আজকের পত্রিকা ডেস্ক

জন এফ কেনেডি হত্যাকাণ্ড মার্কিন মানসে এক দগদগে ক্ষত হয়ে রয়ে গেছে। সেই মুহূর্তের প্রচণ্ড ধাক্কা রিচার্ড ও’কনেলের কবিতা ‘নেক্রোসে’ চিত্রিত হয়েছে। তিনি লিখেছেন, ‘মাথাটি পেছনের দিকে ঝুঁকে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাচ্ছে, রক্তে ভেসে যাচ্ছে খুলি...।’ ১৯৬৩ সালের ২২ নভেম্বরের ডালাসের ডিলি প্লাজায় সেই ভয়াবহ কয়েক সেকেন্ড এক রহস্য রেখে গেছে, যা এখনো সমাধান হয়নি। এমনকি সদ্য প্রকাশিত ৮০ হাজার নথির পরও সেই রহস্য অনুদ্ঘাটিত।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সিদ্ধান্তে জন এফ কেনেডির হত্যাকাণ্ড সংক্রান্ত নথির প্রকাশ নতুন করে সেদিনের ঘটনাগুলো নিয়ে জল্পনা-কল্পনা উসকে দিয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার জেএফকে সেন্টার ফর দ্য পারফর্মিং আর্টস সফরকালে ট্রাম্প আমেরিকানদের উদ্দেশে বলেন, ‘আপনাদের জানার জন্য অনেক কিছুই আছে এতে।’ এবং তিনি জানান, তাঁর প্রশাসন কোনো তথ্য গোপন রাখবে না।
এর আগে, ২০১৭ সালে ট্রাম্প অতিরিক্ত নথি প্রকাশের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। যদিও জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে হাজারো নথির কিছু অংশ অবশ্য প্রকাশ করা হয়নি। চলতি বছরের জানুয়ারিতে তিনি এক নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে কেনেডি হত্যাকাণ্ডের পাশাপাশি রবার্ট এফ. কেনেডি ও মার্টিন লুথার কিং জুনিয়রের হত্যাকাণ্ড সম্পর্কিত বাকি সব নথি প্রকাশের নির্দেশ দেন।
সর্বশেষ প্রকাশিত নথিপত্রের অংশ হিসেবে নতুনভাবে চিহ্নিত ১ হাজার ১২৩টি ফাইল প্রকাশ করা হয়েছে। গবেষক ও বিশ্লেষকেরা এখন এসব নথি পর্যালোচনা করে নতুন তথ্য অনুসন্ধান করছেন।
জন এফ কেনেডি হত্যাকাণ্ডের রাতেই গোয়েন্দা কর্মকর্তা জে গ্যারেট আন্ডারহিল আতঙ্কিত অবস্থায় ওয়াশিংটন ছেড়ে পালিয়ে যান। তিনি নিউজার্সিতে এক বন্ধুর বাড়িতে আশ্রয় নেন। সেখানে তিনি স্পষ্টতই ভীত ও বিচলিত ছিলেন। প্রকাশিত নথিতে পাওয়া এক মেমো অনুযায়ী, আন্ডারহিল অভিযোগ করেন যে, সিআইএর ভেতরের একটি ‘ছোট গোষ্ঠী’ কেনেডি হত্যাকাণ্ডের জন্য দায়ী।
প্রকাশিত নথির তথ্য অনুসারে, আন্ডারহিল নাকি তাঁর বন্ধু শার্লিন ফিটসিমন্সকে বলেছিলেন, জন এফ কেনেডি হত্যাকাণ্ডের পেছনে সিআইএ যুক্ত ছিল। তিনি বলেন, ‘(লি হার্ভে) অসওয়াল্ড স্রেফ বলির পাঁঠা।’ আন্ডারহিল দাবি করেন, প্রকৃত ষড়যন্ত্রকারীরা ‘ভয়ংকর কিছু একটা করেছে’ এবং তাঁরা অস্ত্র চোরাচালান, মাদক ব্যবসা ও অন্যান্য অবৈধ কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিল।
পরিচিত সামরিক গোয়েন্দা কর্মকর্তা, পরামর্শক এবং সামরিক বিষয়ে লেখক হিসেবে আন্ডারহিলের অতীত তাঁর আশঙ্কাকে আরও বিশ্বাসযোগ্য করে তোলে। ১৯৬৭ সালের ১৯ জুলাই তারিখের এক নথিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘যেসব বন্ধুর কাছে আন্ডারহিল গিয়েছিলেন, তারা বলেছেন, তিনি তখন নেশাগ্রস্ত ছিলেন না, কিন্তু প্রবলভাবে আতঙ্কিত ছিলেন। তাঁরা জানান, আন্ডারহিল দাবি করেছিলেন যে, অস্ত্র চোরাচালান, মাদক ব্যবসা এবং অন্যান্য অবৈধ কাজে জড়িত সিআইএর একটি চক্র, যারা রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে নিজেদের স্বার্থসিদ্ধি করছিল, তারাই কেনেডিকে হত্যা করেছে। নাকি কেনেডি এই অনিয়মের কথা জানতে পেরেছিলেন এবং এ সম্পর্কে প্রকাশ্যে বলার আগেই তাঁকে হত্যা করা হয়েছিল।’
যদিও বন্ধুরা সব সময় আন্ডারহিলকে সম্পূর্ণ বাস্তববাদী ও যুক্তিবাদী বলে চিনতেন, প্রথমে তারা তাঁর বক্তব্যকে গুরুত্ব দেননি। এ বিষয়ে নথিতে বলা হয়, তাঁর এক বন্ধু বলেন, ‘আমার মনে হয়, এর প্রধান কারণ ছিল—আমরা বিশ্বাসই করতে পারছিলাম না যে, সিআইএর ভেতরে এমন একটি দুর্নীতিগ্রস্ত গোষ্ঠী থাকতে পারে, যারা মাফিয়ার মতোই নির্মম এবং আরও দক্ষ।’
প্রাণের ভয়ে আন্ডারহিল কেনেডি হত্যাকাণ্ডের পরপরই ওয়াশিংটন ছেড়ে পালিয়ে যান এবং তাঁর বন্ধুদের জানান, তিনি দেশত্যাগে বাধ্য হতে পারেন। তবে এর ছয় মাসেরও কম সময় পর ১৯৬৪ সালের ৮ মে আন্ডারহিলকে ওয়াশিংটনে তাঁর নিজ অ্যাপার্টমেন্টে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। তাঁর মাথা গুলিবিদ্ধ অবস্থায় ছিল। সরকারিভাবে এটিকে আত্মহত্যা বলে ঘোষণা করা হলেও বেশ কিছু অসংগতি নানা গুজবকে উসকে দিয়েছে। যেমন— তিনি ডানহাতি হওয়া সত্ত্বেও তাঁর মাথার বাম কানের পেছনে গুলি কীভাবে হলো?
আন্ডারহিলের মৃতদেহ প্রথম দেখতে পান দ্য নিউ রিপাবলিকের এক ব্যক্তি—অ্যাশার ব্রাইনস। প্রকাশিত গোপন নথিতে বলা হয়েছে, ‘আন্ডারহিলের মৃত্যুকে আত্মহত্যা বলে ঘোষণা দেওয়া মোটেও বিশ্বাসযোগ্য নয়। তাঁর দেহ আবিষ্কার করেন তাঁর লেখালেখির সহযোগী দ্য নিউ রিপাবলিকে অ্যাশার ব্রাইনস।’
নথিতে বলা হয়, ‘তাঁর (আন্ডারহিল) মাথার বাঁ কানের পেছনে গুলি লেগেছিল, আর একটি অটোমেটিক পিস্তল পাওয়া যায় তাঁর শরীরের বাঁ পাশে। বিষয়টি অদ্ভুত। কারণ ব্রাইনস জানান, আন্ডারহিল ছিলেন ডানহাতি। ব্রাইনসের ধারণা, ওই পিস্তলে সাইলেন্সার লাগানো ছিল, কারণ ওই অ্যাপার্টমেন্ট ভবনের বাসিন্দারা কোনো গুলির শব্দ শোনেননি। দেখা যাচ্ছে, আন্ডারহিল কয়েক দিন আগেই মারা গিয়েছিলেন।’
১৯১৫ সালে ব্রুকলিনে জন্মগ্রহণ করা আন্ডারহিল হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক সম্পন্ন করেন এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় গোয়েন্দা জগতে প্রবেশ করেন। সামরিক গোয়েন্দা বিভাগে (এমআইএস) তাঁর কাজের জন্য তাঁকে যুদ্ধ বিভাগ থেকে দক্ষতার স্বীকৃতি প্রদান করা হয়। যুদ্ধের পর সিআইএ তাঁকে নিয়োগের বিষয়ে বিবেচনা করলেও নথিপত্রে দেখা যায়, তাঁকে সতর্কতার সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করতে বলা হয় এবং সীমিত মাত্রায় গোপন তথ্যের প্রবেশাধিকার দেওয়ার সুপারিশ করা হয়।
১৯৫০-এর দশকের মাঝামাঝি আন্ডারহিল সাংবাদিক ও পরামর্শক হিসেবে সুপরিচিত হয়ে ওঠেন। তিনি ‘লাইফ’ ও ‘এসকোয়ার’ পত্রিকায় লিখতেন এবং প্রায়শই মার্কিন সামরিক প্রস্তুতির সমালোচনা করতেন। তাঁর সঙ্গে গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর যোগাযোগ অব্যাহত ছিল, বিশেষ করে সোভিয়েত ইউনিয়নের সামরিক বিশ্লেষণের ক্ষেত্রে। তিনি একবার এফবিআই এবং সিআইএকে হারমান অ্যাক্সেলব্যাঙ্ক সম্পর্কে তথ্য দিয়েছিলেন। এই ব্যক্তি সোভিয়েত ইউনিয়নের সামরিক সরঞ্জাম ও স্থাপনার ছবি বিক্রি করতেন।
নতুন প্রকাশিত নথিগুলো লি হার্ভে ওসওয়াল্ডের ভূমিকা নিয়ে আগের সন্দেহগুলোকেই আরও জোরদার করেছে। সরকারিভাবে বলা হয়, ওসওয়াল্ড একাই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছিলেন। কিন্তু এই বক্তব্যের অসংগতি আছে। গুলির সময়কাল, বুলেটের গতিপথ এবং প্রত্যক্ষদর্শীদের সাক্ষ্য থেকে দ্বিতীয় একজন বন্দুকধারীর সম্ভাবনার ইঙ্গিত পাওয়া যায়।
ডালাসের ডিলে প্লাজায় প্রেসিডেন্ট কেনেডি ও তাঁর গাড়িবহরের ওপর হামলার মুহূর্ত ধারণকারী কোম্পানি জাপ্রুডার ফিল্মের চিত্র থেকে দেখা যায় যে, গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর কেনেডির মাথা পেছনের দিকে নড়ে যায়। অথচ, প্রচলিত ধারণা, গুলিগুলো পেছন থেকে করা হয়েছিল।
ওসওয়াল্ডের অতীত রহস্য আরও ঘনীভূত করে। সাবেক মেরিন সদস্য ওসওয়াল্ড ১৯৫৯ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নে পালিয়ে যান। পরে তিনি এক রুশ নারীকে বিয়ে করে তাঁকে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে আসেন। তাঁর সঙ্গে কিউবার প্রেসিডেন্ট ফিদেল কাস্ত্রোপন্থী ও বিরোধী উভয় গোষ্ঠীর যোগাযোগ ছিল বলে প্রমাণ আছে। পাশাপাশি কেনেডি হত্যাকাণ্ডের আগে থেকেই তাঁকে সিআইএ ও এফবিআই নজরদারিতে রেখেছিল। এসব কারণেই অনেকে সন্দেহ করেন যে, তিনি একা কাজ করেননি।
সম্প্রতি নবগঠিত টাস্কফোর্স অন দ্য ডিক্লাসিফিকেশন অব ফেডারেল সিক্রেটসের প্রধান আনা পলিনা লুনা ‘দুজন বন্দুকধারী’ তত্ত্বকে সমর্থন করেছেন। তাঁর এই অবস্থান বহুদিন ধরে প্রচলিত ওয়ারেন কমিশনের উপসংহারকে চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছে।
প্রকাশিত নথিপত্রে স্যামুয়েল জর্জ কামিংস নামে এক ব্যক্তির বিষয়েও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উঠে এসেছে। কামিংস অস্ত্র ব্যবসায়ী ছিলেন এবং তাঁর সঙ্গে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সংযোগ ছিল। তিনি সিআইএ-তে অস্ত্র বিশেষজ্ঞ হিসেবে কাজ করেছেন এবং বিদেশি অস্ত্র কেনা ও বিতরণের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। নথিপত্রে উল্লেখ আছে, তিনি যুক্তরাষ্ট্রসহ বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতেন, যার মধ্যে তৎকালীন পশ্চিম জার্মানির গোয়েন্দা সংস্থা বিএনডি অন্যতম। এমনকি তিনি কিউবা বিরোধী গোপন অস্ত্র চুক্তির সঙ্গেও যুক্ত থাকতে পারেন বলে ইঙ্গিত পাওয়া গেছে।
কামিংসের কোম্পানি ইন্টারন্যাশনাল আর্মামেন্ট করপোরেশন (ইন্টারার্মকো) বিভিন্ন বিদ্রোহী গোষ্ঠীর কাছে অস্ত্র সরবরাহ করত। যদিও জন এফ. কেনেডি হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে তাঁর সরাসরি কোনো সম্পর্কের প্রমাণ পাওয়া যায়নি, তবে তাঁর কার্যক্রম ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সংযোগ ১৯৬৩ সালের ২২ নভেম্বরের একটি ঘটনার পটভূমি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।
আরেকটি দীর্ঘদিনের রহস্য হলো কেন জ্যাক রুবি। তিনি ডালাসের এক নাইটক্লাব মালিক। তাঁর সংগঠিত অপরাধচক্রের সঙ্গে সম্পৃক্ততার অভিযোগ ছিল। কেনেডি হত্যার দুই দিন পর তিনি ওসওয়াল্ডকে গুলি করেছেন। যদিও রুবি দাবি করেছিলেন, তিনি শোকের বশে এটি করেছেন, তবে সন্দেহবাদীরা মনে করেন, তিনি ওসওয়াল্ডকে চুপ করিয়ে দিতে চেয়েছিলেন, যাতে সে আরও তথ্য প্রকাশ করতে না পারে।
রুবির বিচার এবং কারাগারে থাকার সময় ক্যানসারে তাঁর মৃত্যুর ঘটনা সন্দেহ আরও বাড়িয়ে তুলেছে। রহস্য আরও ঘনীভূত হয় যখন জানা যায় যে, কারাগারে রুবির চিকিৎসার সঙ্গে যুক্ত ডাক্তারদের একজন লুইস জোলিয়ন ওয়েস্ট ছিলেন সিআইএ-এর মস্তিষ্ক নিয়ন্ত্রণ প্রকল্প ‘এমকেআল্ট্রা’—এর সঙ্গে জড়িত গবেষক।
জেএফকে হত্যাকাণ্ডের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বস্তুগত প্রমাণ এখনো বিতর্কিত রয়ে গেছে। বিশেষ করে ‘ম্যাজিক বুলেট’ তত্ত্ব। যেখানে দাবি করা হয় যে, একটি মাত্র গুলি প্রেসিডেন্ট কেনেডি এবং টেক্সাসের গভর্নর জন কনেলিকে একসঙ্গে আঘাত করেছিল—এই ধারণাকে বহু বিশ্লেষক অবিশ্বাস্য বলে মনে করেন।
এনডিটিভি থেকে অনুবাদ করেছেন আজকের পত্রিকার সহ-সম্পাদক আব্দুর রহমান

