Ajker Patrika

যুক্তরাষ্ট্রে এসে আমাদের প্রশিক্ষণ দাও, তারপর চলে যাও—ট্রাম্পের ভিসা ভাবনা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: সংগৃহীত
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: সংগৃহীত

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন এইচ-১বি ভিসা নীতির লক্ষ্য হলো যুক্তরাষ্ট্রে দক্ষ বিদেশি কর্মীদের অস্থায়ীভাবে যুক্তরাষ্ট্রে নেওয়া। যাতে তারা আমেরিকানদের উচ্চ দক্ষতার কাজে প্রশিক্ষণ দিতে পারে। বিদেশি শ্রমিকের ওপর দীর্ঘমেয়াদি নির্ভরশীলতা চান না ট্রাম্প। এমনটাই জানিয়েছেন মার্কিন অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির খবরে বলা হয়েছে, ট্রাম্প প্রশাসন সাম্প্রতিক সময়ে আগ্রাসী অভিবাসন নীতি সংস্কারের পথে হাঁটছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ট্রাম্প বলেছেন, কিছু কিছু ক্ষেত্রে আমেরিকাকে বিদেশি প্রতিভা আনতেই হবে। তার ঠিক পরদিনই বেসেন্ট এই মন্তব্য করলেন।

ফক্স নিউজের সাংবাদিক ব্রায়ান কিলমেইডকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বেসেন্ট বলেন, ট্রাম্পের নতুন এইচ-১বি ভিসা নীতি এক ধরনের ‘জ্ঞান স্থানান্তর উদ্যোগ’, যার উদ্দেশ্য আমেরিকার উৎপাদন খাতকে পুনরুজ্জীবিত করা। তিনি বলেন, এই নতুন পন্থার লক্ষ্য হলো কয়েক দশকের আউটসোর্সিং বা উৎপাদন স্থানান্তরের পর যুক্তরাষ্ট্রের উৎপাদনশিল্পকে পুনর্গঠন করা।

বেসেন্ট বলেন, ‘২০ থেকে ৩০ বছর ধরে আমরা নিখুঁত উৎপাদনশিল্পের কাজ বিদেশে পাঠিয়ে দিয়েছি...এখন হুট করে আমরা বলতেই পারি না যে, কাল থেকেই আমরা নিজেরা জাহাজ বানাব। আমরা যুক্তরাষ্ট্রে সেমিকন্ডাক্টর শিল্প ফিরিয়ে আনতে চাই। অ্যারিজোনায় বড় বড় স্থাপনাগুলো গড়ে উঠবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘প্রেসিডেন্টের ভাবনাটা হলো—বিদেশি বিশেষজ্ঞদের তিন, পাঁচ বা সাত বছরের জন্য আনা হবে, যাতে তারা আমেরিকান শ্রমিকদের প্রশিক্ষণ দিতে পারে। এরপর তারা নিজ দেশে ফিরে যাবে, আর তখন আমেরিকান শ্রমিকরাই সেই দায়িত্ব নেবে।’

বিদেশি শ্রমিকেরা আমেরিকানদের চাকরি কেড়ে নেয়—এমন আশঙ্কার জবাবে বেসেন্ট বলেন, ‘এই মুহূর্তে কোনো আমেরিকানই ওই কাজ করতে পারবে না—এখনো নয়।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা বহু বছর ধরে এখানে জাহাজ বা সেমিকন্ডাক্টর তৈরি করিনি। বিদেশি অংশীদাররা আসবে, আমেরিকানদের শেখাবে—এটাই সবচেয়ে বড় সাফল্য।’

বেসেন্ট ব্যাখ্যা করেন, ট্রাম্প টিমের এই নতুন এইচ-১বি নীতি রিপাবলিকান প্রেসিডেন্টের বৃহত্তর পরিকল্পনারই অংশ—যার উদ্দেশ্য হলো গুরুত্বপূর্ণ শিল্পগুলোকে দেশে ফিরিয়ে আনা এবং আমদানি নির্ভরতা কমানো।

এ ছাড়া বেসেন্ট ট্রাম্প প্রশাসনের অর্থনৈতিক কর্মসূচি নিয়েও কথা বলেন। তিনি নিশ্চিত করেন, বছরে এক লাখ ডলারের নিচে আয় করা পরিবারের জন্য ২ হাজার ডলারের শুল্ক-রিবেট বা ফেরতের প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা চলছে। বেসেন্ট বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট ২ হাজার ডলারের রিবেট নিয়ে কথা বলছেন...এটি এমন এক পদক্ষেপ, যাতে পরিবারগুলো শক্তিশালী বাণিজ্য নীতির সুফল সরাসরি পায়।’

