আপনার জিজ্ঞাসা
ইসলাম ডেস্ক
প্রশ্ন: কারও কাছ থেকে ঋণ নেওয়ার পর ঋণগ্রহীতার তা পরিশোধের সম্পূর্ণ সামর্থ্য থাকার পরও ইচ্ছাকৃতভাবে দেরি করলে, পাওনাদারকে হয়রানি করলে কিংবা অহেতুক টালবাহানা করলে ইসলাম বিষয়টি কীভাবে দেখে? এ ধরনের ঋণগ্রহীতা সম্পর্কে ইসলামের বিধান কী?
শরিফুল ইসলাম, নোয়াখালী
উওর: সমাজে ধারকর্জ-লেনদেন খুবই প্রয়োজনীয় একটি বিষয়। ব্যবসা, চিকিৎসা, শিক্ষা, পারিবারিক প্রয়োজন কিংবা বিপদে পড়লে একজন আরেকজনের সাহায্য নেয়, টাকা ধার করে। এটি সমাজের একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। সাহাবিদের জীবন থেকে এর প্রমাণ পাওয়া যায়। উম্মুল মুমিনিন হজরত মায়মুনা (রা.) প্রয়োজন হলে ধারকর্জ করতেন। তাঁর পরিবারের কেউ কেউ তাঁকে বললেন, ‘আপনি ধার করবেন না।’ তাঁরা তাঁর ধারকর্জ করার বিষয়টি অপছন্দ করলেন। তিনি তখন বললেন, ‘আমি আমার নবী ও প্রিয়তমকে বলতে শুনেছি, ‘যে মুসলমান ধারকর্জ করে এবং আল্লাহ জানেন যে তা পরিশোধ করার ইচ্ছে তার রয়েছে, তাহলে দুনিয়াতেই আল্লাহ তার ওই কর্জ পরিশোধের ব্যবস্থা করে দেন।’ (সুনানে ইবনে মাজাহ: ২৪০৮)
ইসলাম এই পারস্পরিক সহযোগিতাকে উৎসাহ দিয়েছে, বরং একটি হাদিসে বলা হয়েছে ‘সব ঋণ সদকা।’ (সুনানে বায়হাকি: ৩৫৬৩)। অন্য হাদিসে এসেছে, ‘যে ব্যক্তি কোনো ভাইকে দুইবার ঋণ দেয়, সে একবার দান করার সওয়াব পাবে।’ (সুনানে ইবনে মাজাহ: ২৪৩০)। অর্থাৎ ধার দেওয়াকে সদকার মতো সওয়াবের কাজ বলা হয়েছে ইসলামে।
তবে দুঃখজনক হলেও সত্য, আমাদের সমাজে অনেক সময় দেখা যায়, কেউ ধার নেওয়ার পর তা ফেরত দিতে নানা অজুহাত দেখান। অথচ তিনি সম্পূর্ণ সক্ষম, চাইলে পরিশোধ করতে পারেন। কেউ কেউ আবার ইচ্ছাকৃতভাবে সময়ক্ষেপণ করেন, কিংবা ঋণদাতাকে হয়রানি করার মানসিকতা নিয়ে টালবাহানা করেন। এটি কেবল সামাজিক নয়, বরং ইসলামি দৃষ্টিতেও গুরুতর অন্যায়। হাদিসে এমন ঋণগ্রহীতাকে জালিম বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে। এ ছাড়া ঋণ পরিশোধ না করার মানসিকতার ঋণগ্রহীতাকে তুলনা করা হয়েছে চোরের সঙ্গে। নবী করিম (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি ঋণ গ্রহণ করল এবং তা পরিশোধ না করতে সংকল্পবদ্ধ হলো, (কিয়ামতের দিন) সে আল্লাহর সঙ্গে চোর হিসেবে সাক্ষাৎ করবে।’ (সুনানে ইবনে মাজাহ: ২৪১০)
তাই কারও কাছ থেকে ঋণ নেওয়ার পর পরিশোধ করার যথেষ্ট সামর্থ্য থাকার পরও সময়মতো ঋণ ফেরত না দিয়ে ইচ্ছাকৃতভাবে দেরি করা কিংবা কোনো যুক্তিসংগত কারণ ছাড়াই টালবাহানা করা স্পষ্টভাবে শরিয়তবিরোধী কাজ এবং হারাম। রাসুলুল্লাহ (সা.) স্পষ্ট ভাষায় বলেছেন, সামর্থ্যবান ঋণগ্রহীতা ঋণ পরিশোধে বিলম্ব করা জুলুম। (মিশকাতুল মাসাবিহ)
সুতরাং যাঁরা ইচ্ছাকৃতভাবে সময়ক্ষেপণ করেন, তাঁরা শুধু ঋণদাতার ক্ষতিই করেন না, বরং নিজেদের ওপরও গুনাহের বোঝা চাপিয়ে নেন। এমন জুলুমপূর্ণ আচরণ থেকে বিরত থাকা প্রত্যেক মুসলমানের জন্য আবশ্যক।
তথ্যসূত্র: দারুল উলুম দেওবন্দের ওয়েবসাইট
উত্তর দিয়েছেন: মুফতি শাব্বির আহমদ, ইসলামবিষয়ক গবেষক
প্রশ্ন: কারও কাছ থেকে ঋণ নেওয়ার পর ঋণগ্রহীতার তা পরিশোধের সম্পূর্ণ সামর্থ্য থাকার পরও ইচ্ছাকৃতভাবে দেরি করলে, পাওনাদারকে হয়রানি করলে কিংবা অহেতুক টালবাহানা করলে ইসলাম বিষয়টি কীভাবে দেখে? এ ধরনের ঋণগ্রহীতা সম্পর্কে ইসলামের বিধান কী?
শরিফুল ইসলাম, নোয়াখালী
উওর: সমাজে ধারকর্জ-লেনদেন খুবই প্রয়োজনীয় একটি বিষয়। ব্যবসা, চিকিৎসা, শিক্ষা, পারিবারিক প্রয়োজন কিংবা বিপদে পড়লে একজন আরেকজনের সাহায্য নেয়, টাকা ধার করে। এটি সমাজের একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। সাহাবিদের জীবন থেকে এর প্রমাণ পাওয়া যায়। উম্মুল মুমিনিন হজরত মায়মুনা (রা.) প্রয়োজন হলে ধারকর্জ করতেন। তাঁর পরিবারের কেউ কেউ তাঁকে বললেন, ‘আপনি ধার করবেন না।’ তাঁরা তাঁর ধারকর্জ করার বিষয়টি অপছন্দ করলেন। তিনি তখন বললেন, ‘আমি আমার নবী ও প্রিয়তমকে বলতে শুনেছি, ‘যে মুসলমান ধারকর্জ করে এবং আল্লাহ জানেন যে তা পরিশোধ করার ইচ্ছে তার রয়েছে, তাহলে দুনিয়াতেই আল্লাহ তার ওই কর্জ পরিশোধের ব্যবস্থা করে দেন।’ (সুনানে ইবনে মাজাহ: ২৪০৮)
ইসলাম এই পারস্পরিক সহযোগিতাকে উৎসাহ দিয়েছে, বরং একটি হাদিসে বলা হয়েছে ‘সব ঋণ সদকা।’ (সুনানে বায়হাকি: ৩৫৬৩)। অন্য হাদিসে এসেছে, ‘যে ব্যক্তি কোনো ভাইকে দুইবার ঋণ দেয়, সে একবার দান করার সওয়াব পাবে।’ (সুনানে ইবনে মাজাহ: ২৪৩০)। অর্থাৎ ধার দেওয়াকে সদকার মতো সওয়াবের কাজ বলা হয়েছে ইসলামে।
তবে দুঃখজনক হলেও সত্য, আমাদের সমাজে অনেক সময় দেখা যায়, কেউ ধার নেওয়ার পর তা ফেরত দিতে নানা অজুহাত দেখান। অথচ তিনি সম্পূর্ণ সক্ষম, চাইলে পরিশোধ করতে পারেন। কেউ কেউ আবার ইচ্ছাকৃতভাবে সময়ক্ষেপণ করেন, কিংবা ঋণদাতাকে হয়রানি করার মানসিকতা নিয়ে টালবাহানা করেন। এটি কেবল সামাজিক নয়, বরং ইসলামি দৃষ্টিতেও গুরুতর অন্যায়। হাদিসে এমন ঋণগ্রহীতাকে জালিম বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে। এ ছাড়া ঋণ পরিশোধ না করার মানসিকতার ঋণগ্রহীতাকে তুলনা করা হয়েছে চোরের সঙ্গে। নবী করিম (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি ঋণ গ্রহণ করল এবং তা পরিশোধ না করতে সংকল্পবদ্ধ হলো, (কিয়ামতের দিন) সে আল্লাহর সঙ্গে চোর হিসেবে সাক্ষাৎ করবে।’ (সুনানে ইবনে মাজাহ: ২৪১০)
তাই কারও কাছ থেকে ঋণ নেওয়ার পর পরিশোধ করার যথেষ্ট সামর্থ্য থাকার পরও সময়মতো ঋণ ফেরত না দিয়ে ইচ্ছাকৃতভাবে দেরি করা কিংবা কোনো যুক্তিসংগত কারণ ছাড়াই টালবাহানা করা স্পষ্টভাবে শরিয়তবিরোধী কাজ এবং হারাম। রাসুলুল্লাহ (সা.) স্পষ্ট ভাষায় বলেছেন, সামর্থ্যবান ঋণগ্রহীতা ঋণ পরিশোধে বিলম্ব করা জুলুম। (মিশকাতুল মাসাবিহ)
সুতরাং যাঁরা ইচ্ছাকৃতভাবে সময়ক্ষেপণ করেন, তাঁরা শুধু ঋণদাতার ক্ষতিই করেন না, বরং নিজেদের ওপরও গুনাহের বোঝা চাপিয়ে নেন। এমন জুলুমপূর্ণ আচরণ থেকে বিরত থাকা প্রত্যেক মুসলমানের জন্য আবশ্যক।
তথ্যসূত্র: দারুল উলুম দেওবন্দের ওয়েবসাইট
উত্তর দিয়েছেন: মুফতি শাব্বির আহমদ, ইসলামবিষয়ক গবেষক
মানুষের জীবনের প্রতিটি কাজের মধ্যে মহানবী (সা.)-এর উত্তম আদর্শ বিদ্যমান। আমাদের দৈনন্দিন জীবনের প্রতিটি অধ্যায় তাঁর দেখানো পথ অনুসরণ করে সাজানো উচিত। খাবার গ্রহণ জীবনের একটি অপরিহার্য কাজ। যদি এ খাবার গ্রহণও মহানবী (সা.)-এর সুন্নাহ অনুযায়ী করা হয়, তাহলে ক্ষুধার নিবারণ হওয়ার পাশাপাশি এর মাধ্যমে...
১ দিন আগেজুমার খুতবা চলাকালে মোবাইল ব্যবহার করা যাবে? যেমন ফেসবুক স্ক্রল করা, মেসেঞ্জার চেক করা ইত্যাদি। এ বিষয়ে ইসলামের নির্দেশনা জানতে চাই।
২ দিন আগেজুমার নামাজ সপ্তাহের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। এটি মসজিদে গিয়ে জামাতের সঙ্গে আদায় করতে হয়। এটি মুসলমানদের সাপ্তাহিক ঈদের দিন। প্রাপ্তবয়স্ক ও মানসিকভাবে সুস্থ সব পুরুষের জন্য জুমার নামাজ আদায় করা ফরজ। জুমার খুতবা শোনাও ওয়াজিব। তাই জুমার জন্য আগেভাগে প্রস্তুতি নিয়ে মসজিদে উপস্থিত হওয়া মুমিনের...
২ দিন আগেজুলুম এক অন্ধকার, যা মানবতাকে গ্রাস করার চেষ্টা করেছে প্রতিটি যুগে। কিন্তু চিরন্তন সত্য হলো, জুলুম ক্ষণস্থায়ী, আর মজলুমের বিজয় সুনিশ্চিত। মজলুমের কান্না আল্লাহর আরশ পর্যন্ত পৌঁছে যায়। তার দোয়ার মধ্যে কোনো পর্দা থাকে না। নবীজি (সা.) সতর্ক করে বলেছেন, ‘মজলুমের দোয়াকে ভয় করো। কারণ, তার (দোয়া) এবং আল্লা
২ দিন আগে