃষ্টি ও হৃদয় উভয়কে আকৃষ্ট করে, এবং বিশ্বাসী হৃদয়ে জাগিয়ে তোলে স্রষ্টার প্রশংসা।
চিত্রশৈলী ও কোরআনের অলংকার
কোরআনের ভাষা অলংকারপূর্ণ, চিত্রাত্মক এবং ভাবনাবোধক। যখন আমরা পাহাড়ের রঙিন রূপ দেখি, তখন মনে পড়ে কোরআনের সেই উপমা যেখানে মেঘ, পাহাড়, আলো-আঁধারির সমন্বয়ে সৃষ্টিশীলতা ফুটে ওঠে। কোরআনে বলা হয়েছে, ‘আল্লাহর সৃষ্টিকে দেখ, কীভাবে তিনি বিভিন্ন রঙের সৃষ্টি করেছেন!’ (সুরা আন-নাহল: ১৬)
জানজাই ডেনজিয়া যেন এই আয়াতের চিত্ররূপ। যেমনভাবে কোরআন একটি চিত্রকল্প সৃষ্টি করে, তেমনি এই পাহাড় তার রং ও রেখায় আমাদের সামনে একটি জীবন্ত আলোকচিত্র তুলে ধরে।
রঙিন পাহাড় ইমানের প্রতিচ্ছবি
চীনের রংধনু পাহাড় প্রকৃতির এক বিস্ময়, কিন্তু একজন মোমিনের জন্য এটি তার ইমানের শক্তি পুনর্জাগরণের উপলক্ষ। এটি প্রমাণ করে যে, পৃথিবীতে এমন কোনো কিছুর সৃষ্টি হয়নি যা উদ্দেশ্যহীন। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আমি আকাশ ও পৃথিবী এবং তাদের মধ্যে যা কিছু আছে তা ক্রীড়াচ্ছলে সৃষ্টি করিনি।’ (সুরা আদ-দুখান: ৩৮)
এখানে এই পাহাড় যেন চিৎকার করে বলে, ‘আমার পেছনে এক মহান পরিকল্পক রয়েছেন।’ এবং সেই পরিকল্পকের প্রতি আমাদের ইমান আরও গভীর হয় যখন আমরা কোরআনের আয়াত এবং পাহাড়ের রং মিলিয়ে দেখি।
আল্লাহর নিপুণ শিল্পকর্মের বহিঃপ্রকাশ
রেইনবো মাউন্টেন— এক চিত্রকরের তুলির ছোঁয়া নয় বরং আল্লাহ তাআলার ইচ্ছায় গঠিত প্রাকৃতিক শিল্পকর্ম। যুগে যুগে এই বৈচিত্র্য নজরে এসেছে ভূবিজ্ঞানীদের, পর্যটকদের, এমনকি সাধারণ পথিকেরও। কিন্তু আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে এই বৈশিষ্ট্যের ইঙ্গিত দিয়েছেন হাজার বছর পূর্বেই, যখন মানুষের জ্ঞান এই প্রাকৃতিক রহস্যের কেবল প্রান্ত স্পর্শ করত।
উপরিউক্ত আয়াত আমাদের দৃষ্টি দেয় প্রকৃতির গভীরে এবং নির্দেশ করে এক মহান শিল্পীর দিকে, যিনি তাঁর সৃষ্টিকে শুধু প্রয়োজনের জন্যই গড়েননি, বরং দিয়েছেন সৌন্দর্য, শৈল্পিকতা ও ভাবগম্ভীরতা। প্রত্যেকটি পাহাড় যেন এক একটি মৌন কবিতা—সাদা রেখা তার পবিত্রতা, লাল তার আবেগ, আর গাঢ় কালো তার গভীরতা ও গাম্ভীর্য প্রকাশ করে। এই রঙিন পর্বতমালাগুলো শুধু প্রাকৃতিক দৃশ্য নয়, বরং তারা আল্লাহর কুদরত ও জ্ঞানের সাক্ষ্য বহন করে। তারা নীরবে ঘোষণা করে, ‘তোমাদের স্রষ্টা কেবল ক্ষমতাবানই নন, তিনি অপার সৌন্দর্যেরও অধিকারী।’