বেসেন্ট বলেন, ট্রাম্প প্রশাসনের দৃষ্টিভঙ্গি হলো ‘প্যারালাল প্রস্পারিটি বা সমান্তরাল সমৃদ্ধি’ যেখানে ওয়াল স্ট্রিট ও মেইন স্ট্রিট একসঙ্গে এগিয়ে যাবে। আর এটি নির্ভর করছে ট্রেজারি বাজারকে গভীর, তরল ও স্থিতিশীল রাখার ওপর।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

তোমার বিবি কয়টা—আল-শারাকে ট্রাম্পের জিজ্ঞাসা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১৩ নভেম্বর ২০২৫, ১০: ২৬
হোয়াইট হাউসে ট্রাম্পের সঙ্গে আহমেদ আল–শারা। ছবি: এএফপি
হোয়াইট হাউসে ট্রাম্পের সঙ্গে আহমেদ আল–শারা। ছবি: এএফপি

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হোয়াইট হাউসে ডেকে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারাকে খুবই ব্যক্তিগত ও বিব্রতকর এক প্রশ্ন করেছেন। ট্রাম্প সিরিয়ার প্রেসিডেন্টকে সরাসরি জিজ্ঞেস করেন যে ‘তোমার বিবি কয়টা?’ ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম টেলিগ্রাফের প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য জানা গেছে।

আহমেদ আল-শারা হোয়াইট হাউসে প্রবেশ করেন পাশের একটি ফটক দিয়ে, মূল ফটক দিয়ে নয়। প্রবেশের আগেই সাংবাদিকেরা শারাকে তাঁর অতীত জীবন নিয়ে বিব্রতকর প্রশ্ন করতে থাকেন। যদিও শারা এসবে কর্ণপাত করেননি। তবে হোয়াইট হাউসেও প্রায় একই রকম বিব্রতকর পরিস্থিতি তৈরি হয় আল-শারার জন্য এবং এবারে এই পরিস্থিতি তৈরি করেন খোদ আমন্ত্রণদাতা ট্রাম্প।

এক ভিডিওতে দেখা গেছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আল-শারাকে উষ্ণ অভ্যর্থনা দিচ্ছেন। এরপর দেরাজ থেকে নিজের ব্র্যান্ডের কোলোনের সোনালি ঢাকনার একটি পারফিউম স্প্রে বের করেন ট্রাম্প। সেটির ঢাকনা খুলে ট্রাম্প বলেন, ‘এটা পুরুষদের জন্য পারফিউম। এটা সবচেয়ে ভালো সুগন্ধি, ঠিক আছে?’ তবে এ বিষয়ে আল-শারাকে খুব একটা আগ্রহী বলে মনে হয়নি।

এরপর ট্রাম্প আরও একটি পারফিউমের বোতল এগিয়ে দেন শারার দিকে এবং বলেন, দ্বিতীয় বোতলটি তাঁর স্ত্রীর জন্য। এরপর মজার ছলে জিজ্ঞেস করেন, ‘তোমার কয়জন বিবি আছে? একজন?’ এরপর আল-শারা যখন হেসে জানান যে তাঁর মাত্র একজনই স্ত্রী আছেন, তখন ট্রাম্প হেসে তাঁর হাতে চাপড় দেন।

এ সময় ট্রাম্প আল-শারাকে অপ্রস্তুত করে আবারও বলেন, ‘তোমাদের ক্ষেত্রে আমি কখনো নিশ্চিত হতে পারি না।’ ইসলামে কঠোর শর্ত সাপেক্ষে চারজন স্ত্রী রাখার অনুমতির প্রসঙ্গ টেনে ট্রাম্পের এই রসিকতা একদম বিপরীত এক পরিবেশের ইঙ্গিত দেয়।

আল–শারা ও তাঁর স্ত্রী লতিফা আল–দ্রৌবি। ছবি: সংগৃহীত
আল–শারা ও তাঁর স্ত্রী লতিফা আল–দ্রৌবি। ছবি: সংগৃহীত