জন এফ কেনেডি হত্যাকাণ্ড মার্কিন মানসে এক দগদগে ক্ষত হয়ে রয়ে গেছে। সেই মুহূর্তের প্রচণ্ড ধাক্কা রিচার্ড ও’কনেলের কবিতা ‘নেক্রোসে’ চিত্রিত হয়েছে। তিনি লিখেছেন, ‘মাথাটি পেছনের দিকে ঝুঁকে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাচ্ছে, রক্তে ভেসে যাচ্ছে খুলি...।’ ১৯৬৩ সালের ২২ নভেম্বরের ডালাসের ডিলি প্লাজায় সেই ভয়াবহ কয়েক সেকেন্ড এক রহস্য রেখে গেছে, যা এখনো সমাধান হয়নি। এমনকি সদ্য প্রকাশিত ৮০ হাজার নথির পরও সেই রহস্য অনুদ্ঘাটিত।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সিদ্ধান্তে জন এফ কেনেডির হত্যাকাণ্ড সংক্রান্ত নথির প্রকাশ নতুন করে সেদিনের ঘটনাগুলো নিয়ে জল্পনা-কল্পনা উসকে দিয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার জেএফকে সেন্টার ফর দ্য পারফর্মিং আর্টস সফরকালে ট্রাম্প আমেরিকানদের উদ্দেশে বলেন, ‘আপনাদের জানার জন্য অনেক কিছুই আছে এতে।’ এবং তিনি জানান, তাঁর প্রশাসন কোনো তথ্য গোপন রাখবে না।
এর আগে, ২০১৭ সালে ট্রাম্প অতিরিক্ত নথি প্রকাশের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। যদিও জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে হাজারো নথির কিছু অংশ অবশ্য প্রকাশ করা হয়নি। চলতি বছরের জানুয়ারিতে তিনি এক নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে কেনেডি হত্যাকাণ্ডের পাশাপাশি রবার্ট এফ. কেনেডি ও মার্টিন লুথার কিং জুনিয়রের হত্যাকাণ্ড সম্পর্কিত বাকি সব নথি প্রকাশের নির্দেশ দেন।
সর্বশেষ প্রকাশিত নথিপত্রের অংশ হিসেবে নতুনভাবে চিহ্নিত ১ হাজার ১২৩টি ফাইল প্রকাশ করা হয়েছে। গবেষক ও বিশ্লেষকেরা এখন এসব নথি পর্যালোচনা করে নতুন তথ্য অনুসন্ধান করছেন।
জন এফ কেনেডি হত্যাকাণ্ডের রাতেই গোয়েন্দা কর্মকর্তা জে গ্যারেট আন্ডারহিল আতঙ্কিত অবস্থায় ওয়াশিংটন ছেড়ে পালিয়ে যান। তিনি নিউজার্সিতে এক বন্ধুর বাড়িতে আশ্রয় নেন। সেখানে তিনি স্পষ্টতই ভীত ও বিচলিত ছিলেন। প্রকাশিত নথিতে পাওয়া এক মেমো অনুযায়ী, আন্ডারহিল অভিযোগ করেন যে, সিআইএর ভেতরের একটি ‘ছোট গোষ্ঠী’ কেনেডি হত্যাকাণ্ডের জন্য দায়ী।
প্রকাশিত নথির তথ্য অনুসারে, আন্ডারহিল নাকি তাঁর বন্ধু শার্লিন ফিটসিমন্সকে বলেছিলেন, জন এফ কেনেডি হত্যাকাণ্ডের পেছনে সিআইএ যুক্ত ছিল। তিনি বলেন, ‘(লি হার্ভে) অসওয়াল্ড স্রেফ বলির পাঁঠা।’ আন্ডারহিল দাবি করেন, প্রকৃত ষড়যন্ত্রকারীরা ‘ভয়ংকর কিছু একটা করেছে’ এবং তাঁরা অস্ত্র চোরাচালান, মাদক ব্যবসা ও অন্যান্য অবৈধ কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিল।
পরিচিত সামরিক গোয়েন্দা কর্মকর্তা, পরামর্শক এবং সামরিক বিষয়ে লেখক হিসেবে আন্ডারহিলের অতীত তাঁর আশঙ্কাকে আরও বিশ্বাসযোগ্য করে তোলে। ১৯৬৭ সালের ১৯ জুলাই তারিখের এক নথিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘যেসব বন্ধুর কাছে আন্ডারহিল গিয়েছিলেন, তারা বলেছেন, তিনি তখন নেশাগ্রস্ত ছিলেন না, কিন্তু প্রবলভাবে আতঙ্কিত ছিলেন। তাঁরা জানান, আন্ডারহিল দাবি করেছিলেন যে, অস্ত্র চোরাচালান, মাদক ব্যবসা এবং অন্যান্য অবৈধ কাজে জড়িত সিআইএর একটি চক্র, যারা রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে নিজেদের স্বার্থসিদ্ধি করছিল, তারাই কেনেডিকে হত্যা করেছে। নাকি কেনেডি এই অনিয়মের কথা জানতে পেরেছিলেন এবং এ সম্পর্কে প্রকাশ্যে বলার আগেই তাঁকে হত্যা করা হয়েছিল।’
যদিও বন্ধুরা সব সময় আন্ডারহিলকে সম্পূর্ণ বাস্তববাদী ও যুক্তিবাদী বলে চিনতেন, প্রথমে তারা তাঁর বক্তব্যকে গুরুত্ব দেননি। এ বিষয়ে নথিতে বলা হয়, তাঁর এক বন্ধু বলেন, ‘আমার মনে হয়, এর প্রধান কারণ ছিল—আমরা বিশ্বাসই করতে পারছিলাম না যে, সিআইএর ভেতরে এমন একটি দুর্নীতিগ্রস্ত গোষ্ঠী থাকতে পারে, যারা মাফিয়ার মতোই নির্মম এবং আরও দক্ষ।’
প্রাণের ভয়ে আন্ডারহিল কেনেডি হত্যাকাণ্ডের পরপরই ওয়াশিংটন ছেড়ে পালিয়ে যান এবং তাঁর বন্ধুদের জানান, তিনি দেশত্যাগে বাধ্য হতে পারেন। তবে এর ছয় মাসেরও কম সময় পর ১৯৬৪ সালের ৮ মে আন্ডারহিলকে ওয়াশিংটনে তাঁর নিজ অ্যাপার্টমেন্টে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। তাঁর মাথা গুলিবিদ্ধ অবস্থায় ছিল। সরকারিভাবে এটিকে আত্মহত্যা বলে ঘোষণা করা হলেও বেশ কিছু অসংগতি নানা গুজবকে উসকে দিয়েছে। যেমন— তিনি ডানহাতি হওয়া সত্ত্বেও তাঁর মাথার বাম কানের পেছনে গুলি কীভাবে হলো?
আন্ডারহিলের মৃতদেহ প্রথম দেখতে পান দ্য নিউ রিপাবলিকের এক ব্যক্তি—অ্যাশার ব্রাইনস। প্রকাশিত গোপন নথিতে বলা হয়েছে, ‘আন্ডারহিলের মৃত্যুকে আত্মহত্যা বলে ঘোষণা দেওয়া মোটেও বিশ্বাসযোগ্য নয়। তাঁর দেহ আবিষ্কার করেন তাঁর লেখালেখির সহযোগী দ্য নিউ রিপাবলিকে অ্যাশার ব্রাইনস।’
নথিতে বলা হয়, ‘তাঁর (আন্ডারহিল) মাথার বাঁ কানের পেছনে গুলি লেগেছিল, আর একটি অটোমেটিক পিস্তল পাওয়া যায় তাঁর শরীরের বাঁ পাশে। বিষয়টি অদ্ভুত। কারণ ব্রাইনস জানান, আন্ডারহিল ছিলেন ডানহাতি। ব্রাইনসের ধারণা, ওই পিস্তলে সাইলেন্সার লাগানো ছিল, কারণ ওই অ্যাপার্টমেন্ট ভবনের বাসিন্দারা কোনো গুলির শব্দ শোনেননি। দেখা যাচ্ছে, আন্ডারহিল কয়েক দিন আগেই মারা গিয়েছিলেন।’
১৯১৫ সালে ব্রুকলিনে জন্মগ্রহণ করা আন্ডারহিল হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক সম্পন্ন করেন এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় গোয়েন্দা জগতে প্রবেশ করেন। সামরিক গোয়েন্দা বিভাগে (এমআইএস) তাঁর কাজের জন্য তাঁকে যুদ্ধ বিভাগ থেকে দক্ষতার স্বীকৃতি প্রদান করা হয়। যুদ্ধের পর সিআইএ তাঁকে নিয়োগের বিষয়ে বিবেচনা করলেও নথিপত্রে দেখা যায়, তাঁকে সতর্কতার সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করতে বলা হয় এবং সীমিত মাত্রায় গোপন তথ্যের প্রবেশাধিকার দেওয়ার সুপারিশ করা হয়।
১৯৫০-এর দশকের মাঝামাঝি আন্ডারহিল সাংবাদিক ও পরামর্শক হিসেবে সুপরিচিত হয়ে ওঠেন। তিনি ‘লাইফ’ ও ‘এসকোয়ার’ পত্রিকায় লিখতেন এবং প্রায়শই মার্কিন সামরিক প্রস্তুতির সমালোচনা করতেন। তাঁর সঙ্গে গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর যোগাযোগ অব্যাহত ছিল, বিশেষ করে সোভিয়েত ইউনিয়নের সামরিক বিশ্লেষণের ক্ষেত্রে। তিনি একবার এফবিআই এবং সিআইএকে হারমান অ্যাক্সেলব্যাঙ্ক সম্পর্কে তথ্য দিয়েছিলেন। এই ব্যক্তি সোভিয়েত ইউনিয়নের সামরিক সরঞ্জাম ও স্থাপনার ছবি বিক্রি করতেন।
নতুন প্রকাশিত নথিগুলো লি হার্ভে ওসওয়াল্ডের ভূমিকা নিয়ে আগের সন্দেহগুলোকেই আরও জোরদার করেছে। সরকারিভাবে বলা হয়, ওসওয়াল্ড একাই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছিলেন। কিন্তু এই বক্তব্যের অসংগতি আছে। গুলির সময়কাল, বুলেটের গতিপথ এবং প্রত্যক্ষদর্শীদের সাক্ষ্য থেকে দ্বিতীয় একজন বন্দুকধারীর সম্ভাবনার ইঙ্গিত পাওয়া যায়।
ডালাসের ডিলে প্লাজায় প্রেসিডেন্ট কেনেডি ও তাঁর গাড়িবহরের ওপর হামলার মুহূর্ত ধারণকারী কোম্পানি জাপ্রুডার ফিল্মের চিত্র থেকে দেখা যায় যে, গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর কেনেডির মাথা পেছনের দিকে নড়ে যায়। অথচ, প্রচলিত ধারণা, গুলিগুলো পেছন থেকে করা হয়েছিল।
ওসওয়াল্ডের অতীত রহস্য আরও ঘনীভূত করে। সাবেক মেরিন সদস্য ওসওয়াল্ড ১৯৫৯ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নে পালিয়ে যান। পরে তিনি এক রুশ নারীকে বিয়ে করে তাঁকে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে আসেন। তাঁর সঙ্গে কিউবার প্রেসিডেন্ট ফিদেল কাস্ত্রোপন্থী ও বিরোধী উভয় গোষ্ঠীর যোগাযোগ ছিল বলে প্রমাণ আছে। পাশাপাশি কেনেডি হত্যাকাণ্ডের আগে থেকেই তাঁকে সিআইএ ও এফবিআই নজরদারিতে রেখেছিল। এসব কারণেই অনেকে সন্দেহ করেন যে, তিনি একা কাজ করেননি।
সম্প্রতি নবগঠিত টাস্কফোর্স অন দ্য ডিক্লাসিফিকেশন অব ফেডারেল সিক্রেটসের প্রধান আনা পলিনা লুনা ‘দুজন বন্দুকধারী’ তত্ত্বকে সমর্থন করেছেন। তাঁর এই অবস্থান বহুদিন ধরে প্রচলিত ওয়ারেন কমিশনের উপসংহারকে চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছে।
প্রকাশিত নথিপত্রে স্যামুয়েল জর্জ কামিংস নামে এক ব্যক্তির বিষয়েও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উঠে এসেছে। কামিংস অস্ত্র ব্যবসায়ী ছিলেন এবং তাঁর সঙ্গে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সংযোগ ছিল। তিনি সিআইএ-তে অস্ত্র বিশেষজ্ঞ হিসেবে কাজ করেছেন এবং বিদেশি অস্ত্র কেনা ও বিতরণের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। নথিপত্রে উল্লেখ আছে, তিনি যুক্তরাষ্ট্রসহ বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতেন, যার মধ্যে তৎকালীন পশ্চিম জার্মানির গোয়েন্দা সংস্থা বিএনডি অন্যতম। এমনকি তিনি কিউবা বিরোধী গোপন অস্ত্র চুক্তির সঙ্গেও যুক্ত থাকতে পারেন বলে ইঙ্গিত পাওয়া গেছে।
কামিংসের কোম্পানি ইন্টারন্যাশনাল আর্মামেন্ট করপোরেশন (ইন্টারার্মকো) বিভিন্ন বিদ্রোহী গোষ্ঠীর কাছে অস্ত্র সরবরাহ করত। যদিও জন এফ. কেনেডি হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে তাঁর সরাসরি কোনো সম্পর্কের প্রমাণ পাওয়া যায়নি, তবে তাঁর কার্যক্রম ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সংযোগ ১৯৬৩ সালের ২২ নভেম্বরের একটি ঘটনার পটভূমি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।
আরেকটি দীর্ঘদিনের রহস্য হলো কেন জ্যাক রুবি। তিনি ডালাসের এক নাইটক্লাব মালিক। তাঁর সংগঠিত অপরাধচক্রের সঙ্গে সম্পৃক্ততার অভিযোগ ছিল। কেনেডি হত্যার দুই দিন পর তিনি ওসওয়াল্ডকে গুলি করেছেন। যদিও রুবি দাবি করেছিলেন, তিনি শোকের বশে এটি করেছেন, তবে সন্দেহবাদীরা মনে করেন, তিনি ওসওয়াল্ডকে চুপ করিয়ে দিতে চেয়েছিলেন, যাতে সে আরও তথ্য প্রকাশ করতে না পারে।
রুবির বিচার এবং কারাগারে থাকার সময় ক্যানসারে তাঁর মৃত্যুর ঘটনা সন্দেহ আরও বাড়িয়ে তুলেছে। রহস্য আরও ঘনীভূত হয় যখন জানা যায় যে, কারাগারে রুবির চিকিৎসার সঙ্গে যুক্ত ডাক্তারদের একজন লুইস জোলিয়ন ওয়েস্ট ছিলেন সিআইএ-এর মস্তিষ্ক নিয়ন্ত্রণ প্রকল্প ‘এমকেআল্ট্রা’—এর সঙ্গে জড়িত গবেষক।
জেএফকে হত্যাকাণ্ডের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বস্তুগত প্রমাণ এখনো বিতর্কিত রয়ে গেছে। বিশেষ করে ‘ম্যাজিক বুলেট’ তত্ত্ব। যেখানে দাবি করা হয় যে, একটি মাত্র গুলি প্রেসিডেন্ট কেনেডি এবং টেক্সাসের গভর্নর জন কনেলিকে একসঙ্গে আঘাত করেছিল—এই ধারণাকে বহু বিশ্লেষক অবিশ্বাস্য বলে মনে করেন।
এনডিটিভি থেকে অনুবাদ করেছেন আজকের পত্রিকার সহ-সম্পাদক আব্দুর রহমান
আজকের পত্রিকা ডেস্ক

জন এফ কেনেডি হত্যাকাণ্ড মার্কিন মানসে এক দগদগে ক্ষত হয়ে রয়ে গেছে। সেই মুহূর্তের প্রচণ্ড ধাক্কা রিচার্ড ও’কনেলের কবিতা ‘নেক্রোসে’ চিত্রিত হয়েছে। তিনি লিখেছেন, ‘মাথাটি পেছনের দিকে ঝুঁকে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাচ্ছে, রক্তে ভেসে যাচ্ছে খুলি...।’ ১৯৬৩ সালের ২২ নভেম্বরের ডালাসের ডিলি প্লাজায় সেই ভয়াবহ কয়েক সেকেন্ড এক রহস্য রেখে গেছে, যা এখনো সমাধান হয়নি। এমনকি সদ্য প্রকাশিত ৮০ হাজার নথির পরও সেই রহস্য অনুদ্ঘাটিত।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সিদ্ধান্তে জন এফ কেনেডির হত্যাকাণ্ড সংক্রান্ত নথির প্রকাশ নতুন করে সেদিনের ঘটনাগুলো নিয়ে জল্পনা-কল্পনা উসকে দিয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার জেএফকে সেন্টার ফর দ্য পারফর্মিং আর্টস সফরকালে ট্রাম্প আমেরিকানদের উদ্দেশে বলেন, ‘আপনাদের জানার জন্য অনেক কিছুই আছে এতে।’ এবং তিনি জানান, তাঁর প্রশাসন কোনো তথ্য গোপন রাখবে না।
এর আগে, ২০১৭ সালে ট্রাম্প অতিরিক্ত নথি প্রকাশের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। যদিও জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে হাজারো নথির কিছু অংশ অবশ্য প্রকাশ করা হয়নি। চলতি বছরের জানুয়ারিতে তিনি এক নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে কেনেডি হত্যাকাণ্ডের পাশাপাশি রবার্ট এফ. কেনেডি ও মার্টিন লুথার কিং জুনিয়রের হত্যাকাণ্ড সম্পর্কিত বাকি সব নথি প্রকাশের নির্দেশ দেন।
সর্বশেষ প্রকাশিত নথিপত্রের অংশ হিসেবে নতুনভাবে চিহ্নিত ১ হাজার ১২৩টি ফাইল প্রকাশ করা হয়েছে। গবেষক ও বিশ্লেষকেরা এখন এসব নথি পর্যালোচনা করে নতুন তথ্য অনুসন্ধান করছেন।
জন এফ কেনেডি হত্যাকাণ্ডের রাতেই গোয়েন্দা কর্মকর্তা জে গ্যারেট আন্ডারহিল আতঙ্কিত অবস্থায় ওয়াশিংটন ছেড়ে পালিয়ে যান। তিনি নিউজার্সিতে এক বন্ধুর বাড়িতে আশ্রয় নেন। সেখানে তিনি স্পষ্টতই ভীত ও বিচলিত ছিলেন। প্রকাশিত নথিতে পাওয়া এক মেমো অনুযায়ী, আন্ডারহিল অভিযোগ করেন যে, সিআইএর ভেতরের একটি ‘ছোট গোষ্ঠী’ কেনেডি হত্যাকাণ্ডের জন্য দায়ী।
প্রকাশিত নথির তথ্য অনুসারে, আন্ডারহিল নাকি তাঁর বন্ধু শার্লিন ফিটসিমন্সকে বলেছিলেন, জন এফ কেনেডি হত্যাকাণ্ডের পেছনে সিআইএ যুক্ত ছিল। তিনি বলেন, ‘(লি হার্ভে) অসওয়াল্ড স্রেফ বলির পাঁঠা।’ আন্ডারহিল দাবি করেন, প্রকৃত ষড়যন্ত্রকারীরা ‘ভয়ংকর কিছু একটা করেছে’ এবং তাঁরা অস্ত্র চোরাচালান, মাদক ব্যবসা ও অন্যান্য অবৈধ কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিল।
পরিচিত সামরিক গোয়েন্দা কর্মকর্তা, পরামর্শক এবং সামরিক বিষয়ে লেখক হিসেবে আন্ডারহিলের অতীত তাঁর আশঙ্কাকে আরও বিশ্বাসযোগ্য করে তোলে। ১৯৬৭ সালের ১৯ জুলাই তারিখের এক নথিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘যেসব বন্ধুর কাছে আন্ডারহিল গিয়েছিলেন, তারা বলেছেন, তিনি তখন নেশাগ্রস্ত ছিলেন না, কিন্তু প্রবলভাবে আতঙ্কিত ছিলেন। তাঁরা জানান, আন্ডারহিল দাবি করেছিলেন যে, অস্ত্র চোরাচালান, মাদক ব্যবসা এবং অন্যান্য অবৈধ কাজে জড়িত সিআইএর একটি চক্র, যারা রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে নিজেদের স্বার্থসিদ্ধি করছিল, তারাই কেনেডিকে হত্যা করেছে। নাকি কেনেডি এই অনিয়মের কথা জানতে পেরেছিলেন এবং এ সম্পর্কে প্রকাশ্যে বলার আগেই তাঁকে হত্যা করা হয়েছিল।’
যদিও বন্ধুরা সব সময় আন্ডারহিলকে সম্পূর্ণ বাস্তববাদী ও যুক্তিবাদী বলে চিনতেন, প্রথমে তারা তাঁর বক্তব্যকে গুরুত্ব দেননি। এ বিষয়ে নথিতে বলা হয়, তাঁর এক বন্ধু বলেন, ‘আমার মনে হয়, এর প্রধান কারণ ছিল—আমরা বিশ্বাসই করতে পারছিলাম না যে, সিআইএর ভেতরে এমন একটি দুর্নীতিগ্রস্ত গোষ্ঠী থাকতে পারে, যারা মাফিয়ার মতোই নির্মম এবং আরও দক্ষ।’
প্রাণের ভয়ে আন্ডারহিল কেনেডি হত্যাকাণ্ডের পরপরই ওয়াশিংটন ছেড়ে পালিয়ে যান এবং তাঁর বন্ধুদের জানান, তিনি দেশত্যাগে বাধ্য হতে পারেন। তবে এর ছয় মাসেরও কম সময় পর ১৯৬৪ সালের ৮ মে আন্ডারহিলকে ওয়াশিংটনে তাঁর নিজ অ্যাপার্টমেন্টে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। তাঁর মাথা গুলিবিদ্ধ অবস্থায় ছিল। সরকারিভাবে এটিকে আত্মহত্যা বলে ঘোষণা করা হলেও বেশ কিছু অসংগতি নানা গুজবকে উসকে দিয়েছে। যেমন— তিনি ডানহাতি হওয়া সত্ত্বেও তাঁর মাথার বাম কানের পেছনে গুলি কীভাবে হলো?
আন্ডারহিলের মৃতদেহ প্রথম দেখতে পান দ্য নিউ রিপাবলিকের এক ব্যক্তি—অ্যাশার ব্রাইনস। প্রকাশিত গোপন নথিতে বলা হয়েছে, ‘আন্ডারহিলের মৃত্যুকে আত্মহত্যা বলে ঘোষণা দেওয়া মোটেও বিশ্বাসযোগ্য নয়। তাঁর দেহ আবিষ্কার করেন তাঁর লেখালেখির সহযোগী দ্য নিউ রিপাবলিকে অ্যাশার ব্রাইনস।’
নথিতে বলা হয়, ‘তাঁর (আন্ডারহিল) মাথার বাঁ কানের পেছনে গুলি লেগেছিল, আর একটি অটোমেটিক পিস্তল পাওয়া যায় তাঁর শরীরের বাঁ পাশে। বিষয়টি অদ্ভুত। কারণ ব্রাইনস জানান, আন্ডারহিল ছিলেন ডানহাতি। ব্রাইনসের ধারণা, ওই পিস্তলে সাইলেন্সার লাগানো ছিল, কারণ ওই অ্যাপার্টমেন্ট ভবনের বাসিন্দারা কোনো গুলির শব্দ শোনেননি। দেখা যাচ্ছে, আন্ডারহিল কয়েক দিন আগেই মারা গিয়েছিলেন।’
১৯১৫ সালে ব্রুকলিনে জন্মগ্রহণ করা আন্ডারহিল হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক সম্পন্ন করেন এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় গোয়েন্দা জগতে প্রবেশ করেন। সামরিক গোয়েন্দা বিভাগে (এমআইএস) তাঁর কাজের জন্য তাঁকে যুদ্ধ বিভাগ থেকে দক্ষতার স্বীকৃতি প্রদান করা হয়। যুদ্ধের পর সিআইএ তাঁকে নিয়োগের বিষয়ে বিবেচনা করলেও নথিপত্রে দেখা যায়, তাঁকে সতর্কতার সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করতে বলা হয় এবং সীমিত মাত্রায় গোপন তথ্যের প্রবেশাধিকার দেওয়ার সুপারিশ করা হয়।
১৯৫০-এর দশকের মাঝামাঝি আন্ডারহিল সাংবাদিক ও পরামর্শক হিসেবে সুপরিচিত হয়ে ওঠেন। তিনি ‘লাইফ’ ও ‘এসকোয়ার’ পত্রিকায় লিখতেন এবং প্রায়শই মার্কিন সামরিক প্রস্তুতির সমালোচনা করতেন। তাঁর সঙ্গে গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর যোগাযোগ অব্যাহত ছিল, বিশেষ করে সোভিয়েত ইউনিয়নের সামরিক বিশ্লেষণের ক্ষেত্রে। তিনি একবার এফবিআই এবং সিআইএকে হারমান অ্যাক্সেলব্যাঙ্ক সম্পর্কে তথ্য দিয়েছিলেন। এই ব্যক্তি সোভিয়েত ইউনিয়নের সামরিক সরঞ্জাম ও স্থাপনার ছবি বিক্রি করতেন।
নতুন প্রকাশিত নথিগুলো লি হার্ভে ওসওয়াল্ডের ভূমিকা নিয়ে আগের সন্দেহগুলোকেই আরও জোরদার করেছে। সরকারিভাবে বলা হয়, ওসওয়াল্ড একাই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছিলেন। কিন্তু এই বক্তব্যের অসংগতি আছে। গুলির সময়কাল, বুলেটের গতিপথ এবং প্রত্যক্ষদর্শীদের সাক্ষ্য থেকে দ্বিতীয় একজন বন্দুকধারীর সম্ভাবনার ইঙ্গিত পাওয়া যায়।
ডালাসের ডিলে প্লাজায় প্রেসিডেন্ট কেনেডি ও তাঁর গাড়িবহরের ওপর হামলার মুহূর্ত ধারণকারী কোম্পানি জাপ্রুডার ফিল্মের চিত্র থেকে দেখা যায় যে, গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর কেনেডির মাথা পেছনের দিকে নড়ে যায়। অথচ, প্রচলিত ধারণা, গুলিগুলো পেছন থেকে করা হয়েছিল।
ওসওয়াল্ডের অতীত রহস্য আরও ঘনীভূত করে। সাবেক মেরিন সদস্য ওসওয়াল্ড ১৯৫৯ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নে পালিয়ে যান। পরে তিনি এক রুশ নারীকে বিয়ে করে তাঁকে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে আসেন। তাঁর সঙ্গে কিউবার প্রেসিডেন্ট ফিদেল কাস্ত্রোপন্থী ও বিরোধী উভয় গোষ্ঠীর যোগাযোগ ছিল বলে প্রমাণ আছে। পাশাপাশি কেনেডি হত্যাকাণ্ডের আগে থেকেই তাঁকে সিআইএ ও এফবিআই নজরদারিতে রেখেছিল। এসব কারণেই অনেকে সন্দেহ করেন যে, তিনি একা কাজ করেননি।
সম্প্রতি নবগঠিত টাস্কফোর্স অন দ্য ডিক্লাসিফিকেশন অব ফেডারেল সিক্রেটসের প্রধান আনা পলিনা লুনা ‘দুজন বন্দুকধারী’ তত্ত্বকে সমর্থন করেছেন। তাঁর এই অবস্থান বহুদিন ধরে প্রচলিত ওয়ারেন কমিশনের উপসংহারকে চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছে।
প্রকাশিত নথিপত্রে স্যামুয়েল জর্জ কামিংস নামে এক ব্যক্তির বিষয়েও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উঠে এসেছে। কামিংস অস্ত্র ব্যবসায়ী ছিলেন এবং তাঁর সঙ্গে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সংযোগ ছিল। তিনি সিআইএ-তে অস্ত্র বিশেষজ্ঞ হিসেবে কাজ করেছেন এবং বিদেশি অস্ত্র কেনা ও বিতরণের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। নথিপত্রে উল্লেখ আছে, তিনি যুক্তরাষ্ট্রসহ বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতেন, যার মধ্যে তৎকালীন পশ্চিম জার্মানির গোয়েন্দা সংস্থা বিএনডি অন্যতম। এমনকি তিনি কিউবা বিরোধী গোপন অস্ত্র চুক্তির সঙ্গেও যুক্ত থাকতে পারেন বলে ইঙ্গিত পাওয়া গেছে।
কামিংসের কোম্পানি ইন্টারন্যাশনাল আর্মামেন্ট করপোরেশন (ইন্টারার্মকো) বিভিন্ন বিদ্রোহী গোষ্ঠীর কাছে অস্ত্র সরবরাহ করত। যদিও জন এফ. কেনেডি হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে তাঁর সরাসরি কোনো সম্পর্কের প্রমাণ পাওয়া যায়নি, তবে তাঁর কার্যক্রম ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সংযোগ ১৯৬৩ সালের ২২ নভেম্বরের একটি ঘটনার পটভূমি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।
আরেকটি দীর্ঘদিনের রহস্য হলো কেন জ্যাক রুবি। তিনি ডালাসের এক নাইটক্লাব মালিক। তাঁর সংগঠিত অপরাধচক্রের সঙ্গে সম্পৃক্ততার অভিযোগ ছিল। কেনেডি হত্যার দুই দিন পর তিনি ওসওয়াল্ডকে গুলি করেছেন। যদিও রুবি দাবি করেছিলেন, তিনি শোকের বশে এটি করেছেন, তবে সন্দেহবাদীরা মনে করেন, তিনি ওসওয়াল্ডকে চুপ করিয়ে দিতে চেয়েছিলেন, যাতে সে আরও তথ্য প্রকাশ করতে না পারে।
রুবির বিচার এবং কারাগারে থাকার সময় ক্যানসারে তাঁর মৃত্যুর ঘটনা সন্দেহ আরও বাড়িয়ে তুলেছে। রহস্য আরও ঘনীভূত হয় যখন জানা যায় যে, কারাগারে রুবির চিকিৎসার সঙ্গে যুক্ত ডাক্তারদের একজন লুইস জোলিয়ন ওয়েস্ট ছিলেন সিআইএ-এর মস্তিষ্ক নিয়ন্ত্রণ প্রকল্প ‘এমকেআল্ট্রা’—এর সঙ্গে জড়িত গবেষক।
জেএফকে হত্যাকাণ্ডের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বস্তুগত প্রমাণ এখনো বিতর্কিত রয়ে গেছে। বিশেষ করে ‘ম্যাজিক বুলেট’ তত্ত্ব। যেখানে দাবি করা হয় যে, একটি মাত্র গুলি প্রেসিডেন্ট কেনেডি এবং টেক্সাসের গভর্নর জন কনেলিকে একসঙ্গে আঘাত করেছিল—এই ধারণাকে বহু বিশ্লেষক অবিশ্বাস্য বলে মনে করেন।
এনডিটিভি থেকে অনুবাদ করেছেন আজকের পত্রিকার সহ-সম্পাদক আব্দুর রহমান