লেখক: গবেষক ও প্রাবন্ধিক
বিশ্বজগতে বিস্তৃত প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের নানা নিদর্শনের মাঝে এমন কিছু স্থান রয়েছে, যা কেবল চোখে দেখার জন্য নয়—বরং অন্তরে উপলব্ধির জন্য। তেমনই এক আশ্চর্য সৃষ্টি চীনের ‘জানজাই ডেনজিয়া ল্যান্ডফর্ম জিওলজিক্যাল পার্ক’–এ অবস্থিত ‘রংধনু পাহাড়’ বা ‘রেইনবো মাউন্টেন’, যা নানা রঙের স্তরে স্তরে গঠিত এক অসামান্য সৌন্দর্য। এই পাহাড় দেখে মনে হয় যেন মহান কোনো শিল্পীর রংতুলি দিয়ে সযত্নে আঁকা। তবে এই রঙিন শিলার ঢেউ শুধু সৌন্দর্য নয়—ইমানদারদের কাছে এটি এক পরম সত্যের নিদর্শন, যাকে আমরা কোরআনের আলোকে আরও গভীরভাবে উপলব্ধি করতে পারি।
রেইনবো মাউন্টেনের ভূতাত্ত্বিক পরিচয়
চীনের গানসু প্রদেশে অবস্থিত এই পাহাড় অঞ্চলটি মূলত ‘ডেনজিয়া ল্যান্ডফর্ম’ নামে পরিচিত। ভূবিজ্ঞানীদের গবেষণা অনুযায়ী, প্রায় ২৪ মিলিয়ন বছর ধরে গঠিত এই স্তরবিন্যাস মূলত লাল বালুকা পাথর এবং অন্যান্য খনিজ পদার্থের জারণ বিক্রিয়ায় গঠিত হয়েছে। তবে রঙিন রেখার সুষম বিন্যাস ও বৈচিত্র্য দেখে মনে হয় যেন এটি একটি কল্পনার জগৎ। লাল, কমলা, হলুদ, নীল, সবুজ—সব রঙের নিখুঁত ভারসাম্য যেন পাহাড়ের প্রতিটি বাঁকে এক নতুন কবিতা রচনা করে। যে দিকে চোখ যায় সে দিকেই রং। এই পাহাড় আসমানি, কমলা, লাল, হলুদ, সবুজ—সব রঙে রাঙা। প্রকৃতি আপন মনের মাধুরী মিশিয়ে সুবিশাল ক্যানভাসে তুলির টানে সৃষ্টি করেছে এই রংমহল।
ভূবিজ্ঞানীরা বলেন, টেকটনিক প্লেটের সংঘর্ষের ফলে শুষ্ক পর্বতগাত্রে এমন রংধনুর সাত রং ফুটে উঠেছে। টেকটনিক প্লেটের সংঘর্ষের ফলে ভূগর্ভ থেকে বেরিয়ে এসেছিল শিলাস্তর। শিলাস্তরে ছিল প্রচুর খনিজ পদার্থ, রঙিন সিলিকাসহ নানা উপাদান। বহু বছর ধরে ঋতু পরিবর্তন, ঝড়, বৃষ্টি, তুষারপাত, নানা রকম রাসায়নিক বিক্রিয়ায় রূপ পরিবর্তন করতে করতে তৈরি হয়েছে বর্তমানের রেইনবো মাউন্টেন। কিন্তু এই নিখুঁত শৈল্পিক বিন্যাস কি কেবল প্রকৃতির সপ্তম আশ্চর্যের খেলা?
আল্লাহর নিদর্শন হিসেবে প্রকৃতি
পবিত্র কোরআন বারবার আমাদের চোখ ফেরাতে বলেন প্রকৃতির দিকে, কারণ প্রকৃতির সৌন্দর্য ‘আয়াত’ অর্থাৎ আল্লাহর নিদর্শন। কোরআনে বলা হয়েছে: ‘তুমি কি দেখ না যে আল্লাহ আকাশ থেকে পানি বর্ষণ করেন, অতঃপর তা দ্বারা বিভিন্ন রঙের ফলমূল উৎপন্ন করেন? আর পাহাড়গুলোতেও রয়েছে সাদা, লাল এবং নানান রঙের রেখাযুক্ত অংশ এবং নিকষ কালো।’ (সুরা ফাতির: ২৭)
প্রখ্যাত মুফাসসির শায়খ আবদুর রহমান আস-সাদি (রহ.) বলেন, আল্লাহ তাআলা যেভাবে পৃথিবীকে স্থিতিশীল রাখার জন্য পর্বতমালা সৃষ্টি করেছেন, সেভাবেই তিনি সেই পর্বতগুলোকেও রূপ দিয়েছেন বৈচিত্র্যময় রঙের, সৌন্দর্য ও মাধুর্যের এক বিস্ময়কর আবরণে।
আয়াতে ব্যবহৃত ‘জুদাদ’ শব্দটির অর্থ—পর্বতের বুকে আঁকা রেখা বা শিরা। তিনি বলেন, একটি পর্বতের মধ্যেই দেখা যায় সাদা শিরা, লালচে বা পিঙ্গল রেখা, এবং গভীর কালো রেখা—যাকে বলা হয়েছে ‘গারাবিবু সুদ’, যার অর্থ অত্যন্ত গাঢ় কালো, যেন কাকের পালকের মতো নিখাদ কালো। (তাফসিরে সাদি: ১ / ৬৮৮)
এই আয়াতটি চীনের রংধনু পাহাড়কে স্মরণ করিয়ে দেয়। এখানে বলা হয়েছে—‘নানা রঙের রেখাযুক্ত পাহাড়’ যা সুনির্দিষ্টভাবে ডেনজিয়ার বর্ণনা মনে করায়। প্রকৃতির এই রঙিন বিন্যাস কেবল চাক্ষুস আনন্দের বিষয় নয়—এটি আল্লাহর কুদরতের প্রতীক।
রংধনু পাহাড় ও ‘তাফসিরুল আয়াত’
কোরআনে একটি শব্দ বারবার ব্যবহৃত হয়েছে: তাফসিরুল আয়াত, অর্থাৎ নিদর্শনের বহুমাত্রিক ব্যাখ্যা ও পুনরাবৃত্তি। এটি প্রকৃতির ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। যখন আমরা রংধনু পাহাড়ের মত সৌন্দর্য দেখি, তখন তা আমাদের চিন্তা-ভাবনায় নতুন মাত্রা যোগ করে। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তিনিই সেই সত্তা, যিনি পৃথিবীতে নানা রঙের বস্তু সৃষ্টি করেছেন। এতে রয়েছে নিদর্শন চিন্তাশীল জাতির জন্য।’ (সুরা আন-নাহল: ১৩)
চীনের রংধনু পাহাড় যেন এই আয়াতের জীবন্ত ব্যাখ্যা। এখানে রঙের যে বৈচিত্র্য দেখা যায়, তা মানুষের দৃষ্টি ও হৃদয় উভয়কে আকৃষ্ট করে, এবং বিশ্বাসী হৃদয়ে জাগিয়ে তোলে স্রষ্টার প্রশংসা।
চিত্রশৈলী ও কোরআনের অলংকার
কোরআনের ভাষা অলংকারপূর্ণ, চিত্রাত্মক এবং ভাবনাবোধক। যখন আমরা পাহাড়ের রঙিন রূপ দেখি, তখন মনে পড়ে কোরআনের সেই উপমা যেখানে মেঘ, পাহাড়, আলো-আঁধারির সমন্বয়ে সৃষ্টিশীলতা ফুটে ওঠে। কোরআনে বলা হয়েছে, ‘আল্লাহর সৃষ্টিকে দেখ, কীভাবে তিনি বিভিন্ন রঙের সৃষ্টি করেছেন!’ (সুরা আন-নাহল: ১৬)
জানজাই ডেনজিয়া যেন এই আয়াতের চিত্ররূপ। যেমনভাবে কোরআন একটি চিত্রকল্প সৃষ্টি করে, তেমনি এই পাহাড় তার রং ও রেখায় আমাদের সামনে একটি জীবন্ত আলোকচিত্র তুলে ধরে।
রঙিন পাহাড় ইমানের প্রতিচ্ছবি
চীনের রংধনু পাহাড় প্রকৃতির এক বিস্ময়, কিন্তু একজন মোমিনের জন্য এটি তার ইমানের শক্তি পুনর্জাগরণের উপলক্ষ। এটি প্রমাণ করে যে, পৃথিবীতে এমন কোনো কিছুর সৃষ্টি হয়নি যা উদ্দেশ্যহীন। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আমি আকাশ ও পৃথিবী এবং তাদের মধ্যে যা কিছু আছে তা ক্রীড়াচ্ছলে সৃষ্টি করিনি।’ (সুরা আদ-দুখান: ৩৮)