ওয়াশিংটন সফর ছিল শারার আন্তর্জাতিক সংযোগের প্রচারণার অংশ। তিনি যুদ্ধের পোশাক ছেড়ে এখন প্রচার করছেন এক নতুন বার্তা—তাঁর দল হায়াত তাহরির আল-শাম পশ্চিমা বিশ্বের জন্য কোনো হুমকি নয়, বরং তারা প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের সরকারকে উৎখাত করে নতুন বাস্তবতা তৈরি করেছে।

এতে ট্রাম্প পড়েছেন এক সূক্ষ্ম কূটনৈতিক ভারসাম্যের মধ্যে। ট্রাম্পের কঠোরপন্থী সমর্থকেরা; যেমন লরা লুমার হোয়াইট হাউসে এই সাক্ষাতের তীব্র সমালোচনা করেছেন।

সোমবার আল-শারার সফরের জন্য ট্রাম্প প্রশাসন বিশেষ নিরাপত্তাব্যবস্থা নেয়। তবে সিরিয়ার প্রেসিডেন্টকে সাধারণ রাষ্ট্রীয় অতিথিদের মতো সম্মান দেওয়া হয়নি। প্রথা অনুসারে তিনি মূল ফটক দিয়ে প্রবেশ করেননি, তাঁকে হোয়াইট হাউসের ওয়েস্ট উইংয়ের সামনে লিমোজিন থেকেও নামানো হয়নি, তাঁর দেশের পতাকা হোয়াইট হাউসে ছিল না। এমনকি হোয়াইট হাউসের দরজায়ও কেউ তাঁকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাগত জানায়নি।

ট্রাম্প-শারা বৈঠকের এক দিন পর সিরিয়ার কর্মকর্তা ঘোষণা দেন, তাদের দেশ আইসিস-বিরোধী বৈশ্বিক জোটে যোগ দিয়েছে। বিনিময়ে, ট্রাম্প সোমবার সিরিয়ার ওপর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে বসানো ‘সিজার অ্যাক্ট’ নিষেধাজ্ঞার মেয়াদে ছাড় দেন। স্থায়ীভাবে তা প্রত্যাহারের জন্য অবশ্য কংগ্রেসের অনুমোদন প্রয়োজন হবে।

বৈঠকের পর ট্রাম্প আল-শারার ব্যাপারে তাঁর প্রশংসা গোপন রাখতে পারেননি। তিনি বলেন, ‘সে এসেছে এক ভয়ংকর কঠিন জায়গা থেকে, আর সে নিজেও কঠিন মানুষ। আমি তাকে পছন্দ করি।’

উল্লেখ্য, আহমেদ আল-শারার স্ত্রীর নাম লতিফা আল-দ্রৌবি। তাঁর জন্ম ১৯৮৪ সালের দিকে। দামেস্ক ইউনিভার্সিটিতে অধ্যয়নকালে আল-শারার সঙ্গে তাঁর পরিচয়। তাঁরা ২০১২ সালের দিকে বিয়ে করেন। এই দম্পতির তিন সন্তান রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

যুক্তরাষ্ট্রের দীর্ঘতম শাটডাউন অবসানের বিল অবশেষে কংগ্রেসে পাস, তবু আছে অনিশ্চয়তা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১৩ নভেম্বর ২০২৫, ০৮: ৫০
যুক্তরাষ্ট্রের পার্লামেন্ট ভবন ক্যাপিটল হিল। ছবি: সংগৃহীত
যুক্তরাষ্ট্রের পার্লামেন্ট ভবন ক্যাপিটল হিল। ছবি: সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে দীর্ঘতম শাটডাউন বা সরকারি অচলাবস্থা অবসানে অবশেষে মার্কিন পার্লামেন্টে বিল পাস হয়েছে। উচ্চকক্ষ সিনেটের পর এবার সরকারি ব্যয় অনুমোদন করে একটি অস্থায়ী সমাধান এনেছেন নিম্নকক্ষ হাউস অব রিপ্রেজেনটেটিভসের আইনপ্রণেতারা।

কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার খবরে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে দীর্ঘতম সময় ধরে চলা সরকারি অচলাবস্থার অবসান ঘটাতে অবশেষে মার্কিন আইনসভা হাউস অব রিপ্রেজেনটেটিভস বা প্রতিনিধি পরিষদ ফেডারেল ব্যয় বিল পাস করেছে। যার ফলে এই সংকটের শেষ বাধাটিও আপাতত সরে গেছে।

স্থানীয় সময় গতকাল বুধবার রিপাবলিকান পার্টির সংখ্যাগরিষ্ঠ হাউসে অনুষ্ঠিত ভোটে বিলটির পক্ষে ভোট দেন ২২২ জন সদস্য, যার মধ্যে ছয় ডেমোক্র্যাট আইনপ্রণেতাও ছিলেন। আর বিপক্ষে ভোট দেন ২০৯ জন, তাঁদের মধ্যে দুজন রিপাবলিকানও ছিলেন। দীর্ঘদিন বিলম্বের পর পাস হওয়া বিলটি এখন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অনুমোদনের জন্য পাঠানো হবে।

এর আগে সোমবার রাতে কংগ্রেসের উচ্চকক্ষ সিনেটে ৬০-৪০ ভোটে এই ব্যয় পরিকল্পনাটি অনুমোদিত হয়, যাতে ৩০ জানুয়ারি পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র সরকারের কার্যক্রম চালানোর অর্থ বরাদ্দ দেওয়ার কথা বলা হয়। এর ফলে ছয় সপ্তাহ ধরে বেতন বন্ধ থাকা কয়েক লাখ ফেডারেল কর্মচারী আবারও বেতন পাবেন।

সরকারি অচলাবস্থার সময় জরুরি সেবা ছাড়া প্রায় সব সরকারি কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। গত সপ্তাহে সাত ডেমোক্র্যাট ও এক স্বতন্ত্র সিনেটর নতুন এই ব্যয় প্রস্তাবের পক্ষে সম্মতি দিলে সমঝোতার পথ তৈরি হয়। মঙ্গলবার অচলাবস্থার ৪২ তম দিনে পৌঁছানো সংকট তখনই প্রশমনের পথে যায়।

তবে এই চুক্তি এখনো অচলাবস্থার অন্যতম কেন্দ্রীয় ইস্যু ২ কোটি ৪০ লাখ মার্কিনির স্বাস্থ্যবিমা ভর্তুকি সমাধান করতে পারেনি। ট্রাম্প প্রশাসন ‘অ্যাফোর্ডেবল কেয়ার অ্যাক্ট’-এর আওতাধীন এসব স্বাস্থ্য সহায়তা বন্ধের পরিকল্পনা করেছিল। গত কয়েক সপ্তাহ ধরে ডেমোক্র্যাটরা বারবার এই বিলের পাস ঠেকিয়ে দিচ্ছিল। কারণ, তাদের দাবি ছিল নিম্ন আয়ের আমেরিকানদের ক্রমবর্ধমান চিকিৎসা ব্যয়ের সমাধান না করলে এই প্রস্তাব পাস করা যাবে না।

বুধবারের ভোটের আগে রিপাবলিকান হাউস স্পিকার মাইক জনসন ডেমোক্র্যাটদের কড়া সমালোচনা করে বলেন, তাঁরা ‘রাজনৈতিক খেলার’ অংশ হিসেবে আমেরিকান নাগরিকদের ‘জিম্মি’ করে রেখেছেন এবং গত সেপ্টেম্বরে বিলের অনুমোদন আটকে দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘সেই সময় থেকে সিনেট ডেমোক্র্যাটরা ১৪ বার সরকারের কার্যক্রম বন্ধ করার পক্ষে ভোট দিয়েছেন। রিপাবলিকানরা জনগণের জন্য সরকার চালু করতে ১৫ বার ভোট দিয়েছে, আর ডেমোক্র্যাটরা ১৫ বার তা বন্ধ করার পক্ষে।’

এই অচলাবস্থা ভাঙার চুক্তির অংশ হিসেবে সিনেট রিপাবলিকানরা ডিসেম্বরের মধ্যে স্বাস্থ্যসেবা ইস্যুতে ভোট আয়োজনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। তবে এতে নতুন করে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে, জানুয়ারিতে আবারও সরকার বন্ধ হয়ে যেতে পারে। এই সমঝোতা ডেমোক্র্যাটদের মধ্যেও ক্ষোভ সৃষ্টি করেছে। অনেকেই বিলের বিরোধিতা চালিয়ে যেতে চেয়েছিলেন। তাঁদের মধ্যে ইলিনয় অঙ্গরাজ্যের গভর্নর জে বি প্রিৎজকার অন্যতম। ২০২৮ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে বিবেচিত এই নেতা এই চুক্তিকে ‘ফাঁকা প্রতিশ্রুতি’ বলে উল্লেখ করেছেন।

এই সমঝোতার পক্ষে ভোট দেওয়া ডেমোক্র্যাট সিনেটররা হলেন ইলিনয়ের সিনেট ডেমোক্রেটিক হুইপ ডিক ডারবিন, পেনসিলভানিয়ার জন ফেটারম্যান, নেভাডার ক্যাথরিন করটেজ মাস্টো ও জ্যাকি রোজেন, নিউ হ্যাম্পশায়ারের ম্যাগি হাসান ও জিন শাহিন এবং ভার্জিনিয়ার টিম কেইন। এ ছাড়া মেইন অঙ্গরাজ্যের স্বাধীন সিনেটর অ্যাঙ্গাস কিংও সমঝোতার পক্ষে ভোট দেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

এপস্টেইনের বাড়িতে নারী নিয়ে সময় কাটান ট্রাম্প, নতুন ই-মেইল ফাঁস

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
২০০০ সালে মার-এ-লাগোতে (বাম দিক থেকে) ডোনাল্ড ট্রাম্প, মেলানিয়া নাউস (বর্তমানে মেলানিয়া ট্রাম্প), জেফরি এপস্টেইন ও তাঁর সঙ্গী ঘিসলেন ম্যাক্সওয়েল। ছবি: এএফপি
২০০০ সালে মার-এ-লাগোতে (বাম দিক থেকে) ডোনাল্ড ট্রাম্প, মেলানিয়া নাউস (বর্তমানে মেলানিয়া ট্রাম্প), জেফরি এপস্টেইন ও তাঁর সঙ্গী ঘিসলেন ম্যাক্সওয়েল। ছবি: এএফপি

কুখ্যাত যৌন অপরাধী জেফরি এপস্টেইনের সঙ্গে আবারও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সম্পৃক্ততার তথ্য পাওয়া গেছে। সম্প্রতি এপস্টেইন ফাইলের সঙ্গে জড়িত নতুন কিছু ই-মেইল প্রকাশ করেছেন মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের ডেমোক্র্যাট সদস্যরা। তাঁদের দাবি, এই ই-মেইলগুলো এপস্টেইন কর্তৃক প্রকাশিত বিশাল নথিপত্র থেকে পাওয়া গেছে।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আজ বুধবার ডেমোক্র্যাটরা জেফরি এপস্টেইনের কিছু নতুন ই-মেইল প্রকাশ করেন। সেখানে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে যে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এপস্টেইনের যৌন নির্যাতনের বিষয়ে জানতেন এবং ভুক্তভোগী ‘মেয়েদের সম্পর্কেও জানতেন’।

মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের তত্ত্বাবধায়ক কমিটি (হাউস ওভারসাইট কমিটি) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে এসব ই-মেইল প্রকাশ করেছে। এতে এপস্টেইন, তাঁর ঘনিষ্ঠ সহযোগী ঘিসলেন ম্যাক্সওয়েল ও লেখক মাইকেল উলফের মধ্যে আদান–প্রদান করা বার্তা রয়েছে। কয়েকটি ই-মেইলে এপস্টেইনকে ট্রাম্পের নাম উল্লেখ করতে দেখা গেছে।

২০১১ সালের এপ্রিল মাসে লেখা একটি ই-মেইলে এপস্টেইন লিখেছিলেন, ‘আমি চাই তুমি বোঝো, যে কুকুরটা এখনো ঘেউ ঘেউ করেনি, সে হচ্ছে ট্রাম্প।’ এরপর তিনি (নাম অপ্রকাশিত) লেখেন, ‘একটি মেয়ে তার (ট্রাম্পের) সঙ্গে আমার বাড়িতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা সময় কাটিয়েছে। কিন্তু সে (ট্রাম্প) তার নাম একবারও প্রকাশ করেনি।’ এর জবাবে ম্যাক্সওয়েল লিখেছিলেন, ‘আমি আসলে এটা নিয়েই ভাবছিলাম...’।

প্রতিনিধি পরিষদের তত্ত্বাবধায়ক কমিটির ডেমোক্র্যাট সদস্যরা বলেছেন, এসব ই-মেইল ‘ডোনাল্ড ট্রাম্প ও এপস্টেইনের ভয়াবহ অপরাধের প্রমাণ’।

তবে এখন পর্যন্ত ট্রাম্পের বিরুদ্ধে এপস্টেইন বা ম্যাক্সওয়েলের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কোনো অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের অভিযোগ আনেনি মার্কিন কর্তৃপক্ষ।

এদিকে কিছুদিন আগে মামলাটির কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করেছিল ট্রাম্প প্রশাসন। তাদের দাবি, এই মামলার বিষয়ে আর কোনো তথ্য প্রকাশ করার নেই। কিন্তু এর ঠিক চার মাস পর এই নতুন তথ্য সামনে এল।

ট্রাম্প একাধিকবার বলেছেন, এপস্টেইনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড সম্পর্কে তাঁর কোনো ধারণা ছিল না। ১৯৯০-এর দশক থেকে ২০০০-এর শুরুর দিকে তাঁদের মধ্যে যোগাযোগ ছিল, তবে ২০০৪ সালের দিকে তাঁদের সম্পর্কের অবনতি ঘটে।

গত জুলাই মাসে নিউইয়র্ক টাইমস এক প্রতিবেদনে জানিয়েছিল, তৎকালীন মার্কিন অ্যাটর্নি জেনারেল পাম বন্ডি ট্রাম্পকে জানিয়েছিলেন যে, তাঁর নাম এপস্টেইনসংক্রান্ত নথিপত্রে রয়েছে। তবে সর্বশেষ নথি প্রকাশের বিষয়ে হোয়াইট হাউস এখনো কোনো মন্তব্য করেনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

দুর্নীতির মামলায় নেতানিয়াহুকে ক্ষমা করতে ইসরায়েলি প্রেসিডেন্টকে ট্রাম্পের চিঠি

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
এপ্রিলে হোয়াইট হাউসে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে নেতানিয়াহু। ছবি: এপির সৌজন্যে
এপ্রিলে হোয়াইট হাউসে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে নেতানিয়াহু। ছবি: এপির সৌজন্যে

চলমান দুর্নীতি মামলায় ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর ‘পূর্ণ ক্ষমা’ চেয়ে একটি চিঠি পাঠিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এই চিঠি তিনি সরাসরি ইসরায়েলি প্রেসিডেন্টের উদ্দেশে লিখেছেন।

ইসরায়েলি প্রেসিডেন্টের দপ্তর থেকে প্রকাশিত ওই চিঠিতে ট্রাম্প লিখেছেন, ‘আমি আপনাকে বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে সম্পূর্ণরূপে ক্ষমা করার আহ্বান জানাচ্ছি। যুদ্ধকালীন তিনি একজন শক্তিশালী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এখন তিনি ইসরায়েলকে শান্তির পথে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন।’

একটি দেশের প্রেসিডেন্ট হিসেবে অন্য দেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ অস্বাভাবিক হলেও ট্রাম্পের জন্য এটি নতুন নয়। তিনি আগেও এভাবে বিভিন্ন দেশে থাকা তাঁর প্রিয় মানুষদের রক্ষা করতে এমন কাজ করেছেন।

মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদের শুরুতে নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে তিনটি পৃথক মামলায় যথাক্রমে জালিয়াতি, ঘুষ এবং বিশ্বাসভঙ্গের অভিযোগ আনা হয়। তবে নেতানিয়াহু নিজেকে নির্দোষ দাবি করে বারবার এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

ট্রাম্প তাঁর চিঠিতে লিখেছেন, ‘যদিও আমি ইসরায়েলি বিচারব্যবস্থার স্বাধীনতা এবং এর প্রয়োজনীয়তাকে শ্রদ্ধা করি, কিন্তু আমি বিশ্বাস করি, বিবির বিরুদ্ধে মামলাটি রাজনৈতিক ও অযৌক্তিক। আমরা দীর্ঘদিন ধরে একসঙ্গে ইসরায়েলের কঠিন প্রতিপক্ষ ইরানের বিরুদ্ধে লড়াই করছি।’

প্রেসিডেন্টের ভূমিকাটি মূলত আনুষ্ঠানিক হলেও ইসরায়েলি প্রেসিডেন্ট আইজ্যাক হেরজগের ক্ষমা করার ক্ষমতা রয়েছে। তবে এর জন্য অভিযুক্ত ব্যক্তি, তাঁদের আইনজীবী বা পরিবারের সদস্যের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে অনুরোধ করতে হয়। নেতানিয়াহু বা তাঁর কোনো ঘনিষ্ঠ কেউ এখন পর্যন্ত এমন কোনো আবেদন জমা দেননি।

