Ajker Patrika

যুক্তরাষ্ট্রে ক্লাসরুমে শিক্ষককে গুলি করল ৬ বছরের বালক

আপডেট : ০৭ জানুয়ারি ২০২৩, ১০: ৩৪
যুক্তরাষ্ট্রে ক্লাসরুমে শিক্ষককে গুলি করল ৬ বছরের বালক

যুক্তরাষ্ট্রের পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য ভার্জিনিয়ার একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষে ছয় বছরের এক বালক গুলি করে এক শিক্ষককে আহত করেছে। স্থানীয় সময় শুক্রবার রিচনেক এলিমেন্টারি স্কুলে এ ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়ে পুলিশ। তবে এ ঘটনায় কোনো শিক্ষার্থী আহত হয়নি। বার্তা সংস্থা এএফপি এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানিয়েছে।

স্থানীয় পুলিশপ্রধান স্টিভ ড্রু সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, ‘ছয় বছর বয়সী ওই শিক্ষার্থী এখন পুলিশের হেফাজতে রয়েছে। প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে, সে উদ্দেশ্যমূলকভাবেই গুলি করেছে। এটি কোনো দুর্ঘটনা ছিল না।’

পুলিশ জানিয়েছে, গুলিতে আহত শিক্ষক একজন নারী। তাঁর বয়স তিরিশের মতো। তিনি গুরুতর আহত হয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

রিচনেক এলিমেন্টারি স্কুলের সুপারিনটেনডেন্ট জর্জ পার্কার বলেছেন, ‘আমি হতবাক এবং ভীষণ রকম হতাশ। শিশু ও তরুণদের হাতে যেন বন্দুক না যায়, তা নিশ্চিত করতে আমাদের সবার সমর্থন দরকার।’

এর আগে গত মে মাসে টেক্সাসের উভালদেতে একটি স্কুলে ১৮ বছর বয়সী বন্দুকধারীর গুলিতে ১৯ জন শিশু ও দুই শিক্ষক নিহত হয়েছেন। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের স্কুলগুলোতে প্রায়শই বন্দুক সহিংসতার ঘটনা ঘটছে।

যুক্তরাষ্ট্রের গান ভায়োলেন্স আর্কাইভের ডেটাবেইস অনুসারে, গত বছর যুক্তরাষ্ট্রে বন্দুক সহিংসতায় অন্তত ৪৪ হাজার মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে অর্ধেক মৃত্যু হত্যা, দুর্ঘটনা ও আত্মরক্ষার সঙ্গে সম্পর্কিত এবং অর্ধেক আত্মহত্যাজনিত মৃত্যু।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

নির্বাচনী সহিংসতার পর তানজানিয়ায় রাষ্ট্রদ্রোহ মামলার ছড়াছড়ি

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
তানজানিয়ার অর্থনৈতিক রাজধানী দার এস সালামে ২৪০ জন বিক্ষোভকারীর বিরুদ্ধে গতকাল শুক্রবার রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে মামলা করা হয়। ছবি: সংগৃহীত
তানজানিয়ার অর্থনৈতিক রাজধানী দার এস সালামে ২৪০ জন বিক্ষোভকারীর বিরুদ্ধে গতকাল শুক্রবার রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে মামলা করা হয়। ছবি: সংগৃহীত

নির্বাচনী সহিংসতার পর কমপক্ষে ২৪০ জন বিক্ষোভকারীকে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে অভিযুক্ত করেছে তানজানিয়ার একটি আদালত।

পূর্ব আফ্রিকার দেশটিতে গত ২৯ অক্টোবর অনুষ্ঠিত সাধারণ নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট প্রার্থী সামিয়া সুলুহু হাসান ৯৮ শতাংশ ভোটে জয়ী হয়েছেন বলে ঘোষণা দেওয়া হয়।

তবে বিরোধী দলকে নির্বাচনে অংশ নিতে না দেওয়ায় তারা এ নির্বাচনকে ‘প্রহসন’ বলে অভিহিত করে।

ভোটের ফলের বিরুদ্ধে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে নিরাপত্তা বাহিনীর সংঘর্ষে বিভিন্ন সূত্রের বরাতে বলা হচ্ছে, শত শত মানুষ নিহত হয়েছে। তবে কর্তৃপক্ষ সহিংসতার ব্যাপ্তি কমিয়ে দেখিয়েছে এবং দাবি করেছে, নির্বাচন ‘অবাধ ও সুষ্ঠু’ ছিল।