এখানে এই পাহাড় যেন চিৎকার করে বলে, ‘আমার পেছনে এক মহান পরিকল্পক রয়েছেন।’ এবং সেই পরিকল্পকের প্রতি আমাদের ইমান আরও গভীর হয় যখন আমরা কোরআনের আয়াত এবং পাহাড়ের রং মিলিয়ে দেখি।
আল্লাহর নিপুণ শিল্পকর্মের বহিঃপ্রকাশ
রেইনবো মাউন্টেন— এক চিত্রকরের তুলির ছোঁয়া নয় বরং আল্লাহ তাআলার ইচ্ছায় গঠিত প্রাকৃতিক শিল্পকর্ম। যুগে যুগে এই বৈচিত্র্য নজরে এসেছে ভূবিজ্ঞানীদের, পর্যটকদের, এমনকি সাধারণ পথিকেরও। কিন্তু আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে এই বৈশিষ্ট্যের ইঙ্গিত দিয়েছেন হাজার বছর পূর্বেই, যখন মানুষের জ্ঞান এই প্রাকৃতিক রহস্যের কেবল প্রান্ত স্পর্শ করত।
উপরিউক্ত আয়াত আমাদের দৃষ্টি দেয় প্রকৃতির গভীরে এবং নির্দেশ করে এক মহান শিল্পীর দিকে, যিনি তাঁর সৃষ্টিকে শুধু প্রয়োজনের জন্যই গড়েননি, বরং দিয়েছেন সৌন্দর্য, শৈল্পিকতা ও ভাবগম্ভীরতা। প্রত্যেকটি পাহাড় যেন এক একটি মৌন কবিতা—সাদা রেখা তার পবিত্রতা, লাল তার আবেগ, আর গাঢ় কালো তার গভীরতা ও গাম্ভীর্য প্রকাশ করে। এই রঙিন পর্বতমালাগুলো শুধু প্রাকৃতিক দৃশ্য নয়, বরং তারা আল্লাহর কুদরত ও জ্ঞানের সাক্ষ্য বহন করে। তারা নীরবে ঘোষণা করে, ‘তোমাদের স্রষ্টা কেবল ক্ষমতাবানই নন, তিনি অপার সৌন্দর্যেরও অধিকারী।’
লেখক: গবেষক ও প্রাবন্ধিক
জুমার খুতবা চলাকালে মোবাইল ব্যবহার করা যাবে? যেমন ফেসবুক স্ক্রল করা, মেসেঞ্জার চেক করা ইত্যাদি। এ বিষয়ে ইসলামের নির্দেশনা জানতে চাই।
১৭ ঘণ্টা আগেজুমার নামাজ সপ্তাহের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। এটি মসজিদে গিয়ে জামাতের সঙ্গে আদায় করতে হয়। এটি মুসলমানদের সাপ্তাহিক ঈদের দিন। প্রাপ্তবয়স্ক ও মানসিকভাবে সুস্থ সব পুরুষের জন্য জুমার নামাজ আদায় করা ফরজ। জুমার খুতবা শোনাও ওয়াজিব। তাই জুমার জন্য আগেভাগে প্রস্তুতি নিয়ে মসজিদে উপস্থিত হওয়া মুমিনের...
১৭ ঘণ্টা আগেজুলুম এক অন্ধকার, যা মানবতাকে গ্রাস করার চেষ্টা করেছে প্রতিটি যুগে। কিন্তু চিরন্তন সত্য হলো, জুলুম ক্ষণস্থায়ী, আর মজলুমের বিজয় সুনিশ্চিত। মজলুমের কান্না আল্লাহর আরশ পর্যন্ত পৌঁছে যায়। তার দোয়ার মধ্যে কোনো পর্দা থাকে না। নবীজি (সা.) সতর্ক করে বলেছেন, ‘মজলুমের দোয়াকে ভয় করো। কারণ, তার (দোয়া) এবং আল্লা
২০ ঘণ্টা আগেনবীজি (সা.) সমগ্র সৃষ্টিজগতের জন্য রহমতস্বরূপ। তাঁর দয়া ও ভালোবাসা শুধু মানুষের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল না, তা পশুপাখিসহ সব প্রাণীর প্রতি প্রসারিত হয়েছিল। তবে বিড়ালের প্রতি তাঁর ভালোবাসা ছিল বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। বিড়ালের প্রতি তাঁর এই ভালোবাসা ইসলামে প্রাণীর অধিকারের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।
২০ ঘণ্টা আগে