জন এফ কেনেডি হত্যাকাণ্ড মার্কিন মানসে এক দগদগে ক্ষত হয়ে রয়ে গেছে। সেই মুহূর্তের প্রচণ্ড ধাক্কা রিচার্ড ও’কনেলের কবিতা ‘নেক্রোসে’ চিত্রিত হয়েছে। তিনি লিখেছেন, ‘মাথাটি পেছনের দিকে ঝুঁকে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাচ্ছে, রক্তে ভেসে যাচ্ছে খুলি...।’ ১৯৬৩ সালের ২২ নভেম্বরের ডালাসের ডিলি প্লাজায় সেই ভয়াবহ কয়েক সেকেন্ড এক রহস্য রেখে গেছে, যা এখনো সমাধান হয়নি। এমনকি সদ্য প্রকাশিত ৮০ হাজার নথির পরও সেই রহস্য অনুদ্ঘাটিত।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সিদ্ধান্তে জন এফ কেনেডির হত্যাকাণ্ড সংক্রান্ত নথির প্রকাশ নতুন করে সেদিনের ঘটনাগুলো নিয়ে জল্পনা-কল্পনা উসকে দিয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার জেএফকে সেন্টার ফর দ্য পারফর্মিং আর্টস সফরকালে ট্রাম্প আমেরিকানদের উদ্দেশে বলেন, ‘আপনাদের জানার জন্য অনেক কিছুই আছে এতে।’ এবং তিনি জানান, তাঁর প্রশাসন কোনো তথ্য গোপন রাখবে না।
এর আগে, ২০১৭ সালে ট্রাম্প অতিরিক্ত নথি প্রকাশের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। যদিও জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে হাজারো নথির কিছু অংশ অবশ্য প্রকাশ করা হয়নি। চলতি বছরের জানুয়ারিতে তিনি এক নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে কেনেডি হত্যাকাণ্ডের পাশাপাশি রবার্ট এফ. কেনেডি ও মার্টিন লুথার কিং জুনিয়রের হত্যাকাণ্ড সম্পর্কিত বাকি সব নথি প্রকাশের নির্দেশ দেন।
সর্বশেষ প্রকাশিত নথিপত্রের অংশ হিসেবে নতুনভাবে চিহ্নিত ১ হাজার ১২৩টি ফাইল প্রকাশ করা হয়েছে। গবেষক ও বিশ্লেষকেরা এখন এসব নথি পর্যালোচনা করে নতুন তথ্য অনুসন্ধান করছেন।
জন এফ কেনেডি হত্যাকাণ্ডের রাতেই গোয়েন্দা কর্মকর্তা জে গ্যারেট আন্ডারহিল আতঙ্কিত অবস্থায় ওয়াশিংটন ছেড়ে পালিয়ে যান। তিনি নিউজার্সিতে এক বন্ধুর বাড়িতে আশ্রয় নেন। সেখানে তিনি স্পষ্টতই ভীত ও বিচলিত ছিলেন। প্রকাশিত নথিতে পাওয়া এক মেমো অনুযায়ী, আন্ডারহিল অভিযোগ করেন যে, সিআইএর ভেতরের একটি ‘ছোট গোষ্ঠী’ কেনেডি হত্যাকাণ্ডের জন্য দায়ী।
প্রকাশিত নথির তথ্য অনুসারে, আন্ডারহিল নাকি তাঁর বন্ধু শার্লিন ফিটসিমন্সকে বলেছিলেন, জন এফ কেনেডি হত্যাকাণ্ডের পেছনে সিআইএ যুক্ত ছিল। তিনি বলেন, ‘(লি হার্ভে) অসওয়াল্ড স্রেফ বলির পাঁঠা।’ আন্ডারহিল দাবি করেন, প্রকৃত ষড়যন্ত্রকারীরা ‘ভয়ংকর কিছু একটা করেছে’ এবং তাঁরা অস্ত্র চোরাচালান, মাদক ব্যবসা ও অন্যান্য অবৈধ কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিল।
পরিচিত সামরিক গোয়েন্দা কর্মকর্তা, পরামর্শক এবং সামরিক বিষয়ে লেখক হিসেবে আন্ডারহিলের অতীত তাঁর আশঙ্কাকে আরও বিশ্বাসযোগ্য করে তোলে। ১৯৬৭ সালের ১৯ জুলাই তারিখের এক নথিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘যেসব বন্ধুর কাছে আন্ডারহিল গিয়েছিলেন, তারা বলেছেন, তিনি তখন নেশাগ্রস্ত ছিলেন না, কিন্তু প্রবলভাবে আতঙ্কিত ছিলেন। তাঁরা জানান, আন্ডারহিল দাবি করেছিলেন যে, অস্ত্র চোরাচালান, মাদক ব্যবসা এবং অন্যান্য অবৈধ কাজে জড়িত সিআইএর একটি চক্র, যারা রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে নিজেদের স্বার্থসিদ্ধি করছিল, তারাই কেনেডিকে হত্যা করেছে। নাকি কেনেডি এই অনিয়মের কথা জানতে পেরেছিলেন এবং এ সম্পর্কে প্রকাশ্যে বলার আগেই তাঁকে হত্যা করা হয়েছিল।’
যদিও বন্ধুরা সব সময় আন্ডারহিলকে সম্পূর্ণ বাস্তববাদী ও যুক্তিবাদী বলে চিনতেন, প্রথমে তারা তাঁর বক্তব্যকে গুরুত্ব দেননি। এ বিষয়ে নথিতে বলা হয়, তাঁর এক বন্ধু বলেন, ‘আমার মনে হয়, এর প্রধান কারণ ছিল—আমরা বিশ্বাসই করতে পারছিলাম না যে, সিআইএর ভেতরে এমন একটি দুর্নীতিগ্রস্ত গোষ্ঠী থাকতে পারে, যারা মাফিয়ার মতোই নির্মম এবং আরও দক্ষ।’
প্রাণের ভয়ে আন্ডারহিল কেনেডি হত্যাকাণ্ডের পরপরই ওয়াশিংটন ছেড়ে পালিয়ে যান এবং তাঁর বন্ধুদের জানান, তিনি দেশত্যাগে বাধ্য হতে পারেন। তবে এর ছয় মাসেরও কম সময় পর ১৯৬৪ সালের ৮ মে আন্ডারহিলকে ওয়াশিংটনে তাঁর নিজ অ্যাপার্টমেন্টে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। তাঁর মাথা গুলিবিদ্ধ অবস্থায় ছিল। সরকারিভাবে এটিকে আত্মহত্যা বলে ঘোষণা করা হলেও বেশ কিছু অসংগতি নানা গুজবকে উসকে দিয়েছে। যেমন— তিনি ডানহাতি হওয়া সত্ত্বেও তাঁর মাথার বাম কানের পেছনে গুলি কীভাবে হলো?
আন্ডারহিলের মৃতদেহ প্রথম দেখতে পান দ্য নিউ রিপাবলিকের এক ব্যক্তি—অ্যাশার ব্রাইনস। প্রকাশিত গোপন নথিতে বলা হয়েছে, ‘আন্ডারহিলের মৃত্যুকে আত্মহত্যা বলে ঘোষণা দেওয়া মোটেও বিশ্বাসযোগ্য নয়। তাঁর দেহ আবিষ্কার করেন তাঁর লেখালেখির সহযোগী দ্য নিউ রিপাবলিকে অ্যাশার ব্রাইনস।’
নথিতে বলা হয়, ‘তাঁর (আন্ডারহিল) মাথার বাঁ কানের পেছনে গুলি লেগেছিল, আর একটি অটোমেটিক পিস্তল পাওয়া যায় তাঁর শরীরের বাঁ পাশে। বিষয়টি অদ্ভুত। কারণ ব্রাইনস জানান, আন্ডারহিল ছিলেন ডানহাতি। ব্রাইনসের ধারণা, ওই পিস্তলে সাইলেন্সার লাগানো ছিল, কারণ ওই অ্যাপার্টমেন্ট ভবনের বাসিন্দারা কোনো গুলির শব্দ শোনেননি। দেখা যাচ্ছে, আন্ডারহিল কয়েক দিন আগেই মারা গিয়েছিলেন।’
১৯১৫ সালে ব্রুকলিনে জন্মগ্রহণ করা আন্ডারহিল হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক সম্পন্ন করেন এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় গোয়েন্দা জগতে প্রবেশ করেন। সামরিক গোয়েন্দা বিভাগে (এমআইএস) তাঁর কাজের জন্য তাঁকে যুদ্ধ বিভাগ থেকে দক্ষতার স্বীকৃতি প্রদান করা হয়। যুদ্ধের পর সিআইএ তাঁকে নিয়োগের বিষয়ে বিবেচনা করলেও নথিপত্রে দেখা যায়, তাঁকে সতর্কতার সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করতে বলা হয় এবং সীমিত মাত্রায় গোপন তথ্যের প্রবেশাধিকার দেওয়ার সুপারিশ করা হয়।
১৯৫০-এর দশকের মাঝামাঝি আন্ডারহিল সাংবাদিক ও পরামর্শক হিসেবে সুপরিচিত হয়ে ওঠেন। তিনি ‘লাইফ’ ও ‘এসকোয়ার’ পত্রিকায় লিখতেন এবং প্রায়শই মার্কিন সামরিক প্রস্তুতির সমালোচনা করতেন। তাঁর সঙ্গে গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর যোগাযোগ অব্যাহত ছিল, বিশেষ করে সোভিয়েত ইউনিয়নের সামরিক বিশ্লেষণের ক্ষেত্রে। তিনি একবার এফবিআই এবং সিআইএকে হারমান অ্যাক্সেলব্যাঙ্ক সম্পর্কে তথ্য দিয়েছিলেন। এই ব্যক্তি সোভিয়েত ইউনিয়নের সামরিক সরঞ্জাম ও স্থাপনার ছবি বিক্রি করতেন।
নতুন প্রকাশিত নথিগুলো লি হার্ভে ওসওয়াল্ডের ভূমিকা নিয়ে আগের সন্দেহগুলোকেই আরও জোরদার করেছে। সরকারিভাবে বলা হয়, ওসওয়াল্ড একাই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছিলেন। কিন্তু এই বক্তব্যের অসংগতি আছে। গুলির সময়কাল, বুলেটের গতিপথ এবং প্রত্যক্ষদর্শীদের সাক্ষ্য থেকে দ্বিতীয় একজন বন্দুকধারীর সম্ভাবনার ইঙ্গিত পাওয়া যায়।
ডালাসের ডিলে প্লাজায় প্রেসিডেন্ট কেনেডি ও তাঁর গাড়িবহরের ওপর হামলার মুহূর্ত ধারণকারী কোম্পানি জাপ্রুডার ফিল্মের চিত্র থেকে দেখা যায় যে, গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর কেনেডির মাথা পেছনের দিকে নড়ে যায়। অথচ, প্রচলিত ধারণা, গুলিগুলো পেছন থেকে করা হয়েছিল।
ওসওয়াল্ডের অতীত রহস্য আরও ঘনীভূত করে। সাবেক মেরিন সদস্য ওসওয়াল্ড ১৯৫৯ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নে পালিয়ে যান। পরে তিনি এক রুশ নারীকে বিয়ে করে তাঁকে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে আসেন। তাঁর সঙ্গে কিউবার প্রেসিডেন্ট ফিদেল কাস্ত্রোপন্থী ও বিরোধী উভয় গোষ্ঠীর যোগাযোগ ছিল বলে প্রমাণ আছে। পাশাপাশি কেনেডি হত্যাকাণ্ডের আগে থেকেই তাঁকে সিআইএ ও এফবিআই নজরদারিতে রেখেছিল। এসব কারণেই অনেকে সন্দেহ করেন যে, তিনি একা কাজ করেননি।
সম্প্রতি নবগঠিত টাস্কফোর্স অন দ্য ডিক্লাসিফিকেশন অব ফেডারেল সিক্রেটসের প্রধান আনা পলিনা লুনা ‘দুজন বন্দুকধারী’ তত্ত্বকে সমর্থন করেছেন। তাঁর এই অবস্থান বহুদিন ধরে প্রচলিত ওয়ারেন কমিশনের উপসংহারকে চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছে।
প্রকাশিত নথিপত্রে স্যামুয়েল জর্জ কামিংস নামে এক ব্যক্তির বিষয়েও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উঠে এসেছে। কামিংস অস্ত্র ব্যবসায়ী ছিলেন এবং তাঁর সঙ্গে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সংযোগ ছিল। তিনি সিআইএ-তে অস্ত্র বিশেষজ্ঞ হিসেবে কাজ করেছেন এবং বিদেশি অস্ত্র কেনা ও বিতরণের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। নথিপত্রে উল্লেখ আছে, তিনি যুক্তরাষ্ট্রসহ বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতেন, যার মধ্যে তৎকালীন পশ্চিম জার্মানির গোয়েন্দা সংস্থা বিএনডি অন্যতম। এমনকি তিনি কিউবা বিরোধী গোপন অস্ত্র চুক্তির সঙ্গেও যুক্ত থাকতে পারেন বলে ইঙ্গিত পাওয়া গেছে।
কামিংসের কোম্পানি ইন্টারন্যাশনাল আর্মামেন্ট করপোরেশন (ইন্টারার্মকো) বিভিন্ন বিদ্রোহী গোষ্ঠীর কাছে অস্ত্র সরবরাহ করত। যদিও জন এফ. কেনেডি হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে তাঁর সরাসরি কোনো সম্পর্কের প্রমাণ পাওয়া যায়নি, তবে তাঁর কার্যক্রম ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সংযোগ ১৯৬৩ সালের ২২ নভেম্বরের একটি ঘটনার পটভূমি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।
আরেকটি দীর্ঘদিনের রহস্য হলো কেন জ্যাক রুবি। তিনি ডালাসের এক নাইটক্লাব মালিক। তাঁর সংগঠিত অপরাধচক্রের সঙ্গে সম্পৃক্ততার অভিযোগ ছিল। কেনেডি হত্যার দুই দিন পর তিনি ওসওয়াল্ডকে গুলি করেছেন। যদিও রুবি দাবি করেছিলেন, তিনি শোকের বশে এটি করেছেন, তবে সন্দেহবাদীরা মনে করেন, তিনি ওসওয়াল্ডকে চুপ করিয়ে দিতে চেয়েছিলেন, যাতে সে আরও তথ্য প্রকাশ করতে না পারে।
রুবির বিচার এবং কারাগারে থাকার সময় ক্যানসারে তাঁর মৃত্যুর ঘটনা সন্দেহ আরও বাড়িয়ে তুলেছে। রহস্য আরও ঘনীভূত হয় যখন জানা যায় যে, কারাগারে রুবির চিকিৎসার সঙ্গে যুক্ত ডাক্তারদের একজন লুইস জোলিয়ন ওয়েস্ট ছিলেন সিআইএ-এর মস্তিষ্ক নিয়ন্ত্রণ প্রকল্প ‘এমকেআল্ট্রা’—এর সঙ্গে জড়িত গবেষক।
জেএফকে হত্যাকাণ্ডের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বস্তুগত প্রমাণ এখনো বিতর্কিত রয়ে গেছে। বিশেষ করে ‘ম্যাজিক বুলেট’ তত্ত্ব। যেখানে দাবি করা হয় যে, একটি মাত্র গুলি প্রেসিডেন্ট কেনেডি এবং টেক্সাসের গভর্নর জন কনেলিকে একসঙ্গে আঘাত করেছিল—এই ধারণাকে বহু বিশ্লেষক অবিশ্বাস্য বলে মনে করেন।
এনডিটিভি থেকে অনুবাদ করেছেন আজকের পত্রিকার সহ-সম্পাদক আব্দুর রহমান

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসী আটক ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন আনার লক্ষ্যে ঠিকাদার খুঁজছে। এই পরিকল্পনায় বিশাল সব শিল্প গুদাম বা ওয়্যারহাউস সংস্কার করে একসঙ্গে ৮০ হাজারেরও বেশি অভিবাসীকে আটকে রাখার কথা বলা হয়েছে। মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্ট তাদের...
১৭ মিনিট আগে
আলজেরিয়ার পার্লামেন্ট সর্বসম্মতিক্রমে একটি আইন পাস করেছে। এই আইনে দেশটির ওপর ফ্রান্সের ঔপনিবেশিক শাসনকে অপরাধ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। গতকাল বুধবার আলজেরীয় আইনপ্রণেতারা এই আইন পাস করেন। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য জানা গেছে।
৪ ঘণ্টা আগে
হোয়াইট হাউস মার্কিন সামরিক বাহিনীকে আগামী অন্তত দুই মাস ভেনেজুয়েলার তেলের ওপর ‘কোয়ারেন্টিন’ বা অবরোধ আরোপের দিকেই প্রায় পুরোপুরি মনোনিবেশ করার নির্দেশ দিয়েছে। রয়টার্সকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এক মার্কিন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ওয়াশিংটন বর্তমানে কারাকাসের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে সামরিক শক্তির চেয়ে অর্থনৈতিক...
৫ ঘণ্টা আগে
ভারতের কর্ণাটকের চিত্রদুর্গ জেলায় এক ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনায় অন্তত ৯ জন জীবন্ত দগ্ধ হয়ে মারা গেছেন। গতকাল বুধবার দিবাগত রাত আনুমানিক ২টার দিকে ৪৮ নম্বর জাতীয় সড়কে একটি ট্রাকের ধাক্কায় একটি বেসরকারি স্লিপার বাসে আগুন ধরে গেলে এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। বাসটি বেঙ্গালুরু থেকে শিমোগা যাচ্ছিল।
৫ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসী আটক ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন আনার লক্ষ্যে ঠিকাদার খুঁজছে। এই পরিকল্পনায় বিশাল সব শিল্প গুদাম বা ওয়্যারহাউস সংস্কার করে একসঙ্গে ৮০ হাজারেরও বেশি অভিবাসীকে আটকে রাখার কথা বলা হয়েছে। মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্ট তাদের হাতে আসা এক খসড়া প্রস্তাবনার বরাত দিয়ে এই তথ্য জানিয়েছে।
বর্তমানে আটককৃতদের দেশের যেখানে জায়গা পাওয়া যায় সেখানে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। তবে আইসিই (ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট) এখন সেই পদ্ধতি বদলে একটি সুশৃঙ্খল ‘ফিডার সিস্টেম’ বা সরবরাহ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে চায় যাতে দ্রুত দেশান্তর (ডিপোর্টেশন) নিশ্চিত করা যায়।
নথিতে বলা হয়েছে, নতুন গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিদের প্রথমে কয়েক সপ্তাহের জন্য প্রসেসিং সাইটে রাখা হবে। এরপর তাদের ৭টি বিশাল গুদামের কোনো একটিতে পাঠানো হবে, যার প্রতিটিতে ৫ থেকে ১০ হাজার মানুষের ধারণক্ষমতা থাকবে। সেখান থেকেই মূলত তাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর চূড়ান্ত প্রস্তুতি নেওয়া হবে।
বিশাল এই গুদামগুলো ভার্জিনিয়া, টেক্সাস, লুইজিয়ানা, অ্যারিজোনা, জর্জিয়া এবং মিজৌরির প্রধান লজিস্টিক হাবগুলোর কাছাকাছি স্থাপন করা হবে। এ ছাড়া ১৬টি ছোট গুদামে দেড় হাজার করে মানুষ রাখার পরিকল্পনা রয়েছে।
মার্কিন স্বরাষ্ট্র বিভাগ হোমল্যান্ড সিকিউরিটির মুখপাত্র ট্রিশা ম্যাকলাফলিন জানিয়েছেন, তিনি ওয়াশিংটন পোস্টের এই প্রতিবেদনের সত্যতা নিশ্চিত করতে পারছেন না এবং গুদাম পরিকল্পনা নিয়ে কোনো প্রশ্নের উত্তর দিতেও রাজি হননি। তবে এর আগে এনবিসি এবং ব্লুমবার্গ নিউজ গুদামগুলোকে আটক কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহারের বিষয়ে আইসিই-এর অভ্যন্তরীণ আলোচনার খবর দিয়েছিল।
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের লাখ লাখ অভিবাসীকে আটক ও বিতাড়ন অভিযানের পরবর্তী পদক্ষেপ হলো এই গুদাম পরিকল্পনা। এ বছর কংগ্রেস অভিবাসীদের আটকে রাখার জন্য ৪৫ বিলিয়ন ডলার বরাদ্দ দিয়েছে। সেই অর্থ ব্যবহার করে প্রশাসন পরিত্যক্ত কারাগার সচল করেছে, সামরিক ঘাঁটির অংশ বিশেষ সংস্কার করেছে এবং রিপাবলিকান গভর্নরদের সঙ্গে মিলে দুর্গম এলাকায় অভিবাসীদের জন্য তাঁবু শিবির তৈরি করেছে।
বর্ডার জার টম হোমান সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে জানিয়েছেন, চলতি বছর প্রশাসন ৫ লাখ ৭৯ হাজারেরও বেশি মানুষকে নিজ দেশে ফেরত পাঠিয়েছে। আইসিই-এর ভারপ্রাপ্ত পরিচালক টড এম লিয়নস গত এপ্রিলে এক সম্মেলনে বলেছিলেন, ‘আমাদের এটাকে ব্যবসার মতো পরিচালনা করতে শিখতে হবে।’ প্রশাসনের লক্ষ্য হলো আমাজন যেভাবে তাদের প্যাকেজ পৌঁছে দেয়, ঠিক সেভাবেই অভিবাসীদের দ্রুত ফেরত পাঠানো।
তবে রিয়েল এস্টেট বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গুদামে বিপুলসংখ্যক মানুষকে রাখা লজিস্টিক সমস্যা তৈরি করবে। এসব স্থাপনা মূলত মালামাল রাখার জন্য তৈরি, মানুষের বসবাসের জন্য নয়। সেখানে বাতাস চলাচলের সুব্যবস্থা বা সঠিক তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের অভাব থাকে। এ ছাড়া আবাসিক এলাকা থেকে দূরে হওয়ায় হাজার হাজার মানুষের জন্য প্রয়োজনীয় পানি ও পয়োনিষ্কাশন ব্যবস্থা সেখানে নাও থাকতে পারে।
নিউ অরলিন্সের একজন অধিকারকর্মী তানিয়া উলফ বলেন, ‘এটি অমানবিক। মানুষকে পশুর মতো বিবেচনা করা হচ্ছে।’ আইসিই অবশ্য বলছে, তারা এই কাঠামোতে অনেক পরিবর্তন আনবে। সেখানে গোসলখানা, টয়লেট, রান্নাঘর, ডাইনিং এরিয়া, মেডিকেল ইউনিট এবং বিনোদন কেন্দ্রসহ প্রশাসনিক অফিস তৈরি করা হবে। কোনো কোনো কেন্দ্রে পরিবারের জন্য বিশেষ আবাসন ব্যবস্থাও থাকবে।
পরিকল্পিত গুদামগুলোর বেশির ভাগই রিপাবলিকান শাসিত এলাকায় হলেও দুটি বড় গুদাম ডেমোক্র্যাট শাসিত ভার্জিনিয়ার স্ট্যাফোর্ড এবং মিজৌরির ক্যানসাস সিটিতে করার কথা রয়েছে। আইসিই-এর তথ্য অনুযায়ী, চলতি মাসের শুরুতে আটক অভিবাসীর সংখ্যা ছিল ৬৮ হাজারেরও বেশি, যা এযাবৎকালের রেকর্ড। তাদের মধ্যে প্রায় ৪৮ শতাংশের বিরুদ্ধে কোনো অপরাধের সাজা বা অভিযোগ নেই।
অভিজ্ঞ কর্মকর্তারা বলছেন, এত বড় স্থাপনা পরিচালনা করা কঠিন হবে। বিশেষ করে প্রশিক্ষিত নিরাপত্তা কর্মী ও চিকিৎসা কর্মী পাওয়া বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে। যেমন, ফোর্ট ব্লিস সাইটে বর্তমানে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা কর্মীর মাত্র দুই-তৃতীয়াংশ নিয়োগ দেওয়া সম্ভব হয়েছে। সাবেক আইসিই চিফ অব স্টাফ জেসন হাউজারের মতে, ‘গুদাম হয়তো অনেক পাওয়া যাবে, কিন্তু সেগুলো নিরাপদে চালানোর সক্ষমতা সব সময়ই জনবলের ওপর নির্ভর করে।’

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসী আটক ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন আনার লক্ষ্যে ঠিকাদার খুঁজছে। এই পরিকল্পনায় বিশাল সব শিল্প গুদাম বা ওয়্যারহাউস সংস্কার করে একসঙ্গে ৮০ হাজারেরও বেশি অভিবাসীকে আটকে রাখার কথা বলা হয়েছে। মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্ট তাদের হাতে আসা এক খসড়া প্রস্তাবনার বরাত দিয়ে এই তথ্য জানিয়েছে।
বর্তমানে আটককৃতদের দেশের যেখানে জায়গা পাওয়া যায় সেখানে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। তবে আইসিই (ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট) এখন সেই পদ্ধতি বদলে একটি সুশৃঙ্খল ‘ফিডার সিস্টেম’ বা সরবরাহ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে চায় যাতে দ্রুত দেশান্তর (ডিপোর্টেশন) নিশ্চিত করা যায়।
নথিতে বলা হয়েছে, নতুন গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিদের প্রথমে কয়েক সপ্তাহের জন্য প্রসেসিং সাইটে রাখা হবে। এরপর তাদের ৭টি বিশাল গুদামের কোনো একটিতে পাঠানো হবে, যার প্রতিটিতে ৫ থেকে ১০ হাজার মানুষের ধারণক্ষমতা থাকবে। সেখান থেকেই মূলত তাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর চূড়ান্ত প্রস্তুতি নেওয়া হবে।
বিশাল এই গুদামগুলো ভার্জিনিয়া, টেক্সাস, লুইজিয়ানা, অ্যারিজোনা, জর্জিয়া এবং মিজৌরির প্রধান লজিস্টিক হাবগুলোর কাছাকাছি স্থাপন করা হবে। এ ছাড়া ১৬টি ছোট গুদামে দেড় হাজার করে মানুষ রাখার পরিকল্পনা রয়েছে।
মার্কিন স্বরাষ্ট্র বিভাগ হোমল্যান্ড সিকিউরিটির মুখপাত্র ট্রিশা ম্যাকলাফলিন জানিয়েছেন, তিনি ওয়াশিংটন পোস্টের এই প্রতিবেদনের সত্যতা নিশ্চিত করতে পারছেন না এবং গুদাম পরিকল্পনা নিয়ে কোনো প্রশ্নের উত্তর দিতেও রাজি হননি। তবে এর আগে এনবিসি এবং ব্লুমবার্গ নিউজ গুদামগুলোকে আটক কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহারের বিষয়ে আইসিই-এর অভ্যন্তরীণ আলোচনার খবর দিয়েছিল।
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের লাখ লাখ অভিবাসীকে আটক ও বিতাড়ন অভিযানের পরবর্তী পদক্ষেপ হলো এই গুদাম পরিকল্পনা। এ বছর কংগ্রেস অভিবাসীদের আটকে রাখার জন্য ৪৫ বিলিয়ন ডলার বরাদ্দ দিয়েছে। সেই অর্থ ব্যবহার করে প্রশাসন পরিত্যক্ত কারাগার সচল করেছে, সামরিক ঘাঁটির অংশ বিশেষ সংস্কার করেছে এবং রিপাবলিকান গভর্নরদের সঙ্গে মিলে দুর্গম এলাকায় অভিবাসীদের জন্য তাঁবু শিবির তৈরি করেছে।
বর্ডার জার টম হোমান সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে জানিয়েছেন, চলতি বছর প্রশাসন ৫ লাখ ৭৯ হাজারেরও বেশি মানুষকে নিজ দেশে ফেরত পাঠিয়েছে। আইসিই-এর ভারপ্রাপ্ত পরিচালক টড এম লিয়নস গত এপ্রিলে এক সম্মেলনে বলেছিলেন, ‘আমাদের এটাকে ব্যবসার মতো পরিচালনা করতে শিখতে হবে।’ প্রশাসনের লক্ষ্য হলো আমাজন যেভাবে তাদের প্যাকেজ পৌঁছে দেয়, ঠিক সেভাবেই অভিবাসীদের দ্রুত ফেরত পাঠানো।
তবে রিয়েল এস্টেট বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গুদামে বিপুলসংখ্যক মানুষকে রাখা লজিস্টিক সমস্যা তৈরি করবে। এসব স্থাপনা মূলত মালামাল রাখার জন্য তৈরি, মানুষের বসবাসের জন্য নয়। সেখানে বাতাস চলাচলের সুব্যবস্থা বা সঠিক তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের অভাব থাকে। এ ছাড়া আবাসিক এলাকা থেকে দূরে হওয়ায় হাজার হাজার মানুষের জন্য প্রয়োজনীয় পানি ও পয়োনিষ্কাশন ব্যবস্থা সেখানে নাও থাকতে পারে।
নিউ অরলিন্সের একজন অধিকারকর্মী তানিয়া উলফ বলেন, ‘এটি অমানবিক। মানুষকে পশুর মতো বিবেচনা করা হচ্ছে।’ আইসিই অবশ্য বলছে, তারা এই কাঠামোতে অনেক পরিবর্তন আনবে। সেখানে গোসলখানা, টয়লেট, রান্নাঘর, ডাইনিং এরিয়া, মেডিকেল ইউনিট এবং বিনোদন কেন্দ্রসহ প্রশাসনিক অফিস তৈরি করা হবে। কোনো কোনো কেন্দ্রে পরিবারের জন্য বিশেষ আবাসন ব্যবস্থাও থাকবে।
পরিকল্পিত গুদামগুলোর বেশির ভাগই রিপাবলিকান শাসিত এলাকায় হলেও দুটি বড় গুদাম ডেমোক্র্যাট শাসিত ভার্জিনিয়ার স্ট্যাফোর্ড এবং মিজৌরির ক্যানসাস সিটিতে করার কথা রয়েছে। আইসিই-এর তথ্য অনুযায়ী, চলতি মাসের শুরুতে আটক অভিবাসীর সংখ্যা ছিল ৬৮ হাজারেরও বেশি, যা এযাবৎকালের রেকর্ড। তাদের মধ্যে প্রায় ৪৮ শতাংশের বিরুদ্ধে কোনো অপরাধের সাজা বা অভিযোগ নেই।
অভিজ্ঞ কর্মকর্তারা বলছেন, এত বড় স্থাপনা পরিচালনা করা কঠিন হবে। বিশেষ করে প্রশিক্ষিত নিরাপত্তা কর্মী ও চিকিৎসা কর্মী পাওয়া বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে। যেমন, ফোর্ট ব্লিস সাইটে বর্তমানে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা কর্মীর মাত্র দুই-তৃতীয়াংশ নিয়োগ দেওয়া সম্ভব হয়েছে। সাবেক আইসিই চিফ অব স্টাফ জেসন হাউজারের মতে, ‘গুদাম হয়তো অনেক পাওয়া যাবে, কিন্তু সেগুলো নিরাপদে চালানোর সক্ষমতা সব সময়ই জনবলের ওপর নির্ভর করে।’

জন এফ কেনেডির হত্যাকাণ্ডের রাতেই গোয়েন্দা কর্মকর্তা জে গ্যারেট আন্ডারহিল আতঙ্কিত অবস্থায় ওয়াশিংটন ছেড়ে পালিয়ে যান। তিনি নিউজার্সিতে এক বন্ধুর বাড়িতে আশ্রয় নেন। সেখানে তিনি স্পষ্টতই ভীত ও বিচলিত ছিলেন। প্রকাশিত নথিতে পাওয়া এক মেমো অনুযায়ী, আন্ডারহিল অভিযোগ করেন যে, সিআইএ-এর ভেতরের একটি ‘ছোট গোষ্ঠী’ ক
১৯ মার্চ ২০২৫
আলজেরিয়ার পার্লামেন্ট সর্বসম্মতিক্রমে একটি আইন পাস করেছে। এই আইনে দেশটির ওপর ফ্রান্সের ঔপনিবেশিক শাসনকে অপরাধ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। গতকাল বুধবার আলজেরীয় আইনপ্রণেতারা এই আইন পাস করেন। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য জানা গেছে।
৪ ঘণ্টা আগে
হোয়াইট হাউস মার্কিন সামরিক বাহিনীকে আগামী অন্তত দুই মাস ভেনেজুয়েলার তেলের ওপর ‘কোয়ারেন্টিন’ বা অবরোধ আরোপের দিকেই প্রায় পুরোপুরি মনোনিবেশ করার নির্দেশ দিয়েছে। রয়টার্সকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এক মার্কিন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ওয়াশিংটন বর্তমানে কারাকাসের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে সামরিক শক্তির চেয়ে অর্থনৈতিক...
৫ ঘণ্টা আগে
ভারতের কর্ণাটকের চিত্রদুর্গ জেলায় এক ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনায় অন্তত ৯ জন জীবন্ত দগ্ধ হয়ে মারা গেছেন। গতকাল বুধবার দিবাগত রাত আনুমানিক ২টার দিকে ৪৮ নম্বর জাতীয় সড়কে একটি ট্রাকের ধাক্কায় একটি বেসরকারি স্লিপার বাসে আগুন ধরে গেলে এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। বাসটি বেঙ্গালুরু থেকে শিমোগা যাচ্ছিল।
৫ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

আলজেরিয়ার পার্লামেন্ট সর্বসম্মতিক্রমে একটি আইন পাস করেছে। এই আইনে দেশটির ওপর ফ্রান্সের ঔপনিবেশিক শাসনকে অপরাধ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। গতকাল বুধবার আলজেরীয় আইনপ্রণেতারা এই আইন পাস করেন। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য জানা গেছে।
গত বুধবার আইনপ্রণেতারা জাতীয় পতাকার রঙের স্কার্ফ গলায় জড়িয়ে পার্লামেন্টে দাঁড়িয়ে ‘আলজেরিয়া দীর্ঘজীবী হোক’ স্লোগান দেন এবং বিলটি অনুমোদন করেন। একই সঙ্গে পার্লামেন্ট আনুষ্ঠানিকভাবে প্যারিসের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা ও ক্ষতিপূরণের দাবি জানান তাঁরা। ইতিহাসকে আড়াল করার সব চেষ্টা রুখে দিতেই এই পদক্ষেপ।
নতুন এই আইনে আলজেরিয়ার ঔপনিবেশিক অতীত এবং এর ফলে সৃষ্ট ট্র্যাজেডির জন্য ফ্রান্সকে ‘আইনিভাবে দায়ী’ করা হয়েছে। রাষ্ট্রীয় আইনি কাঠামোর কেন্দ্রে রাখা হয়েছে ঐতিহাসিক দায়বদ্ধতাকে।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, আন্তর্জাতিকভাবে এই আইনের প্রয়োগযোগ্যতা না থাকলেও এর রাজনৈতিক প্রভাব সুদূরপ্রসারী। ঔপনিবেশিক স্মৃতি নিয়ে ফ্রান্সের সঙ্গে আলজেরিয়ার সম্পর্কের ক্ষেত্রে এটি একটি বড় বিচ্ছেদ বা পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছে। রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা এপিএসের তথ্য অনুযায়ী, পার্লামেন্ট স্পিকার ইব্রাহিম বুগালি বলেছেন, এই আইন দেশের ভেতরে ও বাইরে একটি স্পষ্ট বার্তা দিচ্ছে, আলজেরিয়ার জাতীয় স্মৃতি মুছে ফেলার মতো নয় এবং এ নিয়ে কোনো আপস হবে না।
আইনের খসড়ায় ফরাসি ঔপনিবেশিক শাসনের নানা অপরাধের তালিকা তুলে ধরা হয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে পারমাণবিক পরীক্ষা, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন এবং পদ্ধতিগতভাবে সম্পদ লুণ্ঠন। এতে আরও জোর দিয়ে বলা হয়েছে, ফরাসি উপনিবেশের কারণে সৃষ্ট সব বস্তুগত ও নৈতিক ক্ষতির জন্য ‘পূর্ণাঙ্গ ও ন্যায্য ক্ষতিপূরণ পাওয়া আলজেরীয় রাষ্ট্র ও জনগণের অবিচ্ছেদ্য অধিকার।’
ফ্রান্স ১৮৩০ থেকে ১৯৬২ সাল পর্যন্ত অত্যন্ত নিষ্ঠুরভাবে আলজেরিয়া শাসন করেছে। নির্যাতন, গুম, গণহত্যা, অর্থনৈতিক শোষণ এবং এ দেশের আদিবাসী মুসলিম জনগোষ্ঠীকে প্রান্তিক করে রাখার মধ্য দিয়ে সেই শাসনব্যবস্থা টিকে ছিল। ১৯৫৪ থেকে ১৯৬২ সালের স্বাধীনতাযুদ্ধেই গভীর ক্ষত তৈরি হয়েছিল। আলজেরিয়ার দাবি অনুযায়ী, সেই যুদ্ধে ১৫ লাখ মানুষ প্রাণ হারিয়েছিলেন।
ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ এর আগে আলজেরিয়ায় উপনিবেশ স্থাপনকে ‘মানবতাবিরোধী অপরাধ’ হিসেবে বর্ণনা করলেও আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমা চাইতে বারবার অস্বীকার করেছেন। ২০২৩ সালেও তিনি নিজের অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করে বলেছিলেন, ‘ক্ষমা চাওয়া আমার কাজ নয়।’
গত সপ্তাহে ফ্রান্সের ইউরোপ ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র পাস্কাল কনফাভ্রেক্স এই ভোটাভুটি নিয়ে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানান। তিনি বলেন, বিদেশের মাটিতে চলমান কোনো ‘রাজনৈতিক বিতর্ক’ নিয়ে তিনি কথা বলবেন না।
এক্সেটার ইউনিভার্সিটির ঔপনিবেশিক ইতিহাস গবেষক হোসনি কিতুনি বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, ফ্রান্সের ওপর এই আইনের কোনো বাধ্যতামূলক প্রভাব নেই। তবে এর রাজনৈতিক ও প্রতীকী গুরুত্ব অপরিসীম। স্মৃতির লড়াইয়ে ফ্রান্সের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে এটি একটি নতুন মোড়।
দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সংকটের মধ্যেই এই ভোটাভুটি হলো। মূলত অভিবাসনকে কেন্দ্র করে আলজেরিয়া ও ফ্রান্সের মধ্যে সম্পর্ক টিকে থাকলেও বর্তমানে তাতে চরম টানাপোড়েন চলছে। ২০২৪ সালের জুলাই মাসে মরক্কোর পশ্চিম সাহারা পরিকল্পনাকে প্যারিস স্বীকৃতি দেওয়ার পর থেকেই উত্তেজনা তুঙ্গে। ১৯৭৫ সালে স্পেন ওই অঞ্চল ছেড়ে যাওয়ার পর মরক্কো তা দখল করে নেয়, যা নিয়ে সেখানে সশস্ত্র বিদ্রোহ চলছে।
আলজেরিয়া পশ্চিম সাহারার সাহরাউই জনগণের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকারকে সমর্থন করে এবং পলিসারিও ফ্রন্টকে মদদ দেয়, যারা মরক্কোর স্বায়ত্তশাসনের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে। গত এপ্রিলে প্যারিসে একজন আলজেরীয় কূটনীতিক ও দুই নাগরিককে গ্রেপ্তারের পর এই উত্তেজনা সংকটে রূপ নেয়। অথচ তার মাত্র এক সপ্তাহ আগে মাখোঁ এবং আলজেরিয়ার প্রেসিডেন্ট আবদেলমাজিদ তেবুন সংলাপ শুরুর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।

আলজেরিয়ার পার্লামেন্ট সর্বসম্মতিক্রমে একটি আইন পাস করেছে। এই আইনে দেশটির ওপর ফ্রান্সের ঔপনিবেশিক শাসনকে অপরাধ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। গতকাল বুধবার আলজেরীয় আইনপ্রণেতারা এই আইন পাস করেন। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য জানা গেছে।
গত বুধবার আইনপ্রণেতারা জাতীয় পতাকার রঙের স্কার্ফ গলায় জড়িয়ে পার্লামেন্টে দাঁড়িয়ে ‘আলজেরিয়া দীর্ঘজীবী হোক’ স্লোগান দেন এবং বিলটি অনুমোদন করেন। একই সঙ্গে পার্লামেন্ট আনুষ্ঠানিকভাবে প্যারিসের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা ও ক্ষতিপূরণের দাবি জানান তাঁরা। ইতিহাসকে আড়াল করার সব চেষ্টা রুখে দিতেই এই পদক্ষেপ।
নতুন এই আইনে আলজেরিয়ার ঔপনিবেশিক অতীত এবং এর ফলে সৃষ্ট ট্র্যাজেডির জন্য ফ্রান্সকে ‘আইনিভাবে দায়ী’ করা হয়েছে। রাষ্ট্রীয় আইনি কাঠামোর কেন্দ্রে রাখা হয়েছে ঐতিহাসিক দায়বদ্ধতাকে।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, আন্তর্জাতিকভাবে এই আইনের প্রয়োগযোগ্যতা না থাকলেও এর রাজনৈতিক প্রভাব সুদূরপ্রসারী। ঔপনিবেশিক স্মৃতি নিয়ে ফ্রান্সের সঙ্গে আলজেরিয়ার সম্পর্কের ক্ষেত্রে এটি একটি বড় বিচ্ছেদ বা পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছে। রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা এপিএসের তথ্য অনুযায়ী, পার্লামেন্ট স্পিকার ইব্রাহিম বুগালি বলেছেন, এই আইন দেশের ভেতরে ও বাইরে একটি স্পষ্ট বার্তা দিচ্ছে, আলজেরিয়ার জাতীয় স্মৃতি মুছে ফেলার মতো নয় এবং এ নিয়ে কোনো আপস হবে না।
আইনের খসড়ায় ফরাসি ঔপনিবেশিক শাসনের নানা অপরাধের তালিকা তুলে ধরা হয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে পারমাণবিক পরীক্ষা, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন এবং পদ্ধতিগতভাবে সম্পদ লুণ্ঠন। এতে আরও জোর দিয়ে বলা হয়েছে, ফরাসি উপনিবেশের কারণে সৃষ্ট সব বস্তুগত ও নৈতিক ক্ষতির জন্য ‘পূর্ণাঙ্গ ও ন্যায্য ক্ষতিপূরণ পাওয়া আলজেরীয় রাষ্ট্র ও জনগণের অবিচ্ছেদ্য অধিকার।’
ফ্রান্স ১৮৩০ থেকে ১৯৬২ সাল পর্যন্ত অত্যন্ত নিষ্ঠুরভাবে আলজেরিয়া শাসন করেছে। নির্যাতন, গুম, গণহত্যা, অর্থনৈতিক শোষণ এবং এ দেশের আদিবাসী মুসলিম জনগোষ্ঠীকে প্রান্তিক করে রাখার মধ্য দিয়ে সেই শাসনব্যবস্থা টিকে ছিল। ১৯৫৪ থেকে ১৯৬২ সালের স্বাধীনতাযুদ্ধেই গভীর ক্ষত তৈরি হয়েছিল। আলজেরিয়ার দাবি অনুযায়ী, সেই যুদ্ধে ১৫ লাখ মানুষ প্রাণ হারিয়েছিলেন।
ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ এর আগে আলজেরিয়ায় উপনিবেশ স্থাপনকে ‘মানবতাবিরোধী অপরাধ’ হিসেবে বর্ণনা করলেও আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমা চাইতে বারবার অস্বীকার করেছেন। ২০২৩ সালেও তিনি নিজের অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করে বলেছিলেন, ‘ক্ষমা চাওয়া আমার কাজ নয়।’
গত সপ্তাহে ফ্রান্সের ইউরোপ ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র পাস্কাল কনফাভ্রেক্স এই ভোটাভুটি নিয়ে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানান। তিনি বলেন, বিদেশের মাটিতে চলমান কোনো ‘রাজনৈতিক বিতর্ক’ নিয়ে তিনি কথা বলবেন না।
এক্সেটার ইউনিভার্সিটির ঔপনিবেশিক ইতিহাস গবেষক হোসনি কিতুনি বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, ফ্রান্সের ওপর এই আইনের কোনো বাধ্যতামূলক প্রভাব নেই। তবে এর রাজনৈতিক ও প্রতীকী গুরুত্ব অপরিসীম। স্মৃতির লড়াইয়ে ফ্রান্সের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে এটি একটি নতুন মোড়।
দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সংকটের মধ্যেই এই ভোটাভুটি হলো। মূলত অভিবাসনকে কেন্দ্র করে আলজেরিয়া ও ফ্রান্সের মধ্যে সম্পর্ক টিকে থাকলেও বর্তমানে তাতে চরম টানাপোড়েন চলছে। ২০২৪ সালের জুলাই মাসে মরক্কোর পশ্চিম সাহারা পরিকল্পনাকে প্যারিস স্বীকৃতি দেওয়ার পর থেকেই উত্তেজনা তুঙ্গে। ১৯৭৫ সালে স্পেন ওই অঞ্চল ছেড়ে যাওয়ার পর মরক্কো তা দখল করে নেয়, যা নিয়ে সেখানে সশস্ত্র বিদ্রোহ চলছে।
আলজেরিয়া পশ্চিম সাহারার সাহরাউই জনগণের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকারকে সমর্থন করে এবং পলিসারিও ফ্রন্টকে মদদ দেয়, যারা মরক্কোর স্বায়ত্তশাসনের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে। গত এপ্রিলে প্যারিসে একজন আলজেরীয় কূটনীতিক ও দুই নাগরিককে গ্রেপ্তারের পর এই উত্তেজনা সংকটে রূপ নেয়। অথচ তার মাত্র এক সপ্তাহ আগে মাখোঁ এবং আলজেরিয়ার প্রেসিডেন্ট আবদেলমাজিদ তেবুন সংলাপ শুরুর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।

জন এফ কেনেডির হত্যাকাণ্ডের রাতেই গোয়েন্দা কর্মকর্তা জে গ্যারেট আন্ডারহিল আতঙ্কিত অবস্থায় ওয়াশিংটন ছেড়ে পালিয়ে যান। তিনি নিউজার্সিতে এক বন্ধুর বাড়িতে আশ্রয় নেন। সেখানে তিনি স্পষ্টতই ভীত ও বিচলিত ছিলেন। প্রকাশিত নথিতে পাওয়া এক মেমো অনুযায়ী, আন্ডারহিল অভিযোগ করেন যে, সিআইএ-এর ভেতরের একটি ‘ছোট গোষ্ঠী’ ক
১৯ মার্চ ২০২৫
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসী আটক ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন আনার লক্ষ্যে ঠিকাদার খুঁজছে। এই পরিকল্পনায় বিশাল সব শিল্প গুদাম বা ওয়্যারহাউস সংস্কার করে একসঙ্গে ৮০ হাজারেরও বেশি অভিবাসীকে আটকে রাখার কথা বলা হয়েছে। মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্ট তাদের...
১৭ মিনিট আগে
হোয়াইট হাউস মার্কিন সামরিক বাহিনীকে আগামী অন্তত দুই মাস ভেনেজুয়েলার তেলের ওপর ‘কোয়ারেন্টিন’ বা অবরোধ আরোপের দিকেই প্রায় পুরোপুরি মনোনিবেশ করার নির্দেশ দিয়েছে। রয়টার্সকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এক মার্কিন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ওয়াশিংটন বর্তমানে কারাকাসের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে সামরিক শক্তির চেয়ে অর্থনৈতিক...
৫ ঘণ্টা আগে
ভারতের কর্ণাটকের চিত্রদুর্গ জেলায় এক ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনায় অন্তত ৯ জন জীবন্ত দগ্ধ হয়ে মারা গেছেন। গতকাল বুধবার দিবাগত রাত আনুমানিক ২টার দিকে ৪৮ নম্বর জাতীয় সড়কে একটি ট্রাকের ধাক্কায় একটি বেসরকারি স্লিপার বাসে আগুন ধরে গেলে এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। বাসটি বেঙ্গালুরু থেকে শিমোগা যাচ্ছিল।
৫ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

হোয়াইট হাউস মার্কিন সামরিক বাহিনীকে আগামী অন্তত দুই মাস ভেনেজুয়েলার তেলের ওপর ‘কোয়ারেন্টিন’ বা অবরোধ আরোপের দিকেই প্রায় পুরোপুরি মনোনিবেশ করার নির্দেশ দিয়েছে। রয়টার্সকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এক মার্কিন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ওয়াশিংটন বর্তমানে কারাকাসের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে সামরিক শক্তির চেয়ে অর্থনৈতিক পথকেই বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে।
গতকাল বুধবার নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘সামরিক পথ এখনো খোলা আছে সত্যি, তবে হোয়াইট হাউসের লক্ষ্য অর্জনে আপাতত নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করার মাধ্যমে অর্থনৈতিক চাপ প্রয়োগের দিকেই নজর দেওয়া হচ্ছে।’
ভেনেজুয়েলা নিয়ে নিজের সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য সম্পর্কে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জনসমক্ষে কিছুটা অস্পষ্টতার রাখলেও গোপনে তিনি নিকোলাস মাদুরোকে দেশ ছেড়ে পালানোর জন্য চাপ দিচ্ছেন বলে রয়টার্স খবর প্রকাশ করেছে। গত সোমবার ট্রাম্প বলেন, মাদুরোর জন্য ক্ষমতা ছেড়ে দেওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ হবে।
ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘এখন পর্যন্ত নেওয়া পদক্ষেপগুলো মাদুরোর ওপর প্রবল চাপ তৈরি করেছে। আমাদের বিশ্বাস, জানুয়ারির শেষ নাগাদ ভেনেজুয়েলা এক ভয়াবহ অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের মুখে পড়বে, যদি না তারা আমেরিকার কাছে নতি স্বীকার করে বড় কোনো আপস করতে রাজি হয়।’
ট্রাম্প অভিযোগ করেছেন, দক্ষিণ আমেরিকার এই দেশটি যুক্তরাষ্ট্রে মাদক পাচার করছে। গত কয়েক মাস ধরে তাঁর প্রশাসন দক্ষিণ আমেরিকা থেকে আসা এবং মাদক বহনকারী হিসেবে অভিযুক্ত নৌকাগুলোর ওপর বোমা হামলা চালাচ্ছে। অনেক দেশই এই আক্রমণকে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড হিসেবে নিন্দা জানিয়েছে।
এ ছাড়া, ট্রাম্প প্রায়ই স্থলের মাদক অবকাঠামোতে বোমা হামলার হুমকি দিয়েছেন এবং কারাকাস অভিমুখে সিআইএর গোপন তৎপরতার অনুমোদন দিয়েছেন। চলতি মাসে এখন পর্যন্ত মার্কিন কোস্ট গার্ড ক্যারিবীয় সাগরে ভেনেজুয়েলার অপরিশোধিত তেলবোঝাই দুটি ট্যাংকার জব্দ করেছে।
হোয়াইট হাউসের কর্মকর্তার এই মন্তব্য এমন সময়ে এল যখন রয়টার্স খবর দিয়েছে যে, কোস্ট গার্ড ‘বেলা-১’ নামে একটি খালি ও নিষেধাজ্ঞাপ্রাপ্ত জাহাজ জব্দের জন্য অতিরিক্ত বাহিনীর অপেক্ষায় রয়েছে। গত রোববার তারা প্রথম এটি আটকের চেষ্টা করেছিল।
মঙ্গলবার জাতিসংঘে ভেনেজুয়েলার রাষ্ট্রদূত স্যামুয়েল মনকাডা বলেন, ‘ভেনেজুয়েলা কোনো হুমকি নয়। আসল হুমকি হলো মার্কিন সরকার।’
এদিকে পেন্টাগন ক্যারিবীয় অঞ্চলে ১৫ হাজারের বেশি সৈন্যের এক বিশাল সামরিক উপস্থিতি নিশ্চিত করেছে। এর মধ্যে রয়েছে একটি বিমানবাহী রণতরি, ১১টি যুদ্ধজাহাজ এবং এক ডজনের বেশি এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান। এই সম্পদের অনেকগুলো নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করতে সহায়ক হলেও যুদ্ধবিমানের মতো কিছু সরঞ্জাম এই কাজের জন্য খুব একটা উপযুক্ত নয়।
মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্র জাতিসংঘকে জানিয়েছে, তারা মাদুরোকে সম্পদহীন করার জন্য ‘সর্বোচ্চ সীমা’ পর্যন্ত নিষেধাজ্ঞা আরোপ এবং তা কার্যকর করবে। চলতি মাসের শুরুতে ট্রাম্প ভেনেজুয়েলায় আসা-যাওয়া করা সব নিষেধাজ্ঞাপ্রাপ্ত তেল ট্যাংকারের ওপর ‘অবরোধ’ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন।
তবে হোয়াইট হাউসের ওই কর্মকর্তার মুখে এখন ‘কোয়ারেন্টিন’ শব্দের ব্যবহার ১৯৬২ সালের কিউবান মিসাইল সংকটের স্মৃতি মনে করিয়ে দিচ্ছে। তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডি সংঘাত এড়াতে এই শব্দ ব্যবহার করেছিলেন। কেনেডির তৎকালীন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রবার্ট ম্যাকনামারা ২০০২ সালে বলেছিলেন, ‘আমরা একে কোয়ারেন্টিন বলেছিলাম; কারণ ‘ব্লকেড’ বা অবরোধ একটি যুদ্ধের শব্দ।’
বুধবার জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞরা এই অবরোধের নিন্দা জানিয়ে বলেছেন, এ ধরনের শক্তি প্রয়োগকে ‘অবৈধ সশস্ত্র আগ্রাসন’ হিসেবে গণ্য করা হয়।

হোয়াইট হাউস মার্কিন সামরিক বাহিনীকে আগামী অন্তত দুই মাস ভেনেজুয়েলার তেলের ওপর ‘কোয়ারেন্টিন’ বা অবরোধ আরোপের দিকেই প্রায় পুরোপুরি মনোনিবেশ করার নির্দেশ দিয়েছে। রয়টার্সকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এক মার্কিন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ওয়াশিংটন বর্তমানে কারাকাসের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে সামরিক শক্তির চেয়ে অর্থনৈতিক পথকেই বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে।
গতকাল বুধবার নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘সামরিক পথ এখনো খোলা আছে সত্যি, তবে হোয়াইট হাউসের লক্ষ্য অর্জনে আপাতত নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করার মাধ্যমে অর্থনৈতিক চাপ প্রয়োগের দিকেই নজর দেওয়া হচ্ছে।’
ভেনেজুয়েলা নিয়ে নিজের সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য সম্পর্কে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জনসমক্ষে কিছুটা অস্পষ্টতার রাখলেও গোপনে তিনি নিকোলাস মাদুরোকে দেশ ছেড়ে পালানোর জন্য চাপ দিচ্ছেন বলে রয়টার্স খবর প্রকাশ করেছে। গত সোমবার ট্রাম্প বলেন, মাদুরোর জন্য ক্ষমতা ছেড়ে দেওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ হবে।
ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘এখন পর্যন্ত নেওয়া পদক্ষেপগুলো মাদুরোর ওপর প্রবল চাপ তৈরি করেছে। আমাদের বিশ্বাস, জানুয়ারির শেষ নাগাদ ভেনেজুয়েলা এক ভয়াবহ অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের মুখে পড়বে, যদি না তারা আমেরিকার কাছে নতি স্বীকার করে বড় কোনো আপস করতে রাজি হয়।’
ট্রাম্প অভিযোগ করেছেন, দক্ষিণ আমেরিকার এই দেশটি যুক্তরাষ্ট্রে মাদক পাচার করছে। গত কয়েক মাস ধরে তাঁর প্রশাসন দক্ষিণ আমেরিকা থেকে আসা এবং মাদক বহনকারী হিসেবে অভিযুক্ত নৌকাগুলোর ওপর বোমা হামলা চালাচ্ছে। অনেক দেশই এই আক্রমণকে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড হিসেবে নিন্দা জানিয়েছে।
এ ছাড়া, ট্রাম্প প্রায়ই স্থলের মাদক অবকাঠামোতে বোমা হামলার হুমকি দিয়েছেন এবং কারাকাস অভিমুখে সিআইএর গোপন তৎপরতার অনুমোদন দিয়েছেন। চলতি মাসে এখন পর্যন্ত মার্কিন কোস্ট গার্ড ক্যারিবীয় সাগরে ভেনেজুয়েলার অপরিশোধিত তেলবোঝাই দুটি ট্যাংকার জব্দ করেছে।
হোয়াইট হাউসের কর্মকর্তার এই মন্তব্য এমন সময়ে এল যখন রয়টার্স খবর দিয়েছে যে, কোস্ট গার্ড ‘বেলা-১’ নামে একটি খালি ও নিষেধাজ্ঞাপ্রাপ্ত জাহাজ জব্দের জন্য অতিরিক্ত বাহিনীর অপেক্ষায় রয়েছে। গত রোববার তারা প্রথম এটি আটকের চেষ্টা করেছিল।
মঙ্গলবার জাতিসংঘে ভেনেজুয়েলার রাষ্ট্রদূত স্যামুয়েল মনকাডা বলেন, ‘ভেনেজুয়েলা কোনো হুমকি নয়। আসল হুমকি হলো মার্কিন সরকার।’
এদিকে পেন্টাগন ক্যারিবীয় অঞ্চলে ১৫ হাজারের বেশি সৈন্যের এক বিশাল সামরিক উপস্থিতি নিশ্চিত করেছে। এর মধ্যে রয়েছে একটি বিমানবাহী রণতরি, ১১টি যুদ্ধজাহাজ এবং এক ডজনের বেশি এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান। এই সম্পদের অনেকগুলো নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করতে সহায়ক হলেও যুদ্ধবিমানের মতো কিছু সরঞ্জাম এই কাজের জন্য খুব একটা উপযুক্ত নয়।
মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্র জাতিসংঘকে জানিয়েছে, তারা মাদুরোকে সম্পদহীন করার জন্য ‘সর্বোচ্চ সীমা’ পর্যন্ত নিষেধাজ্ঞা আরোপ এবং তা কার্যকর করবে। চলতি মাসের শুরুতে ট্রাম্প ভেনেজুয়েলায় আসা-যাওয়া করা সব নিষেধাজ্ঞাপ্রাপ্ত তেল ট্যাংকারের ওপর ‘অবরোধ’ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন।
তবে হোয়াইট হাউসের ওই কর্মকর্তার মুখে এখন ‘কোয়ারেন্টিন’ শব্দের ব্যবহার ১৯৬২ সালের কিউবান মিসাইল সংকটের স্মৃতি মনে করিয়ে দিচ্ছে। তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডি সংঘাত এড়াতে এই শব্দ ব্যবহার করেছিলেন। কেনেডির তৎকালীন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রবার্ট ম্যাকনামারা ২০০২ সালে বলেছিলেন, ‘আমরা একে কোয়ারেন্টিন বলেছিলাম; কারণ ‘ব্লকেড’ বা অবরোধ একটি যুদ্ধের শব্দ।’
বুধবার জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞরা এই অবরোধের নিন্দা জানিয়ে বলেছেন, এ ধরনের শক্তি প্রয়োগকে ‘অবৈধ সশস্ত্র আগ্রাসন’ হিসেবে গণ্য করা হয়।

জন এফ কেনেডির হত্যাকাণ্ডের রাতেই গোয়েন্দা কর্মকর্তা জে গ্যারেট আন্ডারহিল আতঙ্কিত অবস্থায় ওয়াশিংটন ছেড়ে পালিয়ে যান। তিনি নিউজার্সিতে এক বন্ধুর বাড়িতে আশ্রয় নেন। সেখানে তিনি স্পষ্টতই ভীত ও বিচলিত ছিলেন। প্রকাশিত নথিতে পাওয়া এক মেমো অনুযায়ী, আন্ডারহিল অভিযোগ করেন যে, সিআইএ-এর ভেতরের একটি ‘ছোট গোষ্ঠী’ ক
১৯ মার্চ ২০২৫
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসী আটক ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন আনার লক্ষ্যে ঠিকাদার খুঁজছে। এই পরিকল্পনায় বিশাল সব শিল্প গুদাম বা ওয়্যারহাউস সংস্কার করে একসঙ্গে ৮০ হাজারেরও বেশি অভিবাসীকে আটকে রাখার কথা বলা হয়েছে। মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্ট তাদের...
১৭ মিনিট আগে
আলজেরিয়ার পার্লামেন্ট সর্বসম্মতিক্রমে একটি আইন পাস করেছে। এই আইনে দেশটির ওপর ফ্রান্সের ঔপনিবেশিক শাসনকে অপরাধ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। গতকাল বুধবার আলজেরীয় আইনপ্রণেতারা এই আইন পাস করেন। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য জানা গেছে।
৪ ঘণ্টা আগে
ভারতের কর্ণাটকের চিত্রদুর্গ জেলায় এক ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনায় অন্তত ৯ জন জীবন্ত দগ্ধ হয়ে মারা গেছেন। গতকাল বুধবার দিবাগত রাত আনুমানিক ২টার দিকে ৪৮ নম্বর জাতীয় সড়কে একটি ট্রাকের ধাক্কায় একটি বেসরকারি স্লিপার বাসে আগুন ধরে গেলে এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। বাসটি বেঙ্গালুরু থেকে শিমোগা যাচ্ছিল।
৫ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

ভারতের কর্ণাটকের চিত্রদুর্গ জেলায় এক ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনায় অন্তত ৯ জন জীবন্ত দগ্ধ হয়ে মারা গেছেন। গতকাল বুধবার দিবাগত রাত আনুমানিক ২টার দিকে ৪৮ নম্বর জাতীয় সড়কে একটি ট্রাকের ধাক্কায় একটি বেসরকারি স্লিপার বাসে আগুন ধরে গেলে এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। বাসটি বেঙ্গালুরু থেকে শিমোগা যাচ্ছিল।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির খবরে বলা হয়েছে, বিপরীত দিক থেকে আসা একটি ট্রাক ডিভাইডার টপকে বাসটিকে সজোরে ধাক্কা মারে। এক পুলিশ কর্মকর্তা জানান, ‘বৃহস্পতিবার ভোরে একটি লরি ডিভাইডার পার হয়ে বাসটিকে ধাক্কা দেয়। প্রাথমিক তদন্তে মনে হচ্ছে, লরিটি বাসের তেলের ট্যাংকে আঘাত করেছিল, যার ফলে জ্বালানি ছড়িয়ে পড়ে আগুন ধরে যায়। কয়েকজন যাত্রী কোনোমতে প্রাণ বাঁচাতে সক্ষম হলেও এখন পর্যন্ত আটজন যাত্রী এবং ট্রাকচালকের মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়েছে।’
সেই ভয়াবহ মুহূর্তের বর্ণনা দিতে গিয়ে আদিত্য নামের এক যাত্রী বলেন, ‘চারপাশে শুধু মানুষের আর্তনাদ। দুর্ঘটনার পর আমি পড়ে গিয়েছিলাম এবং দেখি চারদিকে আগুন। দরজা খোলা যাচ্ছিল না। আমরা জানালার কাচ ভেঙে পালানোর চেষ্টা করি...মানুষ একে অপরকে বাঁচানোর চেষ্টা করেছিল, কিন্তু আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ায় তা কঠিন হয়ে পড়ে।’
এই দুর্ঘটনার জেরে তুমকুর রোডে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। গোকর্ণগামী এক নারী পর্যটক ভিডিও বার্তায় বলেন, ‘আমাদের সামনে একটি বাসে আগুন লেগেছে। প্রায় ৮ কিলোমিটার দীর্ঘ যানজটে আমরা আটকে আছি, যা পরিষ্কার হতে আরও ঘণ্টা দু-এক সময় লাগতে পারে।’
এর আগে নভেম্বরেও তেলেঙ্গানাতেও একই ধরনের এক দুর্ঘটনা ঘটেছিল। হায়দরাবাদ-বিজাপুর মহাসড়কে পাথরবোঝাই একটি ট্রাকের সঙ্গে বাসের সংঘর্ষে ২০ জনের মৃত্যু হয়। তেলেঙ্গানা রাষ্ট্রীয় সড়ক পরিবহন নিগমের সেই বাসটিতে প্রায় ৭০ জন যাত্রী ছিলেন। ট্রাকের ওপর থাকা পাথর বাসের ভেতরে পড়ে যাওয়ায় অনেক যাত্রী চাপা পড়ে মারা যান।

ভারতের কর্ণাটকের চিত্রদুর্গ জেলায় এক ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনায় অন্তত ৯ জন জীবন্ত দগ্ধ হয়ে মারা গেছেন। গতকাল বুধবার দিবাগত রাত আনুমানিক ২টার দিকে ৪৮ নম্বর জাতীয় সড়কে একটি ট্রাকের ধাক্কায় একটি বেসরকারি স্লিপার বাসে আগুন ধরে গেলে এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। বাসটি বেঙ্গালুরু থেকে শিমোগা যাচ্ছিল।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির খবরে বলা হয়েছে, বিপরীত দিক থেকে আসা একটি ট্রাক ডিভাইডার টপকে বাসটিকে সজোরে ধাক্কা মারে। এক পুলিশ কর্মকর্তা জানান, ‘বৃহস্পতিবার ভোরে একটি লরি ডিভাইডার পার হয়ে বাসটিকে ধাক্কা দেয়। প্রাথমিক তদন্তে মনে হচ্ছে, লরিটি বাসের তেলের ট্যাংকে আঘাত করেছিল, যার ফলে জ্বালানি ছড়িয়ে পড়ে আগুন ধরে যায়। কয়েকজন যাত্রী কোনোমতে প্রাণ বাঁচাতে সক্ষম হলেও এখন পর্যন্ত আটজন যাত্রী এবং ট্রাকচালকের মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়েছে।’
সেই ভয়াবহ মুহূর্তের বর্ণনা দিতে গিয়ে আদিত্য নামের এক যাত্রী বলেন, ‘চারপাশে শুধু মানুষের আর্তনাদ। দুর্ঘটনার পর আমি পড়ে গিয়েছিলাম এবং দেখি চারদিকে আগুন। দরজা খোলা যাচ্ছিল না। আমরা জানালার কাচ ভেঙে পালানোর চেষ্টা করি...মানুষ একে অপরকে বাঁচানোর চেষ্টা করেছিল, কিন্তু আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ায় তা কঠিন হয়ে পড়ে।’
এই দুর্ঘটনার জেরে তুমকুর রোডে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। গোকর্ণগামী এক নারী পর্যটক ভিডিও বার্তায় বলেন, ‘আমাদের সামনে একটি বাসে আগুন লেগেছে। প্রায় ৮ কিলোমিটার দীর্ঘ যানজটে আমরা আটকে আছি, যা পরিষ্কার হতে আরও ঘণ্টা দু-এক সময় লাগতে পারে।’
এর আগে নভেম্বরেও তেলেঙ্গানাতেও একই ধরনের এক দুর্ঘটনা ঘটেছিল। হায়দরাবাদ-বিজাপুর মহাসড়কে পাথরবোঝাই একটি ট্রাকের সঙ্গে বাসের সংঘর্ষে ২০ জনের মৃত্যু হয়। তেলেঙ্গানা রাষ্ট্রীয় সড়ক পরিবহন নিগমের সেই বাসটিতে প্রায় ৭০ জন যাত্রী ছিলেন। ট্রাকের ওপর থাকা পাথর বাসের ভেতরে পড়ে যাওয়ায় অনেক যাত্রী চাপা পড়ে মারা যান।

জন এফ কেনেডির হত্যাকাণ্ডের রাতেই গোয়েন্দা কর্মকর্তা জে গ্যারেট আন্ডারহিল আতঙ্কিত অবস্থায় ওয়াশিংটন ছেড়ে পালিয়ে যান। তিনি নিউজার্সিতে এক বন্ধুর বাড়িতে আশ্রয় নেন। সেখানে তিনি স্পষ্টতই ভীত ও বিচলিত ছিলেন। প্রকাশিত নথিতে পাওয়া এক মেমো অনুযায়ী, আন্ডারহিল অভিযোগ করেন যে, সিআইএ-এর ভেতরের একটি ‘ছোট গোষ্ঠী’ ক
১৯ মার্চ ২০২৫
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসী আটক ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন আনার লক্ষ্যে ঠিকাদার খুঁজছে। এই পরিকল্পনায় বিশাল সব শিল্প গুদাম বা ওয়্যারহাউস সংস্কার করে একসঙ্গে ৮০ হাজারেরও বেশি অভিবাসীকে আটকে রাখার কথা বলা হয়েছে। মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্ট তাদের...
১৭ মিনিট আগে
আলজেরিয়ার পার্লামেন্ট সর্বসম্মতিক্রমে একটি আইন পাস করেছে। এই আইনে দেশটির ওপর ফ্রান্সের ঔপনিবেশিক শাসনকে অপরাধ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। গতকাল বুধবার আলজেরীয় আইনপ্রণেতারা এই আইন পাস করেন। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য জানা গেছে।
৪ ঘণ্টা আগে
হোয়াইট হাউস মার্কিন সামরিক বাহিনীকে আগামী অন্তত দুই মাস ভেনেজুয়েলার তেলের ওপর ‘কোয়ারেন্টিন’ বা অবরোধ আরোপের দিকেই প্রায় পুরোপুরি মনোনিবেশ করার নির্দেশ দিয়েছে। রয়টার্সকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এক মার্কিন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ওয়াশিংটন বর্তমানে কারাকাসের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে সামরিক শক্তির চেয়ে অর্থনৈতিক...
৫ ঘণ্টা আগে