হেরজগের দপ্তর এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তারা ট্রাম্পকে শ্রদ্ধা করে। ইসরায়েলের প্রতি তাঁর অবিচল সমর্থন, জিম্মিদের প্রত্যাবর্তনে তাঁর বিশাল অবদান, মধ্যপ্রাচ্য ও গাজার পরিবর্তন এবং ইসরায়েলের নিরাপত্তা রক্ষায় তাঁর ভূমিকার প্রশংসা করে। তবে হেরজগের দপ্তর স্পষ্ট করে বলেছে, ‘কোনো ব্যক্তি যদি ক্ষমা চান, তাঁকে অবশ্যই প্রতিষ্ঠিত পদ্ধতি অনুযায়ী আবেদন জমা দিতে হবে।’

এদিকে ট্রাম্পের এই চিঠি ইসরায়েলের রাজনৈতিক অঙ্গনে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে।

কট্টর ডানপন্থী জাতীয় নিরাপত্তামন্ত্রী ইতামার বেন গাভির এক্সে লিখেছেন, ‘প্রেসিডেন্ট হেরজগ, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কথা শুনুন!’ তিনি দাবি করেন, নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো ‘রাষ্ট্রের বিরুদ্ধেই অভিযোগের’ শামিল হয়েছে।

বিরোধী দলের নেতা ইয়াইর লাপিদ বলেন, ‘মনে রাখবেন, ইসরায়েলি আইনে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, রাষ্ট্রপতির ক্ষমার প্রথম শর্ত হলো দোষ স্বীকার করা এবং অনুশোচনা প্রকাশ করা।’

নেতানিয়াহু ইসরায়েলের ইতিহাসে প্রথম ক্ষমতাসীন প্রধানমন্ত্রী, যিনি পদে থাকাকালীন ফৌজদারি মামলার সম্মুখীন হচ্ছেন। ঘুষ, জালিয়াতি এবং বিশ্বাসভঙ্গের অভিযোগে ২০২০ সালের মে মাসে তাঁর বিচার শুরু হয়েছিল। নেতানিয়াহুর নিজের সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয় ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে, তবে তাঁর অনুরোধে বারবার বিচারপ্রক্রিয়া বিলম্ব ও বাতিল করা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, বিচার, রায় এবং সম্ভাব্য আপিলের বিভিন্ন পর্যায় বিবেচনায় এই প্রক্রিয়া আরও কয়েক বছর ধরে চলবে।

অন্য দেশের চলমান বিচারিক কার্যক্রমে ট্রাম্পের হস্তক্ষেপের ঘটনা এটিই প্রথম নয়। এর আগে গত জুলাইয়ে এক সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে ট্রাম্প তাঁর আরেক আন্তর্জাতিক সহযোগী, ব্রাজিলের সাবেক প্রেসিডেন্ট জইর বলসোনারোর (যিনি অভ্যুত্থানের ষড়যন্ত্রের জন্য দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন) বিরুদ্ধে আইনি প্রক্রিয়া বন্ধ করার জন্য ব্রাজিলীয় কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানান।

এরপর এপ্রিলে ট্রাম্প ফরাসি কট্টর ডানপন্থী নেতা মেরিন লো পেনের জন্য পোস্ট দিয়েছিলেন। ইউরোপীয় ইউনিয়নের তহবিল তছরুপের দায়ে দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় লো পেনকে পাঁচ বছরের জন্য রাজনৈতিক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল।

ট্রাম্প ট্রুথ সোশ্যালে পোস্ট করে লিখেছিলেন, মেরিন লো পেনের বিরুদ্ধে ‘উইচ হান্ট’ (ডাইনি খোঁজা অভিযান) হলো ইউরোপের বামপন্থীদের আরেকটি উদাহরণ; যেখানে তারা ‘আইনকে অস্ত্র’ হিসেবে ব্যবহার করে বাক্‌স্বাধীনতা দমন করছে এবং রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে চুপ করাচ্ছে। এবার তারা এত দূর গেছে যে প্রতিপক্ষকেই জেলে পাঠাচ্ছে। এটা সেই একই কৌশল, যা আমার বিরুদ্ধেও ব্যবহার করা হয়েছিল।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত