ফারুক মেহেদী
পুঁজিবাজারের অব্যাহত সূচক বৃদ্ধি কতটা স্বাভাবিক? বাজারে কেন দুর্বল শেয়ারের দাম বাড়ছে? এখানে দীর্ঘমেয়াদি স্থিতিশীলতা আনা যায় কীভাবে? এসব বিষয় নিয়ে আজকের পত্রিকার সঙ্গে কথা বলেছেন বিএসইসির সাবেক চেয়ারম্যান ড. ফারুক আহমেদ সিদ্দিকী। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন ফারুক মেহেদী।
আজকের পত্রিকা: পুঁজিবাজারের সূচক ৭ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। এটা কি স্বাভাবিক?
ড. ফারুক আহমেদ সিদ্দিকী: পুঁজিবাজারের সূচক এখন যে অবস্থানে আছে, আমি মনে করি, এটা ঠিক আছে। সমস্যা হলো ছোট ছোট দুর্বল শেয়ার, যেগুলোর লেনদেন হয় না; এসবের দাম অস্বাভাবিকভাবে বাড়ছে। এর পেছনে হয়তো কোনো সিন্ডিকেট কাজ করছে। এখানেই আমার উদ্বেগ। এসব দুর্বল শেয়ারের দাম এভাবে বাড়ার কোনো কারণ নেই। আর ভালো শেয়ারের দাম যেভাবে বেড়েছে, এতে কোনো সমস্যা নেই। সম্প্রতি বাজার কিছুটা সংশোধন হচ্ছে বলেও দেখতে পাচ্ছি। তবে সার্বিক বাজারের সূচক নিয়ে এই মুহূর্তে আমার কোনো উদ্বেগ নেই।
আজকের পত্রিকা: দুর্বল শেয়ারের দাম বাড়ার বিষয়টি নিয়ে বিএসইসি কী করতে পারে?
ড. ফারুক আহমেদ সিদ্দিকী: সাময়িক সময়ের জন্য কিছু মুনাফা হচ্ছে বলে ছোট শেয়ারে বিনিয়োগ বাড়ে। যারা স্বল্প মেয়াদে টাকা চায়, যাদের বেশি টাকাও নেই, আবার বেশি দিন শেয়ার ধরে রাখার ক্ষমতা নেই, তারা কোনো কারসাজিকারীর প্ররোচনায় সুযোগ কাজে লাগাচ্ছে। এটা আগেও ছিল, তবে এখন একটু বেশি হয়ে যাচ্ছে। দুর্বল শেয়ারের দাম কেন বাড়ছে, এগুলো বিএসইসি দেখতে পারে। তাদের সফটওয়্যার আছে, নজরদারির ব্যবস্থা আছে, তারা সেটা করতে পারে। নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে আরও কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। এখানে কোনো কারসাজি হচ্ছে কি না এটা দেখতে হবে।
আজকের পত্রিকা: এ বাজারে স্থিতিশীলতা আনার উপায় কী?
ড. ফারুক আহমেদ সিদ্দিকী: মূলত আমাদের বাজারটা অনেক ছোট বাজার। বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে এটা একটা প্রান্তিক বাজার। এত ছোট বাজার নিয়ন্ত্রণ করাও মুশকিল। এখানে যারা বিনিয়োগ করে, তাদের মধ্যে প্রকৃত বিনিয়োগকারীর সংখ্যাও কম। ছোট বিনিয়োগকারীরাই এখানে ছোট শেয়ারে ঝাঁপিয়ে পড়ে। আর এখানে যখন শেয়ারের দাম বাড়তে থাকে, তখন তারা লোভে পড়ে যায়। তারা মনে করে, এখানে বিনিয়োগ করলেই কেবল মুনাফা। অথচ তারা যে বিপদের মধ্যে চলে যাচ্ছে, এটা আর তাদের মাথায় থাকে না। আবার যখন বাজারে পতন দেখা দেয় তখন তারা আতঙ্কিত হয়ে একসঙ্গে সব বিক্রি করা শুরু করে। এ কারণে এখানে স্থিতিশীলতা কঠিন বিষয়।
আজকের পত্রিকা: স্থিতিশীল না থাকার পেছনে আর কী কারণ আছে?
ড. ফারুক আহমেদ সিদ্দিকী: দুঃখজনক হলো, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরাও এখানে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের মতো আচরণ করে। অল্প দিনের মধ্যে তারা মুনাফা তুলে বাজার থেকে বের হয়ে যেতে চায়। যার ফলে এখানে দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগ না হওয়াই হলো মূল কারণ। একটা বাজারে দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগ, একই সঙ্গে ট্রেডিংও থাকতে হবে। এ দুটোর মধ্যে একটা ভারসাম্য থাকতে হবে। আমাদের এখানে এ ভারসাম্যটা নেই। সুতরাং এ বাজারে স্থিতিশীলতা ধরে রাখা কঠিন। অবশ্য সময়ের সঙ্গে বাজারে স্থিতিশীলতা ফিরবে। বাজার ছোট বলে, ছোট ছোট সিন্ডিকেট বা কয়েকজন মিলেই বাজারকে এদিক-সেদিক করতে পারে।
আজকের পত্রিকা: এ পুঁজিবাজার বড় হচ্ছে না কেন?
ড. ফারুক আহমেদ সিদ্দিকী: আসলে অর্থনীতিই হলো মূল বিষয়। এখন আপনার পুঁজি দরকার। কারণ আপনি ব্যবসা সম্প্রসারণ করতে চান বা চলতি মূলধন দরকার। দুটো রাস্তা আপনার কাছে। আপনি পুঁজিবাজার থেকে টাকা তুলতে পারেন, তবে সমস্যা হলো আপনার ছয় মাস থেকে এক বছর লেগে যেতে পারে। এ সময়ে অনেক রকমের কমিটমেন্ট করতে হয়। আরেকটা দিক হলো, ব্যাংক থেকে খুব অল্প দিনের মধ্যে পেয়ে যেতে পারেন। আপনি কোনটাতে যাবেন? অর্থাৎ যত দিন পর্যন্ত ব্যাংকে বাড়তি তারল্য থাকবে, তত দিন পর্যন্ত মানুষ ব্যাংক থেকেই অল্প সময়ে পুঁজির সংস্থান করবে।
আজকের পত্রিকা: একে বড় ও পরিণত বাজার করার উপায় কী?
ড. ফারুক আহমেদ সিদ্দিকী: বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ খুব কম। এমনকি বেসরকারি খাতে ঋণপ্রবাহও কমে গেছে। যার ফলে ব্যাংকে উদ্বৃত্ত তারল্য রয়েছে। এ উদ্বৃত্ত তারল্য যত দিন থাকবে, অর্থাৎ যত দিন মানুষ ব্যাংকে গেলেই টাকা পাবে, তত দিন তারা ব্যাংকে যাওয়াই পছন্দ করবে। সুতরাং যখন বেসরকারি খাতের বিনিয়োগ বাড়তে থাকবে, আরও টাকা, আরও বিনিয়োগ দরকার এমন একটা অবস্থা তৈরি হবে, তখন আর ব্যাংক দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়ন করতে পারবে না। এ রকম পরিস্থিতি যখন আসবে, তখনই পুঁজিবাজার প্রসারিত হতে শুরু করবে। মূল কথা হলো, বেসরকারি খাতের বিনিয়োগ বাড়তে থাকলেই স্বয়ংক্রিয়ভাবেই পুঁজিবাজারও উঠতে থাকবে।
পুঁজিবাজারের অব্যাহত সূচক বৃদ্ধি কতটা স্বাভাবিক? বাজারে কেন দুর্বল শেয়ারের দাম বাড়ছে? এখানে দীর্ঘমেয়াদি স্থিতিশীলতা আনা যায় কীভাবে? এসব বিষয় নিয়ে আজকের পত্রিকার সঙ্গে কথা বলেছেন বিএসইসির সাবেক চেয়ারম্যান ড. ফারুক আহমেদ সিদ্দিকী। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন ফারুক মেহেদী।
আজকের পত্রিকা: পুঁজিবাজারের সূচক ৭ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। এটা কি স্বাভাবিক?
ড. ফারুক আহমেদ সিদ্দিকী: পুঁজিবাজারের সূচক এখন যে অবস্থানে আছে, আমি মনে করি, এটা ঠিক আছে। সমস্যা হলো ছোট ছোট দুর্বল শেয়ার, যেগুলোর লেনদেন হয় না; এসবের দাম অস্বাভাবিকভাবে বাড়ছে। এর পেছনে হয়তো কোনো সিন্ডিকেট কাজ করছে। এখানেই আমার উদ্বেগ। এসব দুর্বল শেয়ারের দাম এভাবে বাড়ার কোনো কারণ নেই। আর ভালো শেয়ারের দাম যেভাবে বেড়েছে, এতে কোনো সমস্যা নেই। সম্প্রতি বাজার কিছুটা সংশোধন হচ্ছে বলেও দেখতে পাচ্ছি। তবে সার্বিক বাজারের সূচক নিয়ে এই মুহূর্তে আমার কোনো উদ্বেগ নেই।
আজকের পত্রিকা: দুর্বল শেয়ারের দাম বাড়ার বিষয়টি নিয়ে বিএসইসি কী করতে পারে?
ড. ফারুক আহমেদ সিদ্দিকী: সাময়িক সময়ের জন্য কিছু মুনাফা হচ্ছে বলে ছোট শেয়ারে বিনিয়োগ বাড়ে। যারা স্বল্প মেয়াদে টাকা চায়, যাদের বেশি টাকাও নেই, আবার বেশি দিন শেয়ার ধরে রাখার ক্ষমতা নেই, তারা কোনো কারসাজিকারীর প্ররোচনায় সুযোগ কাজে লাগাচ্ছে। এটা আগেও ছিল, তবে এখন একটু বেশি হয়ে যাচ্ছে। দুর্বল শেয়ারের দাম কেন বাড়ছে, এগুলো বিএসইসি দেখতে পারে। তাদের সফটওয়্যার আছে, নজরদারির ব্যবস্থা আছে, তারা সেটা করতে পারে। নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে আরও কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। এখানে কোনো কারসাজি হচ্ছে কি না এটা দেখতে হবে।
আজকের পত্রিকা: এ বাজারে স্থিতিশীলতা আনার উপায় কী?
ড. ফারুক আহমেদ সিদ্দিকী: মূলত আমাদের বাজারটা অনেক ছোট বাজার। বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে এটা একটা প্রান্তিক বাজার। এত ছোট বাজার নিয়ন্ত্রণ করাও মুশকিল। এখানে যারা বিনিয়োগ করে, তাদের মধ্যে প্রকৃত বিনিয়োগকারীর সংখ্যাও কম। ছোট বিনিয়োগকারীরাই এখানে ছোট শেয়ারে ঝাঁপিয়ে পড়ে। আর এখানে যখন শেয়ারের দাম বাড়তে থাকে, তখন তারা লোভে পড়ে যায়। তারা মনে করে, এখানে বিনিয়োগ করলেই কেবল মুনাফা। অথচ তারা যে বিপদের মধ্যে চলে যাচ্ছে, এটা আর তাদের মাথায় থাকে না। আবার যখন বাজারে পতন দেখা দেয় তখন তারা আতঙ্কিত হয়ে একসঙ্গে সব বিক্রি করা শুরু করে। এ কারণে এখানে স্থিতিশীলতা কঠিন বিষয়।
আজকের পত্রিকা: স্থিতিশীল না থাকার পেছনে আর কী কারণ আছে?
ড. ফারুক আহমেদ সিদ্দিকী: দুঃখজনক হলো, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরাও এখানে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের মতো আচরণ করে। অল্প দিনের মধ্যে তারা মুনাফা তুলে বাজার থেকে বের হয়ে যেতে চায়। যার ফলে এখানে দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগ না হওয়াই হলো মূল কারণ। একটা বাজারে দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগ, একই সঙ্গে ট্রেডিংও থাকতে হবে। এ দুটোর মধ্যে একটা ভারসাম্য থাকতে হবে। আমাদের এখানে এ ভারসাম্যটা নেই। সুতরাং এ বাজারে স্থিতিশীলতা ধরে রাখা কঠিন। অবশ্য সময়ের সঙ্গে বাজারে স্থিতিশীলতা ফিরবে। বাজার ছোট বলে, ছোট ছোট সিন্ডিকেট বা কয়েকজন মিলেই বাজারকে এদিক-সেদিক করতে পারে।
আজকের পত্রিকা: এ পুঁজিবাজার বড় হচ্ছে না কেন?
ড. ফারুক আহমেদ সিদ্দিকী: আসলে অর্থনীতিই হলো মূল বিষয়। এখন আপনার পুঁজি দরকার। কারণ আপনি ব্যবসা সম্প্রসারণ করতে চান বা চলতি মূলধন দরকার। দুটো রাস্তা আপনার কাছে। আপনি পুঁজিবাজার থেকে টাকা তুলতে পারেন, তবে সমস্যা হলো আপনার ছয় মাস থেকে এক বছর লেগে যেতে পারে। এ সময়ে অনেক রকমের কমিটমেন্ট করতে হয়। আরেকটা দিক হলো, ব্যাংক থেকে খুব অল্প দিনের মধ্যে পেয়ে যেতে পারেন। আপনি কোনটাতে যাবেন? অর্থাৎ যত দিন পর্যন্ত ব্যাংকে বাড়তি তারল্য থাকবে, তত দিন পর্যন্ত মানুষ ব্যাংক থেকেই অল্প সময়ে পুঁজির সংস্থান করবে।
আজকের পত্রিকা: একে বড় ও পরিণত বাজার করার উপায় কী?
ড. ফারুক আহমেদ সিদ্দিকী: বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ খুব কম। এমনকি বেসরকারি খাতে ঋণপ্রবাহও কমে গেছে। যার ফলে ব্যাংকে উদ্বৃত্ত তারল্য রয়েছে। এ উদ্বৃত্ত তারল্য যত দিন থাকবে, অর্থাৎ যত দিন মানুষ ব্যাংকে গেলেই টাকা পাবে, তত দিন তারা ব্যাংকে যাওয়াই পছন্দ করবে। সুতরাং যখন বেসরকারি খাতের বিনিয়োগ বাড়তে থাকবে, আরও টাকা, আরও বিনিয়োগ দরকার এমন একটা অবস্থা তৈরি হবে, তখন আর ব্যাংক দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়ন করতে পারবে না। এ রকম পরিস্থিতি যখন আসবে, তখনই পুঁজিবাজার প্রসারিত হতে শুরু করবে। মূল কথা হলো, বেসরকারি খাতের বিনিয়োগ বাড়তে থাকলেই স্বয়ংক্রিয়ভাবেই পুঁজিবাজারও উঠতে থাকবে।
সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী জন্মগ্রহণ করেন ১৯৩৬ সালের ২৩ জুন। দীর্ঘ সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগে অধ্যাপনা করেছেন। বর্তমানে বিভাগটির ইমেরিটাস অধ্যাপক। মার্কসবাদী চিন্তা-চেতনায় উদ্বুদ্ধ অধ্যাপক চৌধুরী নতুন দিগন্ত পত্রিকার প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক।
১৮ ঘণ্টা আগে‘বাংলাদেশের মানুষ যদি দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদ কিংবা অনুপাতভিত্তিক ভোটব্যবস্থা বুঝত! উল্টো তারা বলবে, আমরা এসব বুঝি না! আমি তোমাকে ভোট দেব, কয় টাকা দেবে? সহজ ভাষায় বললে বিষয়টি তা-ই—তুমি টাকা দাও, আমি ভোট দেব—দেশে ভোটের চর্চা এমনই।’
৮ দিন আগেগত বছর জুলাই মাসে কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় সহিংসতায় সহস্রাধিক হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা ও তাঁর সহযোগীদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে (আইসিটি) মামলার বিচার প্রক্রিয়াসহ নানা দিক নিয়ে ডয়চে ভেলের সঙ্গে কথা বলেছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী
১২ দিন আগেড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বাংলাদেশের একজন খ্যাতনামা অর্থনীতিবিদ। বর্তমানে তিনি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো এবং বাংলাদেশের টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট (এসডিজি) বাস্তবায়ন বিষয়ে বেসরকারি উদ্যোগে গঠিত নাগরিক প্ল্যাটফর্মের আহ্বায়ক।
২২ দিন আগে