এক প্রতিবেদনে বিবিসি জানিয়েছে, সংঘর্ষের পর বহু মানুষকে আটক করা হয়। তাদের মধ্যে অন্তত ২৪০ জনের বিরুদ্ধে গতকাল শুক্রবার তানজানিয়ার অর্থনৈতিক রাজধানী দার এস সালামে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা করা হয়। আদালতে তাদের এখন পর্যন্ত কোনো আবেদন জানাতে বলা হয়নি।

অভিযোগপত্রে বলা হয়, অভিযুক্তরা নির্বাচনে বাধা দেওয়ার উদ্দেশে বিক্ষোভ উসকে দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন।

দোষী প্রমাণিত হলে অভিযুক্তদের মৃত্যুদণ্ড হতে পারে। তবে তানজানিয়ায় মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের বদলে সাধারণত তা যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে রূপান্তরিত করা হয়।

দেশটিতে সর্বশেষ মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছিল ১৯৯০-এর দশকে।

গতকাল যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে, তাঁদের মধ্যে রয়েছেন আফ্রিকার দেশটির বিশিষ্ট ব্যবসায়ী জেনিফার জোভিন। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, পুলিশের ছোড়া কাঁদানে গ্যাসের শ্যাল থেকে রক্ষা পেতে বিক্ষোভকারীদের গ্যাস মাস্ক কেনার পরামর্শ দিয়েছিলেন তিনি।

অভিযুক্তদের মধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রভাবশালী ব্যক্তিরাও রয়েছেন। মামলার পরবর্তী শুনানির তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে ১৯ নভেম্বর।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

‘আমি স্কুলে যেতে চাই না’, আত্মহত্যার আগে বলেছিল ৯ বছরের আমাইরা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
সিসিটিভি ফুটেজে শিশুটিকে রেলিং থেকে ঝাঁপ দিতে দেখা গেছে। ছবি: স্ক্রিনশট
সিসিটিভি ফুটেজে শিশুটিকে রেলিং থেকে ঝাঁপ দিতে দেখা গেছে। ছবি: স্ক্রিনশট

ভারতের রাজস্থান রাজ্যের জয়পুরে একটি নামকরা স্কুল, নীরজা মোদী স্কুল। সেই স্কুল প্রাঙ্গণেই ঘটে গেছে এক মর্মান্তিক ঘটনা। গত ১ নভেম্বর স্কুলের চার তলা থেকে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেছে চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী আমাইরা মীনা (৯)। ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। আমাইরার বাবা-মায়ের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে তাদের কন্যা স্কুলে সহপাঠীদের দ্বারা বুলিং, টিজিং এবং ‘যৌন ইঙ্গিতপূর্ণ’ মৌখিক হেনস্তার শিকার হচ্ছিল। এ বিষয়ে বারবার অভিযোগ জানানো সত্ত্বেও স্কুল কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।

আমাইরার মা শিবানী মীনা জানিয়েছেন, এক বছর আগে তিনি তাঁর মেয়ের কান্নার একটি হোয়াটসঅ্যাপ অডিও রেকর্ড করেছিলেন। সেই ক্লিপে চতুর্থ শ্রেণির এই খুদে ছাত্রীকে কাঁদতে কাঁদতে বলতে শোনা যায়: ‘আমি স্কুলে যেতে চাই না...আমাকে স্কুলে পাঠিও না।’

মা শিবানী মীনার অভিযোগ, তিনি এই অডিওটি মেয়ের ক্লাস শিক্ষিকাকে পাঠিয়েছিলেন। এরপরেও গত এক বছরে তিনি একবার নয়, বহুবার ক্লাস শিক্ষিকা এবং ক্লাস কোঅর্ডিনেটরের সঙ্গে কথা বলেছিলেন। কিন্তু তাঁর অভিযোগ, স্কুল কর্তৃপক্ষ হয় সেই কথা উড়িয়ে দিত, নয়তো সম্পূর্ণ উপেক্ষা করত।

আমাইরার বাবা বিজয় মীনা বলেন, একটি অভিভাবক-শিক্ষক বৈঠকের একদল ছেলে আমাইরা ও অন্য এক ছেলেকে লক্ষ্য করে ইশারা করছিল। বিজয় মীনার পেছনে তখন লজ্জায় লুকিয়ে পড়ে আমাইরা। তিনি বিষয়টি শিক্ষিকাকে জানান।

বিজয় মীনা বলেন, ‘শিক্ষিকা আমাকে বলেছিলেন, এটি একটি সহশিক্ষা স্কুল এবং আমাইরার সব বাচ্চার সঙ্গে, এমনকি ছেলেদের সঙ্গেও কথা বলতে শেখা উচিত। আমি তাঁকে বলেছিলাম, ছেলের সঙ্গে কথা বলবে কি না, সেটা আমার মেয়ের ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত।’

তদন্তকারীরা শ্রেণিকক্ষের সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখেছেন। ফুটেজে দেখা যায়, রেলিং বেয়ে ঝাঁপ দেওয়ার মাত্র কয়েক মিনিট আগেও আমাইরা দু’বার তার শিক্ষিকার কাছে গিয়েছিল। কিন্তু সে কী বলেছিল, তা জানা যায়নি, কারণ সিসিটিভি ফুটেজে কোনো শব্দ বা অডিও নেই।

আমাইরার কাকা সাহিল এ বিষয়ে গুরুতর প্রশ্ন তুলেছেন। তিনি বলেন, ‘আমরা জবাব চাই। আমরা জানতে চাই, ৫ হাজার শিশু এবং ছয়তলা একটি ভবনে সুরক্ষার জন্য গ্রিল বা জাল ছাড়া স্কুলটি অতিরিক্ত তলা নির্মাণের অনুমতি পেল কীভাবে? এটা তো প্রাথমিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা। কেন সিবিএসই নির্দেশিকা থাকা সত্ত্বেও সিসিটিভি ফুটেজে অডিও নেই? এটি জয়পুরের একটি স্বনামধন্য স্কুল। তারা মোটা অঙ্কের ফি নেয়, কিন্তু জবাবদিহি কোথায়?’

জয়পুরের ডেপুটি কমিশনার অব পুলিশ, রাজর্ষি রাজ ভার্মা এনডিটিভিকে জানিয়েছেন, তাঁরা অভিভাবকের বয়ান গ্রহণ করেছেন এবং সব তথ্য যাচাই করছেন। তিনি বলেন, ‘অভিভাবকেরা কথা বলার মতো অবস্থায় ছিলেন না, কিন্তু এখন তাঁদের উদ্বেগগুলো আমরা নথিভুক্ত করছি এবং তদন্ত করে দেখব।’

জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা (প্রাথমিক), রামনিবাস শর্মা জানিয়েছেন, আগামী দুই-তিন দিনের মধ্যে পুলিশের উপস্থিতিতে তাঁর বিভাগ অভিভাবকদের বয়ান রেকর্ড করবে।

‘খারাপ শব্দ’ ব্যবহারের অভিযোগ প্রসঙ্গে এই কর্মকর্তা জানান, বিষয়টি সরাসরি তাঁর নজরে আসেনি, তবে কিছু শিশু উল্লেখ করেছে যে আমাইরা সেদিন স্কুলে যেতে চায়নি এবং অন্য কয়েকজন শিক্ষার্থী খারাপ শব্দ ব্যবহারের অভিযোগ করেছিল।

স্কুল কর্তৃপক্ষ এই মর্মান্তিক ঘটনা এবং অভিযোগ প্রসঙ্গে এখনো পর্যন্ত কোনো মন্তব্য করেনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

রাশিয়ার তেল-গ্যাস কেনার পরও হাঙ্গেরিকে কেন ছাড় দিলেন ট্রাম্প

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অরবান মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ মিত্র। ছবি: সংগৃহীত
হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অরবান মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ মিত্র। ছবি: সংগৃহীত

রাশিয়ার তেল ও গ্যাস কেনা দেশগুলোর ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের ঘোষণা দিয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এর মাঝে হাঙ্গেরির প্রতি সদয় হলেন তিনি। আগামী এক বছরের জন্য এই নিষেধাজ্ঞা থেকে দেশটিকে অব্যাহতি দিয়েছেন তিনি। সংবাদমাধ্যম বিবিসিকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন হোয়াইট হাউসের এক কর্মকর্তা।

এর আগে ট্রাম্প জানিয়েছিলেন, হাঙ্গেরিকে নিষেধাজ্ঞা থেকে ছাড় দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করছেন তিনি।

দেশটির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অরবান ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ মিত্র। অন্যদিকে ইউক্রেন যুদ্ধের সময় থেকে রাশিয়ার সঙ্গেও সুসম্পর্ক বজায় রেখেছেন তিনি।

শুক্রবার হোয়াইট হাউসে অরবানকে স্বাগত জানানোর সময় ট্রাম্প বলেন, এই অব্যাহতি বিবেচনাধীন রয়েছে, কারণ অন্যান্য জায়গা থেকে তেল ও গ্যাস সংগ্রহ করা অরবানের জন্য খুবই কঠিন।

গত মাসে যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়ার দুটি বৃহত্তম তেল সংস্থাকে কালো তালিকাভুক্ত করে। যেসব দেশ তাদের কাছ থেকে তেল কিনবে, তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের হুমকি দেন ট্রাম্প।

অরবান ও ট্রাম্পের সাক্ষাৎ শেষে হাঙ্গেরির পররাষ্ট্রমন্ত্রী পিটার সিজিয়ার্তো এক্স-এ লেখেন, যুক্তরাষ্ট্র বুদাপেস্টকে ‘তেল ও গ্যাসের ওপর নিষেধাজ্ঞা থেকে সম্পূর্ণ ও সীমাহীন ছাড়’ দিয়েছে। তবে পরে এক মার্কিন কর্মকর্তা বিবিসিকে জানান, এই ছাড় সময়সীমাবদ্ধ এবং এক বছরের জন্য প্রযোজ্য।

ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তকে অরবানের জন্য বড় জয় হিসেবে দেখা হচ্ছে। কারণ, তিনি আগেই বলেছিলেন এই নিষেধাজ্ঞা তাঁর দেশের অর্থনীতি ধ্বংস করে দেবে।

হোয়াইট হাউসের বৈঠকে ট্রাম্প হাঙ্গেরির অবস্থার প্রতি সহানুভূতিশীল মনোভাব দেখান। তিনি বলেন, দেশটি সমুদ্রবেষ্টিত নয় এবং রাশিয়ার তেল ও গ্যাসের ওপর নির্ভরশীল। তবে সে সময় তিনি নির্দিষ্ট কোনো নিশ্চয়তা দেননি।

পরে বিষয়টি স্পষ্ট হয়, ট্রাম্প আসলে এক বছরের জন্য ছাড় অনুমোদন করেছেন। যা তাঁর আগের অবস্থান থেকে পুরোপুরি ভিন্ন। মাত্র দুই সপ্তাহ আগেও তিনি রাশিয়া থেকে তেল-গ্যাস কিনলে নিষেধাজ্ঞার হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন।

চুক্তির অংশ হিসেবে হাঙ্গেরি যুক্তরাষ্ট্র থেকে কয়েকশ কোটি ডলারের প্রাকৃতিক গ্যাস কিনতে রাজি হয়েছে। তবে এই চুক্তিকে ইউরোপের বেশিরভাগ দেশ ভালোভাবে নেবে না বলে ধারণা করা হচ্ছে। কারণ, তারা দীর্ঘদিন ধরেই হাঙ্গেরির মস্কো-পন্থী অবস্থানের বিরোধিতা করে আসছে।

ভিক্টর অরবান ট্রাম্পের দীর্ঘদিনের ব্যক্তিগত ও রাজনৈতিক মিত্র। অভিবাসন ও সামাজিক ইস্যুতে ট্রাম্পের ডানপন্থী জনপ্রিয় বক্তব্যগুলোকেও তিনি প্রায়ই প্রতিধ্বনিত করেন। এই আনুগত্যই সম্ভবত তাঁকে বিশেষ সুবিধা এনে দিয়েছে, বিশেষত এমন সময়ে যখন তিনি আগামী বসন্তে কঠিন নির্বাচনের মুখে।

ট্রাম্প আরও বলেন, হাঙ্গেরি ভৌগোলিক সমস্যার মুখে আছে। তাদের তেল উত্তোলনের জন্য কোনো সমুদ্রপথ নেই। তবে তিনি ‘খুবই উদ্বিগ্ন’ অন্য ইউরোপীয় দেশগুলোকে নিয়ে, যারা সমুদ্রবেষ্টিত না হয়েও এখনো রাশিয়ার পণ্য কিনছে।

শুক্রবার অরবান বলেন, রাশিয়ার সঙ্গে তাঁর দেশের সম্পর্ক ‘আদর্শিক বা রাজনৈতিক নয়’, বরং ‘ভৌত বাস্তবতা’, কারণ হাঙ্গেরির কোনো বন্দর নেই।

তিনি রাশিয়ান তেল ও গ্যাসের ওপর দেশের নির্ভরশীলতাকে রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক টিকিয়ে রাখার মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করছেন। একই সঙ্গে এটি তাঁর নির্বাচনী কৌশলেরও অংশ, যেখানে তিনি আগামী এপ্রিলে পুনর্নির্বাচনের আশায় ভোটারদের ‘সস্তা রাশিয়ান জ্বালানি; দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

শুক্রবার ট্রাম্প ও অরবান ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়েও আলোচনা করেন। ট্রাম্প পুনরায় ক্ষমতায় ফেরার পর এটিই ছিল তাঁদের প্রথম আনুষ্ঠানিক বৈঠক। বৈঠকে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে সম্ভাব্য আলোচনার বিষয়ও উঠে আসে।

ট্রাম্প বলেন, ‘অরবান পুতিনকে ভালোভাবে বোঝেন, তাঁকে চেনেনও ভালোভাবে। আমার মনে হয় ভিক্টর মনে করছেন, আমরা খুব শিগগিরই এই যুদ্ধের ইতি টানতে পারব।’

এ প্রসঙ্গে অরবান বলেন, ইউক্রেন যুদ্ধে শান্তি চায় কেবল তাঁর দেশ ও যুক্তরাষ্ট্র। অন্যান্য সরকারগুলো যুদ্ধ চালিয়ে যেতে চায়, কারণ তারা মনে করে ইউক্রেন যুদ্ধক্ষেত্রে জয় পেতে পারে। যা আসলে পরিস্থিতি ভুলভাবে বোঝা।’

এরপর ট্রাম্প তাঁকে জিজ্ঞেস করেন, ‘তাহলে আপনি বলবেন, ইউক্রেন এই যুদ্ধ জিততে পারবে না?’ জবাবে অরবান বলেন, ‘জানেন তো, অলৌকিক ঘটনা ঘটতে পারে।’

তেল ও গ্যাস নিষেধাজ্ঞার ইস্যু ছাড়াও হাঙ্গেরির রপ্তানিনির্ভর গাড়ি শিল্প ট্রাম্পের ইউরোপীয় পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে দেশের দুর্বল অর্থনীতি আরও চাপে পড়েছে।

অভিবাসন, গণতন্ত্র ও আইনের শাসন ইস্যুতে ইউরোপীয় নেতাদের সঙ্গে প্রায়ই দ্বন্দ্বে জড়ানো অরবানের প্রশংসা করে ট্রাম্প বলেন, ‘ইউরোপের উচিত এই নেতাকে গভীরভাবে সম্মান করা, কারণ অভিবাসন ইস্যুতে তিনি একদম ঠিক ছিলেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

থাইল্যান্ডে রাষ্ট্রীয় সফরে ৪০ যৌনকর্মীকে হোটেলে নেন প্রিন্স অ্যান্ড্রু

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০৮ নভেম্বর ২০২৫, ১৭: ৩৮
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

একের পর এক কেলেঙ্কারি ও গুরুতর অভিযোগের জেরে ব্রিটেনের প্রয়াত রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের পুত্র প্রিন্স অ্যান্ড্রু এরই মধ্যে রাজকীয় সব পদ-পদবি হারিয়েছেন। রাজা তৃতীয় চার্লস আনুষ্ঠানিকভাবে তাঁকে সব সামরিক পদবি এবং রাজকীয় পৃষ্ঠপোষকতা থেকে সরিয়ে দিয়েছেন। এই অপমানজনক ঘটনার পর অ্যান্ড্রু এখন শুধু অ্যান্ড্রু মাউন্টব্যাটেন উইন্ডসর নামে পরিচিত হবেন।

পদবি হারানোর এই গুরুতর অপমানের মধ্যেই তাঁর জীবনীকার আরও একটি ভয়াবহ অভিযোগ সামনে এনেছেন। রয়্যাল ইতিহাসবিদ ও লেখক অ্যান্ড্রু লাউনি দাবি করেছেন, ব্রিটেনের জনগণের টাকায় থাইল্যান্ডে সরকারি সফরে গিয়ে অ্যান্ড্রু চার দিনের মধ্যে ৪০ জন যৌনকর্মীকে তাঁর পাঁচতারা হোটেলে এনেছিলেন।

লেখক অ্যান্ড্রু লাউনি ‘ডেইলি মেইল পডকাস্ট’কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এই চাঞ্চল্যকর দাবি করেন। নিউইয়র্ক পোস্টসহ অন্যান্য আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম এ নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।

জীবনীকার লাউনি অভিযোগ করেন, ২০০০-এর দশকের শুরুর দিকে যখন অ্যান্ড্রু যুক্তরাজ্যের সরকারি বাণিজ্য দূত হিসেবে কাজ করতেন, তখন তিনি বহুবার ব্রিটিশ করদাতাদের অর্থে বিদেশ সফর করেছেন। এই সফরগুলোতে তিনি সব সময় দূতাবাসে থাকার পরিবর্তে বিলাসবহুল পাঁচতারা হোটেলে থাকতেই পছন্দ করতেন।

লাউনি বলেন, ‘২০০১ সালে অ্যান্ড্রুর বয়স ছিল ৪১, তাঁর “মধ্যবয়সের সংকট” চলছিল, এবং তিনি প্রচুর নারীর পেছনে ছুটতে শুরু করেন।’ লাউনি আরও যোগ করেন, অ্যান্ড্রু এই সরকারি সফরের অজুহাতে সব সময় দুই সপ্তাহের জন্য ‘ব্যক্তিগত সময়’ রাখতেন। এই অভিযোগে একাধিক সূত্র, এমনকি একজন জ্যেষ্ঠ থাই কর্মকর্তাও সমর্থন করেছেন বলে লাউনি দাবি করেন।

প্রিন্স অ্যান্ড্রুর ভাবমূর্তি সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় মার্কিন যৌন অপরাধী জেফরি এপস্টেইনের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠতা প্রকাশের পর। অ্যান্ড্রু বহু বছর আগেই এপস্টেইনের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করার দাবি করলেও পরে প্রকাশিত তথ্যে জানা যায়, তিনি সম্পর্ক বজায় রেখেছিলেন।

এই বিতর্কের মধ্যেই এপস্টেইনের অন্যতম প্রধান অভিযোগকারী ভার্জিনিয়া রবার্টস জিউফ্রের মরণোত্তর প্রকাশিত আত্মজীবনী সামনে আসে। জিউফ্রে, যিনি গত এপ্রিলে আত্মহত্যা করেন, তিনি দীর্ঘকাল ধরে অভিযোগ করে আসছিলেন, কিশোরী থাকাকালে অ্যান্ড্রুর সঙ্গে যৌনকর্মে বাধ্য হয়েছিলেন তিনি। এই প্রকাশনার ফলে রাজপরিবারের ওপর চাপ বহুগুণ বৃদ্ধি পায়। প্রিন্স অ্যান্ড্রু অবশ্য শুরু থেকেই তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা এই ধরনের সব অভিযোগ অস্বীকার করে এসেছেন।

ব্রিটিশ রাজপরিবারের ইতিহাসবিদ লাউনি অভিযোগ করেন, সদ্য সাবেক প্রিন্সের বিতর্কিত কার্যকলাপ নিয়ে রাজকীয় এবং সরকারি মহলে একটি ‘নীরবতা’ ছিল। তিনি যুক্তি দেন, অ্যান্ড্রু বাণিজ্য দূতের পদ ব্যবহার করে ব্যক্তিগত ব্যবসায়িক স্বার্থের জন্য দেখা করতে চেয়েছেন—এমন ব্যক্তিদের তালিকা পাঠাতেন।

লাউনি ব্রিটিশ ন্যাশনাল আর্কাইভসের কাছে জরুরি ভিত্তিতে নথি প্রকাশের আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘তাঁর বাণিজ্য দূত হিসেবে ২০০১ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত করা সব নথি এখনো বাক্সবন্দী রাখা হয়েছে। সেগুলো ন্যাশনাল আর্কাইভসে থাকা উচিত। সেগুলো বাক্সবন্দী রাখা হয়েছে, এবং এটাই অ্যান্ড্রুকে ঘিরে থাকা “নীরবতার ষড়যন্ত্রের” অংশ, এটা আমাদের ভাঙা দরকার।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত