নেপাল, ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে আন্তসীমান্ত জ্বালানি বাণিজ্য সবার জন্যই লাভজনক হবে বলে মনে করেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান। তিনি বলেছেন, দেশগুলোর মধ্যে জ্বালানি বিনিময় আরও গতিশীল হলেই বাজার পরিপক্ব হবে। তখন সবার জন্যই লাভজনক পরিস্থিতি তৈরি হবে। ভারতের সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দুর বিজনেসলাইনকে দেওয়া টেলিফোন সাক্ষাৎকারে আঞ্চলিক জ্বালানি বাণিজ্য এবং বাংলাদেশের জ্বালানি খাতের অগ্রগতির বিষয়ে মতামত তুলে ধরেছেন এই উপদেষ্টা।
প্রশ্ন: বর্তমান ভূরাজনৈতিক এবং বিভিন্ন দেশের অভ্যন্তরীণ (রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক) পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে বিদ্যুতের আন্তসীমান্ত বাণিজ্যের ভবিষ্যৎ কেমন হতে পারে?
ফাওজুল কবির খান: আন্তসীমান্ত বাণিজ্যের সফলতা মূলত নির্ভর করে চুক্তির শর্তগুলোর ওপর। সাধারণত এটি সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর জন্যই উপকারী। আমরা চাই, এই বাণিজ্য নেপাল, ভুটান, ভারত এবং এর বাইরেও প্রসারিত হোক। দেশগুলোর রাজনৈতিক নেতৃত্ব একসময় বুঝতে পারবে যে আঞ্চলিক জ্বালানি বাণিজ্য সবার জন্য লাভজনক হতে পারে। এই উপলব্ধি জ্বালানি বাণিজ্যের ক্ষেত্রে বড় পরিসরে আরও বেশি পরিষ্কার বোঝাপড়া তৈরি করবে।
প্রশ্ন: সম্প্রতি নেপাল, ভারত এবং বাংলাদেশ আন্তসীমান্ত বিদ্যুৎ বাণিজ্যের জন্য একটি ত্রিপক্ষীয় চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। আপনি কি মনে করেন, এটি ভূরাজনৈতিক সমস্যার কারণে প্রভাবিত হতে পারে?
ফাওজুল কবির খান: এই চুক্তি অনুযায়ী, নেপালের উদ্বৃত্ত বিদ্যুৎ প্রতিবছর ১৫ জুন থেকে ১৫ নভেম্বর পর্যন্ত ভারতের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে রপ্তানি করা হবে। ভারত নেপাল থেকে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহের ব্যবস্থা করবে। প্রথম পর্যায়ে, নেপাল ভারতীয় ভূখণ্ড ব্যবহার করে বাংলাদেশে ৪০ মেগাওয়াট জলবিদ্যুৎ রপ্তানি করবে। এটি বছরে মাত্র সাত মাস চলবে, প্রধানত গ্রীষ্মকালে।
আমি আশা করি, এটি কোনো সমস্যায় পড়বে না। আমরা যথাযথ আলোচনা করেছি, যা নিশ্চিত করবে যে—এই চুক্তিতে যুক্ত তিনটি দেশই উপকৃত হবে। পাশাপাশি, এটিকে আরও সম্প্রসারণের সুযোগ আছে।
প্রশ্ন: আপনার কি মনে হয় একটি সাধারণ গ্রিড (সমন্বিত গ্রিড) বাস্তবায়নের সম্ভাবনা আছে?
ফাওজুল কবির খান: আমার ধারণা এটি বাস্তবায়িত হতে আরও কিছুটা সময় লাগবে। এখানে চ্যালেঞ্জ আছে, যেমন—অবকাঠামো গড়ে তোলা এবং একটি কার্যকর জ্বালানি বিনিময় প্ল্যাটফর্ম তৈরি করা। ভারতের একটি পূর্ণাঙ্গ বিদ্যুৎ বিনিময় ব্যবস্থা (সিস্টেম) আছে, কিন্তু বাংলাদেশের এখনো এমন কোনো অবকাঠামো নেই। এ ছাড়া, বাজার সম্পর্কিত বিষয়গুলোরও সমাধান করতে হবে এবং অন্যান্য প্রযুক্তিগত সমস্যাও আছে।
প্রশ্ন: অবকাঠামোর প্রসঙ্গে বলা যায়, ট্যারিফও (শুল্কহার) একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। যেমন—ভারতীয় বাজারমূল্য নিয়ে বেশ সংবেদনশীল। এ ক্ষেত্রে ট্যারিফের বিষয়টি কীভাবে কাজ করবে বলে মনে করেন?
ফাওজুল কবির খান: ট্যারিফের বিষয়টির নিয়মিত পর্যালোচনা প্রয়োজন। আমাদের ট্যারিফ কমানোর জন্য সর্বদা সচেষ্ট থাকতে হবে। সস্তায় বিদ্যুৎ সরবরাহের একটি উপায় হলো—সৌরশক্তির দিকে ঝোঁকা। কারণ, সৌরশক্তির ব্যয় ক্রমাগত কমছে এবং এটি আন্তর্জাতিক জ্বালানি বা গ্যাসের মূল্যের অস্থিরতার প্রতি সংবেদনশীল নয়।
আমি বলতে পারি, সস্তায় বিদ্যুৎ সরবরাহের অনেক সুযোগ আছে। উদাহরণস্বরূপ, বাংলাদেশে অনেক অহেতুক ব্যয় আছে, যা কমানো যেতে পারে। সৌরশক্তি এবং অন্যান্য নবায়নযোগ্য উৎসগুলোকে উৎসাহিত করলে কম ট্যারিফ নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। একই সঙ্গে ইউটিলিটি বা সংস্থাপন খরচও কমানো যাবে। আমি মনে করি, আমরা স্থানীয় গৃহস্থালি ও শিল্প উভয় ধরনের ভোক্তার জন্যই একটি সহনীয় ট্যারিফ নিশ্চিত করতে পারব।
প্রশ্ন: বাংলাদেশ কি ট্যারিফ পর্যালোচনা করছে? এবং বিদ্যুৎ উৎপাদকদের সঙ্গে পেমেন্টের (পাওনা পরিশোধ) বিষয়টি কি সুষ্ঠু হয়েছে? আদানিসহ (জ্বালানি খাতের) অন্যান্য প্রকল্পগুলোর চলমান তদন্তের অবস্থা কী?
ফাওজুল কবির খান: আপনারা জানেন, আমাদের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি উন্নত হয়েছে এবং এমনকি আমাদের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভও এখন ভালো অবস্থায় আছে। আমরা সম্ভবত আমদানি করা এবং দেশীয় বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য শুল্ক পুনর্নির্ধারণ করতে যাচ্ছি। এটি আমাদের আর্থিক ব্যবস্থাপনাকে আরও ভালো করবে এবং বিদ্যুতের ক্রয়মূল্য স্থিতিশীল করবে। পাকিস্তান সম্প্রতি তাদের ট্যারিফ পর্যালোচনা করেছে।
আর হ্যাঁ, বর্তমানে বিভিন্ন প্রকল্পের ওপর তদন্ত চলছে।
প্রশ্ন: বর্তমান ভূরাজনৈতিক এবং বিভিন্ন দেশের অভ্যন্তরীণ (রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক) পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে বিদ্যুতের আন্তসীমান্ত বাণিজ্যের ভবিষ্যৎ কেমন হতে পারে?
ফাওজুল কবির খান: আন্তসীমান্ত বাণিজ্যের সফলতা মূলত নির্ভর করে চুক্তির শর্তগুলোর ওপর। সাধারণত এটি সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর জন্যই উপকারী। আমরা চাই, এই বাণিজ্য নেপাল, ভুটান, ভারত এবং এর বাইরেও প্রসারিত হোক। দেশগুলোর রাজনৈতিক নেতৃত্ব একসময় বুঝতে পারবে যে আঞ্চলিক জ্বালানি বাণিজ্য সবার জন্য লাভজনক হতে পারে। এই উপলব্ধি জ্বালানি বাণিজ্যের ক্ষেত্রে বড় পরিসরে আরও বেশি পরিষ্কার বোঝাপড়া তৈরি করবে।
প্রশ্ন: সম্প্রতি নেপাল, ভারত এবং বাংলাদেশ আন্তসীমান্ত বিদ্যুৎ বাণিজ্যের জন্য একটি ত্রিপক্ষীয় চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। আপনি কি মনে করেন, এটি ভূরাজনৈতিক সমস্যার কারণে প্রভাবিত হতে পারে?
ফাওজুল কবির খান: এই চুক্তি অনুযায়ী, নেপালের উদ্বৃত্ত বিদ্যুৎ প্রতিবছর ১৫ জুন থেকে ১৫ নভেম্বর পর্যন্ত ভারতের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে রপ্তানি করা হবে। ভারত নেপাল থেকে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহের ব্যবস্থা করবে। প্রথম পর্যায়ে, নেপাল ভারতীয় ভূখণ্ড ব্যবহার করে বাংলাদেশে ৪০ মেগাওয়াট জলবিদ্যুৎ রপ্তানি করবে। এটি বছরে মাত্র সাত মাস চলবে, প্রধানত গ্রীষ্মকালে।
আমি আশা করি, এটি কোনো সমস্যায় পড়বে না। আমরা যথাযথ আলোচনা করেছি, যা নিশ্চিত করবে যে—এই চুক্তিতে যুক্ত তিনটি দেশই উপকৃত হবে। পাশাপাশি, এটিকে আরও সম্প্রসারণের সুযোগ আছে।
প্রশ্ন: আপনার কি মনে হয় একটি সাধারণ গ্রিড (সমন্বিত গ্রিড) বাস্তবায়নের সম্ভাবনা আছে?
ফাওজুল কবির খান: আমার ধারণা এটি বাস্তবায়িত হতে আরও কিছুটা সময় লাগবে। এখানে চ্যালেঞ্জ আছে, যেমন—অবকাঠামো গড়ে তোলা এবং একটি কার্যকর জ্বালানি বিনিময় প্ল্যাটফর্ম তৈরি করা। ভারতের একটি পূর্ণাঙ্গ বিদ্যুৎ বিনিময় ব্যবস্থা (সিস্টেম) আছে, কিন্তু বাংলাদেশের এখনো এমন কোনো অবকাঠামো নেই। এ ছাড়া, বাজার সম্পর্কিত বিষয়গুলোরও সমাধান করতে হবে এবং অন্যান্য প্রযুক্তিগত সমস্যাও আছে।
প্রশ্ন: অবকাঠামোর প্রসঙ্গে বলা যায়, ট্যারিফও (শুল্কহার) একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। যেমন—ভারতীয় বাজারমূল্য নিয়ে বেশ সংবেদনশীল। এ ক্ষেত্রে ট্যারিফের বিষয়টি কীভাবে কাজ করবে বলে মনে করেন?
ফাওজুল কবির খান: ট্যারিফের বিষয়টির নিয়মিত পর্যালোচনা প্রয়োজন। আমাদের ট্যারিফ কমানোর জন্য সর্বদা সচেষ্ট থাকতে হবে। সস্তায় বিদ্যুৎ সরবরাহের একটি উপায় হলো—সৌরশক্তির দিকে ঝোঁকা। কারণ, সৌরশক্তির ব্যয় ক্রমাগত কমছে এবং এটি আন্তর্জাতিক জ্বালানি বা গ্যাসের মূল্যের অস্থিরতার প্রতি সংবেদনশীল নয়।
আমি বলতে পারি, সস্তায় বিদ্যুৎ সরবরাহের অনেক সুযোগ আছে। উদাহরণস্বরূপ, বাংলাদেশে অনেক অহেতুক ব্যয় আছে, যা কমানো যেতে পারে। সৌরশক্তি এবং অন্যান্য নবায়নযোগ্য উৎসগুলোকে উৎসাহিত করলে কম ট্যারিফ নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। একই সঙ্গে ইউটিলিটি বা সংস্থাপন খরচও কমানো যাবে। আমি মনে করি, আমরা স্থানীয় গৃহস্থালি ও শিল্প উভয় ধরনের ভোক্তার জন্যই একটি সহনীয় ট্যারিফ নিশ্চিত করতে পারব।
প্রশ্ন: বাংলাদেশ কি ট্যারিফ পর্যালোচনা করছে? এবং বিদ্যুৎ উৎপাদকদের সঙ্গে পেমেন্টের (পাওনা পরিশোধ) বিষয়টি কি সুষ্ঠু হয়েছে? আদানিসহ (জ্বালানি খাতের) অন্যান্য প্রকল্পগুলোর চলমান তদন্তের অবস্থা কী?
ফাওজুল কবির খান: আপনারা জানেন, আমাদের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি উন্নত হয়েছে এবং এমনকি আমাদের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভও এখন ভালো অবস্থায় আছে। আমরা সম্ভবত আমদানি করা এবং দেশীয় বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য শুল্ক পুনর্নির্ধারণ করতে যাচ্ছি। এটি আমাদের আর্থিক ব্যবস্থাপনাকে আরও ভালো করবে এবং বিদ্যুতের ক্রয়মূল্য স্থিতিশীল করবে। পাকিস্তান সম্প্রতি তাদের ট্যারিফ পর্যালোচনা করেছে।
আর হ্যাঁ, বর্তমানে বিভিন্ন প্রকল্পের ওপর তদন্ত চলছে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক ছিলেন আরিফ সোহেল। তিনি এখন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) যুগ্ম সদস্যসচিব। বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিসহ নানা বিষয়ে আজকের পত্রিকার সঙ্গে কথা বলেছেন তিনি। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন অর্চি হক।
১২ ঘণ্টা আগেডাকসু ও জাকসুর ভোটে বড় জয় পেয়েছে ছাত্রশিবির। বিপরীতে কেন্দ্রীয় একটি পদেও জিততে পারেনি ছাত্রদল। ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক মমিনুল ইসলাম জিসান। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন
১২ দিন আগেডাকসু ও জাকসুর ভোটে বড় জয় পেয়েছে ছাত্রশিবির। বিপরীতে কেন্দ্রীয় একটি পদেও জিততে পারেনি ছাত্রদল। এ নিয়ে কথা বলেছেন ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক আজিজুর রহমান আজাদ।
১২ দিন আগেআলতাফ পারভেজ লেখক ও গবেষক। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দর্শনে স্নাতকোত্তর। ডাকসুর নির্বাচিত সদস্য ছিলেন। ‘মুজিব বাহিনী থেকে গণবাহিনী: ইতিহাসের পুনঃপাঠ’, ‘বার্মা: জাতিগত সংঘাতের সাত দশক’, ‘শ্রীলঙ্কার তামিল ইলম’, ‘গ্রামসি ও তাঁর রাষ্ট্রচিন্তা’ প্রভৃতি তাঁর গুরুত্বপূর্ণ বই।
৩০ আগস্ট ২০২৫